গত পাঁচ বছরে প্রায় ৯ লাখ ভারতীয় নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এক লিখিত উত্তরে এই তথ্য তুলে ধরেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং। শুক্রবার ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় দেশটির মন্ত্রী জানায়, বিপুলসংখ্যক ভারতীয় নাগরিক তাদের নাগরিকত্ব ত্যাগ অব্যাহত রেখেছেন, এবং গত পাঁচ বছরে প্রায় ৯ লাখ মানুষ এই কাজ করেছেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং রাজ্যসভায় একটি লিখিত বক্তব্যে এই তথ্য দেন। মন্ত্রী জানান, যারা ভারতীয় নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন, সরকার তাদের বার্ষিক রেকর্ড রাখে। ২০১১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মোট ১১ লাখ ৮৯ হাজার ১৯৪ জন ভারতীয় তাদের নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। সংসদে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, গত ১৪ বছরে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ ভারতীয় নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন। এই পরিসংখ্যানগুলো বলছে, বিদেশি নাগরিকত্ব বেছে নেওয়া ভারতীয়দের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতেই বার্ষিক সর্বোচ্চসংখ্যক লোক নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বছর অনুযায়ী এই সংখ্যাগুলো পেশ করেন। তালিকা অনুসারে, ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর যে সংখ্যক ভারতীয় নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন, তার সংখ্যাটি ওঠানামা করেছে। ২০১১ সালে ১,২২,৮১৯ জন নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন, যা পরের বছর সামান্য কমে ১,২০,৯২৩ জনে দাঁড়ায়। এরপর ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সংখ্যাটি মূলত ১ লাখ ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজারের মধ্যে ছিল। যেমন: ২০১৩ সালে ১,৩১,৪০৫ জন, ২০১৪ সালে ১,২৯,৩২৮ জন, এবং ২০১৫ সালে ১,৩১,৪৮৯ জন নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন। ২০১৬ সালে এই সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ১,৪১,৬০৩ জন এবং ২০১৯ সালে ছিল ১,৪৪,০১৭ জন। তবে ২০২০ সালে নাগরিকত্ব ত্যাগের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে ৮৫,২৫৬ জনে দাঁড়ায়। এরপরের বছরগুলোতে এই সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ২০২১ সালে ১,৬৩,৩৭০ জন, ২০২২ সালে ২,২৫,৬২০ জন এবং ২০২৩ সালে ২,১৬,২১৯ জন নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন ২,০৬,৩৭৮ জন।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বিখ্যাত বন্ডি বিচে হামলাকারীদের মধ্যে একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী যুবক ২৪ বছর বয়সী নাভিদ আকরাম। তিনি সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিমের বনিরিগ এলাকার বাসিন্দা। সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার সময় নাভিদ গুলিবিদ্ধ হন। এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপর এক বন্দুকধারী ঘটনাস্থলেই পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। বনিরিগের পাতিয়া এলাকায় নাভিদের বাড়িতে অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছে পুলিশ। বাড়িটি তাঁর পরিবার গত এক বছর ধরে ব্যবহার করছে। সামাজিক মাধ্যমে নাভিদের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ছবি ও হামলার সময়ের তাঁর ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ বলছেন, নাভিদ আকরাম পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। এক্সে এক পোস্টে একজন লিখেছেন, ‘আমি নাভিদের সঙ্গে ব্রিক কারখানায় কাজ করেছি অনেকদিন। ও পাকিস্তানি।’ অপর একজন লিখেছেন, ‘ও পাকিস্তানের লাহোর থেকে এসেছে।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘ড্রাইভিং লাইসেন্সের ছবিতে ওকে পাকিস্তানের জার্সি পরা দেখা যাচ্ছে।’ তবে নাভিদ আকরামের সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু এখনো জানা যায়নি। স্থানীয় সময় আজ রোববার সন্ধ্যায় বন্ডি সমুদ্র সৈকতে বন্দুক হামলায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ ১২ জন নিহত ও অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। হামলার সময় বন্ডি বিচে ইহুদিদের অন্যতম প্রধান উৎসব হানুক্কাহর অনুষ্ঠান চলছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে ক্যাম্পবেল প্যারেডসংলগ্ন বন্ডি প্যাভিলিয়নের কাছে একটি গাড়ি থেকে দুই ব্যক্তি নেমে আসেন। এরপর তাঁরা গুলি চালাতে শুরু করেন। এদিকে এ ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইমামস কাউন্সিল ও কাউন্সিল অব ইমামস এনএসডব্লিউ এক যৌথ বিবৃতিতে বন্ডি বিচে গুলির ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের সমাজে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এ ঘটনার জন্য দায়ীদের পূর্ণ জবাবদিহি ও আইনের আওতায় এনে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।’ নিহত ব্যক্তিদের পরিবার, আহত ও এই হামলার প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
