দেশে ফিরলেই বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার। মন্ত্রী থাকাকালে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়। দেশটির কলম্বোর একটি আদালত এ তথ্য জানায়। একটি দুর্নীতি পর্যবেক্ষণ সংস্থার অভিযোগ, রানাতুঙ্গা ও তার ভাই দীর্ঘমেয়াদি তেল ক্রয় চুক্তি প্রদানের প্রক্রিয়ায় প্রচলিত নিয়মকানুন বদলে উচ্চ মূল্যে স্পট ক্রয় করেন। যার ফলে অনেক বেশি দামে তেল কিনতে হয়েছে। এর ফলে দেশটির ৮০ কোটি শ্রীলঙ্কান রুপি ক্ষতি হয়। ঘুষ বা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত কমিশন (সিআইএবিওসি) কলম্বোর ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কায় ফিরলে রানাতুঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হবে। সাবেক মন্ত্রী রানাতুঙ্গার বড় ভাই ধাম্মিকা রানাতুঙ্গাকে গত সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। উল্লেখ্য, ৬২ বছর বয়সী অর্জুনা রানাতুঙ্গা শ্রীলঙ্কার ক্রীড়াঙ্গনের এক কিংবদন্তি নাম। তার নেতৃত্বেই ১৯৯৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে শিরোপা জেতে শ্রীলঙ্কা। মাঠে তিনি ছিলেন সাহসী ও আপসহীন এক ক্রিকেটার, পাশাপাশি দৃঢ় নেতৃত্বগুণের অধিকারী অধিনায়ক হিসেবেও পরিচিত। ২০০০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর রানাতুঙ্গা রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং পরবর্তী সময়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলান।
কাতারের রাজধানী দোহায় ‘দা বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠানে সেরা একাদশ ঘোষণা করে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ফিফা)। ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ২ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে এখানে। গত মৌসুমে পিএসজির ট্রেবল জয়ের প্রতিফলন পড়েছে ফিফার বর্ষসেরা একাদশে। ১১ জনের ছয়জনই ফরাসি দলটির। বর্ষসেরা পুরুষ ফুটবলার নির্বাচিত হওয়া উসমান ডেম্বেলে অনুমিতভাবে আছেন সেরা একাদশে। পিএসজি থেকে আরও জায়গা পেয়েছেন ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমি, উইলিয়াম পাচো, নুনো মেন্দেস, মিডফিল্ডার ভিতিনিয়া ও গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। গত মৌসুম শেষে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেন এই ইতালিয়ান গোলরক্ষক। বাকি পাঁচজনের মধ্যে দুজন জায়গা পেয়েছে বার্সেলোনা থেকে। তারা হলেন মিডফিল্ডার পেদ্রি ও ফরোয়ার্ড লামিনে ইয়ামাল। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে আছেন বেলিংহাম। একাদশের অন্য দুজন লিভারপুলের ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইক ও চেলসির মিডফিল্ডার কোল পালমার। ফিফার সেরা একাদশ- জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা, আশরাফ হাকিমি, উইলিয়াম পাচো, নুনো মেন্দেস, ভার্জিল ফন ডাইক, ভিতিনিয়া, কোল পালমার, পেদ্রি, জুড বেলিংহ্যাম, উসমান দেম্বেলে ও লামিনে ইয়ামাল।
নানা বিতর্কিত ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার লিওনেল মেসির ভারত সফর। শেষদিকে বড় ধরনের কোনো অঘটন না ঘটলে মেসির সফরের শুরুটা হয়েছিল বিশৃঙ্খলা, বিতর্ক ও গন্ডগোল দিয়ে। আর্জেন্টাইন এই কিংবদন্তিকে ঠিকভাবে দেখতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে স্টেডিয়াম ভাঙচুর ও লুটপাট চালান সমর্থকরা। এমন ঘটনার জন্য মেসিকেই দায়ী মনে করছেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার। মেসির ভারত সফর নিয়ে দেশটির এক গণমাধ্যমে কলাম লেখেন গাভাস্কার। সেখানে তিনি দাবি করেন, মেসি নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারের মতে, মেসির যতক্ষণ মাঠে থাকার কথা ছিল ততক্ষণ তিনি থাকেননি। আর এ কারণেই স্টেডিয়াম ভাঙচুর ও লুটপাটের জন্য মেসিকে দায়ী করেন গাভাস্কার। তিনি লেখেন, ‘কলকাতা স্টেডিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার সময় লিওনেল মেসি ঘোষিত সময়ের তুলনায় অনেক কম সময় উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় সবাইকে দোষারোপ করা হলেও তাকে করা হচ্ছে না যিনি তার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। তার যদি এক ঘণ্টার জন্য স্টেডিয়ামে থাকার কথা থাকে এবং তিনি যদি সময়ের আগে চলে যান, তবে যারা অর্থ দিয়ে টিকিট কিনেছিলেন তাদের জন্য এটা হতাশার। তাহলে মূল দোষী তিনি এবং তার সহযোগীরাই।’ গাভাস্কার কলামে আরও লেখেন, ‘হ্যাঁ, এটা সত্য যে মেসি রাজনীতিবিদ ও তথাকথিত ভিআইপিদের দ্বারা ঘিরে ছিলেন। তার তার কোনো নিরাপত্তা হুমকি ছিল না। তার কি শুধু স্টেডিয়ামে ঘুরে বেড়ানোর কথা ছিল, নাকি কার্যকর কিছু পেনাল্টি কিকও নিতে পারতেন? যদি সেটি হতো তাহলে চারপাশের সবাইকে সরতে হতো এবং উপস্থিত দর্শকরাও তাদের নায়ককে দেখতে পারেন যেটির জন্য তারা এসেছিলেন।’ অন্য শহরের সফরগুলো সুন্দরভাবে পরিচালিত হলেও কলকাতায় কেন এমনটি ঘটল সেটি তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করেন গাভাস্কার। এ প্রসঙ্গে তিনি তার কলামে লেখেন, ‘অন্য সফরগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কলকাতাকে দোষারোপ করার আগে এটি যাচাই করা প্রয়োজন যে উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতিকে ঠিকভাবে পূরণ হয়েছে কি না।’
