অর্থনীতি

সাজিয়ে রাখা স্বর্ণালংকার। ছবি : সংগৃহীত
আজ থেকে নতুন দামে স্বর্ণ বিক্রি শুরু

দেশের বাজারে আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) স্বর্ণ ভরিতে ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৯৭ টাকা বিক্রি হবে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) স্বর্ণ ভরিতে ৩ হাজার ৪৫৩ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস।   বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৯৭ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই লাখ ৫ হাজার ৮০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৪৬ হাজার ৮৩৮ টাকা। এর আগে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৪ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই লাখ ২ হাজার ৪৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৭৩ হাজার ৫৭২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। বাজুস জানায়, স্বর্ণের বিক্রয় মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে। এদিকে স্বর্ণের দামের সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে রুপার দামও। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৪ হাজার ৫৭২ টাকা, ২১ ক্যারেট ৪ হাজার ৩৬২ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৩ হাজার ৭৩২ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা ৪ হাজার ২৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেট ৪ হাজার ৪৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির রুপা ২ হাজার ৬০১ টাকায় বিক্রি হয়ে আসছিল।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ 0
ডিএসইতে ব্যাপক দরপতন, কমেছে অধিকাংশ শেয়ারের দাম, লেনদেন ৪৫৭ কোটি টাকা

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্যাপক দরপতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচকের পাশাপাশি অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। ডিএসই সূত্র জানায়, আজ লেনদেন শেষে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩০ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৩২ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ কম। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৬ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৮ দশমিক ০১ পয়েন্টে এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ ১১ দশমিক ৮০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯১ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসই সূত্র জানায়, আজ মোট ৩৯১টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৯টির, দর কমেছে ২৪৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৩টির শেয়ারের দাম। এছাড়া ডিএসইতে আজ মোট ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪০টি ট্রেডের মাধ্যমে মোট ১৪ কোটি ৯০ লাখ ৪৩ হাজার ৮৩২টি শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। যার বাজারমূল্য ছিল ৪৫৭ কোটি ৪৯ লাখ ৫২ হাজার ৮১২ টাকা। ক্যাটাগরি ভিত্তিতে আজ ডিএসইতে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে লেনদেনে অংশ নেয় ২১৬টি কোম্পানি। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৬টির, দর কমেছে ১৩৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির শেয়ারের দাম। ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ৭৮টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। এসব কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৯টির, দর কমেছে ৫০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টির শেয়ারের দাম। ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৯৭টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৪টির, দর কমেছে ৬৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির শেয়ারের দাম। ‘এন’ ক্যাটাগরিতে আজ কোনো লেনদেন হয়নি। এদিকে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ৩৫টি ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩টির, দর কমেছে ২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির ইউনিটের দাম। করপোরেট বন্ড খাতে ৩টি বন্ড লেনদেন হয়। এর মধ্যে একটি বন্ডের দর বেড়েছে, একটি কমেছে এবং একটি অপরিবর্তিত রয়েছে। সরকারি সিকিউরিটিজ (জি-সিকিউ) খাতে লেনদেন হওয়া ৪টির মধ্যে ২টির দর বেড়েছে এবং ২টির দর কমেছে।

জান্নাতুল ফেরদৌস জেমি ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
স্বর্ণের দামে বড় লাফ, আজ থেকে নতুন মূল্য কার্যকর

দেশীয় বাজারে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে ৩ হাজার ৪৫৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৯৭ টাকা, যা আজ রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) থেকে কার্যকর হয়েছে।   শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দামের পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে স্বর্ণের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দামে সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ৫ হাজার ৮০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৩৮ টাকা। এর আগে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ছিল ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৪ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ লাখ ২ হাজার ৪৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ছিল ১ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা। বাজুস জানায়, নির্ধারিত বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার নকশা ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে। এদিকে স্বর্ণের দামের পাশাপাশি রুপার দামও বাড়ানো হয়েছে। নতুন দামে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৫৭২ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৪ হাজার ৩৬২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি ৩ হাজার ৭৩২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।   এর আগে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছিল ৪ হাজার ২৪৬ টাকায়, ২১ ক্যারেট ৪ হাজার ৪৭ টাকায়, ১৮ ক্যারেট ৩ হাজার ৪৭৬ টাকায় এবং সনাতন পদ্ধতির রুপা ২ হাজার ৬০১ টাকায়।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
৪০ টাকার পেঁয়াজ কীভাবে ১৫০ টাকায় বিক্রি