দেশের বাজারে আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) স্বর্ণ ভরিতে ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৯৭ টাকা বিক্রি হবে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) স্বর্ণ ভরিতে ৩ হাজার ৪৫৩ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৯৭ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই লাখ ৫ হাজার ৮০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৪৬ হাজার ৮৩৮ টাকা। এর আগে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৪ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই লাখ ২ হাজার ৪৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৭৩ হাজার ৫৭২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। বাজুস জানায়, স্বর্ণের বিক্রয় মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে। এদিকে স্বর্ণের দামের সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে রুপার দামও। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৪ হাজার ৫৭২ টাকা, ২১ ক্যারেট ৪ হাজার ৩৬২ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৩ হাজার ৭৩২ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা ৪ হাজার ২৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেট ৪ হাজার ৪৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির রুপা ২ হাজার ৬০১ টাকায় বিক্রি হয়ে আসছিল।
হাঙ্গেরিতে একের পর এক শিশু নির্যাতন কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। শনিবার রাজধানী বুদাপেস্টে আয়োজিত এই সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নাগরিকরা। শনিবার কুয়াশাচ্ছন্ন বুদাপেস্টের রাস্তায় ‘শিশুদের সুরক্ষা দাও’ লেখা ব্যানার হাতে নিয়ে বিক্ষোভকারীরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানান। কয়েক বছর আগের নির্যাতনের শিকার শিশুদের প্রতি সংহতি জানাতে অনেকে নরম খেলনা ও মশাল বহন করেন। ২০১০ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর শিশুদের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন অরবান। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক ভয়াবহ শিশু নির্যাতনের ঘটনা সামনে আসায় সেই প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এসব কেলেঙ্কারিতে অরবান নেতৃত্বাধীন সরকারের ওপর চাপ ক্রমেই বাড়ছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন বিরোধী দল টিসজা’র প্রধান পিটার মাগিয়ার। গত সেপ্টেম্বরে বুদাপেস্টের একটি কিশোর সংশোধনাগারে নির্যাতনের নতুন অভিযোগ প্রকাশের পর এই আন্দোলন আরও জোরালো হয়। নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সজোলো স্ট্রিট কিশোর সংশোধনাগারের পরিচালক এক কিশোরের মাথায় লাথি মারছেন—এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়। ঘটনার পর চলতি সপ্তাহের শুরুতে সংশ্লিষ্ট সংশোধনাগারের চার কর্মীকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সরকার ঘোষণা দিয়েছে, শিশুদের জন্য পরিচালিত সব ধরনের প্রতিষ্ঠান এখন থেকে সরাসরি পুলিশের তত্ত্বাবধানে থাকবে। গত শুক্রবার দেশটির সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় ২০২১ সালের একটি প্রতিবেদন, যেখানে বলা হয়, রাষ্ট্র পরিচালিত সেবাকেন্দ্রগুলোতে থাকা শিশুদের পঞ্চমাংশেরও বেশি কোনো না কোনোভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৭৩ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত নাগরিক জুজসা সালাই এএফপিকে বলেন, ‘সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের সঙ্গে যা ঘটছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। এ কারণেই আমরা রাস্তায় নেমেছি।’
