আইপিএলের মঞ্চে আজ ফের খুলছে কোটি টাকার দরজা। আবুধাবির ইতিহাদ অ্যারেনায় আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আইপিএল ২০২৬ মৌসুমের মিনি নিলাম, যেখানে দল গঠনের শেষ ছক্কা মারতে নামবে ১০টি ফ্র্যাঞ্চাইজি। বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটায় শুরু হওয়া এই নিলামে যেমন নজর থাকবে ক্যামেরন গ্রিন, লিয়াম লিভিংস্টোনদের দিকে, তেমনি বাংলাদেশের সাত ক্রিকেটারের ভাগ্যও নির্ধারিত হবে এই মঞ্চেই। তবে নিলামের আগে জেনে নেওয়া যাক গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু বিষয় : কতজন খেলোয়াড় দল পাবেন মোট ১০টি ফ্র্যাঞ্চাইজির স্কোয়াডে এখনো ৭৭টি জায়গা খালি। এর মধ্যে ৩১টি বিদেশি ক্রিকেটারের জন্য। নিয়ম অনুযায়ী, একটি দল সর্বোচ্চ ২৫ জন খেলোয়াড় নিতে পারবে এবং স্কোয়াডে বিদেশির সংখ্যা হতে পারবে সর্বোচ্চ আটজন। সবচেয়ে বেশি শূন্যতা কলকাতা নাইট রাইডার্সের—১৩টি জায়গা, আর সবচেয়ে কম পাঞ্জাব কিংসের—মাত্র চারটি। নিবন্ধনকৃত খেলোয়াড় এবারের নিলামের জন্য শুরুতে ১,৩৫৫ জন খেলোয়াড় নাম নিবন্ধন করলেও চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ৩৬৯ জন। এর মধ্যে ৪০ জনের ভিত্তিমূল্য সর্বোচ্চ ২ কোটি রুপি। ভারতীয়দের মধ্যে এই দামে আছেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও রবি বিষ্ণোই—দুজনই এবার বড় অঙ্কের লড়াইয়ে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে কারা? বাংলাদেশ থেকে নিলামে আছেন সাত ক্রিকেটার—মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, নাহিদ রানা, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান, শরীফুল ইসলাম ও রাকিবুল হাসান। তাদের মধ্যে ভিত্তিমূল্য সবচেয়ে বেশি মোস্তাফিজুর রহমানের। প্রাথমিক তালিকায় নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত নিলামে জায়গা হয়নি সাকিব আল হাসানের। আলোচনায় যেসব ক্রিকেটার নিলামের আলোচনার কেন্দ্রে আছেন অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলিং অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন। বিশ্লেষকদের ধারণা, তাঁর দাম ২৫ কোটি রুপির ঘরও ছাড়াতে পারে। পাশাপাশি লিয়াম লিভিংস্টোন, জেমি স্মিথ, ডেভন কনওয়ে ও ডেভিড মিলারদের প্রতিও থাকবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর বাড়তি আগ্রহ। দলগুলোর কাছে কেমন অর্থ আছে দলগুলোর হাতে থেকে সবচেয়ে শক্ত অবস্থানে কলকাতা নাইট রাইডার্স—তাদের হাতে রয়েছে ৬৪.৩০ কোটি রুপি। এরপর চেন্নাই সুপার কিংসের ঝুলিতে আছে ৪৩.৪০ কোটি রুপি। বিপরীতে পাঞ্জাব কিংস ও গুজরাট টাইটানস তুলনামূলক কম বাজেট নিয়ে নামছে নিলামে। নিলামের নিয়ম মিনি নিলাম হওয়ায় এবার কোনো ‘মার্কি সেট’ নেই এবং রাইট টু ম্যাচ (আরটিএম) কার্ড ব্যবহারের সুযোগও থাকছে না। ক্যাপড ব্যাটসম্যানদের দিয়েই শুরু হবে নিলাম। ৭০ জন খেলোয়াড় উপস্থাপনের পর শুরু হবে অ্যাক্সেলেরেটেড রাউন্ড, যেখানে অবিক্রীত খেলোয়াড়দের মধ্য থেকে দলগুলো দ্রুত পছন্দ বেছে নেবে। সব মিলিয়ে আজকের নিলাম শুধু দল গঠনের আনুষ্ঠানিকতা নয়—এটি অনেক ক্রিকেটারের জন্য নতুন ঠিকানা খোঁজার দিন, আবার কারও জন্য অপেক্ষা দীর্ঘ হওয়ার মুহূর্ত। কোটি টাকার ডাকের ভিড়ে কার হাসি চওড়া হবে, আর কার স্বপ্ন থমকে যাবে—তার উত্তর মিলবে আজই।
ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাবিলা নূর এবার বড় পর্দায় এক নতুন যাত্রায় শামিল হতে যাচ্ছেন। তানিম নূর পরিচালিত ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ সিনেমার মাধ্যমে দর্শকদের সামনে হাজির হবেন তিনি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিনেমার অংশ হওয়া নিয়ে নিজের মিশ্র অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী। সাবিলা জানান, শুরুতে এই প্রজেক্ট নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় থাকলেও সহশিল্পী হিসেবে দুই কিংবদন্তি অভিনেতার নাম শুনেই সব জড়তা কেটে গেছে। নার্ভাসনেস থেকে রোমাঞ্চ সংবাদ সম্মেলনে সাবিলা নূর অকপটে স্বীকার করেন, শুরুতে তিনি বেশ চিন্তিত ছিলেন। তিনি বলেন, “আমার মধ্যে আসলে কিছুটা নার্ভাসনেস ছিল, যখন তানিম ভাইয়া প্রথমে আমাকে এ চরিত্রটির কথা বলেন। তবে এর পরপরই যখন শুনলাম যে, আমাদের কিংবদন্তি অভিনয়শিল্পী মোশাররফ করিম ও চঞ্চল চৌধুরীকে একসাথে একটি সিনেমাতে পাবো, তখন আর দ্বিতীয়বার ভাবিনি।” দুই গুণী অভিনেতার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করার সুযোগ তাকে এই কাজটি করতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী করে তুলেছে বলে জানান সাবিলা। চিত্রনাট্যে মুগ্ধতা শুধু কাস্টিং নয়, সিনেমার চিত্রনাট্যও সাবিলাকে মুগ্ধ করেছে। চিত্রনাট্যকারদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “স্বাধীন ভাইয়া এবং সামিউলের স্ক্রিপ্টের কথা বলতেই হয়। তারা এত দুর্দান্তভাবে সংলাপ লিখেছেন, সবকিছু দেখার পরে মনে হলো এটা খুবই এক্সসাইটিং একটা জার্নি হবে।” দর্শকদের জন্য ভিন্ন অভিজ্ঞতা শক্তিশালী চিত্রনাট্য এবং গুণী সহ-অভিনেতাদের সমন্বয়ে ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ দর্শকদের জন্য দারুণ কিছু হতে যাচ্ছে বলে বিশ্বাস করেন সাবিলা। আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “আমি প্রত্যাশা করছি, বনলতা এক্সপ্রেসের জার্নিটা অনেক দুর্দান্ত কিছু একটা হবে।”
