ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ৭৬১টি। এর মধ্যে পুলিশ ৮ হাজার ৭৪৬টি ভোটকেন্দ্রকে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ এবং ১৬ হাজার ৩৫৯টি ভোটকেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এসব কেন্দ্রকে ঘিরে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করাই এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের আশঙ্কা, কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাম্প্রদায়িক উসকানি, ধর্মীয় অপপ্রচার এবং নির্বাচনসংক্রান্ত বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে নির্বাচন পরিবেশ বিঘ্নিত করার চেষ্টা করতে পারে। ভোটার সংখ্যা, থানা থেকে কেন্দ্রের দূরত্ব, রাজনৈতিক আধিপত্য, দুর্গম অঞ্চল, পাহাড়ি ও চরাঞ্চল বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর ভোটকেন্দ্রগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করেছে—লাল (অতি ঝুঁকিপূর্ণ), হলুদ (ঝুঁকিপূর্ণ) ও সবুজ (সাধারণ)। এর আগে এক অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের একজন কমিশনার মন্তব্য করেন, আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচন হতে পারে। তবে সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকারের নির্দেশনায় পুলিশ সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যমতে, ঝুঁকি নেই এমন সাধারণ ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৫৬টি। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে তিনজন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে দুইজন এবং সাধারণ কেন্দ্রে একজন পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের কাছে থাকবে অস্ত্র ও বডি ওয়ার্ন ক্যামেরা। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে ১৩ জন করে আনসার সদস্য এবং সার্বিক নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। পুলিশের গোপন মূল্যায়নে উঠে এসেছে, গত ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন থানা ও পুলিশ লাইন্স থেকে লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ এখনো পুরোপুরি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া জামিনে মুক্ত কিছু শীর্ষ সন্ত্রাসী আবার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। নির্বাচনের সময় সীমান্তবর্তী এলাকা, চরমপন্থি অধ্যুষিত অঞ্চল, সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত আসনগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আলাদা নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হতে পারে। গুজব, অপপ্রচার ও ভুয়া তথ্য ঠেকাতে সাইবার মনিটরিং সেল গঠন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ডিপফেক ভিডিও বা ভুয়া বক্তব্য শনাক্তের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও পার্বত্য তিন জেলায় সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো নির্বাচনকালীন সময়ে সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ সংখ্যালঘু হওয়ায় ১১৩টি আসনে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির ঝুঁকিও রয়েছে। এছাড়া অতীতে যেসব আসনে কম ভোটের ব্যবধানে ফল নির্ধারিত হয়েছে, সেসব এলাকায় সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা বেশি। বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক থাকায় আসন্ন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে লটারির মাধ্যমে জেলা পুলিশ সুপার নিয়োগ, থানার ওসি পরিবর্তন এবং দেড় লাখ পুলিশ সদস্যের জন্য নির্বাচনকালীন করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ হাজারের বেশি সদস্যের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ ও অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে। প্রয়োজনে কুইক রেসপন্স টিম ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। কোনো পক্ষ পেশিশক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন। সে লক্ষ্যেই বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে, যাতে অতীতের বিতর্কের বাইরে গিয়ে দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করা যায়।
নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকায় ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র আজ বুধবার দুপুরে বন্ধ থাকবে। এই সময়ে যাদের আবেদন জমা দেওয়া কথা ছিল, তাদের জন্য পরবর্তীতে সময় নির্ধারণ করা হবে। ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র (আইভ্যাক জেএফপি) এক বার্তায় এসব তথ্য জানিয়েছে। বার্তায় বলা হয়, চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাতে চাই, ঢাকায় আইভ্যাক জেএফি আজ দুপুর ২টায় বন্ধ থাকবে। এতে আরও বলা হয়, আজ যেসব আবেদনকারীর জমা দেয়ার জন্য নির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল, তাদেরকে পরবর্তীতে নতুন একটি তারিখে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হবে।