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উসকানি দেওয়া এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন এমন অভিযোগে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা নিয়মিতভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে তার অনুসারীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াতে আহ্বান জানাচ্ছেন। এসব বক্তব্য বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। তলবকালে বাংলাদেশ সরকার এসব বিষয়ে ভারতের সরকারের প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। পাশাপাশি আদালতের দেওয়া দণ্ড কার্যকরের লক্ষ্যে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দ্রুত দেশে প্রত্যর্পণের আহ্বান জানানো হয়। এ সময় বাংলাদেশি রাজনৈতিক নেতা শরিফ ওসমান হাদির ওপর সংঘটিত হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনরা যাতে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় না নিতে পারে, সে বিষয়েও ভারতের সহযোগিতা কামনা করা হয়। এর জবাবে রোববার এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের উত্থাপিত অভিযোগগুলো দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করে। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ১৪ ডিসেম্বর যে প্রেস নোট প্রকাশ করেছে, তাতে উত্থাপিত দাবির সঙ্গে ভারত একমত নয়। ভারত আরও জানায়, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পক্ষে তাদের অবস্থান বরাবরের মতোই অটুট রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহারের সুযোগ কখনোই দেওয়া হয়নি বলে দাবি করা হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করা এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটাই প্রত্যাশা করে ভারত।
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত থিথিপর্ন চিরাসাওয়াদি আজ রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাতে উভয় পক্ষ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সামুদ্রিক যোগাযোগ, অনলাইন প্রতারণা প্রতিরোধ, বহুপাক্ষিক সহযোগিতা এবং জনগণ-থেকে-জনগণ পর্যায়ের বিনিময়সহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস থাইল্যান্ডের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পৃক্ততার কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বকালীন সময়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি আসিয়ানে (আসিয়ান) বাংলাদেশের সদস্যপদ অর্জনে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। ১১ সদস্য বিশিষ্ট এই আঞ্চলিক জোটটি বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনীতি ও বাণিজ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এ বিষয়ে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের সদস্যপদ প্রার্থনায় সমর্থন দেবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার আবেদন জানিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এটি দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে।’ থাই রাষ্ট্রদূত জানান, ব্যাংকক বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী। তাঁর মতে, এ চুক্তি বাংলাদেশে থাই বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহায়ক হবে। তিনি আরও বলেন, থাইল্যান্ডের রানং বন্দর ও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি নৌপথ চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। দুই দেশের শিপিং কর্তৃপক্ষের মধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শেষে মার্চে এই সেবা চালু হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আরও বেশি ভিসা ইস্যুর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা ও পর্যটনের উদ্দেশ্যে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশিদের যাতায়াত ক্রমেই বাড়ছে। সাক্ষাতে এসডিজি সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।
২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে সারা দেশের সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে এই ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় পাসের হার ৬৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা হয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম শান্ত। তাঁর রোল নম্বর ২৪১৩৬৭১। তিনি রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন এবং ৯১ দশমিক ২৫ নম্বর অর্জন করেন। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করেছিলেন মোট ১ লাখ ২২ হাজার ৬৩২ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৪৪০ জন, যা মোট আবেদনকারীর ৯৮ দশমিক ২১ শতাংশ। অনুপস্থিত ছিলেন ২ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী (১ দশমিক ৭৯ শতাংশ)। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন ২ জন। চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় মোট উত্তীর্ণ হয়েছেন ৮১ হাজার ৬৪২ জন পরীক্ষার্থী, যা মোট অংশগ্রহণকারীর ৬৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। উত্তীর্ণদের মধ্যে পুরুষ পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ১২৮ জন (৩৮ দশমিক ১৩ শতাংশ) এবং নারী পরীক্ষার্থী ৫০ হাজার ৫১৪ জন (৬১ দশমিক ৮৭ শতাংশ)। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ/ইউনিটে ভর্তি হতে আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইন আবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল প্রণীত এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা–২০২৬ অনুসরণ করে পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। ফলাফল দেখার নিয়ম ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ‘MBBS Result 2025–2026’ লিংকে ক্লিক করে নিজের ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর প্রদান করতে পারবেন। এরপর ‘Result’ বাটনে ক্লিক করলে ফলাফল দেখা যাবে। ফলাফল ডাউনলোড বা স্ক্রিনশট নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি মেধাতালিকা পিডিএফ আকারেও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশ্বখ্যাত গায়িকা ও উদ্যোক্তা লা টোয়া জ্যাকসন বিলাসবহুল ফ্যাশন জগতে নতুন ব্র্যান্ড ‘লা টয়া জ্যাকসন বিলাসবহুল ফ্যাশন অ্যান্ড লাইফস্টাইল’ চালু করেছেন। এমব্রেস ইউর ইউনিকনেস’ দর্শনকে সামনে রেখে গড়ে ওঠা এই ব্র্যান্ডে আধুনিক বিলাসিতা ও সৃজনশীলতার সমন্বয় তুলে ধরা হয়েছে। ব্র্যান্ডটির বৈশ্বিক পরিচালনা ও কৌশলগত নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহ–প্রতিষ্ঠাতা ড. কামরুল আহসান ও তান শ্রী সায়েদ ইউসুফ সায়েদ নাসির (জোজো)। তাদের নেতৃত্বে ব্র্যান্ডটি দ্রুত আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিতি পাচ্ছে। পপসম্রাট মাইকেল জ্যাকসনের বড় বোন লা টোয়া জ্যাকসন তার পারিবারিক শিল্প–ঐতিহ্য ও ব্যক্তিগত স্টাইলকে ফ্যাশনের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। ইউরোপীয় কারুশিল্প ও এশীয় নকশার প্রভাব নিয়ে তৈরি সংগ্রহগুলোতে রয়েছে পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, সানগ্লাস, সুগন্ধি ও বিভিন্ন আনুষঙ্গিক সামগ্রী। ড. কামরুল আহসানের তত্ত্বাবধানে ইউরোপ ও এশিয়ার শীর্ষ নির্মাতাদের সঙ্গে অংশীদারত্ব গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে প্রতিটি পণ্যে উচ্চমান ও আন্তর্জাতিক মান বজায় থাকে। পাশাপাশি টেকসই ও নৈতিক উৎপাদন, পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহার এবং স্থানীয় কারিগরদের সহায়তার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ফ্যাশন বিক্রির পাশাপাশি ব্র্যান্ডটির লক্ষ্য ব্যক্তিত্ব, আত্মবিশ্বাস ও স্বকীয়তাকে তুলে ধরা। ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার বাজারে সম্প্রসারণ, ফ্ল্যাগশিপ স্টোর চালু এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব ও সেলিব্রেটি সহযোগিতার পরিকল্পনা রয়েছে। লা টোয়া জ্যাকসন ও তার টিমের বিশ্বাস, আসল বিলাসিতা লুকিয়ে আছে ঐতিহ্য ও নিজস্বতায়।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডি বিচে বন্দুকধারীদের এলোপাতাড়ি গোলাগুলির ঘটনায় মোট ১০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন বন্দুকধারীও রয়েছেন। অপর বন্দুকধারীকে আহত অবস্থায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এছাড়া কমপক্ষে ১২ জন সাধারণ মানুষ এবং দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ এ তথ্য জানায়। তবে অভিযান চলমান থাকায় জনসাধারণকে সমুদ্র সৈকতের আশপাশের এলাকায় না যাওয়া এবং নির্দেশ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আইসবার্গস রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন অনেকেই। হঠাৎই আচমকা গুলির শব্দ শোনা যায়। আতঙ্কে মানুষ ছুটে পালাতে থাকে। গুলির শব্দ রিপোর্ট করায় হেলিকপ্টার ও অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সিডনি মরনিং হেরাল্ড জানিয়েছে, 'একাধিক গুলি চালানো হয়েছে', তবে এখনও আহতের সংখ্যা নিশ্চিত নয়। জানা যায় স্থানীয় সময় আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার পর বন্ডি সমুদ্র সৈকতে বন্দুকধারীরা হামলা চালায়। এ সময় ইহুদিদের ‘হানুক্কাহ’ উৎসব উপলক্ষে সৈকতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে শত শত মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তবে, হামলার সাথে ওই উৎসবের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা, তা