অভিনয়গুণ তার পরিচয়ের বড় অংশ- এ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। রূপেও যে তিনি অনায়াসে নজর কাড়েন, তাও অনস্বীকার্য। আর সেই রূপে যখন রাজকীয় সৌন্দর্যের ছোঁয়া পড়ে তখন কার না চোখ জুড়াবে? এভাবেই লাল শাড়িতে রানির বেশে নিজের দ্যুতি ছড়ালেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। এমনিতে ফটোশুট বা ছবি তুলতে বেশ পছন্দ করেন সাদিয়া আয়মান। কোথাও ঘুরতে গেলেও নিজেকে ফ্রেমবন্দি করেন। যদিও মেকওভার ফটোশুটে খুব একটা দেখা মেলে না এই অভিনেত্রীকে; তবে এক ব্রাইডাল মেকওভারে রীতিমতো নজর কাড়লেন অভিনেত্রী। রোববার একগুচ্ছ ছবি প্রকাশ করতেই ভক্তদের চোখ আটকে দিলেন সাদিয়া। যেখানে উঠে আসে তার রাজকীয় সৌন্দর্য। ছবিতে দেখা যায় এক ক্লাসিক অন্দরমহলের আবহে ঘন লাল বেনারসিতে সাদিয়া। শাড়িতে সোনালি জরির সূক্ষ্ম কারুকাজ, নিখুঁত এমব্রয়ডারি; সব মিলিয়ে ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক রুচির অপূর্ব মেলবন্ধন। সাদিয়া আয়মান। ছবি- সংগৃহীত সাদিয়ার স্নিগ্ধ মুখাবয়বে লাল টিপ, গাঢ় কাজল আর চোখের গভীর সাজ; সবশেষে ঠোঁটে লালের উষ্ণ আভা। খোলা চুলে হালকা কার্ল, যা তার এই নতুন ফ্যাশনকে নিয়ে গেছে অনন্য মাত্রায়। অলঙ্কারেও ছিল আভিজাত্যের ছোঁয়া। মাথায় টিকলি ও ঝাপটা-সহ মানানসই মাঙ্গটিকা, গলায় কুন্দন-পাথর বসানো ভারী নেকলেস, হাতে চওড়া সোনালি চুড়ি ও বালা- প্রতিটি অনুষঙ্গেই ফুটে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী সৌন্দর্য। এই সাজ শুধু ফ্যাশনের গল্প নয়, আত্মপরিচয়েরও। নিজের পরিশ্রমে অর্জিত সাফল্য আর সিদ্ধান্তের স্বাধীনতা থেকেই নিজেকে ‘রানি’ ভাবতে ভালোবাসেন— এমন মন্তব্য আগেই করেছিলেন সাদিয়া। এই ছবিতে তার দৃপ্ত ভঙ্গিমা আর আত্মবিশ্বাস যেন সেই কথারই দৃশ্যমান প্রতিচ্ছবি। এই ব্রাইডাল মেকওভার নিয়ে মন্তব্যঘরে দেখা গেছে সাদিয়া আয়মান ভক্তদের অগণিত প্রশংসা। একজন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের রানি।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘বধূ সাজে অতুলনীয় তুমি।’ কেউ কেউ আবার সাদিয়া আয়মানের চেহারার মাঝে বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাটকেও খুঁজে পেয়েছেন। ঈদুল আজহা ২০২৫-এ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘উৎসব’ সিনেমার পর নতুন করে আলোচনায় আসা এই অভিনেত্রী চলতি বছর ‘দেরি করে আসবেন’, ‘খুঁজি তোকে’, ‘মেঘ বৃষ্টি রোদ্দুর’ ও ‘প্লিজ গো’ নাটকেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি ফ্যাশন স্টেটমেন্টেও যে তিনি সমান সাবলীল তার প্রমাণ দিলেন এবার।
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল। নিজের সুর দিয়ে সংগীতপ্রেমীদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট দিয়ে বাবা হওয়ার সুখবর ভক্ত-অনুরাগীদের মাঝে শেয়ার করেছিলেন। এবার আরেক পোস্টে মেয়ের জন্য দোয়া চেয়েছেন। পোস্ট দিয়ে ইমরান লিখেছেন, ‘গতকাল আমাদের জীবনের এক সুন্দর অধ্যায় পূর্ণ হলো। আমার মেয়ের আকিকা সম্পন্ন করেছি আলহামদুলিল্লাহ।’ মেয়ের জন্য দোয়া চেয়ে তিনি আরও লিখেছেন, ‘পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি আমাদের রাজকন্যা মাহনূর মাহমুদুল ইনায়াকে। দোয়া রাখবেন সবাই।’ এদিকে কমেন্ট বক্সে নেটিজেনরা ইমরানের মেয়ের জন্য দোয়া করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘দোয়া ও শুভকামনা সব সময়ের জন্য।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘অনেক অনেক দোয়া রইলো মামনিটার জন্য। দোয়া করি আপনার মতোই একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র হোক সোনামণিটা।’ উল্লেখ্য, সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল ২০০৩ সালে 'নতুন কুঁড়ি' প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এরপর ২০০৮ সালে চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ হয়ে শোবিজে পা রাখেন। একই বছর 'ভালোবাসার লাল গোলাপ' সিনেমায় কিংবদন্তি সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে দ্বৈত গানে কণ্ঠ দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১১ সালে আরফিন রুমির হাত ধরে তার প্রথম একক অ্যালবাম 'স্বপ্নলোক' প্রকাশ পায়। এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা এই শিল্পী গানকেই তার আয়ের মূল পথ হিসেবে বেছে নেন।
হাসি, আতঙ্ক আর রহস্য—সবকিছুর মাঝেই যার উপস্থিতি দর্শকের মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল, সেই অভিনেতা আর নেই। হলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা ‘দ্য মাস্ক’-এ স্মরণীয় অভিনয়ের জন্য পরিচিত পিটার গ্রিনের জীবনাবসান হলো নীরবে, নিভৃতে। গত শুক্রবার নিউইয়র্ক সিটির নিজের ফ্ল্যাট থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয় ৬০ বছর। এ বিষয়টি পিটার গ্রিনের ম্যানেজার ও দীর্ঘদিনের বন্ধু গ্রেগ এডওয়ার্ডস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, নিউইয়র্কের লোয়ার ইস্ট সাইডে অবস্থিত অভিনেতার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উচ্চ শব্দে গান বাজার আওয়াজ আসছিল। এরপর পুলিশের একটি দল সেখানে গিয়ে অভিনেতার মরদেহ উদ্ধার করে। তবে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। দ্যা মাস্ক সিনেমায় মূলত