খবর৭১ঃ বাংলাদেশের বিমান খাত ও পর্যটন খাতসহ বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগ ও কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে শ্রীলঙ্কা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এ আগ্রহের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার সুদর্শন দীপাল সুরেশ সেনাভিরত্ন।
বুধবার গণভবনে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার।
সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় উপ-প্রেস সচিব জানান, দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে আরও বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য শ্রীলঙ্কার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশজুড়ে একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে বাংলাদেশ এবং এখানে বিদেশিদের জন্য প্রদত্ত অনুকূল ব্যবসার সুযোগ গ্রহণ করে শ্রীলঙ্কার উদ্যোক্তাগণ বিনিয়োগ করতে পারেন।
হাইকমিশনার বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের বিমান খাত এবং নার্সদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি শিপিং, হাসপাতাল, পর্যটন, শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক খাতে বিনিয়োগ ও কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, তার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিগত কয়েক বছরে প্রভূত উন্নতি করতে সমর্থ হয়েছে। বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ এবং শিল্প আসা উচিত বলেও শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার অভিমত ব্যক্ত করেন।
হাইকমিশনার বলেন, তার দেশ সমুদ্র ভ্রমণ চালুর পাশাপাশি বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে কালচারাল ট্যুরিজম গড়ে তুলতে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় পর্যটন অবকাঠামো গড়ে তুলতে চায়।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সফলতার প্রশংসা করেন হাইকমিশনার। তিনি জানান, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের নেয়া ব্যবস্থায় তিনি অভিভূত।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার সরকার জনগণের মধ্যে করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করেছে। মানুষ সচেতন হয়েছে। যার ফলে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।’
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কূটনীতিকদের জন্য করোনা টিকা সরবরাহ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শ্রীলঙ্কান হাইকমিশনার।
এছাড়া, অটিজম বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন হাইকমিশনার। বলেন, ‘অটিজম সেক্টরে তার কাজ প্রশংসনীয়।’ অটিজম বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বিনিময়ে শ্রীলঙ্কা আগ্রহী বলে জানান তিনি।
এসময় অটিস্টিক, তৃতীয় লিঙ্গসহ বিপদগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারের পক্ষ থেকে অটিস্টিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং তাদের শিশুদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ এবং সহায়তা দিচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘হিজড়াদেরকেও মানুষ হিসেবে ভাতা দেয়া হচ্ছে এবং আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
হাইকমিশনার সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের অর্থ নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নিম্নআয়ের লোকজনের কাছে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগের ব্যাপক প্রশংসা করে একে ‘যুগান্তকারী’ বলেও উল্লেখ করেন।
নিজের ছাত্র জীবনের কথা স্মরণ করে হাইকমিশনার জানান, ‘দিল্লিতে পড়াশোনা করার সময় বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করার চেষ্টা করেছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
পিএমও সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন