শিক্ষা

ছবি : সংগৃহীত
শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রোববার থেকে পরীক্ষা শুরু

প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য তিন দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনের অংশ হিসেবে চলমান কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাস্তবায়ন পরিষদ ও সংগঠন ঐক্য পরিষদ এ ঘোষণা দেয়।   বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য ৩ দফা দাবি আদায়ে বাস্তবায়ন পরিষদ এবং সংগঠন ঐক্য পরিষদের চলমান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা ও সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আগামী রবিবার থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। আগামী রবিবার থেকে সকল শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে। উভয় পরিষদের আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহী
হঠাৎ বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিতে বিপাকে পড়লো শিশু শিক্ষার্থীরা

শিক্ষকদের কর্মসূচির কারণে দেশের অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে। তিন দফা দাবি আদায়ে সহকারী শিক্ষকরা গতকাল বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছেন। ফলে সারাদেশের বহু বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগের রাতে হঠাৎ কর্মসূচির ঘোষণা আসায় অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক বিষয়টি জানতে না পেরে গতকাল পরীক্ষা দিতে স্কুলে গিয়ে বিপাকে পড়েন। তবে রাজধানী ও বিভাগীয় শহরের কিছু স্কুলে বিচ্ছিন্নভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।   তিন দফা দাবি আদায় এবং কয়েকজন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার প্রতিবাদে গতকাল সহকারী শিক্ষকরা সারা দেশের বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার (এটিইও) কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেন। এতে অসংখ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এর আগে দুই দিনের কর্মবিরতির মধ্যেও দেশের অনেক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকরা পরীক্ষার আয়োজন করেন কিছু ক্ষেত্রে অভিভাবকরাও সহযোগিতা করেন। প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে ২৭ নভেম্বর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লাগাতার কর্মবিরতি চলছে। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় গত মঙ্গলবার পরিষদের আহ্বায়ক মো. আবুল কাসেম, মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ, খাইরুন নাহার লিপি, মু. মাহবুবুর রহমানসহ ২০২৩ ও ২০২৫ ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়। এরপর রাতেই শিক্ষকরা লাগাতার শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এতে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা কার্যত থমকে গেছে। হঠাৎ স্কুল বন্ধ ও পরীক্ষা না হওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, বছরের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কর্মবিরতি শিশুদের পড়াশোনায় বড় ধরনের বিঘ্ন তৈরি করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ছোটদের পড়াশোনার ধারাবাহিকতা নষ্ট হলে তারা ছিটকে পড়ার ঝুঁকিতে থাকে। রাশেদা বেগম নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘এভাবে হঠাৎ স্কুল বন্ধ হলে ছোট ক্লাসের বাচ্চারা পড়াশোনা থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায়। বাসায় তো তারা ঠিকভাবে পড়তে চায় না। শিক্ষকদের দাবি থাকতে পারে, কিন্তু ক্ষতিটা শেষ পর্যন্ত আমাদের বাচ্চাদেরই হয়।’ আরেকজন অভিভাবক জসীম উদ্দিন বলেন, ‘পরীক্ষা হচ্ছে না। বাচ্চারাও দুশ্চিন্তায় আছে। সরকার ও শিক্ষকদের দ্রুত আলোচনায় বসে সমাধান করতে হবে।’ এদিকে বরগুনার আমতলীর আঙ্গুলকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা স্কুলের তালা ভেঙে পরীক্ষা নেন। দেশের আরও কয়েকটি স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষক নেতারা বলেন, তিন দফা দাবিতে আশ্বাস পাওয়া গেলেও ২২ দিনেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। তাই বাধ্য হয়েই শাটডাউন শুরু হয়েছে। তাদের ঘোষণা অনুযায়ী, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থেকে নিজ নিজ বাসায় থাকবেন। তবে প্রথম দিন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অবহিত করতে প্রতি বিদ্যালয়ে একজন করে শিক্ষক উপস্থিত হন। সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো— ১. বেতন স্কেল দশম গ্রেডে উন্নীত করা ২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা দূর করা ৩. সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করা তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আপাতত দশম গ্রেডে উন্নীতকরণে অসম্মতি জানিয়ে ১১তম গ্রেড দেওয়ার সুপারিশ করেছে, যা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি করে আসছেন সহকারী শিক্ষকরা। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত। প্রধান শিক্ষকরা বর্তমানে ১০ম গ্রেডে থাকলেও সহকারী শিক্ষকরা এখনো ১৩তম গ্রেডে আছেন।   এদিকে সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আন্দোলনরত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কর্মবিরতি স্থগিত করে শ্রেণিকক্ষে ফিরেছেন, ফলে সেসব বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা স্বাভাবিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
জটিলতায় সেশনজট—আটকে গেল সাত কলেজের দেড় লাখ শিক্ষার্থী

সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা ও প্রশাসনিক জটিলতায় সাত কলেজের দেড় লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তা। ভয়াবহ সেশনজটে পড়তে যাচ্ছেন তারা। প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির খসড়া অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের কর্মসূচি শুরু করেছেন শিক্ষকরা। অন্যদিকে পালটা কর্মসূচি হিসেবে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ জারি ও ক্লাস-পরীক্ষা চালুর দাবিতে ঢাকা কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। ইডেন কলেজকে শুধু নারীদের জন্য সংরক্ষিত করার দাবিতে দুই দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় বাতিলের দাবিতে ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা তিন দিন ধরে আন্দোলন করছেন।   ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির প্রথমবর্ষের সাড়ে ১১ হাজার শিক্ষার্থী এক বছরেও ক্লাস না পেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। দ্রুত ক্লাস শুরু না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিভিন্ন গ্রুপের অনড় অবস্থানের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ ঘোষণায় বিলম্ব হচ্ছে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, ২০১৭ সালে আপত্তি থাকা সত্ত্বেও অধিভুক্তির সিদ্ধান্ত ছিল অপরিণামদর্শী এবারও তাড়াহুড়া করে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দিয়ে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হয়েছে। শিক্ষকরা মনে করেন, একটি অধিভুক্তিমূলক বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করলেই সহজ সমাধান মিলত। এদিকে যখন দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ছয় মাসের ক্লাস শেষ করে নতুন ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন, সাত কলেজ এখনো ভর্তিপ্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ক্লাস শুরুর তারিখ নির্ধারণ করা হলেও শিক্ষকরা তা মানছেন না। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো, কর্তৃত্ব ও কর্মপদ্ধতি কোনোটাই স্পষ্ট নয়। ঢাকা কলেজের এক শিক্ষক জানান, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি আইনসঙ্গত নয়, তাই তাদের পক্ষে প্রথম বর্ষের ক্লাস নেওয়া সম্ভব নয়। প্রশ্ন উঠছে, প্রস্তুতি ছাড়াই কেন ভর্তি শুরু হলো এ দায় কার? সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কলেজগুলো চলছে অন্তর্বর্তী প্রশাসকের মাধ্যমে একটি দুর্বল কাঠামোয়, আর এর প্রধান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। আগস্টে ভর্তি পরীক্ষা হলেও নভেম্বরের শেষ নাগাদও ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়নি যা পরিস্থিতিকে আরও বিশৃঙ্খল করেছে। সমস্যা আরও জটিল হচ্ছে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় মডেলকে ঘিরে। ৪০ শতাংশ অনলাইন ও ৬০ শতাংশ সশরীর ক্লাস, বিভাগভিত্তিক একাধিক কলেজে পাঠদান এবং অনেক বিষয়ে কাটছাঁট এসব নিয়ে শিক্ষক, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থী এবং স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সাত কলেজের শিক্ষকরা আবারও কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের দাবি, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো চূড়ান্ত না হওয়ায় ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। দ্রুত সমাধান না হলে দেশব্যাপী আরও কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব স্তরে স্থায়ীভাবে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। নতুন কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল মাউশি প্রাঙ্গণে গণজমায়েত হয়েছে। আজ দেশব্যাপী সরকারি কলেজে মানববন্ধন ও ব্রিফিং, ৪ ডিসেম্বর পাবলিক পরীক্ষা বন্ধসহ সাত কলেজে সর্বাত্মক কর্মবিরতি এবং ৬ ডিসেম্বর দেশব্যাপী কলেজ শিক্ষকদের অংশগ্রহণে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দাবি পূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের টোটাল শাটডাউনেরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে ইডেন কলেজকে শুধুমাত্র নারীদের জন্য সংরক্ষিত করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। দুই দিনের মধ্যে ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরানোর আলটিমেটামও দিয়েছেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, ইডেন মহিলা কলেজ নারীদের শিক্ষা, স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক তাই এর স্বাতন্ত্র্য ও নিরাপদ পরিবেশ রক্ষায় কোনো আপস করা যাবে না। সব পদে শিক্ষা ক্যাডার রাখার দাবি শিক্ষকদের সরকারি সাত কলেজকে নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ‘স্কুলিং’ পদ্ধতি বাতিল এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিক সকল পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারকে স্থায়ীভাবে অন্তর্ভুক্ত করে আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। শিক্ষা ভবন চত্বরে সমাবেশ করে তাঁরা জানান, কলেজগুলোর স্বতন্ত্র কাঠামো বজায় রেখে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরে শিক্ষা ক্যাডারদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।   ঢাকা কলেজের শিক্ষকরা বলেন, খসড়া অধ্যাদেশে প্রস্তাবিত ‘স্কুলিং’ পদ্ধতি বাতিল করা জরুরি। সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের এক শিক্ষক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব পদেই শিক্ষা ক্যাডারকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং বর্তমান নিয়োগ পদ্ধতি বজায় রাখতে হবে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে জাপানি ভাষা শিক্ষকদের জন্য ৭২ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ শুরু

