ঢাকায় পা রেখেও মঞ্চে উঠতে পারল না পাকিস্তানের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘কাভিশ’। শহরে কনসার্টের উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই নেমে এলো অচেনা অস্বস্তি। শেষ মুহূর্তে আটকে যায় ভেন্যুর অনুমতি। আয়োজক প্রাইম ওয়েভ কমিউনিকেশনস জানায়, বাধ্য হয়েই অনুষ্ঠানটি স্থগিত করতে হয়েছে, তবে পুরোপুরি বাতিল হয়নি। জানা যায়, ‘ওয়েভ ফেস্ট: ফিল দ্য উইন্টার’ শিরোনামে কনসার্টটি হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে। এতে কাভিশের পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যান্ড শিরোনামহীন, মেঘদলসহ আরও কয়েকজন শিল্পী পারফর্ম করার কথা ছিল। ভেন্যু হিসেবে নির্ধারিত ছিল ঢাকার মাদানী অ্যাভিনিউয়ের কোর্টসাইড। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) কাভিশ ঢাকায় পৌঁছে। ব্যান্ড সদস্যদের বিমানবন্দরের ছবি প্রকাশ করে আয়োজক প্রতিষ্ঠান সামাজিক মাধ্যমে জানায়, কাবিশ গত রাতে ঢাকায় পৌঁছেছে। এরপর কনসার্ট স্থগিত নিয়ে ব্যান্ডদলটির পক্ষ থেকে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে আয়োজক প্রতিষ্ঠান। আয়োজক পক্ষ জানায়, আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল—যে কোনো মূল্যে এই অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করা। দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও অস্থিরতা বিবেচনা করে, সব প্রস্তুতি, ভেন্যু, কাগজপত্র, শিল্পীর পারিশ্রমিক ও অনুমতির জটিলতা অতিক্রম করার পরও আমাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ওয়েভফেস্ট সিজন ০১ সাময়িকভাবে পুনর্নির্ধারণ করা উচিত। আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য হৃদয় থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি; কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আয়োজক পক্ষ আরও জানায়, অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে; কিন্তু বাতিল করা হয়নি। আপনারা কেউ হতাশ হবেন না। আমরা আন্তরিকভাবে এই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। এ ছাড়া আপনাদের জন্য কাভিশ নিজে একটি ভিডিও বার্তাও পাঠিয়েছেন। আমরা আবারও ক্ষমা চাচ্ছি। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ব জানুয়ারিতেও ঢাকায় এসে ‘ঢাকা ড্রিমস’ কনসার্টে গান পরিবেশন করেছিল কাভিশ। ‘বাচপান’ ও ‘তেরে পেয়ার মে’ গানগুলো দিয়ে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে জনপ্রিয় এই ব্যান্ডটি ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
দেড় বছরের অপেক্ষা আর ২৫০ কোটি রুপির বিনিয়োগ শেষে, অবশেষে দাঁড়িয়ে গেছে রণবীর কাপুর ও আলিয়া ভাটের স্বপ্নের বাংলো, যা দামে ও জাঁকজমকে টেক্কা দেয় শাহরুখ খানের ‘মান্নাত’ থেকে অমিতাভ বচ্চনের ‘জলসা’ পর্যন্ত। দিওয়ালির পবিত্র লগ্নে যজ্ঞ আর পূজার মধ্য দিয়ে গৃহপ্রবেশের পর এবার ভক্তদের উদ্দেশ্যে সেই বিলাসী নতুন সংসারের প্রথম ঝলক আলিয়া শেয়ার করেছেন নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেল ইনস্টাগ্রামে। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে ইনস্টাগ্রামে একগুচ্ছ ছবি শেয়ার করেছেন আলিয়া ভাট। সেখানেই দেখা গেল গৃহপ্রবেশের দিন শশব্যস্ত তারকা দম্পতিকে। প্রকাশিত ছবিতে ঋষি কাপুরের প্রতিকৃতির সামনে দাঁড়িয়ে রণবীরকে প্রণাম করতে দেখা যায়, আবার কোনো ছবিতে ধরা পড়ল তাদের ঘরের যজ্ঞ ও পূজা পাঠের ঝলক। সে সময় ছোট্ট রাহাও মা-বাবার সঙ্গে পূজায় অংশগ্রহণ করে। আর এদিকে বউমার এমন আয়োজনে যে নীতু কাপুর মহাআপ্লুত, সেই মুহূর্তও ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। যেখানে ঋষি কাপুরের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে আলিয়াকে আলিঙ্গন করে আদরে ভরিয়ে দিতে দেখা যায় শাশুড়ি নীতুকে। প্রসঙ্গত, এই নতুন বাংলোতেই মেয়ে রাহার তিন বছরের জন্মদিন পালন করেছেন রণবীর-আলিয়া। জানা যায়, জানা গিয়েছে, ২৫০ কোটির এই বাংলোর অর্ধেকটা নাকি মেয়ে রাহা কাপুরের নামে রেজিস্ট্রি করেছেন রণবীর-আলিয়া। আর বাকিটা ঋষি কাপুরের কথামতো নীতু কাপুরের নামে রাখা হয়েছে।
আবারও বিতর্কে জড়ালেন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের বড় ছেলে আরিয়ান খান। সম্প্রতি প্রথম নির্মাণ ‘ব্যাডস অব বলিউড’ ওয়েব সিরিজ দিয়ে বি টাউনে বেশ সাড়া ফেলেছিলেন আরিয়ান খান। কিন্তু এরই মাঝে বেঙ্গালুরুতে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে ফের বিতর্কে জড়ান এই তরুণ নির্মাতা। যার ভিডিও এরই মধ্যে ভাইরাল নেট দুনিয়ায়। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ নভেম্বর একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই অশোকনগর এলাকার একটি পাব-এ দুই বন্ধুর সঙ্গে দেখা যায় আরিয়ানকে। অভিযোগ, বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দের মাঝে জনসমক্ষে নিজের মধ্যমা আঙুল দেখিয়ে ‘অশালীন’ ইঙ্গিত করে বসেন আরিয়ান। আর মুহূর্তেই সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। আর শাহরুখপুত্রকে ওই ভঙ্গিমায় দেখে বিরক্ত দর্শকের একাংশ। তাদের দাবি, অবিলম্বে আরিয়ানের বিরুদ্ধে পুলিশ যেন পদক্ষেপ করে। যদিও কর্ণাটকের পুলিশের তরফ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো উত্তর মেলেনি। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের মাদক-কাণ্ডের পরে বেশ কিছু দিন প্রকাশ্যে দেখা যায়নি আরিয়ান, শাহরুখসহ গোটা খান পরিবারকে। সেসময় এ প্রসঙ্গে শাহরুখ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘গত ৪-৫ বছরের যাত্রাটা আমাদের পরিবারের জন্য বেশ রুক্ষ ছিল। আমি জানি, কভিডের কারণে নিশ্চয় আরও অনেকের ক্ষেত্রেও তাই। আমার সব ছবি ফ্লপ করে। অনেকেই আমার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার কথাও লিখে ফেলেছিল।‘ তবে এক বছরে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। কিন্তু এই বিতর্কের জল কতদূর গড়ায় সেটাই এখন দেখার পালা।