মৌসুমের নতুন পেঁয়াজ ইতোমধ্যে কৃষকের মাঠ থেকে বাজারে এসেছে। পাশাপাশি দেশে এখনো পুরোনো পেঁয়াজের মজুত রয়েছে প্রায় এক লাখ টন। এমন অবস্থায় পণ্যের সরবরাহে কোনো ঘাটতি না থাকলেও আমদানিকারক ও পাইকারি কমিশনভিত্তিক এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। সুযোগ বুঝে তারা আমদানির অনুমতি নিলেও সেই সুবিধাকে কেন্দ্র করে বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। আমদানিকারকদের দাবি ছিল পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা কেজিতে বাজারে সরবরাহ করা হবে; কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে কেজিপ্রতি ৪০ টাকায় পেঁয়াজ আনা হলেও পাইকারি কমিশন বিক্রেতারা তা ১২০–১৩০ টাকায় বিক্রি করছেন। ফলে খুচরা বাজারে দাম পৌঁছেছে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকায়। বাজার বিশ্লেষকদের ভাষায় কেজিপ্রতি অতিরিক্ত ১১০ টাকা মুনাফা যেন “সাগরচুরি”।   রাজধানীর শ্যামবাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি আড়তে দেখা গেছে, প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৭৫–৬০০ টাকায়, অর্থাৎ কেজিপ্রতি ১১৫–১২০ টাকা। পুরোনো দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে পাল্লাপ্রতি ৬৫০–৬৭৫ টাকায়, যা কেজিপ্রতি ১৩০–১৩৫ টাকা। অন্যদিকে কাওরান বাজার, নয়াবাজার, মালিবাগসহ বিভিন্ন খুচরা বাজারে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ দুই ধরনেরই প্রতি কেজি ১৪০–১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজারে এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও রাজধানীর পাইকারি আড়তে তদারকি সংস্থাগুলোর যৌথ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে জানা যায়, ভারত থেকে আমদানিকারকরা সব খরচ মিলিয়ে কেজিপ্রতি প্রায় ৪০ টাকায় পেঁয়াজ আমদানি করছেন। পরিবহন ব্যয়সহ দাম সর্বোচ্চ ৫০ টাকা হওয়ার কথা। অথচ পাইকারি পর্যায়ে এ পেঁয়াজ ১২০–১৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এরপর খুচরা বিক্রেতারা নিজেদের খরচ ও স্বল্প মুনাফা যোগ করে তা ১৪০–১৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীদের অনেকে আমদানি মূল্য জানাতে গড়িমসি করছেন। কেউ কেউ দায় চাপাচ্ছেন দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়া এবং আমদানির টার্গেট নির্ধারণের ওপর, যা তাদের মতে বাজারে সংকটের পরিবেশ তৈরি করছে। ভোক্তা অধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলছেন, পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে, অথচ কার্যকর কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাদের মতে, কত টাকা দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে এবং কত দামে বিক্রি করা হচ্ছে—তা নির্ধারণ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে বাজারের অস্থিরতা কমে আসবে।   ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে তালিকা অনুযায়ী অভিযান চলছে এবং অনিয়ম ধরা পড়লেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, কয়েক দিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে ফিরে আসবে।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
১৩ ব্যাংক থেকে ২০ কোটি ২০ লাখ ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে যোগান–চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখতে নিয়মিত হস্তক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে মাল্টিপল প্রাইস অকশন (এমপিএ) পদ্ধতিতে ১৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ২০২ মিলিয়ন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।   এ ক্রয়ে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২২ টাকা ২৭ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। এ নিয়ে চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরে মোট ডলার ক্রয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫১৪ মিলিয়ন (প্রায় আড়াই বিলিয়ন) ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়লেও চাহিদা কমে যাওয়ায় দামের ওপর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। দাম অতিমাত্রায় নিচে নেমে গেলে রপ্তানিকারক ও প্রবাসী আয়ের প্রেরণকারীরা নিরুৎসাহিত হতে পারেন। তাই একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে দাম নেমে না যাওয়ার লক্ষ্যে বাজারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী গত মে মাসে চালু হওয়া বাজারভিত্তিক এক্সচেঞ্জ রেট এখন ব্যাংকগুলোকে সরবরাহ–চাহিদার ভিত্তিতে দাম নির্ধারণের সুযোগ দিচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এলসি খোলার প্রবণতা বৃদ্ধি, রমজানকে সামনে রেখে পণ্য আমদানি এবং আমদানিতে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়ায় ডলারের চাহিদা আবারও বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রমজানের আগে ডলারের চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে, কিন্তু সেই সময়েই বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার কেনা বাজারে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। বছরের শেষ দিকে অনেক ব্যাংক অতিরিক্ত মুনাফার জন্য ডলারের দাম বাড়ায়, যা আমদানিকারকদের জন্য নতুন আর্থিক চাপ তৈরি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানিয়েছেন ডলার কেনা হচ্ছে শুধুমাত্র অতিরিক্ত ডলারধারী ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে নিলামের মাধ্যমে। এটা কোনো কৃত্রিম হস্তক্ষেপ নয়। সাম্প্রতিক সময়ে রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যার ফলে বাজারে সরবরাহও বেড়েছে।   বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী নভেম্বর মাসে এলসি খোলা হয়েছে ৫৫৬ কোটি ৬৬ লাখ ডলার এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ৪৮৬ কোটি ৯৯ লাখ ডলার জুলাই–নভেম্বর (প্রথম পাঁচ মাস) এলসি খোলা হয়েছে ২,৯৪১ কোটি ডলার  গত বছরের তুলনায় ৪.৫৯% বেশি এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ২,৭১৯ কোটি ৪৫ লাখ ডলার  গত বছরের তুলনায় ২.৬৬% কম প্রবাসী আয় চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে দেশে এসেছে ১৩.০৩ বিলিয়ন ডলার প্রবাসী আয়, টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১০, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
অর্থবছরের শেষ ৬ মাসে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আশাব্যঞ্জক লক্ষণ : জিইডি

২০২৫ অর্থবছরের শেষ ছয় মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে পুনরুদ্ধারের আশাব্যঞ্জক লক্ষণ দেখা গেছে।   পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগে (জিইডি) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ স্টেট অব দ্য ইকোনমি ২০২৫’ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।   প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন পূর্বাভাসে প্রবৃদ্ধি শ্লথ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হলেও বর্তমানে প্রধান সূচকগুলো ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধারের দিকেই ইঙ্গিত করছে।   জিইডির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগের বছরের তুলনায় কম থাকবে বলে বড় উন্নয়ন সহযোগীরা ধারণা করছে।   বিশ্বব্যাংক ৩.৩ শতাংশ থেকে ৪.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে, আর এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) পূর্বাভাস দিয়েছে ৩.৯ শতাংশ। তবে ২০২৬ অর্থবছরে অর্থনীতি গতি সঞ্চার করবে এবং প্রবৃদ্ধি ৫.১ শতাংশ থেকে ৫.৩ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।   প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের বহিঃখাতের উল্লেখযোগ্য স্থিতিশীলতার কথা বলা হয়েছে। শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ, আমদানি স্থিতিশীলতা এবং মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির পুনরুদ্ধার অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে।   রপ্তানি আয়ও শক্তিশালী রয়েছে, যা তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি, নীতি মেনে চলা এবং বাজার বহুমুখীকরণের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে।   বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তিন মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটাতে সক্ষম অবস্থায় স্থিতিশীল রয়েছে, যা বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার প্রতিফলন।   প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দুই বিভাগে ভাগ করার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে এনবিআর কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে জুন মাসে রাজস্ব সংগ্রহ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। পরে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং রাজস্ব আদায় পুনরায় শুরু হয়।   জিইডি জোর দিয়ে বলেছে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং আর্থিক খাত স্থিতিশীল করা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য অপরিহার্য। যদিও অনেক পূর্বাভাস পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দিচ্ছে, তবে প্রবৃদ্ধি কতটা কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য হ্রাস এবং জীবনমান উন্নয়নে রূপান্তরিত হবে তা কার্যকর নীতি, শক্তিশালী আর্থিক খাতের শাসন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কৌশলের ওপর নির্ভর করবে।   প্রতিবেদনটিতে দুর্বল বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প কার্যক্রমকে প্রবৃদ্ধির বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিপরীতে, রেমিট্যান্স প্রবাহ, রপ্তানি কার্যকারিতা এবং উৎপাদন খাতের আউটপুট-বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প-প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে ও ২০২৬ অর্থবছরেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।   তবে বাংলাদেশকে সীমিত রিজার্ভ, বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট, ক্রেতাদের পরিবর্তিত পছন্দ এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ও ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।   প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। বৃহৎ ও ক্রমবর্ধমান শ্রমবাজারের চাহিদা মোকাবিলা, উৎপাদনশীলতা বাড়ানো-বিশেষত পোশাক ও এসএমই খাতে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগকে জাতীয় অগ্রাধিকার দিতে হবে।   উদীয়মান দুর্বলতাগুলো- বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি, আর্থিক খাতের অস্থিরতা, দুর্বল বিনিয়োগ পরিবেশ, সুশাসন সংকট এবং বৈদেশিক ঝুঁকি সমাধান করতে ব্যর্থ হলে প্রবৃদ্ধি মন্থর হতে পারে, জীবনমান খারাপ হতে পারে, দারিদ্র্য বাড়তে পারে এবং বৈষম্য দেখা দিতে পারে।   অন্যদিকে, সময়োপযোগী ও সমন্বিত নীতি সংস্কার, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং স্পষ্ট নীতিগত বার্তা প্রদান নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ পুনরায় গতি ফিরে পাবে এবং আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের সুযোগ তৈরি হবে।   জিইডি উপসংহারে বলেছে, কাঠামোগত সংস্কার ও উদ্ভাবন-নির্ভর অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা সমর্থিত একটি সুপরিকল্পিত জাতীয় টেকসই উন্নয়ন কৌশল ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনাকে পরিচালিত করবে, যা স্থিতিস্থাপকতা ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক শক্তি বাড়াবে।

আক্তারুজ্জামান ডিসেম্বর ০৯, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
হজযাত্রীদের প্লেনের টিকিটে শুল্ক প্রত্যাহার

আগামী বছরের হজযাত্রীদের জন্য প্লেনের টিকিটের ওপর আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।   মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) এসব সংক্রান্ত এ আদেশ জারি করেছে এনবিআর।   অবিলম্বে এ সুবিধা কার্যকর হবে ও আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত এ সুবিধা থাকবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।     হজযাত্রীদের প্লেনের টিকিটের ওপর শুল্ক প্রত্যাহার এবারই প্রথম করা হয়নি। আগেও এনবিআর একাধিকবার এই শুল্ক মওকুফ করেছে। সাধারণত প্লেনের টিকিট বিক্রির সময়ই যাত্রীদের ভ্রমণ কর বা আবগারি শুল্ক সংগ্রহ করে তা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে দেওয়া হয়।   বর্তমানে সৌদি আরবগামী বিমান টিকিটের ওপর পাঁচ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। হজযাত্রীদের জন্য এটি মওকুফ করা হয়েছে।   ২০২৬ সালে বাংলাদেশ থেকে ৭৮ হাজার ৫০০ জন হজ পালন করতে পারবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ২৬ মে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে।

আক্তারুজ্জামান ডিসেম্বর ০৯, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
আগামী বছর থেকে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসা করা যাবে না : এনবিআর চেয়ারম্যান

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান বলেছেন, আগামী বছর এমন একটি নতুন মেকানিজম চালু করা হবে, যার ফলে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানই ব্যবসা করতে পারবে না।   আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।   এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ লাখ প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত ভ্যাট পেয়ার রয়েছে মাত্র ৬ লাখ ৪৪ হাজার, যা মোট ব্যবসার সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ভ্যাট নেট এখনো খুবই ছোট এবং প্রচুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন ছাড়াই কার্যক্রম চালাচ্ছে। চলতি মাসেই এক লাখ নতুন প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।   আবদুর রহমান বলেন, চলতি মাসের মধ্যে এক লাখ নতুন নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান বাড়বে। সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা, সেটা হচ্ছে আমাদের ভ্যাট পেমেন্ট যারা করে, যাদের হাত দিয়ে ভ্যাট পেমেন্ট হয়—বিশেষ করে ব্যবসায়ীগণ—তাদের যে ভ্যাট নেট, এই ভ্যাট নেটটা যথেষ্ট ছোট।   তিনি বলেন, এখন অ্যারাউন্ড ৬ লক্ষ ৪৪ হাজার রেজিস্টার্ড ভ্যাট পেয়ার আছে। যেটা বাংলাদেশের ওভারঅল যে বিভিন্ন রকমের জরিপ আমাদের আছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের যে সংখ্যা আছে, তার সাথে কোনভাবেই সংগতিপূর্ণ নয়।   আমদানি করা মোবাইল ফোনে কর কমানো হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, রাষ্ট্রের স্বার্থ সবার ওপরে। সবাই একসঙ্গে মিলে যদি চিন্তা করি যে এই কাজটি রাষ্ট্রের স্বার্থে প্রয়োজন। তাহলে সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে যেটা যৌক্তিক, সেটা করার জন্য প্রস্তুত আছি। অবশ্যই এটা রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত। এনবিআরের এটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও নেই।    কর অব্যাহতি পলিসি নেওয়া হয়েছে; এর ফলে এনবিআরের হাতে এখন আর কর অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষমতাও নেই, যোগ করেন তিনি।   এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন এটা সরকার জনস্বার্থে যদি প্রয়োজন মনে করে তাও এটা দিতে পারবে অল্প সময়ের জন্য। পরবর্তী সংসদ বসা পর্যন্ত। পরবর্তী সংসদ বসে সিদ্ধান্ত নেবে কী করবে। আমরা যদি মনে করি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এটা প্রয়োজন এবং আমাদের রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা যদি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বলেন আমরা পজিটিভ।

