ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ভোটাধিকার প্রয়োগের লক্ষ্যে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৮৫ হাজার ১৮৪ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ও নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরাও ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টাল ভোটিং আপডেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৮৫ হাজার ১৮৪ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্যে ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ জন পুরুষ ভোটার ও ২৯ হাজার ৬৩৭ জন নারী ভোটার রয়েছেন। প্রবাসীদের মধ্যে সৌদি আরব থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২২ হাজার ৪০১ জন। এছাড়া কাতারে ৪৪ হাজার ৫৪৩ জন, ওমানে ৩২ হাজার ৭৪১ জন, মালয়েশিয়ায় ৩১ হাজার ৪৯৭ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৪ হাজার ২৮৬ জন, যুক্তরাষ্ট্রে ২৩ হাজার ৩২ জন, যুক্তরাজ্যে ১৭ হাজার ৭৮ জন, সিঙ্গাপুরে ১৬ হাজার ৮৫৭ জন, কুয়েতে ১৬ হাজার ১০৯ জন, ইতালিতে ১২ হাজার ৯১৫ জন ও কানাডায় ১০ হাজার ৮২১ জন নিবন্ধন করেছেন। অপরদিকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’অ্যাপের মাধ্যমে আজ বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দেশে অবস্থানরত ৫২ হাজার ৯৯৪ জন বাংলাদেশি ভোটার ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট, এই ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন। জেলা অনুযায়ী নিবন্ধন: পোস্টাল ভোট বিডি’অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ কুমিল্লা জেলায় ৫০ হাজার ৯৩৬ জন। এছাড়া ঢাকা জেলায় ৪৩ হাজার ৮৮১জন, চট্টগ্রামে ৪২ হাজার ৬৬ জন, নোয়াখালীতে ২৯ হাজার ৫২৩ জন ও সিলেটে ২১ হাজার ৫৭৩ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। নির্বাচনী আসন অনুযায়ী নিবন্ধন: অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ফেনী-৩ আসনে ৭ হাজার ৯১৭ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ৭ হাজার ৩৩৩ জন, নোয়াখালী-১ আসনে ৭ হাজার ১৩১ জন, কুমিল্লা-১০ আসনে ৬ হাজার ৮৩০ জন ও নোয়াখালী-৩ আসনে ৬ হাজার ৫৭৬ জন ভোটার পোস্টাল ভোট দিতে নিবন্ধন করেছেন। প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনের বিষয়ে আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি-এসডিআই) প্রকল্পের ‘টিম লিডার’ সালীম আহমাদ খান বাসসকে বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের নিবন্ধন এখন যেভাবে চলছে, আমরা আশাবাদী পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সংখ্যা কমপক্ষে ৫ লাখ হবে। এছাড়া দেশের মধ্যে ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট (আইসিপিভি) অন্তত ১০ লাখ হওয়া উচিত।’ তিনি বলেন, সাইবার চ্যালেঞ্জসহ সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই আমরা সামনে অগ্রসর হচ্ছি। তিনি আরো বলেন, যতদ্রুত সম্ভব প্রবাসীদের কাছে ব্যালট পৌছানোর কার্যক্রম শুরু করব। তিনি আরো জানান, ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোটিংয়ে খরচ পড়বে মাত্র ২২ টাকা। যেখানে প্রবাসীদের জন্য এই খরচ হবে গড়ে ৭০০ টাকা। নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিতদের নিবন্ধন ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বর: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে 'পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এক বার্তায় বলা হয়েছে, 'ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বরে মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে মাধ্যমে নিবন্ধন করুন।' আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারদের নিবন্ধন ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর: পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারদের ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর করতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে ইসি বার্তায় বলা হয়েছে, ''ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারগণ ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করুন।' ইসির অপর এক বার্তায় বলা হয়েছে, 'পোস্টাল ব্যালট পেতে হলে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময় আপনার অবস্থানকালীন দেশের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী সঠিক ঠিকানা প্রদান করুন। প্রয়োজনে কর্মস্থল অথবা পরিচিতজনের ঠিকানা প্রদান করুন। সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা প্রদান ব্যতিরেকে পোস্টাল ব্যালট পেপার ভোটারগণের নিকট প্রেরণ করা সম্ভব হবে না। সরকারি চাকরিজীবীদের নিবন্ধন ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত: নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরা তফসিল ঘোষণার পর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন। এ বিষয়ে ইসি’র এক বার্তায় বলা হয়, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-২০২৬ উপলক্ষ্যে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ, নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবী ও আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারগণকে ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট (আইসিপিভি)-এর মাধ্যমে আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ এ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। গত ১৮ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ উদ্বোধন করেন এবং ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য ১৪৮টি নির্দিষ্ট দেশে ভোটার নিবন্ধনের সময়সূচি ঘোষণা করেন। পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে প্রবাসী ভোটারকে অবশ্যই যেখান থেকে ভোট দেবেন, সে দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে। নিবন্ধনের জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপটি ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে।
