জাতীয়

হাদিকে গুলি করল কারা? নেপথ্য রহস্য খুঁজছে গোয়েন্দারা

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কারী বাহিনী। দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করা এই ঘটনায় একজনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হলেও অপর জড়িত ব্যক্তিকে নিয়ে চলছে নিবিড় ও চুলচেরা তদন্ত। এখনো মূল আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় হামলার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানাতে পারেনি পুলিশ।

 

এ ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে—কারা এবং কী উদ্দেশ্যে শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি চালিয়েছে? গোয়েন্দাদের ধারণা, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যেই সুপরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়। জড়িতদের গ্রেপ্তার করা গেলে নেপথ্যের প্রকৃত কারণ এবং পরিকল্পনাকারীদের পরিচয় স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

হামলার ঘটনায় এক সন্দেহভাজনের ছবি প্রকাশ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাকে গ্রেপ্তারের জন্য জোর তৎপরতা চলছে। ওই ব্যক্তির সম্পর্কে কোনো তথ্য পেলে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে এবং তথ্যদাতাকে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, শুটার হিসেবে শনাক্ত যুবকের নাম ফয়সাল করিম মাসুদ, যিনি রাহুল ও দাউদ খান নামেও পরিচিত। তিনি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাসিন্দা। রাজধানীর আদাবর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন এবং অতীতে নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালে ওই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

২০২৪ সালের নভেম্বরে আদাবর এলাকায় অস্ত্রের মুখে ডাকাতির একটি মামলায় ফয়সাল করিম গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সে সময় তার কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন, গুলি ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি জামিনে মুক্ত হন। সাম্প্রতিক সময়ে শরিফ ওসমান হাদির সঙ্গে গণসংযোগ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতির ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তদন্তকারীদের ধারণা, তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই হাদিকে অনুসরণ করছিলেন।

হামলায় অংশ নেওয়া অপর যুবককে এখনো নিশ্চিতভাবে শনাক্ত করা যায়নি। তবে সম্ভাব্য কয়েকজনের ছবি নিয়ে টাওয়ার ডাম্পিংসহ প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ চালানো হচ্ছে। ঘটনার সময় যেসব মোবাইল নম্বরের অবস্থান ঘটনাস্থলে পাওয়া যাবে, তাদের সংশ্লিষ্টতা যাচাই করা হবে। এতে কিছুটা সময় লাগায় দ্বিতীয় ব্যক্তির পরিচয় এখনো নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তদন্তে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটের সূত্র ধরে একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হামলার পর শুটার ও মোটরসাইকেলচালক সীমান্ত এলাকার দিকে পালিয়ে যেতে পারেন। এ কারণে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং সীমান্তে কঠোর পর্যবেক্ষণ চলছে।

গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত এগোচ্ছে। একাধিক সন্দেহভাজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশাবাদী, দ্রুতই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

 

উল্লেখ্য, শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় মোটরসাইকেলে করে আসা দুই যুবক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

ছবি: সংগৃহীত
হাদিকে হত্যাচেষ্টা: যেভাবে ভারতে পালাল ২ শুটার

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে রিকশায় চলন্ত অবস্থায় গুলি করে পালিয়ে যাওয়া দুজন ময়মনসিংহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে। বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে যমুনা টেলিভিশনের ময়মনসিংহের ব্যুরো চিফ হোসাইন শাহিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।   তিনি বলেন, ওই দুই শুটার- ফয়সাল ও আলমগীর শুক্রবারই ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ভুটিয়াপাড়া সীমান্ত দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে গেছে। ঘটনার পরপরই একটি প্রাইভেট কারে প্রথমে মিরপুর থেকে আশুলিয়া পরে গাজীপুর হয়ে ময়মনসিংহে ঢুকে। ময়মনসিংহে এসে সেই প্রাইভেট কার পালটে ফেলে তারা।   হোসাইন শাহিদ বলেন, তারা অন্য আরেকটি প্রাইভেট কারে উপজেলার ধারাবাজার পেট্রোল পাম্পে পৌঁছায়। সেখান থেকে স্থানীয় একজন ব্যক্তি তাদের মোটরসাইকেলযোগে ভুটিয়াপাড়া সীমান্তে নিয়ে যায়। স্থানীয় ওই ব্যক্তিকে এখনও আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে সেই সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করা অন্য যে দুইজন ছিল তাদের আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।   তিনি আরও বলেন, তাদের সীমান্ত পার করে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়; পরে আরেকজন রিসিভ করে নিয়ে যায়।

আক্তারুজ্জামান ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ 0

ডেটলের নামে ভয়ংকর প্রতারণা, গোপন কারখানার সন্ধান

রাজাকারের ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপ, লক্ষ্যভেদে মিলছে পুরস্কার