আক্তারুজ্জামান ডিসেম্বর ০৯, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
ডলারবাজারে হস্তক্ষেপ, ৫ মাসে কেনা হয়েছে আড়াই বিলিয়ন

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার যোগান-চাহিদার ভারসাম্য ঠিক রাখতে ডলারের বাজারে নিয়মিত হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে আজ ১৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ২০২ মিলিয়ন ডলার কিনেছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।    মাল্টিপল প্রাইস অকশন (এমপিএ) পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এ ক্রয়ে ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট ছিল প্রতি ডলার ১২২ টাকা ২৭ থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। সব মিলিয়ে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত মোট ডলার ক্রয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫১৪ মিলিয়ন বা আড়াই বিলিয়ন ডলার।   আজ (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এসব তথ্য নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।   বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, একদিকে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে এবং অন্যদিকে চাহিদা কমে আসায় দামের ওপর নিম্নমুখী চাপ রয়েছে। এতে ডলারের দাম বেশি কমে গেলে রপ্তানিকারক ও প্রবাসী আয় প্রেরণকারীরা অনুপ্রাণিত না-ও হতে পারেন। এই পরিস্থিতি এড়াতে এবং ডলারের মূল্যকে একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নেমে যেতে না দেওয়ার উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে হস্তক্ষেপ করছে।   আইএমএফের ঋণচুক্তির শর্ত অনুযায়ী গত মে মাসে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার পদ্ধতি চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পর থেকে ব্যাংকগুলো চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে ডলারের দাম নির্ধারণ করছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এলসি খোলার প্রবণতা বৃদ্ধি, রমজান সামনে রেখে প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি এবং আমদানি সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়ায় ডলারের চাহিদা বেড়েছে।   আমদানি ও রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা জানান, রমজানের আগে চাহিদা বাড়া স্বাভাবিক, কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন একই সময়ে বাজার থেকে ডলার কিনছে, তখন দাম বাড়ার চাপ আরও বেড়ে যাচ্ছে। বছরের শেষের দিকে ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত মুনাফা নিতে প্রায়ই ডলারের দাম বাড়ায়। এতে আমদানির খরচ বৃদ্ধি পায় এবং ব্যবসায়ীদের জন্য আর্থিক চাপ তৈরি হয়।   বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আরিফ হোসেন খান বলেন, বাজারে কৃত্রিম হস্তক্ষেপ নয়; ডলার কেনা হচ্ছে শুধুমাত্র অতিরিক্ত ডলারধারী ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে নিলামের মাধ্যমে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রপ্তানি আয় এবং প্রবাসী আয় উভয় ক্ষেত্রেই ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। এর ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে এবং নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে কেনা হচ্ছে যাতে বাজার স্থিতিশীল থাকে।   বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত নভেম্বর মাসে বিভিন্ন পণ্যের ৫৫৬ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। একই মাসে এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ৪৮৬ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। সব মিলে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এলসি খোলা হয় ২ হাজার ৯৪১ কোটি ডলার। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১২৯ কোটি ২৬ লাখ ডলার বা ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। তবে প্রথম পাঁচ মাসের হিসাবে এলসি নিষ্পত্তি কমেছে প্রায় ৭৪ কোটি ডলার বা ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ কম। এ সময়ে বিভিন্ন পণ্যের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ২ হাজার ৭১৯ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।   চলতি অর্থবছরে প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বরে) এক হাজার ৩০৩ কোটি ৪৩ লাখ মার্কিন ডলারের (১৩ দশমিক ০৩ বিলিয়ন) সমপরিমাণ বৈদেশিক অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা।

আক্তারুজ্জামান ডিসেম্বর ০৯, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
তিন চাপে ধুঁকছে দেশের অর্থনীতি