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) নিলাম মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে মোট ৭৭টি জায়গার জন্য প্রায় ৩৫০ ক্রিকেটারের নাম জমা দেওয়া হয়েছিল। পূর্ণাঙ্গ হয়েছে প্রতি দলের ২৫ জনের কোটা। এবারের নিলাম থেকে দল পেয়েছেন সাকিব হুসেইন। ২১ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারকে দলে নিয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। শিরোপাতে চোখ রেখে মিনি নিলামে বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করেছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার লিয়াম লিভিংস্টোনকে ১৩ কোটি টাকার বিনিময়ে দলে নিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার জ্যাক এডওয়ার্ডসকে কেনা হয়েছে ৩ কোটি টাকায়। এ ছাড়া ৩০ লাখ টাকায় দলে ভিড়েছেন আনক্যাপড ভারতীয় অলরাউন্ডার শিবাং কুমার। নিলামে সানরাইজার্স নজর রেখে তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের দিকেও। ভিত্তিমূল্য ৩০ লাখ টাকায় সাকিবকে দলে ভেড়ায় তারা। এ ছাড়া উইকেটকিপার-ব্যাটার সলিল অরোরা, শিবাং কুমার, ওঙ্কার তুকারাম তারমালে, অমিত কুমার, প্রফুল হিঙ্গে এবং ক্রেইন্স ফুলেত্রা—এই ছয়জনকেও দলে ভিড়িয়েছে সানরাইজার্স। সাকিব হুসেইন এর আগে ছিলেন কলকাতা দলে। সেবার প্রথম রাউন্ডে অবিক্রীত থাকলেও পরে তাকে ২০ লাখ টাকায় দলে ভেড়ায় কেকেআর। যদিও কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি এই ক্রিকেটারের। বিহারের গোপালগঞ্জ জেলা থেকে উঠে এসেছেন সাকিব। বিহারের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে খেলার পর সিনিয়র দলের হয়েও নজর কেড়েছেন।
ফিফা অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) ও ফ্রান্সের ফরোয়ার্ড উসমান দেম্বেলে ফিফা বর্ষসেরা পুরুষ ফুটবলারের স্বীকৃতি পেয়েছেন। লামিনে ইয়ামাল ও রাফিনিয়াকে পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো এই সম্মান জিতলেন তিনি। মঙ্গলবার কাতারের দোহায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্পেন ও বার্সেলোনার মিডফিল্ডার আইতানা বনমাতি টানা তৃতীয়বারের মতো ফিফা বর্ষসেরা নারী ফুটবলার নির্বাচিত হন। পিএসজির ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে দেম্বেলে ছিলেন অন্যতম প্রধান নায়ক। ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে হারানোর ম্যাচেও তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৮ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড করেন ৩৫ গোল, যার মধ্যে লিগ ওয়ানে ছিল ২১টি—এতে তিনি লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি ব্যালন ডি’অরও জেতেন। পাশাপাশি পিএসজির ঘরোয়া সব শিরোপা জয় এবং ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার পথেও তিনি ছিলেন দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নারী ফুটবলে আইতানা বনমাতি এ বছরও নিজের আধিপত্য ধরে রেখেছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি তিনি টানা তৃতীয়বারের মতো নারী ব্যালন ডি’অর জেতেন। তার নেতৃত্বে বার্সেলোনা ঘরোয়া ট্রেবল জিতে নেয় এবং চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে পৌঁছায়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি স্পেনকে ইউরো ২০২৫-এর ফাইনালে তুললেও টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে রানার্সআপ হয় দলটি। তবে পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য বনমাতি ‘প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট’ নির্বাচিত হন। ইংল্যান্ডকে টানা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জেতানোর কৃতিত্বে সারিনা উইগম্যান পঞ্চমবারের মতো সেরা নারী কোচ নির্বাচিত হন। পুরুষদের বিভাগে পিএসজিকে প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা এনে দেওয়ায় সেরা পুরুষ কোচের স্বীকৃতি পান লুইস এনরিকে। সেরা নারী গোলরক্ষক নির্বাচিত হন ইংল্যান্ড ও চেলসির হান্না হ্যাম্পটন। ইউরো ২০২৫ জয়ে তার পেনাল্টি শুটআউটে গুরুত্বপূর্ণ সেভ এবং ক্লাব পর্যায়ে ঘরোয়া ট্রেবল জয়ে অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। সেরা পুরুষ গোলরক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন ইতালির জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা, যিনি বর্তমানে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে খেলেন এবং পিএসজির ট্রেবল জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন। নারী ফুটবলে সেরা গোলের জন্য ফিফা মার্তা অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন মেক্সিকোর লিজবেথ ওভালে। মার্চে গুয়াদালাহারার বিপক্ষে টাইগ্রেসের হয়ে করা তার দর্শনীয় স্করপিয়ন কিক গোলটি সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়। পুরুষদের সেরা গোলের জন্য পুস্কাস অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন সান্তিয়াগো মন্তিয়েল। মে মাসে আর্জেন্টাইন প্রিমেরা লিগে ইন্দিপেন্ডিয়েন্তে রিভাদাভিয়ার বিপক্ষে ইন্ডিপেন্দিয়েন্তের হয়ে করা তার ওভারহেড কিক গোলটি এই সম্মান পায়।