ডোরিয়ান টাইরেলের খলচরিত্রে ছিলেন পিটার। পর্দায় তার তীক্ষ্ণ চাহনি, গম্ভীর কণ্ঠস্বর এবং ভয়ংকর খল চরিত্রের অভিনয় দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল। এ ছাড়াও ‘পাল্প ফিকশন’-এর জেড চরিত্রের জন্য তিনি কাল্ট ক্লাসিক ভক্তদের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তবে পর্দায় ভয়ংকর সব চরিত্রে দেখা গেলেও ব্যক্তিজীবনে পিটার ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বভাবের মানুষ। তার ম্যানেজার গ্রেগ এডওয়ার্ডস বলেন, ‘পিটারের চেয়ে ভালো ‘ভিলেন’ আর কেউ হতে পারত না। কিন্তু পর্দার বাইরে তার একটি কোমল দিক ছিল, যা খুব কম মানুষই দেখার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি অত্যন্ত বড় মনের এবং দয়ালু একজন মানুষ ছিলেন।‘
কলকাতাজুড়ে যখন লিওনেল মেসির ভারত সফরকে ঘিরে উন্মাদনার ঢেউ, ঠিক তখনই সেই উচ্ছ্বাসেই যেন বিপত্তি! আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকরের সঙ্গে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়লেন টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলী। মেসির নামের সঙ্গে বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ নিয়ে করা মন্তব্যকে ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে কলকাতায় পৌঁছান ফুটবল কিংবদন্তি লিওনেল মেসি। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মেসিকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন শুভশ্রী। সেখানে মেসির সঙ্গে একাধিক ছবি তুলে তিনি নিজেকে বাংলা সিনেমার প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরেন। সেদিন অভিনেত্রী ধূসর রঙের টপ ও লং স্কার্ট পরেছিলেন। মেসির সঙ্গে ছবি পোস্ট করে অভিনেত্রী তার ক্যাপশনে প্রথমে লেখেন, “বাংলা ফিল্মকে ‘গোট’ এর সামনে রিপ্রেজেন্ট করার সুযোগ পেলাম।” তবে ক্যাপশনে সর্বকালের সেরা (G.O.A.T: Greatest Of All Time-)- এর পরিবর্তে সরাসরি 'গোট’(Goat) লেখায় খেলাধুলা সম্পর্কে নায়িকার ধারণা নিয়ে নেটিজেনরা প্রশ্ন তোলেন। এখানেই থেমে থাকেনি তারা, মজাও নিয়েছেন অনেকে মন্তব্যঘরে। ফলে রীতিমতো তোপের মুখে পড়েন শুভশ্রী। এদিকে মেসিকে দেখতে গিয়ে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে চরম অব্যবস্থার অভিযোগও উঠেছে। হাজার হাজার টাকার টিকিট কেটেও বহু মানুষ মেসিকে কাছ থেকে দেখতে পাননি। যারা মেসিকে দেখতে পাননি, তারা সামাজিকমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
চলছে বিয়ের জমজমাট মৌসুম। সাজসজ্জা, গয়না এবং আনন্দ-উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি এই সময়ের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো নানা স্বাদের সুস্বাদু খাবার। বিয়ে বাড়িতে নিমন্ত্রণ মানেই ভোজনরসিকদের কাছে ডায়েট ভুলে কব্জি ডুবিয়ে খাওয়ার মহা-সুযোগ। কিন্তু বলিউড পরিচালক-প্রযোজক করণ জোহরের কাছে এই চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি নাকি আজ পর্যন্ত কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে একবারও খাবার খাননি! সম্প্রতি এক আলোচনা অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী কৃতি খরবন্দা এবং অভিনেতা পুলকিত সম্রাটের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে কথা বলছিলেন করণ জোহর। আলোচনা শুরু হয় মূলত করণ জোহরের এক প্রশ্ন দিয়ে। তিনি কৃতি ও পুলকিতের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তাদের বিয়েতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি কী ছিল? মুহূর্ত দেরি না করে এই তারকা দম্পতি উত্তর দেন, ‘ভালো ও সুস্বাদু খাবার।’ এরপরই স্বাভাবিকভাবে বিয়েবাড়ির জমকালো ভোজ নিয়ে কথা চলতে থাকে। যেখানে সাধারণত নিমন্ত্রিতরা ঘুরে ঘুরে অন্তত দু’টি পদ ভালো করে চেখে দেখেন। কিন্তু করণ জোহর নিজের প্রসঙ্গে জানান সম্পূর্ণ বিপরীত কথা। তিনি বলেন, ‘বিয়ে কিংবা যেকোনো অনুষ্ঠানে আমি কখনো খাবার খাই না। খাবারের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, এটা আমার খুব অস্বস্তির কারণ। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্লেট হাতে খাবার খেতে আমার একেবারেই ভালো লাগে না। তাই আমি কখনও বিয়ে বাড়িতে খাই না।’ উল্লেখ্য, করণ জোহর তার নির্মিত সিনেমাগুলোতে বিয়েকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেন। তার ছবিতে বিয়ের দৃশ্য মানেই জমকালো রঙিন পোশাক, আবেগঘন মুহূর্ত এবং নাটকীয়তার মিশেল। এমনকি, কিছুদিন আগেই শিল্পপতি রাজু মান্টেনার কন্যা নেত্রা মান্টেনার বিয়ের অনুষ্ঠানে তাকে সঞ্চালনা করতেও দেখা গিয়েছিল।