উচ্চ সুদের হার, বিনিয়োগে স্থবিরতা এবং কর্মসংস্থানের সংকট—এই তিন চাপের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এক কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও কাঠামোগত দুর্বলতার প্রভাবে চলতি অর্থবছরের শুরুতে যে শ্লথগতি দেখা দিয়েছিল, তার প্রভাব এখনো পুরোপুরি কাটেনি। সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, কিছু সামষ্টিক সূচকে ইতিবাচকতা দেখা গেলেও বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে স্পষ্ট চাপে রয়েছে অর্থনীতি।   এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেমে আসে মাত্র ২ শতাংশে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও বাজারে স্থবিরতার ফলে শিল্প ও সেবা খাতে বড় ধাক্কা লাগে। কৃষি, শিল্প ও সেবা—তিন খাতেই প্রবৃদ্ধি নেমে আসে খুব নিম্ন স্তরে। তবে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রান্তিকে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি দ্রুত বাড়তে থাকে এবং সার্বিক জিডিপিও তৃতীয় প্রান্তিকে ৪.৯ শতাংশে উন্নীত হয়। তারপরও বিশ্লেষকদের মত হলো, এই পুনরুদ্ধার এখনো টেকসই নয়। বিশেষ করে উচ্চ নীতি সুদের কারণে বিনিয়োগে বড় ধরনের সংকোচন তৈরি হয়েছে। ছয় মাস ধরে নীতি সুদহার ১০ শতাংশ রাখা হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে। এর ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৭ শতাংশের ঘরে, যা বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য যথেষ্ট নয়। একই সময়ে সরকারি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে বেসরকারি খাতের জন্য অর্থপ্রবাহ আরও কমে গেছে। বিনিয়োগ কমে যাওয়ার সরাসরি প্রভাব পড়েছে শিল্প উৎপাদনে। প্রচলিত সূচক অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে শিল্প খাতের মোট প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৪.৩ শতাংশ। কয়েক মাসে সাময়িক উল্লম্ফন দেখা গেলেও সার্বিক উৎপাদনে স্থায়ী গতি তৈরি হয়নি। উৎপাদন সংকোচনের ফলে নতুন চাকরির সুযোগও সীমিত হয়ে পড়েছে। কর্মসংস্থানের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ দেখায়, দেশে বেকারত্ব বেড়ে ৩.৬৬ শতাংশে পৌঁছেছে। সবচেয়ে বড় উদ্বেগের জায়গা যুব বেকারত্ব, যা এক বছরে ৭.২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮.০৭ শতাংশে উঠেছে। একই সঙ্গে নিট অবস্থায় থাকা তরুণদের হারও বেড়েছে। অর্থনীতির কাঠামোগত রূপান্তর হলেও কর্মসংস্থান তাতে তাল মেলাতে পারছে না—এটাই এখন বড় বাস্তবতা। অর্থনীতির আরেকটি বড় চাপ হলো মূল্যস্ফীতি। সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা কমলেও তা এখনো সাধারণ মানুষের জন্য বোঝা। খাদ্য মূল্যস্ফীতির প্রধান চালক হয়ে উঠেছে চালের দাম, যার অবদান বেড়ে দাঁড়িয়েছে অর্ধেকেরও বেশি। বোরো মৌসুম শেষে উৎপাদন বাড়লেও তা বাজারে প্রভাব ফেলতে পারেনি। অন্যদিকে আউশ ও আমন—দুটির উৎপাদনই কমেছে। জলবায়ু পরিবর্তন, অনিয়মিত আবহাওয়া এবং ঘন ঘন বন্যা কৃষিকে আরও ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এবং দুর্বল ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণ শুরু হয়েছে। শ্রমবাজার পুনর্গঠনে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। বিনিয়োগ আকর্ষণে বিভিন্ন কাঠামোগত সংস্কার কার্যক্রম এবং ইনভেস্টমেন্ট সামিট আয়োজন করা হয়েছে। এরপরও বাস্তবতা হলো—উচ্চ সুদের চাপ বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছে, শিল্প উৎপাদন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বাড়ছে না এবং কর্মসংস্থান হওয়া উচিত যে গতিতে, তা হচ্ছে না। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পথে থাকলেও বিনিয়োগ ও চাকরি সৃষ্টির ক্ষেত্রে গভীর কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া এই পুনরুদ্ধার টেকসই হবে কি না—এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।   বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি অর্থনীতির চাপ কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং এর সুফল ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে বলে মত দেন। তবে সামগ্রিকভাবে টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান খাতের পুনরুজ্জীবনকে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ০৯, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
ভোজ্যতেলের দাম আবারও বাড়ল

দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম আবারও বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৬ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৭ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া প্রতি লিটার পাম তেলের দাম বেড়েছে ১৬ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে ৩৩ টাকা। নতুন দর সোমবার (৮ ডিসেম্বর) থেকে কার্যকর হবে।   রোববার (৭ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই নতুন মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে। নতুন দরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম দাঁড়িয়েছে ১৯৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৭৬ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতল সয়াবিন তেল নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৫৫ টাকা। খোলা পাম তেলের লিটারপ্রতি মূল্য হবে ১৬৬ টাকা। এর আগে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর ঘটনায় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। রাজধানীতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, পূর্ব ঘোষণা ছাড়া দাম বাড়ানো গ্রহণযোগ্য নয়। সম্প্রতি বাজারে পাঁচ লিটারের নতুন বোতল ৯৬৫ টাকায় বিক্রি হয়, যেখানে আগের দাম ছিল ৯২২ টাকা। বোতলজাত প্রতি লিটারের দামও ১৮৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৯৮ টাকা করা হয়েছিল।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু

ভারত থেকে দীর্ঘ তিন মাস পর আবারও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। প্রথম চালানটি দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় দেশে প্রবেশ করে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান রকি এন্টারপ্রাইজের আব্দুল মালেক বাবুর মাধ্যমে এ চালানে ৩০ টন পেঁয়াজ এসেছে।   আমদানির খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে। হিলির কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে ১০০ টাকায় এবং শুকনো দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ২০ টাকা কমে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, মোকামে দাম কমে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। হিলির আরেক আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বল্প পরিসরে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারক আইপি পাবেন এবং প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ৩০ টন করে পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন। তিনি সরকারের কাছে আমদানির আইপি উন্মুক্ত করে দেওয়ার অনুরোধ জানান, যাতে বাজারে সরবরাহ বাড়ে এবং দাম আরও স্থিতিশীল হয়।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
শীর্ষ চার পণ্যের রপ্তানি কমেছে