বাংলাদেশ জাপানি ভাষা শিক্ষক সমিতি (জালটাব)-এর উদ্যোগে দেশব্যাপী জাপানি ভাষা শিক্ষকদের জন্য ৭২ ঘণ্টার মৌলিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।    জাপান ফাউন্ডেশনের অনুদানসহ এই হাইব্রিড প্রোগ্রামে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৩৬ জন শিক্ষক অংশ নিচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় এবং জাপান দূতাবাসের পরিচালনায় প্রশিক্ষণটি শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সোমবার অনলাইনে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সম্মেলনে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাপান দূতাবাসের সাংস্কৃতিক বিভাগের দ্বিতীয় সচিব কিওহেই ইয়ামামোটো, জাপান ফাউন্ডেশনের জাপানি ভাষা বিশেষজ্ঞ টেকেও উজাওয়া এবং টময়ুকি ফুকুই। অতিথিরা তাদের বক্তব্যে জালটাবের কার্যক্রমের প্রশংসা করে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে সর্বোচ্চ দক্ষতা অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন।   ‘পরীক্ষা বন্ধ রাখলে শাস্তির মুখোমুখি হবেন শিক্ষকরা’ প্রশিক্ষণের প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনসারুল আলম, কুনিয়াকি ওকাবায়াশি এবং ড. মো. মনির উদ্দিন। জালটাবের সভাপতি প্রফেসর ড. আনসারুল আলম জানান, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাপানি ভাষা শিক্ষকরা আধুনিক পাঠদান পদ্ধতি এবং শিক্ষণ কৌশল সম্পর্কে আরও দক্ষ হবেন। তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে জাপানি ভাষার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। এমন প্রশিক্ষণ শিক্ষকদের ক্ষমতায়ন করে দেশে ভাষা শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়তা করবে”।   উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত জালটাব দেশের জাপানি ভাষা শিক্ষকদের একটি সংগঠিত প্ল্যাটফর্ম। এই সংগঠন ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্তরের কর্মসূচি চালিয়ে এসেছে, যা জাপানি সংস্কৃতি ও ভাষার প্রসারে অবদান রাখছে। প্রশিক্ষণটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের (আইএমএল) সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০২, ২০২৫ 0
স্কুলে ভর্তিতে ডিজিটাল লটারির তারিখ জানা গেল

দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তিতে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ ডিসেম্বর। রোববার (৩০ নভেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল। তিনি জানান, গত ২১ নভেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদন নেওয়া হচ্ছে। ৫ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ আবেদন করা যাবে। এরপর ১১ ডিসেম্বর লটারি হবে। লটারিতে নির্বাচিতরাই ভর্তির সুযোগ পাবে। মাউশির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ৪ হাজার ৪৮টি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এবার সরকারি স্কুলের সংখ্যা ৬৮৮টি এবং বেসরকারি স্কুলের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৬০টি। গত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি স্কুলের ১ লাখ ২১ হাজার ৩০টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছিল ২ লাখ ৬০ হাজার ২৪৪ জন। তারা পছন্দক্রম দিয়েছিল ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৭২৮টি। অন্যদিকে, বেসরকারি স্কুলে ১০ লাখ ৭২ হাজার ২৫১টি শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন করেছিল ৯৮ হাজার ৭৬২ শিক্ষার্থী। তারা পছন্দক্রম দিয়েছিল ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬২টি। এরপর আর আবেদন জমা পড়ার নতুন তথ্য জানায়নি মাউশি।  

