স্বাস্থ্য

ছবি : সংগৃহীত
শীতকালে পানি কম খাওয়ার ভুল অভ্যাস ও তার ক্ষতিকর দিক

শীত এলেই অনেকের পানি খাওয়ার অভ্যাস কমে যায়। ঠান্ডায় ঘাম কম হয়, তৃষ্ণাও তেমন লাগে না— এই ভাবনা থেকেই অনেকে মনে করেন শীতে বেশি পানি দরকার নেই। কিন্তু বাস্তবতা ঠিক উল্টো। শীতকালেও শরীরকে সুস্থ ও সচল রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা খুবই জরুরি।   শীতে কেন পানি কম খাওয়া হয়, আর কেন তা ভুল শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘাম কম হওয়ায় তৃষ্ণা কম লাগে। ফলে অজান্তেই পানি পান কমে যায়। কিন্তু শরীরের ভেতরের কাজ—হজম, রক্ত সঞ্চালন, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য বের করা— সবকিছুর জন্যই পানি দরকার হয়। তৃষ্ণা না পেলেও শরীরের প্রয়োজন কমে যায় না। শীতে পানি না খেলে যেসব সমস্যা হয় হজমের সমস্যা : পানি কম হলে খাবার ঠিকমতো হজম হয় না। গ্যাস, অ্যাসিডিটি, অম্বল ও কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ে। শীতে ভারী ও তেল-মসলাযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া হয়— এ সময় পানি আরও দরকার। ত্বক ও চুলের ক্ষতি : শীতের শুষ্ক বাতাসে ত্বক এমনিতেই রুক্ষ হয়। পানি কম খেলে ত্বক আরও শুকনো, খসখসে হয়ে যায়, ঠোঁট ফাটে, চুল রুক্ষ হয়। ক্লান্তি ও মনোযোগ কমে যাওয়া : পর্যাপ্ত পানি না পেলে রক্ত সঞ্চালন ধীর হয়। ফলে অল্প কাজেই ক্লান্তি, মাথা ভার লাগা ও মনোযোগ কমে যেতে পারে। পানিশূন্যতার ঝুঁকি : শীতে বোঝা না গেলেও পানিশূন্যতা হতে পারে, যা দীর্ঘদিন চললে নানা জটিলতা ডেকে আনে। শীতে দিনে কতটা পানি পান করা উচিত বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে কমপক্ষে ২ থেকে ২.৫ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। তবে শরীরের ওজন, কাজের ধরন (শারীরিক পরিশ্রম বেশি হলে) ও আবহাওয়ার ওপর এই পরিমাণ কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— তৃষ্ণা না পেলেও নিয়ম করে পানি পান করা। পানি খাওয়ার সহজ টিপস - সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করুন - সারা দিনে অল্প অল্প করে পানি পান করুন - চা-কফির পাশাপাশি সাধারণ পানিও রাখুন - স্যুপ, ফল (কমলা, পেয়ারা) ও শাকসবজি থেকেও পানি পাওয়া যায় - প্রস্রাবের রং গাঢ় হলে বুঝবেন পানি কম খাচ্ছেন সংক্ষেপে বললে, শীত হোক বা গ্রীষ্ম— পানি শরীরের জন্য অপরিহার্য। শীতে তৃষ্ণা কম লাগলেও পানি কম নয়। সুস্থ থাকতে প্রতিদিন নিয়ম করে পর্যাপ্ত পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।  

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১৮, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
খাওয়ার পর করা এই ৮ কাজ ডেকে আনবে বিপদ, বলছেন বিশেষজ্ঞ

শুধু ঠিকঠাক খাওয়াই যথেষ্ট নয়, খাওয়ার পর আপনার কিছু অভ্যাস ওজন বাড়ানো, হজমের সমস্যা, এমনকি পুষ্টি শোষণে বাধা দিতে পারে। তাই খেয়াল রাখুন, খাওয়ার পর কিছু সাধারণ ভুল যেন না হয়।   আপনি কি কখনো ভেবেছেন, সুষম খাবার খাওয়ার পরও শরীরে কেন পুষ্টির ঘাটতি হয় বা কেন বারবার দুর্বল লাগে? এমনটা হলে হয়তো আপনি ভাবছেন- খাবারে গড়বড়, না হয় শরীরে কোনো সমস্যা! কিন্তু আসল সমস্যা হতে পারে খাওয়ার পর আপনি যা করছেন সেসব অভ্যাসে। আমরা অনেকেই খাওয়ার পর কিছু স্বাভাবিক মনে হওয়া কাজ করে ফেলি। কিন্তু এ অভ্যাসগুলো আপনার হজমব্যবস্থা ও পুষ্টি শোষণের ক্ষমতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের ৮টি কাজ খাওয়ার পর একদমই করা উচিত নয় : ফল খাবেন না ফল খুবই স্বাস্থ্যকর, কিন্তু খাওয়ার পরপর ফল খেলে তা আপনার হজমব্যবস্থায় বাধা সৃষ্টি করে। ফল খাবারের সঙ্গে মিশে গিয়ে হজমের গতি কমায় এবং পুষ্টি শোষণে সমস্যা করে। ফল খেতে হলে খাওয়ার ১ ঘণ্টা পরে খান। ধূমপান করবেন না ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর- এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু খাওয়ার পর ধূমপান করা আরও ক্ষতিকর। এতে শরীরের হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা হয়, এমনকি অন্ত্রে আলসার বা ইনফ্লেমেশনও হতে পারে। খেয়েই ঘুমাবেন না অনেকে খাওয়ার পরই একটু বিশ্রাম নিতে চান বা হালকা ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু এটা আপনার হজমের রস উপরের দিকে উঠিয়ে দেয়, ফলে গ্যাস্ট্রিক ও বুক জ্বালার সমস্যা হতে পারে। খাওয়ার পর অন্তত ১ ঘণ্টা ঘুম না নেওয়াই ভালো। গোসল করবেন না খাওয়ার পর গোসল করলে শরীরের রক্ত হজমের কাজে না গিয়ে ত্বকে ছুটে যায় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে। ফলে হজমপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। খাওয়ার ১ ঘণ্টা পরে গোসল করাই নিরাপদ। ব্যায়াম করবেন না খাওয়ার পর ভারী ব্যায়াম করলে হজমে সমস্যা হতে পারে। বমি, পেট ফাঁপা বা পাতলা পায়খানাও হতে পারে। একমাত্র ব্যতিক্রম হলো ‘বজ্রাসন’- এটা হজমে সাহায্য করে, তাই খাওয়ার পর শুধু এটুকু করা যেতে পারে। চা/কফি খাবেন না অনেকেই খাওয়ার পরপরই এক কাপ চা বা কফি পান করেন। কিন্তু এতে থাকা কিছু উপাদান আয়রন শোষণে বাধা দেয়। তাই খাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা পরে চা বা কফি পান করুন। বেল্ট ঢিলা করবেন না অনেক সময় খাওয়ার পর খুব পেট ভরা লাগলে আমরা বেল্ট ঢিলা করে নিই। এটা হজমে বিঘ্ন ঘটায় এবং এক ধরনের গ্যাস্ট্রিক চাপ তৈরি করে। এটা ওভারইটিং-এর লক্ষণও হতে পারে। তাই এমন অভ্যাস না করাই ভালো। পানি খাবেন না খাওয়ার পরপরই পানি খাওয়া হজমে সমস্যা করে। এতে পাকস্থলীর এনজাইম ও হজমরস পাতলা হয়ে যায়, ফলে গ্যাস্ট্রিক ও ফাঁপা ভাব হয়। পানি খাওয়ার সঠিক সময় হলো খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে বা ১ ঘণ্টা পরে। আপনি কি এই অভ্যাসগুলোর কোনোটার সঙ্গে পরিচিত? তাহলে এখনই পরিবর্তন আনার সময়। সূত্র : হেল্থ শট

