যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দুর্যোগ কবলিত গাজায় তীব্র ঠাণ্ডায় মৃত্যু হয়েছে আরও এক শিশুর। উপত্যকায় গত কয়েকদিনের ঝড়-বন্যা, ঠাণ্ডা ও ভবন ধসে এ পর্যন্ত প্রাণহানির শিকার ১১ জন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২ সপ্তাহ বয়সী এক নবজাতক। ইসরায়েলের বোমার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩টি বাড়ি ধসে পড়েছে এক সপ্তাহে। ক্ষতিগ্রস্ত ২৭ হাজার তাবু। উত্তরে বেইত লাহিয়ায় একটি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছে ৫ জন। গাজা সিটির পশ্চিমে এবং উত্তর গাজায় আল শাতি শরণার্থী শিবিরে তাবুর ওপর দেয়াল ধসে আরও প্রাণহানির শিকার তিনজন। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েও আছে অনেকে। বন্যা, বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে আড়াই লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ। গাজায় প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বাস এখন তাবুতে। বাকি ৭ লাখ ফিলিস্তিনির ঠাঁই বিধ্বস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে। এরইমধ্যে ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
ভেনেজুয়েলার জলসীমায় নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত সব ট্যাংকারের ওপর পূর্ণাঙ্গ অবরোধ আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন তিনি। নিকোলাস মাদুরো প্রশাসনকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের অংশ বলে আখ্যা দেন ট্রাম্প। তার দাবি, মার্কিন সম্পদ চুরি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদক ও মানবপাচারসহ অনেক কারণে ভেনেজুয়েলার বিষয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। দেশটির উপকূল থেকে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত একটি তেল ট্যাংকার জব্দের এক সপ্তাহের মাথায় এমন ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প। এদিকে সম্প্রতি বেড়েই চলেছে যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলার মধ্যে উত্তেজনা। মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে গত কয়েক মাস ধরে ভেনেজুয়েলার বেশ কয়েকটি নৌযান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ছে মার্কিন সেনারা। পুনরায় চালু করেছে পুয়ের্তো রিকোর পরিত্যাক্ত সামরিক ঘাঁটি। ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলাকারীদের একজন ভারতের নাগরিক। ১৯৯৮ সালে তিনি হায়দরাবাদ থেকে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমান বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ।আততায়ী সাজিদ আকরামের পাসপোর্টসহ এ সংক্রান্ত একাধিক প্রমাণ হাতে পেয়েছে প্রশাসন। জানা গেছে, স্টুডেন্ট ভিসায় তিনি প্রথমে অস্ট্রেলিয়া যান। হায়দরাবাদে তার ব্যবসা শিক্ষায় ব্যাচেলর ডিগ্রি রয়েছে। তদন্তকারীদের মতে, ২০২২ সালে সর্বশেষ ভারত সফর করেন সাজিদ আকরাম। তার সন্তানেরাও সব অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। উল্লেখ্য, গত রোববার সিডনির বন্ডাই সৈকতে ইহুদিদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলাকালে হঠাৎ বন্দুক নিয়ে হামলা চালায় সাজিদ আকরাম ও তার ছেলে নাভিদ আকরাম। যাতে প্রাণ যায় ১৫ জনের। নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাবা সাজিদ আকরামের। অন্যদিকে, গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছেলে নাভিদ আকরাম।
অস্ট্রেলিয়া থেকে ইহুদিবিদ্বেষ পুরোপুরি নির্মুলের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। এছাড়া ইহুদি বিদ্বেষ মোকাবেলায় বিশেষ দূত নিয়োগ দেয়া হতে পারে বলেও পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেন, হামলার ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে আইন পরিবর্তন করবো। সমাজ থেকে ইহুদি বিদ্বেষ সম্পূর্ণভাবে দমন ও নির্মূল করতে চাই জানিয়ে তিনি বলেন, আইএস'র মদদপুষ্ট কোনো ব্যক্তির স্থান এদেশে নেই। যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে বহু আগে থেকেই ইহুদি বিদ্বেষবিরোধী বিশেষ দূত রয়েছে বলেও জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে বন্দুক হামলায় জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তির সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির পরিচয় জানলে অতিদ্রুত পুলিশে খবর দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের বরাতে জানা গেছে, হামলার দিন দুপুর থেকে আশপাশের এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় এক মুখোশধারী ব্যক্তিকে। আর হামলা হয় বিকাল ৪টা নাগাদ। ঘটনাস্থল থেকে পাশের ব্লকেই এমন গতিবিধি নজরে আসায় ওই ব্যাক্তিকে সন্দেহ করছে পুলিশ। এর আগে রোববার, ২০ বছর বয়সী এক যুবককে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। তবে, জড়িত নন বলে নিশ্চিত হওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। গেল শনিবার, ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে পরীক্ষা চলাকালে এলোপাতাড়ি গুলি চালানো শুরু করেছিলো কালো পোশাক ও মুখোশ পরিহিত বন্দুকধারী। হামলায় দু'জন শিক্ষার্থী নিহত এবং ৯ জন আহত হয়।