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০২, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাউশির জরুরি নির্দেশনা : না মানলে কঠোর ব্যবস্থা

সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক, নির্বাচনী ও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এ নির্দেশনা প্রতিপালনে কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।   মাউশির সরকারি মাধ্যমিক শাখা থেকে ১ ডিসেম্বর সকালে জারি করা অফিস আদেশে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২০ নভেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা এবং ২৭ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনী পরীক্ষা চলবে। এ ছাড়া, আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী সব সরকারি ও বেসরকারি নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাধ্যমিক স্তরে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। নির্ধারিত সময়ে সুষ্ঠুভাবে এসব পরীক্ষা সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।   একই সঙ্গে সতর্ক করা হয়েছে যে, পরীক্ষা গ্রহণে কোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তার শৈথিল্য বা অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০১, ২০২৫ 0
এক লেখাতেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার পুরো প্রক্রিয়া

ধরে নিচ্ছি আপনি দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে ব্যাচেলর্স বা মাস্টার্স করছেন। আপনার প্রথম কাজ হওয়া উচিত যতটা সম্ভব ভালো রেজাল্ট করা। সাধারণভাবে ৪.০০ এর মধ্যে ৩.৫০কে স্ট্যান্ডার্ড সিজিপিএ হিসেবে ধরা হয়। এর বেশি হলে ভালো, কম হলেও সমস্যা নেই। তবে খুব কম হলে চ্যালেঞ্জ বাড়বে। তবুও চেষ্টা করলে যেকোনো সিজিপিএ নিয়েই আপনি বিদেশে কোনো না কোনো প্রোগ্রামে ফুল স্কলারশিপ, ফুল ফান্ডিং বা আংশিক টিউশন ফিসহ পড়ার সুযোগ পেতে পারেন। রেজাল্ট ভালো থাকলে অবশ্যই প্রতিযোগিতা কমবে। তাই শেষ সেমিস্টার হলেও সর্বোচ্চ চেষ্টা করে রেজাল্ট উন্নত করার চেষ্টা করুন। এরপর মনোযোগ দিন আইইএলটিএস বা অন্য কোনো ইংরেজি ভাষা পরীক্ষায়, যেমন টোফেল। কিছু দেশে ডুওলিংগো বা মিডিয়াম অব ইন্সট্রাকশন (এমওআই) গ্রহণ করলেও আইইএলটিএস বা টোফেল থাকলে আপনার প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা বাড়ে। তবে সুযোগ না থাকলে ডুওলিংগো বা এমওআই দিয়েও চেষ্টা করতে পারেন। আইইএলটিএস স্কোর ৬.৫ বা তার বেশি হলে স্কলারশিপ পেতে সুবিধা হবে। বিদেশে জীবন অনেকটা নিজের ওপর নির্ভরশীল। সব কাজ নিজেকেই সামলাতে হয়। তাই মানসিক দৃঢ়তা গুরুত্বপূর্ণ। এজন্যই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবেদনকারীর লিডারশিপ কোয়ালিটি গুরুত্ব দিয়ে দেখে। যাদের নেতৃত্বগুণ রয়েছে, তারা সাধারণত মানসিকভাবে দৃঢ় হয়, তাদের মাঝে শৃঙ্খলা থাকে, তারা সমস্যা দেখে ভয়ে পালিয়ে না গিয়ে সেটা মোকাবেলা করে বা সমাধানের চেষ্টা করে। তাই আবেদনপত্রে আপনার নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা ফুটিয়ে তুলুন। টিমওয়ার্ক, সামাজিক