অন্যান্য

যেভাবে জাতির ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠলেন

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১২, ২০২৫ 0
যেভাবে জাতির ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠলেন
যেভাবে জাতির ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠলেন

হাসপাতালের সংকটময় বিছানায় শুয়ে থাকা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চারপাশে এখন সমগ্র জাতি নিঃশব্দ প্রার্থনায় নিমগ্ন। দল-মত-ধর্ম-বর্ণের ব্যবধান ভুলে সবাই তার জন্যই হাত তুলছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষ পর্যন্ত সবার হৃদয়ে একই মিনতি—তিনি সুস্থ হোন।

 

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে কোনো নেতার অসুস্থতা নিয়ে এমন সামষ্টিক আবেগ, এমন ঐক্যের বিস্তার আগে কখনো দেখা যায়নি। এই দৃশ্য বলে দেয়, খালেদা জিয়া শুধু একটি দলের নেত্রী নন; তিনি হয়ে উঠেছেন দেশের মানুষের গভীরতম মানবিক অনুভূতির প্রতীক।

এই ভালোবাসা, এই ঐক্যের উৎস শুধুই তার দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলায় নয়; উৎস তার চরিত্রে, তার মহত্ত্বে, তার অসীম সহিষ্ণু ও নিঃস্বার্থ হৃদয়ে।

খালেদা জিয়া সেই বিরল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের একজন, যিনি ক্ষমতায় থেকেও প্রতিপক্ষকে ঘৃণা করেননি আর ক্ষমতার বাইরে থেকেও বিদ্বেষকে রাজনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে গ্রহণ করেননি।

বাংলাদেশের রাজনীতির উত্তপ্ত বছরগুলোয় তার আচরণ বারবার দেখিয়েছে মানুষকে ভালোবাসা, দেশকে ভালোবাসা, অন্যায়ের কাছে মাথানত না করা—এগুলোই তার রাজনীতির প্রধান ভিত্তি।

তিনি চাইলে ভিন্ন জীবন বেছে নিতে পারতেন। একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধানের স্ত্রী হিসেবে তিনি বিলাস-স্বাচ্ছন্দ্যে ভরা জীবন কাটাতে পারতেন অনায়াসে। কিন্তু তিনি সেই পথ বেছে নেননি। তিনি প্রবেশ করেছিলেন রাজনীতির অনিশ্চিত গোলকধাঁধায়—শুধু জনগণের কল্যাণের টানে, গণতন্ত্রের দায়ে। এটি ছিল ত্যাগের সিদ্ধান্ত, কঠিন, কণ্টকাকীর্ণ, তবুও দৃঢ়।

গণতন্ত্রের জন্য তার লড়াই শুধু এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ৯ বছরব্যাপী আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং ফ্যাসিবাদী দমনপীড়নের বিরুদ্ধেও ছিল তার দীর্ঘ, নিরলস সংগ্রাম।

জীবনের বহু সময় জেল, মামলা, গৃহবন্দিত্ব, অপমান, অপবাদ—সব তিনি সহ্য করেছেন এ বিশ্বাসে যে, গণতন্ত্রের আলো নিভে যেতে নেই। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন নিঃশ্বাস নিতে পারে স্বাধীন ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজে—এ আদর্শই তাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। ফ্যাসিবাদের সামনে তিনি কখনো মাথা ঝোঁকাননি। রাজনীতির ইতিহাসে খুব কম মানুষ আছেন, যারা ক্ষমতার মোহ ছেড়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে এতটা নিষ্ঠা ও স্থিতি নিয়ে দাঁড়াতে পেরেছেন।

স্বামীর মৃত্যুর পর বিপর্যস্ত একটি দলকে সংগঠিত করে তিনি যেভাবে পুনর্গঠন করেছিলেন, তা ছিল এক নীরব বিপ্লব। অভিজ্ঞতা কম থাকলেও নেতৃত্বের শক্তি ছিল তার ব্যক্তিত্বে, সৎ ইচ্ছায়, ধৈর্যে। বিএনপিকে তিনি শুধু একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ধারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার মেয়াদ ছিল দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো পুনর্গঠনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কিন্তু তার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন ক্ষমতা বা পদ নয়; সবচেয়ে বড় অর্জন দেশের মানুষের স্নেহ, আস্থা ও শ্রদ্ধা। এ শ্রদ্ধার গভীরতা আজ অসুস্থতার মুহূর্তে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একজন মানুষ যখন হাসপাতালের বিছানায় শায়িত হয়ে দেশের মানুষের মনোভূমিকে এমনভাবে একত্রিত করে ফেলেন, সেটিই হয়ে ওঠে তার নেতৃত্বের সবচেয়ে সত্যিকারের মূল্যায়ন।