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকা আরও সম্প্রসারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) পাঁচটি নতুন দেশকে পূর্ণাঙ্গ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে এবং আরও কয়েকটি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা ও প্রবেশে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। নতুন করে পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞায় যুক্ত হওয়া দেশগুলো হলো বুরকিনা ফাসো, মালি, নাইজার, দক্ষিণ সুদান ও সিরিয়া। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ১২টি দেশ ছিল। এছাড়া আংশিক নিষেধাজ্ঞা ও প্রবেশ সীমাবদ্ধতার আওতায় আনা হয়েছে আরও ১৫টি দেশের নাগরিকদের। দেশগুলো হলো—অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেনিন, কোট দিভোয়ার, ডমিনিকা, গ্যাবন, গাম্বিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, তানজানিয়া, টোঙ্গা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে। হোয়াইট হাউস আরও জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা ভ্রমণ নথি বহনকারীদের ক্ষেত্রেও পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ১৯টি দেশের নাগরিকদের জন্য অভিবাসন সংক্রান্ত আবেদন স্থগিত করে। এসব আবেদনের মধ্যে গ্রিনকার্ড ও নাগরিকত্বের আবেদনও রয়েছে। ওই তালিকায় আফগানিস্তান, ইরান, ইয়েমেন, হাইতি, ভেনিজুয়েলা, সুদান ও সোমালিয়ার মতো দেশ রয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ও অভিবাসন আরও কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র : শাফাক নিউজ
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) ভিডিও টুল ফায়ারফ্লাইয়ে বড় ধরনের আপডেট এনেছে অ্যাডোবি। নতুন এই আপডেটের মাধ্যমে এখন ব্যবহারকারীরা শুধু টেক্সট লিখে ভিডিওর নির্দিষ্ট অংশে পরিবর্তন আনতে পারবেন। পুরো ভিডিও নতুন করে তৈরি করার দরকার হবে না। টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের সংস্করণে কোনো পরিবর্তন করতে হলে ভিডিও আবার শুরু থেকে তৈরি করতে হতো। নতুন এডিটরে সেই সীমাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে। এখন রং পরিবর্তন, ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল ঠিক করা কিংবা ভিডিওর ভেতরের কোনো নির্দিষ্ট বস্তু বদলানোর মতো কাজ সহজেই করা যাবে। নতুন এডিটরে একটি টাইমলাইন সুবিধাও যোগ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ফ্রেম, অডিওসহ ভিডিওর বিভিন্ন কারিগরি দিক আলাদা করে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। অক্টোবরে পরীক্ষামূলকভাবে (প্রাইভেট বেটা) চালু হওয়া এই এডিটর এখন সবার জন্য উন্মুক্ত করেছে অ্যাডোবি। একই সঙ্গে ফায়ারফ্লাইয়ে যুক্ত করা হয়েছে অন্য প্রতিষ্ঠানের কিছু এআই মডেলও। এর মধ্যে রয়েছে ছবি তৈরির জন্য ফ্লাক্স.২ এবং ভিডিওর মান বাড়িয়ে ১০৮০পি ও ৪কে করার জন্য অ্যাস্ট্রা। এছাড়া ফায়ারফ্লাই ভিডিওতে আরও উন্নত ক্যামেরা মুভমেন্টের সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। নতুন এই আপডেট ভিডিও নির্মাতাদের কাজ আরও সহজ ও দ্রুত করবে বলে মনে করছে অ্যাডোবি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ৭৬১টি। এর মধ্যে পুলিশ ৮ হাজার ৭৪৬টি ভোটকেন্দ্রকে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ এবং ১৬ হাজার ৩৫৯টি ভোটকেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এসব কেন্দ্রকে ঘিরে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করাই এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের আশঙ্কা, কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাম্প্রদায়িক উসকানি, ধর্মীয় অপপ্রচার এবং নির্বাচনসংক্রান্ত বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে নির্বাচন পরিবেশ বিঘ্নিত করার চেষ্টা করতে পারে। ভোটার সংখ্যা, থানা থেকে কেন্দ্রের দূরত্ব, রাজনৈতিক আধিপত্য, দুর্গম অঞ্চল, পাহাড়ি ও চরাঞ্চল বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর ভোটকেন্দ্রগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করেছে—লাল (অতি ঝুঁকিপূর্ণ), হলুদ (ঝুঁকিপূর্ণ) ও সবুজ (সাধারণ)। এর আগে এক অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের একজন কমিশনার মন্তব্য করেন, আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচন হতে পারে। তবে সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকারের নির্দেশনায় পুলিশ সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যমতে, ঝুঁকি নেই এমন সাধারণ ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৫৬টি। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে তিনজন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে দুইজন এবং সাধারণ কেন্দ্রে একজন পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের কাছে থাকবে অস্ত্র ও বডি ওয়ার্ন ক্যামেরা। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে ১৩ জন করে আনসার সদস্য এবং সার্বিক নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। পুলিশের গোপন মূল্যায়নে উঠে এসেছে, গত ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন থানা ও পুলিশ লাইন্স থেকে লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ এখনো পুরোপুরি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া জামিনে মুক্ত কিছু শীর্ষ সন্ত্রাসী আবার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। নির্বাচনের সময় সীমান্তবর্তী এলাকা, চরমপন্থি অধ্যুষিত অঞ্চল, সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত আসনগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আলাদা নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হতে পারে। গুজব, অপপ্রচার ও ভুয়া তথ্য ঠেকাতে সাইবার মনিটরিং সেল গঠন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ডিপফেক ভিডিও বা ভুয়া বক্তব্য শনাক্তের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও পার্বত্য তিন জেলায় সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো নির্বাচনকালীন সময়ে সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ সংখ্যালঘু হওয়ায় ১১৩টি আসনে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির ঝুঁকিও রয়েছে। এছাড়া অতীতে যেসব আসনে কম ভোটের ব্যবধানে ফল নির্ধারিত হয়েছে, সেসব এলাকায় সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা বেশি। বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক থাকায় আসন্ন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে লটারির মাধ্যমে জেলা পুলিশ সুপার নিয়োগ, থানার ওসি পরিবর্তন এবং দেড় লাখ পুলিশ সদস্যের জন্য নির্বাচনকালীন করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ হাজারের বেশি সদস্যের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ ও অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে। প্রয়োজনে কুইক রেসপন্স টিম ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। কোনো পক্ষ পেশিশক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন। সে লক্ষ্যেই বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে, যাতে অতীতের বিতর্কের বাইরে গিয়ে দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করা যায়।
বেসরকারি স্কুল ও কলেজে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মসজিদের ইমামতি, দোকান পরিচালনাসহ মোট ১১টি পেশায় যুক্ত হতে পারবেন না। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে পাঠানো নির্দেশনার আলোকে এ সংক্রান্ত নোটিশ গত রবিবার মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে উপজেলার সব স্কুল-কলেজে পাঠানো হয়েছে। চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করে কালকিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘মাউশি থেকে নির্দিষ্ট ১১টি পেশা উল্লেখ করে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী নোটিশ আকারে বিষয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জানানো হয়েছে। নির্দেশনা অমান্য করলে এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘বর্তমান বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২৫ অনুযায়ী এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা একটি সম্মানজনক ও পূর্ণকালীন রাষ্ট্রীয় আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত পেশায় নিয়োজিত। তাই তাদের পেশাগত দায়িত্ব ও সময়ের পূর্ণ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে শিক্ষকতার পাশাপাশি কোনো অতিরিক্ত লাভজনক পেশায় সম্পৃক্ত হওয়া নীতিগতভাবে নিষিদ্ধ।’ নিষিদ্ধ ও সীমাবদ্ধ পেশাগুলোর মধ্যে রয়েছে— বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সাংবাদিকতা, আইন পেশা, কোচিং সেন্টার পরিচালনা বা সেখানে শিক্ষকতা, প্রাইভেট বা কেজি স্কুল পরিচালনা, শিক্ষাবিষয়ক প্রকাশনা বা পাবলিকেশন্সের ব্যবসা, হজ এজেন্ট বা এর বিপণন কার্যক্রম, বিয়ের কাজী বা ঘটকালী পেশা, টং দোকান বা ক্ষুদ্র ব্যবসা, ঠিকাদারি বা নির্মাণ ব্যবসা, মসজিদের পূর্ণকালীন ইমামতি বা খতিবের দায়িত্ব পালন (যা শিক্ষকতার সময়কে প্রভাবিত করে) এবং কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের বিশেষ সহকারী বা চাটুকার হিসেবে নিয়োজিত থাকা। তবে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো শিক্ষক স্বেচ্ছাশ্রমে ধর্মীয় বা সামাজিক কাজে যুক্ত থাকতে পারবেন, তবে তা অবশ্যই নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে হতে হবে, যাতে মূল পেশাগত দায়িত্ব পালনে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।
নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকায় ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র আজ বুধবার দুপুরে বন্ধ থাকবে। এই সময়ে যাদের আবেদন জমা দেওয়া কথা ছিল, তাদের জন্য পরবর্তীতে সময় নির্ধারণ করা হবে। ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র (আইভ্যাক জেএফপি) এক বার্তায় এসব তথ্য জানিয়েছে। বার্তায় বলা হয়, চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাতে চাই, ঢাকায় আইভ্যাক জেএফি আজ দুপুর ২টায় বন্ধ থাকবে। এতে আরও বলা হয়, আজ যেসব আবেদনকারীর জমা দেয়ার জন্য নির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল, তাদেরকে পরবর্তীতে নতুন একটি তারিখে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) ভিডিও টুল ফায়ারফ্লাইয়ে বড় ধরনের আপডেট এনেছে অ্যাডোবি। নতুন এই আপডেটের মাধ্যমে এখন ব্যবহারকারীরা শুধু টেক্সট লিখে ভিডিওর নির্দিষ্ট অংশে পরিবর্তন আনতে পারবেন। পুরো ভিডিও নতুন করে তৈরি করার দরকার হবে না। টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের সংস্করণে কোনো পরিবর্তন করতে হলে ভিডিও আবার শুরু থেকে তৈরি করতে হতো। নতুন এডিটরে সেই সীমাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে। এখন রং পরিবর্তন, ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল ঠিক করা কিংবা ভিডিওর ভেতরের কোনো নির্দিষ্ট বস্তু বদলানোর মতো কাজ সহজেই করা যাবে। নতুন এডিটরে একটি টাইমলাইন সুবিধাও যোগ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ফ্রেম, অডিওসহ ভিডিওর বিভিন্ন কারিগরি দিক আলাদা করে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। অক্টোবরে পরীক্ষামূলকভাবে (প্রাইভেট বেটা) চালু হওয়া এই এডিটর এখন সবার জন্য উন্মুক্ত করেছে অ্যাডোবি। একই সঙ্গে ফায়ারফ্লাইয়ে যুক্ত করা হয়েছে অন্য প্রতিষ্ঠানের কিছু এআই মডেলও। এর মধ্যে রয়েছে ছবি তৈরির জন্য ফ্লাক্স.২ এবং ভিডিওর মান বাড়িয়ে ১০৮০পি ও ৪কে করার জন্য অ্যাস্ট্রা। এছাড়া ফায়ারফ্লাই ভিডিওতে আরও উন্নত ক্যামেরা মুভমেন্টের সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। নতুন এই আপডেট ভিডিও নির্মাতাদের কাজ আরও সহজ ও দ্রুত করবে বলে মনে করছে অ্যাডোবি।
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকা আরও সম্প্রসারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) পাঁচটি নতুন দেশকে পূর্ণাঙ্গ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে এবং আরও কয়েকটি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা ও প্রবেশে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। নতুন করে পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞায় যুক্ত হওয়া দেশগুলো হলো বুরকিনা ফাসো, মালি, নাইজার, দক্ষিণ সুদান ও সিরিয়া। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ১২টি দেশ ছিল। এছাড়া আংশিক নিষেধাজ্ঞা ও প্রবেশ সীমাবদ্ধতার আওতায় আনা হয়েছে আরও ১৫টি দেশের নাগরিকদের। দেশগুলো হলো—অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেনিন, কোট দিভোয়ার, ডমিনিকা, গ্যাবন, গাম্বিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, তানজানিয়া, টোঙ্গা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে। হোয়াইট হাউস আরও জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা ভ্রমণ নথি বহনকারীদের ক্ষেত্রেও পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ১৯টি দেশের নাগরিকদের জন্য অভিবাসন সংক্রান্ত আবেদন স্থগিত করে। এসব আবেদনের মধ্যে গ্রিনকার্ড ও নাগরিকত্বের আবেদনও রয়েছে। ওই তালিকায় আফগানিস্তান, ইরান, ইয়েমেন, হাইতি, ভেনিজুয়েলা, সুদান ও সোমালিয়ার মতো দেশ রয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ও অভিবাসন আরও কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র : শাফাক নিউজ