এখনো পুলিশ নিশ্চিত করতে পারেনি। এর আগে, ১৯৯৬ সালে তাসমানিয়ায় একজন বন্দুকধারীর গুলিতে ৩৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পরে এটাই অস্ট্রেলিয়ায় সশস্ত্র হামলায় এতো হতাহতের ঘটনা ঘটলো। এ ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যানথনি আলব্যানিজ বলেছেন, পরিস্থিতি 'শকিং' ও ভয়াবহ। পুলিশ ও জরুরি সেবা কর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ করছেন। সেই সাথে হামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। স্থানীয়দের মতে, পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ। তবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের অভিযান এখনো চলছে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন।
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পৃথিবীর ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের একেবারে প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস ও জঘন্য হত্যাযজ্ঞ চালায়। তাদের স্থানীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সহযোগিতায় বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। পাকিস্তানি বাহিনীর নীলনকশা অনুযায়ী বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদরা এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার উদ্দেশ্যেই এই সুপরিকল্পিত বুদ্ধিজীবী নিধনের ছক কষা হয়েছিল। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পৃথক বাণীতে গভীর শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করেছেন। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের মাত্র দুই দিন পর, ১৬ ডিসেম্বর, জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বে পাকিস্তানি বাহিনী যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এর মধ্য দিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। দিবসটি উপলক্ষে আজ জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে একাত্তরে শহীদ হওয়া জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করছে। এ উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ সকাল ৭টায় প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এ ছাড়া সকাল থেকেই রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
৭ কোটি জনসংখ্যা যুক্তরাজ্যে ৯০ লাখ মানুষই রয়েছে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে। অর্থাৎ নিজের ব্রিটিশ পরিচয় হারাতে পারেন দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ নাগরিক। যুক্তরাজ্যের দুই মানবাধিকার ও নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রানিমেড ট্রাস্ট ও রিপ্রিভের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য। ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী, সরকার যদি মনে করে কোনো ব্যক্তি অন্য দেশের নাগরিক হওয়ার যোগ্য তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইলে তার নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারে। এমনকি সেই ব্যক্তি ওই দেশে কখনও না গেলেও পরতে পারেন এই সিদ্ধান্তের আওতায়। বিতর্কিত এই আইনের অপব্যবহার নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। গবেষণা প্রতিষ্ঠান দু'টির প্রতিবেদন বলছে, বৈষম্যের শিকার অশেতাঙ্গরা। শেতাঙ্গদের তুলনায় তারা রয়েছেন ১২ গুণ বেশি নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে। আদমশুমারির তথ্য, বার্ষিক জনসংখ্যা জরিপ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন। বলা হয়েছে, ১৬ লাখ কৃষ্ণাঙ্গ, ৩৩ লাখ এশিয়ান ব্রিটিশ নাগরিকের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হতে পারে। একই ঝুঁকিতে থাকা শ্বেতাঙ্গ নাগরিকের সংখ্যা ২৪ লাখ হলেও তা মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র ৫ ভাগ। নিজের ব্রিটিশ পরিচয় হারানোর ঝুঁকিতে থাকাদের মধ্যে বড় অংশই মুসলিম। যারা মূলত দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকান বংশোদ্ভূত। তথ্যমতে, সবচেয়ে বেশি প্রায় ১০ লাখ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রয়েছে পরিচয় হারানোর শঙ্কায়। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে পাকিস্তান আর তৃতীয় অবস্থান রোমানিয়া। সাত নম্বরে থাকা বাংলাদেশের বংশোদ্ভূত ২ লাখের বেশি ব্রিটিশ নাগরিক হারাতে পারেন নাগরিকত্ব। নাগরিকত্ব বাতিলের এই আইনকে উদ্বেগজনক আখ্যা দিচ্ছে রানিমেড ও রিপ্রিভ। মুসলিম ও অশেতাঙ্গ সম্প্রদায়ের জন্য এটি পদ্ধতিগত হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে বলেও মত তাদের।