চলতি বছরের ডিসেম্বরজুড়েই গুঞ্জন, জল্পনা আর উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সামান্থা রুথ প্রভু ও রাজ নিদিমরু। সিনেদুনিয়া থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—সবখানেই আলোচনার শীর্ষে ছিল একটাই নাম, ‘রাজ-সামান্থা’। মাঝখানে রণবীর সিংয়ের ‘ধুরন্ধর’ ঝড় তুললেও সামান্থার নতুন দাম্পত্যজীবন নিয়ে অনুরাগীদের কৌতূহল একটুও কমেনি। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সপ্তাহান্তে বিয়ের পর প্রথমবার প্রকাশ্যে ধরা দিলেন এই নবদম্পতি। ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্যমতে, নেটিজেনদের সমালোচনাকে তোয়াক্কা না করেই বিয়ের দুদিন পরই হানিমুনে উড়ে যান রাজ নিদিমরু ও সামান্থা রুথ প্রভু। সেখান থেকে ফিরেই হায়দরাবাদ বিমানবন্দরে পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে এই তারকা জুটি। জাঁকজমক পোশাক নয়, বরং রঙে মিল রেখে জিনস, টি-শার্ট, ট্রাউজার ও জ্যাকেটে অনাড়ম্বর লুকে দেখা যায় তাদের। বিয়ের পর এই প্রথমবার একফ্রেমে রাজ-সামান্থাকে পেয়ে ছবিশিকারিরা মুহূর্তটি ক্যামেরাবন্দি করতে একটুও দেরি করেননি। সেসময় একে অপরের সঙ্গে হাসি-খুনসুটি আর গল্পে মেতে থাকতে দেখা যায় নবদম্পতিকে। প্রকাশিত ভিডিও ও ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই রাজ-সামান্থার জন্য শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় ভাসিয়ে দেন অনুরাগীরা। প্রিয় তারকাদের নতুন জীবনের শুরুতে সুখী দেখে ভক্তদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে নাগা চৈতন্যর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ব্যক্তিগত জীবনে চার বছর নানা ঝড়ঝাপটা পেরিয়েছেন সামান্থা। অসুস্থতার কারণে একাধিক কাজও হাতছাড়া হয়েছিল তার। তবে সেই কঠিন সময় পেছনে ফেলে চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর ‘ফ্যামিলি ম্যান’ খ্যাত পরিচালক রাজ নিদিমরুর সঙ্গে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন তিনি। নবদম্পতিকে একসঙ্গে দেখেই তাই ভক্তমহলে তৈরি হয়েছে আনন্দের জোয়ার। কাজের দিক থেকে সামান্থাকে সর্বশেষ বড়পর্দায় দেখা যায় ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কুশি’ সিনেমায়, যেখানে তার বিপরীতে ছিলেন বিজয় দেবেরাকোন্ডা। ছবিটি পরিচালনা করেন শিভা নির্ভানা। এ ছাড়া ২০২৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ওয়েব সিরিজ ‘সিটাডেল: হানিবানি’-তে বরুণ ধাওয়ানের বিপরীতে অভিনয় করেও দর্শকদের নজর কাড়েন সামান্থা।
পর্দায় আজমেরী হক বাঁধনের উপস্থিতি মানেই ভিন্নমাত্রার চমক। অভিনয়ের মতোই ব্যক্তিজীবনেও এবার আলোচনায় এলেন তিনি—নিজের অভূতপূর্ব শারীরিক রূপান্তর দিয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি শেয়ার করা ছবিতে দেখা গেছে এক নতুন বাঁধনকে। মাত্র ছয় মাসে ৭৮ কেজি থেকে নিজেকে নামিয়ে এনেছেন ৬০ কেজিতে—কমিয়েছেন ১৮ কেজি ওজন। এই যাত্রা মোটেও সহজ ছিল না বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী। মানসিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত লড়াই, কিছু অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস এবং বংশগত কারণেই একসময় তার ওজন বেড়ে গিয়েছিল। তবে সঠিক চিকিৎসকের পরামর্শ, কঠোর ডিসিপ্লিন এবং নিজের ওপর অটল বিশ্বাস—এই তিন শক্তিতেই সম্ভব হয়েছে এই বড় পরিবর্তন। বাঁধনের এই ফিটনেস মিশনের পেছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন তার একমাত্র কন্যা। মেয়ের উৎসাহেই নিয়মিত শরীরচর্চা, জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলা এবং প্রতিদিন নিজেকে বিশ্বাস করার সাহস পেয়েছেন তিনি। ফেসবুকে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বাঁধন লেখেন, ‘এটি শুধু ওজন কমানো নয়—এটি নিরাময়, শক্তি আর আত্মসম্মানের প্রতীক। আমি এখনো এগিয়ে চলেছি।’ তার এই পরিবর্তন দেখে ভক্তদের প্রতিক্রিয়াও উচ্ছ্বসিত। কেউ লিখেছেন, ‘ওয়াও! কী অনুপ্রেরণামূলক’, আবার কেউ মন্তব্য করেছেন, ‘সত্যিই অসাধারণ!’ ব্যক্তিগত ফিটনেসের পাশাপাশি কাজের জগতেও ব্যস্ত সময় পার করছেন বাঁধন। নির্মাতা তানিম নূরের নতুন সিনেমা ‘বনলতা এক্সপ্রেস’-এ যুক্ত হয়েছেন তিনি। হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় উপন্যাস ‘কিছুক্ষণ’ অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে সিনেমাটি। এই সিনেমায় যুক্ত হওয়ার পেছনেও রয়েছে মেয়ের অনুপ্রেরণা। বাঁধন বলেন, ‘তানিম নূর যখন চরিত্রটির কথা বলল, তখন আমার মেয়ে বলেছে—তুমি এটা করো। কারণ আমাকে নাকি সব সময় সিরিয়াস আর অবসাদগ্রস্ত চরিত্রেই দেখা যায়। আর হুমায়ূন আহমেদ যে আমার কত প্রিয়, সেটা সবাই জানে। অনেক বছর পর তার গল্পে কাজ করার সুযোগ পাওয়া আমার জন্য সত্যিই বিশেষ।’
দর্শকদের হৃদয় জয় করে চলেছে বলিউড সিনেমা ‘ধুরন্ধর’। মুক্তির দ্বিতীয় শুক্রবারেই ছবিটি এমন এক রেকর্ড গড়েছে, যা এক দিনে ৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রের রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। বক্স অফিসে এক সপ্তাহের বেশি সময় পার করেও রণবীর সিং অভিনীত এই ছবি প্রতিদিনই নতুন নতুন মাইলফলক ছুঁয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, আদিত্য ধর পরিচালিত ‘ধুরন্ধর’ সাম্প্রতিক কয়েক বছরের বহু সুপারহিট সিনেমাকেও টপকে গেছে। যদিও মুক্তির প্রথম দিনে কিছু ছবির তুলনায় পিছিয়ে ছিল, তবে বর্তমানে এর বক্স অফিস আয় আরও শক্ত অবস্থানে পৌঁছেছে। দ্বিতীয় শুক্রবারে সর্বোচ্চ আয়ের ছবির তকমা নিজের দখলে নিয়েছে ‘ধুরন্ধর’। দ্বিতীয় শুক্রবারে ছবিটি প্রায় ৩২.৫ কোটি রুপি আয় করে। এই আয়ের মাধ্যমে ‘পুষ্পা ২’ (২৭ কোটি), ‘ছাভা’ (২৩.৫ কোটি), ‘অ্যানিমেল’ (২১.৫৬ কোটি) এবং ‘গদর ২’ (২০.৫ কোটি)-এর মতো বড় ছবিগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে ‘ধুরন্ধর’। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, দ্বিতীয় শুক্রবারে আয়ের দিক থেকে শীর্ষে উঠে এসেছে এই ছবিটি। এদিকে স্যাকনিল্কের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির নবম দিন অর্থাৎ দ্বিতীয় শনিবারে ভারতে সিনেমাটি নেট প্রায় ৫০.৯ কোটি রুপি আয় করে। সেদিন হিন্দি ভাষায় ছবিটির সামগ্রিক দর্শক উপস্থিতি ছিল ৬৬.০৯ শতাংশ, যা দর্শকদের প্রবল এক আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়। প্রথম সপ্তাহে ‘ধুরন্ধর’ আয় করে ২০৭.২৫ কোটি রুপি। অষ্টম দিনে যুক্ত হয় আরও ৩২.৫ কোটি। এর মাধ্যমে নবম দিনে ২৬.৫ কোটি আয় করা ‘সাইয়ারা’র মতো ছবিকেও ছাড়িয়ে গেছে ‘ধুরন্ধর’। শুধু ভারতেই নয়, বিদেশের বাজারেও দারুণ সাড়া ফেলেছে ছবিটি। স্যাকনিল্কের তথ্য অনুযায়ী, মাত্র আট দিনেই বিশ্বব্যাপী ছবিটির আয় প্রায় ৩৭২.৭৫ কোটি রুপি। এর মধ্যে ভারতে আয় ২৭৫ কোটি রুপির বেশি। আজকের আয় যোগ হলে বিশ্বব্যাপী মোট আয় ৪০০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে যাবে, যা এটিকে বছরের অন্যতম বড় হিট ছবির তালিকায় নিয়ে যাবে। উল্লেখ্য, ‘ধুরন্ধর’ পরিচালনা করেছেন আদিত্য ধর, যিনি আগে দর্শকদের ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর মতো ব্লকবাস্টার উপহার দিয়েছিলেন। এই ছবিতে রহমান চরিত্রে অক্ষয় খান্নার অভিনয় বিশেষভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। রণবীর সিংয়ের পাশাপাশি সঞ্জয় দত্ত, অর্জুন রামপাল ও আর. মাধবনের মতো অভিজ্ঞ অভিনেতাদের উপস্থিতি চলচ্চিত্রটিকে আরও প্রাণবন্ত করেছে।
ধর্মেন্দ্র ২৪ নভেম্বর বলিউডের ‘অমর হিরো’ ধর্মেন্দ্রর চলে যাওয়ায় পুরো দেশ শোকাহত। ‘শোলে’, ‘সীতা অর গীতা’, ‘ফুল অর পাত্থর’-এর মতো সিনেমার মাধ্যমে তিনি চিরকালীন পরিচিতি লাভ করেছিলেন। শ্বাসকষ্টের কারণে ১০ নভেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ২৪ নভেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের সময় তিনি। সুলক্ষণা পণ্ডিত ৬ নভেম্বর সুলক্ষণা পণ্ডিত ছিলেন একজন প্রশংসিত অভিনেত্রী ও প্লেব্যাক গায়িকা। ‘উলঝান’, ‘আপনাপান’, ‘খানদান’ এবং ‘ধরম কান্তার’-এর মতো সিনেমায় তিনি অসাধারণ প্রতিভা দেখিয়েছিলেন। ৭১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পর দেশজুড়ে ভক্তরা শোকাহত। সতীশ শাহ ২৫ অক্টোবর ‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’-এর ইন্দ্রবদন সারাভাই চরিত্রের মাধ্যমে তিনি কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন। ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ এবং ‘ম্যায় হু না’তে হাস্যরসাত্মক অভিনয়ও তাকে জনপ্রিয় করে তুলেছিল। ৭৪ বছর বয়সে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। গোবর্ধন আসরানি ২০ অক্টোবর প্রখ্যাত অভিনেতা আসরানি, যিনি অগণিত সিনেমায় তার কমেডি দক্ষতা দিয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন, ৮৪ বছর বয়সে আমাদের ছেড়ে গেলেন। ‘শোলে’, ‘ভাগম ভাগ’, ‘ভুল ভুলাইয়া’সহ অনেক ক্ল্যাসিক সিনেমায় তার অনবদ্য অভিনয় লালিত হয়ে থাকবে বহু প্রজন্মের মধ্যে। শেফালি জারিওয়ালা ২৭ জুন মাত্র ৪২ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেফালি জারিওয়ালা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ‘কাঁটা লাগা’ গার্ল হিসেবে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন এবং ‘মুঝসে শাদি কারোগি’র মতো চলচ্চিত্রেও কাজ করেছিলেন। জুবিন গার্গ ১৯ সেপ্টেম্বর ৫২ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরে প্রয়াত হন জনপ্রিয় গায়ক জুবিন গার্গ। হিন্দি, বাংলা ও অসমিয়ার সংগীতে তার অবদান সবার কাছে স্মরণীয়। তার আকস্মিক মৃত্যুতে সংগীতজগতে শোকের ছায়া নেমে আসে। পীযূষ পাণ্ডে ২৪ অক্টোবর বিজ্ঞাপনের কিংবদন্তি পীযূষ পাণ্ডে ৭০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘ অসুস্থতার পর তিনি চলে গেলেন, তবে তার সৃজনশীলতা এবং দূরদর্শী বিজ্ঞাপন প্রচারণার গল্প ভারতীয় বিজ্ঞাপন জগতে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। মনোজ কুমার ৪ এপ্রিল ভারত কুমার নামে পরিচিত আইকনিক অভিনেতা মনোজ কুমার ৮৭ বছর বয়সে প্রয়াত হন। ‘পূর্ব অর পশ্চিম’, ‘রোটি কাপড়া অর মাকান’, ‘ক্রান্তি’সহ বহু ক্ল্যাসিক সিনেমায় তার উপস্থিতি দর্শকদের মনে অমলিন হয়ে থাকবে। জেরিন খান ৭ নভেম্বর ৮১ বছর বয়সে প্রিয় অভিনেত্রী জেরিন খান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বলিউডে অল্প সময়ের জন্য থাকলেও, অভিনয় ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনিংয়ের মাধ্যমে তিনি ভক্ত এবং বন্ধুদের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক কাজ করলেও ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের ‘অন্তরা’ চরিত্রটি ফারিয়া শাহরিনকে দিয়েছে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। তবে জনপ্রিয় এই ধারাবাহিকটির পঞ্চম সিজন প্রচারে এলেও সেখানে দেখা মেলেনি এই অভিনেত্রীর। প্রিয় চরিত্রকে না দেখে দর্শকদের কৌতূহলের শেষ ছিল না। অবশেষে সেই অপেক্ষার পালা ফুরোল। ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ চ্যাপ্টার সিক্স দিয়ে আবারও ধামাকা এন্ট্রি নিলেন ফারিয়া শাহরিন। প্রায় দুই বছর পর নিজের চেনা আঙিনায় ফিরতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত অভিনেত্রী। জানালেন, এই ফিরে আসার পেছনের ত্যাগের গল্পও। দুই বছরের অপেক্ষা ও প্রস্তুতি ফারিয়া শাহরিন গণমাধ্যমকে বলেন, প্রায় দুই বছর ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর জন্য অপেক্ষা করেছি। এই সিরিয়ালের পর অন্যকোনো কাজ করিনি। নিজেকে প্রস্তুত করেছি, ওজন কমিয়েছি। এতদিন পর চ্যাপ্টার ৬-এ নিজেকে দেখে খুব শান্তি লাগছে। আশা করছি, দর্শক আমার কামব্যাক দেখে খুশি হবে। ভক্তদের প্রশ্নের উত্তর সিজন ৫-এ না থাকায় ভক্তদের প্রশ্নের বাণে জর্জরিত হতে হয়েছে তাকে। অভিনেত্রীর ভাষ্যে, ‘এতদিন আমার কমেন্ট বক্স ভরে থাকত একটাই প্রশ্নে—আমি কেন সিজন ৫-এ নেই? উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। অবশেষে সব প্রশ্নের উত্তর একসঙ্গেই দিয়ে দিতে পারলাম।’ কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত তুমুল জনপ্রিয় এই ধারাবাহিকে ফারিয়া ছাড়াও আরও অভিনয় করছেন মারজুক রাসেল, জিয়াউল হক পলাশ, চাষী আলম, মিশু সাব্বির, তৌসিফ মাহবুব, শামীমা নাজনীন, অর্চিতা স্পর্শিয়া, পাভেল, আবদুল্লাহ রানা, মনিরা মিঠু প্রমুখ।
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা আব্দুন নূর সজল এখন পুরোদস্তুর ব্যস্ত বড় পর্দা নিয়ে। সদ্যই চিত্রনায়িকা শবনম বুবলীর সঙ্গে শেষ করলেন ‘শাপলা শালুক’ সিনেমার শুটিং। আর দম ফেলার ফুরসত নেই, চলতি মাসের মাঝামাঝিতেই শুরু করতে যাচ্ছেন নতুন সিনেমা ‘দুর্বার’-এর কাজ। যেখানে প্রথমবারের মতো তার বিপরীতে নায়িকা হিসেবে থাকছেন ঢালিউড কুইন অপু বিশ্বাস। বুবলীর সঙ্গে ‘শাপলা শালুক’ ও অভিজ্ঞতা রাশেদা আক্তার লাজুক পরিচালিত ‘শাপলা শালুক’ সিনেমার শুটিং হয়েছে শেরপুরের বর্ডার এলাকার একটি গ্রামে। সদ্যই এর শেষ লটের কাজ সম্পন্ন করেছেন সজল। পরিচালক ও সহশিল্পী বুবলীকে নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি। সজল বলেন, পরিচালক অসম্ভব যত্ন নিয়ে সিনেমাটি করেছেন। আর বুবলী ভীষণ সিনসিয়ার। মনেই হয়নি যে আমরা প্রথমবার একসঙ্গে সিনেমা করছি। কাজের প্রতি সে অনেক দায়িত্বশীল, আমাদের বোঝাপড়াটাও খুব ভালো ছিল। কামরুল হাসান ফুয়াদ পরিচালিত ‘দুর্বার’ একটি থ্রিলার ঘরানার সিনেমা। এই সিনেমার মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো অপু বিশ্বাসের বিপরীতে কাজ করতে যাচ্ছেন সজল। শুটিংয়ের আগে ইতোমধ্যেই রিহার্সাল সেরে নিয়েছেন তারা। সহশিল্পী অপু বিশ্বাস সম্পর্কে সজল বলেন, অপু বিশ্বাস অনেক সিনেমা করেছেন, তার অভিজ্ঞতা অনেক। তিনি ভীষণ আন্তরিক এবং সহযোগিতাপরায়ণ। সংলাপ ডেলিভারি খুব ভালো বোঝেন, আর তার জানার জায়গাটাও অনেক বড়। সজল জানান, ‘দুর্বার’ সিনেমায় অনেক চমক আছে, যা দর্শকদের ভালো লাগবে। সজল জানান, অপু বিশ্বাসের সঙ্গে ‘দুর্বার’-এর শুটিং দিয়েই তার এই বছরের কাজ শেষ হবে। তবে ভক্তদের জন্য সুখবর হলো— আরও তিনটি নতুন সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী অভিনেতা বলেন, আশা করছি, ২০২৬ সাল হবে সিনেমার বছর। আমার কোনো তাড়াহুড়া নেই। যে চরিত্রে ভিন্নতা আছে, গল্পে নতুনত্ব আছে— সেসব কাজই করতে চাই। দিন শেষে ভালো কাজ নিয়ে থাকতে চাই।
কাজের ফাঁকে ছুটি কাটাতে দেশের বাইরে প্রায়ই উড়াল দেন ঢালিউড নায়িকা বিদ্যা সিনহা মিম। ভক্তমহলে তাকে ‘ভ্রমণকন্যা’ হিসেবেও ডাকা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না; ছুটির মেজাজে এই শীতেই তিনি উড়ে গেলেন মালদ্বীপে, আর সেখানে একের পর এক খোলামেলা ও আবেদনময়ী রূপে ধরা দিয়ে ভক্তদের চমকে দিচ্ছেন। নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মালদ্বীপে কাটানো নানা মুহূর্তের ছবি প্রকাশ করছেন মিমি। এবার সমুদ্রসৈকত থেকে কয়েকটি নতুন ছবি পোস্ট করলেন, যা বেশ সাড়া ফেলেছে ভক্তমহলে। এর আগের দিন, গত বৃহস্পতিবারও লাল রঙের খোলামেলা পোশাকে সমুদ্রের পাশে কাঠের ডেকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে মিমকে। লাস্যময়ী রূপে তার সেই ছবিগুলো প্রকাশের পরপরই ভক্তদের নজর কেড়েছিলেন নায়িকা। তার নিজেকে মেলে ধরার এই ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত। পরদিন যেন আরও খোলামেলা ও আবেদনময়ী ভঙ্গিতে ধরা দিলেন মিম। সমুদ্রের পাড়ে বালির ওপর সাদা রঙের ব্রালেট ও প্যান্ট পরে শুয়ে আছেন তিনি, পেছনে দেখা যাচ্ছে বিলাসবহুল ওয়াটার ভিলা। অন্য ছবিতে দেখা যাচ্ছে সমুদ্রের দিকে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি, যা তার ভ্রমণ আনন্দকেই ফুটিয়ে তুলছে। মিমের ছবিগুলো বেশ সাড়া ফেলেছে, ছড়িয়েছে মুগ্ধতা। বরাবরের মতোই নিজের রূপ-লুকের প্রশংসায় ভাসছেন নায়িকা। ব্যক্তিগত জীবনের বাইরে এই মুহূর্তে বিদ্যা সিনহা মিম তার আসন্ন সিনেমা নিয়েও ব্যস্ত সময় পার করছেন। শোনা যাচ্ছে, মিম জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আরিফিন শুভের বিপরীতে একটি নতুন সিনেমার কাজ শুরু করেছেন। এই জনপ্রিয় জুটি এই সিনেমার মাধ্যমে তৃতীয়বারের মতো বড় পর্দায় জুটি বাঁধছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিনেমাটি আগামী ঈদুল ফিতরে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ইতোমধ্যে এক সপ্তাহ ধরে এর শুটিং চলছে। শুভ-মিম জুটির নতুন কাজের খবর ছড়িয়ে পড়ায় ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে।