গ্ল্যামার দুনিয়ার আলো ছায়ার মাঝে আবারও তোলপাড় মালাইকা অরোরাকে ঘিরে। আরবাজ খানের সঙ্গে দুই দশকের দাম্পত্য ভাঙন, এরপর অর্জুন কাপুরের সঙ্গে ছয় বছরের সম্পর্কের ইতি। সব মিলিয়ে জীবনের ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে যেন নতুন করে নিজেকে গড়ছেন তিনি। কিন্তু থেমে নেই কানাঘুষা। এনরিক ইগলেসিয়াসের কনসার্টে ‘গোপন হাতধরা’ ছবিই যেন আগুনে ঘি ঢেলেছে। হাঁটুর বয়সি হীরা ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার সম্ভাব্য নতুন প্রেম নিয়ে চারদিকে তোলপাড়। বয়সের তফাৎ নিয়ে চলছে কটাক্ষের ঝড়ও। আর এবার সেটা নিয়েই মুখ খুললেন মালাইকা। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, আরবাজ-অর্জুন অধ্যায়কে অতীত করে ব্যক্তিগতজীবনের ঝড়-ঝাপটা সামলে অভিনেত্রী বর্তমানে অনেকটাই থিতু হয়েছেন। যদিও বিচারকের আসন ছাড়া বলিউডের সিনেমা-সিরিজের পর্দাতেও তেমন আর দেখা যায় না তাকে। তবে তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কিন্তু কৌতূহলের অন্ত নেই অনুরাগীমহলে। মালাইকার ডিভোর্স, প্রেম থেকে সাজপোশাক, সবকিছুই নেটিজেনদের নজরে থাকে। যার কারণে একাধিকবার ‘বদনামের ভাগী’ হতে হয়েছে এই অভিনেত্রীকে। এক সাক্ষাৎকারে মাইলাইকা বলেন, ‘হাজার শক্ত থাকলেও আপনাকে বিচার করা হবে। যেটাই হোক না কেন, মেয়েদের সবসময় বিচারের কাঠগড়ায় তোলা হয়। কারণ এটা করা সহজ।’ এদিকে সাক্ষাৎকারে নতুন প্রেমিককে নিয়ে নিন্দুকদের কটাক্ষের জবাব দেওয়ার পাশাপাশি প্রাক্তন স্বামী আরবাজ খানের দ্বিতীয় বিয়েকেও পরোক্ষভাবে খোঁচা দেন মালাইকা। তিনি বলেন, ‘আমি এখন যেমন নারীতে পরিণত হয়েছি, সেই পর্যায়ে পৌঁছনোর নেপথ্যে আমার জীবনে বেশ কিছু পুরুষের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু আজকের যুগে, একজন পুরুষ নিজের মতো জীবনযাপন করলে সেটাকে বাহবা দেয় সমাজ। এটা দারুণ! পুরুষরা বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর নিজের জীবনে অনায়াসে এগিয়ে যেতে পারে। আবার হাঁটুর বয়সী মেয়েকেও বিয়ে করতে পারে। তখন সকলে বাহবা দিয়ে বলেন- বাহ দারুণ কাজ করেছে। কিন্তু এই একই কাজ যখন কোনও মহিলা করেন, তখন তাকে সমালোচিত হতে হয়। উলটে সেই মহিলাকে প্রশ্ন করা হয়- কেন সে এরকম করছে? ওর কি বোধবুদ্ধি নষ্ট হয়ে গিয়েছে? এরকম বস্তাপচা ধ্যানধারণা এবার সত্যিই বন্ধ হওয়া দরকার।‘ এদিকে জানা যায়, বর্তমানে মালাইকা যার প্রেমে পড়েছেন তিনি একজন হীরা ব্যবসায়ী। নাম হর্ষ মেহেতা। মালইকার সঙ্গে তার বয়সের ফারাক উনিশ বছর। গুঞ্জন রয়েছে, চব্বিশ সালে অর্জুন কাপুরের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার পরই নাকি হর্ষের সঙ্গে বন্ধুত্ব শুরু হয় মালাইকার। সম্প্রতি সেই বিশেষ বন্ধুকে নিয়ে বিদেশে ছুটি কাটাতেও উড়ে গিয়েছিলেন ভ্রমণবিলাসী নায়িকা। তারপর থেকেই চর্চায় তার নতুন প্রেমজীবন।
চিত্রনায়িকা অধরা খান। ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন তিনি। আছে অভিনয়ের প্রতিও ভালোবাসা। তাই তো দেশের বাইরে থেকেও মুক্তির অপেক্ষায় থাকা নিজের ‘ঋতুকামিনী’র জন্য অপেক্ষায় আছেন নায়ক সিনেমা খ্যাত এই নায়িকা। সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন মাতৃত্ব’খ্যাত পরিচালক জাহিদ হোসেন। গত বছর এটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এতে অধরার বিপরীতে আছেন জনপ্রিয় অভিনেতা সজল। সজলের সঙ্গে এটাই অধরার প্রথম কোনো কাজ। এর আগে অধরা বেশ কয়েকজন নায়কের বিপরীতে অভিনয় করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলেন সাইমন সাদিক ও বাপ্পি চৌধুরী। নতুন এ সিনেমা নিয়ে অধরা বলেন, ‘ঋতুকামিনীর গল্পটা এক কথায় অন্যরকম। এ ধরনের গল্প নিয়ে আমাদের দেশে বলা যায় সিনেমা নির্মাণই হয়নি। জাহিদ ভাই অত্যন্ত গুণী একজন পরিচালক। তার মাতৃত্ব সিনেমাটি সম্পর্কে জানি, তবে দেখা হয়নি। এমন একজন গুণী পরিচালকের সিনেমায় অভিনয় করে আমার নিজেরই বেশ ভালো লেগেছে। অনেক কিছুই শিখেছি আমি তার কাছ থেকে। সবমিলিয়ে গল্প, নিমার্ণশৈলী এবং প্রত্যেক শিল্পীই চমৎকার অভিনয় করেছেন। সবমিলিয়ে ঋতুকামিনী একটি পরিপূর্ণ সিনেমা, যা হলে গিয়ে দেখার জন্য আমি নিজেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আশা করছি সিনেমাটি মুক্তি পেলে দর্শকের ভালোবাসায় সমাদৃত হবে সিনেমাটি।’ এ সিনেমায় অধরা একজন গ্রামের মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সিনেমাটিতে তার সঙ্গে আরও আছেন ফজলুর রহমান বাবু, দীপা খন্দকার, রীনা খানসহ আরও অনেকে। অধরা খান অভিনীত অন্যান্য সিনেমা হচ্ছে ‘নায়ক’, ‘মাতাল’, ‘পাগলের মতো ভালোবাসি’, ‘সুলতানপুর’। এ সব সিনেমাই মুক্তি পেয়েছে। প্রতিটি সিনেমাতেই তার অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়েছে। মুক্তির অপেক্ষায় আছে অধরা অভিনীত ‘দখিন দুয়ার’ সিনেমাটিও। এটি নির্মাণ করেছেন সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড।