দেশের পণ্য রপ্তানি টানা চার মাস ধরে কমছে। সদ্যসমাপ্ত নভেম্বর মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩৮৯ কোটি ডলারের পণ্য, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ কম। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, শীর্ষ পাঁচ রপ্তানি খাতের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ছাড়া সব খাতেই রপ্তানি কমেছে। এগুলো হলো তৈরি পোশাক, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, এবং হোম টেক্সটাইল। একই সঙ্গে কমেছে চামড়াবিহীন জুতা, হিমায়িত খাদ্য এবং প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানিও।   নভেম্বর মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩১৪ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। যদিও জুলাই-নভেম্বর সময়ের মোট হিসেবে তৈরি পোশাক রপ্তানি এখনো ইতিবাচক রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ৬১৩ কোটি ডলার, যা গত বছরের তুলনায় শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় শীর্ষ খাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে নভেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ৯ কোটি ৮৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি। জুলাই-নভেম্বর সময়ে রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৫১ কোটি ডলারে; প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তৃতীয় শীর্ষ খাত কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রপ্তানিতে বড় ধরনের ধস নেমেছে। গত নভেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ৮ কোটি ২৮ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ কম। চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি ৪৬ কোটি ডলার প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি নভেম্বরে কমেছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে ৬ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। যদিও জুলাই-নভেম্বর সময়ে মোট রপ্তানি ৩৫ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি।   হোম টেক্সটাইল রপ্তানিও গত নভেম্বরে কমেছে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। তবে পাঁচ মাসের হিসাবে রপ্তানি এখনো ইতিবাচক—৩৪ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

মার্কিন ডলারের দুর্বলতা এবং যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা শক্তিশালী হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে শুক্রবার স্বর্ণের দাম বেড়েছে। জিএমটি সময় সকাল ১০টা ১৭ মিনিট পর্যন্ত স্পট গোল্ডের মূল্য শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে আউন্সপ্রতি ৪,২২৫.১১ ডলারে দাঁড়ায়। তবে সাপ্তাহিক হিসেবে এটি এখনো শূন্য দশমিক ১ শতাংশ নিম্নমুখী।   ফেব্রুয়ারির ফিউচার্স গোল্ডের দামও বেড়ে আউন্সপ্রতি ৪,২৫৫.৯০ ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের তুলনায় শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সভার আগে বিনিয়োগকারীরা মুদ্রাস্ফীতিসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের অপেক্ষায় আছেন। ডলার সূচক বড় মুদ্রাগুলোর বিপরীতে পাঁচ সপ্তাহ ধরে নিম্নমুখী অবস্থানে থাকায় অন্যান্য মুদ্রাধারীদের জন্য স্বর্ণ কেনা আরও সাশ্রয়ী হয়েছে। ফেডের সম্ভাব্য সুদ কমানোর আশাবাদও স্বর্ণবাজারকে সহায়তা করছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এদিকে দেশের বাজারে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) থেকে স্বর্ণের নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৯৫ টাকা। এর আগে গত ২ ডিসেম্বর ভরিপ্রতি ১ হাজার ৫০ টাকা কমানো হয়েছিল।   তেজাবি স্বর্ণের দাম কমায় সার্বিক বিবেচনায় নতুন মূল্য ধার্য হয়েছে। দেশে ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি ২ লাখ ১ হাজার ৪৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৭২ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮৯ টাকা নির্ধারিত হয়েছে।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
সরবরাহ উদ্বেগে দাম বেড়েছে তামার

সরবরাহ কমে যাওয়ার আশঙ্কায় বিশ্ববাজারে গতকাল বেড়েছে তামার দাম। সরবরাহ কমে যাওয়ার আশঙ্কায় বিশ্ববাজারে গতকাল বেড়েছে তামার দাম। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীরা এখন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদহারসংক্রান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। সুদহার কমানো হলে শিল্প খাতে তামার চাহিদা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর বিজনেস রেকর্ডার। সাংহাই ফিউচার্স এক্সচেঞ্জে গতকাল তামার দাম দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে টনপ্রতি ৮৯ হাজার ২১০ ইউয়ানে (১২ হাজার ৬৩০ ডলার ৭৯ সেন্ট)। টানা আটদিন ধরে দাম বেড়েছে ধাতুটির। লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে (এলএমই) তিন মাসের সরবরাহ চুক্তিতে তামার দাম গতকাল পৌঁছেছে টনপ্রতি ১১ হাজার ২৪৯ ডলারে। এটি আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান সাকডেন ফাইন্যান্সিয়ালের বিশ্লেষকরা বলেন, বিনিয়োগকারীরা এখন ফেডের সুদহার কমানোর অপেক্ষায় রয়েছেন। তাদের এ প্রত্যাশার বিপরীত ঘটলে ধাতুর বাজারে অস্থিরতা দেখা দেবে। সাংহাই ও লন্ডনের বাজারে গতকাল অ্যালুমিনিয়াম, দস্তা, সিসা, নিকেল ও টিনের বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী ছিল।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহী
আগামী সপ্তাহেই টাকা তুলতে পারবেন পাঁচ ব্যাংকের গ্রাহকরা