ও সেবামূলক কার্যক্রম, খেলাধুলা বা বিষয়ভিত্তিক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ—এসব অভিজ্ঞতা আপনাকে নিশ্চিতভাবে বাড়তি সুবিধা দেবে। এরপর তথ্য সংগ্রহ ও পরিকল্পনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, বিভিন্ন থার্ড-পার্টি প্ল্যাটফর্ম এবং সোশ্যাল মিডিয়ার উচ্চশিক্ষাবিষয়ক গ্রুপগুলো অনেক সহায়ক। প্রথমে ঠিক করুন কোন প্রোগ্রামে এবং কোন দেশে মাস্টার্স বা পিএইচডি করতে চান। আমার ব্যক্তিগত মত হলো, এক দেশ বা এক প্রোগ্রামে সীমাবদ্ধ না থেকে কয়েকটি দেশ ও প্রোগ্রাম বিবেচনায় রাখলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। আমি মনে করি, ইংরেজিভাষী দেশগুলো প্রথম অগ্রাধিকার হতে পারে। ভাষাগত সুবিধা, চাকরির সুযোগ এবং ভবিষ্যতে সেখানে সেটেলমেন্টের সম্ভাবনা থাকে। এরপর ইউরোপের দেশগুলো, তারপর আরব দেশের কথা ভাবা যায়, আর সবশেষে এশিয়ান দেশগুলো। অবশ্য একেকজনের প্রায়োরিটি ভিন্ন হতে পারে। দেশ ও প্রোগ্রাম ঠিক হয়ে গেলে আপনার প্রোফাইলের সঙ্গে মিল আছে এবার বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করুন। অন্তত ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা করুন। প্রতিটির আবেদনের শেষ তারিখ (ডেডলাইন) নোট করে নিন। কাজটা যত গুছিয়ে করবেন, পুরো যাত্রাটি তত সহজ হবে। এজন্য একটি নোটবুক রাখতে পারেন অথবা গুগল ডকস, শিটস, এক্সেল বা গুগল কিপ ব্যবহার করতে পারেন। ডেডলাইন মাথায় রেখে স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি), মোটিভেশন লেটার এবং দুই পৃষ্ঠার বেশি নয়—এমন সিভি সুন্দর করে লিখুন। এসবের জন্য ইউটিউব বা গুগলে প্রচুর টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। শিক্ষকদের সঙ্গে আগেই কথা বলে রিকমেন্ডেশন লেটার সংগ্রহ করুন। নিজের সার্টিফিকেটগুলোও গুছিয়ে রাখুন। এরপর যথাসময়ে আবেদন করুন। যদি ইন্টারভিউ নেওয়া হয়, সেজন্য প্রস্তুতি নিন। ২–৩টি অনলাইন কোর্স করতে পারেন। এক্ষত্রে কোর্সেরা একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম। এগুলো সিভিতে যেমন গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে, তেমনি আপনি যে বিষয়ে পড়তে যাচ্ছেন তার বেসিক ধারণা তৈরি করবে এবং ইন্টারভিউতেও কাজে লাগবে। ইন্টারভিউতে মূলত দেখা হয়, আপনার মোটিভেশন কতটা, সিভিতে দেওয়া অভিজ্ঞতা কতটা সত্যিকার অর্থে আপনার, এবং যে প্রোগ্রামে আবেদন করেছেন সে সম্পর্কে আপনার ধারণা আছে কি না। তাই এগুলো মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিলেই যথেষ্ট। সবশেষে অ্যাডমিশন পেয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করুন। ভিসা হয়ে গেলে বিমান টিকিট কাটুন, বাসা ঠিক করুন—বিশ্ববিদ্যালয় বা স্থানীয় স্টুডেন্ট কমিউনিটির সাহায্য নিতে পারেন। নির্দিষ্ট দিনে ব্যাগ গুছিয়ে বিমানে উঠে পড়লেই শুরু হবে আপনার নতুন জীবন। লেখক : সাকলাইন মোস্তাক, পিএইচডি শিক্ষার্থী, যুক্তরাষ্ট্র

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ৩০, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
প্রাথমিক শিক্ষকরা দিলেন নতুন আলটিমেটাম