ভারতের আতিথেয়তায় মুগ্ধ আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসি। দিল্লিতে আয়োজক ও সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে আবারও ভারত আসার প্রতিশ্রুতি দিলেন এলএমটেন। এর আগে, অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ক্ষুদে ফুটবলারদের সঙ্গে খেলেন বিশেষ প্রদর্শনী ম্যাচ। এসময় মেসিকে উপহার দেয়া হয় ভারতের জার্সি ও আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপের ম্যাচ টিকিট। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি বলেন, 'ভারতে আমার স্বল্প সময়ের ট্যুরে যে ভালোবাসা পেয়েছি, সে জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমাদের জন্য এটি সত্যিই দারুণ অভিজ্ঞতা ছিলো। আমরা এই ভালোবাসা হৃদয়ে ধারণ করবো এবং অবশ্যই ফিরে আসব। হয়তো ম্যাচ খেলতে বা অন্য কোনো আয়োজনে। তবে অবশ্যই ভারতে আবার আসবো।' দিল্লি পর্ব শেষে মেসির ফেরার কথা থাকলেও সেই সূচীতে এসেছে পরিবর্তন। ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, আম্বানি গ্রুপের আমন্ত্রণে সফরের সময় বাড়িয়েছেন এলএমটেন। মঙ্গলবার যাবেন গুজরাটের জামনগরের বনতারায়।
আইপিএল নিলামে বাংলাদেশের পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ শুরু হলো। আর সেই যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত কলকাতা নাইট রাইডার্সেই (কেকেআর) জয়ী হলো। দিল্লির পর এবার কলকাতা ঠিকানা হলো মোস্তাফিজের। টাইগার পেসারকে দলে ভেড়াতে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপি খরচ করেছে তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা। ২ কোটি রুপি ভিত্তিমূল্য নিয়ে নিলামে ওঠা মুস্তাফিজুরকে ঘিরে শুরু থেকেই আগ্রহ দেখায় দিল্লি ক্যাপিটালস। গত মৌসুমে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে দিল্লির হয়ে খেলা ‘দ্য ফিজ’-এর জন্য দ্রুতই বিডে যোগ দেয় চেন্নাই সুপার কিংসও—যে দলে আগে সফল সময় কাটিয়েছেন তিনি। দিল্লি ও চেন্নাইয়ের দ্বৈরথে দর বাড়তে বাড়তে পৌঁছে যায় ৫ কোটির ঘরে। শেষ পর্যন্ত ৫ কোটি ৪০ লাখ রুপিতে গিয়ে দিল্লি সরে দাঁড়ায়। তখন মনে হচ্ছিল, মুস্তাফিজুরকে বুঝি ফের চেন্নাইতেই দেখা যাবে। কিন্তু ঠিক সেই সময় নিলামে নাটকীয় মোড় নেয় পরিস্থিতি। হঠাৎ বিডে ঢুকে পড়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স। চেন্নাই ৭ কোটি পর্যন্ত দর বাড়ালেও কেকেআর পিছু হটেনি। দু’দলের টানাপোড়েনে দর আরও চড়তে থাকে। একপর্যায়ে চেন্নাই সিদ্ধান্ত নিতে খানিক সময় নেয়, ফের বিডে ফিরলেও শেষ পর্যন্ত কেকেআরের দৃঢ় অবস্থানের সামনে আর টিকতে পারেনি। সব নাটকের অবসান ঘটে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে। চেন্নাই সরে দাঁড়ালে গ্যাভেল পড়ে, আর মোস্তাফিজুর রহমানের নাম ওঠে কলকাতা নাইট রাইডার্সের ঘরে। নিলামে বড় অঙ্কের এই চুক্তির মাধ্যমে নতুন চ্যালেঞ্জে পা রাখলেন মুস্তাফিজুর। আইপিএলে নিজের বৈচিত্র্যপূর্ণ কাটার আর ডেথ ওভারের দক্ষতা দিয়ে কেকেআরের বোলিং আক্রমণে বড় ভূমিকা রাখবেন বলেই আশা ফ্র্যাঞ্চাইজিটির।
আইপিএল ২০২৬ মিনি নিলামে যেন ঝড় তুলে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন! মাত্র ২ কোটি বেস প্রাইস থেকে শুরু হওয়া নিলাম যুদ্ধে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) তাকে কিনে নিল ২৫.২০ কোটি রুপিতে — মিচেল স্টার্কের ২৪.৭৫ কোটির রেকর্ড ভেঙে আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি বিদেশি খেলোয়াড় হয়ে গেলেন গ্রিন। কিন্তু চমক এখানেই শেষ নয় — নিয়ম অনুযায়ী তিনি পাবেন মাত্র ১৮ কোটি! এতিয়াদ অ্যারেনায় নিলাম শুরু হতেই গ্রিনের জন্য ছিল অগ্নিমূল্যের লড়াই। প্রথমে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দিয়ে শুরু, তারপর রাজস্থান রয়্যালস ঢোকে। কেকেআর এবং রয়্যালসের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ চলার পর ১৩.৬০ কোটিতে রয়্যালস পিছিয়ে যায়। মনে হচ্ছিল কেকেআরই পেয়ে যাবে — কিন্তু হঠাৎ ঢুকে পড়ল চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে)! পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন সিএসকে এবং তিনবারের চ্যাম্পিয়ন কেকেআরের মধ্যে যুদ্ধ তুঙ্গে উঠল। ১৮ কোটি পার হয়ে যাওয়ার পরও দুই দল ছাড়েনি। শেষ পর্যন্ত ২৫.২০ কোটিতে কেকেআর জিতে নিল গ্রিনকে, সিএসকে পিছিয়ে গেল। এই দাম শুধু রেকর্ডই নয় — গ্রিন এক নিলামে সবচেয়ে বেশি বার (১১৭ বার) বোলি পাওয়ার রেকর্ডও গড়লেন, শ্রেয়স আইয়ারের ১০৩-এর রেকর্ড ভেঙে। কেন পুরো টাকা পাবেন না গ্রিন? বিসিসিআইয়ের নিয়ম অনুযায়ী, মিনি নিলামে বিদেশি খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ বেতন ১৮ কোটি রুপি। এই ক্যাপ গত মেগা নিলামের সর্বোচ্চ রিটেনশন স্ল্যাবের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়েছে। ১৮ কোটির বেশি যা উঠবে, তা যাবে বিসিসিআইয়ের প্লেয়ার ওয়েলফেয়ার ফান্ডে। ফ্র্যাঞ্চাইজি অবশ্য পুরো ২৫.২০ কোটি খরচ করবে তাদের পার্স থেকে। এই নিয়ম শুধু বিদেশি খেলোয়াড়দের জন্য, ভারতীয়দের নয়। ২৬ বছরের গ্রিন আগে খেলেছেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে। IPL-এ ২৯ ম্যাচে ৭০৭ রান (সর্বোচ্চ ১০০*) এবং ১৬ উইকেট তাঁর ঝুলিতে। নিলামে ব্যাটার হিসেবে লিস্টেড হলেও তিনি নিশ্চিত করেছেন, IPL-এ বোলিং করবেনই। নিলামের শুরুতেই ডেভিড মিলার ২ কোটি বেস প্রাইসে দিল্লি ক্যাপিটালসে গেছেন। আরও অনেক তারকা অপেক্ষায় — লড়াই জমে উঠবে আরও!
