এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত হবে। বিষয়টি জানিয়েছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন। তিনি গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে সংবাদ মাধ্যমকে এই তথ্যটি জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘বুয়েট ও ঢাবির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের সমন্বয়ে মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার ফল তৈরির কাজ চলছে। অনেক খাতা দেখার কাজ করতে হচ্ছে। আগামীকাল রোববার দুপুরের পর ফল প্রকাশ করতে পারবো বলে আমরা আশাবাদী।’ তবে এই ফলাফল আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে দেওয়া হবে না। গেল বারও অবশ্য এই প্রক্রিয়ায় ফলাফল দেওয়া হয়নি। তাহলে কীভাবে ফলাফল জানা যাবে? ডা. নাজমুল বলেন, ‘গতবারও এভাবে হয়নি, এবারও না। যার যার ফল চলে যাবে। রেজাল্টের ওপর একটি সামারি দেওয়া হবে।’ অনলাইনে যেভাবে মেডিকেল পরীক্ষার ফলাফল দেখা যাবেস্বাস্থ্য অধিদপ্তর-এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে খুব সহজে আপনি আপনার MBBS ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল দেখতে পারবেন। ধাপ ১: প্রথমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে (Directorate General of Health Services - DGHS) ভিজিট করুন।ধাপ ২: ওয়েবসাইটে ‘MBBS Result 2025-2026’ লিংকে ক্লিক করুন।ধাপ ৩: নির্ধারিত স্থানে আপনার অ্যাডমিশন রোল নম্বর (Admission Roll Number) দিন।ধাপ ৪: ‘Result’ বাটনে ক্লিক করলেই আপনার ফলাফল স্ক্রিনে দেখা যাবে।ধাপ ৫: সেখান থেকে আপনি আপনার ফলাফল ডাউনলোড বা স্ক্রিনশট নিতে পারবেন।
ধর্মেন্দ্র ২৪ নভেম্বর বলিউডের ‘অমর হিরো’ ধর্মেন্দ্রর চলে যাওয়ায় পুরো দেশ শোকাহত। ‘শোলে’, ‘সীতা অর গীতা’, ‘ফুল অর পাত্থর’-এর মতো সিনেমার মাধ্যমে তিনি চিরকালীন পরিচিতি লাভ করেছিলেন। শ্বাসকষ্টের কারণে ১০ নভেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ২৪ নভেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের সময় তিনি। সুলক্ষণা পণ্ডিত ৬ নভেম্বর সুলক্ষণা পণ্ডিত ছিলেন একজন প্রশংসিত অভিনেত্রী ও প্লেব্যাক গায়িকা। ‘উলঝান’, ‘আপনাপান’, ‘খানদান’ এবং ‘ধরম কান্তার’-এর মতো সিনেমায় তিনি অসাধারণ প্রতিভা দেখিয়েছিলেন। ৭১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পর দেশজুড়ে ভক্তরা শোকাহত। সতীশ শাহ ২৫ অক্টোবর ‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’-এর ইন্দ্রবদন সারাভাই চরিত্রের মাধ্যমে তিনি কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন। ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ এবং ‘ম্যায় হু না’তে হাস্যরসাত্মক অভিনয়ও তাকে জনপ্রিয় করে তুলেছিল। ৭৪ বছর বয়সে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। গোবর্ধন আসরানি ২০ অক্টোবর প্রখ্যাত অভিনেতা আসরানি, যিনি অগণিত সিনেমায় তার কমেডি দক্ষতা দিয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন, ৮৪ বছর বয়সে আমাদের ছেড়ে গেলেন। ‘শোলে’, ‘ভাগম ভাগ’, ‘ভুল ভুলাইয়া’সহ অনেক ক্ল্যাসিক সিনেমায় তার অনবদ্য অভিনয় লালিত হয়ে থাকবে বহু প্রজন্মের মধ্যে। শেফালি জারিওয়ালা ২৭ জুন মাত্র ৪২ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেফালি জারিওয়ালা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ‘কাঁটা লাগা’ গার্ল হিসেবে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন এবং ‘মুঝসে শাদি কারোগি’র মতো চলচ্চিত্রেও কাজ করেছিলেন। জুবিন গার্গ ১৯ সেপ্টেম্বর ৫২ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরে প্রয়াত হন জনপ্রিয় গায়ক জুবিন গার্গ। হিন্দি, বাংলা ও অসমিয়ার সংগীতে তার অবদান সবার কাছে স্মরণীয়। তার আকস্মিক মৃত্যুতে সংগীতজগতে শোকের ছায়া নেমে আসে। পীযূষ পাণ্ডে ২৪ অক্টোবর বিজ্ঞাপনের কিংবদন্তি পীযূষ পাণ্ডে ৭০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘ অসুস্থতার পর তিনি চলে গেলেন, তবে তার সৃজনশীলতা এবং দূরদর্শী বিজ্ঞাপন প্রচারণার গল্প ভারতীয় বিজ্ঞাপন জগতে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। মনোজ কুমার ৪ এপ্রিল ভারত কুমার নামে পরিচিত আইকনিক অভিনেতা মনোজ কুমার ৮৭ বছর বয়সে প্রয়াত হন। ‘পূর্ব অর পশ্চিম’, ‘রোটি কাপড়া অর মাকান’, ‘ক্রান্তি’সহ বহু ক্ল্যাসিক সিনেমায় তার উপস্থিতি দর্শকদের মনে অমলিন হয়ে থাকবে। জেরিন খান ৭ নভেম্বর ৮১ বছর বয়সে প্রিয় অভিনেত্রী জেরিন খান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বলিউডে অল্প সময়ের জন্য থাকলেও, অভিনয় ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনিংয়ের মাধ্যমে তিনি ভক্ত এবং বন্ধুদের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
