সর্বশেষ

সর্বশেষ সংবাদ
শান্তর হুংকারের জবাবটা মাঠেই দিতে চান মিরাজ

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আগামীকাল মঙ্গলবার কোয়াবের আয়োজনে মাঠে গড়াবে বিশেষ প্রীতি ম্যাচ। এই ম্যাচে মুখোমুখি হবে নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন অদম্য দল ও মেহেদী হাসান মিরাজের অপরাজেয় দল। ম্যাচের আগেই উত্তাপ ছড়িয়েছে দুই শিবিরে। শান্ত স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, মাঠে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না। তাঁর হুংকার কোনো ছাড়াছাড়ি হবে না, শুইয়ে ফেলব একদম। শান্তর এই বক্তব্যের জবাব দিতে দেরি করেননি মিরাজ। তিনি জানালেন, কথার নয় জবাবটা দিতে চান মাঠেই। মিরাজের ভাষায়, খেলার ভেতরে যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকে, তাহলে সেই খেলার কোনো মূল্য থাকে না। থ্রেট যদি আসে, তার উত্তর মাঠেই দিতে হবে। আমরা চেষ্টা করব ম্যাচটা জিতে এই কথার জবাব দিতে। মিরাজের দলের কোচ সোহেল ইসলামও একই সুরে কথা বলেন। তাঁর মতে, কথার লড়াইয়ে বিশ্বাস নেই তাদের। আমরা কথায় বিশ্বাসী না, মাঠে বিশ্বাসী। কে কাকে শোয়ায়—এটা আমরা মাঠেই প্রমাণ করব। বাইরের কথা কানে না নিয়ে আমরা নিজেদের প্রস্তুতিতেই মনোযোগ দিচ্ছি। এই প্রীতি ম্যাচে অদম্য দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করবেন বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান ইশতিয়াক সাদেক। দলটির মেন্টর হিসেবে থাকছেন জাতীয় দলের সাবেক অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অপরদিকে, অপরাজেয় দলের কোচ হিসেবে দায়িত্বে থাকছেন মিজানুর রহমান বাবুল। ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করবেন শেহজাদ মুনিম। আর মেন্টরের ভূমিকায় থাকবেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সব মিলিয়ে বিজয় দিবসের এই বিশেষ প্রীতি ম্যাচে মাঠের লড়াই ঘিরে রোমাঞ্চের কমতি থাকার কথা নয়। দুই দলের আত্মবিশ্বাসী বক্তব্য ম্যাচের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

৫৬ মিনিট আগে
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়ে শাহবাগ ব্লকেড

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা এবং দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় ছাত্রশক্তি। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে আশপাশের সড়কগুলোতেও তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা বলেন, জুলাই যোদ্ধা ওসমান হাদির ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানোর ঘটনার পরও মূল হোতাদের গ্রেপ্তার করতে না পারা সরকারের চরম ব্যর্থতার প্রমাণ। এই ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করেন তারা। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অনতিবিলম্বে ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। তাদের দাবি, জনবিপ্লবকে নস্যাৎ করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়েছে। জাতীয় ছাত্রশক্তির নেতা আবু বাকের মজুমদার বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করছেন এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি তাদের উদ্দেশ্য নয়। তিনি বলেন, এই আন্দোলন জনমত ও ন্যায়ের পক্ষে। দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে তারা আশা করেন। প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে করে আসা দুই দুর্বৃত্ত চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন পল্টন থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াসিন মিয়া। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন আটজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক, সীমান্তপথে মানবপাচারে জড়িত দুই ব্যক্তি এবং অভিযুক্ত ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও আরও একজন নারী রয়েছেন।

১ ঘন্টা আগে
হাদিকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরের পথে

সিঙ্গাপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে আজ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানো হয় এবং দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে বিমানটি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। ওসমান হাদির সঙ্গে তার দুই ভাইও সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন।   এর আগে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা ২২ মিনিটে তাকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পরে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা ও চিকিৎসকদের প্রস্তুতি শেষে তাকে বিমানে তোলা হয়। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে এ বিষয়ে একটি জরুরি কল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জাফর এবং ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদি অংশ নেন। কল কনফারেন্সে চিকিৎসকদের পরামর্শ ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