বিনোদন অঙ্গনে আতঙ্ক ছড়িয়ে এবার নির্মাতা অনন্য মামুন, মাবরুর রশিদ বান্নাহ এবং অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমককে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ডাল্টন সৌভাতো হীরা’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এই হুমকি দেওয়া হয়। হুমকিদাতা দাবি করেছেন, ইতোমধ্যে অভিনেত্রী চমকের ফোন নম্বর ফাঁস করে দেওয়া হয়েছে এবং নির্মাতা বান্নাহর লোকেশন ট্র্যাক করা হচ্ছে। এর আগে একই অ্যাকাউন্ট থেকে ওসমান শরিফ হাদিকেও হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। অনন্য মামুনকে নিয়ে হুঁশিয়ারি নির্মাতা অনন্য মামুনকে উদ্দেশ্য করে ওই পোস্টে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হয়েছে। তাকে ‘পিম্প’ আখ্যা দিয়ে হুমকিদাতা লিখেছেন, ‘এই বাটপারের নাম উল্লেখ করতেও কাল ভুলে গেছিলাম। অনন্য মামুন-দ্য পিম্প। ও যেন সহি সালামতে ভালো থাকে। আর ওর ফিল্ম যেন কেউ প্রডিউস করার চেষ্টা না করে, করলে সেটা নিজ দায়িত্বে করবে।’ বান্নাহ ও চমককে বয়কটের ডাক নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ ও অভিনেত্রী চমককে কাজ না দেওয়ার জন্য মিডিয়া সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা নাকি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় উল্লাস প্রকাশ করেছিলেন। পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘মাবরুর রশীদ বান্নাহ ও রুকাইয়া জাহান চমক, বঙ্গবন্ধুর ৩২ ভাঙার পর কুৎসিত উল্লাসকারী লাল বদর দুজন। এদের যদি মিডিয়ায় কেউ কাজে ডাকার চেষ্টা করেন- তাহলে সেটা নিজ দায়িত্বে ডাকবেন। এই নব্য রাজাকারদের কাজে নেওয়ার ফলে আপনাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে সেটার দায়িত্ব কারো না।’ আইটি টিম দিয়ে ট্র্যাকিংয়ের দাবি হুমকির মাত্রা আরও বাড়িয়ে ওই পোস্টে দাবি করা হয়, তাদের আইটি টিম এই তারকাদের ওপর নজরদারি করছে। লেখা হয়েছে, ‘এই দুই লাল বদরের যাবতীয় এক্সেস ট্রেস করা হবে। আমাদের আইটি টিমের মাধ্যমে সেটা আমাদের হাতে চলে আসবে। এই দুজনের প্রাপ্য তাদেরই বুঝায় দেওয়া হবে।’ ইতোমধ্যে চমকের ব্যক্তিগত ফোন নম্বর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বান্নাহ কোথায় অবস্থান করছেন তা ট্র্যাক করা হচ্ছে বলেও ওই পোস্টে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক মাধ্যমে এমন প্রকাশ্য হুমকিতে শোবিজ অঙ্গনে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এয়ার শো উপভোগ করতে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দরে মানুষের ঢল নেমেছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ১০টা থেকেই বিমানবন্দর এলাকায় দর্শনার্থীর ভিড় লক্ষ করা যায়। সরেজমিন দেখা গেছে, আগারগাঁও সংলগ্ন পুরাতন বিমানবন্দরের প্রবেশপথে দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তা তল্লাশির পর দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। এ উপলক্ষে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। এরই মধ্যে হাজারো মানুষ এয়ার শো দেখতে বিমানবন্দর চত্বরে প্রবেশ করেছেন। দর্শনার্থীদের অনেকের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। কেউ কেউ কপালে জাতীয় পতাকার আদলের ফিতা বেঁধে এসেছেন, আবার অনেকে বিজয় দিবসের লেখা সংবলিত পোশাক ও লাল-সবুজের রঙে সাজানো পোশাক পরে উপস্থিত হয়েছেন। আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। এ উপলক্ষে সকাল ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জমকালো এয়ার শো আয়োজনের কথা জানানো হয় সোমবার প্রকাশিত এক তথ্যবিবরণীতে। এতে বলা হয়, এয়ার শোটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর ও এর আশপাশের এলাকায় আজ ড্রোন না ওড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে নতুন ধারার রাজনীতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, অতীতের বস্তাপচা ও অচল রাজনীতিকে পায়ের নিচে ফেলে দিতে হবে। সেই রাজনীতি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারেনি, বরং পিছিয়ে দিয়েছে। এই রাজনীতির পাহারাদাররা এখন সময়ের ভারে অচল হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে যুব র্যালি ম্যারাথন ‘রাজপথে