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ইডির দাখিল করা চার্জশিট আমলে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন দিল্লির একটি আদালত। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দেওয়া এই আদেশে আদালত বলেন, আইনের দৃষ্টিতে এই চার্জশিটের ভিত্তিতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব নয়। এই রায়ের পর বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে সংবাদ সম্মেলনে বিজেপির কঠোর সমালোচনা করেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। বলেন, এই রায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মুখে চড় মারার মতো। ভবিষ্যতে জনগণকে হয়রানি করবেন না— এই মর্মে তাদের পদত্যাগ করা উচিত। এক প্রতিবেদনে দেশটির সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানায়। খাড়গে অভিযোগ করেন, গান্ধী পরিবারকে হয়রানি করতেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা করা হয়েছে। তার ভাষায়, মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ইডি-র মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় গান্ধী পরিবারের লোকজন ছাড়াও সুমন দুবে, সাম পিত্রোদা, ইয়ং ইন্ডিয়ান, ডোটেক্স মার্কানডিসে, সুনীল ভাণ্ডারী রয়েছেন। উল্লেখ্য, জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র নিয়ে ২০১৩ সালে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলো বিজেপি। এরপর ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড নামে যে সংস্থার হাতে সংবাদপত্রটির মালিকানা ছিলো, বাজারে মোট ৯০ কোটি টাকা দেনা ছিল তাদের। যার বেশির ভাগটাই কংগ্রেসের কাছ থেকে নেয়া।
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকা আরও সম্প্রসারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) পাঁচটি নতুন দেশকে পূর্ণাঙ্গ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে এবং আরও কয়েকটি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা ও প্রবেশে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। নতুন করে পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞায় যুক্ত হওয়া দেশগুলো হলো বুরকিনা ফাসো, মালি, নাইজার, দক্ষিণ সুদান ও সিরিয়া। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ১২টি দেশ ছিল। এছাড়া আংশিক নিষেধাজ্ঞা ও প্রবেশ সীমাবদ্ধতার আওতায় আনা হয়েছে আরও ১৫টি দেশের নাগরিকদের। দেশগুলো হলো—অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেনিন, কোট দিভোয়ার, ডমিনিকা, গ্যাবন, গাম্বিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, তানজানিয়া, টোঙ্গা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে। হোয়াইট হাউস আরও জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা ভ্রমণ নথি বহনকারীদের ক্ষেত্রেও পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ১৯টি দেশের নাগরিকদের জন্য অভিবাসন সংক্রান্ত আবেদন স্থগিত করে। এসব আবেদনের মধ্যে গ্রিনকার্ড ও নাগরিকত্বের আবেদনও রয়েছে। ওই তালিকায় আফগানিস্তান, ইরান, ইয়েমেন, হাইতি, ভেনিজুয়েলা, সুদান ও সোমালিয়ার মতো দেশ রয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ও অভিবাসন আরও কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র : শাফাক নিউজ
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস, জাতীয় প্রবাসী দিবস ও আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে। দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপিত হয়। আলোচনা সভায় মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ ও ১৯৭৫ সালের চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়া মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ এবং প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়। জাতীয় প্রবাসী দিবস ও আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে দূতাবাসের উদ্যোগে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিকার ও কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরা হয়। এসময় ১১ জন বাংলাদেশি ইপিএস কর্মী এবং ১০টি কোরিয়ান কোম্পানিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সম্মাননা প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রদূত তৌফিক ইসলাম শাতিল প্রবাসীদের কল্যাণ, বৈধ রেমিট্যান্স প্রেরণ এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদের অবদানের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি প্রবাসীদের মধ্যে ভোটার নিবন্ধন এবং জাতীয় উন্নয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। উৎসবমুখর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দেশীয় খাবারের সমন্বয়ে নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়, যেখানে প্রবাসীরা দেশপ্রেম ও আনন্দ উদ্দীপনা প্রকাশ করেন