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
দূর হোক খুশকি

মাথার ত্বকে নতুন কোষ তৈরি হয় এবং পুরনো কোষগুলো ঝরে যায়। কিন্তু পুরনো কোষগুলো যখন ঠিকঠাকমতো ঝরে যেতে পারে না তখন সেগুলো জমে যায় এবং ফাঙ্গাস সংক্রমিত হয়। ফলে খুশকি হয়। এ ছাড়াও মাথায় খুশকির সৃষ্টি নানাভাবে হতে পারে। মাথার ত্বক যদি অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়, যদি চুল নিয়মিত পরিষ্কার না করা হয়, তাহলে সহজেই খুশকি হয়। শীতকালে আবহাওয়া থাকে শুষ্ক ও ধুলাবালিযুক্ত। ফলে খুশকির প্রকোপও বেড়ে যায়। মাথার ত্বকের যত্ন নিলেই এই সমস্যা দূর হবে। এ বিষয়ে পরামর্শ দেন শোভন মেকওভার বিউটি ক্লিনিক অ্যান্ড মেকওভার স্যালুনের কসমোটোলজিস্ট, স্বত্বাধিকারী শোভন সাহা। তিনি বলেন, নারিকেল বা অলিভ অয়েল হালকা গরম করে মাথার তালুতে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু করলে বেশ উপকার পাবেন।   হ টক দই খুশকি দূর করতে ও চুল ঝলমলে করতে খুবই কার্যকর। ৬ টেবিল চামচ টক দই খুব ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এরপর এতে ১ টেবিল চামচ মেহেদি বাটা ভালোভাবে মেশান। মিশ্রণটি চুলের গোড়াসহ পুরো চুলে লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর চুল ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক দিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন। হ একটি ডিমের সাদা অংশ ও ৪ টেবিল চামচ টক দই খুব ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন। এরপর এতে ১ টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস মেশান। মিশ্রণটি মাথার ত্বকসহ পুরো চুলে লাগান। ২০ মিনিট পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ১ বার এটা ব্যবহার করুন। হ মেথি চুলের খুবই উপকারী একটা জিনিস। নারকেল তেল গরম করুন। এরপর এতে মেথিগুঁড়া মেশান। মিশ্রণটি পুরো চুলে লাগিয়ে ১ ঘণ্টার পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। দ্রুত ফল পাওয়ার জন্য সপ্তাহে ৩ দিন এটি ব্যবহার করুন। হ মেথি সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। এরপর এটি থেঁতো করে চুলের গোড়ায় লাগান। ৩০ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুবার মেথি লাগান। হ চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে ও খুশকি দূর করতে অলিভ অয়েলের জুড়ি নেই। অলিভ অয়েল গরম করে নিন। এতে পাতিলেবুর রস মেশান। চুলের গোড়াসহ পুরো চুলে লাগিয়ে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এরপর চুল ভালো করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার চুলে অলিভ অয়েল লাগান। খুশকি দূরের পাশাপাশি চুল হবে কোমল ও ঝলমলে। একই পদ্ধতিতে নারিকেল তেলও ব্যবহার করতে পারেন।   হ পেঁয়াজের রস খুব দ্রুত খুশকি দূর করতে পারে। পেঁয়াজ মিহি করে বেটে নিয়ে রস ছেঁকে নিন। পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় ভালো করে ঘষে ঘষে লাগান। ২০-২৫ মিনিট রেখে চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
ফুসফুসে পাথর : চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিরল ও বিস্ময়কর রোগ

২০২১ সালে বাংলাদেশের চিকিৎসা ইতিহাসে একটি বিরল ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে আসে। ২৬ বছর বয়সী এক বিবাহিত নারী দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ, মানসিক চাপ, ঘুমের সমস্যা এবং মাঝে মাঝে বুক ধড়ফরজনিত উপসর্গে ভুগছিলেন। এসব সমস্যা নিয়ে তিনি একজন অভিজ্ঞ সাইকিয়াট্রিস্টের শরণাপন্ন হন।   প্রাথমিক চিকিৎসায় তার মানসিক উপসর্গগুলো অনেকটাই কমে আসে। তবে চিকিৎসাকালেই ওই নারী জানান, শ্বাস নেওয়ার সময় মাঝেমধ্যে বুকে চাপ–চাপ অনুভূতি বা অস্বস্তি হয়। আশ্চর্যের বিষয়, তার হাঁপানি, অ্যালার্জি কিংবা ফুসফুসের প্রদাহজনিত কোনো রোগের ইতিহাস ছিল না। পারিবারিকভাবেও এ ধরনের রোগের কোনো নজির পাওয়া যায়নি। উপসর্গকে গুরুত্ব দিয়ে সতর্কতামূলকভাবে চিকিৎসক একটি চেস্ট এক্স-রে করার পরামর্শ দেন। পরীক্ষার ফলাফল হাতে আসার পর চিকিৎসকরাও বিস্মিত হন। রিপোর্টে দেখা যায়, তার ফুসফুসে অসংখ্য ক্ষুদ্র পাথরের মতো কণা জমে আছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই বিরল রোগটির নাম পালমোনারি এলভিওলার মাইক্রোলিথিয়াসিস (Pulmonary Alveolar Microlithiasis), সংক্ষেপে পিএএম। এ রোগে ফুসফুসের অ্যালভিওলাইয়ের ভেতরে ক্যালসিয়াম ফসফেট জমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাথরসদৃশ গঠন তৈরি হয়। বিশ্বব্যাপী এ রোগের প্রাদুর্ভাব অত্যন্ত কম। প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে গড়ে মাত্র একজন এ রোগে আক্রান্ত হন। এখন পর্যন্ত বিশ্বে নথিভুক্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজারের মতো। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদ এনাম এই ঘটনাটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য বিরল ও ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, প্রায় চার বছর আগে তার চেম্বারেই এই বিরল রোগে আক্রান্ত রোগীটি শনাক্ত হয়। ডা. এনাম জানান, পালমোনারি এলভিওলার মাইক্রোলিথিয়াসিস একটি জেনেটিক্যাল রোগ এবং অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন উপসর্গহীন থাকতে পারে। সাধারণত এটি যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া বা ফুসফুসের ক্যানসারের মতো মারাত্মক জটিলতা তৈরি করে না। তবে রোগটি নিয়ে গবেষণা এখনও চলমান।   বিশেষজ্ঞদের মতে, সচেতনতা ও প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এমন বিরল রোগও সময়মতো শনাক্ত করা সম্ভব। তবে রোগটি বিরল এবং এখনও গবেষণাধীন হওয়ায় এর কোনো নিশ্চিত চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়নি। রোগের একেবারে শেষ পর্যায়ে ফুসফুস প্রতিস্থাপনই বর্তমানে একমাত্র কার্যকর চিকিৎসা হিসেবে বিবেচিত হয়।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
ব্রেন ডেথ কী? এ অবস্থা থেকে কি কখনো ফিরে আসা সম্ভব?