আইপিএল ২০২৬ মিনি নিলামে সবচেয়ে আলোচিত নামগুলোর একটি হয়ে উঠেছিলেন মাথিশা পাথিরানা। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কান এই গতিতারকাকে ১৮ কোটি রুপিতে দলে টেনে নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)। তবে যে ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেলে নিজের পরিচিতি গড়েছিলেন, সেই চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে) নিলামে একবারের জন্যও প্যাডেল তোলে না—যা ভক্তদের মধ্যে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। ২ কোটি রুপি ভিত্তিমূল্য নিয়ে নিলামে ওঠা ২২ বছর বয়সী পাথিরানাকে শুরুতে লড়াইয়ে টানে দিল্লি ক্যাপিটালস ও লখনউ সুপার জায়ান্টস। দর ১৫ কোটিতে পৌঁছালে দিল্লি সরে দাঁড়ায়। এরপর কেকেআর বিডে ঢুকে লখনউকে টপকে ১৮ কোটিতে নিশ্চিত করে এই পেসারকে। এতে ভিত্তিমূল্যের তুলনায় নয় গুণ দামে বিক্রি হলেন তিনি। নিলামের আগে আইপিএল ২০২৫ আসরে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের কারণে পাথিরানাকে ছেড়ে দেয় চেন্নাই। সেই মৌসুমে ১৩ উইকেট নিলেও তার ইকোনমি ছিল ১০.১৪—যা টি-টোয়েন্টি মানদণ্ডে বেশ ব্যয়বহুল। একই মৌসুমে ইতিহাসে প্রথমবার পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে শেষ করে সিএসকে। সব মিলিয়ে আইপিএলে ৩২ ম্যাচ খেলে পাথিরানার উইকেট সংখ্যা ৪৭। চেন্নাইয়ের হয়ে নজরকাড়া পারফরম্যান্সই তাকে শ্রীলঙ্কার টি-টোয়েন্টি দলে নিয়মিত মুখ করে তুলেছিল। তবে বোলিং অ্যাকশন সংক্রান্ত জটিলতায় আর্ম রোটেশন বদলানোর পর থেকে আগের ধারাবাহিকতা হারিয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এদিকে একই নিলামে কেকেআর আরও বড় বাজির খেলোয়াড় হিসেবে ক্যামেরন গ্রিনকে দলে ভিড়িয়েছে ২৫ কোটি ২০ লাখ রুপিতে। এতে আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে দামি বিদেশি ক্রিকেটার হয়েছেন এই অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার, ভেঙেছেন মিচেল স্টার্কের আগের রেকর্ড। অন্যদিকে, রবি বিষ্ণুইকে দলে নিয়েছে রাজস্থান রয়্যালস। ডেভিড মিলার ও বেন ডাকেটকে ভিত্তিমূল্যে কিনেছে দিল্লি ক্যাপিটালস। চেন্নাই সুপার কিংস দলে টেনেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনার আকিল হোসেন, আর কুইন্টন ডি কক এক কোটি রুপিতে যোগ দিয়েছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে। সবচেয়ে আলোচনায় থাকলেও, পাথিরানাকে নিয়ে সিএসকের সম্পূর্ণ অনাগ্রহই নিলামের অন্যতম চমক হয়ে থাকল।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ভালো পারফরম্যান্সের মাধ্যমেই টি-টোয়েন্টি দলে ফেরার লক্ষ্য স্থির করেছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। নিয়মিত টি-টোয়েন্টি দলে না থাকা এই ব্যাটার মনে করেন, সংক্ষিপ্ত সংস্করণে ব্যক্তিগত মাইলফলকের চেয়ে ম্যাচে প্রভাব রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।' বিপিএলে রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন শান্ত। আসন্ন আসরকে নিজের জন্য ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে দেখছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি দলে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে শান্ত বলেন, “আমি যদি বিপিএলে ভালো করি, তাহলে কেন নয়? বিপিএল আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে পারফর্ম করতে পারলে একটা শক্ত বার্তা দেওয়া সম্ভব। তিনি জানান, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্বাচক ও কোচিং স্টাফদের হাতে থাকলেও নিজের দায়িত্ব পরিষ্কারভাবে জানেন তিনি। “আমার কাজ ভালো ক্রিকেট খেলা। সেটা করতে পারলে এবং তারা যদি মনে করেন আমি সক্ষম, তাহলে আমাকে দলে নেবেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কত রান করলাম সেটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ম্যাচে কতটা প্রভাব ফেলতে পারলাম। প্রতিবার ব্যাট করতে নামলেই আমার লক্ষ্য থাকে ইনিংসে প্রভাব রাখা। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্স নিয়েও কথা বলেন শান্ত। তার নেতৃত্বে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ছয়টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে—যার মধ্যে চারটি জয়, একটি ড্র ও একটি হার। আগামী বছর ব্যস্ত সূচি অপেক্ষা করছে টাইগারদের। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ অন্তত ১২টি টেস্ট ম্যাচ খেলবে, যার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শান্ত বলেন, “এ বছরটা মোটামুটি ভালোই গেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে আমরা আরও ভালো খেলতে পারতাম। তবে সামনে অনেক ম্যাচ আছে, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে। আমরা সব সময় বেশি বেশি ম্যাচ খেলতে চাই।” তিনি আরও যোগ করেন, “অনেক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়া আনন্দের বিষয়। পরিকল্পনা ধীরে ধীরে শুরু হয়েছে। বিপিএল শেষ হওয়ার পর আমাদের পরিকল্পনা আরও পরিষ্কার হবে।” বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রিকেটারদের কল্যাণ সমিতি অব বাংলাদেশের (কোয়াব) অল-স্টার ম্যাচের প্রচারণা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