শ্রম আইন ও শ্রমিক অধিকার সংস্কারে নেওয়া উদ্যোগের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। সংস্থাটির মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ. হুংবো বলেছেন, সাম্প্রতিক সংস্কারগুলো বাংলাদেশের শ্রমমানকে আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যেতে সহায়ক হবে। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গতকাল বুধবার বাংলাদেশ সরকারকে পাঠানো এক চিঠিতে আইএলও মহাপরিচালক এই মন্তব্য করেন। প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর পাঠানো এক চিঠির জবাবে হুংবো এই প্রশংসা করেন। লুৎফে সিদ্দিকীর ওই চিঠিতে বাংলাদেশে চলমান শ্রম সংস্কারের অগ্রগতি ও দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হয়। চিঠিতে লুৎফে সিদ্দিকী উল্লেখ করেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্পষ্ট নির্দেশনায় শ্রম সংস্কারের ক্ষেত্রে অতীতের ধীরগতির প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে গতি, প্রক্রিয়া ও অগ্রগতিতে একটি স্পষ্ট পরিবর্তন আনা হয়েছে। চিঠিতে আইএলও মহাপরিচালক লেখেন, শ্রম সংস্কারের বিস্তৃত কর্মসূচি গ্রহণের জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এ অন্তর্ভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলোর কথা উল্লেখ করেন তিনি। চিঠিতে আইএলও মহাপরিচালক আরও উল্লেখ করেন, পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য এবং কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি-সংক্রান্ত অতিরিক্ত আইএলও কনভেনশন অনুসমর্থন বাংলাদেশের জন্য ‘আরেকটি ঐতিহাসিক মাইলফলক’। গত ২০ নভেম্বর জেনেভায় শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন এসব কনভেনশনের অনুসমর্থনপত্র জমা দেন। আইএলও-কে পাঠানো চিঠির উপসংহারে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, এসব পদক্ষেপ সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশের শ্রমমানকে স্থায়ীভাবে আরো উন্নত স্তরে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, এখানে শুধু চূড়ান্ত ফলাফল নয়, বরং পুরো সংস্কার প্রক্রিয়াটিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আইএলও মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ. হুংবো চিঠির শেষাংশে এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় সরকার, শ্রমিক ও মালিক সংগঠনগুলোকে কারিগরি সহায়তা দিতে আইএলও’র ওপর আস্থা রাখার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষে আলিম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন থেকে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের বিশেষ বিবেচনায় অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের ফের সুযোগ দেয়া হয়েছে। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দেয়া যাবে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। তথ্য এন্ট্রির শেষ সময় ১ ফেব্রুয়ারি। আজ বৃহস্পতিবার মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সব মাদরাসা প্রধানদের পাঠানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন আলিম পর্যায়ে ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষা-২০২৭ আলিম শ্রেণিতে যে সব শিক্ষার্থী অনলাইনে কোনো মাদরাসায় ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারেনি, সে সব শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ইলেকট্রনিক স্টুডেন্ট ইনফরমেশন ফরম (ইএসআইএফ) পূরণ করার জন্য বলা হয়েছে। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিতে হবে ২০২৬ সালের ১ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। তথ্য এন্ট্রির শেষ সময় ১ ফেব্রুয়ারি। আলিম শ্রেণির নিয়মিত শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশনসহ অন্যান্য ফি ৬৮৫ টাকা। অনিয়মিত শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে পাঠ বিরতি ফি ১৫০ টাকাসহ ৮৩৫ টাকা।
ভারতে পলাতক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা একের পর এক জুলাই গণ অভ্যুত্থানকারীদের হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে এবং তার দলের অনুসারীরা যদি জামিন পায় এটা জামিনের কোনো নিয়মনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না বলে উল্লেখ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের শেষ কর্মদিবস ছিল। আমি উনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছিলাম। জাতির একটা অত্যন্ত সন্ধিক্ষণে উনি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিয়েছেন। উনি আমাদের যে জুলাই গণঅভ্যুত্থান আছে, সেটার যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণ করার জন্য বিচার বিভাগীয় যে সংস্কারগুলো ছিল সেই সংস্কারগুলোর ক্ষেত্রে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন।’ আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যেই আইনগুলোই করেছি সবকিছুর পেছনে উনার সমর্থন ছিল। আমাদের বিভিন্ন সময় যে বিভিন্ন কনসার্ন ছিল, তা ব্যক্ত করেছি। একটা বিষয় আপনাদের বলে নেই- এখন প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। যেমন ধরেন- হাইকোর্টের কোন কোন বেঞ্চ অস্বাভাবিক জামিন দিয়ে দিচ্ছে। এটা নিয়ে আমি আমার কনসার্নের কথা প্রধান বিচারপতিকে এর আগে দেখা করে জানিয়েছিলাম। আজকেও জানিয়েছি। আমি আপনাদের প্রকাশ্যে বলে গেলাম এর আগে যতবার দেখা হয়েছে প্রধান বিচারপতিকে বলেছি, উনি কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।’ তিনি বলেন, যে বেঞ্চগুলো থেকে চার ঘণ্টায় আটশ’ জামিন দেওয়া হয়েছিল। তিনি (প্রধান বিচারপতি) তাদেরকে ডেকেও পাঠিয়েছিলেন। উনি উনার মতো ব্যবস্থা নিয়েছেন। তারপর এই জামিনের প্রকোপ কিছুটা কমেছে, কিন্তু তা এখন অব্যাহত আছে। যে অস্বাভাবিক জামিন- যেখানে একজন ভয়ঙ্কর ব্যক্তি যিনি জামিন পেয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যারা নায়ক আছে তাদের ওপর হামলা করতে পারেন। এই ধরনের জামিন যখন হয় তখন আমরা প্রচন্ড সংকিত আতঙ্কিত এবং উদ্বিগ্ন বোধ করি। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের হাইকোর্টের ওপর কোনরকম কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই। নিয়ন্ত্রণ থাকার কথাও না। হাইকোর্টের অভিভাবক হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি। উনার কাছে আগেও এ ব্যাপার উৎকণ্ঠা জানিয়েছিলাম। আজকে আবারও জানিয়েছি এবং আমি আশা করি ভবিষ্যতে নতুন যে প্রধান বিচারপতি আসবে তার সঙ্গে আমার প্রথম যখন মিটিং হবে সেখানে আমি উনাকে বলব যে, আজকে যে ভারতে পলাতক ফ্যাসিস্ট নেত্রী শেখ হাসিনা একের পর এক আমাদের জুলাই গণ অভ্যুত্থানকারীদের হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন এবং তার দলের অনুসারীরা যদি জামিন পায় এটা জামিনের কোন নিয়মনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। কারণ আমাকে পটেনশিয়ালি খুন করতে পারে এমন একজনকে যদি কোন বিচারক জামিন দেয় তাহলে এই খুনের দায় দায়িত্ব উনার উপর পড়ে কিনা সেটা ওনাদেরকে বিবেচনা করা উচিত। আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন একটা দিকে গিয়েছে যে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্য আমাদের যেকোন এক্সটেন্টে যাকে যা বলার এটা আবার বলতে হবে। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি আমাদের যে নতুন প্রধান বিচারপতি হবেন ওনার সঙ্গে প্রথম মিটিংয়ে আমি এই ব্যাপারে বলব যে সমস্ত ক্ষেত্রে আইনগতভাবে জামিন প্রাপ্য অধিকার সেটা জামিন দিবে। বিচারকরা অবশ্যই দিবে। কিন্তু যেই অপরাধী বা যেই ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পেয়ে আপনাকে, আমাকে খুন করতে পারে বলে আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সে জামিন পেতে পারে না। আমরা এই ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’ প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, আমি মনে করি ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কোয়ালিফাইড সবচেয়ে সৎ একজন প্রধান বিচারপতিকে আমরা পেয়েছিলাম। এটাও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটা অর্জন। আগামীতেও আমরা বিচার বিভাগে এ রকম দক্ষ অভিভাবকের নেতৃত্বে বিচার বিভাগে যে সমস্ত অনিয়ম আছে বা যে সব ব্যাপারে প্রশ্ন আছে সেগুলো দূর করার ব্যাপারে কাজ করে যাব।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি ন্যূনতম পাঁচ বছর ধরে গুম থাকলে এবং জীবিত ফিরে না এলে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ডিসঅ্যাপিয়ার্ড’ বা ‘গুম’ হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে। মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল’-এর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দিতে পারবে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী বা অভিযোগকারী ব্যক্তিগত উদ্যোগে ট্রাইব্যুনালের জন্য আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ পাবেন। গুম হওয়া ব্যক্তির স্ত্রী বা তাঁর ওপর নির্ভরশীল পরিবারের কোনো সদস্য কমিশনের পূর্বানুমতি ছাড়াই গুম হওয়া ব্যক্তির সম্পত্তি ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া বৈঠকে ‘বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি সংরক্ষণ অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়াও নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। বাংলাদেশের হাওর অঞ্চলের ইকোসিস্টেম বিশ্বে বিরল ও অনন্য হলেও নদী ও নদীপথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, বিষ ও কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এবং পর্যটনের বিরূপ প্রভাবে এই পরিবেশব্যবস্থা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। জলাশয় রক্ষায় বিদ্যমান আইনি কাঠামোর সীমাবদ্ধতার বিষয়টিও বৈঠকে উঠে আসে। নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের দায়িত্ব, কর্তৃত্ব ও অধিক্ষেত্র সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হবে। জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের লক্ষ্যে সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারির বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সংরক্ষিত হাওর ও জলাভূমি এলাকা ঘোষণা, নিষিদ্ধ কার্যক্রম নির্ধারণ এবং এসব কার্যক্রম অপরাধ হিসেবে গণ্য করে দণ্ডের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। হাওর ও জলাভূমি এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ব্যতিক্রম সাপেক্ষে অধিদপ্তরের মতামত গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়, স্থানীয় অংশীজনদের সম্পৃক্ততা এবং সংরক্ষণ কার্যক্রমে তাঁদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে বিধি, প্রবিধান ও নির্দেশিকা প্রণয়নের ক্ষমতাও রাখা হয়েছে। বৈঠকে সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্নে বাংলাদেশের একটি নতুন দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। স্বাধীনতার পর থেকে জেনেভায় বাংলাদেশের একটি স্থায়ী মিশন থাকলেও বার্নে দূতাবাস না থাকায় এত দিন সেখান থেকেই জাতিসংঘ ও দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী ও কৌশলগত অংশীদার হওয়ায় বার্নে দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একজন রাষ্ট্রদূত, একজন ফার্স্ট সেক্রেটারি এবং কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু হবে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মোট ৮২টি মিশন অফিস রয়েছে। এ ছাড়া বৈঠকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির স্বাস্থ্যের বিষয়েও আলোচনা হয়। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। এ বিষয়ে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান নিয়মিতভাবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে খোঁজখবর নিচ্ছেন। হাদির চিকিৎসা তদারকিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গতকাল সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন। বৈঠকে চলতি বছর মহান বিজয় দিবস সুন্দর ও সুচারুভাবে উদযাপনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
ভারতে পলাতক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা একের পর এক জুলাই গণ অভ্যুত্থানকারীদের হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে এবং তার দলের অনুসারীরা যদি জামিন পায় এটা জামিনের কোনো নিয়মনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না বলে উল্লেখ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের শেষ কর্মদিবস ছিল। আমি উনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছিলাম। জাতির একটা অত্যন্ত সন্ধিক্ষণে উনি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিয়েছেন। উনি আমাদের যে জুলাই গণঅভ্যুত্থান আছে, সেটার যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণ করার জন্য বিচার বিভাগীয় যে সংস্কারগুলো ছিল সেই সংস্কারগুলোর ক্ষেত্রে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন।’ আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যেই আইনগুলোই করেছি সবকিছুর পেছনে উনার সমর্থন ছিল। আমাদের বিভিন্ন সময় যে বিভিন্ন কনসার্ন ছিল, তা ব্যক্ত করেছি। একটা বিষয় আপনাদের বলে নেই- এখন প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। যেমন ধরেন- হাইকোর্টের কোন কোন বেঞ্চ অস্বাভাবিক জামিন দিয়ে দিচ্ছে। এটা নিয়ে আমি আমার কনসার্নের কথা প্রধান বিচারপতিকে এর আগে দেখা করে জানিয়েছিলাম। আজকেও জানিয়েছি। আমি আপনাদের প্রকাশ্যে বলে গেলাম এর আগে যতবার দেখা হয়েছে প্রধান বিচারপতিকে বলেছি, উনি কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।’ তিনি বলেন, যে বেঞ্চগুলো থেকে চার ঘণ্টায় আটশ’ জামিন দেওয়া হয়েছিল। তিনি (প্রধান বিচারপতি) তাদেরকে ডেকেও পাঠিয়েছিলেন। উনি উনার মতো ব্যবস্থা নিয়েছেন। তারপর এই জামিনের প্রকোপ কিছুটা কমেছে, কিন্তু তা এখন অব্যাহত আছে। যে অস্বাভাবিক জামিন- যেখানে একজন ভয়ঙ্কর ব্যক্তি যিনি জামিন পেয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যারা নায়ক আছে তাদের ওপর হামলা করতে পারেন। এই ধরনের জামিন যখন হয় তখন আমরা প্রচন্ড সংকিত আতঙ্কিত এবং উদ্বিগ্ন বোধ করি। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের হাইকোর্টের ওপর কোনরকম কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই। নিয়ন্ত্রণ থাকার কথাও না। হাইকোর্টের অভিভাবক হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি। উনার কাছে আগেও এ ব্যাপার উৎকণ্ঠা জানিয়েছিলাম। আজকে আবারও জানিয়েছি এবং আমি আশা করি ভবিষ্যতে নতুন যে প্রধান বিচারপতি আসবে তার সঙ্গে আমার প্রথম যখন মিটিং হবে সেখানে আমি উনাকে বলব যে, আজকে যে ভারতে পলাতক ফ্যাসিস্ট নেত্রী শেখ হাসিনা একের পর এক আমাদের জুলাই গণ অভ্যুত্থানকারীদের হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন এবং তার দলের অনুসারীরা যদি জামিন পায় এটা জামিনের কোন নিয়মনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। কারণ আমাকে পটেনশিয়ালি খুন করতে পারে এমন একজনকে যদি কোন বিচারক জামিন দেয় তাহলে এই খুনের দায় দায়িত্ব উনার উপর পড়ে কিনা সেটা ওনাদেরকে বিবেচনা করা উচিত। আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন একটা দিকে গিয়েছে যে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্য আমাদের যেকোন এক্সটেন্টে যাকে যা বলার এটা আবার বলতে হবে। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি আমাদের যে নতুন প্রধান বিচারপতি হবেন ওনার সঙ্গে প্রথম মিটিংয়ে আমি এই ব্যাপারে বলব যে সমস্ত ক্ষেত্রে আইনগতভাবে জামিন প্রাপ্য অধিকার সেটা জামিন দিবে। বিচারকরা অবশ্যই দিবে। কিন্তু যেই অপরাধী বা যেই ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পেয়ে আপনাকে, আমাকে খুন করতে পারে বলে আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সে জামিন পেতে পারে না। আমরা এই ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’ প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, আমি মনে করি ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কোয়ালিফাইড সবচেয়ে সৎ একজন প্রধান বিচারপতিকে আমরা পেয়েছিলাম। এটাও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটা অর্জন। আগামীতেও আমরা বিচার বিভাগে এ রকম দক্ষ অভিভাবকের নেতৃত্বে বিচার বিভাগে যে সমস্ত অনিয়ম আছে বা যে সব ব্যাপারে প্রশ্ন আছে সেগুলো দূর করার ব্যাপারে কাজ করে যাব।