ছোট পর্দার বর্তমান সময়ের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনুভা তিশা। নানা বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করে তিনি ইতোমধ্যেই দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে নিজের কাজের বাইরে ব্যক্তিগত জীবন ও নতুন কাজ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন এই তারকা। জন্মদিন নিয়ে এখন আর আগের মতো উচ্ছ্বাস পান না বলে জানিয়েছেন তাসনুভা তিশা। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে জন্মদিন নিয়ে খুব একটা এখন আর ওভাবে উচ্ছ্বসিত হই না। আগের মতো এত এক্সাইটেড থাকি না। ব্যাক টু ২০২২-এ আমি অনেক এক্সাইটেড থাকতাম আমার জন্মদিন নিয়ে।’ অনাগ্রহ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানান, এটি হয়তো বয়সের কারণেই হয়েছে। তার ভাষ্যে, ‘এটা হয়তোবা বয়সের সাথে সাথে, এখন তো বয়স হচ্ছে; তো এক্সাইটমেন্ট আর আসলে নাই। আমার আর ভালো লাগে না এসব।’ শিগগিরই নতুন একটি নাটক নিয়ে দর্শকদের সামনে আসছেন তাসনুভা তিশা। নাটকের নাম ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’। শফিকুর রহমান শান্তনুর রচনা এবং জয়নীকা চৌধুরীর পরিচালনায় নাটকটি দেখা যাবে 'রঙ্গন' ইউটিউব চ্যানেলে। তবে নাটকের নাম 'লাইফ ইজ বিউটিফুল' হলেও জীবনের বাস্তবতা ভিন্ন বলেও মনে করেন এই অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘যদিও লাইফ ইজ নট অলওয়েজ বিউটিফুল, লাইফ ইজ রিয়ালি ডিফিকাল্ট।’
ফুটবল ঈশ্বরের সঙ্গে এক ফ্রেমে ধরা পড়ার স্বপ্ন কার না থাকে! সেই স্বপ্নই বাস্তবে রূপ নিল বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের ছোট ছেলে আব্রাম খানের জীবনে। আর ছেলের এই বিশেষ মুহূর্তটি নিজের ক্যামেরায় ধরে রাখলেন খোদ ‘বলিউড বাদশা’ শাহরুখ খান নিজেই। শুক্রবার রাতে ফুটবল কিংবদন্তি লিওনেল মেসি কলকাতায় পা রাখেন। পরদিন শনিবার সল্টলেক স্টেডিয়ামে তৈরি হয় এক অনন্য নক্ষত্রময় মুহূর্ত। বাবার হাত ধরে প্রিয় তারকাকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পায় আব্রাম। মেসিকে সামনে পেয়েই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে সে। ছেলের সেই আনন্দমাখা মুহূর্ত পরম মমতায় ক্যামেরাবন্দি করেন শাহরুখ খান। শুধু মেসিই নন, এদিন আব্রামকে দেখা যায় আর্জেন্টিনা দলের তারকা লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি পলের সঙ্গেও। ফুটবল তারকাদের সঙ্গে কথা বলায় ব্যস্ত জুনিয়র খান, আর পাশে দাঁড়িয়ে সন্তানের উচ্ছ্বাস উপভোগ করেন বাবা শাহরুখ। ছেলের মুখে হাসি দেখে তার মুখেও ছিল তৃপ্তির ঝিলিক—পুরো সময়টাই যেন ছিলেন বেশ ফুরফুরে মেজাজে। তবে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়ের কারণে মেসিকে দ্রুতই মাঠ ছাড়তে হয়। জানা গেছে, সল্টলেক স্টেডিয়ামে তিনি প্রায় ৩০ মিনিট সময় কাটান। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ায় সংক্ষিপ্ত সময়েই তার প্রস্থান ঘটে। এর মধ্যেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শাহরুখ খান আব্রামকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হয়ে এই স্মরণীয় মুহূর্তগুলো তৈরি করেন। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের পর এটিই লিওনেল মেসির প্রথম ভারত সফর। সেই সফরেও কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামেই একটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি, যেখানে আর্জেন্টিনা ভেনিজুয়েলাকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল। দীর্ঘ বিরতির পর মেসির আগমনে আবারও উৎসবের রঙে রঙিন কলকাতা। আর আব্রামের জীবনে এই দিনটি হয়ে থাকল আজীবনের এক অমূল্য স্মৃতি।
এক সময়ের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী মোনালিসা। গ্ল্যামার জগতের মোহ মায়া কাটিয়ে বহু আগেই পাড়ি জমিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে অভিনয় বা মডেলিং নয়, বরং নিজেকে গড়ে তুলেছেন একজন পেশাদার রূপসজ্জাশিল্পী হিসেবে। এবার সেই প্রবাস জীবনেই তার মুকুটে যুক্ত হলো নতুন পালক। দীর্ঘ ১২ বছরের অভিজ্ঞতার পর তিনি পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন ‘ম্যানেজার’। জানা গেছে, একটি আন্তর্জাতিক প্রসাধনসামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে টানা এক যুগ সিনিয়র মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন মোনালিসা। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করে একটি নতুন প্রসাধনী বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপক বা ম্যানেজার পদে যোগ দিয়েছেন তিনি। গত শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে তার ক্যারিয়ারের এই নতুন অধ্যায়। ফেসবুকে নিজের এই সাফল্যের খবর জানিয়ে উচ্ছ্বসিত মোনালিসা লিখেন, এই নতুন অধ্যায়ের জন্য আমি নিজেকে ভীষণভাবে ধন্য মনে করছি। কঠোর পরিশ্রমই আমাকে আজকের এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে। নতুন দায়িত্ব পেয়ে আনন্দ ও কৃতজ্ঞতায় ভরে উঠেছি। সামনে অপেক্ষা করছে নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন সম্ভাবনা। তিনি আরও জানান, অভিনয় ও মডেলিং আমার ভালোবাসা, কিন্তু মেকআপ আমার প্যাশন। যুক্তরাষ্ট্রে এসে বুঝেছি, এই সেক্টরে আমার আরও অনেক কিছু করার আছে। শোবিজ ও বর্তমান ২০১২ সালের জুনে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফাইয়াজ শরীফকে বিয়ে করে দেশ ছাড়েন মোনালিসা। পরবর্তীতে বিচ্ছেদ ঘটলেও তিনি প্রবাসেই নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন। গত বছর দেশে ফিরলেও কিছুদিন পর আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান। তবে শোবিজ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হননি তিনি। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে মোনালিসা অভিনীত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ট্র্যাপড’। সংগীতশিল্পী হৃদয় খান পরিচালিত ও অভিনীত এই চলচ্চিত্রের টিজার ইতোমধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মোনালিসা আজ নিজ কর্মক্ষেত্রে এক অনন্য সাফল্যের উদাহরণ।
