ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে অংশ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীদের ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে নিবন্ধন সংখ্যা ৪ লাখ ৪৫ হাজার ২৬ জন ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৯ জন এবং মহিলা ভোটার ২৭ হাজার ৬৬৫ জন। নিবন্ধিতদের মধ্যে ৬ হাজার ৬০৮ জনের নিবন্ধন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে, আর ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪১৮ জনের নিবন্ধন ইতিমধ্যে অনুমোদিত হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো ভোট গ্রহণে আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রবাসী, আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তি এবং ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতরা ভোট দিতে পারবেন। ভোট দিতে হলে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নিবন্ধনকারীদের ঠিকানায় ভোটের ব্যালট ডাকযোগে পাঠানো হবে। ভোটাররা ভোট পূরণ করে ফিরতি খামে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন। নিবন্ধন বর্তমানে ৫০টিরও বেশি দেশে চলছে, যার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, ব্রাজিল, হংকং, মিশর, মোজাম্বিক, লিবিয়া, মরিশাস, উগান্ডা, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, আলজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে, পেরু, গাম্বিয়া সহ অন্যান্য দেশগুলো রয়েছে। ইসি জানিয়েছে, পূর্ববর্তী পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থা কার্যকর ছিল না। তাই এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট নেওয়া হয়েছে। প্রবাসীরা ইতিমধ্যেই ভালো সাড়া দিয়েছেন। আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তি এবং ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতদের অংশগ্রহণের আগ্রহ নিবন্ধনের সময় বোঝা যাবে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসি। প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ প্রবাসীর ভোট টানার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
নানা আপত্তি ও বর্জনের ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দ্বাদশ সমাবর্তন আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে ৬০, ৬১ ও ৬২তম ব্যাচের মোট ৫,৯৬৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবেন। সমাবর্তনের সভাপতি হিসেবে থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, এবং সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ। সমাবর্তনের ভেন্যু বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়াম ইতিমধ্যে সাজানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মেরামত, প্রশাসনিক ভবন রঙ করা, আলপনা আঁকা এবং রঙিন বাতি, পতাকা ও ফেস্টুন স্থাপন করা হয়েছে। প্রধান ফটক, বিনোদপুর ও কাজলা ফটকে নতুন তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। সমাবর্তনের মূল ভেন্যুতে প্রায় সাত হাজার দর্শকের জন্য বিশাল প্যান্ডেল, ফ্যান ও বড় এলইডি স্ক্রিন বসানো হয়েছে। সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হবে। এতে শোভাযাত্রা, স্বাগত বক্তব্য, ডিগ্রি প্রদান, সমাবর্তন বক্তৃতা এবং সভাপতির বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত। পরে দুপুর আড়াইটায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জানিয়েছেন, পুলিশ প্রশাসন, প্রক্টরিয়াল টিম ও গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার দুই সন্দেহভাজন ময়মনসিংহ সীমান্ত হয়ে ভারতে চলে গেছে বলে ধারণা করছে তদন্ত সংস্থা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত পার হওয়ার সময় কারা তাদের সহযোগিতা করেছে তা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। হাদির বড় ভাই ওমর ফারুক জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থায় নতুন করে কোনো অবনতি হয়নি। বর্তমানে শ্বাস-প্রশ্বাস, হার্টবিট ও হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল। সিংগাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হাদির চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে। চিকিৎসকরা নিউরোসার্জারি ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার টিমের মাধ্যমে তার ব্রেন, কিডনি, হৃদযন্ত্র ও ফুসফুস সচল রাখার চেষ্টা করছেন। হামলায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মো. কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। এছাড়া ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে রাখা হয়েছে। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিককে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, সন্দেহভাজন হামলাকারীরা ঘটনার পরপরই মিরপুর থেকে আশুলিয়া, গাজীপুর হয়ে ময়মনসিংহে পৌঁছায়। সেখানে তাদের অন্য একটি প্রাইভেট কারে নিয়ে সীমান্ত পার করে ভারতে পাঠানো হয়। তদন্তকারীরা মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ও সহযোগিতা খুঁজছে। পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট এলাকায় ১২ ডিসেম্বর হাদিকে গুলি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি সত্ত্বেও মস্তিষ্কে আঘাত ও ব্রেন স্টেমের চাপ থাকায় চিকিৎসা চলমান। পুলিশ জানাচ্ছে, রিমান্ডে থাকা আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা গাজীপুর সাফারি পার্ক বর্তমানে বেহাল দশায় পড়েছে। পার্কের বিভিন্ন স্থাপনা নষ্ট ও প্রাণীর সংখ্যা কমার কারণে দর্শনার্থীরাও কমে গেছে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, পার্কের বেষ্টনী ও লেকগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। প্রাণীরা মানহীন খাবারের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে, ঘটছে রাজস্ব ফাঁকি, এবং বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী মারা যাচ্ছে। ২০১৯ সালের পর থেকে নীলগাই, সিংহ, জেব্রা, জিরাফ ও ক্যাঙারুসহ একাধিক প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। পার্কের একাধিক দর্শনীয় স্থান বন্ধ এবং ভাঙচুরের কারণে সাময়িক বন্ধ থাকতেও হয়েছে। স্থানীয়রা ও দর্শনার্থীরা অব্যবস্থাপনা, প্রাণীর প্রতি অবহেলা ও দালালদের দৌরাত্ম্যকে মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা দ্রুত সংস্কার ও সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন। পার্কের সহকারী বন সংরক্ষক জানিয়েছেন, কিছু প্রাণীর মৃত্যু হলেও প্রজনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং বনবিভাগ পার্কের স্বকীয়তা রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমানে পার্কে সাতটি বাঘ, দুইটি সিংহ, ২১টি ভালুক, ২ শতাধিক হরিণ, হাতি, জলহস্তি, ঘোড়া, মেকাউ, বিভিন্ন পাখি এবং সরীশূপসহ নানা প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। তবে দর্শনার্থীদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, বেষ্টনী ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা যথাযথ নয়, যা পার্কের আকর্ষণ কমিয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলার মূল অভিযুক্ত শুটার ফয়সালের বাবা-মাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০। গ্রেফতারকৃতরা হলেন— ফয়সল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে শুটার ফয়সলের বাবা মো. হুমায়ুন কবির (৭০) ও মা মোসা. হাসি বেগম (৬০)। মঙ্গলবার রাতে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-১০-এর একটি দল ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার হাসনাবাদ হাউসিং এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাচেষ্টা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি হিসেবে ফয়সালের বাবা ও মাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এর আগে এ ঘটনায় ফয়সালের স্ত্রী, বান্ধবী, শ্যালক, হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে একজন, সহযোগী কবীর এবং তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে সীমান্ত এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পরিবারের সম্মতিতে রোববার রাতে পল্টন থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। গত ১২ ডিসেম্বর গণসংযোগের উদ্দেশ্যে বিজয়নগর এলাকায় গেলে শরিফ ওসমান হাদি হামলার শিকার হন। চলন্ত রিকশায় থাকা অবস্থায় চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা এক আততায়ী তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলিটি হাদির মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর একই রাতে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। পরবর্তীতে সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য শরিফ ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ইন্টারন্যাশনাল শিপ অ্যান্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটি সিকিউরিটি (আইএসপিএস) কোড বাস্তবায়নে শতভাগ সাফল্য অর্জন করেছে। ইউএস কোস্ট গার্ড ইন্টারন্যাশনাল পোর্ট সিকিউরিটি দলের অফিসিয়াল পরিদর্শনে বন্দরের বিরুদ্ধে কোনো পর্যবেক্ষণ না থাকায় ‘জিরো অবজারভেশন’ অর্জিত হয়েছে, যা চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ও গৌরবময় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চলতি বছরের ২১-২২ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী ইউএস কোস্ট গার্ডের আইপিএস দল চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেন। সম্প্রতি প্রেরিত চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ও আইএসপিএস কোড বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো ধরনের আপত্তি বা পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করা হয়নি। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, আইএসপিএস কোড হলো ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) প্রণীত একটি বৈশ্বিক নিরাপত্তা কাঠামো। এর মূল উদ্দেশ্য হলো জাহাজ ও বন্দর স্থাপনাগুলোতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রতিরোধ করা। কোড বাস্তবায়নের মাধ্যমে বন্দর ও জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নির্বিঘ্ন রাখতে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরিদর্শনকালে ইউএস কোস্ট গার্ডের প্রতিনিধি দল বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নের অবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা এবং সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো পর্যালোচনা করেন। সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বন্দর এলাকায় গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পেশাদার জনবল, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মানদণ্ড যথাযথভাবে অনুসরণের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে উল্লেখ করা হয়। অফিসিয়াল পরিদর্শন রিপোর্টে ‘জিরো অবজারভেশন’ অর্জন চট্টগ্রাম বন্দরে আইএসপিএস কোডের সফল বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট প্রমাণ। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মান ও সক্ষমতা আরও দৃঢ়ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বন্দর সচিব জানান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নের মাধ্যমে বন্দর ও জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আধুনিক নিরাপত্তা সরঞ্জাম, সিসি ক্যামেরা নজরদারি, অ্যাক্সেস কন্ট্রোল, প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা কর্মী এবং আইএসপিএস মনিটরিং সেলের কার্যকর ভূমিকা এই অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতেও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এই নিরাপত্তা মান বজায় রাখার এবং বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত ও যুগোপযোগী করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও নৌপরিবহনে চট্টগ্রাম বন্দরের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখতে তারা নিরলসভাবে কাজ করবে। পাশাপাশি তারা আশা করছে, সব স্টেকহোল্ডার এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের সহযোগিতায় এই আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান বজায় রাখা এবং বন্দরের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখা সম্ভব হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে, যার আওতায় ছেঁড়া, পোড়া বা নষ্ট হওয়া নোটের বিনিময় মূল্য গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে ফেরত পাবেন। নতুন নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী কোনো নোটের ৯০ শতাংশের বেশি উপস্থিত থাকলে তার পুরো মূল্য ফেরত দেওয়া হবে। এই নতুন নিয়মের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক নোট প্রত্যর্পণ প্রবিধান ২০২৫’ কার্যকর হয়েছে এবং আগের ‘নোট রিফান্ড রেগুলেশনস ২০১২’ বাতিল করা হয়েছে। আগে ছেঁড়া ও পোড়া নোট বদলের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট বিধান ছিল না। ক্ষতিগ্রস্ত নোটের বিনিময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শাখা অফিস ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিতে করা যাবে। দুটি খণ্ডে বিভক্ত নোটের ক্ষেত্রে উভয় খণ্ড সন্দেহাতীতভাবে একই নোটের অংশ হতে হবে এবং উলটো পিঠে হালকা সাদা কাগজ লাগাতে হবে, যাতে সহজে শনাক্ত করা যায়। একইভাবে জীর্ণ নোটেরও পরীক্ষা সুবিধার্থে পেছনে হালকা কাগজ লাগানো হবে। যদি কোনো ব্যাংক শাখা নোটের বিনিময় মূল্য প্রদান বা সেবা দিতে অনীহা দেখায়, গ্রাহক আবেদন করতে পারবেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে। প্রয়োজনে বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠানো হবে, এবং আট সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে সতর্ক করে জানিয়েছে, সুষ্ঠু নগদ লেনদেন অব্যাহত রাখতে ব্যাংকগুলোকে নষ্ট নোটের বিনিময় সেবা নিয়মিতভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা গাজীপুর সাফারি পার্ক বর্তমানে বেহাল দশায় পড়েছে। পার্কের বিভিন্ন স্থাপনা নষ্ট ও প্রাণীর সংখ্যা কমার কারণে দর্শনার্থীরাও কমে গেছে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, পার্কের বেষ্টনী ও লেকগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। প্রাণীরা মানহীন খাবারের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে, ঘটছে রাজস্ব ফাঁকি, এবং বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী মারা যাচ্ছে। ২০১৯ সালের পর থেকে নীলগাই, সিংহ, জেব্রা, জিরাফ ও ক্যাঙারুসহ একাধিক প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। পার্কের একাধিক দর্শনীয় স্থান বন্ধ এবং ভাঙচুরের কারণে সাময়িক বন্ধ থাকতেও হয়েছে। স্থানীয়রা ও দর্শনার্থীরা অব্যবস্থাপনা, প্রাণীর প্রতি অবহেলা ও দালালদের দৌরাত্ম্যকে মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা দ্রুত সংস্কার ও সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন। পার্কের সহকারী বন সংরক্ষক জানিয়েছেন, কিছু প্রাণীর মৃত্যু হলেও প্রজনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং বনবিভাগ পার্কের স্বকীয়তা রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমানে পার্কে সাতটি বাঘ, দুইটি সিংহ, ২১টি ভালুক, ২ শতাধিক হরিণ, হাতি, জলহস্তি, ঘোড়া, মেকাউ, বিভিন্ন পাখি এবং সরীশূপসহ নানা প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। তবে দর্শনার্থীদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, বেষ্টনী ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা যথাযথ নয়, যা পার্কের আকর্ষণ কমিয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার দুই সন্দেহভাজন ময়মনসিংহ সীমান্ত হয়ে ভারতে চলে গেছে বলে ধারণা করছে তদন্ত সংস্থা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত পার হওয়ার সময় কারা তাদের সহযোগিতা করেছে তা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। হাদির বড় ভাই ওমর ফারুক জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থায় নতুন করে কোনো অবনতি হয়নি। বর্তমানে শ্বাস-প্রশ্বাস, হার্টবিট ও হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল। সিংগাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হাদির চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে। চিকিৎসকরা নিউরোসার্জারি ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার টিমের মাধ্যমে তার ব্রেন, কিডনি, হৃদযন্ত্র ও ফুসফুস সচল রাখার চেষ্টা করছেন। হামলায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মো. কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। এছাড়া ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে রাখা হয়েছে। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিককে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, সন্দেহভাজন হামলাকারীরা ঘটনার পরপরই মিরপুর থেকে আশুলিয়া, গাজীপুর হয়ে ময়মনসিংহে পৌঁছায়। সেখানে তাদের অন্য একটি প্রাইভেট কারে নিয়ে সীমান্ত পার করে ভারতে পাঠানো হয়। তদন্তকারীরা মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ও সহযোগিতা খুঁজছে। পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট এলাকায় ১২ ডিসেম্বর হাদিকে গুলি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি সত্ত্বেও মস্তিষ্কে আঘাত ও ব্রেন স্টেমের চাপ থাকায় চিকিৎসা চলমান। পুলিশ জানাচ্ছে, রিমান্ডে থাকা আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
নানা আপত্তি ও বর্জনের ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দ্বাদশ সমাবর্তন আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে ৬০, ৬১ ও ৬২তম ব্যাচের মোট ৫,৯৬৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবেন। সমাবর্তনের সভাপতি হিসেবে থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, এবং সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ। সমাবর্তনের ভেন্যু বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়াম ইতিমধ্যে সাজানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মেরামত, প্রশাসনিক ভবন রঙ করা, আলপনা আঁকা এবং রঙিন বাতি, পতাকা ও ফেস্টুন স্থাপন করা হয়েছে। প্রধান ফটক, বিনোদপুর ও কাজলা ফটকে নতুন তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। সমাবর্তনের মূল ভেন্যুতে প্রায় সাত হাজার দর্শকের জন্য বিশাল প্যান্ডেল, ফ্যান ও বড় এলইডি স্ক্রিন বসানো হয়েছে। সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হবে। এতে শোভাযাত্রা, স্বাগত বক্তব্য, ডিগ্রি প্রদান, সমাবর্তন বক্তৃতা এবং সভাপতির বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত। পরে দুপুর আড়াইটায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জানিয়েছেন, পুলিশ প্রশাসন, প্রক্টরিয়াল টিম ও গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে অংশ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীদের ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে নিবন্ধন সংখ্যা ৪ লাখ ৪৫ হাজার ২৬ জন ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৯ জন এবং মহিলা ভোটার ২৭ হাজার ৬৬৫ জন। নিবন্ধিতদের মধ্যে ৬ হাজার ৬০৮ জনের নিবন্ধন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে, আর ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪১৮ জনের নিবন্ধন ইতিমধ্যে অনুমোদিত হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো ভোট গ্রহণে আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রবাসী, আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তি এবং ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতরা ভোট দিতে পারবেন। ভোট দিতে হলে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নিবন্ধনকারীদের ঠিকানায় ভোটের ব্যালট ডাকযোগে পাঠানো হবে। ভোটাররা ভোট পূরণ করে ফিরতি খামে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন। নিবন্ধন বর্তমানে ৫০টিরও বেশি দেশে চলছে, যার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, ব্রাজিল, হংকং, মিশর, মোজাম্বিক, লিবিয়া, মরিশাস, উগান্ডা, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, আলজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে, পেরু, গাম্বিয়া সহ অন্যান্য দেশগুলো রয়েছে। ইসি জানিয়েছে, পূর্ববর্তী পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থা কার্যকর ছিল না। তাই এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট নেওয়া হয়েছে। প্রবাসীরা ইতিমধ্যেই ভালো সাড়া দিয়েছেন। আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তি এবং ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতদের অংশগ্রহণের আগ্রহ নিবন্ধনের সময় বোঝা যাবে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসি। প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ প্রবাসীর ভোট টানার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ এইচ এম বজলুর রহমান
মেক্সিকোয় ব্যক্তিগত বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দেশটির আকাপুলকো থেকে রওয়ানা দিয়েছিলো বিমানটি। গন্তব্য ছিল মধ্যাঞ্চলীয় টলুকা। এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়। মেক্সিকো স্টেট সিভিল প্রোটেকশন কোঅর্ডিনেটর আদ্রিয়ান হার্নান্দেজ জানান, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সান মাতেও আতেনকো অঞ্চলে, যা টলুকা বিমানবন্দর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে। বিমানটি আকাপুলকো থেকে উড্ডয়ন করেছিল। মোট আটজন যাত্রী এবং দুইজন ক্রু অবস্থান করছিলেন বিমানটিতে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি একটি ফুটবল মাঠে জরুরি অবতরণ চেষ্টা করছিল, কিন্তু পাশের একটি কারখানার ছাদে আঘাত লাগায় আগুন ধরে যায় বিমানটিতে। স্থানীয় মেয়র আনা মুনিজ জানান, দুর্ঘটনার কারণে প্রায় ১৩০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খোঁজার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও সাধারণ নাগরিকদের ঘটনাস্থলের আশপাশের বেশ কয়েক কিলোমিটার এলাকা এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
২০২৪ সালের ‘প্যানোরামা’ প্রামাণ্যচিত্রে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির বক্তব্য বিকৃত করার অভিযোগে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) বিরুদ্ধে ৫ বিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা দায়ের করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে বিবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়। মূল বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু ট্রাম্পের ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির একটি ভাষণ। ওই ভাষণে তিনি ওয়াশিংটনে জড়ো হওয়া সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছিলেন, 'আমরা ক্যাপিটলের দিকে হেঁটে যাব এবং আমাদের সাহসী সিনেটর ও কংগ্রেসম্যান-উইমেনদের উৎসাহ দেব।' প্রায় ৫০ মিনিট পর একই ভাষণে তিনি আরও বলেন, 'এবং আমরা লড়াই করবো। আমরা প্রাণপণ লড়াই করবো।' তবে, বিবিসির প্যানোরামা অনুষ্ঠানে এই দুটি আলাদা বক্তব্য একত্রে জুড়ে প্রচার করা হয়। সেখানে দেখানো হয়, ট্রাম্প বলছেন, 'আমরা ক্যাপিটলের দিকে হেঁটে যাব এবং আমরা লড়াই করবো। আমরা প্রাণপণ লড়াই করবো।' ফ্লোরিডার একটি আদালতে দায়ের করা নথি অনুযায়ী, ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানি এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমসংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। ট্রাম্পের আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, বিবিসি ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ও প্রতারণামূলক উপায়ে’ মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষণ কাটাছেঁড়া করে মানহানি করেছে। ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, বিবিসি তার ৬ জানুয়ারি ২০২১-এর ভাষণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে পরিবর্তন করে জনগণের কাছে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'তারা (বিবিসি) আমার কথাগুলো চুরি করেছে এবং পরিবর্তন করেছে।' এরইমধ্যে বিবিসি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। স্বীকার করেছে, এভাবে সম্পাদনার ফলে একটি 'ভুল ধারণা' তৈরি হয়েছিল। এতে এমন মনে হতে পারে যে, ট্রাম্প সরাসরি 'সহিংসতা বা মারামারির আহ্বান জানিয়েছিলেন'। তবে, ক্ষতিপূরণের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে সংবাদমাধ্যমটি। দাবি, মানহানির কোনো ভিত্তি নেই। গত মাসে সমালোচনার জেরে ভুল স্বীকার করে পদত্যাগ করেন মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং বার্তাপ্রধান ডেবোরাহ টারনেস। এতেও ক্ষোভ কমেনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের। বিবিসি'কে বামপন্থি প্রোপাগান্ডা প্রতিষ্ঠান বলে আখ্যা দেন তিনি।
বেতন-ভাতা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী চলতি সপ্তাহে পাঁচ দিনের ধর্মঘটে যাচ্ছেন ইংল্যান্ডের রেসিডেন্ট চিকিৎসকেরা। ব্রিটিশ সরকারের দেয়া সর্বশেষ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর এই ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তাররা। আগামীকাল বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল সাতটা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হবে। আগামী সোমবার সকাল সাতটা পর্যন্ত চলবে এই ধর্মঘট। ব্রিটিশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন-এর অনলাইন জরিপে ৮৩ শতাংশ ডাক্তার সরকারী প্রস্তাব বাতিল করেছেন। এসোসিয়েশনের রেসিডেন্ট ডাক্টরস কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাক ফ্লেচার বলেছেন, 'দশ হাজারেরও বেশি ফ্রন্টলাইন ডাক্তার একসাথে ‘না’ বলেছেন। কাজের পরিবেশ নিয়ে সরকারের সর্বশেষ প্রস্তাবটি চিকিৎসকরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে, সমস্যার সমাধানে ইউনিয়ন এখনো আলোচনায় বসতে রাজি বলে জানান ফ্লেচার। তবে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওয়েস স্ট্রিটিং চিকিৎসকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। বলেন, 'ধর্মঘটের কোনো প্রয়োজন নেই। রোগীদের নিরাপত্তার প্রতি বিএমএর চরম অবহেলারই প্রমাণ এই ধর্মঘট।' এই কর্মসূচিকে 'স্বার্থপর, দায়িত্বজ্ঞানহীন' বলেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি। এদিকে, সিজোনাল ফ্লুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বিএমএকে ধর্মঘটের সময় পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছিলো সরকার। ব্রিটেনের সরকারি তথ্য বলছে, ডিসেম্বরের শুরুতে ইংল্যান্ডে ফ্লুজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তির হার ৫০%'এর বেশি বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার ৬শ' ৬০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন; যা চলতি বছরের এই সময়ের জন্য রেকর্ড। শুধুমাত্র ব্রিটেন-ই নয়; পুরো ইউরোপজুড়েই এবার ফ্লুর তীব্র প্রকোপ দেখা যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। বিএমএ জানিয়েছে, তাদের ৫০ হাজারেরও বেশি সদস্যের মধ্যে ৬৫% ভোটে অংশ নেন। এরমধ্যে মোট ৮৩% সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
মরক্কোর আটলান্টিক উপকূলীয় প্রদেশ সাফিতে আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। প্রবল বর্ষণের ফলে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) হঠাৎ করেই ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ১৪ জন, যারমধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত শনিবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয় অঞ্চলটিতে। আর তাতেই বন্যায় ডুবে যায় অনেকের বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পানিতে ভেসে যায় বেশকয়েকটি যানবাহন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কাদামাটির স্রোতে গাড়ি ভেসে যাচ্ছে। রাজধানী রাবাত থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সাফি শহরের পুরোনো এলাকায় মাত্র এক ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে প্লাবিত হয় অন্তত ৭০টি বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক যোগাযোগ। বন্দরনগরী সাফির সঙ্গে আশপাশের বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাফি-হ্রারা সংযোগকারী প্রাদেশিক সড়ক। বন্যার কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস স্থগিত করেছে স্থানীয় শিক্ষা কর্তৃপক্ষ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার পর পানি নামতে শুরু করলেও, মানুষ এখনো কাদামাটির ভেতর থেকে নিজেদের জিনিসপত্র উদ্ধারে ব্যস্ত। এদিকে আবহাওয়া বিভাগ মঙ্গলবারও দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। দীর্ঘ ৭ বছরের খরার পর মরক্কোতে এখন ভারী বৃষ্টি ও এটলাস পর্বতমালায় তুষারপাত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ২০২৪ সাল ছিল মরক্কোর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।