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ভোটাধিকার প্রয়োগের লক্ষ্যে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৮৫ হাজার ১৮৪ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ও নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরাও ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টাল ভোটিং আপডেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৮৫ হাজার ১৮৪ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্যে ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ জন পুরুষ ভোটার ও ২৯ হাজার ৬৩৭ জন নারী ভোটার রয়েছেন। প্রবাসীদের মধ্যে সৌদি আরব থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২২ হাজার ৪০১ জন। এছাড়া কাতারে ৪৪ হাজার ৫৪৩ জন, ওমানে ৩২ হাজার ৭৪১ জন, মালয়েশিয়ায় ৩১ হাজার ৪৯৭ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৪ হাজার ২৮৬ জন, যুক্তরাষ্ট্রে ২৩ হাজার ৩২ জন, যুক্তরাজ্যে ১৭ হাজার ৭৮ জন, সিঙ্গাপুরে ১৬ হাজার ৮৫৭ জন, কুয়েতে ১৬ হাজার ১০৯ জন, ইতালিতে ১২ হাজার ৯১৫ জন ও কানাডায় ১০ হাজার ৮২১ জন নিবন্ধন করেছেন। অপরদিকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’অ্যাপের মাধ্যমে আজ বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দেশে অবস্থানরত ৫২ হাজার ৯৯৪ জন বাংলাদেশি ভোটার ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট, এই ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন। জেলা অনুযায়ী নিবন্ধন: পোস্টাল ভোট বিডি’অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ কুমিল্লা জেলায় ৫০ হাজার ৯৩৬ জন। এছাড়া ঢাকা জেলায় ৪৩ হাজার ৮৮১জন, চট্টগ্রামে ৪২ হাজার ৬৬ জন, নোয়াখালীতে ২৯ হাজার ৫২৩ জন ও সিলেটে ২১ হাজার ৫৭৩ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। নির্বাচনী আসন অনুযায়ী নিবন্ধন: অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ফেনী-৩ আসনে ৭ হাজার ৯১৭ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ৭ হাজার ৩৩৩ জন, নোয়াখালী-১ আসনে ৭ হাজার ১৩১ জন, কুমিল্লা-১০ আসনে ৬ হাজার ৮৩০ জন ও নোয়াখালী-৩ আসনে ৬ হাজার ৫৭৬ জন ভোটার পোস্টাল ভোট দিতে নিবন্ধন করেছেন। প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনের বিষয়ে আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি-এসডিআই) প্রকল্পের ‘টিম লিডার’ সালীম আহমাদ খান বাসসকে বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের নিবন্ধন এখন যেভাবে চলছে, আমরা আশাবাদী পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সংখ্যা কমপক্ষে ৫ লাখ হবে। এছাড়া দেশের মধ্যে ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট (আইসিপিভি) অন্তত ১০ লাখ হওয়া উচিত।’ তিনি বলেন, সাইবার চ্যালেঞ্জসহ সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই আমরা সামনে অগ্রসর হচ্ছি। তিনি আরো বলেন, যতদ্রুত সম্ভব প্রবাসীদের কাছে ব্যালট পৌছানোর কার্যক্রম শুরু করব। তিনি আরো জানান, ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোটিংয়ে খরচ পড়বে মাত্র ২২ টাকা। যেখানে প্রবাসীদের জন্য এই খরচ হবে গড়ে ৭০০ টাকা। নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিতদের নিবন্ধন ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বর: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে 'পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এক বার্তায় বলা হয়েছে, 'ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বরে মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে মাধ্যমে নিবন্ধন করুন।' আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারদের নিবন্ধন ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর: পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারদের ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর করতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে ইসি বার্তায় বলা হয়েছে, ''ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারগণ ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করুন।' ইসির অপর এক বার্তায় বলা হয়েছে, 'পোস্টাল ব্যালট পেতে হলে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময় আপনার অবস্থানকালীন দেশের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী সঠিক ঠিকানা প্রদান করুন। প্রয়োজনে কর্মস্থল অথবা পরিচিতজনের ঠিকানা প্রদান করুন। সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা প্রদান ব্যতিরেকে পোস্টাল ব্যালট পেপার ভোটারগণের নিকট প্রেরণ করা সম্ভব হবে না। সরকারি চাকরিজীবীদের নিবন্ধন ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত: নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরা তফসিল ঘোষণার পর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন। এ বিষয়ে ইসি’র এক বার্তায় বলা হয়, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-২০২৬ উপলক্ষ্যে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ, নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবী ও আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারগণকে ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট (আইসিপিভি)-এর মাধ্যমে আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ এ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। গত ১৮ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ উদ্বোধন করেন এবং ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য ১৪৮টি নির্দিষ্ট দেশে ভোটার নিবন্ধনের সময়সূচি ঘোষণা করেন। পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে প্রবাসী ভোটারকে অবশ্যই যেখান থেকে ভোট দেবেন, সে দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে। নিবন্ধনের জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপটি ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে।