ঘনিষ্ঠ দৃশ্য বা চুম্বন দৃশ্য নিয়ে নানা জনের নানা মত। এমন দৃশ্যে কেউ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, কেউ করেন না। এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, বিয়ের পর চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করতে চান না তিনি। সম্প্রতি ছোটপর্দার অভিনেত্রী শ্বেতা ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, এমন কোনও দৃশ্যে তিনি অভিনয় করবেন না, যা বাড়ির লোক বা কাছের মানুষের সঙ্গে দেখলে তার অস্বস্তি হবে।। তার বিশ্বাস, স্বামী রুবেল দাসও এমন দৃশ্যে অভিনয় করবেন না। এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী শ্রুতি দাস বলেন, স্বামী একই পেশায় আছে বলেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে ও আমার দিকটা বুঝতে পারে। আর স্বর্ণেন্দুই আমার মেন্টর। তাই কোনও কাজের সুযোগ এলে প্রথমে ওর সঙ্গেই আলোচনা করি। শ্রুতি আরও বলেন, বিশ্বরূপ স্বর্ণেন্দুরও ঘনিষ্ঠ। আর আমি বলেওছিলাম, গল্পের স্বার্থে কিছু এমন দৃশ্য আছে। আমার কোনও অসুবিধা হয়নি। তবে এটা বলতে চাই, অহেতুক কোনও চিত্রনাট্যে যদি চুম্বন দৃশ্য থাকে সেটা করতে পারব না। তার সঙ্গে বিবাহিত, অবিবাহিত হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। অভিনেত্রী অহনা দত্ত বলেন, এখানে স্বামীর মতামত বা পরিবারের ভাবনার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, আমি কী ভাবছি, চিত্রনাট্য অনুযায়ী কোনটা করলে ঠিক হবে। গল্পের স্বার্থে যদি আমায় গন্ধযুক্ত খাবার খেতে হয় সেটাও খেতে রাজি। সুতরাং আমার এই ধরনের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। অভিনেত্রী ঊষসী রায় বললেন, আমার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হল, আমি ওই চরিত্র, ওই দৃশ্যকে বিশ্বাস করতে পারছি কি না। জোর করে করানো হচ্ছে বলে মনে হলে সেটা সম্ভব নয়। আর এমন অনেক সময় হয়েছে। কোনও দৃশ্যে অভিনয়ের পরে ভেবেছি বাড়িতে কে কী ভাববে। কিন্তু পরে তাঁরাই আমার মাকে ফোন করে প্রশংসা করেছেন। আর তা ছাড়া, আমার ঘনিষ্ঠদের আমার উপর পুরোপুরি আস্থা রয়েছে, এটা আমার বিশ্বাস।
দীর্ঘ পাঁচ ধরে চুটিয়ে প্রেম করার পর গায়িকা পলক মুচ্ছলের ভাই প্রেমিক বলিউডের খ্যাতনামা কম্পোজার পলাশ মুচ্ছলকে প্রকাশ্যে আনেন ভারতের জাতীয় দলের ক্রিকেটার স্মৃতি মান্ধানা। এরপর সাতপাকে বাঁধার দিন-তারিখ ঠিক হয়। ২৩ নভেম্বর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল এ তারকা জুটির। কিন্তু স্মৃতির বাড়ি সাঙ্গলী গিয়েও ফিরে যেতে হয় পাত্রপক্ষকে। জানা যায়, স্মৃতির বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন আচমকা। তাই বিয়ে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। যদিও মাঝে পানি অনেক দূর গড়িয়েছে। স্মৃতির হবু স্বামী পলাশকে নিয়ে একের পর এক পুরোনো খবর আসতে থাকে একাধিক নারীর তরফ থেকে। স্মৃতির ভাই ও তার সতীর্থরা পর্যন্ত পলাশ মুচ্ছলকে তাদের সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে দেন। এরপর থেকে নেটিজেনদের মাঝে জল্পনা— আদৌ কি স্মৃতি-পলাশের বিয়েটা হবে? এবার তা নিয়ে মুখ খুললেন পলাশ মুচ্ছলের বোন সংগীতশিল্পী পলক মুচ্ছল। পলক মুচ্ছল ভাইয়ের বিয়ে নিয়ে খুব খুশিতেই ছিলেন। গায়েহলুদ থেকে সংগীত— সব অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন এ সংগীতশিল্পী। কিন্তু এক লহমায় যেন বদলে গেল চিত্র। বিয়ে স্থগিত হয়ে গেল পলাশ ও স্মৃতির। তারপর থেকে একবারের জন্যও প্রকাশ্যে আসেননি স্মৃতি মান্ধানা। যদিও এর মাঝেই আধ্যাত্মিক গুরু প্রেমানন্দ মহারাজের শরণাপন্ন হয়েছেন পলাশ মুচ্ছল। সেই ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। মাঝে অবশ্য রটে যায় যে, বিয়ের পরিবর্তিত তারিখ ৭ ডিসেম্বর। যদিও স্মৃতির ভাই ওই জল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছেন। এবার এই বিয়ে নিয়ে গায়িকা পলক বলেন, দুই পরিবার কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমি ও আমার পরিবার ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করছি। অন্য কিছুতে মনোযোগ নয়; বরং একে অপরের মধ্যে সংযোগ দৃঢ় হচ্ছে। পরিবারই প্রাধান্য পাচ্ছে। তবে বিয়েটা শেষ পর্যন্ত হবে কিনা— হলে কবে হবে, তা নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করেননি পলক মুচ্ছল। উল্লেখ্য, বেশ কয়েক দিন ধরেই ভারতের মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলিতে বিশ্বকাপজয়ী তারকা ক্রিকেটার স্মৃতি মান্ধানার বিয়ের জমজমাট প্রস্তুতি চলছিল। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বেশ জমকালোভাবে হলুদের অনুষ্ঠানও হয়। রোববার (২৩ নভেম্বর) চার হাত এক হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু সেদিনই ঘটে যায় এক মহাবিপর্যয়। স্মৃতির বাবা শ্রীনিবাস মান্ধানা বিয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। এখানেই শেষ নয়; আরও এক বিপর্যয়ের খবর অপেক্ষা করছিল স্মৃতি মান্ধানার জীবনে। তার বাবার পর এবার হাসপাতালে ভর্তি হন তার হবু স্বামী পলাশ মুচ্ছলকেও। আর তাতেই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হয় বিয়ের অনুষ্ঠান।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন করে ৩৬টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। এ নির্বাচন ঘিরে মনোনয়নের দৌড়ে ছিলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। গত মাসে প্রার্থীর নাম ঘোষণার সময় তার নির্বাচিত এলাকা সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর ও সদর) এর আসনটি খালি রাখা হয়েছিল। এবার নিরাশ করেনি বিএনপি। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিরাজগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী হিসেবে কনকচাঁপার নাম ঘোষণা করেন। নতুন করে ৩৬ আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) নিজের ফেসবুকে এক পোস্টে কনকচাঁপা লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ’। যদিও আলহামদুলিল্লাহ লেখার পেছনে নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করেননি। সংগীতের পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। সিরাজগঞ্জ–১ আসনে দ্বিতীয়বার লড়বেন, এমনটাই শোনা গিয়েছিল। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরবও হন এই সংগীতশিল্পী। ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সিরাজগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন কনকচাঁপা, তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ নাসিম। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাধায় কনকচাঁপা নির্বাচনি প্রচার চালাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত এলাকায় যেতে না পেরে তিনি পার্শ্ববর্তী জেলা বগুড়ায় সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কনকচাঁপা সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জাসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন।
ভারতের দক্ষিণে সিনে-ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা। যিনি ‘পুষ্পা’ সিনেমার শ্রীভল্লী নামেও দর্শকদের মাঝে বেশ সমাদৃত। তবে শুধু দক্ষিণেই নয় এখন বলিউডেও অভিনয় করে বেশ সাড়া ফেলেছেন এই সুন্দরী। রাশমিকার অভিনয় যেমন দর্শকদের মাঝে আলোচনার চর্চার বিষয় হয়ে থাকে ,তেমনি তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশ কৌতূহলী তার অনুরাগীরা। বিশেষ করে দক্ষিণী তারকা বিজয় দেবরাকোন্ডা ও রাশমিকার বিবাহ নিয়ে এখন ভক্তদের মাঝে জল্পনা তুঙ্গে। তবে এ বিষয়ে এবার মুখ খুলেছেন রাশমিকা নিজেই। চলতি বছরের অক্টোবরে বাগদান সেরেছেন বিজয়-রাশমিকা। এরপর তারা মুখে কিছু না বললেও তাদের আচরণ ও হাতের আংটি সবাইকে বুঝাতে আর কিছু বাকি রাখে নাই। তবে গুঞ্জন রয়েছে বাগদানকে বিয়েতে রূপ দিতে যাচ্ছেন এই হবু দম্পতি। আগামী বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি উদয়পুরের বিশাল একটি প্রাসাদে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন রাশমিকা-বিজয়। তবে এ বিষয়ে কিছু নিশ্চিত করা না হলেও হলিউড রিপোর্টারের এক সাক্ষাৎকারে রাশমিকা বলেন, ‘আমি বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিতও করব না আবার উড়িয়ে দেব না। আমি শুধু বলতে চাই, যখন বলার সময় হবে তখনই বলবো।’ উল্লেখ্য, মডেলিংয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন রাশমিকা মান্দানা। ২০১২ সালে ‘ক্লিন অ্যান্ড ক্লিয়ার ফ্রেস অব ইন্ডিয়া’ খেতাব জেতেন তিনি। ২০১৬ সালে কন্নড় ভাষার ‘কিরিক পার্টি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। অভিষেক এ চলচ্চিত্রের জন্য সাউথ ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল মুভি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন এই অভিনেত্রী। এরপর বেশ কিছু সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করেন রাশমিকা মান্দানা ও বিজয় দেবরকোন্ডা। ‘গীতা গোবিন্দম’, ‘ডিয়ার কমরেড’ সিনেমায় তাদের রসায়ন দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। এ জুটির পর্দার রসায়ন ব্যক্তিগত জীবনেও গড়ায়। ফলে এ দুজনের সম্পর্ক বহুল চর্চিত। তবে ২০১৭ সালে কন্নড় সিনেমার নির্মাতা-অভিনেতা রক্ষিত শেঠির সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছিলেন রাশমিকা মান্দানা। বাগদানের পরও ভেঙে যায় রাশমিকার এই বিয়ে। তবে ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমের দাবি, বিজয়ের কারণেই ভেঙে গিয়েছিল রাশমিকার এই বিয়ে।
দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা। সাত বছরের প্রেমের পর ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল তিনি বিয়ে করেন গোলাম মো. ইফতেখার গহীনকে। দীর্ঘ ছয় বছরের সংসারজীবন শেষে হঠাৎ বিচ্ছেদ ঘটে তাদের। তবে এবার কনাকে ঘিরে নতুন আলোচনায় সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করেছেন কনা। সেখানে তার হাতে দেখা গেছে গাঢ় মেহেদির নকশা। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, “আমার হাতে মেহেদি”। আর এতেই শুরু জল্পনা—তবে কি নতুন করে ঘর বাঁধতে যাচ্ছেন এই তারকা? অনুরাগীদের প্রশ্ন, কনার জীবনে কি আসছে সুখবর? কে সেই নতুন পাত্র? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সারাক্ষণ। অনেকে আবার আগাম অভিনন্দনও জানাতে শুরু করেছেন তাকে। তবে গুঞ্জন যাই হোক, এ বিষয়ে কনা এখনো মুখ খোলেননি। তাই অপেক্ষা—ঠিক কী বার্তা দিতে যাচ্ছেন তিনি, তা জানতে আগ্রহী তার ভক্তরা।
বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী অভিনেত্রী, সংগীতশিল্পী, মডেল ও প্রযোজক তাসনিয়া ফারিণ। পেয়েছেন চিত্রনায়িকার তকমাও। কারণ এরই মধ্যে রুপালি পর্দায় বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গেছে তাকে। এবার পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী প্রকাশ পেল তার নতুন গান ‘মন গলবে না’। যেটি তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ফড়িং ফিল্মস’-এর প্রথম মিউজিক ভিডিও। তবে এবার শুধু গায়িকা হিসেবেই নয়, নতুন এই গানটির মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবেও অভিষেক হলো ফারিণের। কবির বকুলের কথায় গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন ইমরান মাহমুদুল। নাহিয়ান আহমেদের নির্দেশনায় ভিডিওতে মডেল হিসেবেও রসায়ন জমিয়েছেন ফারিণ ও ইমরান। ইমরান মাহমুদুলের ইউটিউব চ্যানেলে গানটি প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওর বর্ণনায় গানটিকে আবেগ ও সুরের এক নিবিড় মেলবন্ধন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই মিউজিক ভিডিওতে ফারিণ হয়ে ওঠেন এক আইটেম কুইন! তাকে দেখা গেছে নানা রূপে, নানা ঢঙে। কখনো লাল ডট প্রিন্টের পোশাকে সুইমিংপুলের ধারে খুনসুটিতে মেতেছেন, আবার কখনো সাদা পোশাকে গুহার আদলে তৈরি সেটে নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে তাল মিলিয়েছেন। আবার কখনও কালো রহস্যময় সাজে কিংবা সোনালি জাঁকজমকপূর্ণ পোশাকে আগুনের শিখার মাঝে ছড়িয়েছেন গ্ল্যামার। এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে ছোট ও বড় পর্দায় ফারিণের সাবলীল অভিনয় দেখে অভ্যস্ত দর্শকেরা। এবার তার সুরেলা কণ্ঠ শুনে রীতিমতো চমকে গেছেন তারা। অভিনয়ের জাদুর পর গানের গলাতেও যে তিনি এতটা পারদর্শী, তা যেন বিশ্বাসই হতে চাইছে না অনেকের। অভিনেত্রী ফারিণের এমন গায়কিতে শ্রোতামহলে ব্যাপক উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি বিস্ময়ও তৈরি হয়েছে।
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ আবারও শুটিংয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি ‘মালিক’ সিনেমার শুটিং চলাকালে আগুনে দগ্ধ হন তিনি। ঢাকার বাইরে এক নির্জন লোকেশনে ছবিটির অ্যাকশন দৃশ্য ধারণের সময় এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, পরিকল্পনা ছিল—অ্যাকশন দৃশ্যে শুভর শরীরের নিচের অংশে সামান্য আগুনের ছোঁয়া লাগবে, যা নিয়ন্ত্রিতভাবেই ধারণ করা হবে। কিন্তু ক্যামেরা চলা শুরু হতেই ঘটল অঘটন। মুহূর্তেই আগুনের শিখা লাফিয়ে উঠে তার পায়ে জড়িয়ে ধরে। প্রথমে নিজেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও শিখা থামছিল না। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি ভারসাম্য হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ইউনিটের সদস্যরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন। তবে কীভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল এবং শুভর বর্তমান শারীরিক অবস্থা কেমন—এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানা যায়নি। ‘মালিক’-এর পরিচালক সাইফ চন্দনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। এর আগেও শুটিং করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার গুরুতর আহত হয়েছেন আরিফিন শুভ। ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অগ্নি’ সিনেমার শুটিংয়ে থাইল্যান্ডে তিনি মারাত্মক আঘাত পান এবং পরে ভারতের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। এরপর ‘কিস্তিমাত’ ছবির শুটিংয়েও ঘোড়ায় চড়ার দৃশ্যের সময় ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন এই জনপ্রিয় তারকা।
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা অপু বিশ্বাস প্রায়ই নিজেকে নতুন রূপে উপস্থাপন করে ভক্তদের চমকে দেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোনালি আভায় মোড়ানো এক মনোমুগ্ধকর লুকে হাজির হয়েছেন তিনি। ছবি প্রকাশের পরই ঝলমলে সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে পড়েছেন অসংখ্য ভক্ত ও অনুরাগী। অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত সেই ফটোসেশনের ছবিগুলোতে দেখা যায়— সোনালি নকশা সম্বলিত শাড়িতে অপু বিশ্বাস অপূর্ব এলিগ্যান্স ছড়াচ্ছেন। মানানসই গহনায় সাজটি আরও রাজকীয় হয়ে ওঠেছে। গলায় নেকলেস, কানে দুল, হাতে চুড়ি ও হীরার মতো ঝলমলে অলংকারের সঙ্গে চুলে সাদা ফুলের খোঁপা—সব মিলিয়ে এক মোহময়ী রূপে ধরা দিয়েছেন তিনি। শুধু লুক নয়, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে তার রহস্যময় ও আত্মবিশ্বাসী ক্যাপশনও। সেখানে তিনি লিখেছেন— এই ব্যক্তিটি ব্যাপক কর্তৃত্বের অধিকারী এবং সব সাফল্যের মূলে ইনিই রয়েছেন। এই নতুন স্টাইলিশ লুক প্রকাশের পর নেটিজেনদের প্রশংসায় ভরেছে মন্তব্যের ঘর। এক ভক্ত লিখেছেন— নায়িকার পাশাপাশি অপু বিশ্বাস এখন একজন স্টাইল আইকন। নিয়মিত ফটোশুট ও মডেলিংয়ের মাধ্যমে তিনি নিজেকে ক্রমাগত নতুনভাবে হাজির করছেন—যা তার ক্যারিয়ারে যোগ করছে নতুন মাত্রা। গ্ল্যামার দুনিয়ার পাশাপাশি পেশাগত জীবনেও সুখবর দিয়েছেন অপু বিশ্বাস। প্রায় দুই বছরের বিরতির পর নতুন ছবিতে ফিরছেন তিনি। রোম্যান্টিক-অ্যাকশন-থ্রিলার ঘরানার সিক্রেট নামের নতুন এই ছবিটি নির্মাণ করবেন পরিচালক বন্ধন বিশ্বাস। অপুর সঙ্গে জুটি বাঁধবেন চিত্রনায়ক আদর আজাদ। জানা গেছে, চলতি মাসের শেষ দিকেই শুরু হবে সিনেমাটির শুটিং। মোট কথা, স্টাইল, আত্মবিশ্বাস ও নতুন মিশনের ঘোষণায় আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অপু বিশ্বাস।