শাহেদ-১৩৬ ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি একটি ড্রোন, যা নীরবে ড্রোন যুদ্ধের প্রচলিত নিয়মকানুন নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে। এই ড্রোনের আবির্ভাব বিশ্বজুড়ে সামরিক শক্তিগুলোকে যুদ্ধক্ষেত্রে আধিপত্য, কৌশল ও ব্যয়ের ভারসাম্য নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। দীর্ঘদিন ধরে বৈশ্বিক অস্ত্রবাজারে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার মতো পরাশক্তিরা সামরিক উদ্ভাবনের নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। তবে ইরানের তৈরি শাহেদ-১৩৬ লয়টারিং মিউনিশন সেই প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। আকারে ছোট, তুলনামূলকভাবে কম খরচের এবং প্রযুক্তির প্রদর্শনের চেয়ে বাস্তব কার্যকারিতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নির্মিত এই ড্রোন আধুনিক যুদ্ধের অর্থনীতি ও কৌশলগত বাস্তবতাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। স্থানীয়ভাবে নির্মিত একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পরিণত হওয়ার এই দ্রুত উত্থান বিশ্বের শীর্ষ সামরিক শিল্পগুলোকে সরাসরি অনুকরণ ও বিপরীত-প্রকৌশলের পথে হাঁটতে বাধ্য করেছে। এটি বৈশ্বিক কৌশলগত হিসাবের এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে শাহেদ-১৩৬ এর নকশাগত দর্শন। মাত্র ৫০ হর্সপাওয়ারের একটি সাধারণ পিস্টন ইঞ্জিন, প্রায় ৪০ কেজি ওয়ারহেড বহনের সক্ষমতা এবং আনুমানিক দুই হাজার কিলোমিটার পাল্লা সবকিছু মিলিয়ে এটি এমন এক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন, যেখানে জটিলতার বদলে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও পুনরাবৃত্তিযোগ্য কার্যকারিতাই মুখ্য। প্রতি ইউনিট ড্রোনের আনুমানিক মূল্য মাত্র ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডলার হওয়ায় এটি একটি বড় অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কারণ, তুলনামূলকভাবে বহু গুণ বেশি দামের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে এমন ড্রোন প্রতিহত করতে হয়। উৎপাদনের কম খরচ ও প্রতিরোধের বেশি খরচ এই অসম সমীকরণ ইরানকে বৈশ্বিক ড্রোন যুদ্ধে একটি অনন্য অবস্থানে তুলে এনেছে। শাহেদ ড্রোনের প্রভাবের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো যেসব পরাশক্তি একসময় ইরানকে গৌণ বা প্রান্তিক শক্তি হিসেবে বিবেচনা করত, তারাই এখন এই ড্রোন গ্রহণ, অধ্যয়ন ও অনুকরণে বাধ্য হচ্ছে। ইরানি মডেলের কাছাকাছি দামে তৈরি, ঝাঁকবদ্ধ হামলার উপযোগী নতুন ড্রোন ব্যবস্থার উদ্ভব খরচ-সাশ্রয়ী যুদ্ধ ধারণার প্রতি বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। বিশ্বের অন্যতম উন্নত ড্রোন উন্নয়নকারী শক্তিগুলোর একটি রাশিয়া তার নিজস্ব সংস্করণে শাহেদের ধারণা অন্তর্ভুক্ত করেছে। উন্নত ইঞ্জিন, রাডার এড়িয়ে যাওয়ার উপকরণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সক্ষমতা ও অ্যান্টি-জ্যামিং প্রযুক্তির সংযোজন এই ড্রোনকে বহু স্তরবিশিষ্ট বিমান-প্রতিরক্ষা পরিবেশে কার্যকর করে তুলেছে। নিজস্ব বিস্তৃত ইউএভি কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও, শাহেদ-ভিত্তিক এই প্ল্যাটফর্ম রাশিয়ার অস্ত্রাগারের একটি গুরুত্বপূর্ণ শূন্যস্থান পূরণ করেছে। চীনও এই প্রবণতা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকেনি। ডেল্টা-উইং কাঠামো এবং মিশন প্রোফাইলে শাহেদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ ড্রোনের পরীক্ষামূলক ব্যবহার এই ধারণার প্রতি আগ্রহেরই বহিঃপ্রকাশ। শাহেদ-১৩৬ এর উদ্ভাবন এবং একে ঘিরে চীন ও রাশিয়ার ড্রোন উন্নয়ন বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে একটি গভীর দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। একদিকে রয়েছে বিপুল সামরিক বাজেট, দীর্ঘ ক্রয়চক্র ও প্রাতিষ্ঠানিক জড়তা; অন্যদিকে রয়েছে কম খরচে দ্রুত উৎপাদনযোগ্য, যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যকর সমাধান। নানা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও স্বনির্ভরতাকে অগ্রাধিকার দিতে বাধ্য ইরান এমন একটি ড্রোন মডেল তৈরি করেছে, যা কার্যকারিতা, স্কেলেবিলিটি ও বাস্তব যুদ্ধ-ব্যবহারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। এই অর্থে শাহেদ-১৩৬ কেবল একটি ড্রোন নয়; এটি দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা আর্থিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করতে পারে। এই ড্রোনের ব্যাপক প্রতিলিপি আধুনিক যুদ্ধে একটি বৃহত্তর বিবর্তনের দিকেই ইঙ্গিত করে। বিমান-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণভাবে ব্যস্ত করে রাখা, প্রতিপক্ষকে ব্যয়বহুল ইন্টারসেপ্টর ব্যবহার করতে বাধ্য করা এসব ক্ষমতা প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রতিরোধ সক্ষমতা নিয়ে দীর্ঘদিনের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। শাহেদ-১৩৬ এর উত্থান একটি মৌলিক সত্য স্পষ্ট করে দেয় উদ্ভাবন কেবল ধনী রাষ্ট্রগুলোর একচেটিয়া ক্ষেত্র নয়। বরং এই ক্ষেত্রে ইরান সীমাবদ্ধ সম্পদকেই কৌশলগত সুবিধায় রূপান্তর করেছে এবং এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যা আজ বিশ্বজুড়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীগুলোকে গভীরভাবে অধ্যয়ন ও অনুকরণে বাধ্য করছে।
দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে তার চিকিৎসায় যুক্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারি বিভাগের অস্ত্রোপচার দলের এক সদস্য এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো আশঙ্কামুক্ত নয় এবং চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে তাকে ৭২ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার সময়সীমা আগামী সোমবার রাতে শেষ হবে। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড রোগীর বিস্তারিত কেস সামারি প্রস্তুত করেছে। বিদেশের কোনো হাসপাতাল সেই কেস সামারি পর্যালোচনা করে রোগীকে গ্রহণে সম্মত হলে তবেই বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আসবে। চিকিৎসায় যুক্ত চিকিৎসকরা জানান, রোববার সকালে মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের আগেই হাদির নতুন করে সিটি স্ক্যান করা হয়। সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে মস্তিষ্কে ব্যাপক ইডেমা বা পানি জমে থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে, পাশাপাশি অক্সিজেনের ঘাটতির লক্ষণও দেখা গেছে, যা মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া মস্তিষ্কের কিছু অংশে ছিটেফোঁটা রক্ত জমাট বাঁধার চিহ্ন পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা এখনো জটিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা আরও জানান, হাদির ফুসফুসের অবস্থা আগের মতোই রয়েছে এবং বর্তমানে লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে তার শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখা হয়েছে। তবে কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় চার লিটার ইউরিন আউটপুটের ভিত্তিতে তার শরীরের ফ্লুইড ব্যালেন্স নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে। ওসমান হাদির পরিবার ও ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতির ওপর নির্ভর করছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অবস্থা বিদেশে নেওয়ার মতো স্থিতিশীল হলেই সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সন্ত্রাসীর গুলিতে আহত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি। বর্তমানে তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে আছেন। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে তার নতুন করে সিটি স্ক্যান করা হয়। এতে তার মস্তিষ্কে মারাত্মক ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে। হাদির চিকিৎসায় সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে থাকা ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারি বিভাগের অস্ত্রোপচার দলের এক সদস্য জানান, হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তিনি বলেন, পুনরায় করা সিটি স্ক্যানে দেখা গেছে, মস্তিষ্কে গুরুতর ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কিডনির কার্যক্ষমতাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, যদিও পরবর্তীতে তা কিছুটা ফিরে এসেছে। এছাড়া গুলিটি মস্তিষ্কের টেম্পোরাল ব্যারিয়ার ভেদ করে প্রবেশ করেছে। চিকিৎসক আরও জানান, খুব কাছ থেকে এবং অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে হাদিকে গুলি করা হয়েছে। গুলিটি মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ রক্তনালীগুলোর পাশ দিয়ে অতিক্রম করেছে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গুলির বড় অংশ অপসারণ করা সম্ভব হলেও স্প্লিন্টারের কিছু অংশ এখনো মস্তিষ্কে রয়ে গেছে। মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি এবং রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণও পাওয়া গেছে। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার ফুসফুসের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে হাদিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় পরিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে অন্যত্র নেওয়ার চেষ্টা করছে। মেডিকেল বোর্ড কোনো সিদ্ধান্ত দিলে বিদেশে নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে পরিবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এরই মধ্যে তার চিকিৎসাসংক্রান্ত কেস সামারি বিদেশে পাঠানো হয়েছে।
এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত হবে। বিষয়টি জানিয়েছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন। তিনি গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে সংবাদ মাধ্যমকে এই তথ্যটি জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘বুয়েট ও ঢাবির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের সমন্বয়ে মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার ফল তৈরির কাজ চলছে। অনেক খাতা দেখার কাজ করতে হচ্ছে। আগামীকাল রোববার দুপুরের পর ফল প্রকাশ করতে পারবো বলে আমরা আশাবাদী।’ তবে এই ফলাফল আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে দেওয়া হবে না। গেল বারও অবশ্য এই প্রক্রিয়ায় ফলাফল দেওয়া হয়নি। তাহলে কীভাবে ফলাফল জানা যাবে? ডা. নাজমুল বলেন, ‘গতবারও এভাবে হয়নি, এবারও না। যার যার ফল চলে যাবে। রেজাল্টের ওপর একটি সামারি দেওয়া হবে।’ অনলাইনে যেভাবে মেডিকেল পরীক্ষার ফলাফল দেখা যাবেস্বাস্থ্য অধিদপ্তর-এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে খুব সহজে আপনি আপনার MBBS ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল দেখতে পারবেন। ধাপ ১: প্রথমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে (Directorate General of Health Services - DGHS) ভিজিট করুন।ধাপ ২: ওয়েবসাইটে ‘MBBS Result 2025-2026’ লিংকে ক্লিক করুন।ধাপ ৩: নির্ধারিত স্থানে আপনার অ্যাডমিশন রোল নম্বর (Admission Roll Number) দিন।ধাপ ৪: ‘Result’ বাটনে ক্লিক করলেই আপনার ফলাফল স্ক্রিনে দেখা যাবে।ধাপ ৫: সেখান থেকে আপনি আপনার ফলাফল ডাউনলোড বা স্ক্রিনশট নিতে পারবেন।
দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে তার চিকিৎসায় যুক্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারি বিভাগের অস্ত্রোপচার দলের এক সদস্য এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো আশঙ্কামুক্ত নয় এবং চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে তাকে ৭২ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার সময়সীমা আগামী সোমবার রাতে শেষ হবে। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড রোগীর বিস্তারিত কেস সামারি প্রস্তুত করেছে। বিদেশের কোনো হাসপাতাল সেই কেস সামারি পর্যালোচনা করে রোগীকে গ্রহণে সম্মত হলে তবেই বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আসবে। চিকিৎসায় যুক্ত চিকিৎসকরা জানান, রোববার সকালে মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের আগেই হাদির নতুন করে সিটি স্ক্যান করা হয়। সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে মস্তিষ্কে ব্যাপক ইডেমা বা পানি জমে থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে, পাশাপাশি অক্সিজেনের ঘাটতির লক্ষণও দেখা গেছে, যা মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া মস্তিষ্কের কিছু অংশে ছিটেফোঁটা রক্ত জমাট বাঁধার চিহ্ন পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা এখনো জটিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা আরও জানান, হাদির ফুসফুসের অবস্থা আগের মতোই রয়েছে এবং বর্তমানে লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে তার শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখা হয়েছে। তবে কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় চার লিটার ইউরিন আউটপুটের ভিত্তিতে তার শরীরের ফ্লুইড ব্যালেন্স নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে। ওসমান হাদির পরিবার ও ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতির ওপর নির্ভর করছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অবস্থা বিদেশে নেওয়ার মতো স্থিতিশীল হলেই সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বরেন্দ্র অঞ্চলে পরিত্যক্ত ও অরক্ষিত নলকূপে পড়ে দুই বছরের শিশু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া এ নোটিশ পাঠান। এতে অরক্ষিত নলকূপ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি শিশু সাজিদের পরিবারকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) অ্যাডভোকেট মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া এ লিগ্যাল নোটিশটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠান। লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলায় শত শত পরিত্যক্ত ও অরক্ষিত নলকূপ জনসাধারণের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। এসব নলকূপ যেকোনো সময় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সম্প্রতি রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্ব পাড়া গ্রামে একটি পরিত্যক্ত নলকূপে পড়ে শিশু সাজিদের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা ও প্রশাসনিক উদাসীনতার স্পষ্ট প্রমাণ বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। নোটিশে আরও বলা হয়, সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। এ কারণে ১৫ দিনের মধ্যে একাধিক নির্দেশনা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—সব পরিত্যক্ত নলকূপ চিহ্নিত করে জরিপ পরিচালনা, রাষ্ট্রীয় ব্যয়ে সেগুলো সিলগালা/ভরাট বা স্থায়ীভাবে বন্ধ করা, অবৈধ নলকূপ খননে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, নিরাপদ নলকূপ ব্যবস্থাপনায় মানসম্মত কার্যপ্রণালি (এসওপি) প্রণয়ন, অননুমোদিত নলকূপ স্থাপনা রোধে কঠোর নজরদারি এবং দায়িত্বে অবহেলাকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে বিষয়টি জনস্বার্থ মামলা (পিআইএল) হিসেবে হাইকোর্ট ডিভিশনে দায়ের করা হবে বলেও লিগ্যাল নোটিশে জানানো হয়েছে।