১ ঘন্টা আগে
কৃষ্ণসাগরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন প্রস্তাব তুরস্কের

কৃষ্ণসাগরে জাহাজে হামলার ঘটনা বাড়তে থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তুরস্ক। তুর্কি মালিকানাধীন জাহাজও এসব হামলার শিকার হওয়ায় সমুদ্রপথের নিরাপত্তা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ছে বলে মনে করছে আঙ্কারা। এই পরিস্থিতিতে তুরস্ক রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি নতুন কিন্তু সীমিত চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে জ্বালানি অবকাঠামো ও জাহাজে হামলা বন্ধ করা যায়।   গত শুক্রবার ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে রুশ বাহিনীর হামলায় একটি তুর্কি মালিকানাধীন কার্গো জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জাহাজটির অপারেটরের তথ্য অনুযায়ী, চর্নোমোর্স্ক বন্দরে সন্দেহভাজন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। এ ছাড়া গত নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত কৃষ্ণসাগরে অন্তত তিনটি জাহাজ হামলার শিকার হয়েছে। এসব হামলার কিছু ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ব্যবহৃত রাশিয়ার তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’ তেলবাহী ট্যাংকারগুলোকে লক্ষ্য করেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, তুরস্ক শুরু থেকেই যুদ্ধ বিস্তারের বিষয়ে সতর্ক করে আসছিল। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে চাপ বেড়েছে এবং একাধিক দিক থেকে হামলা চালানো হচ্ছে। তিনি জানান, উভয় পক্ষই জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা করছে, যার ফলে কৃষ্ণসাগরের বাণিজ্যিক নৌ চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তুর্কি কোম্পানির মালিকানাধীন হলেও বিদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এবং তুর্কি নাবিকরা গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো তুর্কি নাগরিক হতাহত না হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেন তিনি। ফিদান আরও বলেন, সম্প্রতি তুর্কমেনিস্তানে এক বৈঠকের ফাঁকে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সরাসরি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। তার মতে, পূর্ণ যুদ্ধবিরতি বা শান্তি চুক্তি সম্ভব না হলেও অন্তত জ্বালানি অবকাঠামো ও কৃষ্ণসাগরের সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি সীমিত চুক্তি হওয়া জরুরি। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, আগের ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ কার্যকর থাকাকালে কৃষ্ণসাগরে বাণিজ্য প্রায় নির্বিঘ্ন ছিল এবং জাহাজে হামলার ঘটনা ঘটেনি। আবারও এ ধরনের হামলা স্থগিতের ব্যবস্থা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে জাতিসংঘের সহায়তায় তুরস্ক মধ্যস্থতা করে ওই শস্যচুক্তি সম্পাদন করলেও পরে রাশিয়া তা নবায়নে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর থেকেই ইউক্রেনের কৃষি ও বন্দর অবকাঠামোতে হামলা বাড়তে থাকে।   এদিকে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তি খুব দূরে নয়। তিনি কৃষ্ণসাগরকে সংঘাতের ক্ষেত্র না বানানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিরাপদ নৌ চলাচল রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষেরই প্রয়োজন।

৩ ঘন্টা আগে
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয়
হাদিকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরের পথে

সিঙ্গাপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে আজ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানো হয় এবং দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে বিমানটি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। ওসমান হাদির সঙ্গে তার দুই ভাইও সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন।   এর আগে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা ২২ মিনিটে তাকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পরে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা ও চিকিৎসকদের প্রস্তুতি শেষে তাকে বিমানে তোলা হয়। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে এ বিষয়ে একটি জরুরি কল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জাফর এবং ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদি অংশ নেন। কল কনফারেন্সে চিকিৎসকদের পরামর্শ ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়ে শাহবাগ ব্লকেড