ভারতের মুদ্রা রুপির দাম ডলারের তুলনায় নতুন সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার সকালে প্রতি ডলারের বিপরীতে ৯০.৮৩ রুপি লেনদেন হয়েছে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, রূপি শিগগিরই ৯১ ছাড়িয়ে যেতে পারে। মূলত ভারতের শেয়ার বাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগের চলে যাওয়া এবং বাণিজ্যচুক্তি সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার কারণে রূপি দরপতন হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি এড়াতে চাইছেন, আর বাজারে ডলারের চাহিদা বাড়ায় রূপির দাম নিম্নমুখী হচ্ছে। তবে ভারতের অর্থনীতি সামগ্রিকভাবে শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮.২ শতাংশ হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বর্তমানে ১ শতাংশের নিচে, অক্টোবরে ০.২৫ শতাংশ এবং নভেম্বর মাসে ০.৭১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কয়েক মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। ডলারের দর ১২২ টাকার কিছুটা ওপরে, যা ১২৩ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রতি ডলারের বিপরীতে রূপির দাম ছিল ৮৪–৮৫।
মেক্সিকোয় ব্যক্তিগত বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দেশটির আকাপুলকো থেকে রওয়ানা দিয়েছিলো বিমানটি। গন্তব্য ছিল মধ্যাঞ্চলীয় টলুকা। এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়। মেক্সিকো স্টেট সিভিল প্রোটেকশন কোঅর্ডিনেটর আদ্রিয়ান হার্নান্দেজ জানান, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সান মাতেও আতেনকো অঞ্চলে, যা টলুকা বিমানবন্দর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে। বিমানটি আকাপুলকো থেকে উড্ডয়ন করেছিল। মোট আটজন যাত্রী এবং দুইজন ক্রু অবস্থান করছিলেন বিমানটিতে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি একটি ফুটবল মাঠে জরুরি অবতরণ চেষ্টা করছিল, কিন্তু পাশের একটি কারখানার ছাদে আঘাত লাগায় আগুন ধরে যায় বিমানটিতে। স্থানীয় মেয়র আনা মুনিজ জানান, দুর্ঘটনার কারণে প্রায় ১৩০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খোঁজার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও সাধারণ নাগরিকদের ঘটনাস্থলের আশপাশের বেশ কয়েক কিলোমিটার এলাকা এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
২০২৪ সালের ‘প্যানোরামা’ প্রামাণ্যচিত্রে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির বক্তব্য বিকৃত করার অভিযোগে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) বিরুদ্ধে ৫ বিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা দায়ের করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে বিবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়। মূল বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু ট্রাম্পের ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির একটি ভাষণ। ওই ভাষণে তিনি ওয়াশিংটনে জড়ো হওয়া সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছিলেন, 'আমরা ক্যাপিটলের দিকে হেঁটে যাব এবং আমাদের সাহসী সিনেটর ও কংগ্রেসম্যান-উইমেনদের উৎসাহ দেব।' প্রায় ৫০ মিনিট পর একই ভাষণে তিনি আরও বলেন, 'এবং আমরা লড়াই করবো। আমরা প্রাণপণ লড়াই করবো।' তবে, বিবিসির প্যানোরামা অনুষ্ঠানে এই দুটি আলাদা বক্তব্য একত্রে জুড়ে প্রচার করা হয়। সেখানে দেখানো হয়, ট্রাম্প বলছেন, 'আমরা ক্যাপিটলের দিকে হেঁটে যাব এবং আমরা লড়াই করবো। আমরা প্রাণপণ লড়াই করবো।' ফ্লোরিডার একটি আদালতে দায়ের করা নথি অনুযায়ী, ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানি এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমসংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। ট্রাম্পের আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, বিবিসি ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ও প্রতারণামূলক উপায়ে’ মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষণ কাটাছেঁড়া করে মানহানি করেছে। ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, বিবিসি তার ৬ জানুয়ারি ২০২১-এর ভাষণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে পরিবর্তন করে জনগণের কাছে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'তারা (বিবিসি) আমার কথাগুলো চুরি করেছে এবং পরিবর্তন করেছে।' এরইমধ্যে বিবিসি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। স্বীকার করেছে, এভাবে সম্পাদনার ফলে একটি 'ভুল ধারণা' তৈরি হয়েছিল। এতে এমন মনে হতে পারে যে, ট্রাম্প সরাসরি 'সহিংসতা বা মারামারির আহ্বান জানিয়েছিলেন'। তবে, ক্ষতিপূরণের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে সংবাদমাধ্যমটি। দাবি, মানহানির কোনো ভিত্তি নেই। গত মাসে সমালোচনার জেরে ভুল স্বীকার করে পদত্যাগ করেন মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং বার্তাপ্রধান ডেবোরাহ টারনেস। এতেও ক্ষোভ কমেনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের। বিবিসি'কে বামপন্থি প্রোপাগান্ডা প্রতিষ্ঠান বলে আখ্যা দেন তিনি।
বেতন-ভাতা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী চলতি সপ্তাহে পাঁচ দিনের ধর্মঘটে যাচ্ছেন ইংল্যান্ডের রেসিডেন্ট চিকিৎসকেরা। ব্রিটিশ সরকারের দেয়া সর্বশেষ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর এই ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তাররা। আগামীকাল বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল সাতটা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হবে। আগামী সোমবার সকাল সাতটা পর্যন্ত চলবে এই ধর্মঘট। ব্রিটিশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন-এর অনলাইন জরিপে ৮৩ শতাংশ ডাক্তার সরকারী প্রস্তাব বাতিল করেছেন। এসোসিয়েশনের রেসিডেন্ট ডাক্টরস কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাক ফ্লেচার বলেছেন, 'দশ হাজারেরও বেশি ফ্রন্টলাইন ডাক্তার একসাথে ‘না’ বলেছেন। কাজের পরিবেশ নিয়ে সরকারের সর্বশেষ প্রস্তাবটি চিকিৎসকরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে, সমস্যার সমাধানে ইউনিয়ন এখনো আলোচনায় বসতে রাজি বলে জানান ফ্লেচার। তবে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওয়েস স্ট্রিটিং চিকিৎসকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। বলেন, 'ধর্মঘটের কোনো প্রয়োজন নেই। রোগীদের নিরাপত্তার প্রতি বিএমএর চরম অবহেলারই প্রমাণ এই ধর্মঘট।' এই কর্মসূচিকে 'স্বার্থপর, দায়িত্বজ্ঞানহীন' বলেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি। এদিকে, সিজোনাল ফ্লুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বিএমএকে ধর্মঘটের সময় পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছিলো সরকার। ব্রিটেনের সরকারি তথ্য বলছে, ডিসেম্বরের শুরুতে ইংল্যান্ডে ফ্লুজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তির হার ৫০%'এর বেশি বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার ৬শ' ৬০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন; যা চলতি বছরের এই সময়ের জন্য রেকর্ড। শুধুমাত্র ব্রিটেন-ই নয়; পুরো ইউরোপজুড়েই এবার ফ্লুর তীব্র প্রকোপ দেখা যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। বিএমএ জানিয়েছে, তাদের ৫০ হাজারেরও বেশি সদস্যের মধ্যে ৬৫% ভোটে অংশ নেন। এরমধ্যে মোট ৮৩% সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
মরক্কোর আটলান্টিক উপকূলীয় প্রদেশ সাফিতে আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। প্রবল বর্ষণের ফলে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) হঠাৎ করেই ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ১৪ জন, যারমধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত শনিবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয় অঞ্চলটিতে। আর তাতেই বন্যায় ডুবে যায় অনেকের বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পানিতে ভেসে যায় বেশকয়েকটি যানবাহন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কাদামাটির স্রোতে গাড়ি ভেসে যাচ্ছে। রাজধানী রাবাত থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সাফি শহরের পুরোনো এলাকায় মাত্র এক ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে প্লাবিত হয় অন্তত ৭০টি বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক যোগাযোগ। বন্দরনগরী সাফির সঙ্গে আশপাশের বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাফি-হ্রারা সংযোগকারী প্রাদেশিক সড়ক। বন্যার কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস স্থগিত করেছে স্থানীয় শিক্ষা কর্তৃপক্ষ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার পর পানি নামতে শুরু করলেও, মানুষ এখনো কাদামাটির ভেতর থেকে নিজেদের জিনিসপত্র উদ্ধারে ব্যস্ত। এদিকে আবহাওয়া বিভাগ মঙ্গলবারও দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। দীর্ঘ ৭ বছরের খরার পর মরক্কোতে এখন ভারী বৃষ্টি ও এটলাস পর্বতমালায় তুষারপাত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ২০২৪ সাল ছিল মরক্কোর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর।