শাহেদ-১৩৬ ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি একটি ড্রোন, যা নীরবে ড্রোন যুদ্ধের প্রচলিত নিয়মকানুন নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে। এই ড্রোনের আবির্ভাব বিশ্বজুড়ে সামরিক শক্তিগুলোকে যুদ্ধক্ষেত্রে আধিপত্য, কৌশল ও ব্যয়ের ভারসাম্য নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। দীর্ঘদিন ধরে বৈশ্বিক অস্ত্রবাজারে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার মতো পরাশক্তিরা সামরিক উদ্ভাবনের নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। তবে ইরানের তৈরি শাহেদ-১৩৬ লয়টারিং মিউনিশন সেই প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। আকারে ছোট, তুলনামূলকভাবে কম খরচের এবং প্রযুক্তির প্রদর্শনের চেয়ে বাস্তব কার্যকারিতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নির্মিত এই ড্রোন আধুনিক যুদ্ধের অর্থনীতি ও কৌশলগত বাস্তবতাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। স্থানীয়ভাবে নির্মিত একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পরিণত হওয়ার এই দ্রুত উত্থান বিশ্বের শীর্ষ সামরিক শিল্পগুলোকে সরাসরি অনুকরণ ও বিপরীত-প্রকৌশলের পথে হাঁটতে বাধ্য করেছে। এটি বৈশ্বিক কৌশলগত হিসাবের এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে শাহেদ-১৩৬ এর নকশাগত দর্শন। মাত্র ৫০ হর্সপাওয়ারের একটি সাধারণ পিস্টন ইঞ্জিন, প্রায় ৪০ কেজি ওয়ারহেড বহনের সক্ষমতা এবং আনুমানিক দুই হাজার কিলোমিটার পাল্লা সবকিছু মিলিয়ে এটি এমন এক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন, যেখানে জটিলতার বদলে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও পুনরাবৃত্তিযোগ্য কার্যকারিতাই মুখ্য। প্রতি ইউনিট ড্রোনের আনুমানিক মূল্য মাত্র ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডলার হওয়ায় এটি একটি বড় অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কারণ, তুলনামূলকভাবে বহু গুণ বেশি দামের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে এমন ড্রোন প্রতিহত করতে হয়। উৎপাদনের কম খরচ ও প্রতিরোধের বেশি খরচ এই অসম সমীকরণ ইরানকে বৈশ্বিক ড্রোন যুদ্ধে একটি অনন্য অবস্থানে তুলে এনেছে। শাহেদ ড্রোনের প্রভাবের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো যেসব পরাশক্তি একসময় ইরানকে গৌণ বা প্রান্তিক শক্তি হিসেবে বিবেচনা করত, তারাই এখন এই ড্রোন গ্রহণ, অধ্যয়ন ও অনুকরণে বাধ্য হচ্ছে। ইরানি মডেলের কাছাকাছি দামে তৈরি, ঝাঁকবদ্ধ হামলার উপযোগী নতুন ড্রোন ব্যবস্থার উদ্ভব খরচ-সাশ্রয়ী যুদ্ধ ধারণার প্রতি বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। বিশ্বের অন্যতম উন্নত ড্রোন উন্নয়নকারী শক্তিগুলোর একটি রাশিয়া তার নিজস্ব সংস্করণে শাহেদের ধারণা অন্তর্ভুক্ত করেছে। উন্নত ইঞ্জিন, রাডার এড়িয়ে যাওয়ার উপকরণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সক্ষমতা ও অ্যান্টি-জ্যামিং প্রযুক্তির সংযোজন এই ড্রোনকে বহু স্তরবিশিষ্ট বিমান-প্রতিরক্ষা পরিবেশে কার্যকর করে তুলেছে। নিজস্ব বিস্তৃত ইউএভি কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও, শাহেদ-ভিত্তিক এই প্ল্যাটফর্ম রাশিয়ার অস্ত্রাগারের একটি গুরুত্বপূর্ণ শূন্যস্থান পূরণ করেছে। চীনও এই প্রবণতা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকেনি। ডেল্টা-উইং কাঠামো এবং মিশন প্রোফাইলে শাহেদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ ড্রোনের পরীক্ষামূলক ব্যবহার এই ধারণার প্রতি আগ্রহেরই বহিঃপ্রকাশ। শাহেদ-১৩৬ এর উদ্ভাবন এবং একে ঘিরে চীন ও রাশিয়ার ড্রোন উন্নয়ন বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে একটি গভীর দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। একদিকে রয়েছে বিপুল সামরিক বাজেট, দীর্ঘ ক্রয়চক্র ও প্রাতিষ্ঠানিক জড়তা; অন্যদিকে রয়েছে কম খরচে দ্রুত উৎপাদনযোগ্য, যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যকর সমাধান। নানা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও স্বনির্ভরতাকে অগ্রাধিকার দিতে বাধ্য ইরান এমন একটি ড্রোন মডেল তৈরি করেছে, যা কার্যকারিতা, স্কেলেবিলিটি ও বাস্তব যুদ্ধ-ব্যবহারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। এই অর্থে শাহেদ-১৩৬ কেবল একটি ড্রোন নয়; এটি দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা আর্থিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করতে পারে। এই ড্রোনের ব্যাপক প্রতিলিপি আধুনিক যুদ্ধে একটি বৃহত্তর বিবর্তনের দিকেই ইঙ্গিত করে। বিমান-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণভাবে ব্যস্ত করে রাখা, প্রতিপক্ষকে ব্যয়বহুল ইন্টারসেপ্টর ব্যবহার করতে বাধ্য করা এসব ক্ষমতা প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রতিরোধ সক্ষমতা নিয়ে দীর্ঘদিনের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। শাহেদ-১৩৬ এর উত্থান একটি মৌলিক সত্য স্পষ্ট করে দেয় উদ্ভাবন কেবল ধনী রাষ্ট্রগুলোর একচেটিয়া ক্ষেত্র নয়। বরং এই ক্ষেত্রে ইরান সীমাবদ্ধ সম্পদকেই কৌশলগত সুবিধায় রূপান্তর করেছে এবং এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যা আজ বিশ্বজুড়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীগুলোকে গভীরভাবে অধ্যয়ন ও অনুকরণে বাধ্য করছে।
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পৃথিবীর ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের একেবারে প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস ও জঘন্য হত্যাযজ্ঞ চালায়। তাদের স্থানীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সহযোগিতায় বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। পাকিস্তানি বাহিনীর নীলনকশা অনুযায়ী বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদরা এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার উদ্দেশ্যেই এই সুপরিকল্পিত বুদ্ধিজীবী নিধনের ছক কষা হয়েছিল। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পৃথক বাণীতে গভীর শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করেছেন। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের মাত্র দুই দিন পর, ১৬ ডিসেম্বর, জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বে পাকিস্তানি বাহিনী যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এর মধ্য দিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। দিবসটি উপলক্ষে আজ জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে একাত্তরে শহীদ হওয়া জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করছে। এ উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ সকাল ৭টায় প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এ ছাড়া সকাল থেকেই রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
হিমালয় অঞ্চল থেকে বয়ে আসা হিম বাতাসের প্রভাবে সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ওঠানামা করছে। ভোরের দিকে হালকা কুয়াশা থাকলেও এখনো ঘন কুয়াশার তেমন দেখা মেলেনি। সকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আকাশে ঝলমলে রোদ উঠলেও শীতের দাপট কমছে না। এ অবস্থায় সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানার সই করা ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। একই সঙ্গে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার একটি বর্ধিতাংশ উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানানো হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময় রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায়ও সারা দেশে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসেও একই ধরনের আবহাওয়ার কথা জানানো হয়েছে। এ দিনও ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে এবং রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ শুষ্ক আবহাওয়া থাকতে পারে। ভোরের দিকে হালকা কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ শুষ্ক আবহাওয়া থাকতে পারে। ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। এ দিন রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী পাঁচ দিনে দেশের আবহাওয়ায় তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
এ এইচ এম বজলুর রহমান
শাহেদ-১৩৬ ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি একটি ড্রোন, যা নীরবে ড্রোন যুদ্ধের প্রচলিত নিয়মকানুন নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে। এই ড্রোনের আবির্ভাব বিশ্বজুড়ে সামরিক শক্তিগুলোকে যুদ্ধক্ষেত্রে আধিপত্য, কৌশল ও ব্যয়ের ভারসাম্য নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। দীর্ঘদিন ধরে বৈশ্বিক অস্ত্রবাজারে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার মতো পরাশক্তিরা সামরিক উদ্ভাবনের নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। তবে ইরানের তৈরি শাহেদ-১৩৬ লয়টারিং মিউনিশন সেই প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। আকারে ছোট, তুলনামূলকভাবে কম খরচের এবং প্রযুক্তির প্রদর্শনের চেয়ে বাস্তব কার্যকারিতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নির্মিত এই ড্রোন আধুনিক যুদ্ধের অর্থনীতি ও কৌশলগত বাস্তবতাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। স্থানীয়ভাবে নির্মিত একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পরিণত