বিশ্বজুড়ে সৃজনশীল প্রতিভাকে স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিতব্য রেড সি চলচ্চিত্র উৎসবে ‘গোল্ডেন গ্লোব হরাইজন’ অ্যাওয়ার্ড সম্মাননা পেলেন বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। চলমান এই উৎসবের এক গালা ডিনারে দেওয়া হয় এই বিশেষ সম্মাননা। সম্মাননা পেয়ে উচ্ছ্বসিত আলিয়া ভাট জানান, বিশ্বব্যাপী পুরস্কার বিতরণী মহাবিশ্বের একটি প্রতিচ্ছবি হলো গোল্ডেন গ্লোবস, আর এর অংশ হতে পেরে তিনি আনন্দিত। অভিনেত্রীর ভাষ্যে, ‘গোল্ডেন গ্লোবস বিশ্বব্যাপী পুরস্কার বিতরণী জগতের একটি আইকনিক অংশ, এবং আমি এর অংশ হতে পেরে আনন্দিত। আমি ক্ষমতাবান ও যোগ্য নারীদের আরও গল্প বলার মাধ্যমে আমার ক্যারিয়ার চালিয়ে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছি।’ রেড সি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব কর্তৃপক্ষ আলিয়া ভাটের সম্মাননা উপলক্ষে তার ক্যারিয়ার উদযাপনে একটি বিশেষ প্রদর্শনীরও আয়োজন করে। এই প্রদর্শনীতে আলিয়ার ‘হাইওয়ে’, ‘ডিয়ার জিন্দেগি’, ‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ি’, ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’, ‘ব্রহ্মাস্ত্র’-এর মতো জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোতে তার যাত্রাপথ তুলে ধরা হয়। এছাড়াও উৎসবে রেড কার্পেটে আলিয়ার উপস্থিতি ছিল বিশেষভাবে নজরকাড়া। তার অসাধারণ সৌন্দর্য এবং গ্ল্যামারপূর্ণ সাজ পুরো অনুষ্ঠানের ভেন্যু মাতিয়ে দেয়।
টলিউডের শীর্ষ অভিনেত্রীদের একজন শুভশ্রী গাঙ্গুলি—অভিনয়ে যেমন আত্মবিশ্বাসী, তেমনি ব্যক্তিত্বেও দৃঢ়। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ট্রলিং আর কটাক্ষ থেকে তিনিও মুক্ত নন। কখনো ‘লেডি সুপারস্টার’ তকমা নিয়ে উপহাস, কখনো বা মাতৃত্বের পর বাড়তি ওজন নিয়ে আক্রমণ—বহুবারই নেতিবাচক মন্তব্যের শিকার হয়েছেন তিনি। এমনকি দেবের সঙ্গে অতীত সম্পর্ক নিয়েও শুনতে হয়েছে খোঁচা। সম্প্রতি ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ সিনেমার প্রচারে এসে এই ট্রলিং প্রসঙ্গেই খোলামেলা কথা বলেন শুভশ্রী। নিজেকে কিভাবে সামলান তিনি? শুভশ্রী সোজাসাপটা জবাব দিয়ে বলেন, ‘আমি কিন্তু নদীর মতো নই। নদী বর্জ্য পদার্থ গ্রহণ করে নেয়, কিন্তু আমি সেটা গ্রহণ করি না। আমি খুব সচেতনভাবে সব খারাপ জিনিস আমার জীবন থেকে সরিয়ে রাখি। আমি একদম একটা দণ্ডী কেটে রেখেছি, যেখানে কোনো নেগেটিভ জিনিস প্রবেশ করতে পারবে না।’ অভিনেত্রী জানান, তিনি নেতিবাচক মন্তব্য দেখেনই না। বললেন, ‘আমি একজন মানুষ, তাই খারাপ মন্তব্য করলে খারাপ লাগবেই। তাই আমি খারাপ কিছু দেখি না। সাক্ষাৎকারে এসে জানতে পারি আমার সম্পর্কে কী বলা হয়েছে। তার আগে জানিই না যে আমাকে ট্রল করা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি নিজের হাতে একটা রিমোট রেখে দিয়েছি। কোনটা গ্রহণ করব, কোনটা করব না—সেটা আমি নিজেই ঠিক করি। যেহেতু আমি শুধু পজিটিভ দেখি, তাই আমার কমেন্ট বক্সেও পজিটিভ জিনিসই আসে। নেগেটিভ নেই বললেই চলে।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিবাচকতা ধরে রেখে মানসিক শান্তিতে থাকার এই শুভশ্রী-ফর্মুলা অনেকের জন্যই প্রেরণা হতে পারে।
নির্মাতা কাজল আরেফিন অমির আলোচিত ধারাবাহিক ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন ৫’ এখন অনেকটাই জমজমাট। পুরনো চরিত্র কাবিলা, হাবু, পাশা, নেহালদের সঙ্গে নতুন মুখ দেখা যাবে, এমনটা আভাস আগেই দিয়েছিলেন নির্মাতা; অবশেষে তার দেখা মিলল। মূলত, নতুন চরিত্র নিয়ে হাজির হয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়া; আর তার নতুন এই চরিত্রটির নাম স্পর্শ। এবারের সিজনে নতুন নায়িকা কে হচ্ছেন, তা নিয়ে শুরু থেকেই দর্শকদের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। এক মাস আগে নির্মাতা জানান, অর্চিতা স্পর্শিয়া যুক্ত হচ্ছেন এই ধারাবাহিকে। তবে কোন চরিত্রে থাকছেন- তা রাখা হয় গোপন। এতে দর্শকদের আরও কৌতূহলী করে তুলেছিলেন নির্মাতা। আবার, সিরিজের শুটিংয়ের কিছু ছবি ফাঁস হলেও মুখটি ছিল অধরা। অবশেষে ১১ ডিসেম্বর সিরিজের সপ্তম পর্ব (চ্যাপ্টার ৭) মুক্তির পর সেই রহস্যের পর্দা উঠল; আলোচিত সেই চরিত্রটিতে অভিনয় করেছেন অর্চিতা স্পর্শিয়া। যিনি ‘স্পর্শ’ চরিত্রে দেখা দিয়েছেন; ব্যাচেলর ফ্ল্যাটের ওপর তলার নতুন ভাড়াটিয়া। স্পর্শিয়ার এই আকস্মিক উপস্থিতি নতুন উত্তেজনা ছড়িয়েছে দর্শকমহলে। সঙ্গে গল্পের নতুন রহস্য তো থাকছেই! উল্লেখ্য, অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে অর্চিতা স্পর্শিয়া এরই মধ্যে নিজস্ব অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। চরিত্র নির্বাচনে সচেতনতা এবং অভিনয়ের গভীরতার কারণে তার এই প্রত্যাবর্তনকে দর্শকরা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব পুরো পরিবারকে নিয়ে আনন্দঘন এক মুহূর্তে রয়েছেন। কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে অপূর্ব নিজেই সুখবরটি জানিয়েছেন। পোস্টে নবজাতক সন্তানের ছোট্ট হাত ধরে থাকা একটি ছবি যুক্ত করে অপূর্ব লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! আমরা আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ। আমাদের কন্যার আগমনের খবর জানাতে। স্বাগতম, প্রিয় আনায়া!’ তিনি আরও অনুরোধ করেন, ‘আমাদের ছোট্ট রাজকন্যাকে সবসময় আপনাদের প্রার্থনায় রাখুন। আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।’ পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অপূর্বর স্ত্রী শাম্মা দেওয়ান যুক্তরাষ্ট্রে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। মা ও নবজাতক দুজনই সুস্থ আছেন। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শাম্মা দেওয়ানকে বিয়ে করেন অপূর্ব। চার বছর পর দাম্পত্য জীবনে এলো নতুন অতিথি। এর আগে ২০১১ সালে নাজিয়া হাসান অদিতিকে বিয়ে করেছিলেন তিনি; সেই সংসার ভেঙে যায় ২০২০ সালে। অদিতির সঙ্গে অপূর্বর একটি পুত্রসন্তান রয়েছে—জায়ান ফারুক আয়াশ। শাম্মার আগে অভিনেত্রী প্রভাকেও বিয়ে করেছিলেন অপূর্ব, তবে সে বিয়েও স্থায়ী হয়নি।
ঢাকায় একের পর এক কনসার্ট বাতিল হওয়ার ধারাবাহিকতায় এবার স্থগিত হলো পাকিস্তানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আতিফ আসলামের অনুষ্ঠান। আগামী ১৩ ডিসেম্বর ঢাকায় তার পারফর্ম করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশি ভক্তদের উদ্দেশে দুঃখ প্রকাশ করেছেন আতিফ আসলাম। এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “প্রিয় বাংলাদেশি ভক্তরা, দু:খের সঙ্গে জানাচ্ছি যে ১৩ ডিসেম্বর ঢাকায় আমাদের কনসার্টটি আর অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। কারণ, আয়োজক ও ম্যানেজমেন্ট দল প্রয়োজনীয় স্থানীয় অনুমতি, নিরাপত্তাজনিত ছাড়পত্র এবং লজিস্টিকসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারেনি।” এবারের আয়োজন করছিল দুটি প্রতিষ্ঠান—‘স্পিরিটস অব জুলাই’ এবং ‘মেইন স্টেইজ’। তবে কনসার্ট বাতিলের বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি আয়োজকরা। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, এই কনসার্ট আয়োজনের জন্য আয়োজকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকলেও নিরাপত্তা-ঝুঁকি বিবেচনায় সরকারের অনুমতি মিলেনি। দুই একটি নথি প্রক্রিয়াধীন থাকায় শেষ মুহূর্তে এসে বাধ্য হয়ে অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়। এদিকে, ‘চলঘুরি’ নামে একটি টিকিটিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আড়াই হাজার থেকে নয় হাজার টাকা দামের টিকিট বিক্রি হচ্ছিল। হঠাৎ কনসার্ট বাতিল হওয়ায় টিকিট ক্রেতাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে; অনেকেই এখন রিফান্ডের অপেক্ষায়। সংশ্লিষ্টদের মতে, শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠান ভেস্তে যাওয়ায় দর্শকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন, তৈরি হতে পারে বড় ধরনের অসন্তোষও। পাশাপাশি বারবার এ ধরনের আয়োজন বাতিল হওয়া বাংলাদেশের কনসার্ট শিল্পের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিতেও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। রূপ ও অভিনয়ে যিনি এখনও দুই প্রজন্মের দর্শককে সমানভাবে মুগ্ধ করে চলেছেন। নব্বই দশকের শেষ দিকে অভিনয়জীবন শুরু করা এই নায়িকা আড়াই দশক পেরিয়েও সেই লাস্যময়ী আবেদন ধরে রেখেছেন। সামাজিক মাধ্যমেও পূর্ণিমার জনপ্রিয়তা দারুণ। নিয়মিত নিজের ছবি প্রকাশ করেন তিনি; আর ভক্তরাও তাকে ভরিয়ে দেন ভালোবাসা ও প্রশংসায়। বিশেষ করে তার ‘বয়স না বাড়ার’ সৌন্দর্য নিয়ে ভক্তদের আগ্রহও বরাবরই বেশি। বৃহস্পতিবার বিকেলে পূর্ণিমা তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নতুন কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেন। সেখানে দেখা যায়, কালো রঙের শাড়িতে সজ্জিত পূর্ণিমা, সঙ্গে মিলিয়ে গহনা। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘ব্ল্যাক ইজ মাই হ্যাপি কালার।’ ছবি প্রকাশের পর মুহূর্তেই কমেন্ট বক্স ভরে ওঠে ভক্তদের প্রশংসায়। কারও মন্তব্য, ‘আপনি সেই আগের মতোই সুন্দর।’ আবার কেউ লিখেছেন, ‘বয়স বাড়েনি, দিনে দিনে সুন্দরী হচ্ছেন।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘কালোতে আপনি বেশিই সুন্দর।’ এছাড়াও অনেকে তার নতুন স্টাইল, মেকআপ ও ফ্যাশন সেন্সেরও প্রশংসা করেন। ২০০৩ সালে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘মনের মাঝে তুমি’ দিয়ে এক ঝলকেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসেন পূর্ণিমা। পরে ২০০৬ সালে এস এ হক অলিক পরিচালিত ‘হৃদয়ের কথা’ ছবিতে অভিনয় করে আরও প্রশংসা কুড়ান তিনি। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে অভিনয়, সৌন্দর্য ও পরিশীলিত উপস্থিতির জন্য আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক তিনি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।