একীভূতকরণ প্রক্রিয়াধীন শরিয়াভিত্তিক পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের গ্রাহকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী সপ্তাহ থেকে নতুন নামে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ পরিচয়ে গ্রাহকদের টাকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে। এর আগে দেশজুড়ে পাঁচ ব্যাংকের সব সাইনবোর্ড পরিবর্তন করা হবে।   বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, একীভূত ব্যাংকের প্রাথমিক কার্যক্রম দ্রুত এগোচ্ছে এবং নির্ধারিত সময়েই গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। অমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ কর্মসূচি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে আমানত বিমা তহবিলের আওতায় প্রতি আমানতকারী সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ফেরত পাবেন। একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে একটি হিসাব থেকেই আপাতত এই টাকা উত্তোলন করা যাবে। এই সুবিধা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আমানতকারীরা পাবেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’র চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। নতুন এই ব্যাংকটি সমস্যাগ্রস্ত পাঁচ ব্যাংক—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংককে একীভূত করবে। এ জন্য মতিঝিলের সেনা কল্যাণ ভবনে নতুন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। একীভূত ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২০ হাজার কোটি এবং বাকি ১৫ হাজার কোটি আসবে আমানতকারীদের শেয়ার থেকে। অনুমোদিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ ইতোমধ্যে ছাড় দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে স্বতন্ত্র পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানি সচিব নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। একই জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে একাধিক হিসাব বা পরিচয়পত্র ছাড়া হিসাব পরিচালনার ঘটনা পাওয়া যাওয়ায় প্রাথমিকভাবে পরিচয়পত্রযুক্ত একটি হিসাব থেকেই দুই লাখ টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হবে। পরবর্তী ধাপে বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলন করা যাবে।   বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, সব শাখায় একসঙ্গে টাকা বিতরণ শুরু হবে না; ধাপে ধাপে ভিন্ন ভিন্ন শাখা থেকে টাকা প্রদান করা হবে, যাতে গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি না হয়। তিনি আরও বলেন, সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকে গ্রাহকদের আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধিতে নেই আইনগত ভিত্তি : বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ব্যবসায়ীরা যে প্রক্রিয়ায় ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন, তার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।   তিনি বলেন, তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সরকার কিছুই জানতো না। আমরা মাত্র আধা ঘণ্টা আগে বিষয়টি জেনেছি। ব্যবসায়ীরা একযোগে সিদ্ধান্ত নিয়ে দাম বাড়িয়েছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা আলোচনা করে কর্মপদ্ধতি ঠিক করব। কারণ, এই দাম বাড়ানোর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। তিনি আরও জানান, আগের দিনই টিসিবির জন্য ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ও এক কোটি লিটার রাইস ব্রান তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বাজারে যে দামে তেল বিক্রি করছেন, টিসিবিকে তার চেয়ে লিটারপ্রতি প্রায় ২০ টাকা কমে সরবরাহ করেছেন। সেক্ষেত্রে বাজারে ২০ টাকা বেশি দামে তেল বিক্রির কোনো যৌক্তিক কারণ নেই, বলেন উপদেষ্টা। ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণ আছে কি না, সেটি পদক্ষেপের মাধ্যমেই বুঝতে পারবেন। আমরা আলোচনা করছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। এটা বাজারে গিয়ে লড়াই করার বিষয় নয়। আইন লঙ্ঘন হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এ প্রশ্নে তিনি বলেন, নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেব। আইন যা অনুমতি দেয়, সবই প্রয়োগ করা হবে। ব্যবসায়ীরা সরকার থেকে বেশি ক্ষমতাধর হয়ে পড়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ ধরনের উত্তেজক ও অনুমানভিত্তিক প্রশ্নের জবাব নেই। ভোজ্যতেলের যৌক্তিক কারণ থাকলে সরকার আলোচনায় বসতে প্রস্তুত জানিয়ে তিনি বলেন, সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখাই সরকারের লক্ষ্য। কোনো অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে না।   রমজানের প্রস্তুতি সম্পর্কে উপদেষ্টা জানান, প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। আমদানি পর্যায়ে আগের বছরের চেয়ে বেশি ঋণপত্র খোলা হয়েছে, ফলে সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, বাজারে ইতোমধ্যে চিনির দাম কমেছে, ডাল, ডিমসহ আরও কিছু পণ্যের দাম কমছে। ছোলার দামও শিগগিরই কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিশ্ববাজারের সাথে যুক্ত করতে শীঘ্রই দেশে আসছে পেপ্যাল: গভর্নর

  পেপ্যাল একটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা, যা ব্যবহারকারীরা অনলাইনে টাকা পাঠানো ও গ্রহণ করা, বিল পরিশোধ করা এবং আন্তর্জাতিক কেনাকাটা করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।   আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে 'পেপ্যাল' শীঘ্রই বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করতে চাইছে এবং এর ফলে দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সাররা সহজেই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।   মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও চ্যানেল আই আয়োজিত 'অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৫' অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এই তথ্য জানান।   গভর্নর বলেন, 'পেপ্যাল বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী। ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খোলার মাধ্যমে ছোট চালানে পণ্য রপ্তানি করা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য কঠিন হয়ে যায়। পেপ্যালের মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম চালু হলে তারা সহজেই ইউরোপ, আমেরিকা ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে পণ্য পাঠাতে পারবেন এবং দ্রুত পণ্যের দাম দেশে আনা সম্ভব হবে।'   তিনি আরও করেন, 'বর্তমানে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের অভাবে আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত অনেকে বিদেশ থেকে টাকা আনার সময় বিড়ম্বনায় পড়েন। অনেক সময় তারা তাদের পারিশ্রমিকও পান না। পেপ্যাল চালু হলে এই সমস্যার সমাধান হবে।'   মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও চ্যানেল আই আয়োজিত ‘অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এই তথ্য জানান।    পেপ্যাল একটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা, যা ব্যবহারকারীরা অনলাইনে টাকা পাঠানো ও গ্রহণ করা, বিল পরিশোধ করা এবং আন্তর্জাতিক কেনাকাটা করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীর ব্যাংক বা কার্ডের সঙ্গে নিরাপদভাবে সংযুক্ত হয়ে দ্রুত লেনদেন সম্পন্ন করে।   পেপ্যাল ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য সুরক্ষা এবং রিফান্ডের সুবিধাও দেয়। বিশ্বের ২০০-এর বেশি দেশে ফ্রিল্যান্সার, অনলাইন ব্যবসা এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।   নগদ লেনদেন কমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'দেশের দুর্নীতির মূলেই রয়েছে নগদ টাকার লেনদেন। যেখানে যেখানে দুর্নীতি আছে, সেখানে সেখানে নগদ লেনদেন জড়িত।' তিনি জানান, টাকা ছাপানো ও ব্যবস্থাপনায় বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধাপে ধাপে নগদ লেনদেন কমানোর পরিকল্পনা করছে।   কৃষি খাতের উন্নয়নে ঋণের প্রবাহ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে গভর্নর বলেন, 'বর্তমানে মোট ঋণের মাত্র ২ শতাংশ কৃষি খাতে দেওয়া হয়। এটি বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করা প্রয়োজন। এছাড়া এসএমই ঋণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল থাকলেও ব্যাংকগুলোর সক্ষমতার অভাবে তা যথাযথভাবে বিতরণ করা যাচ্ছে না।'   খাদ্যশস্য উৎপাদনে দেশের সাফল্যের কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, '১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ টন। এখন তা প্রায় ৪ কোটি টনে উন্নীত হয়েছে। জনসংখ্যা দ্বিগুণ হলেও উৎপাদন তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে, যা একটি বিশাল অর্জন।'   অনুষ্ঠানে কৃষিখাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৮ জন ব্যক্তি ও ৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। পাঁচ শতাধিক আবেদন যাচাই-বাছাই করে এই বিজয়ীদের নির্বাচিত করা হয়েছে।