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে তিন লাখ সহকারী শিক্ষক লাগাতার কর্মবিরতিতে রয়েছেন। তারা গত ২৭ নভেম্বর থেকে তিন দফা দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করছেন।   বার্ষিক পরীক্ষা সামনে রেখে এবার তারা সরকারের প্রতি নতুন আলটিমেটাম দিয়েছেন। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী রোববার (৩০ নভেম্বর) পর্যন্ত তাদের দাবি মানা না হলে সোমবার থেকে শুরু হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করা হবে। প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক জানান, আমরা লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছি। সারা দেশের সাড়ে ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বার্ষিক পরীক্ষা আসন্ন। রোববার পর্যন্ত যদি সরকার আমাদের দাবি মানে না, তাহলে সোমবার থেকে শুরু হওয়া বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করব। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।   প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত, যাদের মধ্যে অধিকাংশই সহকারী শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকরা বর্তমানে দশম গ্রেডে উন্নীত হয়েছেন, তবে সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন, যা নিয়ে তারা দীর্ঘদিন ধরে অসন্তুষ্ট। গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে সহকারী শিক্ষকরা দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করে আসছেন।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ২৯, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুয়া শিক্ষার্থী আটক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) মিনহাজ ইসলাম রিফাত নামে এক ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে চলছিলেন।   বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাতে অর্থনীতি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে সন্দেহজনক আচরণের কারণে আটক করে জিরো পয়েন্ট পুলিশ বক্সে নিয়ে যান। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা বাহিনী তাকে হেফাজতে নেয়। আটকের পর তার কাছে থাকা পরিচয়পত্র থেকে জানা যায়, তিনি চট্টগ্রামের আর এইচ হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মচারী। শিক্ষার্থী পরিচয়ে তিনি অর্থনীতি বিভাগের বেশ কয়েকজন সিনিয়র ছাত্রীকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও বার্তা পাঠাতেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শ্রেণি প্রতিনিধি সৃজিতা বলেন, অনেকদিন ধরেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনছিলাম। তিনি আমাদের ব্যাচের শিক্ষার্থী পরিচয় দিতেন, কিন্তু আমি যেহেতু সিআর, ব্যাচের সবাইকে চিনি—তাই বুঝে যাই তিনি ভুয়া। আজ তাকে হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয়েছি।   বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন, সে ভুয়া শিক্ষার্থী—এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তার কাছে একটি হাসপাতালের পরিচয়পত্রও পাওয়া গেছে। এছাড়া চবির বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে তার যোগাযোগের কথাও জানা গেছে। তাকে নিরাপত্তা দপ্তরে হস্তান্তর করা হয়েছে পরবর্তী ব্যবস্থা সেখানেই নেওয়া হবে।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ২৭, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
লম্বা ছুটিতে যাচ্ছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

ডিসেম্বরে লম্বা ছুটিতে যাচ্ছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আর খুলবে আগামী বছরের শুরুতে। বছরের শুরুতে নতুন বই হাতে নিয়ে আবারও শুরু হবে পাঠদান। শীতকালীন অবকাশ, বিজয় দিবস ও যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে ডিসেম্বরে লম্বা ছুটি পাবেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।     প্রাথমিক বিদ্যালয় :  বিদ্যালয় প্রধানের হাতে থাকা তিনদিনের ছুটিসহ ২০২৫ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি ছিল ৭৮ দিন। ডিসেম্বরের লম্বা ছুটির মাধ্যমে যা শেষ হতে চলেছে। শীতকালীন অবকাশ, বিজয় দিবস ও যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি শুরু হবে ১১ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এর মধ্যে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালন করার নির্দেশনা আছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এছাড়া ২০২৫ সালের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষা আগামী ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।    মাধ্যমিক বিদ্যালয় :  মাধ্যমিকের ছুটির তালিকা অনুযায়ী, ১৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ২০২৫ সালের শেষ ছুটি। এর আগে ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে। মাধ্যমিকের ছুটি শেষ হবে ২৮ ডিসেম্বর। ছুটি শেষে ২৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা, যা চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালন উপলক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসার নির্দেশনা রয়েছে।    সরকারি-বেসরকারি কলেজ :  দেশের সরকারি ও বেসরকারি কলেজে ছুটি শুরু হবে ১৪ ডিসেম্বর। আগের দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি। তাদের ছুটি শেষ হবে ২৮ ডিসেম্বর। কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও মহান বিজয় দিবস পালনে প্রতিষ্ঠানে আসবেন।    মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান :  শিক্ষার ছুটির তালিকা অনুযায়ী দেশের সরকারি-বেসরকারি (স্বতন্ত্র, এবতেদায়ি, দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল) মাদ্রাসা ১৪ ডিসেম্বর থেকে ছুটি শুরু করবে। এর আগে ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর সাপ্তাহিক ছুটি। মাদ্রাসা খুলবে ২৮ ডিসেম্বর। এদিকে মাদ্রাসায়ও দুই স্তরে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ২৫, ২০২৫ 0
Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

Top week

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ছবি : সংগৃহীত
জাতীয়

লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫ 0