দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে আবারও ইতিবাচক গতি ফিরেছে। সর্বশেষ হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে হিসাব করলে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার, যা বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে ছিল ২৭ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ নভেম্বর আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তিব্যবস্থা এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধের পর দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছিল ৩১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারে। তখন বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের মে-জুন মেয়াদের আমদানি ব্যয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জুলাই মাসে আকুকে ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে, যা সে সময় পর্যন্ত সর্বোচ্চ অঙ্কের বিল ছিল। পরবর্তীতে ২০২৩ সালজুড়ে দ্বিমাসিক আকুর বিল কমে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। তবে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে আবারও বিলের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। চলতি বছরের মে-জুন মেয়াদে আকুর বিল প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন হাদির খোঁজখবর নেন। পরে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোনে হাদির সর্বশেষ চিকিৎসা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। ফোনালাপে তিনি জানান, হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। এদিকে প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীকে শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে শরিফ ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতিতে প্রতীক শুধু একটি চিহ্ন নয়, বরং দলীয় পরিচয়, আবেগ ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন। ধানের শীষ, নৌকা, লাঙ্গল কিংবা দাঁড়িপাল্লা—এই প্রতীকগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর স্থায়ী পরিচয়ে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনী ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এসব প্রতীকের অনেকগুলোই শুরুতে নির্দিষ্ট দলের জন্য বরাদ্দ ছিল না। নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে প্রতীক বরাদ্দের প্রক্রিয়ায় নানা রাজনৈতিক সমঝোতা, বিভাজন ও পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে এগুলো দলীয় প্রতীকে রূপ নেয়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ‘নৌকা’ প্রতীককে নিজেদের দলীয় পরিচয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। নদীমাতৃক দেশের বাস্তবতা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন আবেগের সঙ্গে প্রতীকটি মিলে যাওয়ায় এটি দ্রুত সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা পায়। অন্যদিকে বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর ‘ধানের শীষ’ প্রতীক গ্রহণ করে। কৃষিনির্ভর সমাজ ও গ্রামীণ অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এই প্রতীক বিএনপির রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে। জাতীয় পার্টির প্রতীক ‘লাঙ্গল’ মূলত কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধিত্বের বার্তা বহন করে। সামরিক শাসন–পরবর্তী রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের সময় প্রতীকটি দলীয় পরিচয়ের অংশ হয়ে যায়। ইসলামী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায়বিচার ও ভারসাম্যের প্রতীক হিসেবে প্রচারিত হয়ে আসছে। ধর্মীয় মূল্যবোধের সঙ্গে প্রতীকটির অর্থগত সামঞ্জস্য দলটির রাজনৈতিক প্রচারণাকে শক্তিশালী করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ভোটারদের বড় একটি অংশ প্রার্থীর নামের চেয়ে প্রতীক দেখে ভোট দেন। ফলে পরিচিত ও দীর্ঘদিন ব্যবহৃত প্রতীকগুলো নির্বাচনে বাড়তি সুবিধা এনে দেয়। সে কারণেই নির্বাচনের আগে দলগুলো নিজ নিজ প্রতীক ঘিরে গান, স্লোগান ও প্রচার কার্যক্রম জোরদার করে। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে প্রতীককেন্দ্রিক রাজনীতি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ফলে ধানের শীষ, নৌকা, লাঙ্গল ও দাঁড়িপাল্লার মতো প্রতীকগুলো কেবল নির্বাচনী চিহ্ন নয়—বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবেই রয়ে গেছে।
আগামী বছরের ফিফা বিশ্বকাপ জয়ের পুরস্কার হিসেবে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অঙ্কের অর্থ পাবে চ্যাম্পিয়ন দল। যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় যৌথভাবে আয়োজিত ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের শিরোপাজয়ী দল পাবে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা—এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। বুধবার কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত ফিফা কাউন্সিল সভায় জানানো হয়, এবারের বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ৪৮টি দলের মধ্যে মোট প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা (৭২৭ মিলিয়ন ডলার) পুরস্কারমূল্য হিসেবে বণ্টন করা হবে। যা বিশ্বকাপ ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ প্রাইজমানি। ফিফা জানায়, এই তহবিলের মধ্যে প্রায় ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা (৬৫৫ মিলিয়ন ডলার) দলগুলোর পারফরম্যান্স অনুযায়ী সরাসরি বিতরণ করা হবে। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেওয়া দলগুলো পাবে আনুমানিক ৯৯ কোটি টাকা। রানার্সআপ দল পাবে প্রায় ৩৬০ কোটি টাকা, আর চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য বরাদ্দ থাকবে সর্বোচ্চ ৫৫০ কোটি টাকা। এর আগে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ জিতে আর্জেন্টিনা পেয়েছিল প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা (৪২ মিলিয়ন ডলার)। আর ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপ জয়ের পর ফ্রান্সের প্রাপ্তি ছিল আনুমানিক ৪২০ কোটি টাকা। বিশ্বকাপের টিকিটমূল্য নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়লেও ফিফা জানিয়েছে, সীমিত সংখ্যক টিকিটের দাম কমিয়ে প্রায় ৬ হাজার ৬০০ টাকা (৬০ ডলার) নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পুরস্কারমূল্য বাড়িয়ে প্রতিযোগিতাটির আর্থিক গুরুত্ব আরও জোরালো করা হয়েছে। আগামী ১১ জুন ২০২৬ থেকে শুরু হবে বিশ্বকাপের মূল আসর। উদ্বোধনী ম্যাচে মেক্সিকো সিটির স্টেডিয়ামে স্বাগতিক মেক্সিকোর মুখোমুখি হবে দক্ষিণ কোরিয়া।
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন হাদির খোঁজখবর নেন। পরে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোনে হাদির সর্বশেষ চিকিৎসা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। ফোনালাপে তিনি জানান, হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। এদিকে প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীকে শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে শরিফ ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা সন্ত্রাসী তাদের দেখামাত্রই গ্রেপ্তার করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। নারায়ণগঞ্জে বিকেএমইএ কার্যালয়ে আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) এক অনুষ্ঠানে শরিফ ওসমান হাদির সমর্থকদের প্রশ্নের জবাবে এ নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। হাদির একজন সমর্থক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশকে তাদের বিষয়ে তথ্য দিলেও পুলিশ তাদের ধরে না। পুলিশ বলে তাদের নামে মামলা নেই।’ তখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা আছে কি না, তা বিবেচ্য নয়, তাদের দেখামাত্রই গ্রেপ্তার করা হবে।’ এ সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ধরা না হয়, তাহলে আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন। তার অবস্থা আপাতত স্ট্যাটিক (অপরিবর্তিত) রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্যসচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, হাদির চিকিৎসা আপাতত সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালেই চলবে এবং বর্তমানে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্ট অনুসরণ করা হচ্ছে। নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের ইনভেস্টিগেশন করা হলেও সামগ্রিকভাবে শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। ডা. আহাদ জানান, বর্তমানে শরিফ ওসমান হাদির হার্ট, ফুসফুস ও কিডনি ভেন্টিলেশন সাপোর্টের মাধ্যমে কার্যক্রম চালাচ্ছে। ইউরিন আউটপুটও আগের মতোই সাপোর্টের মাধ্যমে বজায় রাখা হচ্ছে। বুধবার তার নতুন করে সিটি স্ক্যান করা হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে—ব্রেনে যে ইস্কেমিয়া বা রক্ত সঞ্চালনজনিত সমস্যা ছিল, তা কিছুটা বেড়েছে। তিনি আরও জানান, ব্রেনে থাকা গুলির একটি ছোট অংশ অপসারণে নতুন করে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হবে কি না, সে বিষয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে আলোচনা চলছে। প্রয়োজনে তাকে যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে। ডা. আহাদ বলেন, গুলির অংশটি যে স্থানে অবস্থান করছে, সেখানে অস্ত্রোপচার করলে নতুন করে জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না—এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। পাশাপাশি এই মুহূর্তে তার শরীর দীর্ঘ ভ্রমণের ধকল নিতে পারবে কি না, সেটিও চিকিৎসকেরা মূল্যায়ন করছেন। এ ক্ষেত্রে পরিবারের মতামতও গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা অবস্থায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
২০২৫ সালে বিশ্বব্যাপী কয়লার ব্যবহার রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ)। বুধবার প্রকাশিত আইইএর বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর কয়লার চাহিদা ০.৫ শতাংশ বেড়ে প্রায় ৮.৮৫ বিলিয়ন টনে পৌঁছাবে। শিল্প খাত চাঙ্গা করতে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগত সহায়তাও এ বৃদ্ধির একটি কারণ। আইইএ জানায়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও শিল্পায়নের ফলে চীন ও ভারত বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার বাড়াচ্ছে। তবে চীনে চাহিদা মোটামুটি স্থিতিশীল থাকলেও ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা কমেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, কয়লা মানবসৃষ্ট কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের প্রধান উৎস হলেও বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বাড়ায় দশকের শেষ দিকে এর চাহিদা ধীরে ধীরে কমতে পারে। আইইএ আরও জানায়, ভারতে ভালো বর্ষার কারণে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে, ফলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবহার কমেছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বৃদ্ধি ও সরকারি নীতিগত সহায়তার কারণে কয়লার চাহিদা আবারও বাড়ছে।