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা এবং দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় ছাত্রশক্তি। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে আশপাশের সড়কগুলোতেও তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা বলেন, জুলাই যোদ্ধা ওসমান হাদির ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানোর ঘটনার পরও মূল হোতাদের গ্রেপ্তার করতে না পারা সরকারের চরম ব্যর্থতার প্রমাণ। এই ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করেন তারা। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অনতিবিলম্বে ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। তাদের দাবি, জনবিপ্লবকে নস্যাৎ করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়েছে। জাতীয় ছাত্রশক্তির নেতা আবু বাকের মজুমদার বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করছেন এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি তাদের উদ্দেশ্য নয়। তিনি বলেন, এই আন্দোলন জনমত ও ন্যায়ের পক্ষে। দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে তারা আশা করেন। প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে করে আসা দুই দুর্বৃত্ত চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন পল্টন থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াসিন মিয়া। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন আটজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক, সীমান্তপথে মানবপাচারে জড়িত দুই ব্যক্তি এবং অভিযুক্ত ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও আরও একজন নারী রয়েছেন।

ছবি: সংগৃহীত
হাদিকে গুলি : ভারতে গিয়ে সেলফি তুললেন মাসুদ

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলির ঘটনায় জড়িত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের একটি সেলফি ছবি ও ব্যবহৃত ফোন নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে।   রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ফয়সাল করিম মাসুদ একটি সেলফি তুলে তা কয়েকটি নম্বরে পাঠান। ওই ছবিটি ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটিতে তোলা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া পোস্টে উল্লেখ করা হয়, ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত শুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী মোটরবাইকচালক আলমগীর হোসেন গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। এরপর ফয়সাল করিম মাসুদের জন্য একটি ভারতীয় মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা হয়, যা তিনি যোগাযোগের কাজে ব্যবহার করছিলেন। ওই নম্বর থেকেই সেলফিটি পাঠানো হয়। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, যেসব নম্বরে ছবিটি পাঠানো হয়েছিল, তার একটি ইন্টারসেপ্ট করার মাধ্যমে ছবিটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে এসে দুর্বৃত্তরা চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় রোববার রাত পর্যন্ত মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক, মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত চক্রের দুই সহযোগী এবং সন্দেহভাজন শুটার ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী, শ্যালক ও এক নারী সহযোগী।   ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান জোরদার করেছে।


ছবি: সংগৃহীত
ভোটের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে বাড়ছে আতঙ্ক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর গুলির ঘটনায় তা অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। এই হামলার পর সম্ভাব্য প্রার্থীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহের বদলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রাজনৈতিক নেতারা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরাও। সরকার নিরাপত্তা জোরদারের আশ্বাস দিলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেক প্রার্থী।   নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, সময়মতো কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ার ফলেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে। নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখন বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত দৃশ্যমান ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা। ওসমান হাদি ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী। তফসিল ঘোষণার পরদিন রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় প্রকাশ্যে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা অবস্থায় তাকে মাথায় গুলি করে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং মেডিকেল বোর্ড তার শারীরিক অবস্থাকে অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে চোরাগোপ্তা হামলা, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ও নাশকতার আশঙ্কার মধ্যেই এই ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে থমথমে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। তফসিল ঘোষণার পর যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গিয়েছিল, তা অনেকটাই কমে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ের সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে মাঠপর্যায় থেকে সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়গুলো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক বৈঠকে এসব ঝুঁকি ও করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। কোনো প্রার্থী নিজেকে অনিরাপদ মনে করলে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হবে। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকে চোরাগোপ্তা হামলা, জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও নির্বাচনী নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভবিষ্যতে নিরাপত্তা পরিকল্পনাকে আরও কার্যকর করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করা হবে এবং নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। এদিকে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো আবারও এক কাতারে দাঁড়িয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এক বৈঠকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা আসে। ওই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এর আগে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মতে, ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনা ভিন্ন মাত্রার। এটি সরাসরি হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো হয়েছে বলে তারা মনে করছে। এই ঘটনার পর কোনো কোনো দল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিও তুলেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে বাসে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল হামলার মাধ্যমে একটি আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। ওসমান হাদির ওপর হামলার পর নির্বাচনের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নির্বাচন যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কঠোর অবস্থান নেওয়া প্রয়োজন বলে তারা মনে করছে। অনেক রাজনীতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক এই হামলাকে নির্বাচন বানচালের একটি সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই একটি পক্ষ নির্বাচন ঠেকানোর হুমকি দিয়ে আসছিল। অন্তর্বর্তী সরকারও ঘটনাটিকে নির্বাচনবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে বলেছেন, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে কোনো ধরনের সহিংসতা বরদাশত করা হবে না। জনগণের নিরাপত্তা ও প্রার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব এবং দোষীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। সাবেক এক শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, যেসব এলাকায় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও শত্রুতা বেশি এবং যেখানে শক্ত প্রার্থী রয়েছেন, সেখানে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা প্রতিরোধকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর তিনি গুরুত্ব দেন। এদিকে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে অপরাধীদের ধরতে নতুন করে বিশেষ অভিযান শুরুর ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, সব রাজনৈতিক দলের জন্য নির্ধারিত নিরাপত্তা প্রটোকল অনুযায়ী পুলিশ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানিয়েছে, অতীতের শাসনামলে যাদের কাছে অবৈধ অস্ত্র ছিল বা যারা সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে অবৈধ অস্ত্রের সরবরাহপথ ও অর্থের উৎস চিহ্নিত করতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি গত বছর পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এখনো উল্লেখযোগ্যসংখ্যক লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র প্রবেশের আশঙ্কা এবং লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহৃত হচ্ছে কি না এই দুই বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।   উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পুলিশের নিরাপত্তা পরিকল্পনা নতুন করে সাজানো হচ্ছে। মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের যেকোনো মূল্যে প্রার্থী ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনকালীন সময় প্রার্থীদের সঙ্গে সশস্ত্র প্রহরী থাকবে এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্ভাব্য ঝুঁকি আগেভাগেই চিহ্নিত করে সতর্ক করবে। কোথায় যাওয়া নিরাপদ বা ঝুঁকিপূর্ণ সেসব বিষয়েও প্রার্থীদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।