আইপিএলের মঞ্চে আজ ফের খুলছে কোটি টাকার দরজা। আবুধাবির ইতিহাদ অ্যারেনায় আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আইপিএল ২০২৬ মৌসুমের মিনি নিলাম, যেখানে দল গঠনের শেষ ছক্কা মারতে নামবে ১০টি ফ্র্যাঞ্চাইজি। বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটায় শুরু হওয়া এই নিলামে যেমন নজর থাকবে ক্যামেরন গ্রিন, লিয়াম লিভিংস্টোনদের দিকে, তেমনি বাংলাদেশের সাত ক্রিকেটারের ভাগ্যও নির্ধারিত হবে এই মঞ্চেই। তবে নিলামের আগে জেনে নেওয়া যাক গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু বিষয় : কতজন খেলোয়াড় দল পাবেন মোট ১০টি ফ্র্যাঞ্চাইজির স্কোয়াডে এখনো ৭৭টি জায়গা খালি। এর মধ্যে ৩১টি বিদেশি ক্রিকেটারের জন্য। নিয়ম অনুযায়ী, একটি দল সর্বোচ্চ ২৫ জন খেলোয়াড় নিতে পারবে এবং স্কোয়াডে বিদেশির সংখ্যা হতে পারবে সর্বোচ্চ আটজন। সবচেয়ে বেশি শূন্যতা কলকাতা নাইট রাইডার্সের—১৩টি জায়গা, আর সবচেয়ে কম পাঞ্জাব কিংসের—মাত্র চারটি। নিবন্ধনকৃত খেলোয়াড় এবারের নিলামের জন্য শুরুতে ১,৩৫৫ জন খেলোয়াড় নাম নিবন্ধন করলেও চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ৩৬৯ জন। এর মধ্যে ৪০ জনের ভিত্তিমূল্য সর্বোচ্চ ২ কোটি রুপি। ভারতীয়দের মধ্যে এই দামে আছেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও রবি বিষ্ণোই—দুজনই এবার বড় অঙ্কের লড়াইয়ে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে কারা? বাংলাদেশ থেকে নিলামে আছেন সাত ক্রিকেটার—মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, নাহিদ রানা, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান, শরীফুল ইসলাম ও রাকিবুল হাসান। তাদের মধ্যে ভিত্তিমূল্য সবচেয়ে বেশি মোস্তাফিজুর রহমানের। প্রাথমিক তালিকায় নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত নিলামে জায়গা হয়নি সাকিব আল হাসানের। আলোচনায় যেসব ক্রিকেটার নিলামের আলোচনার কেন্দ্রে আছেন অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলিং অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন। বিশ্লেষকদের ধারণা, তাঁর দাম ২৫ কোটি রুপির ঘরও ছাড়াতে পারে। পাশাপাশি লিয়াম লিভিংস্টোন, জেমি স্মিথ, ডেভন কনওয়ে ও ডেভিড মিলারদের প্রতিও থাকবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর বাড়তি আগ্রহ। দলগুলোর কাছে কেমন অর্থ আছে দলগুলোর হাতে থেকে সবচেয়ে শক্ত অবস্থানে কলকাতা নাইট রাইডার্স—তাদের হাতে রয়েছে ৬৪.৩০ কোটি রুপি। এরপর চেন্নাই সুপার কিংসের ঝুলিতে আছে ৪৩.৪০ কোটি রুপি। বিপরীতে পাঞ্জাব কিংস ও গুজরাট টাইটানস তুলনামূলক কম বাজেট নিয়ে নামছে নিলামে। নিলামের নিয়ম মিনি নিলাম হওয়ায় এবার কোনো ‘মার্কি সেট’ নেই এবং রাইট টু ম্যাচ (আরটিএম) কার্ড ব্যবহারের সুযোগও থাকছে না। ক্যাপড ব্যাটসম্যানদের দিয়েই শুরু হবে নিলাম। ৭০ জন খেলোয়াড় উপস্থাপনের পর শুরু হবে অ্যাক্সেলেরেটেড রাউন্ড, যেখানে অবিক্রীত খেলোয়াড়দের মধ্য থেকে দলগুলো দ্রুত পছন্দ বেছে নেবে। সব মিলিয়ে আজকের নিলাম শুধু দল গঠনের আনুষ্ঠানিকতা নয়—এটি অনেক ক্রিকেটারের জন্য নতুন ঠিকানা খোঁজার দিন, আবার কারও জন্য অপেক্ষা দীর্ঘ হওয়ার মুহূর্ত। কোটি টাকার ডাকের ভিড়ে কার হাসি চওড়া হবে, আর কার স্বপ্ন থমকে যাবে—তার উত্তর মিলবে আজই।
যুব এশিয়া কাপে পরপর দুই ম্যাচ জেতায় বাংলাদেশের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে গতকালই। গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে আফগানিস্তান ও নেপালকে হারিয়ে শেষ চারে এক পা দিয়ে রেখেছিল তারা। গ্রুপের আরেক ম্যাচে গতকাল আফগানিস্তান শ্রীলঙ্কার কাছে হারায় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের সেমিফাইনাল। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে। ফলে ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে দুই দলই। যদিও নেট রান রেটে কিছুটা এগিয়ে থাকায় বাংলাদেশকে টপকে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচের জয়ী দলই হবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। ১৭ ডিসেম্বর মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে গেলে ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যকার ম্যাচে জয়ী দলই ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সেক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে বেশ এগিয়ে আছে ভারত। সবশেষ ম্যাচ জিতলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে যাচ্ছে টিম ইন্ডিয়া। ফলে বাংলাদেশ গ্রুপের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে না পারলে রানার্সআপ হয়ে সেমিতে খেলতে হবে ভারতের সঙ্গে। বাংলাদেশ গ্রুপের এক নম্বরে থাকলে সেমিফাইনালে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ পাকিস্তান বা সংযুক্ত আরব আমিরাত। আগামী ১৯ ডিসেম্বর টুর্নামেন্টের দুই সেমিফাইনাল। ২১ ডিসেম্বর মাঠে গড়াবে ফাইনাল ম্যাচ।