ব্রেন ডেথ’ বা মস্তিষ্কমৃত্যু শব্দটি অনেকের কাছেই বিভ্রান্তিকর। কারণ বাইরে থেকে দেখলে মনে হতে পারে, রোগী এখনো শ্বাস নিচ্ছেন, হৃদ্‌স্পন্দন চলছে। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, ব্রেন ডেথ মানেই মৃত্যু। এটি একই সঙ্গে একটি চিকিৎসাগত ও আইনগত পরিভাষা। ব্রেন ডেথ বলতে কী বোঝায় ব্রেন ডেথ ঘটে তখনই, যখন আঘাত বা রোগের কারণে মানুষের সম্পূর্ণ মস্তিষ্ক এবং ব্রেনস্টেম স্থায়ীভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ব্রেনস্টেম শরীরের শ্বাসপ্রশ্বাস ও হৃদ্‌স্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে। আর মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করে দেখা, শোনা, স্পর্শ অনুভব করা এবং নড়াচড়ার মতো মৌলিক ক্ষমতাগুলো। এই সব কাজ বন্ধ হয়ে গেলে চিকিৎসা ও আইনের দৃষ্টিতে সেই ব্যক্তি মৃত হিসেবে গণ্য হন। তাই চিকিৎসকেরা নির্দিষ্ট ও কঠোর চিকিৎসা নির্দেশিকা অনুসরণ করেই ব্রেন ডেথ নির্ণয় করেন। ব্রেন ডেথ ঘোষণা করার আগে সম্ভাব্য সব বিকল্প কারণ বাতিল করা হয় এবং একাধিক পরীক্ষা করা হয়। ব্রেন ডেথ কি খুব সাধারণ ঘটনা? না। ব্রেন ডেথ খুবই বিরল। এক গবেষণা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্তবয়স্কদের হাসপাতালে মৃত্যুর মোট ঘটনার মাত্র ২ শতাংশ ব্রেন ডেথের কারণে ঘটে। ব্রেন ডেথের প্রধান কারণ কী মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে রক্ত ও অক্সিজেনের ওপর নির্ভরশীল। তাই যেকোনো গুরুতর আঘাত বা রোগ, যা মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেনের প্রবাহ বন্ধ করে দেয়, তা ব্রেন ডেথের কারণ হতে পারে। আবার মস্তিষ্কের রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রক্তক্ষরণ হলেও একই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সম্ভাব্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ১. গুরুতর মাথায় আঘাত (ট্রমাটিক ব্রেন ইনজুরি) ২. মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (ইন্ট্রাসেরিব্রাল হেমোরেজ) ৩. সাবঅ্যারাকনয়েড হেমোরেজ ৪. ইস্কেমিক স্ট্রোক ৫. হার্ট অ্যাটাক ৬. অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি (হাইপক্সিক ইস্কেমিক ব্রেন ইনজুরি) ৭. মেনিনজাইটিস বা এনসেফালাইটিসের মতো মস্তিষ্কের সংক্রমণ কীভাবে ব্রেন ডেথ নির্ণয় করা হয় ‘মেডিক্যাল ক্রাইটেরিয়া’ বলতে বোঝায়, ব্রেন ডেথ নির্ণয়ে চিকিৎসকদের অনুসরণ করতে হওয়া নির্দিষ্ট ধাপগুলো। যুক্তরাষ্ট্রে এ ক্ষেত্রে তিনটি চিকিৎসা সংস্থা একসঙ্গে নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছে। ১. পরীক্ষা শুরুর আগে চিকিৎসকেরা মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতির মূল কারণ শনাক্ত ও চিকিৎসা করেন। ২. যেসব সমস্যা বা অবস্থা ব্রেন ডেথের মতো উপসর্গ তৈরি করতে পারে, সেগুলো বাতিল করেন। ৩. ব্রেন ডেথের অনুকরণ করতে পারে, এমন সব পরিস্থিতি বাদ দেন। এরপর প্রশিক্ষিত চিকিৎসকেরা একাধিক পরীক্ষা করেন। প্রাথমিক ফল নিশ্চিত করতে এসব পরীক্ষা একাধিকবারও করা হতে পারে। ব্রেন ডেথ সন্দেহ হলে রোগীর পরিবারের সদস্যদের আগে থেকেই জানানো হয় এবং প্রতিটি পরীক্ষার অর্থ ব্যাখ্যা করা হয়। পরীক্ষার মধ্যে থাকে শারীরিক পরীক্ষা, ব্রেন এমআরআইয়ের মতো ইমেজিং টেস্ট, বিস্তৃত স্নায়বিক পরীক্ষা এবং অ্যাপনিয়া টেস্ট। স্নায়বিক পরীক্ষা কীভাবে করা হয় ব্রেন ডেথ হলে মানুষ শব্দ, আলো বা স্পর্শে স্বাভাবিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না। কোনো নড়াচড়া হলেও তা ইচ্ছাকৃত নয়। স্নায়বিক পরীক্ষার সময় চিকিৎসকেরা গলার পেছনে স্পর্শ করে গ্যাগ বা বমিভাবের প্রতিক্রিয়া দেখেন। তুলার সাহায্যে চোখে স্পর্শ করে পলক ফেলা বা চোখ বন্ধের প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করেন এবং আলো ফেলিয়ে চোখের মণির প্রতিক্রিয়া যাচাই করেন। অ্যাপনিয়া টেস্ট কী মারাত্মক মস্তিষ্ক আঘাতের ক্ষেত্রে রোগী নিজে শ্বাস নিতে পারেন না এবং ভেন্টিলেটরের ওপর নির্ভরশীল হন। অ্যাপনিয়া টেস্টে কিছুক্ষণের জন্য ভেন্টিলেটর বন্ধ রেখে দেখা হয়, রোগী নিজে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করেন কি না। যদি পরীক্ষায় ব্রেন ডেথ ধরা পড়ে এরপর কী হয় সব পরীক্ষার ফলাফল পরিবারের সদস্যদের বিস্তারিতভাবে জানানো হয় এবং স্পষ্ট করে বলা হয়, ব্রেন ডেথ মানেই মৃত্যু। চিকিৎসকেরা জানেন, এ খবর গ্রহণ করা অত্যন্ত কঠিন। তাই পরিবারকে সময় দেওয়া হয়, প্রশ্ন করার সুযোগ দেওয়া হয়। এরপর পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। যেমন-ভেন্টিলেটর খুলে নেওয়া। প্রয়োজনে পরিবারের সদস্যরা ভেন্টিলেটর খুলে নেওয়ার আগে রোগীর পাশে কিছু সময় কাটানোর সুযোগও পান। কোমা আর ব্রেন ডেথের পার্থক্য কী কোমায় থাকা ব্যক্তি অচেতন থাকলেও কিছু প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন। যেমন- চোখে আলো ফেললে পলক ফেলা বা মাথা ঘোরানো। কোমা সব সময় স্থায়ী নয়; বেশিভাগ মানুষ দুই সপ্তাহের মধ্যেই কোমা থেকে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু ব্রেন ডেথে কোনো প্রতিক্রিয়াই থাকে না। এটি সম্পূর্ণ ও স্থায়ী অবস্থা। ব্রেন ডেথ হলে আর কখনোই চেতনা ফিরে আসে না। কেউ কি কখনো ব্রেন ডেথ থেকে সেরে উঠেছে? না। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, ব্রেন ডেথ থেকে কেউ কখনো সেরে ওঠে না। কঠোর নির্দেশিকা মেনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয়। একবার ব্রেন ডেথ নিশ্চিত হলে সেই ব্যক্তি চিকিৎসাগতভাবে মৃত। ব্রেন ডেথ কি প্রতিরোধ করা সম্ভব? না। কারণ যেসব গুরুতর অসুস্থতা বা আঘাত ব্রেন ডেথের দিকে নিয়ে যায়, সেগুলো অনেক সময় প্রতিরোধের বাইরে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা পেলে ব্রেন ডেথ ঠেকানো যেতে পারে। তবে একবার মস্তিষ্ক সম্পূর্ণভাবে কাজ করা বন্ধ করে দিলে, তা আর ফিরিয়ে আনার কোনো চিকিৎসা নেই। কঠিন বাস্তবতা সাধারণভাবে আমরা মৃত্যু বলতে বুঝি শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া, হৃদ্‌স্পন্দন থেমে যাওয়া। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় ভেন্টিলেটরের মতো যন্ত্র সাময়িকভাবে শ্বাস ও হৃদ্‌স্পন্দন চালু রাখতে পারে। এতে করে অনেক সময় বুঝে ওঠা কঠিন হয় যে ব্যক্তি দেখতে জীবিত, তিনি আসলে মৃত। চিকিৎসকেরা এই বাস্তবতা ভালোভাবেই বোঝেন। তাই ব্রেন ডেথ ঘোষণা করার আগে তারা সব পরীক্ষানিরীক্ষা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করেন এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে বলেন।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
তরুণদের মধ্যে বাড়ছে কোলন ক্যানসার, নিয়ন্ত্রণের ৫ উপায়

কোলন ক্যানসার একসময় ছিল বয়স্কদের রোগ। বয়স পঞ্চাশ পার হলেই এ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যেত, চিকিৎসকরাও তাই মূলত বয়স্কদের ক্ষেত্রেই কোলন ক্যানসারের আশঙ্কার কথা বলতেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে চিত্রটি দ্রুত বদলাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে তরুণদের মধ্যেই বাড়ছে এ ক্যানসার। মাত্র ত্রিশ বা চল্লিশের কোঠায় পা দিতেই অনেক তরুণ এখন এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন! গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৯০ সালে জন্ম নেওয়া প্রজন্মের মধ্যে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি ১৯৫০ সালের প্রজন্মের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে নতুন করে কোলন ক্যানসার আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন প্রায় ১৯ লাখ মানুষ, একই সময়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ লাখ ৩০ হাজার জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, আগামী দুই দশকে যদি জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন না আসে, তবে ২০৪০ সালের মধ্যে প্রতি বছর নতুন করে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াতে পারে প্রায় ৩২ লাখে, আর মৃত্যু হতে পারে ১৬ লাখ মানুষের। তবে আশার খবর হলো, কিছু নিয়ন্ত্রণযোগ্য ঝুঁকি কমিয়ে আনলে কোলন ক্যানসারের আশঙ্কা অনেকটাই হ্রাস করা সম্ভব। চলুন, জেনে নিই নিয়ন্ত্রণযোগ্য সেই ঝুঁকিগুলো— ১. অ্যালকোহল সেবন মদ্যপান অন্তত সাত ধরনের ক্যানসারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, এর মধ্যে কোলন ক্যানসারও রয়েছে। দীর্ঘদিন অ্যালকোহল খেলে ঝুঁকি ৩০ গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। ফলে যে কোনো ধরনের অ্যালকোহল পান বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের সহায়তা নিতে হবে। ২ . ধূমপান তামাক ব্যবহার বিশ্বব্যাপী ২৫ শতাংশ ক্যানসারজনিত মৃত্যুর জন্য দায়ী। দীর্ঘদিন ধূমপান করলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি ও মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। ফলে ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এবং প্রয়োজনে কাউন্সেলিং ও সহায়তা নেওয়া এর সমাধান। ৩. অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা অতিরিক্ত ওজন শুধু সৌন্দর্যের সমস্যা নয়, এটি ক্যানসারের অন্যতম বড় ঝুঁকি। স্থূলতা শরীরে প্রদাহ, কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং রক্তনালীর গঠনে প্রভাব ফেলে যা কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের মাধ্যমে অতিরিক্ত ওজন কমানো। ৪. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস লাল মাংস (গরু, খাসি, শুকর ইত্যাদি) ও প্রক্রিয়াজাত মাংস (হটডগ, সসেজ ইত্যাদি) দীর্ঘদিন খাওয়ার ফলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। এ ছাড়া উচ্চ তাপে ভাজা বা গ্রিল করা মাংসও ক্ষতিকর। অন্যদিকে শাকসবজি, ফল, আঁশযুক্ত শস্য বেশি খাওয়া এবং লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত খাবার সীমিত করাই এ সমস্যা সমাধান করতে পারে। ৫. অলস জীবনযাপন শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা কোলন ক্যানসারের বড় কারণ। নিয়মিত ব্যায়াম করলে এ ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যায়। সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট হালকা থেকে মাঝারি ব্যায়াম করা। হাঁটা, সাইকেল চালানো বা সিঁড়ি ব্যবহার করাও কার্যকর। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
সিঁড়ি দিয়ে টানা ওঠানামা করলে কি কোনও উপকার পাওয়া যায়, জেনে নিন