কৃষ্ণ সাগরে আন্ডারওয়াটার ড্রোন হামলায় রাশিয়ার একটি সাবমেরিন নিষ্ক্রিয় করার দাবি করেছেন ইউক্রেন। দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ জানায়, হামলাটি চালানো হয় ‘সাব সি বেবি’ নামের একটি আন্ডারওয়াটার ড্রোন সিস্টেম ব্যবহার করে। সংস্থাটির দাবি, হামলার পর সাবমেরিনটি কার্যত যুদ্ধক্ষমতা হারিয়েছে। রুশ সামরিক টেলিগ্রাম চ্যানেল মিলিটারি ইনফরম্যান্ট জানিয়েছে, ড্রোনটি সাবমেরিনের পেছনের অংশে আঘাত হানে, যেখানে প্রপেলার ও রাডার রয়েছে। সরাসরি মূল কাঠামোতে আঘাত না লাগলেও, এসব স্পর্শকাতর অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সাবমেরিনটি দীর্ঘদিন অচল থাকতে পারে। ইউক্রেনের হিসাবে, সাবমেরিনটির মূল্য প্রায় ৪শ' মিলিয়ন ডলার। বর্তমানে একই ধরনের নতুন সাবমেরিন নির্মাণে ৫শ' মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে। যুদ্ধ বিশ্লেষক ওয়েবসাইট দ্য ওয়ার জোন বলছে, সাবমেরিনটি যদি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে, তাহলে কৃষ্ণসাগর নৌবহরে রাশিয়ার হাতে থাকবে মাত্র চারটি কিলো-শ্রেণির সাবমেরিন। এই হামলা এমন এক সময়ে হয়েছে, যখন যুদ্ধ নিয়ে শান্তি আলোচনা চলমান। একই সঙ্গে মস্কোর ওপর চাপ বাড়াতে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রুশ তেল শোধনাগার এবং তথাকথিত ‘শ্যাডো অয়েল ফ্লিট’-এর ট্যাংকারে হামলা জোরদার করেছে ইউক্রেন।
আরব সাগরে মহড়া চালিয়েছে পাকিস্তান নৌবাহিনী। ছোঁড়া হয়েছে FM-90 সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল। যা চীনা HQ-17 এর নৌ সংস্করণ। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানিয়েছে আইএসপিআর। ইসলামাবাদের দাবি, ক্ষেপণাস্ত্রটি খুবই সুনিপুণভাবে আকাশে থাকা লক্ষ্যবস্তুকে দ্রুতগতিতে ধ্বংস করতে পারে। এর পাল্লা আনুমানিক ১৫ কিলোমিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সর্বোচ্চ ৬ কিলোমিটার উচ্চতায় উঠতে পারে মিসাইলটি। আইএসপিআর জানায়, সাধারণত দ্রুতগতিতে ছুটতে থাকা লক্ষ্যবস্তু যা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ফেলে, তা ধ্বংসে এ ধরনের স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়।
ঘন কুয়াশায় ভারতের দিল্লি-আগ্রা এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। একযোগে দুর্ঘটনার কবলে সাতটি বাস ও তিনটি প্রাইভেটকার। এতে এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোরে মথুরায় এই দুর্ঘটনা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঘন কুয়াশায় দেখতে না পাওয়ায় একাধিক যানবাহনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। অনেকেই আটকা পড়েন যানবাহনগুলোর ভেতরে। পরে, উদ্ধারকারী দলের সাহায্যে উদ্ধার করা হয় হতাহতদের। এর একদিন আগেই, দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়েতে ঘন কুয়াশায় প্রায় ২০টি যানবাহন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সীমান্ত রক্ষায় বীরত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে অবদান রাখায় দেশটির সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। তবে তার বক্তব্যেও বাংলাদেশের নাম বা মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটের উল্লেখ নেই। এর আগে একই দিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ১৬ ডিসেম্বরকে ভারতের ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ হিসেবে উল্লেখ করেন, সেখানেও বাংলাদেশ প্রসঙ্গ অনুপস্থিত ছিল। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘বিজয় দিবসে আমি আমাদের সশস্ত্রবাহিনীর বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, যারা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতের সীমান্ত রক্ষা করার সময় তাদের বীরত্ব, নিষ্ঠা এবং অটল সংকল্প দিয়ে বিশ্বজুড়ে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন।’ কংগ্রেসের এই নেতা আরও বলেন, ‘তাদের অদম্য সাহস, সংগ্রাম এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ সর্বদা প্রতিটি ভারতীয়ের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’ একই দিন সকালে এক্সে দেওয়া পোস্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘বিজয় দিবসে আমরা সেই সাহসী সৈন্যদের স্মরণ করি, যাদের সাহস ও আত্মত্যাগ ১৯৭১ সালে ভারতের এক ঐতিহাসিক বিজয় নিশ্চিত করেছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাদের দৃঢ় সংকল্প এবং নিঃস্বার্থ সেবা আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছিল এবং আমাদের ইতিহাসে গর্বের একটি মুহূর্ত খোদাই করে রেখেছে। এই দিন তাঁদের বীরত্বকে স্যালুট জানায় এবং তাঁদের অতুলনীয় চেতনার কথা মনে করিয়ে দেয়। তাদের বীরত্ব ভারতের প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।’ এর আগে ২০২৪ সালেও বিজয় দিবসে মোদি একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছিলেন। সে সময়ও তিনি ১৯৭১ সালের যুদ্ধকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয় হিসেবে উল্লেখ করেন, যেখানে বাংলাদেশের ভূমিকার কোনো উল্লেখ ছিল না। ঐতিহাসিক দলিল অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বর হামলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। পরবর্তী প্রায় ৯ মাস মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালান। ৩ ডিসেম্বর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যৌথ বাহিনী হিসেবে যোগ দেয়। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় স্বাক্ষরিত ইন্সট্রুমেন্ট অব সারেন্ডার দলিলে পাকিস্তানি বাহিনী ‘ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ বাহিনীর’ কাছেই আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য গঠিত ১১টি সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা কর্মকর্তারা। ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) ও পুলিশ বাহিনীর বহু সদস্যও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। নয় মাসের যুদ্ধে লাখ লাখ বাংলাদেশি প্রাণ হারান। তুলনায় কয়েক দিনের যুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের প্রাণহানির সংখ্যা ছিল সীমিত। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের শীর্ষ নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এই ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও বাংলাদেশের ভূমিকাকে উপেক্ষা করা হয়েছে, যা দুই দেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়ে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে সংঘটিত ভয়াবহ হামলার সময় এক হামলাকারীর কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার যে ভিডিও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, সেখানে দেখা যাওয়া সাহসী পথচারীর পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে। তার নাম আহমেদ আল আহমেদ, বয়স ৪৩ বছর। এই দুঃসাহসিকতার জন্য তিনি ইতোমধ্যে ‘নায়ক’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, হামলার সময় আহমেদ সরাসরি হামলাকারীর দিকে ছুটে যান এবং তার হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নেন। পরে সেই অস্ত্র হামলাকারীর দিকেই তাক করে তাকে পিছু হটতে বাধ্য করেন। এরপর তিনি অস্ত্র নিচু করে এক হাত উঁচু করেন, যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বুঝতে পারে তিনি হামলাকারী নন। দুই সন্তানের জনক এবং পেশায় ফলের দোকানের মালিক আহমেদ বর্তমানে সিডনির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার পরিবার জানিয়েছে, হাতে ও বাহুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তার অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা জানান, তাকে চার থেকে পাঁচবার গুলি করা হয়েছে। রোববার রাতে বন্ডাই বিচে এ হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন। হামলার সময় সেখানে হানুকাহ উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এক হাজারের বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ এটিকে ইহুদি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে চালানো সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আহমেদের এক চাচাতো ভাই জানান, তিনি শতভাগ একজন নায়ক। তার হাতে ও বাহুতে দুটি গুলির আঘাত রয়েছে এবং বর্তমানে তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছেন। পরিবার আশা প্রকাশ করেছে, তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। আহমেদের সাহসিকতায় গর্বিত তার বাবা মোহামেদ ফাতাহ ও মা মালাকেহ হাসান। তারা বলেন, মানুষজনের ওপর হামলা হতে দেখে তাদের ছেলে এক মুহূর্তও দ্বিধা করেননি। তার কাছে কোনো জাতিগত বা ধর্মীয় বিভেদ নেই—অস্ট্রেলিয়ায় সবাই সমান নাগরিক বলেই তিনি বিশ্বাস করেন। জানা গেছে, আহমেদ ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। তার পরিবার সম্প্রতি সিরিয়া থেকে সিডনিতে এসে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। তিনি সিরিয়ার ইদলিবে বড় হয়েছেন। তার আত্মীয়রা জানিয়েছেন, আহমেদের এই সাহসিকতা শুধু তার পরিবার নয়, পুরো গ্রাম ও সম্প্রদায়কে গর্বিত করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় জড়িত