ছবি: সংগৃহীত
তিন বিষয়ে মহাব্যস্ত বিএনপি

দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এখন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। একই সঙ্গে তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও চিকিৎসা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্বিঘ্ন দেশে প্রত্যাবর্তন এবং আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করা এই তিনটি বিষয়ই বর্তমানে বিএনপির রাজনীতি ও কর্মকৌশলের মূল কেন্দ্রবিন্দু। এসব ইস্যু ঘিরে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ব্যস্ত ও সক্রিয় সময় পার করছেন।   এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি সাংগঠনিক শক্তি সুসংহত করা, জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো এবং সময়োপযোগী রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো ছয় দিনের টানা কর্মশালা সম্পন্ন করেছে। সেখানে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখার মধ্য থেকে জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত বিষয়গুলো সহজ ভাষায় মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং ভবিষ্যতে সরকার গঠন করলে সেগুলো কীভাবে কার্যকর করা হবে—সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। একদিকে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ, অন্যদিকে দীর্ঘ ১৮ বছর পর তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণায় দলের ভেতরে নতুন উদ্দীপনা ও আশাবাদ তৈরি হয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দীর্ঘ নির্বাসন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন বিএনপির জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা। তিনি নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন, ওই দিন তারেক রহমানকে এমনভাবে বরণ করে নিতে, যা রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তার বক্তব্যে উঠে আসে, যখন দলের চেয়ারপারসন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন, ঠিক সেই অনিশ্চয়তার মধ্যেই তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবর বিএনপির জন্য আশার আলো হিসেবে কাজ করছে। নেতাকর্মীদের বিশ্বাস, তারেক রহমানের সরাসরি উপস্থিতি দলীয় সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সহায়ক হবে এবং নির্বাচনী প্রস্তুতিতে নতুন গতি সঞ্চার করবে। বিএনপির আরেকটি বড় উদ্বেগের জায়গা হলো দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা। ৮০ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে একাধিক জটিল রোগে ভুগছেন এবং বর্তমানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড নিয়মিত তার চিকিৎসা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে বিএনপির ভেতরে ও বাইরে এক ধরনের রাজনৈতিক সংহতি ও আবেগী ঐক্য লক্ষ করা যাচ্ছে। তার আরোগ্য কামনায় দেশ-বিদেশে দোয়া মাহফিল, বিশেষ ইবাদত ও বিভিন্ন মানবিক কর্মসূচি পালন করছেন নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা। এটি দলীয় ঐক্যকে আরও দৃঢ় করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চূড়ান্ত লড়াই’ হিসেবে দেখছে। দলটি ইতোমধ্যে দেশের অধিকাংশ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা, জনসমর্থন এবং আন্তর্জাতিক মহলের ইতিবাচক মনোভাবকে সামনে রেখে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, এবারের নির্বাচন বিজয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। সাধারণ ভোটার, বিশেষ করে নতুন ভোটার ও তরুণ সমাজকে আকৃষ্ট করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি যুগোপযোগী ও জনকল্যাণমুখী নির্বাচনী ইশতেহার চূড়ান্ত করার কাজ চলছে, যেখানে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, সুশাসন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সবার জন্য সমান সুযোগের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। তবে নির্বাচন সামনে রেখে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে কিছুটা টানাপোড়েনও তৈরি হয়েছে। শরিকদের ক্ষোভ ও মতপার্থক্যের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিএনপি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে। দলীয় সূত্রগুলোর প্রত্যাশা, এই আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি সন্তোষজনক সমঝোতা হবে এবং বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক জোট গড়ে উঠবে।   বিএনপির নেতারা মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের ঐতিহ্য, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে সৃষ্ট নতুন সাংগঠনিক শক্তি এবং জনগণের প্রত্যাশাকে একত্রিত করতে পারলে বিএনপি আগামী দিনে একটি কার্যকর ও শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে। বর্তমান এই ত্রিমুখী ব্যস্ততা প্রমাণ করে, বিএনপি এখন আর কেবল একটি প্রতিবাদী দল নয়; বরং একটি সুসংগঠিত, ক্ষমতাপ্রত্যাশী এবং রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রস্তুত রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ছবি: সংগৃহীত
ওসমান হাদির সিঙ্গাপুর যাত্রা নিয়ে জানা গেল নতুন তথ্য