হওয়ার এই দ্রুত উত্থান বিশ্বের শীর্ষ সামরিক শিল্পগুলোকে সরাসরি অনুকরণ ও বিপরীত-প্রকৌশলের পথে হাঁটতে বাধ্য করেছে। এটি বৈশ্বিক কৌশলগত হিসাবের এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে শাহেদ-১৩৬ এর নকশাগত দর্শন। মাত্র ৫০ হর্সপাওয়ারের একটি সাধারণ পিস্টন ইঞ্জিন, প্রায় ৪০ কেজি ওয়ারহেড বহনের সক্ষমতা এবং আনুমানিক দুই হাজার কিলোমিটার পাল্লা সবকিছু মিলিয়ে এটি এমন এক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন, যেখানে জটিলতার বদলে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও পুনরাবৃত্তিযোগ্য কার্যকারিতাই মুখ্য। প্রতি ইউনিট ড্রোনের আনুমানিক মূল্য মাত্র ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডলার হওয়ায় এটি একটি বড় অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কারণ, তুলনামূলকভাবে বহু গুণ বেশি দামের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে এমন ড্রোন প্রতিহত করতে হয়। উৎপাদনের কম খরচ ও প্রতিরোধের বেশি খরচ এই অসম সমীকরণ ইরানকে বৈশ্বিক ড্রোন যুদ্ধে একটি অনন্য অবস্থানে তুলে এনেছে। শাহেদ ড্রোনের প্রভাবের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো যেসব পরাশক্তি একসময় ইরানকে গৌণ বা প্রান্তিক শক্তি হিসেবে বিবেচনা করত, তারাই এখন এই ড্রোন গ্রহণ, অধ্যয়ন ও অনুকরণে বাধ্য হচ্ছে। ইরানি মডেলের কাছাকাছি দামে তৈরি, ঝাঁকবদ্ধ হামলার উপযোগী নতুন ড্রোন ব্যবস্থার উদ্ভব খরচ-সাশ্রয়ী যুদ্ধ ধারণার প্রতি বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। বিশ্বের অন্যতম উন্নত ড্রোন উন্নয়নকারী শক্তিগুলোর একটি রাশিয়া তার নিজস্ব সংস্করণে শাহেদের ধারণা অন্তর্ভুক্ত করেছে। উন্নত ইঞ্জিন, রাডার এড়িয়ে যাওয়ার উপকরণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সক্ষমতা ও অ্যান্টি-জ্যামিং প্রযুক্তির সংযোজন এই ড্রোনকে বহু স্তরবিশিষ্ট বিমান-প্রতিরক্ষা পরিবেশে কার্যকর করে তুলেছে। নিজস্ব বিস্তৃত ইউএভি কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও, শাহেদ-ভিত্তিক এই প্ল্যাটফর্ম রাশিয়ার অস্ত্রাগারের একটি গুরুত্বপূর্ণ শূন্যস্থান পূরণ করেছে। চীনও এই প্রবণতা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকেনি। ডেল্টা-উইং কাঠামো এবং মিশন প্রোফাইলে শাহেদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ ড্রোনের পরীক্ষামূলক ব্যবহার এই ধারণার প্রতি আগ্রহেরই বহিঃপ্রকাশ। শাহেদ-১৩৬ এর উদ্ভাবন এবং একে ঘিরে চীন ও রাশিয়ার ড্রোন উন্নয়ন বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে একটি গভীর দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। একদিকে রয়েছে বিপুল সামরিক বাজেট, দীর্ঘ ক্রয়চক্র ও প্রাতিষ্ঠানিক জড়তা; অন্যদিকে রয়েছে কম খরচে দ্রুত উৎপাদনযোগ্য, যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যকর সমাধান। নানা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও স্বনির্ভরতাকে অগ্রাধিকার দিতে বাধ্য ইরান এমন একটি ড্রোন মডেল তৈরি করেছে, যা কার্যকারিতা, স্কেলেবিলিটি ও বাস্তব যুদ্ধ-ব্যবহারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। এই অর্থে শাহেদ-১৩৬ কেবল একটি ড্রোন নয়; এটি দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা আর্থিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করতে পারে। এই ড্রোনের ব্যাপক প্রতিলিপি আধুনিক যুদ্ধে একটি বৃহত্তর বিবর্তনের দিকেই ইঙ্গিত করে। বিমান-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণভাবে ব্যস্ত করে রাখা, প্রতিপক্ষকে ব্যয়বহুল ইন্টারসেপ্টর ব্যবহার করতে বাধ্য করা এসব ক্ষমতা প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রতিরোধ সক্ষমতা নিয়ে দীর্ঘদিনের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। শাহেদ-১৩৬ এর উত্থান একটি মৌলিক সত্য স্পষ্ট করে দেয় উদ্ভাবন কেবল ধনী রাষ্ট্রগুলোর একচেটিয়া ক্ষেত্র নয়। বরং এই ক্ষেত্রে ইরান সীমাবদ্ধ সম্পদকেই কৌশলগত সুবিধায় রূপান্তর করেছে এবং এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যা আজ বিশ্বজুড়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীগুলোকে গভীরভাবে অধ্যয়ন ও অনুকরণে বাধ্য করছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া ও চীনকে কেন্দ্র করে নতুন ‘সুপারক্লাব’ বা কোর-৫ জোট গঠনের পরিকল্পনা করছেন। এতে ভারত ও জাপানও অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ জানিয়েছে, হোয়াইট হাউস সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে এই জোটের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ পরিকল্পনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র চাইছে, 'জি-৭' বা অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী জোটকে এড়িয়ে গিয়ে শক্তিশালী দেশগুলোর সঙ্গে সরাসরি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা। প্রস্তাবিত