দুই হামলাকারী ছিলেন বাবা ও ছেলে, যাদের বয়স যথাক্রমে ৫০ ও ২৪ বছর। ৫০ বছর বয়সি হামলাকারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন, আর ২৪ বছর বয়সি হামলাকারী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ভিডিওতে আরও দেখা গেছে, হামলাকারীরা একটি ছোট পদচারী সেতুর কাছ থেকে গুলি চালাচ্ছিল। আহমেদ প্রথমে একটি পার্ক করা গাড়ির আড়ালে আশ্রয় নেন, এরপর হঠাৎ বেরিয়ে এসে এক হামলাকারীকে ধরে ফেলেন। অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার পর তাকে মাটিতে ফেলে দেন। পরে ওই হামলাকারী আবার সেতুর দিকে পালিয়ে গিয়ে আরেকটি অস্ত্র তুলে নেয় এবং গুলি চালাতে থাকে। আহমেদের এই সাহসী ভূমিকার কারণে বহু মানুষের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশটির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মহলেও তার সাহসিকতার প্রশংসা করা হয়েছে। সবাই একবাক্যে তাকে একজন সত্যিকারের নায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
তাইওয়ানে কোনো যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করলে মার্কিন সামরিক বাহিনী চীনের কাছে পরাজিত হতে পারে—এমন আশঙ্কার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে পেন্টাগনের এক অতি গোপন মূল্যায়নে। নথিটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণভিত্তিক। সাম্প্রতিক এক যুদ্ধ মহড়ায় দেখা গেছে, বেইজিং চাইলে মোতায়েনের আগেই মার্কিন ফাইটার স্কোয়াড্রন, বড় যুদ্ধজাহাজ এমনকি উপগ্রহ নেটওয়ার্কও অচল করে দিতে সক্ষম। এই অত্যন্ত শ্রেণিবদ্ধ নথির নাম ‘ওভারম্যাচ ব্রিফ’। পেন্টাগনের অফিস অব নেট অ্যাসেসমেন্টের তৈরি করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র অত্যাধুনিক ও ব্যয়বহুল অস্ত্রের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বিপরীতে, চীন তুলনামূলক কম খরচে দ্রুত উৎপাদনযোগ্য অস্ত্র তৈরি করে যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যকর সুবিধা অর্জন করেছে। নথিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, সংঘাত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চীন মার্কিন সামরিক সম্পদ অকার্যকর করে দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এর আগেই চীনের পক্ষ থেকে তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘চরম বিচক্ষণতার’ সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়ার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে এই নথির সারসংক্ষেপ যখন যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করা হয়, তখন তিনি পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝতে পেরে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এক কর্মকর্তা জানান, চীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি সামরিক কৌশলের বিপরীতে একাধিক বিকল্প প্রস্তুত রেখেছে। চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করে এবং প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করেও দ্বীপটিকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার কথা বলে আসছে। অন্যদিকে, তাইওয়ান নিজেদের একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখে এবং জনগণের গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনো পরিবর্তন মানতে রাজি নয়। যদিও চীন এখনো আক্রমণের নির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা করেনি, তবে পশ্চিমা গোয়েন্দা মূল্যায়নে ধারণা করা হচ্ছে—২০২৭ সালের আশপাশে তাইওয়ান দখলের প্রচেষ্টা শুরু হতে পারে, যা চীনের সামরিক আধুনিকীকরণ পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত দুই দশকে চীন বিপুলসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করেছে, যা দিয়ে তারা তাইওয়ানে পৌঁছানোর আগেই মার্কিন বিমানবাহী রণতরীসহ উন্নত সামরিক সম্পদ ধ্বংস করতে পারে। যুদ্ধ মহড়াগুলোতে দেখা গেছে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধুনিক রণতরীগুলোর অনেকটাই চীনা হামলা প্রতিহত করতে অক্ষম হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত সর্বাধুনিক বিমানবাহী রণতরীটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা আধুনিক প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও চীনা হামলার বিরুদ্ধে ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত। এছাড়া, ইউক্রেন যুদ্ধের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলা হয়েছে—আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে ট্যাংক ও ভারী অস্ত্র কতটা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে সতর্ক করা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদি বড় যুদ্ধ চালানোর