দক্ষিণ এশিয়ার হিমালয়ের পাদদেশ থেকে ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত বিশাল জনপদ আজ এক ভয়াবহ স্বাস্থ্য সংকটের মুখে। এক সময়ের উর্বর এই অঞ্চলটি এখন বিশ্বের অন্যতম দূষিত বায়ুস্তরে ঢাকা পড়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানের এই অঞ্চলে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ প্রতিদিন অস্বাস্থ্যকর বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে। 🌫️ বায়ু দূষণ এখন আর শুধু পরিবেশগত সমস্যা নয়; এটি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি গুরুতর উন্নয়ন চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর দূষণের কারণে প্রায় ১০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। একই সঙ্গে এতে আঞ্চলিক অর্থনীতিতে জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশের সমপরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সীমান্তপারের দূষণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত ‘পরিবর্তনের নিশ্বাস: ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি এবং হিমালয়ের পাদদেশে (আইজিপি-এইচএফ) পরিষ্কার বাতাসের সমাধান’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগজনক চিত্র উঠে এসেছে। বিশ্বব্যাংক জানায়, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত আইজিপি-এইচএফ অঞ্চলটি বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান উৎস। এখানে রান্না ও গরমের জন্য কঠিন জ্বালানি পোড়ানো, ফিল্টারবিহীন জীবাশ্ম জ্বালানি ও জৈববস্তু পোড়ানো, অদক্ষ যানবাহনের ব্যবহার এবং শিল্প দূষণ বড় ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া কৃষকদের ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো, অপরিকল্পিত সার ব্যবস্থাপনা এবং পরিবার ও প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য পোড়ানোর কারণেও দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এসব উৎস থেকেই এই অঞ্চলের বাতাস ক্রমেই বিষাক্ত হয়ে উঠছে। প্রতিবেদনে পরিষ্কার বাতাস নিশ্চিত করতে সমাধানগুলোকে তিনটি মূল ক্ষেত্রে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমত, রান্না, শিল্প, পরিবহন, কৃষি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উৎসস্থলেই নির্গমন কমানো। দ্বিতীয়ত, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া। তৃতীয়ত, কার্যকর নিয়ন্ত্রক কাঠামো, বাজারভিত্তিক উদ্যোগ এবং আঞ্চলিক সমন্বয়ের মাধ্যমে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যাতে দীর্ঘমেয়াদি বহুখাতভিত্তিক অগ্রগতি বজায় থাকে। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশগত অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, এই প্রতিবেদনটি দেখায় যে সমাধানগুলো বাস্তবায়নের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। নীতিনির্ধারকদের জন্য এটি একটি সমন্বিত ও প্রমাণভিত্তিক রোডম্যাপ, যা পরিষ্কার প্রযুক্তি গ্রহণে পরিবার, কৃষক ও উদ্যোগগুলোকে উৎসাহিত করবে। সমাধান বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য প্রতিবেদনে চারটি বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো—নির্ভরযোগ্য তথ্যের প্রাপ্যতা, পরিবেশবান্ধব আচরণ ও বিনিয়োগ উৎসাহিত করা, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সমন্বিত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা এবং ক্লিন এনার্জি ও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অবকাঠামো উন্নয়ন। দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বব্যাংকের পরিবেশ অনুশীলন ব্যবস্থাপক অ্যান জেনেট গ্লোবার বলেন, পরিষ্কার বাতাস নিশ্চিত করতে স্থানীয়, জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে ধারাবাহিক সহযোগিতা অপরিহার্য। সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমেই দূষণ কমিয়ে লাখ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করা এবং সবার জন্য নিরাপদ বাতাস নিশ্চিত করা সম্ভব। 🌱
মালয়েশিয়ায় সিঙ্গাপুর সীমান্তসংলগ্ন রাজ্য জোহর বাহরু ও নেগারি সেম্বিলান রাজ্যে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশিসহ ৪০২ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে মালয়েশিয়ার একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। আটকদের মধ্যে ২৯৯ জন মিয়ানমারের নাগরিক, ৭২ জন বাংলাদেশি, ২২ জন ভারতীয়, তিনজন ইন্দোনেশীয়, দুজন নেপালি এবং একজন করে পাকিস্তান ও ফিলিপাইনের নাগরিক রয়েছেন। বাকিরা অন্য দেশের নাগরিক। জোহর বাহরু ইমিগ্রেশন পরিচালক দাতুক মোহাম্মদ রুশদি মোহাম্মদ দারুস জানান, গত মঙ্গলবার জোহর বাহরুর একটি কম্পিউটার কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৩৫৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়। এ সময় অবৈধভাবে অভিবাসী নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে কারখানাটির দুই মানবসম্পদ কর্মকর্তাকেও আটক করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, অভিযানের সময় অবৈধ অভিবাসীরা পালানোর চেষ্টা করলে যৌথ আইন প্রয়োগকারী বাহিনী দ্রুত কারখানার সব প্রবেশ ও প্রস্থানপথ ঘিরে ফেলে অভিযান পরিচালনা করে। এদিকে নেগারি সেম্বিলান রাজ্যের নিলাই এলাকায় একটি লৌহ কারখানায় পরিচালিত পৃথক অভিযানে ৪৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়। আটক সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। নেগারি সেম্বিলান রাজ্য ইমিগ্রেশন পরিচালক কেনিথ তান আই কিয়াং জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পরিচালিত অভিযানে মোট ১১৭ জনকে যাচাই-বাছাই করা হয়। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৪৩ বছর বয়সী ৪৬ জন বাংলাদেশিকে অবৈধভাবে অবস্থানের দায়ে আটক করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫৯/৬৩ এবং ইমিগ্রেশন রেগুলেশন ১৯৬৩ অনুযায়ী তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে।