আক্তারুজ্জামান ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
ভোক্তা পর্যায়ে আবারও বাড়ল এলপি গ্যাসের দাম

ডিসেম্বর মাসের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে এলপি গ্যাসের নতুন মূল্য ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩৮ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ২১৫ টাকা থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৫৩ টাকা। নতুন দাম আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকেই কার্যকর হচ্ছে।   একই সঙ্গে অটোগ্যাসের দামও সমন্বয় করেছে বিইআরসি। প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম ৫৫ টাকা ৫৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৫৭ টাকা ৩২ পয়সা করা হয়েছে। এর আগে ২ নভেম্বর এলপি গ্যাসের দাম সমন্বয় করে বিইআরসি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৬ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২১৫ টাকা নির্ধারণ করেছিল। একই সময়ে অটোগ্যাসের দামও কমানো হয়েছিল—৫৬ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে কমে দাঁড়িয়েছিল ৫৫ টাকা ৫৮ পয়সা।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ০২, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
হস্তশিল্পের বৈশ্বিক বাজার বিলিয়ন ডলার, কৌশলগত পদক্ষেপ দাবি

শত শত কোটি টাকার দেশীয় বাজার ও বিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক বাজার থাকা সত্ত্বেও সরকারি-বেসরকারি পরিকল্পনা, গবেষণা, ডিজাইন উন্নয়ন এবং নীতিগত সহায়তার অভাবে বাংলাদেশের হস্তশিল্পের বিকাশ হচ্ছে না।   সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিকেএসএফ ভবনে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের হস্তশিল্পের বিকাশে করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব মতামত দেন।   কর্মশালায় বলা হয়, স্থানীয়ভাবে ১০–১৫ হাজার কোটি টাকার বাজার এবং বৈশ্বিকভাবে ১,১০৭.৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব এখনো ১ শতাংশেরও কম। ফলে বাজার সম্প্রসারণ, ডিজাইনে উদ্ভাবন, রপ্তানি সহজীকরণ ও বিশেষ নীতিগত সহায়তা ছাড়া উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সম্ভব নয়।   পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আকন্দ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। হস্তশিল্প খাতের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. হাবিবুর রহমান।   উপস্থাপনায় জানানো হয়—দেশে প্রায় ১ লাখ ৪৮ হাজার কারিগর হস্তশিল্প উৎপাদনে যুক্ত, যার ৫৬ শতাংশই নারী। উৎপাদনের ৯৫.৮ শতাংশ গৃহভিত্তিক, যা গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে হস্তশিল্প রপ্তানি হয়েছে ২৯.৭৫ মিলিয়ন ডলার। বৈশ্বিক বাজার প্রতিবছর ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে এবং ২০৩২ সালে পৌঁছাবে ২.৪ ট্রিলিয়ন ডলারে।   বক্তারা উল্লেখ করেন, নকশিকাঁথা, জামদানি, পাটপণ্য, বাঁশ-বেত, মাটির সামগ্রীসহ দেশীয় হস্তশিল্পের প্রধান ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজার। দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহারের ফলে এসব পণ্যে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য সংযোজন সম্ভব হয়।   হস্তশিল্প শিল্পকে শক্তিশালী করতে বক্তারা যেসব পদক্ষেপের সুপারিশ করেন। যার মধ্যে রয়েছে-সহজ শর্তে অর্থায়ন, সাপ্লাই চেইন শক্তিশালীকরণ। কারুকেন্দ্র/ডিজাইন সেন্টার স্থাপন, ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস ও ই-কমার্স সম্প্রসারণ, আন্তর্জাতিক মান ও সার্টিফিকেশন জোরদার, কারিগরদের দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ এবং রপ্তানি প্রচারণা ও নীতিগত প্রণোদনা।

আক্তারুজ্জামান ডিসেম্বর ০২, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
২৯ দিনে ৩২ হাজার কোটি টাকার বেশি রেমিট্যান্স

২৯ দিনে এল ৩২ হাজার কোটি টাকার বেশি রেমিট্যান্স চলতি মাসের (নভেম্বর) প্রথম ২৯ দিনে দেশে ২৬৮ কোটি ১১ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩২ হাজার কোটি টাকারও বেশি। রোববার (৩০ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি নভেম্বরের প্রথম ২৯ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬৮ কোটি ১১ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫১ কোটি ৬৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৭ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৮৭ কোটি ৯০ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। এর আগে, বিদায়ী অক্টোবরজুড়ে দেশে ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। সবমিলিয়ে চলতি অর্থবছরে প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) দেশে ১০১ কোটি ৪৯ লাখ ডলার বা ১০ দশমিক ১৫ বিলিয়ন বৈদেশিক অর্থ পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার ৩২২ কোটি টাকা।  

মোঃ ইমরান হোসেন নভেম্বর ৩০, ২০২৫ 0
Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

Top week

ওসমান হাদি এখন কোমায় আছেন : চিকিৎসক
সর্বশেষ

ওসমান হাদি এখন কোমায় আছেন : চিকিৎসক

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫ 0