আজকের ব্যস্ত শহুরে জীবনে লিফট আর এসকেলেটর এতটাই হাতের কাছে যে, সিঁড়ি ব্যবহারের কথা অনেকেই ভাবেন না। অথচ প্রতিদিন কয়েক মিনিট সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করাই হতে পারে সবচেয়ে সহজ, সাশ্রয়ী এবং কার্যকর ব্যায়ামগুলোর একটি। নিয়মিত এই অভ্যাস শুধু কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যই উন্নত করে না, শরীরের পেশি গঠন, সহনশীলতা, এমনকি ওজন নিয়ন্ত্রণেও এনে দিতে পারে দারুণ পরিবর্তন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার কী কী উপকার রয়েছে, আর কারা এই ব্যায়ামটি বেশি সময় করা থেকে বিরত থাকবেন—চলুন জেনে নেওয়া যাক। ১. সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার শারীরিক উপকারিতা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা একটি ভারবহনকারী ব্যায়াম, যা পুরো শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে। ক. হৃদযন্ত্র ও ক্যালোরি খরচ কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য : সিঁড়ি বেয়ে ওঠা হৃদস্পন্দনকে দ্রুত বাড়িয়ে দেয়, যা হার্টকে শক্তিশালী করে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। এটি রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ক্যালোরি খরচ : দ্রুত হাঁটা বা জগিং করার চেয়ে সিঁড়ি বেয়ে উঠলে প্রতি মিনিটে বেশি ক্যালোরি খরচ হয়। এটি চর্বি কমাতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত কার্যকর। খ. পেশি গঠন ও হাড়ের স্বাস্থ্য পেশির কার্যকারিতা : সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় প্রধানত পা এবং নিতম্বের পেশিগুলো (কোয়াড্রিসেপস, হ্যামস্ট্রিংস, গ্লুটস) সক্রিয় হয়। এটি এই পেশিগুলোকে শক্তিশালী করে। হাড়ের ঘনত্ব : এটি একটি ভারবহনকারী ব্যায়াম হওয়ায় নিয়মিত অনুশীলন হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি কমায়। ২. কাদের এই কাজ বেশিক্ষণ করা উচিত নয়? যদিও সিঁড়ি ওঠা উপকারী, তবে কিছু নির্দিষ্ট শারীরিক পরিস্থিতিতে এই কাজ দীর্ঘক্ষণ ধরে বা উচ্চ তীব্রতায় করা ক্ষতিকর হতে পারে। শারীরিক অবস্থা বিপদ কেন পরামর্শ হাঁটুর সমস্যা সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় হাঁটুর জয়েন্টে শরীরের ওজনের প্রায় ৩ থেকে ৭ গুণ বেশি চাপ পড়ে। অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা হাঁটুর পুরোনো ব্যথা থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। হালকা ব্যায়াম বা সাঁতারের মতো বিকল্প বেছে নিন। গোড়ালি বা পায়ের পাতার আঘাত এই ধরনের ব্যায়াম গোড়ালি এবং পায়ের পাতার পেশি ও জয়েন্টের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। আঘাত সম্পূর্ণ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত সিঁড়ি ওঠা এড়িয়ে চলুন। তীব্র কার্ডিয়াক সমস্যা তীব্র হৃদরোগ বা গুরুতর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকলে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার কারণে হার্টের ওপর হঠাৎ অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে। হৃদরোগীরা বা যাদের অনিয়মিত হৃদস্পন্দন আছে, তাদের চিকিৎসকের ছাড়পত্র নিয়েই এই ব্যায়াম করা উচিত। ভারসাম্যহীনতা বা মাথা ঘোরা সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। ভারসাম্যহীনতার সমস্যা থাকলে সাবধানে সিঁড়ি ব্যবহার করা উচিত। প্রয়োজনে রেলিং ধরে ধীরে ধীরে হাঁটুন। কীভাবে এই অভ্যাস শুরু করবেন যদি আপনার কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা না থাকে, তবে প্রতিদিনের রুটিনে ছোট ছোট পরিবর্তন এনে এই অভ্যাস শুরু করতে পারেন: ধীরে শুরু করুন : প্রথমে দিনে ৫-১০ মিনিট সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করুন। গতি বাড়ান : একবার স্বচ্ছন্দবোধ করলে ধীরে ধীরে সময় এবং গতি বাড়ান। সঠিক জুতা : আঘাত এড়াতে ভালো গ্রিপযুক্ত আরামদায়ক জুতা পরে এই ব্যায়াম করুন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা হলো ক্যালোরি পোড়ানো, হৃদযন্ত্র শক্তিশালী করা এবং পেশি টোন করার একটি চমৎকার উপায়। তবে হাঁটুবা হৃদরোগের মতো সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া এই কাজ বেশি ক্ষণ ধরে করা উচিত নয়। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
গরম পানি নাকি ঠান্ডা পানি, কোনটা খাবেন

কেউ পছন্দ করেন বরফ ঠান্ডা পানি, কেউ আবার লেবু মিশিয়ে গরম পানি। আবার অনেকেই যা-ই পাই, তাই খেয়ে নেন। কিন্তু পানি গরম বা ঠান্ডা হলে কি শরীরের ওপর কোনো ভালো বা খারাপ প্রভাব পড়ে? এক গ্লাস পানি নিয়ে বসুন, আর গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ড. ব্রায়ান উইনার কী বলছেন, তা দেখে নিন। ঠান্ডা পানি বলতে কী বোঝায় চলুন জেনে নিই। এটা শুনতে সাধারণ মনে হলেও আসলে সবার ঠান্ডার অনুভূতি এক নয় - একজন যেখানে ঠান্ডায় কাঁপছেন, আরেকজন সেখানে গরম লাগছে। তাই ঠান্ডার একটা ধারণা জানা দরকার। ড. উইনার বলেন, ফ্রিজ থেকে বের করা বরফ-ঠান্ডা পানি সাধারণত ৪১°F (৫°C) এর মতো। কলের ঠান্ডা পানি প্রায় ৬০°F (১৫.৫°C)। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি প্রায় ৭৮°F (২৫.৫°C)। ঠান্ডা পানি কি ভালো? আপনি ভাবতে পারেন এ নিয়ে অনেক গবেষণা আছে, কিন্তু বাস্তবে তেমন নেই। ড. উইনার বলেন, ঠান্ডা পানি ভালো বা খারাপ - এ ব্যাপারে দৃঢ় বৈজ্ঞানিক তথ্য খুব কম। তিনি বলেন, ‘আমাদের শরীরের হাইড্রেট থাকা জরুরি, এটাই মূল বিষয়। পানি কত ঠান্ডা বা গরম হলে কী প্রভাব পড়ে, সে নিয়ে গবেষণা সীমিত।’ ঠান্ডা পানির সুবিধা তবে খেলোয়াড়দের নিয়ে হওয়া গবেষণায় দেখা গেছে, তারা সাধারণত ঠান্ডা কলের পানি বেশি পছন্দ করেন। এ ছাড়া ঠান্ডা কলের পানি শরীরকে দ্রুত ঠান্ডা করতেও সাহায্য করে। ড. উইনার বলেন, ঘাম থেমে যায় শরীর পানি পুরোপুরি শোষণ করার আগেই। শরীরে একটি রিফ্লেক্স আছে যা পানির উপস্থিতি অনুভব করে - এ রিফ্লেক্স ঠান্ডা পানিতে বেশি সক্রিয় হয়। বরফ খেলে ক্যালোরি কমে ড. উইনার নিজেই এ ব্যাপারে বেশ জানেন। কয়েক বছর আগে তিনি আইসক্রিম বাদ দিয়ে ইতালিয়ান আইস খেতে শুরু করেন। কিন্তু তিনি লক্ষ্য করলেন এক সমস্যা - ক্যালোরির হিসাব! বরফ গলাতে শরীর অতিরিক্ত ক্যালোরি ব্যয় করে, যা হিসাব করা হয় না। তিনি হিসাব করে দেখেন, প্রতি ১ আউন্স বরফ গলাতে শরীর প্রায় ৫ ক্যালোরি খরচ করে। তাই সংক্ষেপে, হাইড্রেট থাকতে চাইলে ঠান্ডা কলের পানি ভালো। কয়েক ক্যালোরি বেশি পোড়াতে চাইলে বরফ বা ইতালিয়ান আইস খেতে পারেন। আকালেশিয়া রোগে গরম পানি কি সাহায্য করে? আকালেশিয়া একটি বিরল অসুখ - যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখে ১ জন আক্রান্ত হন। এই অবস্থায় খাবার ও পানি পাকস্থলীতে নামতে সমস্যা হয়, কারণ খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর মাঝের যে পেশি (LES), তা ঠিকমতো খুলতে চায় না। একটি গবেষণায় দেখা গেছে - - গরম পানীয় বা গরম খাবার LES পেশিকে শিথিল করতে সাহায্য করতে পারে। - ঠান্ডা পানি আকালেশিয়ার উপসর্গ আরও খারাপ করতে পারে। তাহলে কোনটা ভালো- গরম নাকি ঠান্ডা পানি? অনেকে বলেন গরম পানি খেলে হজম ভালো হয় বা সর্দি-কাশিতে আরাম মেলে। কিন্তু ড. উইনারের মতে, গরম বা উষ্ণ পানি পান করার উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা খুব কম। তিনি বলেন, ‘গরম পানীয় মানুষের মনে আরাম দেয়, মনকে শান্ত করে। সর্দি লাগলে গরম ভাপ নাকে ঢুকে একটু আরাম দেয়, কিন্তু এটা হাইড্রেশনের ব্যাপার নয়। এটা ঠিক যেন মা গরম চিকেন স্যুপ দিচ্ছে, আরাম লাগে, কিন্তু চিকিৎসাগত দিক থেকে লাভ তেমন নেই।’ শেষ পর্যন্ত বিষয়টি মূলত ব্যক্তিগত পছন্দ। আপনার শরীর যেভাবে ভালো বোধ করে -গরম, ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি - সেভাবেই পান করুন। সূত্র : ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১২, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
পকেটে রাখা মোবাইলই কমাচ্ছে পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা!