নানা আপত্তি ও বর্জনের ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দ্বাদশ সমাবর্তন আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে ৬০, ৬১ ও ৬২তম ব্যাচের মোট ৫,৯৬৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবেন। সমাবর্তনের সভাপতি হিসেবে থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, এবং সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ। সমাবর্তনের ভেন্যু বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়াম ইতিমধ্যে সাজানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মেরামত, প্রশাসনিক ভবন রঙ করা, আলপনা আঁকা এবং রঙিন বাতি, পতাকা ও ফেস্টুন স্থাপন করা হয়েছে। প্রধান ফটক, বিনোদপুর ও কাজলা ফটকে নতুন তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। সমাবর্তনের মূল ভেন্যুতে প্রায় সাত হাজার দর্শকের জন্য বিশাল প্যান্ডেল, ফ্যান ও বড় এলইডি স্ক্রিন বসানো হয়েছে। সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হবে। এতে শোভাযাত্রা, স্বাগত বক্তব্য, ডিগ্রি প্রদান, সমাবর্তন বক্তৃতা এবং সভাপতির বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত। পরে দুপুর আড়াইটায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জানিয়েছেন, পুলিশ প্রশাসন, প্রক্টরিয়াল টিম ও গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে অংশ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীদের ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে নিবন্ধন সংখ্যা ৪ লাখ ৪৫ হাজার ২৬ জন ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৯ জন এবং মহিলা ভোটার ২৭ হাজার ৬৬৫ জন। নিবন্ধিতদের মধ্যে ৬ হাজার ৬০৮ জনের নিবন্ধন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে, আর ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪১৮ জনের নিবন্ধন ইতিমধ্যে অনুমোদিত হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো ভোট গ্রহণে আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রবাসী, আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তি এবং ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতরা ভোট দিতে পারবেন। ভোট দিতে হলে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নিবন্ধনকারীদের ঠিকানায় ভোটের ব্যালট ডাকযোগে পাঠানো হবে। ভোটাররা ভোট পূরণ করে ফিরতি খামে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন। নিবন্ধন বর্তমানে ৫০টিরও বেশি দেশে চলছে, যার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, ব্রাজিল, হংকং, মিশর, মোজাম্বিক, লিবিয়া, মরিশাস, উগান্ডা, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, আলজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে, পেরু, গাম্বিয়া সহ অন্যান্য দেশগুলো রয়েছে। ইসি জানিয়েছে, পূর্ববর্তী পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থা কার্যকর ছিল না। তাই এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট নেওয়া হয়েছে। প্রবাসীরা ইতিমধ্যেই ভালো সাড়া দিয়েছেন। আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তি এবং ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতদের অংশগ্রহণের আগ্রহ নিবন্ধনের সময় বোঝা যাবে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসি। প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ প্রবাসীর ভোট টানার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ এইচ এম বজলুর রহমান
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকা আরও সম্প্রসারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) পাঁচটি নতুন দেশকে পূর্ণাঙ্গ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে এবং আরও কয়েকটি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা ও প্রবেশে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। নতুন করে পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞায় যুক্ত হওয়া দেশগুলো হলো বুরকিনা ফাসো, মালি, নাইজার, দক্ষিণ সুদান ও সিরিয়া। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ১২টি দেশ ছিল। এছাড়া আংশিক নিষেধাজ্ঞা ও প্রবেশ সীমাবদ্ধতার আওতায় আনা হয়েছে আরও ১৫টি দেশের নাগরিকদের। দেশগুলো হলো—অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেনিন, কোট দিভোয়ার, ডমিনিকা, গ্যাবন, গাম্বিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, তানজানিয়া, টোঙ্গা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে। হোয়াইট হাউস আরও জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা ভ্রমণ নথি বহনকারীদের ক্ষেত্রেও পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ১৯টি দেশের নাগরিকদের জন্য অভিবাসন সংক্রান্ত আবেদন স্থগিত করে। এসব আবেদনের মধ্যে গ্রিনকার্ড ও নাগরিকত্বের আবেদনও রয়েছে। ওই তালিকায় আফগানিস্তান, ইরান, ইয়েমেন, হাইতি, ভেনিজুয়েলা, সুদান ও সোমালিয়ার মতো দেশ রয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ও অভিবাসন আরও কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র : শাফাক নিউজ