কোর-৫ জোটের প্রথম বিষয় হবে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা—বিশেষ করে ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ। তবে হোয়াইট হাউস এই নথির অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কোর-৫ জোটের ধারণা ট্রাম্পের নিজস্ব আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তা টরি টসিগ বলেন, এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে শক্তিশালী খেলোয়াড়দের সঙ্গে সহযোগিতার প্রবণতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যদিও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি, আন্তর্জাতিক পর্যালোচকরা বলছেন—'কোর-৫' জোটের ধারণা ট্রাম্প প্রশাসনের বৈশ্বিক কৌশলের একটি শক্তিশালী ইঙ্গিত বহন করছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে চান। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়। এরদোয়ান আশা প্রকাশ করেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি স্থাপন খুব দূরে নয়। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) তুর্কমেনিস্তানে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, 'শান্তি খুব দূরে নয়; আমরা তা দেখতে পাচ্ছি'। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ‘'ব্যাপক শান্তি প্রচেষ্টা’' মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এরদোয়ান ইউক্রেন শান্তি প্রচেষ্টায় তুরস্কের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বৈঠকে পুতিনকে এরদোয়ান বলেছেন, জ্বালানি স্থাপনা ও বন্দর কেন্দ্র করে সীমিত যুদ্ধবিরতি সব পক্ষের জন্য উপকারী হতে পারে। তিনি বলেন, কৃষ্ণসাগরকে যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে দেখা উচিত নয়। নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিত করা জরুরি, যা রাশিয়া ও ইউক্রেন—উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
বছরের শুরুতে ঘোষিত এই গোল্ড কার্ড প্রকল্পে বলা হয়েছে, ট্রাম্প গোল্ড কার্ড পেতে আবেদনকারীকে প্রথমে ১০ লাখ ডলার ফি দিতে হবে। এই অর্থ প্রমাণ করবে যে, আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যথেষ্ট সুবিধা নিয়ে আসবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করলেন নতুন ‘ট্রাম্প গোল্ড কার্ড’ ভিসা প্রকল্প, যার মাধ্যমে কমপক্ষে ১০ লাখ ডলার (প্রায় সাড়ে ৭ লাখ পাউন্ড) পরিশোধকারী বিদেশীরা দ্রুততম সময়ে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ পেতে পারেন। খবর রয়টার্স। ট্রাম্প বলেন, এই কার্ড ‘যোগ্য ও যাচাইকৃত’ আবেদনকারীদের জন্য সরাসরি নাগরিকত্বের পথ তৈরি করবে এবং এতে মার্কিন কোম্পানিগুলো ‘তাদের অমূল্য প্রতিভা’ ধরে রাখতে সক্ষম হবে। বছরের শুরুতে ঘোষিত এই গোল্ড কার্ড প্রকল্পে বলা হয়েছে, ট্রাম্প গোল্ড কার্ড পেতে আবেদনকারীকে প্রথমে ১০ লাখ ডলার ফি দিতে হবে। এই অর্থ প্রমাণ করবে যে, আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যথেষ্ট সুবিধা নিয়ে আসবেন। যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদেশী কর্মীদের স্পনসর করবে তাদের ২০ লাখ ডলার দিতে হবে, এর পাশাপাশি আরো অন্যান্য ফি প্রযোজ্য হবে। আরো বিশেষ কর সুবিধা সম্বলিত 'প্ল্যাটিনাম' কার্ডও শিগগিরই আসছে, যার মূল্য হবে ৫০ লাখ ডলার। আবেদন পর্যালোচনার আগেই সবাইকে ১৫ হাজার ডলার অফেরতযোগ্য প্রক্রিয়াকরণ ফি জমা দিতে হবে। ঘোষণার পর থেকেই প্রকল্পটি সমালোচিত হচ্ছে। ডেমোক্র্যাট নেতারা বলছেন, এই পরিকল্পনা ধনীদের পক্ষপাতী এবং সাধারণ অভিবাসীদের জন্য বৈষম্যমূলক। ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন, গোল্ড কার্ড গ্রিন কার্ডের মতোই দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের সুযোগ দেয়, তবে এটি মূলত ‘উচ্চ দক্ষতা ও উৎপাদনশীল’ ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে তৈরি। তার বক্তব্য, ‘যারা ৫ মিলিয়ন ডলার দিতে পারে, তারা চাকরি তৈরি করবে। এটি দারুণ বিক্রি হবে, একেবারে সস্তা। অন্যদিকে, প্রশাসন এরইমধ্যে ব্যাপক অভিবাসন দমন অভিযান চালাচ্ছে। কর্মক্ষেত্র ভিসার ফি বৃদ্ধি, অনথিভুক্ত অভিবাসীদের বহিষ্কার, ও বাইডেন আমলে মঞ্জুর হওয়া হাজারো আশ্রয় আবেদন পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত তারই অংশ। এছাড়া ১৯টি দেশের নাগরিকদের জন্য অভিবাসন আবেদন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশগুলো মূলত আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের। গত সেপ্টেম্বর ট্রাম্প দক্ষ বিদেশী কর্মীদের জনপ্রিয় এইচ-১বি ভিসার আবেদনে ১ লাখ ডলার ফি আরোপ করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বিদেশী শিক্ষার্থী ও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি করে। পরে হোয়াইট হাউস জানায়, এই ফি শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থাকা নতুন আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।