হিমালয় অঞ্চল থেকে বয়ে আসা হিম বাতাসে দেশে জেঁকে বসেছে শীত। কয়েক দিন ধরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে তাপমাত্রা। ভোরে হালকা কুয়াশা থাকলেও ঘন কুয়াশার দেখা মেলেনি। এরপর সকাল গড়াতেই আকাশে ঝলমলে রোদ দেখা যায়, তবে শীতের দাপট তাতে কমেনি। এ অবস্থায় সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হকের সই কার ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। পূর্বাভাসে বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এদিন বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়—অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়—অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়—অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়—অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়—অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। ভোরের দিকে কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, আগামী ৫ দিনে শেষের দিকে তাপমাত্রা কমতে পারে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বৈশ্বিক আসরে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে সপ্তাহখানেক আগে ভারত যাবে টাইগাররা। সেখানে মূল টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দুই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। এরই মধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য বাংলাদেশের প্রতিপক্ষও। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন বিসিবির অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম। তিনি জানান, বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ হিসেবে ২ এবং ৪ ফেব্রুয়ারি নামিবিয়া ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবে টাইগাররা। সংবাদমাধ্যমকে ফাহিম বলেন, ‘বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ২৮ জানুয়ারি আমরা ব্যাঙ্গালুরু যাবো। নামিবিয়া ও আফগানিস্তানের সাথে দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলব।’ আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ অব ডেথে জায়গায় পেয়েছে বাংলাদেশ। ‘সি’ গ্রুপে টাইগারদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নেপাল ও ইতালি। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ৭ ফেব্রুয়ারি লিটনদের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টা সময় প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে আসা ইতালির বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ১৪ ফেব্রুয়ারি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়বে টাইগাররা। বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ১৭ ফেব্রুয়ারি, নেপালের বিপক্ষে। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় ম্যাচটি শুরু হবে। প্রতিটি গ্রুপ পর্ব থেকে দুটি করে দল সুপার এইটে জায়গা করে নেবে। উল্লেখ্য, বিশ্বকাপে অংশ নিতে ২৮ জানুয়ারি ভারতের উদ্দেশে রওনা দেবে বাংলাদেশ দল। তার আগে দেশেই ২-৩ দিনের জন্য ছোটখাটো একটি ক্যাম্প করার পরিকল্পনা আছে বিসিবির।
এ এইচ এম বজলুর রহমান
আন্তর্জাতিক কেবল টিভি শো' ২০২৫ এর পর্দা উন্মোচন হল। কেবল টিভি, ব্রডব্যান্ড, ওটিটিসহ বর্তমান সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নতুন প্রযুক্তির খোঁজ,পাশাপাশি বর্তমান প্রজন্মকে আরও বেশি আপডেট টেকনোলজির ব্যবহারে যুক্ত করে তোলার লক্ষ্যে শুরু হয়েছে ২৬তম আন্তর্জতিক কেবল টিভি শো। কেবল টিভি ইকুইপমেন্টস ট্রেডার্স অ্যান্ড ম্যানুফাকচারার্স আয়োজিত এই মেগা মেলায় সার্ক অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কেবল অ্যান্ড ব্রডব্যান্ড শো হিসেবে স্বীকৃত। বুধবার শুরু হওয়া তিনদিনের এই মেলা চলবে শনিবার ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরমা আইল্যান্ডের মিলন মেলার বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গণে এ বছর নতুন প্রযুক্তি এবং শিল্প সহায়ক যন্ত্রপাতি নিয়ে ৯০টি স্টল রয়েছে। যেখানে কেবল কানেকশন, ব্রডব্যান্ড, নেটওয়ার্কিং, সার্ভিলেন্স, ওটিটি'র মত টেকনোলজিক্যাল আপডেট সংক্রান্ত তথ্য এবং প্রযুক্তির নানা প্রদর্শনী থাকছে। ভারতের দিল্লী, হরিয়ানা, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, কেরল, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, বিহারসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের কেবল অপারেটর, ব্রডব্যান্ড সার্ভিস প্রোভাইডার, এমএসও এবং ব্রডকাস্টাররা এবারের মেলায় যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রতিবেশী বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভুটানের প্রচুর কেবল অপারেটররা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন। তবে বাণিজ্য বাংলাদেশ সরকারের সবুজ সংকেত না থাকায় একই সঙ্গে ভিসা জটিলতায় এবারের মেলায় স্টল দিতে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ থেকে মেলায় যোগ দিয়েছে প্রায় ৬০ জন কেবল অপারেটরের একটি প্রতিনিধি দল। কেবল টিভি পরিষেবা ও ব্যবসার জন্য নতুন যে সমস্ত প্রযুক্তি এসেছে, স্টলে ঘুরে ঘুরে তার খোঁজখবর নিয়েছেন এবং ক্রয় করছেন। আইসিএনসিলের