নতুন বছরের শুরুতেই বড় চমক নিয়ে আসছে দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি। আলোচনায় থাকা বিগ বাজেটের প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম মেহেদী হাসান পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘রাক্ষস’। ছবিটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ তৈরি হয়েছিল আগেই—আর এবার জানা গেল, এতে সিয়াম আহমেদের বিপরীতে অভিনয় করবেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ইধিকা পাল। চলতি সপ্তাহেই তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা। সব ঠিকঠাক থাকলে এটি হবে সিয়াম–ইধিকা জুটির প্রথম সিনেমা, জানিয়েছে নির্মাতার ঘনিষ্ঠ সূত্র। এর আগে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে খবর রটেছিল তারা একসঙ্গে কাজ করবেন তামিম রহমান পরিচালিত ‘সিকান্দার’ সিনেমায়। তবে প্রকল্পটি আর এগোয়নি। ফলে বড় পর্দায় এ জুটিকে প্রথমবার দেখতে পাবেন দর্শক ‘রাক্ষস’–এর মাধ্যমে। বাংলাদেশি দর্শকের কাছে ইধিকা পরিচিতি পান শাকিব খান অভিনীত সুপারহিট ছবি ‘প্রিয়তমা’ দিয়ে। এরপর শাকিবের সঙ্গে কাজ করেন ‘বরবাদ’–এ। পাশাপাশি তিনি অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের ‘কবি’, আর কলকাতায় দেবের সঙ্গে ‘খাদান’ ও ‘রঘু ডাকাত’ ছবিতে। দুই বাংলার দর্শকের কাছে তার পরিচিতি ও চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। অন্যদিকে সিয়াম আহমেদের সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘জংলি’ দেশজুড়ে দারুণ সাড়া ফেলে। শবনম বুবলীর সঙ্গে তার জুটি প্রশংসা কুড়িয়েছে। ‘পোড়ামন ২’-এর মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেকের পর তিনি বাণিজ্যিক ও কনটেন্ট–ধর্মী দুটি ধারাতেই নিজের অভিনয় দক্ষতা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসেই ঢাকায় শুরু হবে ‘রাক্ষস’–এর শুটিং। এরপর শ্রীলঙ্কা ও মালয়েশিয়ায় চিত্রায়ণ হবে কয়েকটি অ্যাকশন ও গল্প–নির্ভর দৃশ্যের। আন্তর্জাতিক লোকেশন, আধুনিক অ্যাকশন এবং ভিএফএক্সের সমন্বয়ে ছবিটিকে বড় পরিসরে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে নির্মাতাদের। পরিচালক মেহেদী হাসান আপাতত ছবিটি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। সিয়ামও এ বিষয়ে নীরব রয়েছেন। তবে ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই ক্যামেরা রোলিং শুরু হবে। সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতরেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘রাক্ষস’।
বলিউডের আলোচিত ও সমালোচিত অভিনেত্রী সানি লিওন বরাবরই গ্ল্যামার, সাহসী উপস্থিতি ও ব্যক্তিজীবনের নানা অধ্যায়ের জন্য শিরোনামে থাকেন। তবে সম্প্রতি এক বিশেষ অনুষ্ঠানেই যেন সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন তিনি। রূপ-লাবণ্য নয়, বরং ব্যতিক্রমী ও ভাবনাচিন্তা–সমৃদ্ধ সাজে হাজির হয়ে মুহূর্তেই দর্শক-অতিথিদের চমকে দেন সানি। ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, ক্রিস্টালখচিত সিলভার পোশাকের সঙ্গে গোলাপি রঙের মিনি ওভার-স্কার্ট পরে র্যাম্পে প্রবেশ করেন তিনি। হাঁটতে হাঁটতে সরিয়ে ফেলেন সেই ওভার-স্কার্ট। তখনই স্পষ্ট হয়ে ওঠে টুইস্ট—মিনি স্কার্টে সারি সারি ঝুলছে কনডমের প্যাকেট। সানির এমন সাজে মুহূর্তেই বিস্ময়ে থমকে যায় দর্শকসারী। তাহলে কি নিছক আলোচনায় আসার কৌশল? নাকি এর পেছনে ছিল আরও গভীর বার্তা? জানা যায়, সানি লিওন ফ্যাশন আর সামাজিক সচেতনতাকে এক ফ্রেমে তুলে ধরতেই বেছে নিয়েছিলেন ১ ডিসেম্বর, বিশ্ব এইডস দিবসকে। এইডস ও এইচআইভি সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে কনডম ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরতেই ছিল তাঁর এমন অভিনব র্যাম্পওয়াক। সানির বার্তা ছিল স্পষ্ট—জাঁকজমক, আধুনিকতা আর বিনোদনের মাঝেও সুরক্ষার কথা ভোলা যাবে না। এদিকে, চলতি বছরে মুক্তি পাওয়া ব্যাডাস রবি কুমার সিনেমায় সর্বশেষ দেখা যায় সানিকে। কিথ গোমস পরিচালিত এই ছবিতে তাঁর সঙ্গে অভিনয় করেছেন হিমেশ রেশমিয়া, কীর্তি কুলহারি ও জনি লিভারসহ আরও অনেকে। এর আগে সানি লিওন জনপ্রিয়তা পেয়েছেন বেশ কিছু ছবিতে, যার মধ্যে রয়েছে— জিসম ২ (২০১২), জ্যাকপট (২০১৩), রাগিনী এমএমএস ২ (২০১৪), এক পেহেলি লীলা (২০১৫), তেরা ইন্তেজার (২০১৭) প্রভৃতি। চমকপ্রদ ফ্যাশন, সাহসী বার্তা আর সামাজিক সচেতনতাকে একসঙ্গে মিশিয়ে আবারও headlines দখল করলেন সানি লিওন।
বলিউড তারকা কাজল ও টুইঙ্কেল খান্নার যৌথ সঞ্চালনায় প্রচারিত এক আড্ডামূলক শো সম্প্রচার শুরুর পর থেকেই টেলিভিশনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে জনপ্রিয়তার পাশাপাশি শোটি ঘিরে তৈরি হয়েছে নানান বিতর্কও। অতিথিদের খোলামেলা আড্ডা, বেফাঁস মন্তব্য—সব মিলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই তোলপাড় ওঠে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছেন টুইঙ্কেল খান্না, স্বামীদের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে তাঁর এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। গত অক্টোবর মাসে প্রচারিত এক পর্বে টুইঙ্কেল বলেছিলেন, ‘স্বামীদের বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে আমার আপত্তি নেই। এগুলো ছোট ভুল, এড়িয়ে যাওয়া যায়।’ পরকীয়াকে ‘ছোট ভুল’ আখ্যা দিয়ে হালকাভাবে দেখায় নেটিজেনদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। শেষ পর্যন্ত বিতর্ক থামাতে মুখ খুললেন টুইঙ্কেল। নিজের মন্তব্যকে ‘অহেতুক বড় করা হচ্ছে’ দাবি করে তিনি বলেন, ‘এটা কোনো গুরুতর বিষয়ই নয়। এত সমালোচনার কিছু নেই। মজার ছলেই কথাটা বলা হয়েছিল। মানুষ যদি সত্যিই সারাজীবন একসঙ্গীর সঙ্গেই থাকতে পারত, তাহলে নিশ্চয়ই বিষয়টি চিন্তাভাবনা করে বলতাম। এটা নিছক রসিকতা ছাড়া কিছুই না।’ স্পষ্টতই, সমাজের বাস্তবতা ও আদর্শ পরিস্থিতির পার্থক্য থেকেই এমন মন্তব্য করেছিলেন বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন অক্ষয়-পত্নী। তবে এখানেই শেষ নয়। শোয়ের আরেক সাম্প্রতিক পর্বে অতিথি জাহ্নবী কাপুর ও করণ জোহরকে প্রশ্ন করা হয়—‘মানসিকভাবে ঠকানো নাকি শারীরিকভাবে ঠকানো—কোনটা বড় অপরাধ?’ সঞ্চালিকাদের এমন স্পর্শকাতর প্রশ্ন ও মন্তব্য নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে ব্যাপক আলোচনার ঝড়। সব মিলিয়ে, কাজল–টুইঙ্কেলের সঞ্চালিত এই শো বিতর্কের কেন্দ্রে থাকলেও, টিআরপি বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাদের সরল-সোজা মন্তব্যই যেন মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। তবে ব্যক্তিগত জীবন ও মনমানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেক সাধারণ দর্শকই।