ওসমান হাদির অবস্থা অপরিবর্তিত, উন্নতি হলে বিদেশে নেওয়ার পরিকল্পনা

চট্টগ্রামে বিপুল পরিমাণ নকল সাবান জব্দ, কারখানা সিলগালা

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার মইজ্জারটেক শিকলবাহা এলাকায় অবৈধভাবে নকল সাবান উৎপাদনের একটি কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে র‌্যাব-৭।অভিযানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিপুল পরিমাণ নকল সাবান ও সাবান তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। এরমধ্যে জব্দ করা অধিকাংশই যুক্তরাজ্যের রেকিট বেনকিজার কোম্পানির ডেটল ব্রান্ডের সাবান। র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ রোববার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু হাসানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এ সময় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)- এর পরিদর্শক আব্দুর রহিম উপস্থিত ছিলেন। র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান বলেন, রিকশার গ্যারেজের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে কতিপয় ব্যক্তি এখানে নকল সাবান তৈরি করছে, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায় র‌্যাব-৭। অভিযানকালে অবৈধভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল সাবান ও সাবান তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে নকল সাবান উৎপাদনে ব্যবহৃত কারখানাটি সিলগালা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এসব নকল সাবানে বিভিন্ন নামীদামী কোম্পানির লোগো ব্যবহার করে বাজারজাত করে আসছিলো তারা। জব্দকৃত নকল সাবানে যেসব কেমিকেল ব্যবহার করা হচ্ছে, সেসব মানুষের ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে জানিয়েছে বিএসটিআই। র‌্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক এ. আর. এম. মোজাফ্ফর হোসেন জানান, জনস্বাস্থ্য ও ভোক্তা অধিকার ক্ষুন্ন করে এমন ভেজাল ও নকল পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। উদ্ধার করা পণ্য ও সরঞ্জামাদির বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জান্নাতুল ফেরদৌস জেমি ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ভারতের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি

শব্দদূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ পরিবেশ উপদেষ্টার

নোবিপ্রবির সঙ্গে ক্যাপসের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে জাতিসংঘ সংস্থাসমূহের সহযোগিতার আশ্বাস

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-এর যৌথ উদ্যোগে আজ বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং আঘাত প্রতিরোধে বহুখাতীয় কর্ম অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে জাতিসংঘ সংস্থাসমূহের সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় জাতিসংঘ সংস্থার প্রতিনিধিরা সরকারের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের জাতীয় বহুখাতীয় কর্মপরিকল্পনা এবং ‘যৌথ ঘোষণা’-এর সঙ্গে তাদের কর্মসূচি সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পুরাতন সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা যেমন- জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয় অফিস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, ইউএনডিপি, ডব্লিউএফপি, ইউএনএফপিএ, এফএও, আইওএম, আইএলও, ইউএনওপিএস ও ইউএনআইডিও-এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশ বা এর বেশি মৃত্যুর জন্য হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাসহ অসংক্রামক রোগসমূহ দায়ী। যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি অকালমৃত্যু। এ ক্রমবর্ধমান রোগ দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা, পারিবারিক আর্থিক নিরাপত্তা এবং জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব উল্লেখ করেন, পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে, বাংলাদেশ সরকার ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে ৩৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের যৌথ অংশগ্রহণে একটি ‘যৌথ ঘোষণা’ স্বাক্ষর করে যা অসংক্রামক রোগ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং আঘাত প্রতিরোধে একটি সমন্বিত পদ্ধতির ঐতিহাসিক মাইলফলক স্থাপন করে। এ ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী বহুখাতীয় ভিত্তি গড়ে তুলেছে, তবে এর সফল বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন জাতিসংঘ সিস্টেমের মধ্যে সমন্বিত, সুসংগঠিত এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ সহায়তা। তিনি বলেন, ২০টিরও বেশি জাতিসংঘ সংস্থা খাদ্য ব্যবস্থা, শিক্ষা, নগরায়ণ, জলবায়ু সহনশীলতা, শ্রম, লিঙ্গ সমতা এবং সামাজিক সুরক্ষাসহ এমন বহু ক্ষেত্রে কাজ করছে যা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে অসংক্রামক রোগের নির্ধারকদের সঙ্গে সম্পর্কিত। পুনরাবৃত্তি এড়াতে এবং সব মন্ত্রণালয়ে অভিন্ন বার্তা পৌঁছানো নিশ্চিত করতে অধিকতর সমন্বয় ও সামঞ্জস্য বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ উপ-প্রতিনিধি ডা. রাজেশ নারওয়াল, সরকার ও জাতিসংঘের অংশীদারদের সহায়তায় সমন্বিত এবং বহুখাতীয় প্রতিক্রিয়া গড়ে তুলতে কারিগরি সহায়তা ও নীতিগত পরামর্শ প্রদানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে অসংক্রামক রোগ মোকাবিলায় সব নীতিতে স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যা সব খাতের ধারাবাহিক ও সক্রিয় সম্পৃক্ততা দাবি করে। আলোচনায় অংশগ্রহণকারীগণ সমন্বয় জোরদার করা, যৌথ কর্মসূচি শক্তিশালী করা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ও সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা (ইউনাইটেড হেল্থ কভারেজ)-সহ জাতীয় ও বৈশ্বিক লক্ষ্যসমূহের অর্জনকে ত্বরান্বিত করার বিষয়ে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

জান্নাতুল ফেরদৌস জেমি ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ 0

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে থাই রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

ছবি: সংগৃহীত

এমপিদের সব কাজের এখতিয়ার দিলে সেখানে অনিয়ম হবেই - দুদক চেয়ারম্যান

ছবি: সংগৃহীত

ডেঙ্গুতে একদিনে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৮৭

0 Comments