মতো অস্ত্র ও গোলাবারুদ উৎপাদনের শিল্প সক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের আর আগের মতো নেই। প্রতিবেদনটি আরও জানায়, বেইজিং ও মস্কোর তুলনায় ওয়াশিংটন দ্রুত উন্নত অস্ত্র তৈরিতে পিছিয়ে পড়ছে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—অতিরিক্ত ব্যয়বহুল ও সীমিতসংখ্যক অস্ত্রের ওপর নির্ভরতা। বর্তমানে ইসরায়েল ও ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে, যা চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতে বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। পেন্টাগনের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রায় সব বিভাগেই চীন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে আছে, যদিও উভয় দেশের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা প্রায় সমান। তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট
দীর্ঘদিনের দর-কষাকষির পর অবশেষে ন্যাটোতে যোগ দেয়ার আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করলো ইউক্রেন। তবে, বড় ধরনের হামলা হলে জোটের সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে নিরাপত্তা সহায়তা পাওয়ার নিশ্চয়তা পেয়েছে কিয়েভ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) মার্কিন প্রতিনিধিদের সাথে ৫ ঘণ্টার বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি। এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়। আজ থেকে প্রায় ৪ বছর আগে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার পেছনের মূল কারণ হিসেবে ধরা হয় সামরিক জোট ন্যাটো'তে কিয়েভের যোগদানের আকাঙ্ক্ষাকে। রাশিয়া শুরু থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, কোনোভাবেই ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না ইউক্রেন। কারণ—এমনটি হলে রুশ সীমান্তে বাড়বে পশ্চিমা সামরিক উপস্থিতি। হুমকির মুখে পড়বে তাদের প্রভাব ও নিরাপত্তা। অবশেষে, এবার মস্কোর সেই শর্ত মানতে রাজি হলো কিয়েভ। যার মাধ্যমে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রক্রিয়া। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বার্লিনে মার্কিন কূটনীতিকদের সাথে পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকে ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা থেকে সরে আসেন প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট ভোলেদেমির জেলেনস্কি। সামরিক জোটে যোগ দেয়ার স্বপ্নপূরণ না হলেও, ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর থেকে আর্টিকেল ফাইভের মত নিরাপত্তা পাবার নিশ্চয়তা পেয়েছে কিয়েভ। পূর্ণ ন্যাটো সদস্য না হলেও, এর ফলে বড় কোনো আক্রমণের মুখে জোটের সদস্য দেশগুলো থেকে সামরিক ও কূটনৈতিক সহায়তা পাবে তারা। তবে এ ঘোষণায় ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে সংশয়। পশ্চিমা বিশ্বের এমন আশ্বাসে ভরসা করতে পারছে না অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতির প্রকৃত বাস্তবায়ন দেখতে চায় দেশটির জনগণ।
একের পর এক গুলির শব্দ সিডনির এই সমুদ্র সৈকত জুড়ে। প্রাণ বাঁচাতে দিকবিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে ছুটছে মানুষ। এরইমাঝে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আততায়ীর হাত থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নেয় এক মাঝবয়সী ব্যক্তি। মুহুর্তেই সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয় এই ভিডিওটি। অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী সিডনির বন্ডাই বিচে ধর্মীয় উৎসব পালন করছিলেন দেশটির অন্তত হাজারখানিক ইহুদী নাগরিক। তবে হঠাৎই কয়েকজন বন্দুকধারী হামলা চালায় সেখানে। আনুমানিক ৪০-৫০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে অস্ত্রধারীরা। তাতে হতাহত হয়েছেন অনেকেই। গুলি, হট্টগোল আর চিৎকারের শব্দে সাক্ষাৎ নরকে পরিণত হয় বনডি সমুদ্রসৈকতের পরিবেশ। এ পরিস্থিতিতেও অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেয়া সেই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন। তার নাম আহমেদ আল আহমেদ। স্থানীয় এক ফলের দোকানের মালিক সে। একজন মুসলিম হয়েও ইহুদীদের জীবন বাঁচাতে ঝাপিয়ে পড়ায় স্থানীয়দের কাছে বাস্তব জীবনের হিরো হয়ে ওঠেন তিনি। অনেকের জীবন বাঁচালেও আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। হাসপাতালে নেয়ার পর তার শরীরে অস্ত্রোপচার চালানো হয় বলে সেভেন নিউজকে জানান আহমেদের চাচাতো ভাই মুস্তোফা। মুস্তফা জানান, আগে কখনও অস্ত্র চালানোর অভিজ্ঞতা ছিলো না আহমেদের। তবুও, দুই সন্তানের জনক আহমেদ কিভাবে এতো সাহসী হয়ে উঠলেন জানেন না তিনি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।