আইপিএল ২০২৬ এর সূচি চূড়ান্তভাবে প্রকাশ না হলেও জানা গেল, ২৬ মার্চ থেকে ৩১ মের মধ্যে হবে পরবর্তী আসর। সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও একই উইন্ডোতে হয়েছে ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ। বিসিসিআই পূর্ণ সূচি ঘোষণা করেনি। তবে আইপিএলের ১৯তম আসর যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার প্রায় তিন সপ্তাহের মধ্যে হবে, সেটা জানিয়ে দিলো তারা। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ ভারত ও শ্রীলঙ্কায় হবে এই টুর্নামেন্ট। টানা দ্বিতীয় বছর পিএসএলের সঙ্গে প্রায় মিল রেখে সূচি ঘোষণা করল। পাকিস্তানের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ হবে ২৬ মার্চ থেকে ৩ মে পর্যন্ত। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আইপিএল দলগুলো তাদের ধরে রাখা ও ছেড়ে দেওয়া খেলোয়াড়দের তালিকা প্রকাশ করে। আজ আবুধাবিতে ৩৬৯ জন খেলোয়াড়কে নিয়ে হবে মিনি নিলাম। ৭৭ জন খেলোয়াড়কে কিনতে পারবে দলগুলো, বিদেশি ৩১ জন। সর্বোচ্চ ১৩ জন খেলোয়াড়কে কিনতে পারবে কলকাতা নাইট রাইডার্স। চলতি বছর ৩ জুন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ফাইনালে পাঞ্জাব কিংসকে হারিয়ে প্রথমবার আইপিএল জেতে।
বিশ্বের জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আইপিএলে ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত খেলছেন টাইগার পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। সবশেষ আসরে নিলাম থেকে দল না পেলেও পরে বদলি হিসেবে দিল্লি ক্যাপিটালস তাকে দলে ভেড়ায়। আসন্ন আইপিএলের নিলামেও নাম রয়েছে তারকা এই ক্রিকেটারের। ১৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে মিনি নিলাম। মুস্তাফিজ ছাড়াও এবারের আইপিএল নিলামে নাম রয়েছে বাংলাদেশের তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব, শরিফুল ইসলাম, রাকিবুল হাসান ও নাহিদ রানা। এদের মধ্যে নিলামে মুস্তাফিজেরই দল পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ২০২৬ আইপিএলের নিলামে মুস্তাফিজের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ২ কোটি রুপি। একই পরিমাণ অর্থে ফিজ ছাড়া আরও ৩৯ ক্রিকেটার রয়েছেন তালিকায়। তবে সেখান থেকে খুব অল্প সংখ্যক ক্রিকেটারই দল পাবেন নিলামে। সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার অনেকেই নিলামের আগে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর শক্তি ও দুর্বলতা বিশ্লেষণ এবং তারা কাকে দলে নিতে পারে এ নিয়ে আলোচনা করছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ক্রিকবাজ তাদের বিশ্লেষণে মুস্তাফিজের সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজির নাম উল্লেখ করেছে। দল দুটি হচ্ছে—চেন্নাই সুপার কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালস। এই দুই দল নিলাম থেকে মুস্তাফিজকে দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চেন্নাই এবং দিল্লি দুই দলের হয়েই আইপিএল খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে ফিজের। ২০২৪ আসরে চেন্নাই এবং সর্বশেষ আসরসহ তিনবার দিল্লির জার্সিতে খেলেছেন মুস্তাফিজ।
গালফ প্রো কার চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমস্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশি রেসার অভিক আনোয়ার। মোট ২ ঘণ্টার রেসিংয়ে প্রায় ৩শ' কিলোমিটার দূরত্বের এই রেসে সফলভাবে সম্পন্ন করেন ৪৭টি ল্যাপ। চলতি বছর রেসিং ট্র্যাকে দুর্ঘটনায় শিকার হওয়ার পর বড় অর্জন এসেছে অভিকের হাত ধরে। বাংলাদেশ ছাড়াও এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন রাশিয়া, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ভারত, জর্ডান ও মিশরের রেসাররা। উল্লেখ্য, অধিকাংশ রেসারদের গাড়িতে ডাবল রেসারের টিম থাকলেও অভিক একা হাতেই পাড়ি দেন রেসিং ট্র্যাক।