বিজয়ে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এখন এমন রাজনীতির প্রয়োজন, যা দেশ, জাতি, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে দাঁড়াবে। যে রাজনীতি বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। যে রাজনীতি দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, দখলদারি, মামলাবাজি, ধর্ষণ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন কোনো দলের নয়— এটি ১৮ কোটি মানুষের বিজয়ের দুয়ার খুলে দেবে। অতীতের রাজনীতি বাংলাদেশকে সামনে নয়, বরং পেছনের দিকে টেনেছে। সেই রাজনীতি স্বাধীনতার চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আমরা সেই রাজনীতির সমাপ্তি চাই এবং নতুন বাংলাদেশের জন্য নতুন ধারার রাজনীতি শুরু করতে চাই। আওয়ামী লীগের শাসনামল প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা একটি পরিবার, একটি গোষ্ঠী ও একটি দলের স্বার্থে সাজানো হয়েছিল। সোনার বাংলা গড়ার কথা বলে দেশকে শ্মশান বাংলায় পরিণত করা হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে রূপান্তর করা হয়েছিল। তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যের কারণেই ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে এবং তখন দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর একটি দল মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে নেয়। বহুদলীয় গণতন্ত্র ধ্বংস করা হয়, মৌলিক মানবাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। রক্ষী বাহিনীর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, রক্ষী বাহিনীর নামে জল্লাদ বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল। দেশজুড়ে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বিদেশ থেকে আসা ত্রাণ আগেই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল, যার পরিণতি ছিল ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ— যেখানে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। ঢাকায় লাশ দাফনের ভার নিতে হয়েছিল আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামকে। এটাই তথাকথিত সোনার বাংলার বাস্তব চিত্র। আওয়ামী লীগের বারবার ক্ষমতায় আসার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, একাধিকবার ক্ষমতায় এসে তারা দেশকে দিয়েছে ছোপ ছোপ রক্ত আর কাড়ি কাড়ি লাশ। ১৯৯৬ সালে ক্ষমা চেয়ে ক্ষমতায় এলেও চেয়ারে বসেই পুরোনো চেহারায় ফিরে যায়। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের ঘটনা— সবই সেই ধারাবাহিকতার অংশ। সুবর্ণচরের ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি প্রতীকে ভোট দেওয়ার অপরাধে একজন নারীর ওপর বর্বরতা চালানো হয়েছে। খুন, ধর্ষণ ও আয়নাঘরের রাজনীতির কারণেই তাদের পালাতে হয়েছে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে গিয়েও দেশকে অস্থির করার চেষ্টা করছে। ওসমান হাদির ওপর হামলা তারই প্রমাণ। তিনি আল্লাহর কাছে তার সুস্থতা কামনা করেন। আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা কোনো দলীয় বিজয় চাই না, চাই ১৮ কোটি মানুষের বিজয়। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন দিয়েই নতুন বাংলাদেশের সূচনা হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হলে জনগণই তা প্রতিহত করবে। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কোনো বিশেষ সুবিধা চাই না, কিন্তু কোনো দলকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা হলে তা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। কালো টাকার বিনিময়ে মানুষ কেনার দিন শেষ। তিনি বলেন, যুবসমাজের হাত ধরেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। যুবকরাই সব বাধা ভেঙে শান্তির বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতাকর্মী ও তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিজয় দিবস শুধু স্মরণের নয়, নতুন শপথ নেওয়ার দিন। পুরোনো রাজনীতির কবর রচনা করে বাংলাদেশকে নতুন পথে এগিয়ে নেওয়ার শপথ নিতে হবে।
বাংলাদেশ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী এই সংগ্রামে যুক্ত হয়। এর ফলে ভারত ১৬ ডিসেম্বরকে নিজেদের বিজয় দিবস হিসেবেও পালন করে। তবে ঐতিহাসিক বাস্তবতা হলো মূল বিজয় ছিল বাংলাদেশেরই, কারণ এই দিনেই দেশটি তার কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করে। বিজয় দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরকে ভারতের বিজয় দিবস হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তবে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করেননি। মোদি লিখেছেন, ‘বিজয় দিবসে আমরা আমাদের সেই সাহসী সেনাদের স্মরণ করছি, যাদের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগ ১৯৭১ সালে ভারতের এক ঐতিহাসিক বিজয় নিশ্চিত করেছিল। তাদের দৃঢ় মনোবল ও নিঃস্বার্থ সেবা আমাদের দেশকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের ইতিহাসে একটি গৌরবান্বিত মুহূর্ত তৈরি করেছে। সেনাদের এই বীরত্ব ভারতের বহু প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।’ এর আগে ভারতের সেনাবাহিনীও বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি পোস্ট প্রকাশ করে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘বিজয় দিবস শুধুমাত্র একটি তারিখ নয়—এটি ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ঐতিহাসিক ও চূড়ান্ত বিজয়ের প্রতীক।’ পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতীয় সেনারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে। ‘এটি ছিল সেই বিজয়, যেখানে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী একসঙ্গে লড়াই করেছে। এই যৌথ সংগ্রাম বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইকে চূড়ান্ত স্বাধীনতার দিকে নিয়ে গেছে। এই বিজয় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইতিহাসকে নতুনভাবে গড়ে তুলেছে, দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্র নতুন করে অঙ্কন করেছে এবং নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে। পোস্টে আরও বলা হয়, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পুরো জাতির ওপর যে নৃশংসতা, নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতা চালিয়েছিল, এই যুদ্ধ তার অবসান ঘটিয়েছে।
চরম অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও সংকটের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক একটি অন্ধকার সময় অতিক্রম করছে। এই ধারাবাহিকতার নতুন সংযোজন হিসেবে আলোচনায় এসেছে মহান বিজয় দিবস–২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতি সভা। ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী এবং জনসংযোগ ও প্রটোকল বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক কে. এম. হাবিবুন্নবীর স্বাক্ষরিত সদ্য প্রকাশিত এক চিঠি থেকে জানা যায়, গত ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন উপব্যবস্থাপনা পরিচালকগণ, প্রধান কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপকগণ, সংশ্লিষ্ট উপমহাব্যবস্থাপকগণ এবং বিকেবির তথাকথিত সভাপতি দাবি করা সাবেক পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক দাবি করা মিরাজ হোসেন। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, উল্লিখিত দুজনের কোনো বৈধ স্বীকৃতি নেই এবং তারা হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ফেরারি আসামি। এছাড়া চিঠিতে জাতীয়তাবাদী ফোরামের প্রধান সমন্বয়ক দাবি করা জাহিদ হোসেনের উপস্থিতির কথাও উল্লেখ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানান, জাতীয়তাবাদী ফোরাম নামে পরিচিত সংগঠনটির কোনো দলীয় স্বীকৃতি নেই। এটি আওয়ামী পুনর্বাসনের লক্ষ্যে গঠিত একটি স্বঘোষিত সংগঠন, যার প্রধান ও একমাত্র পৃষ্ঠপোষক বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। তথ্য অনুযায়ী, এই তথাকথিত জাতীয়তাবাদী ফোরামের কোনো সাংগঠনিক অস্তিত্ব নেই। সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক জাহিদ হোসেন ৫ আগস্টের পর মানবসম্পদ বিভাগে জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করেন। বিএনপির সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি; বরং চাকরিকালে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও ঘনিষ্ঠতার একাধিক প্রমাণ মিলেছে। এদিকে, বিজয় দিবস–২০২৫ উদযাপন সংক্রান্ত প্রস্তুতি সভার কার্যবিবরণীতে রাষ্ট্রীয় পতাকা সংক্রান্ত People’s Republic of Bangladesh Flag Rules-কে বিকৃতভাবে ‘দি ফ্ল্যাগ রুলস’ বা ‘পতাকা বিধি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় স্মৃতিসৌধে ‘পুষ্পস্তবক’ অর্পণের পরিবর্তে ‘পুষ্পার্ঘ্য’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যা সরকার ঘোষিত কর্মসূচির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক অতীতে ফ্যাসিস্ট সহযোগী ও তাবেদার কর্মকর্তাদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, জাতীয় পতাকা ও রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি সংক্রান্ত বিকৃত তথ্য এবং ধর্মীয় উপাসনায় ব্যবহৃত শব্দের ব্যবহার একটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারকদের দায়িত্বহীনতা ও চরম অবহেলার পরিচায়ক। এটি ব্যাংকসহ দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য উদ্বেগজনক ও অশনি সংকেত বলেও মন্তব্য করেন তারা। এছাড়া বিজয় দিবসের মতো জাতীয় তাৎপর্যপূর্ণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সভায় কোনো বৈধ সংগঠনের প্রতিনিধি