প্রযুক্তি ছাড়া এক মুহূর্তও যেন চলে না আমাদের। অফিসের ব্যস্ততা হোক কিংবা বাড়ির অবসরে সময় কাটানো—দিনভর হাতে মোবাইল, কোলে ল্যাপটপ নিয়ে থাকা যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই অভ্যাসই হয়ে উঠতে পারে ভবিষ্যতের বড় বিপদের কারণ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, দীর্ঘ সময় ধরে পকেটে মোবাইল ফোন রাখা কিংবা কোলে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করার ফলে ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা। বাড়ছে বন্ধ্যত্বের আশঙ্কাও।   ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের জেনেটিক্স রিসার্চ ইউনিট এবং ইনস্টিটিউট অব রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন যৌথভাবে এ গবেষণা চালায়। ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী প্রায় ১২০০ পুরুষ অংশ নেন এই গবেষণায়। এতে দেখা গেছে, নিয়মিতভাবে মোবাইল পকেটে রাখা বা ল্যাপটপ কোলের ওপর রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করার ফলে শুক্রাণুর ঘনত্ব হ্রাস পাচ্ছে। শুধু তাই নয়, শুক্রাণুর গঠনে পরিবর্তন, গতিশীলতায় ঘাটতি এবং ডিএনএর ক্ষয়ক্ষতিও লক্ষ করা গেছে। গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি জানান, প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় মোবাইল ফোন পকেটে রাখা কিংবা ল্যাপটপ কোলের ওপর নিয়ে বসে থাকার অভ্যাস সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন ৩০ বছরের কম বয়সী যুবকরা। গবেষক সমুদ্র পাল জানান, যেসব তরুণের শরীরে নির্দিষ্ট ধরনের জেনেটিক মিউটেশন রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ক্ষতির আশঙ্কা আরও বেশি। এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের জীবনধারা, খাদ্যাভ্যাস, আসক্তি ও জেনেটিক গঠন বিশ্লেষণ করেই এমন ফল উঠে এসেছে বলে জানান তিনি।   বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তি ব্যবহারে আরও সচেতন না হলে ভবিষ্যতে প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে সংকটে পড়তে হতে পারে অনেককেই।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১২, ২০২৫ 0
বাণিজ্যিক টি-ব্যাগ থেকে নির্গত মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিক মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ছবি : সংগৃহীত
টি-ব্যাগ থেকে মানব দেহে মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিকের প্রবেশ

টি-ব্যাগে চা পানের অভ্যাস আমাদের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষ করে অফিস, বাসা বা বন্ধুদের আড্ডায় টি-ব্যাগের মাধ্যমে চা তৈরি করা অনেক সহজ ও সময়সাশ্রয়ী। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে, এই সুবিধার সঙ্গে একটি বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি জড়িয়ে আছে।   ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর ‘কেমোস্ফিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত বার্সেলোনার অটোনোমাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উঠে এসেছে, বাণিজ্যিক টি-ব্যাগ থেকে নির্গত মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিক মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। গবেষণায় আরও জানানো হয়, পলিমার বা প্লাস্টিক উপাদানে তৈরি টি-ব্যাগ থেকে চা বানানোর সময় লাখ লাখ ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা নির্গত হয়। এ ছাড়াও গবেষণায় ব্যবহৃত টি-ব্যাগগুলো বাজারে সহজলভ্য ব্র্যান্ড থেকে সংগ্রহ করা হলেও সেগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে এই ব্যাগগুলো তৈরি ছিল নাইলন-৬, পলিপ্রোপিলিন এবং সেলুলোজ দিয়ে। চা তৈরির সময় প্লাস্টিকের এসব উপাদান থেকে বিপুল সংখ্যক মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিক নির্গত হতে দেখা যায়। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে পলিপ্রোপিলিন : প্রতি মিলিলিটার চায়ের পানিতে ১.২ বিলিয়ন প্লাস্টিক কণা ত্যাগ করে। সেলুলোজ : ১৩৫ মিলিয়ন প্লাস্টিক কণা ত্যাগ করে। নাইলন-৬ : ৮.১৮ মিলিয়ন প্লাস্টিক কণা ত্যাগ করে। এই ক্ষুদ্র কণাগুলো মানুষের অন্ত্রের কোষ শোষণ করে রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ছড়িয়ে যেতে পারে। কীভাবে ক্ষতি হয়? গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, নির্গত এই প্লাস্টিক কণাগুলো মানুষের অন্ত্রের মিউকাস উৎপাদনকারী কোষে প্রবেশ করতে পারে। শুধু তাই নয়, এগুলো কোষের কেন্দ্রস্থল নিউক্লিয়াস পর্যন্ত পৌঁছে যায়। নিউক্লিয়াস হল কোষের জেনেটিক উপাদান নিয়ন্ত্রণকারী অংশ। প্লাস্টিক কণার এই ধরনের কার্যক্রম কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া বার্সেলোনার অটোনোমাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আলবা গার্সিয়া-রদ্রিগেজ বলেন, আমরা দূষণ কণাগুলোর উপস্থিতি নতুন প্রযুক্তি দিয়ে শনাক্ত করেছি। এর ফলে মানব দেহের ওপর এর প্রভাব আরও বিস্তারিতভাবে বোঝার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এটি ভবিষ্যতে নতুন গবেষণার ভিত্তি তৈরি করবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রভাব বাংলাদেশে বাণিজ্যিক টি-ব্যাগের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। সাধারণ চা বানানোর ঝামেলা এড়িয়ে সহজেই পান করার জন্য টি-ব্যাগ এখন অনেকের পছন্দ। তবে এই গবেষণার তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। বাংলাদেশের বাজারে যেসব টি-ব্যাগ সহজলভ্য, সেগুলোতেও এই ধরনের উপাদান থাকতে পারে। স্বাস্থ্যঝুঁকি কী কী হতে পারে? গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিকের কারণে শরীরে নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে, কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি, পরিপাকতন্ত্রের ক্ষতি, জেনেটিক উপাদান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মিউটেশনের ঝুঁকি, বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ এবং বিভিন্ন রোগ-বালাই ও দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের ঝুঁকি। কীভাবে ঝুঁকি এড়ানো যায়? টি-ব্যাগের পরিবর্তে বিশেষজ্ঞরা কিছু সহজ পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে পাতা চা ব্যবহার করা বা টি-ব্যাগের পরিবর্তে পাতা চা দিয়ে চা তৈরি করা। প্রাকৃতিক ছাঁকনি ব্যবহার করা যেমন : ধাতব বা কাপড়ের ছাঁকনি দিয়ে চা বানানো নিরাপদ। চায়ের টেকসই ব্র্যান্ড বাছাই করে পরিবেশবান্ধব উপাদান দিয়ে তৈরি টি-ব্যাগ ব্যবহার করা। টি-ব্যাগ ব্যবহারে সচেতনতা জরুরি। এ বিষয়ে গবেষকরা বলছেন, মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিকের মানব শরীরে প্রভাব নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। এই গবেষণাগুলো থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে নীতিমালা তৈরি হতে পারে, যা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস নিশ্চিত করবে। চা আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হলেও এর নিরাপদ উপভোগ নিশ্চিত করতে সচেতন হওয়া জরুরি। টি-ব্যাগের পরিবর্তে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চা বানানোর অভ্যাস গড়ে তোলা হলে এই ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১২, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা দ্রুত কমছে, ঝুঁকিতে চিকিৎসা

দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা আশঙ্কাজনক হারে কমছে। এক বছরের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চিকিৎসা নিতে আসা প্রতি চার রোগীর একজনের দেহে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে, যার বেশির ভাগই অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী। এর ফলে সাধারণ সংক্রমণও জটিল হয়ে উঠছে এবং মৃত্যুঝুঁকিও বাড়ছে।   বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে উপস্থাপিত ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) প্রতিবেদন ২০২৪-২৫’-এ এই পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য ছিল এখনই পদক্ষেপ নিন, বর্তমানকে রক্ষা করুন, ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করুন। গত এক বছরে ৪৬ হাজার ২৭৯টি রোগীর নমুনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বহুল ব্যবহারযোগ্য সিপ্রোফ্লোক্সাসিন, অ্যামোক্সিসিলিন, সেফট্রিয়াক্সোন ও জেন্টামাইসিন থেকে শুরু করে মেরোপেনেম ও টিগেসাইক্লিনের মতো শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকও বহু ক্ষেত্রে কার্যকারিতা হারাচ্ছে। ২৪ শতাংশ নমুনায় (১১ হাজার ১০৮টি) জীবাণু শনাক্ত হয়; এর বড় অংশই উচ্চ প্রতিরোধী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে গবেষকরা জানান, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাকের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ও নির্বিচার ব্যবহারের কারণে রেজিস্ট্যান্স দ্রুত বাড়ছে। ফলে সাধারণ ওষুধে সাড়া না দেওয়ায় চিকিৎসা দীর্ঘায়িত হচ্ছে, জটিলতা বাড়ছে এবং কিছু ক্ষেত্রে রোগীর জীবনের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সকে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের অন্যতম বড় হুমকি উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলেন, অযথা অ্যান্টিবায়োটিক সেবন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে ওষুধ খাওয়া, অসম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণ এবং প্রাণিসম্পদ খাতে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার এসব কারণেই জীবাণুগুলো দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠছে। একসময় যে রোগ সহজেই সেরে যেত, এখন তা অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসার খরচ বাড়ছে, আইসিইউ ভর্তি ও মৃত্যুর হারও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে মানবজাতি আবার সেই সময়ের মুখোমুখি হতে পারে যখন মানুষ ব্যাকটেরিয়ার কাছে পরাস্ত হতো। পার্থক্য শুধু একটাই এবার ওষুধ থাকবে, কিন্তু তা জীবাণুর বিরুদ্ধে কোনো কাজ করবে না।   এএমআরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সচেতনতা, সঠিক চিকিৎসা-নীতি, দায়িত্বশীল ওষুধ ব্যবহার এবং গবেষণা সবকিছুকে সমন্বিতভাবে এগিয়ে নিতে হবে বলে মত দেন বক্তারা। তাদের মতে, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখোমুখি হতে হবে।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ০৯, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
ডেঙ্গুতে চার শতাধিক মানুষের প্রাণহানি

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট মৃত্যু দাঁড়িয়েছে ৪০১ জনে। একই সময়ে নতুন করে ৪২১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এতে চলতি বছরে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯৮ হাজার ৭০৫ জন।   মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে দুজন ঢাকা দক্ষিণের বাসিন্দা এবং একজন বরিশাল বিভাগের অন্তর্ভুক্ত এলাকার বাসিন্দা। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দা রয়েছেন। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২৮ জন রোগী চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে মোট ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৬ হাজার ৭৬০ জনে।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ০৯, ২০২৫ 0
ডেস্কে বসে কাজ করছেন? যেসব লক্ষণে বুঝবেন ওজন বাড়ছে

সারাদিন ডেস্কে বসে কাজ করেন, অথচ খাওয়াদাওয়া তেমন না বদলালেও কি হঠাৎ ওজন বাড়তে শুরু করেছে? শরীর ভারী লাগে, ক্লান্তি পিছু ছাড়ে না? অনেকেই ভাবেন, শুধু ব্যায়াম করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আসল সমস্যা লুকিয়ে আছে দিনের বেশিরভাগ সময় একই ভঙ্গিতে বসে থাকার মধ্যেই। কেন ডেস্কে বসে কাজ করলে ওজন বাড়ে? ডায়েটিশিয়ান ও ডায়াবেটিস এডুকেটর কানিকা মালহোত্রা বলেন, দীর্ঘসময় বসে থাকলে শরীরের মেটাবলিজম ধীর হয়ে যায়। ফলে শরীর কম ক্যালরি পুড়ায়, ফ্যাট জমতে থাকে, আর শক্তির ব্যবহার কমে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকলে শরীরের ‘মেটাবলিক ফ্লেক্সিবিলিটি’ কমে- মানে শরীর কার্বোহাইড্রেট আর ফ্যাটের মধ্যে শক্তির উৎস বদলাতে পারে না। এর ফলে- - রক্তে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট হয় ডেস্কে বসে কাজ করছেন? যেসব লক্ষণে বুঝবেন ওজন বাড়ছে অ্যালার্মে ঘুম ভাঙে? অজান্তেই বাড়াচ্ছেন শরীরের চাপ - ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়ে - হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে তাই তিনি পরামর্শ দেন, ২০-৩০ মিনিট পর পর কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকা বা হাঁটা খুব জরুরি। ডেস্কে বসে কাজেই ওজন বাড়ছে, এটা বুঝবেন যেভাবে বিশেষজ্ঞরা জানান, নিচের ৬টি লক্ষণ দেখলে সতর্ক হোন— পেটের চারপাশে চর্বি জমছে সারাদিন বসে থাকার কারণে ক্যালরি পোড়ে কম, আর ফ্যাট জমে পেটের আশপাশে। রক্তচাপ বাড়ছে অনেকক্ষণ এক ভঙ্গিতে বসলে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়, রক্তচাপ বাড়তে পারে। রক্তে শর্করা বেড়ে যাচ্ছে নড়াচড়া কম হলে শরীর গ্লুকোজ ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না—ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। কোলেস্টেরল বৃদ্ধি লম্বা সময় বসে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ায়, হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে। সবসময় ক্লান্তি লাগে ধীর মেটাবলিজমের কারণে সারাদিন শরীর ভারী লাগে, শক্তি কমে যায়। মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়া পা ও কোমরের পেশি ব্যবহার না হলে সেগুলো দুর্বল হয় - ফলাফল, আরও ধীর বিপাকক্রিয়া। সমাধান : ছোট অভ্যাসেই বড় পরিবর্তন কানিকা মালহোত্রার মতে, ডেস্ক জব থাকলেই যে অসুস্থ হতেই হবে, তা নয়—অল্প কিছু অভ্যাস পাল্টালেই অনেক সুবিধা : - প্রতি ঘণ্টায় ৫ মিনিট হাঁটুন বা স্ট্রেচ করুন - রাতের ভারী খাবার কমান, সকালে পুষ্টিকর খাবার খান - ঠিক ভঙ্গিতে বসুন, পিঠ সোজা রাখুন ডেস্কারসাইজ করুন : চেয়ার স্কোয়াট, সিটেড লেগ লিফট, হালকা হ্যান্ড এক্সারসাইজ আজকের কর্মজীবনে দীর্ঘসময় ডেস্কে বসে থাকা এড়ানো কঠিন। কিন্তু সচেতন থাকলে এই অভ্যাসের ক্ষতি কমানো সম্ভব। দিনের মাঝে ছোট হাঁটা, নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাবার আর ভালো ঘুম - এগুলোই আপনার শরীরের বিপাক ঠিক রাখবে, আর ওজনও থাকবে নিয়ন্ত্রণে। সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
থাইরয়েডের যেসব লক্ষণ অবহেলা করবেন না

ব্যস্ত জীবন, কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের চাপ, মানসিক ক্লান্তি এবং পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব এখন অনেকেরই নিত্যদিনের সঙ্গী। কথায় কথায় রেগে যাওয়া বা সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগা নতুন কিছু নয়। কিন্তু আপনি কি এই উপসর্গগুলোকে অবহেলা করছেন? কারণ এর আড়ালেও লুকিয়ে থাকতে পারে গুরুত্বপূর্ণ কোনো রোগের ইঙ্গিত।   ডায়াবেটিসের মতোই থাইরয়েডের সমস্যাও আজকাল বাড়ছে। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোন আমাদের শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। কোনো কারণে এই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে এবং নানা সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমানে হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism) একটি খুব সাধারণ সমস্যা। চিকিৎসকদের মতে, থাইরয়েডের লক্ষণগুলো শুরুতে খুব স্পষ্টভাবে বোঝা যায় না। অনেক সময় রোগীরা বুঝতেই পারেন না যে সমস্যার মূল কারণ থাইরয়েড। কারণ এসব উপসর্গ অন্য কারণেও দেখা দিতে পারে। তাই শরীরে ছোটখাটো পরিবর্তন এলেই সতর্ক হওয়া এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।   যে লক্ষণগুলো অবহেলা করা একেবারেই উচিত নয় বিশ্রামের পরেও ক্লান্তি পর্যাপ্ত ঘুম বা বিশ্রামের পরেও যদি ক্লান্তিভাব না কাটে, কিংবা সামান্য পরিশ্রমেই যদি হাঁপিয়ে ওঠেন—তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এটি থাইরয়েডের সমস্যার একটি লক্ষণ হতে পারে।   হঠাৎ মেজাজ বদল মানসিক চাপ থাকলে মেজাজ খারাপ থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু হঠাৎ করে কথায় কথায় খিটখিটে হয়ে উঠলে, বা সামান্য কারণেও রাগ বেড়ে গেলে এবং এই অবস্থা কয়েকদিন ধরে চলতে থাকলে থাইরয়েড পরীক্ষা করানো জরুরি।   ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি ডায়েট না করেও যদি হঠাৎ ওজন কমে যায় বা বেড়ে যায়, তবে এটি অসুস্থতার ইঙ্গিত হতে পারে। শুধু থাইরয়েড নয়, ডায়াবেটিসের কারণেও এমনটা হতে পারে। তাই এই উপসর্গ দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।   অতিরিক্ত চুল পড়া হঠাৎ করে গোছা গোছা চুল পড়া শুধু অযত্নের কারণে হয় না। চুল পড়া এবং ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া থাইরয়েডের সমস্যার অন্যতম লক্ষণ হতে পারে।   অনিয়মিত মাসিক (ঋতুস্রাব) মহিলাদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিকের কারণ হতে পারে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া। ওজন বাড়া বা কমা, চুল পড়া এবং অনিয়মিত মাসিক এই লক্ষণগুলো একসঙ্গে দেখা দিলে দেরি না করে থাইরয়েডের মাত্রা পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।   গলার স্বর এবং তাপমাত্রা সংবেদনশীলতা বয়ঃসন্ধিকালে গলার স্বর বদলানো স্বাভাবিক হলেও, অন্য সময় হঠাৎ গলা ভেঙে যাওয়া বা স্বরের পরিবর্তন হলে সতর্ক হতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ আবহাওয়াতেও যদি অস্বাভাবিকভাবে খুব বেশি গরম বা ঠান্ডা লাগে, সেটিও স্বাভাবিক নয়। এই লক্ষণগুলোর যেকোনোটি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে থাইরয়েডের মাত্রা যাচাই করুন। সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে সুস্থ থাকা সম্ভব।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫ 0
পুরুষ বন্ধ্যত্ব কেন হয়, সমাধান কী

পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা বা গতি কমে গেলে, কিংবা কখনো বীর্যে কোনো শুক্রাণুই শনাক্ত না হলে এবং স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নিয়মিত সহবাস করার পরও এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হলে ওই অবস্থাকে পুরুষ বন্ধ্যত্ব বা মেল ইনফার্টিলিটি বলা হয়। সব বন্ধ্যত্ব-দম্পতির ক্ষেত্রে ৩০-৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষজনিত কারণই দায়ী। সব বন্ধ্যত্ব-দম্পতির ক্ষেত্রে ৩০-৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষজনিত কারণই দায়ী কারণ ● অতিরিক্ত ধূমপান করা। ● অ্যালকোহল, নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করা। ● কম সক্রিয় জীবনযাপন। ● ওজনাধিক্য। ● অতিরিক্ত স্ট্রেস। ● হরমোনজনিত সমস্যা (টেস্টোস্টেরন, থাইরয়েড, প্রোলাকটিন)। ● জিনগত কারণ। ● সংক্রমণ যেমন ক্ল্যামাইডিয়া, গনোরিয়া ইত্যাদি।  ● শুক্রনালির ব্লকেজ। ● অণ্ডকোষের টিউমার, ভেরিকোসিলি, মামস অরকাইটিস। ● দীর্ঘ সময় গরম আবহাওয়ায় কাজ করা। কীভাবে শনাক্ত করা হয়  বীর্য পরীক্ষার মাধ্যমে পুরুষ বন্ধ্যত্ব শনাক্ত করা সম্ভব। এর নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। তিন দিন সহবাস বন্ধ রেখে বীর্য পরীক্ষা করতে হবে। একটি বীর্য পরীক্ষার রিপোর্ট যদি খারাপ আসে তাহলে এক মাস পরে আরেকটি বীর্য পরীক্ষা করতে হবে। সেটিও যদি খারাপ আসে তাহলে অণ্ডকোষের আলট্রাসনোগ্রাফি ও হরমোন পরীক্ষা করতে হবে।  যা করতে হবে ওজন কমানো, প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটাচলা করা, সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া, তৈলাক্ত ও চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা। স্ট্রেস কমানো এবং রাতে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা। ধূমপান, মদ্যপান পরিহার করা। শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতির উন্নতির জন্য কিছু মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট দেওয়া হয়। যেমন লেবোকারনিটিন, ভিটামিন সি, ই, ডি, বি কমপ্লেক্স, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড।  তিন মাস পর্যবেক্ষণের পর যদি শুক্রাণুর সংখ্যার উন্নতি না হয়, তাহলে ইন্ট্রাইউটেরাইন ইনসেমিনেশন বা আইভিএফ/ইকসি করা যেতে পারে। ভেরিকোসিলি (অণ্ডকোষের শিরা ফুলে যাওয়া) বা শুক্রনালি বন্ধ। এ-জাতীয় সমস্যা থাকলে অনেক ক্ষেত্রে সার্জারি লাগতে পারে। হরমোনজনিত সমস্যা থাকলে এর চিকিৎসা করতে হবে। যদি শুক্রাণুর সংখ্যা বা গতির মাঝারি ধরনের সমস্যা থাকে, তবে সাধারণত আইইউআই এবং যদি শুক্রাণুর সংখ্যা বা গতির অনেক বেশি সমস্যা থাকে তবে ইকসি করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে বীর্যে কোনো শুক্রাণুই পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পারমিয়া বলা হয়, সে ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে শুক্রাণু নিয়ে ইকসি করা হয়।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৬, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
ডেঙ্গুতে এক দিনে ৫ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ৪৯০

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে ৪৯০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯১ জনে, আর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯৬ হাজার ৬৭ জন।   চলতি বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে নভেম্বর মাসে, মোট ১০৪ জন। তার আগে অক্টোবর মাসে ৮০ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। অগাস্টে ৩৯ জন, জুলাইয়ে ৪১ জন, জুনে ১৯ জন, মে মাসে তিনজন, এপ্রিলে সাতজন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন এবং জানুয়ারিতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মার্চ মাসে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। আক্রান্তের দিক থেকে জানুয়ারিতে ১,১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন এবং মে মাসে ১,৭৭৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জুন মাসে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫,৯৫১ জনে দাঁড়ায়, অগাস্টে ১০,৪৯৬ জন, সেপ্টেম্বরে ১৫,৮৬৬ জন, অক্টোবরে ২২,৫২০ জন এবং নভেম্বরে ২৪,৫৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হন।   ক্রমাগত সংক্রমণ ও মৃত্যুর এই বৃদ্ধি দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
থাইরয়েড ক্যানসারের ৫টি নীরব লক্ষণ

গলার ঠিক নিচে প্রজাপতির মতো আকৃতির যে ছোট গ্রন্থিটি রয়েছে, সেটিই থাইরয়েড। শরীরের হার্ট রেট, রক্তচাপ, তাপমাত্রা থেকে শুরু করে পুরো মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণে রাখে এই ক্ষুদ্র অঙ্গটি। কিন্তু যখন এর কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করে, তখনই দেখা দেয় থাইরয়েড ক্যানসার।   সমস্যা হলো এই ক্যানসারের লক্ষণগুলো সাধারণ অসুস্থতার মতোই হওয়ায় অনেকেই মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছরও বুঝতে পারেন না যে শরীরের ভেতরে নীরবে এক রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। যাদের লক্ষণ দেখা দেয়, তাদের ক্ষেত্রেও বেশিরভাগ সময় এসবকে অ্যাসিডিটি, ভাইরাল সংক্রমণ, থাইরয়েড ইনফ্লামেশন বা স্রেফ গলার সাধারণ সমস্যা ভেবে ভুল করা হয়। ফলে দেরিতে হয় রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসাও। বিশেষজ্ঞদের মতে, সময়মতো লক্ষণগুলো নজরে আনতে পারলে থাইরয়েড ক্যানসার খুব সহজেই শনাক্ত ও চিকিৎসা করা সম্ভব। তাই নিচের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি লক্ষণ দীর্ঘদিন থাকলে অবহেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত— ১) গলার সামনে গাঁট বা ফোলাভাব থাইরয়েড ক্যানসারের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো গলার ঠিক সামনের দিকে একটি গাঁট বা অস্বাভাবিক ফোলাভাব দেখা দেওয়া। এটি সাধারণত ব্যথাহীন হয়, এজন্য অনেকেই সর্দিজনিত লিম্ফ নোড ভেবে ভুল করেন। তবে গাঁটটি যদি শক্ত হয়, স্থায়ী থাকে এবং সময়ের সঙ্গে বড় হতে থাকে, তাহলে অবহেলা করা বিপজ্জনক। ২) গলায় বা কানের দিকে ব্যথা গলার সামনে চাপ, ধরা ধরা ব্যথা বা অস্বস্তি, যা কখনো কানের দিকেও ছড়িয়ে পড়তে পারে এটি ও একটি গুরুত্বপূর্ণ সূক্ষ্ম লক্ষণ। এটি সাধারণ পেশির ব্যথার মতো নয়; বরং থাকে দীর্ঘসময়। ৩) স্বরভঙ্গ বা কণ্ঠস্বর পরিবর্তন থাইরয়েড গ্রন্থি স্বরযন্ত্রের খুব কাছাকাছি হওয়ায় কোনো টিউমার তৈরি হলে স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ে এবং কণ্ঠস্বর বদলে যেতে পারে। ঠান্ডা-কাশি বা চিৎকার ছাড়া তিন সপ্তাহের বেশি স্বরভঙ্গ থাকলে অবশ্যই পরীক্ষা করা জরুরি। ৪) গিলতে বা শ্বাস নিতে অসুবিধা খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া, গলায় কিছু আটকে থাকার অনুভূতি বা শ্বাস নিতে হালকা সমস্যা এসবই হতে পারে টিউমার বড় হওয়ার লক্ষণ। টিউমার খাদ্যনালি বা শ্বাসনালির ওপর চাপ ফেললে এ সমস্যা দেখা দেয়, যা অনেকেই অ্যাসিডিটি বা গলার প্রদাহ ভেবে এড়িয়ে যান। ৫) স্থায়ী শুকনো কাশি কোনো সর্দি-কাশি বা অ্যালার্জি ছাড়াই দীর্ঘসময় শুকনো কাশি থাকা থাইরয়েড ক্যানসারের আরেকটি সম্ভাব্য লক্ষণ। টিউমার শ্বাসনালির ওপর চাপ দিলে বা থাইরয়েডের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হলে এই কাশি দেখা দিতে পারে।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০১, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দুজনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ৬১০