তার জীবনে দুঃখ, সংগ্রাম, ক্ষতি ছিল প্রচুর। নিজের ও পরিবারের ওপর আঘাত আসবে জেনেও তিনি গণতন্ত্রের পথ ছাড়েননি। তার দুই পুত্রকে হারানো—একজনের মৃত্যু, একজনের দীর্ঘ নির্বাসন— এসবই ছিল তার জীবনের গভীরতম ক্ষত। কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি। মহৎ হৃদয়ের মানুষরা সাধারণত ভেঙে পড়েন না—তারা নীরবে লড়াই করেন, কারও ক্ষতি চান না, কিন্তু অন্যায়ের কাছে নতও হন না। খালেদা জিয়ার জীবন তার উজ্জ্বলতম উদাহরণ।

আজ যখন তিনি মৃত্যুপথযাত্রার মতো এক ভয়াবহ অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়ছেন, তখন জাতি বুঝতে পারছে—এ নারীর জীবন শুধু একটি রাজনৈতিক গল্প নয়; এটি এক অধ্যবসায়, সহিষ্ণুতা, মানবিক মর্যাদা ও ত্যাগের মহাকাব্য। সামাজিক মাধ্যমে যে অভূতপূর্ব দোয়া-প্রবাহ দেখা গেছে, তা কোনো প্রচারণার ফল নয়; এটি হৃদয়ের সাড়া।

যারা কখনো তাকে ভোট দেননি, যারা তার দলকে সমর্থন করেন না, তারাও আজ প্রার্থনার অংশ হয়ে গেছেন—এটাই এক নেত্রীকে মানুষ হিসেবে ভালোবাসার সর্বোচ্চ প্রমাণ। মানুষের ভালোবাসা কখনো মিথ্যা হয় না। রাজনীতির গল্প বদলায়, ক্ষমতার পালাবদল ঘটে, কিন্তু মানুষের হৃদয়ে যে স্থান, তা যুগ পেরিয়েও থেকে যায়।

আজ বেগম খালেদা জিয়া সেই বিরল স্থানে অবস্থান করছেন, যেখানে রাজনৈতিক পরিচয় নয়, মানবিক চরিত্রই তার পরিচয়। জীবনের সায়াহ্নে এসে তিনি হয়ে উঠেছেন জাতির ঐক্যের প্রতীক—এ এক আশ্চর্য, অথচ গভীর সত্য। জাতি তার সুস্থতা কামনা করছে শুধু একজন ব্যক্তির জন্য নয়, একটি ইতিহাসের জন্য, একটি আদর্শের জন্য, একটি মানবিকতার জন্য। তিনি যে পথ দেখিয়েছেন—সাহসের, ধৈর্যের, ন্যায়ের, আপসহীনতার; সে পথই আজ মানুষের মনে আলো জ্বেলে যাচ্ছে।

রাজনীতিতে অনেকেই ক্ষমতার চূড়ায় ওঠেন, কিন্তু খুব কম মানুষ মানুষের হৃদয়ে থাকেন। খালেদা জিয়া সেই বিরল জননীসুলভ নেত্রী, যিনি পরিণত বয়সে, অসুস্থতার বিছানায় থেকেও জাতিকে একত্রিত করতে পেরেছেন। সেই ঐক্যই আজ তার প্রতি আমাদের সবচেয়ে বড় শ্রদ্ধা। এই প্রার্থনা-ভরা সময়ই তার প্রতি আমাদের সবচেয়ে বড় শ্রদ্ধাঞ্জলি।

Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

অন্যান্য

আরও দেখুন
ছবি : সংগৃহীত
আগামী নির্বাচন ভাবনার চেয়েও কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতটা সহজ ভাবা হচ্ছে, বাস্তবে তা হবে না। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যেতে হবে। তবেই তারা বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দেবে। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। বিএনপির বিভিন্ন বিভাগীয় সাংগঠনিক ইউনিট থেকে সহস্রাধিক নেতা-কর্মী এতে অংশ নেন। আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, এক বছর-সোয়া বছর আগেই বলেছিলাম—সামনের নির্বাচন এত সহজ হবে না। আজ ধীরে ধীরে তা প্রমাণিত হচ্ছে। আমরা যদি এখনো সিরিয়াস না হই, তাহলে দেশের অস্তিত্ব ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। গণতন্ত্রই এই দেশকে রক্ষা করতে পারে, আর সেই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে পারবেন আপনারাই—বিএনপির নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ। তিনি বলেন, মানুষের কাছে বিএনপির পরিকল্পনা স্পষ্টভাবে পৌঁছে দিতে হবে। তাহলেই জনগণ বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেবে। পাশাপাশি তিনি আশ্বস্ত করেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দলীয়করণ নয়, বরং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। যে ভোট দিয়েছে কিংবা দেয়নি—সবাই দেশের নাগরিক, সবার জন্য কাজ করতে হবে,—যোগ করেন তিনি। তারেক রহমান আরও বলেন, বিএনপি অলীক স্বপ্ন দেখাচ্ছে না; বরং বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা উপস্থাপন করছে। নির্বাচন সামনে, তাই ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। প্রার্থী আসবে, পরিবর্তন হবে—কিন্তু দল ও আদর্শ একই থাকবে,—বলেন তিনি। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, কিছু দল মিথ্যা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। কিন্তু বিএনপির তা করার প্রয়োজন নেই। বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনাগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দিলেই যথেষ্ট। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, অনেকে মসজিদে গিয়ে তাদের কথা বলছেন। তারা যদি বলতে পারে, আপনারা কেন পারবেন না? বললে সবাই বলবে; না বললে কেউ বলবে না। নিয়ম যদি থাকে—তা হবে সবার জন্য সমানভাবে, বিশেষ কারও জন্য নয়।   অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনায় ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ অন্য নেতারা।

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১২, ২০২৫ 0
দারিদ্র্যের হার বাড়ছে কেন

দারিদ্র্যের হার বাড়ছে কেন

যেভাবে জাতির ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠলেন

যেভাবে জাতির ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠলেন

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে ঢাবি ছাত্রদলের শুভেচ্ছা মিছিল

ছবি : সংগৃহীত
গরম পানি নাকি ঠান্ডা পানি, কোনটা খাবেন

কেউ পছন্দ করেন বরফ ঠান্ডা পানি, কেউ আবার লেবু মিশিয়ে গরম পানি। আবার অনেকেই যা-ই পাই, তাই খেয়ে নেন। কিন্তু পানি গরম বা ঠান্ডা হলে কি শরীরের ওপর কোনো ভালো বা খারাপ প্রভাব পড়ে? এক গ্লাস পানি নিয়ে বসুন, আর গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ড. ব্রায়ান উইনার কী বলছেন, তা দেখে নিন। ঠান্ডা পানি বলতে কী বোঝায় চলুন জেনে নিই। এটা শুনতে সাধারণ মনে হলেও আসলে সবার ঠান্ডার অনুভূতি এক নয় - একজন যেখানে ঠান্ডায় কাঁপছেন, আরেকজন সেখানে গরম লাগছে। তাই ঠান্ডার একটা ধারণা জানা দরকার। ড. উইনার বলেন, ফ্রিজ থেকে বের করা বরফ-ঠান্ডা পানি সাধারণত ৪১°F (৫°C) এর মতো। কলের ঠান্ডা পানি প্রায় ৬০°F (১৫.৫°C)। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি প্রায় ৭৮°F (২৫.৫°C)। ঠান্ডা পানি কি ভালো? আপনি ভাবতে পারেন এ নিয়ে অনেক গবেষণা আছে, কিন্তু বাস্তবে তেমন নেই। ড. উইনার বলেন, ঠান্ডা পানি ভালো বা খারাপ - এ ব্যাপারে দৃঢ় বৈজ্ঞানিক তথ্য খুব কম। তিনি বলেন, ‘আমাদের শরীরের হাইড্রেট থাকা জরুরি, এটাই মূল বিষয়। পানি কত ঠান্ডা বা গরম হলে কী প্রভাব পড়ে, সে নিয়ে গবেষণা সীমিত।’ ঠান্ডা পানির সুবিধা তবে খেলোয়াড়দের নিয়ে হওয়া গবেষণায় দেখা গেছে, তারা সাধারণত ঠান্ডা কলের পানি বেশি পছন্দ করেন। এ ছাড়া ঠান্ডা কলের পানি শরীরকে দ্রুত ঠান্ডা করতেও সাহায্য করে। ড. উইনার বলেন, ঘাম থেমে যায় শরীর পানি পুরোপুরি শোষণ করার আগেই। শরীরে একটি রিফ্লেক্স আছে যা পানির উপস্থিতি অনুভব করে - এ রিফ্লেক্স ঠান্ডা পানিতে বেশি সক্রিয় হয়। বরফ খেলে ক্যালোরি কমে ড. উইনার নিজেই এ ব্যাপারে বেশ জানেন। কয়েক বছর আগে তিনি আইসক্রিম বাদ দিয়ে ইতালিয়ান আইস খেতে শুরু করেন। কিন্তু তিনি লক্ষ্য করলেন এক সমস্যা - ক্যালোরির হিসাব! বরফ গলাতে শরীর অতিরিক্ত ক্যালোরি ব্যয় করে, যা হিসাব করা হয় না। তিনি হিসাব করে দেখেন, প্রতি ১ আউন্স বরফ গলাতে শরীর প্রায় ৫ ক্যালোরি খরচ করে। তাই সংক্ষেপে, হাইড্রেট থাকতে চাইলে ঠান্ডা কলের পানি ভালো। কয়েক ক্যালোরি বেশি পোড়াতে চাইলে বরফ বা ইতালিয়ান আইস খেতে পারেন। আকালেশিয়া রোগে গরম পানি কি সাহায্য করে? আকালেশিয়া একটি বিরল অসুখ - যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখে ১ জন আক্রান্ত হন। এই অবস্থায় খাবার ও পানি পাকস্থলীতে নামতে সমস্যা হয়, কারণ খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর মাঝের যে পেশি (LES), তা ঠিকমতো খুলতে চায় না। একটি গবেষণায় দেখা গেছে - - গরম পানীয় বা গরম খাবার LES পেশিকে শিথিল করতে সাহায্য করতে পারে। - ঠান্ডা পানি আকালেশিয়ার উপসর্গ আরও খারাপ করতে পারে। তাহলে কোনটা ভালো- গরম নাকি ঠান্ডা পানি? অনেকে বলেন গরম পানি খেলে হজম ভালো হয় বা সর্দি-কাশিতে আরাম মেলে। কিন্তু ড. উইনারের মতে, গরম বা উষ্ণ পানি পান করার উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা খুব কম। তিনি বলেন, ‘গরম পানীয় মানুষের মনে আরাম দেয়, মনকে শান্ত করে। সর্দি লাগলে গরম ভাপ নাকে ঢুকে একটু আরাম দেয়, কিন্তু এটা হাইড্রেশনের ব্যাপার নয়। এটা ঠিক যেন মা গরম চিকেন স্যুপ দিচ্ছে, আরাম লাগে, কিন্তু চিকিৎসাগত দিক থেকে লাভ তেমন নেই।’ শেষ পর্যন্ত বিষয়টি মূলত ব্যক্তিগত পছন্দ। আপনার শরীর যেভাবে ভালো বোধ করে -গরম, ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি - সেভাবেই পান করুন। সূত্র : ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক

মোঃ ইমরান হোসেন ডিসেম্বর ১২, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত

পকেটে রাখা মোবাইলই কমাচ্ছে পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা!

বাণিজ্যিক টি-ব্যাগ থেকে নির্গত মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিক মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ছবি : সংগৃহীত

টি-ব্যাগ থেকে মানব দেহে মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিকের প্রবেশ

ছবি : সংগৃহীত

দেশের তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রিতে নামল

ছবি : সংগৃহীত
এই নির্বাচনের লড়াই সবচেয়ে কঠিন : মির্জা ফখরুল

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন লড়াই হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।   তফসিল ঘোষণাকে নতুন দেশ গড়ার সুযোগ হিসেবে দেখছেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে দেশের সামনে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে। নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এবারের নির্বাচন অতীতের মতো ‘আওয়ামী আমলের নির্বাচন’ হবে না। বরং নিরপেক্ষ পরিবেশে ভোট হবে এবং এই নির্বাচনে জয় পেতে হলে জনগণের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আগামী নির্বাচন প্রতিনিধিত্বশীল সংসদ গঠনের সুযোগ তৈরি করবে, যা দেশকে নতুন দিগন্তের দিকে নিয়ে যাবে। তাঁর ভাষায়, এই নির্বাচনের লড়াই সবচেয়ে কঠিন। পেছনে টেনে ধরার শক্তির বিরুদ্ধে সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তিকে জয়ী করার লড়াই। সংস্কারবিরোধী হিসেবে বিএনপিকে দাঁড় করানোর অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের যত বড় সংস্কার এসেছে, তা বিএনপির হাত ধরেই এসেছে। দেশের সব ইতিবাচক অর্জনেও বিএনপির অবদান আছে বলে তিনি দাবি করেন।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১১, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা-৮: মির্জা আব্বাসের আসন খালি, এনসিপির তালিকায় নেই আলোচিত রিকশাচালক সুজন

শীতকালে খুশকি দূর করার সহজ সমাধান

নিরাপত্তা নিশ্চিতে গৃহকর্মী রাখার আগে জানতে হবে ৫ বিষয়

0 Comments