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে একটি মেডিকেল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।   রোববার (১৪ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে এ বিষয়ে একটি জরুরি কল–কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জাফর এবং ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদি অংশ নেন। এদিন এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়। গত দুই দিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হয়, তাকে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউটে নেওয়া হবে। প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং অপরিবর্তিত রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার দুপুরে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় মেডিকেল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল এবং ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। পাশাপাশি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাক্সিডেন্ট অ্যান্ড ইমার্জেন্সি বিভাগে তার চিকিৎসার সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।   চিকিৎসার উদ্দেশ্যে হাদির সঙ্গে সিঙ্গাপুরে যাবেন তার ভাই ওমর হাদি এবং আরও একজন সহযাত্রী। ওসমান হাদির চিকিৎসা সংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। একই সঙ্গে তার চিকিৎসা প্রক্রিয়া সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণে রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

ছবি: সংগৃহীত
ঢাকাসহ সারা দেশের পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে আগামী পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু করে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার জন্য এই পূর্বাভাস কার্যকর থাকবে।   পূর্বাভাস অনুযায়ী, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। একই সঙ্গে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার একটি বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রোববার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। ভোরের দিকে দেশের কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। সোমবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টাতেও একই ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকলেও আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে এবং ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা দেখা যেতে পারে। এ সময় রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমার সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আংশিক মেঘলা আকাশসহ শুষ্ক আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। ভোরের দিকে হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময় রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। বুধবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া আংশিক মেঘলা ও শুষ্ক থাকতে পারে। ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায়ও সারা দেশে আংশিক মেঘলা আকাশসহ শুষ্ক আবহাওয়া বজায় থাকতে পারে। ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময় রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।   বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

নিউজ ক্লিপস

খেলাধুলা

  • অন্যান্য খেলা
  • হকি
  • ফুটবল
  • ক্রিকেট

জনপ্রিয় সংবাদ

মতামত

আন্তর্জাতিক

আরও দেখুন
ছবি: সংগৃহীত
কৃষ্ণসাগরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন প্রস্তাব তুরস্কের
মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫ 0