না থাকা এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের জিয়া পরিষদের কাউকে আমন্ত্রণ না জানানোয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রধান কার্যালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, “বৈধতাহীন সিবিএ কমিটি ও নবগঠিত অবৈধ জাতীয়তাবাদী ফোরাম ৫ আগস্টের পর থেকে ব্যাংকে নজিরবিহীন লুটপাট চালাচ্ছে। বারবার অভিযোগ করা হলেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কোনো ব্যবস্থা নেননি; বরং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছেন।” এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উপব্যবস্থাপনা পরিচালক–২ খালেদুজ্জামান জুয়েলকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। অন্যদিকে, জিয়া পরিষদের সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকেও পতিত ফ্যাসিস্টের দোসররা অপকর্ম ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিজয় দিবসের প্রস্তুতি সভায় জিয়া পরিষদকে অন্তর্ভুক্ত না করে তারা আবারও তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্র প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। এই নৈরাজ্যের অবসান এখন সময়ের দাবি। আমরা নিজস্ব আয়োজনে মহান বিজয় দিবস–২০২৫ উদযাপন করবো।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এয়ার শো উপভোগ করতে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দরে মানুষের ঢল নেমেছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ১০টা থেকেই বিমানবন্দর এলাকায় দর্শনার্থীর ভিড় লক্ষ করা যায়। সরেজমিন দেখা গেছে, আগারগাঁও সংলগ্ন পুরাতন বিমানবন্দরের প্রবেশপথে দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তা তল্লাশির পর দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। এ উপলক্ষে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। এরই মধ্যে হাজারো মানুষ এয়ার শো দেখতে বিমানবন্দর চত্বরে প্রবেশ করেছেন। দর্শনার্থীদের অনেকের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। কেউ কেউ কপালে জাতীয় পতাকার আদলের ফিতা বেঁধে এসেছেন, আবার অনেকে বিজয় দিবসের লেখা সংবলিত পোশাক ও লাল-সবুজের রঙে সাজানো পোশাক পরে উপস্থিত হয়েছেন। আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। এ উপলক্ষে সকাল ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জমকালো এয়ার শো আয়োজনের কথা জানানো হয় সোমবার প্রকাশিত এক তথ্যবিবরণীতে। এতে বলা হয়, এয়ার শোটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর ও এর আশপাশের এলাকায় আজ ড্রোন না ওড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর রাত ৩টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকা-আশুলিয়া ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গাবতলী, বাইপাইল পয়েন্টে ডাইভারশন চলবে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ। এ সময় বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের জন্য সকল যানবাহন চালকদের অনুরোধ করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
দীর্ঘদিনের দর-কষাকষির পর অবশেষে ন্যাটোতে যোগ দেয়ার আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করলো ইউক্রেন। তবে, বড় ধরনের হামলা হলে জোটের সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে নিরাপত্তা সহায়তা পাওয়ার নিশ্চয়তা পেয়েছে কিয়েভ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) মার্কিন প্রতিনিধিদের সাথে ৫ ঘণ্টার বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি। এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়। আজ থেকে প্রায় ৪ বছর আগে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার পেছনের মূল কারণ হিসেবে ধরা হয় সামরিক জোট ন্যাটো'তে কিয়েভের যোগদানের আকাঙ্ক্ষাকে। রাশিয়া শুরু থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, কোনোভাবেই ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না ইউক্রেন। কারণ—এমনটি হলে রুশ সীমান্তে বাড়বে পশ্চিমা সামরিক উপস্থিতি। হুমকির মুখে পড়বে তাদের প্রভাব ও নিরাপত্তা। অবশেষে, এবার মস্কোর সেই শর্ত মানতে রাজি হলো কিয়েভ। যার মাধ্যমে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রক্রিয়া। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বার্লিনে মার্কিন কূটনীতিকদের সাথে পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকে ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা থেকে সরে আসেন প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট ভোলেদেমির জেলেনস্কি। সামরিক জোটে যোগ দেয়ার স্বপ্নপূরণ না হলেও, ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর থেকে আর্টিকেল ফাইভের মত নিরাপত্তা পাবার নিশ্চয়তা পেয়েছে কিয়েভ। পূর্ণ ন্যাটো সদস্য না হলেও, এর ফলে বড় কোনো আক্রমণের মুখে জোটের সদস্য দেশগুলো থেকে সামরিক ও কূটনৈতিক সহায়তা পাবে তারা। তবে এ ঘোষণায় ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে সংশয়। পশ্চিমা বিশ্বের এমন আশ্বাসে ভরসা করতে পারছে না অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতির প্রকৃত বাস্তবায়ন দেখতে চায় দেশটির জনগণ।