গত ঈদুল ফিতরে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান অভিনীত দুটি সিনেমা মুক্তি পায়—‘বরবাদ’ এবং ‘অন্তরাত্মা’। এর মধ্যে ‘বরবাদ’ বক্স অফিসে সুপারহিট হলেও ভাগ্য সহায় হয়নি ‘অন্তরাত্মা’র। প্রচারণার ঘাটতি ও সময়ের ব্যবধানের কারণে ছবিটি হলে তেমন দর্শক টানতে পারেনি। তবে এবার ব্যর্থতা কাটিয়ে নতুন করে ওটিটিতে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি। আগামী বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘আইস্ক্রিন’-এ দেখা যাবে ওয়াজেদ আলী সুমন পরিচালিত ‘অন্তরাত্মা’। হলে ব্যর্থতার কারণ খুঁজে দেখা গেছে, সিনেমাটির শুটিং শেষ হয়েছিল চার বছর আগে—২০২১ সালে। সেই বছরের রোজার ঈদে ছবিটি মুক্তির কথা থাকলেও অজানা কারণে তা স্থগিত হয়। এরপর দীর্ঘ সময় বিরতির পর চলতি বছরের রোজার ঈদে হঠাৎ করে কোনো প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই ছবিটি হলে ছাড়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। একদিকে ‘বরবাদ’-এর তুমুল জনপ্রিয়তা, অন্যদিকে ‘অন্তরাত্মা’র প্রচারহীনতা—দুটোর প্রভাবে দর্শকদের বড় একটি অংশ হলমুখী হয়নি। ফলে ব্যবসায়িকভাবে ছবিটি ব্যর্থ হয়। তবে ওটিটি রিলিজকে সামনে রেখে নতুন করে আশাবাদী প্রযোজনা সংস্থা। তাদের বিশ্বাস, হলে যারা মিস করেছেন, তারা এবার ওটিটিতে সিনেমাটি উপভোগ করবেন। তরঙ্গ এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে সোহানী হোসেন প্রযোজিত এই ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে আছেন টলিউড অভিনেত্রী দর্শনা বণিক। শাকিব–দর্শনা জুটির পাশাপাশি সিনেমাটিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহেদ শরীফ খান, অরুণা বিশ্বাস ও ঝুনা চৌধুরীর মতো অভিজ্ঞ শিল্পীরা।
অনলাইন বেটিং অ্যাপের মাধ্যমে অর্থ পাচারের অভিযোগে এবার ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) নজরে এসেছেন বলিউড অভিনেত্রী নেহা শর্মা। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) মামলার তদন্তের স্বার্থে তাকে দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদ করে সংস্থাটি। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতা অজিত শর্মার মেয়ে নেহা শর্মাকে নোটিশ পাঠিয়ে তলব করেছিল ইডি। তদন্ত কর্মকর্তারা মূলত জানতে চান, বিতর্কিত বেটিং প্ল্যাটফর্মটির সঙ্গে তার সম্পর্ক কী ছিল এবং তিনি অর্থের বিনিময়ে কী ধরনের প্রচারমূলক কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। সূত্র বলছে, প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের (পিএমএলএ) আওতায় অভিনেত্রীর বয়ান নথিভুক্ত করেছে ইডি। তদন্ত চলছে—বেটিং অ্যাপটির প্রচার ও প্রসারে তিনি কোনোভাবে ভূমিকা রেখেছিলেন কি না, এবং এর বিনিময়ে কোনো অবৈধ লেনদেন হয়েছে কি না। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি ‘ক্রুক’ খ্যাত নেহা শর্মা। এই মামলায় শুধু নেহা শর্মাই নন, ইডির রাডারে রয়েছেন বিনোদন ও ক্রীড়া জগতের আরও কয়েকজন তারকা। এর আগে সোনু সুদ, বিজয় দেবরাকোন্ডা, প্রকাশ রাজ, উর্বশী রাউতেলা, রানা দাগ্গুবাতি, ক্রিকেটার শিখর ধাওয়ান ও যুবরাজ সিংকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সংস্থাটি। উল্লেখ্য, গত আগস্টে জিজ্ঞাসাবাদের সময় দক্ষিণী অভিনেতা বিজয় দেবরাকোন্ডা দাবি করেছিলেন, তিনি ‘এ–২৩’ নামে একটি বৈধ গেমিং অ্যাপের প্রচার করেছিলেন, কোনো বেটিং অ্যাপের নয়। তার বক্তব্য—ভারতে গেমিং অ্যাপ ও বেটিং অ্যাপ আলাদা ক্যাটাগরির, এবং গেমিং অ্যাপ অনেক রাজ্যে বৈধ। তিনি তার ব্যাংক লেনদেন ও চুক্তিপত্রসহ প্রয়োজনীয় সব নথি ইডিকে সরবরাহ করেছিলেন।
পর্দার ওপারের মানুষটির নির্দেশনায় যখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো মানুষটি নিজেকে গড়ে তোলেন, তখন জন্ম নেয় শুধু চরিত্র নয়—তৈরি হয় এক অদৃশ্য রসায়নও। গ্ল্যামার দুনিয়ার ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, লেন্সের এপার–ওপারের এই সংযোগ নতুন কিছু নয়। হলিউড থেকে বলিউড কিংবা দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি—সবখানেই বহুবার নায়িকারা সহ-অভিনেতার চেয়ে পরিচালকের প্রেমেই বেশি ডুবেছেন। ‘বাহুবলি’ খ্যাত রম্যা কৃষ্ণা বিয়ে করেছেন পরিচালক কৃষ্ণা ভামসিকে; খুশবু মালা পরিয়েছেন পরিচালক সুন্দর সির গলায়; আর নতুন প্রজন্মের ইয়ামি গৌতম জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন ‘উরি’-র পরিচালক আদিত্য ধরকে। তালিকা আরও লম্বা। সম্প্রতি দক্ষিণী তারকা সামান্থা রুথ প্রভু ও ফ্যামিলি ম্যান খ্যাত পরিচালক রাজ নিদিমোরুর বিয়ে এই চিরন্তন প্রশ্নকে আবারও সামনে এনেছে—নায়িকারা কেন পরিচালকের প্রেমে পড়েন? শুটিং সেটে ‘অ্যাকশন’ আর ‘কাট’-এর মধ্যবর্তী সময়ের এই মনস্তাত্ত্বিক সংযোগ নিয়ে বলছেন শোবিজ সংশ্লিষ্টরা ও গবেষকেরা। দক্ষিণী পরিচালক অশোক তেজা এই প্রসঙ্গে দেন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা। সম্প্রতি তামান্না ভাটিয়াকে নিয়ে ‘ওডেলা টু’ নির্মাণ করা এই নির্মাতা মনে করেন, একটি সিনেমা তৈরির দীর্ঘ সময়জুড়ে পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীর মধ্যে ধীরে ধীরে তৈরি হয় একটি গভীর মানসিক সম্পর্ক। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা পাশাপাশি কাজ করা, চরিত্রের গভীরতা নিয়ে আলোচনা, লুক ও বডি ল্যাঙ্গুয়েজ নিখুঁত করতে একসঙ্গে পরিশ্রম—এসব পেশাগত ঘনিষ্ঠতা অজান্তেই আবেগে রূপ নেয়। তেজার মতে, এই সম্পর্ক কখনোই হুট করে তৈরি হয় না। প্রথমে আসে বন্ধুত্ব, তারপর ধীরে ধীরে ব্যক্তিগত পছন্দ–অপছন্দ শেয়ার করা; আর শেষে একে অপরকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত। তেলেগু, তামিল কিংবা বলিউড—সব জায়গাতেই এমন উদাহরণ অসংখ্য। পরিচালকদের পাশাপাশি সহ-অভিনেতার সঙ্গেও নায়িকাদের প্রেমের গল্প কম নয়। রাশমিকা মান্দানা–বিজয় দেবরকোন্ডার গোপন বাগদান ও ২০২৬ সালে বিয়ের গুঞ্জন সেই ধারাবাহিকতারই অংশ। নির্মাতাদের মতে, ইন্ডাস্ট্রির বাইরের কারও পক্ষে একজন তারকার কাজের চাপ বা শিডিউল বোঝা কঠিন। তাই যখন একজন অভিনেত্রী কোনো অভিনেতা বা পরিচালককে বিয়ে করেন, পারস্পরিক বোঝাপড়া সহজ হয়। অন-স্ক্রিন কেমিস্ট্রি তখন বাস্তব সম্পর্কেও ছড়িয়ে পড়ে। তবে মনস্তত্ত্বের পাশাপাশি রয়েছে প্রেমের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। শোবিজ তারকা বা সাধারণ মানুষ—প্রেমে পড়ার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে নির্দিষ্ট কিছু হরমোন। মার্কিন নৃবিজ্ঞানী হেলেন ফিশার মানুষের প্রেমে পড়ার তিনটি ধাপ ব্যাখ্যা করেছেন, যা তারকাদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। প্রথম ধাপ হলো কামপ্রবৃত্তি বা প্রাথমিক আকর্ষণ, যা নিয়ন্ত্রণ করে টেস্টোস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন। এরপর আসে তীব্র আকর্ষণের ধাপ—এই সময় মস্তিষ্কে ডোপামিন, অ্যাড্রিনালিন ও নরএপিনেফ্রিনের প্রবাহ বেড়ে যায়। শুটিং সেটের উত্তেজনা, নতুন কিছু তৈরির আনন্দ—সবই ডোপামিন ক্ষরণ বাড়ায়। প্রিয় মানুষকে দেখলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া অ্যাড্রিনালিনেরই প্রতিক্রিয়া। শেষ ধাপে কাজ করে অক্সিটোসিন, যা মানুষকে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কে আবদ্ধ হতে উদ্বুদ্ধ করে। সিনেমার সেটে মাসের পর মাস একসঙ্গে থাকা, সৃজনশীল আলোচনার মাধ্যমে একে অপরকে জানা, আবেগের আদান–প্রদান—সব মিলিয়ে হেলেন ফিশারের তিন স্তরের মধ্য দিয়েই একজন নায়িকা পরিচালকের দিকে ধাবিত হতে পারেন। সামান্থা–রাজ নিদিমোরুর বিয়ে সেই বৈজ্ঞানিক ও মনস্তাত্ত্বিক প্রক্রিয়ারই এক সুন্দর পরিণতি।
ছোট পর্দার জনপ্রিয় পরিচালক মিজানুর রহমান আরিয়ান দীর্ঘ দুই বছর কিছুটা আড়ালে ছিলেন। কাজের ব্যস্ততা কমিয়ে দেওয়ায় ভক্তদের মনে জেগেছিল নানা প্রশ্ন। অবশেষে নীরবতা ভেঙে এলো সুখবর—জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন তিনি। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিয়ের কয়েকটি ছবি পোস্ট করে আরিয়ান নিজেই জানান, তিনি বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। ছবির সঙ্গে আবেগঘন ক্যাপশনে লিখেছেন, যে মানুষটা চায় আপনার জীবনে ভালো কিছু আসুক, সে-ই আপনার জীবনে আসা সবচেয়ে ভালো কিছু। জানা গেছে, আরিয়ানের স্ত্রী তাহসিন তামান্না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন। বিয়ের নির্দিষ্ট তারিখ প্রকাশ না করলেও, গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় তিনি জানান—তাহসিনের সঙ্গে তার পরিচয় দীর্ঘ সাত বছরের, আর সেই পরিচয় ও ভালোবাসার পথ ধরেই সম্পর্কের পরিণতি ঘটেছে বিয়েতে। আরিয়ান জানান, আপাতত পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। তবে বড় আয়োজন এখনও বাকি। আগামী ঈদুল ফিতরের পর আত্মীয়স্বজন, বন্ধু এবং সহকর্মীদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা বা রিসেপশনের আয়োজন করা হবে।
সম্প্রতি বিয়ে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন অমিতাভ বচ্চনের স্ত্রী জয়া বচ্চন। তিনি বলেছেন, বিয়ের ধারণাটি এখন পুরানো হয়ে গেছে। এমনকি তিনি চান না তার নাতনি নভ্যা নাভেলি বিয়ে করুক। তার মতে জীবনকে উপভোগ করা উচিত। খবর হিন্দুস্থান টাইমস এই কথাগুলো মানুষের কাছে আপত্তিকর মনে হতে পারে, কিন্তু একে অপরের প্রতি শারীরিক আকর্ষণ ও সম্পর্ক থাকাও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন জয়া। বিয়ে নিয়ে অমিতাভ বচ্চনেরও একই মতামত আছে কিনা জানতে চাইলে জয়া বলেন, তিনি হয়তো বলতে পারেন যে আমিই তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। কিন্তু আমি তা শুনতে চাই না। তবে জয়া বচ্চন স্বীকার করেছেন যে আজ বিয়ে সম্পর্কে তার খুব আলাদা চিন্তাভাবনা থাকলেও তিনি প্রথম দর্শনেই অমিতাভ বচ্চনের প্রেমে পড়েছিলেন। অমিতাভ বচ্চনের প্রেম প্রসঙ্গে জয়া বলেন, পুরোনো ক্ষত কুড়ে কী আনন্দ পাবেন? আমি গত ৫২ বছর ধরে বিবাহিত। এর চেয়ে বেশি ভালোবাসতে পারবো না। আমি যদি বলি বিয়ে করো না, আমাকে পুরানো দেখাবে, আমি প্রথম দর্শনেই তার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘গুড্ডি’ ছবির সেটে প্রথম দেখা হয়েছিল অমিতাভ বচ্চন ও জয়া ভাদুড়ীর। ‘এক নজর’ ছবির শুটিংয়ের সময় দু’জনের প্রেমে পড়ে যান। তাদের বিয়ের গল্প হার মানাবে ছবির চিত্রনাট্যকে। ১৯৭৩ সালে চারহাত এক হয় অমিতাভ-জয়ার। কিন্তু সেই বিয়ের নেপথ্য়ের গল্পটা রোমহর্ষক। তাদের দুই সন্তান- কন্যা শ্বেতা বচ্চন (১৯৭৪) এবং পুত্র-অভিনেতা অভিষেক বচ্চন (১৯৭৬)। জয়াকে শেষ দেখা গিয়েছিল করণ জোহরের 'রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি' ছবিতে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।