কৃষ্ণসাগরে জাহাজে হামলার ঘটনা বাড়তে থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তুরস্ক। তুর্কি মালিকানাধীন জাহাজও এসব হামলার শিকার হওয়ায় সমুদ্রপথের নিরাপত্তা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ছে বলে মনে করছে আঙ্কারা। এই পরিস্থিতিতে তুরস্ক রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি নতুন কিন্তু সীমিত চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে জ্বালানি অবকাঠামো ও জাহাজে হামলা বন্ধ করা যায়।   গত শুক্রবার ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে রুশ বাহিনীর হামলায় একটি তুর্কি মালিকানাধীন কার্গো জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জাহাজটির অপারেটরের তথ্য অনুযায়ী, চর্নোমোর্স্ক বন্দরে সন্দেহভাজন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। এ ছাড়া গত নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত কৃষ্ণসাগরে অন্তত তিনটি জাহাজ হামলার শিকার হয়েছে। এসব হামলার কিছু ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ব্যবহৃত রাশিয়ার তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’ তেলবাহী ট্যাংকারগুলোকে লক্ষ্য করেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, তুরস্ক শুরু থেকেই যুদ্ধ বিস্তারের বিষয়ে সতর্ক করে আসছিল। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে চাপ বেড়েছে এবং একাধিক দিক থেকে হামলা চালানো হচ্ছে। তিনি জানান, উভয় পক্ষই জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা করছে, যার ফলে কৃষ্ণসাগরের বাণিজ্যিক নৌ চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তুর্কি কোম্পানির মালিকানাধীন হলেও বিদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এবং তুর্কি নাবিকরা গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো তুর্কি নাগরিক হতাহত না হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেন তিনি। ফিদান আরও বলেন, সম্প্রতি তুর্কমেনিস্তানে এক বৈঠকের ফাঁকে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সরাসরি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। তার মতে, পূর্ণ যুদ্ধবিরতি বা শান্তি চুক্তি সম্ভব না হলেও অন্তত জ্বালানি অবকাঠামো ও কৃষ্ণসাগরের সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি সীমিত চুক্তি হওয়া জরুরি। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, আগের ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ কার্যকর থাকাকালে কৃষ্ণসাগরে বাণিজ্য প্রায় নির্বিঘ্ন ছিল এবং জাহাজে হামলার ঘটনা ঘটেনি। আবারও এ ধরনের হামলা স্থগিতের ব্যবস্থা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে জাতিসংঘের সহায়তায় তুরস্ক মধ্যস্থতা করে ওই শস্যচুক্তি সম্পাদন করলেও পরে রাশিয়া তা নবায়নে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর থেকেই ইউক্রেনের কৃষি ও বন্দর অবকাঠামোতে হামলা বাড়তে থাকে।   এদিকে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তি খুব দূরে নয়। তিনি কৃষ্ণসাগরকে সংঘাতের ক্ষেত্র না বানানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিরাপদ নৌ চলাচল রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষেরই প্রয়োজন।

ছবি: সংগৃহীত
দাবানলে জ্বলছে নাগাল্যান্ডের মনোরম জুকো উপত্যকা
মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫ 0

ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নাগাল্যান্ডের মনোরম জুকো উপত্যকায় ভয়াবহ দাবানল শুরু হয়েছে। আগুনে উপত্যকার বিস্তীর্ণ এলাকা জ্বলছে, যা ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।   স্থানীয় প্রশাসনের তথ্যমতে, গত শুক্রবার চারজন স্থানীয় ট্র্যাকার জুকো উপত্যকায় ট্রেকিংয়ে যান। তারা উপত্যকার একটি স্থানে তাঁবু স্থাপন করেন এবং তাঁবুর সামনে ক্যাম্পফায়ার জ্বালিয়ে পানির খোঁজে বের হন। পরে ফিরে এসে তারা দেখতে পান, সেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছে এবং মুহূর্তের মধ্যেই তারা আগুনের মাঝখানে আটকা পড়েন। শনিবার তাদের উদ্ধার করা হয়। এর আগেই প্রায় ১ দশমিক ৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। উদ্ধার শেষে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাঁবুর সামনে আগুন জ্বালানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বর্তমানে দাবানল ঠিক কতটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে শুষ্ক আবহাওয়া ও জোরালো বাতাসের কারণে প্রতি মুহূর্তে আগুনের বিস্তার বাড়ছে বলে জানানো হয়েছে। জুকো উপত্যকার নিকটবর্তী কোহিমা জেলার দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও দুর্গম ভূপ্রকৃতির কারণে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। খাড়া ঢাল ও সড়কপথ না থাকায় দমকল ও উদ্ধারকারী যান সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে সড়কপথের সীমাবদ্ধতার কারণে আকাশপথে আগুন নেভানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে একটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করে দাবানল আক্রান্ত এলাকায় ওপর থেকে পানি ছিটানো হবে।   এদিকে নিরাপত্তার স্বার্থে জুকো উপত্যকার সংশ্লিষ্ট বনাঞ্চলে স্থানীয় বাসিন্দা, ট্র্যাকার ও পর্যটকদের প্রবেশ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।