স্প্যানিশ ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা কেনার জন্য আগ্রহী সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান। বিভিন্ন স্পানিশ গণমাধ্যমের দাবি, ১০ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করার ইচ্ছে সালমানের। এই প্রস্তাব বার্সেলোনার প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ইউরোর ঋণ মেটাতে সহায়ক হবে এবং তাত্ত্বিকভাবে সৌদির ক্রাউন প্রিন্সকে ক্লাবের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেবে। সৌদি আরবের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ) বিশ্বের ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়ানোর কৌশলের অংশ হিসেবে এই ধরনের প্রস্তাব বিবেচনা করছে। তবে, বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবগুলোকে সম্পূর্ণভাবে বিদেশি বা ব্যক্তিগত কোনো সংস্থা কিনতে পারে না। কারণ বার্সেলোনা ক্লাবটি সোসিওস বা সদস্যদের মালিকানাধীন, যারা ক্লাবের ভোটাভুটি ও প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। স্পেনের অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এই ১০ বিলিয়ন ইউরো প্রস্তাব সম্ভবত প্রতীকী বা পরীক্ষামূলক। ক্লাবটি বর্তমানে ২ বিলিয়ন ইউরোর বেশি ঋণে রয়েছে। যদি এই 'মেগা ডিল' সম্পন্ন হয়, তাহলে ক্লাবটি অর্থনৈতিকভাবে চাপমুক্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জার্মান বুন্দেসলিগায় কোনো রকমে হার এড়িয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। তলানির দল মেইনজ জিরো ফাইভের সাথে ২-২ গোলে ড্র করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) নিজেদের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় মেইনজকে আতিথ্য দেয় বায়ার্ন। এদিন ম্যাচে দাপুটে শুরুর পর ২৯ মিনিটে এগিয়ে যায় বায়ার্ন মিউনিখ। লেনার্ট কার্লের দারুণ ফিনিশিংয়ে ১-০ গোলের লিড নেয় স্বাগতিকরা। চলতি মৌসুমে বুন্দেসলিগার ইতিহাসে ১৪ ম্যাচে গোলের হাফ সেঞ্চুরি করে নতুন মাইলফলক তৈরি করলো বায়ার্ন। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে পতুলস্কির গোলে সমতায় ফেরে মেইনজ। ১-১ সমতায় বিরতিতে যায় দু'দল। দ্বিতীয়ার্ধের ২২তম মিনিটে স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে দিয়ে এবারের আসরে একটি মাত্র জয় পাওয়া দলটি এগিয়ে যায় ২-১ গোলে। তবে খেলার শেষদিকে সফল স্পটকিকের মাধ্যমে কোনো রকমে দলকে হারের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনেন বায়ার্নের ইংলিশ স্টাইকার হ্যারি কেইন। ১৪ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে বাভারিয়ানরা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাইপজিগের চেয়ে তারা এগিয়ে রয়েছে ৯ পয়েন্ট।
স্প্যানিশ লা লিগায় দেপোর্তিভো আলাভেসকে ২-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এই জয়ে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে কোচ আলোনসো শিষ্যরা। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) নিজেদের মাঠে রিয়ালকে আতিথ্য দেয় আলাভেস। এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে উঠে খেলা। ২৪ মিনিটে চোট কাটিয়ে দলে ফেরা কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলে ডেডলক ভাঙে রিয়াল মাদ্রিদ। মাঝমাঠ থেকে জুড বেলিংহ্যামের বাড়ানো বল ধরে স্কোরলাইন ১-০ করেন এই ফরাসি তারকা। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হলে লিড নিয়েই বিরতিতে যায় লস ব্লাঙ্কোসরা। দ্বিতীয়ার্ধের ২৩তম মিনিটে এক গোল শোধ দিয়ে ম্যাচে ফেরার আভাস দেয় স্বাগতিকরা। তবে ৮ মিনিট পর ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের অ্যাসিস্টে আলাভেসের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় নিশ্চিত করেন রদ্রিগো। মূলত, রিয়ালের কঠিন সময়ে পাওয়া এই জয় কোচ আলোনসোর কাছেও এসেছে স্বস্তির বার্তা হয়ে। ১৭ ম্যাচ শেষে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রিয়াল। সমান ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে কাতালানরা।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আগামীকাল মঙ্গলবার কোয়াবের আয়োজনে মাঠে গড়াবে বিশেষ প্রীতি ম্যাচ। এই ম্যাচে মুখোমুখি হবে নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন অদম্য দল ও মেহেদী হাসান মিরাজের অপরাজেয় দল। ম্যাচের আগেই উত্তাপ ছড়িয়েছে দুই শিবিরে। শান্ত স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, মাঠে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না। তাঁর হুংকার কোনো ছাড়াছাড়ি হবে না, শুইয়ে ফেলব একদম। শান্তর এই বক্তব্যের জবাব দিতে দেরি করেননি মিরাজ। তিনি জানালেন, কথার নয় জবাবটা দিতে চান মাঠেই। মিরাজের ভাষায়, খেলার ভেতরে যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকে, তাহলে সেই খেলার কোনো মূল্য থাকে না। থ্রেট যদি আসে, তার উত্তর মাঠেই দিতে হবে। আমরা চেষ্টা করব ম্যাচটা জিতে এই কথার জবাব দিতে। মিরাজের দলের কোচ সোহেল ইসলামও একই সুরে কথা বলেন। তাঁর মতে, কথার লড়াইয়ে বিশ্বাস নেই তাদের। আমরা কথায় বিশ্বাসী না, মাঠে বিশ্বাসী। কে কাকে শোয়ায়—এটা আমরা মাঠেই প্রমাণ করব। বাইরের কথা কানে না নিয়ে আমরা নিজেদের প্রস্তুতিতেই মনোযোগ দিচ্ছি। এই প্রীতি ম্যাচে অদম্য দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করবেন বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান ইশতিয়াক সাদেক। দলটির মেন্টর হিসেবে থাকছেন জাতীয় দলের সাবেক অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অপরদিকে, অপরাজেয় দলের কোচ হিসেবে দায়িত্বে থাকছেন মিজানুর রহমান বাবুল। ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করবেন শেহজাদ মুনিম। আর মেন্টরের ভূমিকায় থাকবেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সব মিলিয়ে বিজয় দিবসের এই বিশেষ প্রীতি ম্যাচে মাঠের লড়াই ঘিরে রোমাঞ্চের কমতি থাকার কথা নয়। দুই দলের আত্মবিশ্বাসী বক্তব্য ম্যাচের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়ে ঢাকায় পা রেখেছেন পাকিস্তানের সাবেক তারকা পেসার শোয়েব আখতার। ঢাকা ক্যাপিটালসের মেন্টর হিসেবে দায়িত্ব নিতে আসা এই কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার ঢাকায় ফিরেই প্রকাশ করেছেন উচ্ছ্বাস ও আবেগ। দীর্ঘ প্রায় নয় বছর পর বাংলাদেশে আসা রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, ঢাকায় ফিরলে তার মনে হয় নিজের ঘরেই ফিরে এসেছেন। শোয়েব বলেন, বাংলাদেশে তার অসংখ্য ভক্ত রয়েছে এবং প্রতিবার এ দেশে এলে তিনি উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছেন। ঢাকা ক্যাপিটালসের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাওয়ায় দারুণ রোমাঞ্চিত শোয়েব আখতার। বিপিএল সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি একটি মানসম্মত ও প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্ট, যেটি তিনি নিয়মিত অনুসরণ করে আসছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশি ক্রিকেটার ও সমর্থকদের প্রশংসাও করেন এই সাবেক গতিতারকা। ঢাকা ক্যাপিটালসের পেস আক্রমণে থাকা তাসকিন আহমেদকে নিয়ে আলাদা করে কথা বলেন শোয়েব। তার মতে, তাসকিন একজন আন্তরিক ও প্রতিভাবান ফাস্ট বোলার, যার সবচেয়ে বড় শক্তি হলো গতি এবং খেলাটার প্রতি প্রবল আবেগ। শোয়েব জানান, তাসকিনকে খুব বেশি বদলানোর প্রয়োজন নেই; বরং নিজের স্বাভাবিক গতিতে বল করাটাই তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সমর্থকদের উদ্দেশে শোয়েব বলেন, তিনি ঢাকায় এসেছেন এবং খুব শিগগিরই ঢাকা ক্যাপিটালসের সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করতে চান। মাঠের বাইরে ও ভেতরে সবার সঙ্গে সময় কাটানোর আগ্রহও প্রকাশ করেন তিনি। এদিকে ঢাকায় এসে খাবারের কথাও ভুলে যাননি শোয়েব আখতার। হাসিমুখে তিনি বলেন, বাংলাদেশের খাবার তার খুব পছন্দ, বিশেষ করে মাছ আর ভাত। ঢাকায় থাকাকালীন এই ঐতিহ্যবাহী খাবারই খেতে চান তিনি। বিপিএলের মেন্টর হিসেবে শোয়েব আখতারের এই আগমন ঢাকা ক্যাপিটালসের জন্য যেমন বড় প্রাপ্তি, তেমনি তরুণ পেসারদের জন্যও হতে পারে মূল্যবান শেখার সুযোগ।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও মাঠে গড়াচ্ছে সাবেক ক্রিকেটারদের বিশেষ প্রদর্শনী ম্যাচ। দেশের দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্রিকেটার শহীদ জুয়েল ও শহীদ মুশতাকের নামে গঠিত দুই একাদশে বিভক্ত হয়ে খেলবেন বাংলাদেশের প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটাররা। আগামী ১৬ ডিসেম্বর সকালে মিরপুর শেরে-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে এই ম্যাচ। সকাল ১০টায় শুরু হতে যাওয়া এ আয়োজনে দর্শকদের উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আহসান ইকবাল চৌধুরী। রোববার আয়োজকরা দুই দলের পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন। অভিজ্ঞতা ও স্মৃতির মিশেলে গড়া এই ম্যাচে আবারও মাঠে দেখা যাবে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, তারকা ব্যাটার ও বোলারদের। শহীদ জুয়েল একাদশে খেলবেন শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ, জাভেদ ওমর বেলিম, মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, রাজিন সালেহ, শাহরিয়ার নাফীস, আনোয়ার হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, মুশফিকুর রহমান বাবু, হারুন উর রশিদ লিটন, তালহা জুবায়ের, সানোয়ার হোসেন, সৈয়দ রাসেল, আনোয়ার হোসেন মুনির, এনামুল হক মণি ও রকিবুল হাসান। দলটির কোচের দায়িত্বে থাকবেন গোলাম ফারুক শুরু, ফিজিও আবু হানিফ এবং টিম সহকারী হিসেবে থাকবেন মিলন খান।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।