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস, জাতীয় প্রবাসী দিবস ও আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে। দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপিত হয়। আলোচনা সভায় মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ ও ১৯৭৫ সালের চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়া মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ এবং প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়। জাতীয় প্রবাসী দিবস ও আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে দূতাবাসের উদ্যোগে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিকার ও কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরা হয়। এসময় ১১ জন বাংলাদেশি ইপিএস কর্মী এবং ১০টি কোরিয়ান কোম্পানিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সম্মাননা প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রদূত তৌফিক ইসলাম শাতিল প্রবাসীদের কল্যাণ, বৈধ রেমিট্যান্স প্রেরণ এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদের অবদানের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি প্রবাসীদের মধ্যে ভোটার নিবন্ধন এবং জাতীয় উন্নয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। উৎসবমুখর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দেশীয় খাবারের সমন্বয়ে নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়, যেখানে প্রবাসীরা দেশপ্রেম ও আনন্দ উদ্দীপনা প্রকাশ করেন
ভারতের মুদ্রা রুপির দাম ডলারের তুলনায় নতুন সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার সকালে প্রতি ডলারের বিপরীতে ৯০.৮৩ রুপি লেনদেন হয়েছে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, রূপি শিগগিরই ৯১ ছাড়িয়ে যেতে পারে। মূলত ভারতের শেয়ার বাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগের চলে যাওয়া এবং বাণিজ্যচুক্তি সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার কারণে রূপি দরপতন হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি এড়াতে চাইছেন, আর বাজারে ডলারের চাহিদা বাড়ায় রূপির দাম নিম্নমুখী হচ্ছে। তবে ভারতের অর্থনীতি সামগ্রিকভাবে শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮.২ শতাংশ হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বর্তমানে ১ শতাংশের নিচে, অক্টোবরে ০.২৫ শতাংশ এবং নভেম্বর মাসে ০.৭১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কয়েক মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। ডলারের দর ১২২ টাকার কিছুটা ওপরে, যা ১২৩ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রতি ডলারের বিপরীতে রূপির দাম ছিল ৮৪–৮৫।
মেক্সিকোয় ব্যক্তিগত বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দেশটির আকাপুলকো থেকে রওয়ানা দিয়েছিলো বিমানটি। গন্তব্য ছিল মধ্যাঞ্চলীয় টলুকা। এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়। মেক্সিকো স্টেট সিভিল প্রোটেকশন কোঅর্ডিনেটর আদ্রিয়ান হার্নান্দেজ জানান, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সান মাতেও আতেনকো অঞ্চলে, যা টলুকা বিমানবন্দর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে। বিমানটি আকাপুলকো থেকে উড্ডয়ন করেছিল। মোট আটজন যাত্রী এবং দুইজন ক্রু অবস্থান করছিলেন বিমানটিতে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি একটি ফুটবল মাঠে জরুরি অবতরণ চেষ্টা করছিল, কিন্তু পাশের একটি কারখানার ছাদে আঘাত লাগায় আগুন ধরে যায় বিমানটিতে। স্থানীয় মেয়র আনা মুনিজ জানান, দুর্ঘটনার কারণে প্রায় ১৩০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খোঁজার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও সাধারণ নাগরিকদের ঘটনাস্থলের আশপাশের বেশ কয়েক কিলোমিটার এলাকা এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।