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত বীর শহীদদের প্রতি গান স্যালুট প্রদর্শন করেছে। সকাল সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর পুরাতন বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি আর্টিলারি রেজিমেন্টের ৬টি গান থেকে এই বিশেষ তোপধ্বনি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল অর্পণ করে স্বাধীনতার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা শহীদদের শ্রদ্ধা জানান। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত চৌকস দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায় এবং বিউগলে বাজে করুণ সুর। শ্রদ্ধা জানানোর পর রাষ্ট্রপতি উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সেনা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন। মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনের অংশ হিসেবে সর্বোচ্চসংখ্যক জাতীয় পতাকা নিয়ে প্যারাশুটিং প্রদর্শন করে একটি বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে। সকাল ১১টা থেকে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী পৃথকভাবে ফ্লাই-পাস্ট প্রদর্শন করবে এবং একটি বিশেষ বিজয় দিবস ব্যান্ড শো আয়োজন করা হবে। এছাড়া ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার দেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে পতাকাবাহী স্কাইডাইভ প্রদর্শন করবে। এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ পতাকা-প্যারাশুটিং প্রদর্শনী হিসেবে নতুন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড স্থাপন করবে।
এ এইচ এম বজলুর রহমান
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে সংঘটিত ভয়াবহ হামলার সময় এক হামলাকারীর কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার যে ভিডিও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, সেখানে দেখা যাওয়া সাহসী পথচারীর পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে। তার নাম আহমেদ আল আহমেদ, বয়স ৪৩ বছর। এই দুঃসাহসিকতার জন্য তিনি ইতোমধ্যে ‘নায়ক’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, হামলার সময় আহমেদ সরাসরি হামলাকারীর দিকে ছুটে যান এবং তার হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নেন। পরে সেই অস্ত্র হামলাকারীর দিকেই তাক করে তাকে পিছু হটতে বাধ্য করেন। এরপর তিনি অস্ত্র নিচু করে এক হাত উঁচু করেন, যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বুঝতে পারে তিনি হামলাকারী নন। দুই সন্তানের জনক এবং পেশায় ফলের দোকানের মালিক আহমেদ বর্তমানে সিডনির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার পরিবার জানিয়েছে, হাতে ও বাহুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তার অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা জানান, তাকে চার থেকে পাঁচবার গুলি করা হয়েছে। রোববার রাতে বন্ডাই বিচে এ হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন। হামলার সময় সেখানে হানুকাহ উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এক হাজারের বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ এটিকে ইহুদি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে চালানো সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আহমেদের এক চাচাতো ভাই জানান, তিনি শতভাগ একজন নায়ক। তার হাতে ও বাহুতে দুটি গুলির আঘাত রয়েছে এবং বর্তমানে তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছেন। পরিবার আশা প্রকাশ করেছে, তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। আহমেদের সাহসিকতায় গর্বিত তার বাবা মোহামেদ ফাতাহ ও মা মালাকেহ হাসান। তারা বলেন, মানুষজনের ওপর হামলা হতে দেখে তাদের ছেলে এক মুহূর্তও দ্বিধা করেননি। তার কাছে কোনো জাতিগত বা ধর্মীয় বিভেদ নেই—অস্ট্রেলিয়ায় সবাই সমান নাগরিক বলেই তিনি বিশ্বাস করেন। জানা গেছে, আহমেদ ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। তার পরিবার সম্প্রতি সিরিয়া থেকে সিডনিতে এসে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। তিনি সিরিয়ার ইদলিবে বড় হয়েছেন। তার আত্মীয়রা জানিয়েছেন, আহমেদের এই সাহসিকতা শুধু তার পরিবার নয়, পুরো গ্রাম ও সম্প্রদায়কে গর্বিত করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় জড়িত দুই হামলাকারী ছিলেন বাবা ও ছেলে, যাদের বয়স যথাক্রমে ৫০ ও ২৪ বছর। ৫০ বছর বয়সি হামলাকারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন, আর ২৪ বছর বয়সি হামলাকারী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ভিডিওতে আরও দেখা গেছে, হামলাকারীরা একটি ছোট পদচারী সেতুর কাছ থেকে গুলি চালাচ্ছিল। আহমেদ প্রথমে একটি পার্ক করা গাড়ির আড়ালে আশ্রয় নেন, এরপর হঠাৎ বেরিয়ে এসে এক হামলাকারীকে ধরে ফেলেন। অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার পর তাকে মাটিতে ফেলে দেন। পরে ওই হামলাকারী আবার সেতুর দিকে পালিয়ে গিয়ে আরেকটি অস্ত্র তুলে নেয় এবং গুলি চালাতে থাকে। আহমেদের এই সাহসী ভূমিকার কারণে বহু মানুষের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশটির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মহলেও তার সাহসিকতার প্রশংসা করা হয়েছে। সবাই একবাক্যে তাকে একজন সত্যিকারের নায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
তাইওয়ানে কোনো যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করলে মার্কিন সামরিক বাহিনী চীনের কাছে পরাজিত হতে পারে—এমন আশঙ্কার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে পেন্টাগনের এক অতি গোপন মূল্যায়নে। নথিটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণভিত্তিক। সাম্প্রতিক এক যুদ্ধ মহড়ায় দেখা গেছে, বেইজিং চাইলে মোতায়েনের আগেই মার্কিন ফাইটার স্কোয়াড্রন, বড় যুদ্ধজাহাজ এমনকি উপগ্রহ নেটওয়ার্কও অচল করে দিতে সক্ষম। এই অত্যন্ত শ্রেণিবদ্ধ নথির নাম ‘ওভারম্যাচ ব্রিফ’। পেন্টাগনের অফিস অব নেট অ্যাসেসমেন্টের তৈরি করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র অত্যাধুনিক ও ব্যয়বহুল অস্ত্রের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বিপরীতে, চীন তুলনামূলক কম খরচে দ্রুত উৎপাদনযোগ্য অস্ত্র তৈরি করে যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যকর সুবিধা অর্জন করেছে। নথিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, সংঘাত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চীন মার্কিন সামরিক সম্পদ অকার্যকর করে দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এর আগেই চীনের পক্ষ থেকে তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘চরম বিচক্ষণতার’ সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়ার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে এই নথির সারসংক্ষেপ যখন যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করা হয়, তখন তিনি পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝতে পেরে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এক কর্মকর্তা জানান, চীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি সামরিক কৌশলের বিপরীতে একাধিক বিকল্প প্রস্তুত রেখেছে। চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করে এবং প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করেও দ্বীপটিকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার কথা বলে আসছে। অন্যদিকে, তাইওয়ান নিজেদের একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখে এবং জনগণের গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনো পরিবর্তন মানতে রাজি নয়। যদিও চীন এখনো আক্রমণের নির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা করেনি, তবে পশ্চিমা গোয়েন্দা মূল্যায়নে ধারণা করা হচ্ছে—২০২৭ সালের আশপাশে তাইওয়ান দখলের প্রচেষ্টা শুরু হতে পারে, যা চীনের সামরিক আধুনিকীকরণ পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত দুই দশকে চীন বিপুলসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করেছে, যা দিয়ে তারা তাইওয়ানে পৌঁছানোর আগেই মার্কিন বিমানবাহী রণতরীসহ উন্নত সামরিক সম্পদ ধ্বংস করতে পারে। যুদ্ধ মহড়াগুলোতে দেখা গেছে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধুনিক রণতরীগুলোর অনেকটাই চীনা হামলা প্রতিহত করতে অক্ষম হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত সর্বাধুনিক বিমানবাহী রণতরীটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা আধুনিক প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও চীনা হামলার বিরুদ্ধে ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত। এছাড়া, ইউক্রেন যুদ্ধের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলা হয়েছে—আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে ট্যাংক ও ভারী অস্ত্র কতটা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে সতর্ক করা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদি বড় যুদ্ধ চালানোর মতো অস্ত্র ও গোলাবারুদ উৎপাদনের শিল্প সক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের আর আগের মতো নেই। প্রতিবেদনটি আরও জানায়, বেইজিং ও মস্কোর তুলনায় ওয়াশিংটন দ্রুত উন্নত অস্ত্র তৈরিতে পিছিয়ে পড়ছে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—অতিরিক্ত ব্যয়বহুল ও সীমিতসংখ্যক অস্ত্রের ওপর নির্ভরতা। বর্তমানে ইসরায়েল ও ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে, যা চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতে বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। পেন্টাগনের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রায় সব বিভাগেই চীন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে আছে, যদিও উভয় দেশের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা প্রায় সমান। তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট
দীর্ঘদিনের দর-কষাকষির পর অবশেষে ন্যাটোতে যোগ দেয়ার আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করলো ইউক্রেন। তবে, বড় ধরনের হামলা হলে জোটের সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে নিরাপত্তা সহায়তা পাওয়ার নিশ্চয়তা পেয়েছে কিয়েভ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) মার্কিন প্রতিনিধিদের সাথে ৫ ঘণ্টার বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি। এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়। আজ থেকে প্রায় ৪ বছর আগে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার পেছনের মূল কারণ হিসেবে ধরা হয় সামরিক জোট ন্যাটো'তে কিয়েভের যোগদানের আকাঙ্ক্ষাকে। রাশিয়া শুরু থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, কোনোভাবেই ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না ইউক্রেন। কারণ—এমনটি হলে রুশ সীমান্তে বাড়বে পশ্চিমা সামরিক উপস্থিতি। হুমকির মুখে পড়বে তাদের প্রভাব ও নিরাপত্তা। অবশেষে, এবার মস্কোর সেই শর্ত মানতে রাজি হলো কিয়েভ। যার মাধ্যমে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রক্রিয়া। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বার্লিনে মার্কিন কূটনীতিকদের সাথে পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকে ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা থেকে সরে আসেন প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট ভোলেদেমির জেলেনস্কি। সামরিক জোটে যোগ দেয়ার স্বপ্নপূরণ না হলেও, ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর থেকে আর্টিকেল ফাইভের মত নিরাপত্তা পাবার নিশ্চয়তা পেয়েছে কিয়েভ। পূর্ণ ন্যাটো সদস্য না হলেও, এর ফলে বড় কোনো আক্রমণের মুখে জোটের সদস্য দেশগুলো থেকে সামরিক ও কূটনৈতিক সহায়তা পাবে তারা। তবে এ ঘোষণায় ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে সংশয়। পশ্চিমা বিশ্বের এমন আশ্বাসে ভরসা করতে পারছে না অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতির প্রকৃত বাস্তবায়ন দেখতে চায় দেশটির জনগণ।
একের পর এক গুলির শব্দ সিডনির এই সমুদ্র সৈকত জুড়ে। প্রাণ বাঁচাতে দিকবিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে ছুটছে মানুষ। এরইমাঝে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আততায়ীর হাত থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নেয় এক মাঝবয়সী ব্যক্তি। মুহুর্তেই সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয় এই ভিডিওটি। অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী সিডনির বন্ডাই বিচে ধর্মীয় উৎসব পালন করছিলেন দেশটির অন্তত হাজারখানিক ইহুদী নাগরিক। তবে হঠাৎই কয়েকজন বন্দুকধারী হামলা চালায় সেখানে। আনুমানিক ৪০-৫০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে অস্ত্রধারীরা। তাতে হতাহত হয়েছেন অনেকেই। গুলি, হট্টগোল আর চিৎকারের শব্দে সাক্ষাৎ নরকে পরিণত হয় বনডি সমুদ্রসৈকতের পরিবেশ। এ পরিস্থিতিতেও অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেয়া সেই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন। তার নাম আহমেদ আল আহমেদ। স্থানীয় এক ফলের দোকানের মালিক সে। একজন মুসলিম হয়েও ইহুদীদের জীবন বাঁচাতে ঝাপিয়ে পড়ায় স্থানীয়দের কাছে বাস্তব জীবনের হিরো হয়ে ওঠেন তিনি। অনেকের জীবন বাঁচালেও আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। হাসপাতালে নেয়ার পর তার শরীরে অস্ত্রোপচার চালানো হয় বলে সেভেন নিউজকে জানান আহমেদের চাচাতো ভাই মুস্তোফা। মুস্তফা জানান, আগে কখনও অস্ত্র চালানোর অভিজ্ঞতা ছিলো না আহমেদের। তবুও, দুই সন্তানের জনক আহমেদ কিভাবে এতো সাহসী হয়ে উঠলেন জানেন না তিনি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।