এ এইচ এম বজলুর রহমান
কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসির সফর ঘিরে তৈরি হওয়া চরম বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনার জেরে অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক ও প্রোমোটার শতদ্রু দত্তকে বিমানবন্দর থেকে আটক করে পুলিশ। এই ঘটনায় ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে তাকে। আয়োজক শতদ্রু দত্তের জামিন আবেদন এরইমধ্যে নামঞ্জুর হয়েছে। কলকাতার পুলিশ ও প্রশাসন ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শক ও খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার বিষয়েও নজর রাখা হচ্ছে। এদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের মতে, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা রাজ্য সরকার, সাধারণ মানুষ এবং স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্বে থাকা মুখ্যমন্ত্রীকেও ব্যর্থ করেছে। তার মন্তব্য, ক্রীড়াপ্রেমী কলকাতাবাসীর কাছে এই দিনটি একটি ‘অন্ধকার দিন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। \ ঘটনার যথাযথ তদন্ত করতে রাজ্য সরকারকে একাধিক কড়া নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। তার নির্দেশের মধ্যে রয়েছে—অনুষ্ঠান আয়োজক ও স্পনসরদের অবিলম্বে গ্রেফতার, টিকিট কেটে প্রতারিত দর্শকদের টাকা ফেরত, স্টেডিয়াম ও অন্যান্য সরকারি সম্পত্তির ক্ষতির জন্য আয়োজকদের উপর জরিমানা আরোপ। পাশাপাশি গোটা ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত এবং দায়িত্বে গাফিলতি করা পুলিশ আধিকারিকদের সাসপেনশনের নির্দেশও দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সল্ট লেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে মেসিকে দেখতে না পেরে ব্যাপক ভাঙচুর করে দর্শকরা। অভিযোগ, মাঠে মেসির সঙ্গে প্রচুর ভিড় থাকায়, মেসিকে দেখতেই পাননি দর্শকরা। ক্ষুব্ধ দর্শকরা আসন থেকে ছোড়েন পানির বোতল। ফলে, নির্ধারিত সময়ের আগেই মাত্র ২০ মিনিটেই মাঠ ছাড়েন মেসি। মেসি সফরের এই কাণ্ড সামাজিক ও মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিস্তারিত তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠকের পর মিনস্কের পটাশের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে যুক্তরাষ্ট্র। রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় অন্তত ১২৩ কারাবন্দিকে মুক্তি দিলো বেলারুশ। এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এলেস বিয়ালিয়াটস্কি, বেলারুশের বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ মারিয়া কোলেসনিকোভা, ম্যাক্সিম জ্যাঙ্কসহ বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকার কর্মীদের। মুক্তি পেয়েছে ইউক্রেনের অন্তত ১১৪ বন্দি। মুক্তিপ্রাপ্তদের জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) লুকাশেঙ্কোকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ট্রাম্পের বিশেষ দূত জন কোয়ালে বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।
গাজা সিটিতে ড্রোন হামলা চালিয়ে হামাসের সামরিক শাখার অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার রায়েদ সাদকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) টেলিগ্রামে করা এক পোস্টে এ দাবি করে আইডিএফ। খবর আল-জাজিরা। তবে হামাসের পক্ষ থেকে এখনও এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা হয়নি। সাদের মৃত্যু নিশ্চিত হলে আইডিএফের হাতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের হামাস নেতা নিহতের ঘটনা হবে এটি। এদিকে, শনিবার গাজা সিটির নাবলুসি জংশনে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এই অভিযানে অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন। আর গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের হামলায় ২ মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আরও ৫ মার্কিন সেনা ও সিরিয়ান সেনাসদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দেশটির পামিরা শহরে এই ঘটনা ঘটে। পেন্টাগন জানায়, শনিবার পামিরা শহরে মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে জঙ্গিগোষ্ঠীর এক সদস্য হামলা চালায়। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ সময় সেনাসদস্যদের পাল্টা গুলিতে হামলাকারী নিহত হন। এদিকে এ ঘটনায় আইএসের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়ে পোস্ট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।