ছবি: সংগৃহীত
কলকাতায় মেসির সফর ঘিরে বিশৃঙ্খলা, ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে আয়োজক শতদ্রু দত্ত
আক্তারুজ্জামান ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ 0

কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসির সফর ঘিরে তৈরি হওয়া চরম বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনার জেরে অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক ও প্রোমোটার শতদ্রু দত্তকে বিমানবন্দর থেকে আটক করে পুলিশ। এই ঘটনায় ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে তাকে।    আয়োজক শতদ্রু দত্তের জামিন আবেদন এরইমধ্যে নামঞ্জুর হয়েছে। কলকাতার পুলিশ ও প্রশাসন ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শক ও খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার বিষয়েও নজর রাখা হচ্ছে।   এদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের মতে, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা রাজ্য সরকার, সাধারণ মানুষ এবং স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্বে থাকা মুখ্যমন্ত্রীকেও ব্যর্থ করেছে। তার মন্তব্য, ক্রীড়াপ্রেমী কলকাতাবাসীর কাছে এই দিনটি একটি ‘অন্ধকার দিন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। \ ঘটনার যথাযথ তদন্ত করতে রাজ্য সরকারকে একাধিক কড়া নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। তার নির্দেশের মধ্যে রয়েছে—অনুষ্ঠান আয়োজক ও স্পনসরদের অবিলম্বে গ্রেফতার, টিকিট কেটে প্রতারিত দর্শকদের টাকা ফেরত, স্টেডিয়াম ও অন্যান্য সরকারি সম্পত্তির ক্ষতির জন্য আয়োজকদের উপর জরিমানা আরোপ। পাশাপাশি গোটা ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত এবং দায়িত্বে গাফিলতি করা পুলিশ আধিকারিকদের সাসপেনশনের নির্দেশও দেয়া হয়েছে।   উল্লেখ্য, শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সল্ট লেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে মেসিকে দেখতে না পেরে ব্যাপক ভাঙচুর করে দর্শকরা। অভিযোগ, মাঠে মেসির সঙ্গে প্রচুর ভিড় থাকায়, মেসিকে দেখতেই পাননি দর্শকরা। ক্ষুব্ধ দর্শকরা আসন থেকে ছোড়েন পানির বোতল। ফলে, নির্ধারিত সময়ের আগেই মাত্র ২০ মিনিটেই মাঠ ছাড়েন মেসি।   মেসি সফরের এই কাণ্ড সামাজিক ও মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিস্তারিত তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় ১২৩ কারাবন্দিকে মুক্তি দিলো বেলারুশ
আক্তারুজ্জামান ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ 0

রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠকের পর মিনস্কের পটাশের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে যুক্তরাষ্ট্র। রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় অন্তত ১২৩ কারাবন্দিকে মুক্তি দিলো বেলারুশ। এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়।    মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এলেস বিয়ালিয়াটস্কি, বেলারুশের বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ মারিয়া কোলেসনিকোভা, ম্যাক্সিম জ্যাঙ্কসহ বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকার কর্মীদের।    মুক্তি পেয়েছে ইউক্রেনের অন্তত ১১৪ বন্দি। মুক্তিপ্রাপ্তদের জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রশাসন।    বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) লুকাশেঙ্কোকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।   ট্রাম্পের বিশেষ দূত জন কোয়ালে বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।

আমাদের অনুসরণ করুন

ট্রেন্ডিং

হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

অক্টোবর ২২, ২০২৫
বিনোদন
অন্যান্য
সর্বশেষ
জাতীয়

অর্থনীতি
সারাদেশ
টেলিকম ও প্রযুক্তি
প্রবাসী