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে আবারও ইতিবাচক গতি ফিরেছে। সর্বশেষ হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে হিসাব করলে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার, যা বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে ছিল ২৭ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ নভেম্বর আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তিব্যবস্থা এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধের পর দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছিল ৩১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারে। তখন বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের মে-জুন মেয়াদের আমদানি ব্যয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জুলাই মাসে আকুকে ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে, যা সে সময় পর্যন্ত সর্বোচ্চ অঙ্কের বিল ছিল। পরবর্তীতে ২০২৩ সালজুড়ে দ্বিমাসিক আকুর বিল কমে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। তবে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে আবারও বিলের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। চলতি বছরের মে-জুন মেয়াদে আকুর বিল প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতিতে প্রতীক শুধু একটি চিহ্ন নয়, বরং দলীয় পরিচয়, আবেগ ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন। ধানের শীষ, নৌকা, লাঙ্গল কিংবা দাঁড়িপাল্লা—এই প্রতীকগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর স্থায়ী পরিচয়ে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনী ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এসব প্রতীকের অনেকগুলোই শুরুতে নির্দিষ্ট দলের জন্য বরাদ্দ ছিল না। নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে প্রতীক বরাদ্দের প্রক্রিয়ায় নানা রাজনৈতিক সমঝোতা, বিভাজন ও পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে এগুলো দলীয় প্রতীকে রূপ নেয়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ‘নৌকা’ প্রতীককে নিজেদের দলীয় পরিচয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। নদীমাতৃক দেশের বাস্তবতা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন আবেগের সঙ্গে প্রতীকটি মিলে যাওয়ায় এটি দ্রুত সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা পায়। অন্যদিকে বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর ‘ধানের শীষ’ প্রতীক গ্রহণ করে। কৃষিনির্ভর সমাজ ও গ্রামীণ অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এই প্রতীক বিএনপির রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে। জাতীয় পার্টির প্রতীক ‘লাঙ্গল’ মূলত কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধিত্বের বার্তা বহন করে। সামরিক শাসন–পরবর্তী রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের সময় প্রতীকটি দলীয় পরিচয়ের অংশ হয়ে যায়। ইসলামী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায়বিচার ও ভারসাম্যের প্রতীক হিসেবে প্রচারিত হয়ে আসছে। ধর্মীয় মূল্যবোধের সঙ্গে প্রতীকটির অর্থগত সামঞ্জস্য দলটির রাজনৈতিক প্রচারণাকে শক্তিশালী করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ভোটারদের বড় একটি অংশ প্রার্থীর নামের চেয়ে প্রতীক দেখে ভোট দেন। ফলে পরিচিত ও দীর্ঘদিন ব্যবহৃত প্রতীকগুলো নির্বাচনে বাড়তি সুবিধা এনে দেয়। সে কারণেই নির্বাচনের আগে দলগুলো নিজ নিজ প্রতীক ঘিরে গান, স্লোগান ও প্রচার কার্যক্রম জোরদার করে। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে প্রতীককেন্দ্রিক রাজনীতি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ফলে ধানের শীষ, নৌকা, লাঙ্গল ও দাঁড়িপাল্লার মতো প্রতীকগুলো কেবল নির্বাচনী চিহ্ন নয়—বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবেই রয়ে গেছে।
আগামী বছরের ফিফা বিশ্বকাপ জয়ের পুরস্কার হিসেবে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অঙ্কের অর্থ পাবে চ্যাম্পিয়ন দল। যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় যৌথভাবে আয়োজিত ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের শিরোপাজয়ী দল পাবে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা—এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। বুধবার কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত ফিফা কাউন্সিল সভায় জানানো হয়, এবারের বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ৪৮টি দলের মধ্যে মোট প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা (৭২৭ মিলিয়ন ডলার) পুরস্কারমূল্য হিসেবে বণ্টন করা হবে। যা বিশ্বকাপ ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ প্রাইজমানি। ফিফা জানায়, এই তহবিলের মধ্যে প্রায় ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা (৬৫৫ মিলিয়ন ডলার) দলগুলোর পারফরম্যান্স অনুযায়ী সরাসরি বিতরণ করা হবে। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেওয়া দলগুলো পাবে আনুমানিক ৯৯ কোটি টাকা। রানার্সআপ দল পাবে প্রায় ৩৬০ কোটি টাকা, আর চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য বরাদ্দ থাকবে সর্বোচ্চ ৫৫০ কোটি টাকা। এর আগে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ জিতে আর্জেন্টিনা পেয়েছিল প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা (৪২ মিলিয়ন ডলার)। আর ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপ জয়ের পর ফ্রান্সের প্রাপ্তি ছিল আনুমানিক ৪২০ কোটি টাকা। বিশ্বকাপের টিকিটমূল্য নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়লেও ফিফা জানিয়েছে, সীমিত সংখ্যক টিকিটের দাম কমিয়ে প্রায় ৬ হাজার ৬০০ টাকা (৬০ ডলার) নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পুরস্কারমূল্য বাড়িয়ে প্রতিযোগিতাটির আর্থিক গুরুত্ব আরও জোরালো করা হয়েছে। আগামী ১১ জুন ২০২৬ থেকে শুরু হবে বিশ্বকাপের মূল আসর। উদ্বোধনী ম্যাচে মেক্সিকো সিটির স্টেডিয়ামে স্বাগতিক মেক্সিকোর মুখোমুখি হবে দক্ষিণ কোরিয়া।
এ এইচ এম বজলুর রহমান
যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দুর্যোগ কবলিত গাজায় তীব্র ঠাণ্ডায় মৃত্যু হয়েছে আরও এক শিশুর। উপত্যকায় গত কয়েকদিনের ঝড়-বন্যা, ঠাণ্ডা ও ভবন ধসে এ পর্যন্ত প্রাণহানির শিকার ১১ জন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২ সপ্তাহ বয়সী এক নবজাতক। ইসরায়েলের বোমার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩টি বাড়ি ধসে পড়েছে এক সপ্তাহে। ক্ষতিগ্রস্ত ২৭ হাজার তাবু। উত্তরে বেইত লাহিয়ায় একটি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছে ৫ জন। গাজা সিটির পশ্চিমে এবং উত্তর গাজায় আল শাতি শরণার্থী শিবিরে তাবুর ওপর দেয়াল ধসে আরও প্রাণহানির শিকার তিনজন। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েও আছে অনেকে। বন্যা, বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে আড়াই লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ। গাজায় প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বাস এখন তাবুতে। বাকি ৭ লাখ ফিলিস্তিনির ঠাঁই বিধ্বস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে। এরইমধ্যে ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
ভেনেজুয়েলার জলসীমায় নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত সব ট্যাংকারের ওপর পূর্ণাঙ্গ অবরোধ আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন তিনি। নিকোলাস মাদুরো প্রশাসনকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের অংশ বলে আখ্যা দেন ট্রাম্প। তার দাবি, মার্কিন সম্পদ চুরি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদক ও মানবপাচারসহ অনেক কারণে ভেনেজুয়েলার বিষয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। দেশটির উপকূল থেকে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত একটি তেল ট্যাংকার জব্দের এক সপ্তাহের মাথায় এমন ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প। এদিকে সম্প্রতি বেড়েই চলেছে যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলার মধ্যে উত্তেজনা। মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে গত কয়েক মাস ধরে ভেনেজুয়েলার বেশ কয়েকটি নৌযান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ছে মার্কিন সেনারা। পুনরায় চালু করেছে পুয়ের্তো রিকোর পরিত্যাক্ত সামরিক ঘাঁটি। ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলাকারীদের একজন ভারতের নাগরিক। ১৯৯৮ সালে তিনি হায়দরাবাদ থেকে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমান বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ।আততায়ী সাজিদ আকরামের পাসপোর্টসহ এ সংক্রান্ত একাধিক প্রমাণ হাতে পেয়েছে প্রশাসন। জানা গেছে, স্টুডেন্ট ভিসায় তিনি প্রথমে অস্ট্রেলিয়া যান। হায়দরাবাদে তার ব্যবসা শিক্ষায় ব্যাচেলর ডিগ্রি রয়েছে। তদন্তকারীদের মতে, ২০২২ সালে সর্বশেষ ভারত সফর করেন সাজিদ আকরাম। তার সন্তানেরাও সব অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। উল্লেখ্য, গত রোববার সিডনির বন্ডাই সৈকতে ইহুদিদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলাকালে হঠাৎ বন্দুক নিয়ে হামলা চালায় সাজিদ আকরাম ও তার ছেলে নাভিদ আকরাম। যাতে প্রাণ যায় ১৫ জনের। নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাবা সাজিদ আকরামের। অন্যদিকে, গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছেলে নাভিদ আকরাম।
অস্ট্রেলিয়া থেকে ইহুদিবিদ্বেষ পুরোপুরি নির্মুলের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। এছাড়া ইহুদি বিদ্বেষ মোকাবেলায় বিশেষ দূত নিয়োগ দেয়া হতে পারে বলেও পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেন, হামলার ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে আইন পরিবর্তন করবো। সমাজ থেকে ইহুদি বিদ্বেষ সম্পূর্ণভাবে দমন ও নির্মূল করতে চাই জানিয়ে তিনি বলেন, আইএস'র মদদপুষ্ট কোনো ব্যক্তির স্থান এদেশে নেই। যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে বহু আগে থেকেই ইহুদি বিদ্বেষবিরোধী বিশেষ দূত রয়েছে বলেও জানা গেছে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।