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু জ্বরে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬১০ জন নতুন রোগী। এতে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮৪ জনে এবং মোট শনাক্ত রোগী সংখ্যা হয়েছে ৯৫ হাজার ১২ জন।   স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৫২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২২ জন, ঢাকা বিভাগে ৮১ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১০২ জন, খুলনা বিভাগে ৩১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৭ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন এবং সিলেট বিভাগে ৬ জন রয়েছেন। মৃত্যুবরণ করা দুজনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দা। এ সময়ে ৫৯৩ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন। ফলে চলতি বছর মোট সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯২ হাজার ৬১৮ জনে।   তুলনামূলকভাবে দেখা যায়, ২০২৪ সালে দেশে মোট ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল এবং মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের। এর আগের বছর ২০২৩ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭০৫ জনের।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০১, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
আজ বিশ্ব এইডস দিবস

বিশ্ব এইডস দিবস প্রতিবছর ১ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। ১৯৮৮ সাল থেকে এ দিবসটি এইচআইভি/এইডস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, আক্রান্তদের প্রতি সহমর্মিতা এবং এই রোগে মৃত্যুবরণকারীদের স্মরণ করার উদ্দেশ্যে উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে। ২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য হলো বাধা অতিক্রম করা, এইডস প্রতিক্রিয়া রূপান্তর করা।   এইডস হলো হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস বা এইচআইভি দ্বারা সৃষ্ট একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যা ধীরে ধীরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। ভাইরাসটি টি-কোষ আক্রমণ করে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে ফেলে এবং পর্যায়ক্রমে দেহ বিভিন্ন সংক্রমণ ও জটিল রোগ প্রতিরোধে অক্ষম হয়ে পড়ে। যখন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে যায়, তখনই এইডসের লক্ষণ প্রকাশ পায়। এইচআইভি সংক্রমণের প্রধান কারণ হলো আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে অনিরাপদ যৌনসম্পর্ক, দূষিত রক্ত বা রক্তজাত পণ্য গ্রহণ, মাদক গ্রহণকারীদের মধ্যে একই সুচ পুনঃব্যবহার, এবং আক্রান্ত মা থেকে গর্ভাবস্থা, প্রসব কিংবা বুকের দুধের মাধ্যমে শিশুর শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ। তবে দৈনন্দিন সামাজিক আচরণ যেমন আলিঙ্গন, হাত মেলানো, একই টয়লেট বা থালাবাসন ব্যবহার করা কিংবা মশা বা পোকামাকড়ের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায় না। গবেষণায় ধারণা করা হয়, ১৯২০ এর দশকে পশ্চিম আফ্রিকার শিম্পাঞ্জি থেকে মানুষের মধ্যে প্রথম এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। শিকার করা এবং মাংস খাওয়ার মাধ্যমে এই আন্তঃপ্রজাতি সংক্রমণ শুরু হয়। পরবর্তী কয়েক দশক ধরে ভাইরাসটি আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে এবং পরে বিশ্বের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে, যদিও দীর্ঘ সময় ধরে এটি চিকিৎসকদের নজরের বাইরে ছিল। বাংলাদেশে ১৯৮৯ সালে প্রথম এইচআইভি রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১২,৪২২ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে এবং এ সময়ে ২,২৮১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। দেশে বর্তমানে প্রায় ১৬,৮৬৩ জন আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ১,৪৩৮ এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৯৫ জন। সাধারণ জনগোষ্ঠীতে সংক্রমণের হার ০.১ শতাংশের নিচে থাকলেও কিছু ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীতে এ হার তুলনামূলকভাবে বেশি। উন্নত চিকিৎসা ও সচেতনতার কারণে মৃত্যুহার কমছে।   বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে এইডসকে একটি মানবিক ও জনস্বাস্থ্য বিষয় হিসেবে দেখা হয়। ধর্মীয় নেতারা বৈষম্যহীন আচরণ, সঠিক তথ্য প্রচার এবং আক্রান্তদের সহায়তার গুরুত্ব তুলে ধরেন। আজ রক্ত সঞ্চালনের আগে বাধ্যতামূলক রক্ত পরীক্ষা এবং উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে গেছে। এইচআইভি/এইডস বর্তমানে নিয়ন্ত্রিত দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এর প্রতিরোধে বিশ্বজুড়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সচেতনতা এবং নিরাপদ জীবনধারা অনুসরণই এই ভাইরাস প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। আক্রান্তদের প্রতি সহানুভূতি ও সহযোগিতা তাদের চিকিৎসা ও সুস্থ জীবনে ফিরে যাওয়ার পথ সহজ করে তোলে।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০১, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
চায়ের সঙ্গে ভুলেও খাবেন না এই ৫ খাবার

বাংলাদেশে সকাল-বিকেলের আড্ডা, বাসার অতিথি আপ্যায়ন কিংবা অফিসের বিরতি— প্রায় সবকিছুতেই চায়ের উপস্থিতি অবধারিত। শুধু পানীয় নয়, চা আমাদের নিত্যদিনের অভ্যাস এবং সংস্কৃতিরও অংশ। অনেকেই চায়ের সঙ্গে বিস্কুট, টোস্ট, সামোসা বা পকোড়া খেয়ে থাকেন। তবে জানেন কি— চায়ের সঙ্গে সব খাবার মানানসই নয়? কিছু খাবার শরীরের ক্ষতি করতে পারে, আবার কিছু খাবার চায়ের স্বাদ-গন্ধও নষ্ট করে দেয়।   টাইমস অব ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, চায়ের সঙ্গে নিচের ৫ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো— ১. অতিরিক্ত ঝাল বা তীব্র স্বাদের খাবার যেসব খাবারে বেশি মসলা, ঝাল বা গন্ধ থাকে— সেগুলো চায়ের সূক্ষ্ম স্বাদকে ঢেকে ফেলে। রসুন, পেঁয়াজ, অত্যধিক মসলাদার ভাজি কিংবা চিলি ফ্লেভারড খাবার চায়ের আরামদায়ক স্বাদ-সুগন্ধ নষ্ট করে দেয়। ২. অতিরিক্ত টক বা অ্যাসিডিক খাবার লেবু, কমলা, আনারসের মতো অ্যাসিডিটিসমৃদ্ধ খাবার চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (ক্যাটেচিন) শোষণে বাধা সৃষ্টি করে। চায়ের স্বাস্থ্যগুণ পেতে চাইলে এই ধরনের খাবার একসঙ্গে না খাওয়াই ভালো। ৩. ডেইরি আইটেম দুধ বা ক্রিম চায়ের পলিফেনলকে নিরপেক্ষ করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। যদিও কালো চায়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি কম প্রভাব ফেলে এবং অনেকেই দুধ চা উপভোগ করেন, তবু স্বাস্থ্যের দিক থেকে এটি খুব ভালো সমন্বয় নয়। ৪. অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার কেক, চকলেট, বিস্কুট বা মিষ্টি জাতীয় খাবার চায়ের সঙ্গে মানালেও অতিরিক্ত চিনি শরীরে ইনস্ট্যান্ট শর্করার ঝাঁকুনি দেয়, যা দ্রুত ক্লান্তি বা ‘এনার্জি ক্র্যাশ’ তৈরি করে। তাই মিষ্টি খাবার খেলে পরিমাণে সংযম জরুরি। ৫. ভাজাপোড়া বা তেল-চর্বিযুক্ত খাবার সিঙ্গারা, পিঁয়াজু, ফুচকা বা পকোড়া— এসব খাবার সুস্বাদু হলেও খুব তেল-চর্বিযুক্ত। এগুলো হজমে বেশি সময় নেয় এবং চায়ের সঙ্গে খেলে শরীরে বাড়তি অস্বস্তি ও ভারীভাব তৈরি করতে পারে। সঠিক সমন্বয় কী হতে পারে? চায়ের সঙ্গে খুব ভারী বা তীব্র খাবারের বদলে হালকা স্ন্যাকস, লো-সুগার বিস্কুট, হোল-গ্রেইন টোস্ট অথবা ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার বেশি উপযোগী। এগুলো চায়ের স্বাদও বজায় রাখবে এবং ক্যাফেইনের প্রভাবও ব্যালান্স করবে। সবশেষে, চায়ের সঙ্গে কী মানাবে আর কী মানাবে না— এটি ব্যক্তিগত পছন্দের ওপরও নির্ভর করে। তবে স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করলে উপরের পাঁচ ধরনের খাবার চায়ের সঙ্গে না খেলেই ভালো।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০১, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
ডেঙ্গুতে আরও ৫৭২ জনের হাসপাতালে ভর্তি

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ৫৭২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু না হওয়ায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩৭৭ জনেই স্থির রয়েছে। শনিবার (২৯ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশে মোট ৯৩ হাজার ৭৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে ডেঙ্গু জনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে ৩৭৭ জনের। এছাড়া ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং ওই বছর মোট ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

মোঃ ইমরান হোসেন নভেম্বর ২৯, ২০২৫ 0
Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

Top week

ওসমান হাদি এখন কোমায় আছেন : চিকিৎসক
সর্বশেষ

ওসমান হাদি এখন কোমায় আছেন : চিকিৎসক

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫ 0