রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে চান। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
এরদোয়ান আশা প্রকাশ করেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি স্থাপন খুব দূরে নয়। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) তুর্কমেনিস্তানে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, 'শান্তি খুব দূরে নয়; আমরা তা দেখতে পাচ্ছি'।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ‘'ব্যাপক শান্তি প্রচেষ্টা’' মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এরদোয়ান ইউক্রেন শান্তি প্রচেষ্টায় তুরস্কের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বৈঠকে পুতিনকে এরদোয়ান বলেছেন, জ্বালানি স্থাপনা ও বন্দর কেন্দ্র করে সীমিত যুদ্ধবিরতি সব পক্ষের জন্য উপকারী হতে পারে। তিনি বলেন, কৃষ্ণসাগরকে যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে দেখা উচিত নয়। নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিত করা জরুরি, যা রাশিয়া ও ইউক্রেন—উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
শাহেদ-১৩৬ ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি একটি ড্রোন, যা নীরবে ড্রোন যুদ্ধের প্রচলিত নিয়মকানুন নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে। এই ড্রোনের আবির্ভাব বিশ্বজুড়ে সামরিক শক্তিগুলোকে যুদ্ধক্ষেত্রে আধিপত্য, কৌশল ও ব্যয়ের ভারসাম্য নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। দীর্ঘদিন ধরে বৈশ্বিক অস্ত্রবাজারে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার মতো পরাশক্তিরা সামরিক উদ্ভাবনের নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। তবে ইরানের তৈরি শাহেদ-১৩৬ লয়টারিং মিউনিশন সেই প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। আকারে ছোট, তুলনামূলকভাবে কম খরচের এবং প্রযুক্তির প্রদর্শনের চেয়ে বাস্তব কার্যকারিতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নির্মিত এই ড্রোন আধুনিক যুদ্ধের অর্থনীতি ও কৌশলগত বাস্তবতাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। স্থানীয়ভাবে নির্মিত একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পরিণত হওয়ার এই দ্রুত উত্থান বিশ্বের শীর্ষ সামরিক শিল্পগুলোকে সরাসরি অনুকরণ ও বিপরীত-প্রকৌশলের পথে হাঁটতে বাধ্য করেছে। এটি বৈশ্বিক কৌশলগত হিসাবের এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে শাহেদ-১৩৬ এর নকশাগত দর্শন। মাত্র ৫০ হর্সপাওয়ারের একটি সাধারণ পিস্টন ইঞ্জিন, প্রায় ৪০ কেজি ওয়ারহেড বহনের সক্ষমতা এবং আনুমানিক দুই হাজার কিলোমিটার পাল্লা সবকিছু মিলিয়ে এটি এমন এক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন, যেখানে জটিলতার বদলে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও পুনরাবৃত্তিযোগ্য কার্যকারিতাই মুখ্য। প্রতি ইউনিট ড্রোনের আনুমানিক মূল্য মাত্র ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডলার হওয়ায় এটি একটি বড় অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কারণ, তুলনামূলকভাবে বহু গুণ বেশি দামের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে এমন ড্রোন প্রতিহত করতে হয়। উৎপাদনের কম খরচ ও প্রতিরোধের বেশি খরচ এই অসম সমীকরণ ইরানকে বৈশ্বিক ড্রোন যুদ্ধে একটি অনন্য অবস্থানে তুলে এনেছে। শাহেদ ড্রোনের প্রভাবের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো যেসব পরাশক্তি একসময় ইরানকে গৌণ বা প্রান্তিক শক্তি হিসেবে বিবেচনা করত, তারাই এখন এই ড্রোন গ্রহণ, অধ্যয়ন ও অনুকরণে বাধ্য হচ্ছে। ইরানি মডেলের কাছাকাছি দামে তৈরি, ঝাঁকবদ্ধ হামলার উপযোগী নতুন ড্রোন ব্যবস্থার উদ্ভব খরচ-সাশ্রয়ী যুদ্ধ ধারণার প্রতি বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। বিশ্বের অন্যতম উন্নত ড্রোন উন্নয়নকারী শক্তিগুলোর একটি রাশিয়া তার নিজস্ব সংস্করণে শাহেদের ধারণা অন্তর্ভুক্ত করেছে। উন্নত ইঞ্জিন, রাডার এড়িয়ে যাওয়ার উপকরণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সক্ষমতা ও অ্যান্টি-জ্যামিং প্রযুক্তির সংযোজন এই ড্রোনকে বহু স্তরবিশিষ্ট বিমান-প্রতিরক্ষা পরিবেশে কার্যকর করে তুলেছে। নিজস্ব বিস্তৃত ইউএভি কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও, শাহেদ-ভিত্তিক এই প্ল্যাটফর্ম রাশিয়ার অস্ত্রাগারের একটি গুরুত্বপূর্ণ শূন্যস্থান পূরণ করেছে। চীনও এই প্রবণতা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকেনি। ডেল্টা-উইং কাঠামো এবং মিশন প্রোফাইলে শাহেদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ ড্রোনের পরীক্ষামূলক ব্যবহার এই ধারণার প্রতি আগ্রহেরই বহিঃপ্রকাশ। শাহেদ-১৩৬ এর উদ্ভাবন এবং একে ঘিরে চীন ও রাশিয়ার ড্রোন উন্নয়ন বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে একটি গভীর দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। একদিকে রয়েছে বিপুল সামরিক বাজেট, দীর্ঘ ক্রয়চক্র ও প্রাতিষ্ঠানিক জড়তা; অন্যদিকে রয়েছে কম খরচে দ্রুত উৎপাদনযোগ্য, যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যকর সমাধান। নানা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও স্বনির্ভরতাকে অগ্রাধিকার দিতে বাধ্য ইরান এমন একটি ড্রোন মডেল তৈরি করেছে, যা কার্যকারিতা, স্কেলেবিলিটি ও বাস্তব যুদ্ধ-ব্যবহারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। এই অর্থে শাহেদ-১৩৬ কেবল একটি ড্রোন নয়; এটি দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা আর্থিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করতে পারে। এই ড্রোনের ব্যাপক প্রতিলিপি আধুনিক যুদ্ধে একটি বৃহত্তর বিবর্তনের দিকেই ইঙ্গিত করে। বিমান-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণভাবে ব্যস্ত করে রাখা, প্রতিপক্ষকে ব্যয়বহুল ইন্টারসেপ্টর ব্যবহার করতে বাধ্য করা এসব ক্ষমতা প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রতিরোধ সক্ষমতা নিয়ে দীর্ঘদিনের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। শাহেদ-১৩৬ এর উত্থান একটি মৌলিক সত্য স্পষ্ট করে দেয় উদ্ভাবন কেবল ধনী রাষ্ট্রগুলোর একচেটিয়া ক্ষেত্র নয়। বরং এই ক্ষেত্রে ইরান সীমাবদ্ধ সম্পদকেই কৌশলগত সুবিধায় রূপান্তর করেছে এবং এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যা আজ বিশ্বজুড়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীগুলোকে গভীরভাবে অধ্যয়ন ও অনুকরণে বাধ্য করছে।
ব্রিটেনে বসবাসকারী প্রায় ৯০ লাখ মুসলিম নাগরিক নাগরিকত্ব হারানোর বড় ঝুঁকিতে রয়েছেন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, সোমালিয়া, নাইজেরিয়া, উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে পারিবারিক বা বংশগত সম্পর্ক থাকা নাগরিকদের ব্যাপারে এমন সতর্কতা দিয়েছে নতুন একটি গবেষণা প্রতিবেদন। খবর মিডল ইস্ট আই। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত রানিমিড ট্রাস্ট ও মানবাধিকার সংস্থা রিপ্রিভের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান আইনের আওতায় যুক্তরাজ্যের প্রায় ৯০ লাখ মানুষ দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে নাগরিকত্ব হারাতে পারেন। এর বড় অংশই মুসলিম। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইচ্ছাধীন এই ক্ষমতা দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার সঙ্গে পারিবারিক বা বংশগত সংযোগ থাকা নাগরিকদের ওপর অসম প্রভাব ফেলছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূতরা ছাড়াও সোমালিয়া, নাইজেরিয়া, উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এতে একটি ‘জাতিগতভাবে বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব ব্যবস্থা’ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন গবেষকরা। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই ক্ষমতাটি জাতিগত ভিত্তিতে বৈষম্য তৈরি করেছে। অ-শ্বেতাঙ্গ নাগরিকদের মধ্যে তিন-পঞ্চমাংশ (৬০ শতাংশ) ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে আছেন। অন্যদিকে, শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশদের মধ্যে প্রতি ২০ জনে মাত্র একজন (৫ শতাংশ) একই ঝুঁকির সম্মুখীন। প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, অ-শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তিরা তাদের শ্বেতাঙ্গ সমকক্ষদের তুলনায় ১২ গুণ বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রায় ৯ লাখ ৮৪ হাজার, পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত ৬ লাখ ৭৯ হাজার, বাংলাদেশীসহ ঝুঁকিতে থাকা ৩৩ লাখ এশীয় ব্রিটিশ সবচেয়ে বেশি সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত গোষ্ঠীর মধ্যে আছেন। সংস্থাগুলোর দাবি, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের নামে নাগরিকত্ব বাতিলের ক্ষমতা গত দুই দশকে ব্যাপকভাবে বেড়েছে এবং এর প্রভাব প্রধানত মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর পড়ছে। তারা নাগরিকত্ব বাতিলের ক্ষমতা স্থগিত ও আইন সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে। এ বিষয়ে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তর তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ঠতা রয়েছে এমন ভূখণ্ডে যেকোনো সময় অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভেনেজুয়েলার সাথে উত্তেজনার মধ্যেই এমন হুমকি দিলেন তিনি। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এ তথ্য জানায়। এরইমধ্যে পুয়ের্তো রিকোতে চলছে মার্কিন বাহিনীর যুদ্ধ প্রশিক্ষণ। বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম আর সেনা সদস্যরা প্রস্তুত যেকোনো সময় অভিযানের জন্য। অন্যদিকে, ভেনেজুয়েলার কার্গো জব্দের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্পষ্ট ঘোষণা, প্রয়োজনে মাদকচক্র ধ্বংসে সংশ্লিষ্ঠ দেশগুলোতে স্থল অভিযান চালানো হবে। ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পর শান্তিতে নোবেলজয়ী এবং ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলীয় নেত্রী মারিয়া হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, পতনের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে মাদুরো সরকার। স্বৈরাচার হঠাতে আন্তর্জাতিক সহায়তাও চান তিনি। যদিও এসব হুমকি-হুঁশিয়ারিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। কোনো চাপের কাছেই মাথা নত করবেন না বলেও পাল্টা ঘোষণা দেন। বলেন, মাথা নত না করে সশস্ত্র সংগ্রাম করাই আমাদের ইতিহাস। যতই মিথ্যাচার করা হোক না কেন, যতই চাপ দেয়া হোক না কেন, আমাদের কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। যেকোনো আগ্রাসন এবং ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা অটল অবিচাল হয়ে থাকবো। এর আগে, মাদকের জন্য লাতিন আমেরিকার আরেক দেশ কলম্বিয়াকেও হুমকি দেন ট্রাম্প।