ডিরেক্টর সুরেশ শেঠিয়া জানিয়েছেন, এটি ভারতের সর্ববৃহৎ কেবল টিভি শো। যেখানে কেবল টিভি, ব্রডব্যান্ড, ওটিটি সব কিছু একসঙ্গে নিয়ে প্রদর্শিত হচ্ছে। তিনি বলেন, যখনই কোনো টেকনোলজি আপডেট হয়, তখন মানুষই লাভবান হন। ফলে এই প্রদর্শনী মানুষকে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিষেবা দেয়ার লক্ষ্যেই করা হয়। বাংলাদেশের প্রত্যক্ষ উপস্থিতি না থাকায় তিনিও আফসোস করেন তবে তার প্রত্যাশা, দ্রুতই এই সমস্যা কেটে যাবে। বাংলাদেশ থেকে আগত প্রতিনিধিরা জানান, ভারতের ভিসা নীতির জটিলতার কারণে এই বছর কয়েক'শ কেবল অপারেটররা আসতে পারেননি। বিগত বছরে এই কেবল টিভি শো অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই এ বছর অনেকের যোগদান করার কথা ছিল। আগামী দিনে আরও বেশি আপডেট টেকনোলজির ব্যবহারে যুক্ত হবেন এবং বাংলাদেশের মানুষকে আন্তর্জাতিক মানের পরিষেবা প্রদান করার চেষ্টা করবেন বলে জানান।
ব্রাজিলের একটি শহরে প্রবল বাতাসে ধসে পড়েছে রেপ্লিকা ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’। ১১০ ফুট উচ্চতার এই ‘স্ট্যাচু' ভাঙার দৃশ্য মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল তিনটার দিকে রিও গ্রান্দে দো সুল অঙ্গরাজ্যের গুয়াইবা শহরে ওই ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ঝড়ের তীব্রতায় স্ট্যাচুটি ধীরে ধীরে একদিকে হেলে পড়তে শুরু করে। এরপর মুহূর্তের মধ্যেই পার্কিং এলাকায় আছড়ে পড়ে। তবে, এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে প্রতীকী হিসেবে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর স্ট্যাচু অব লিবার্টির রেপ্লিকাটি স্থাপন করে।
মার্কিন সিনেটে পাস হলো রেকর্ড ৯০১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা বিল। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে ৭৭-২০ ভোটে পাস হয় বিলটি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাক্ষর করলেই আইনে পরিণত হবে ন্যাশনাল ডিফেন্স অথোরাইজেশন অ্যাক্ট (এনডিএএ)। এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। অনুমোদন পাওয়া বিলটিতে মূলত চীন-রাশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবেলা করতে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিধান রাখা হয়েছে। এর আওতায় আগামী দুই বছরে ইউক্রেনকে ৪শ' করে মোট ৮শ' মিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দেবে ওয়াশিংটন। আরেক মিত্র ইসরায়েল পাবে ৬শ' মিলিয়ন ডলারের সহায়তা। বাজেটে সিরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা সিজার আইনও বাতিল করা হবে। এছাড়া, তাইওয়ানের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে এক বিলিয়ন ডলার। কমানো হবে ইউরোপ ও দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েনকৃত মার্কিন সেনাদের সংখ্যা। প্রায় ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে সামরিক সদস্যদের বেতন। উল্লেখ্য, এনডিএএ হলো যুক্তরাষ্ট্রের অতি বিরল আইনগুলোর একটি, যা সাধারণত দ্বিদলীয় সমর্থন পেয়ে থাকে। তবে এ বছরের প্রক্রিয়াটা ছিল তুলনামূলক জটিল। এবার ট্রাম্পের বিরোধিতার কারণে বিল থেকে কয়েকটি কর্মসূচি বাদ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বৈচিত্র্য, সমতা, অন্তর্ভুক্তি এবং জলবায়ুকেন্দ্রিক বিভিন্ন উদ্যোগের ১৬০ কোটি ডলারের তহবিল।
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে ইহুদিদের ওপর হামলার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দুই হামলাকারী। তদন্ত কর্মকর্তা কিংবা ক্যানবেরা কর্তৃপক্ষের কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশের আগেই এক হামলাকারীকে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বলে খবর প্রচার করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও ভারতীয় গণমাধ্যম। তবে পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই শেষে জানা যায়, নাভিদ আকরাম নামের আসল হামলাকারী একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। আর তার বাবা অপর হামলাকারী সাজিদ আকরাম একজন ভারতীয় নাগরিক। অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৯৮ সালে হায়দরাবাদ থেকে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমান সাজিদ আকরাম নামের ওই ব্যক্তি। তার পাসপোর্টসহ এ সংক্রান্ত একাধিক প্রমাণ হাতে পেয়েছে প্রশাসন। ভারতীয় নাগরিককে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত প্রচার করায় হামলাকারীদের পরিচয় নিয়ে সৃষ্টি হয় ধোঁয়াশার। এক হামলাকারীর সাথে নাম মিলে যাওয়ায় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে অন্য এক নিরাপরাধ পাকিস্তানির ছবি। এতে চরম হয়রানি শিকার হন নাভিদ আকরাম নামের ৩০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি। হামলাকারীদের পরিচয় নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে গুজব রটানোর অভিযোগ তুলেছে পাকিস্তান। একে উদ্দেশ্য প্রণোদিত আখ্যা দিয়ে ক্ষোভ জানান, দেশটির তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণ পরই বেশ কিছু গণমাধ্যম জানিয়ে দেয় যে হামলাকারীদের একজন পাকিস্তানি। এ দাবির পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ বা যাচাই-বাছাই ছিল না। তবে আমরা জানি, পাকিস্তানকে কলঙ্কিত করার উদ্দেশ্যে কিছু শত্রু দেশ এ কাজ করেছে। ২৭ বছর আগে ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমানোর পর, মাত্র ৬ বার নিজ দেশে গিয়েছিল প্রাণ হারানো হামলাকারী সাজিদ। তবে সেখানে থাকা পরিবারের সাথে তার যোগাযোগ ছিল খুবই সীমিত। আর তার উগ্রবাদী মানসিকতা সম্পর্কেও জানতো না তারা- জানিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।