ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সারাদেশে। আগামী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় শোক পালন করার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের ভেরিফায়েড পেজে দেয়া এক শোকবার্তায় ঢাকার মার্কিন দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশের জনগণের সাথে একাত্ম হয়ে তরুণ নেতা শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এবং তার পরিবার, বন্ধু ও সমর্থকদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরিফ ওসমান বিন হাদি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুতে দেশে-বিদেশে শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত্যুর খবরে রাজধানীর শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি দেখা যায়। গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।
চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ড. রাজীব রঞ্জনের বাসভবন ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী, এপিবিএন, পুলিশ ও ডিবি। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গতরাতে সহকারী হাই কমিশনারের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ হয়। এক পর্যায়ে কয়েকজন ইটপাটকেল ছুঁড়ে। এ সময় দ্রুত ব্যবস্থা নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এ ঘটনায় জড়িত ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোড়ন তুলেছে ওসমান হাদির মৃত্যু। আল-জাজিরা, বিবিসি, ডয়েচে ভেলে, এএফপিসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হয় জুলাই অভ্যুত্থানের বিখ্যাত এই নেতার মৃত্যুর খবরটি। বিশ্লেষণ-প্রতিক্রিয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয় ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতেও। মৃত্যু পরবর্তী বিক্ষোভ-আন্দোলনের খবরও উঠে আসে রয়টার্স, এপি'সহ বিভিন্ন বার্তা সংস্থাতে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৯টায় সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে মুহূর্তেই তার মৃত্যুর খবর সাড়া ফেলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। সংবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। হাদিকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের আলোচিত নেতৃত্ব আখ্যা দেয় কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা। শেখ হাসিনার পতনের পেছনে তার অবদানের বিষয়টি তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি আর জার্মান গণমাধ্যম- ডয়চে ভেলেও প্রকাশ হয় ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর। এছাড়া এএফপি, আনাদোলুর মতো প্রভাবশালী সংবাদ সংস্থাগুলোয় উঠে আসে খবরটি। ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদে সরব ভারতীয় মিডিয়া। দেশটির সরকারি বার্তাসংস্থা পিটিআই, এএনআইসহ মূলধারার গণমাধ্যম এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও দ্য হিন্দুতেও জায়গা পায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্রের মৃত্যুর খবর। ওসমান হাদির মৃত্যুর পর সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ-আন্দোলনের সংবাদও তুলে ধরে বার্তা সংস্থাগুলো।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে কিছু স্থানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের খবর পাওয়ায় জুলাই আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একটি পোস্টে বলেন, জনগণের প্রতিবাদ অবশ্যই শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক হওয়া উচিত। কিছু হঠকারী ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গোষ্ঠী আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। এসব গোষ্ঠী জুলাই আন্দোলনের আদর্শের বিরোধী এবং তাদের লক্ষ্য মূল আন্দোলনকে বিতর্কিত করা। নাহিদ ইসলাম আন্দোলনকারীদের সতর্ক করে বলেন, দায়িত্বশীল আচরণ বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হবে। এদিকে, সদ্য পদত্যাগ করা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও একই সুরে মন্তব্য করেছেন। ফেসবুকে তিনি বলেন, ওসমান হাদি সহিংসতা বা সন্ত্রাসের রাজনীতি বিশ্বাস করতেন না। তিনি আন্দোলনকে গঠনমূলক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগ্রামের পথে পরিচালিত করার শিক্ষা দিয়ে গেছেন। আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, যারা আগুন দিচ্ছে বা সহিংসতায় জড়াচ্ছে, তারা জুলাই আন্দোলনের অংশ নয়। এরা পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে মাঠে নামা অনুপ্রবেশকারী। হাদির স্মরণে বিভাজনের রাজনীতি পরিহার করে ঐক্যের পথে থাকা প্রয়োজন, যোগ করেন তিনি।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দেশে আনা হবে। ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ঢাকা ছাড়বে এবং আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের অফিসিয়াল পেজে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে এ তথ্য জানানো হয়। পোস্টে বলা হয়, শহীদ হাদির প্রথম জানাজা সিঙ্গাপুরের দ্য আঙ্গুলিয়া মসজিদে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বাদ জোহর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। ওই ঘটনায় মোটরসাইকেল থেকে দুজন দুর্বৃত্ত তাকে কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। পরে ১৫ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান শহীদ শরিফ ওসমান হাদি।
বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোড়ন তুলেছে ওসমান হাদির মৃত্যু। আল-জাজিরা, বিবিসি, ডয়েচে ভেলে, এএফপিসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হয় জুলাই অভ্যুত্থানের বিখ্যাত এই নেতার মৃত্যুর খবরটি। বিশ্লেষণ-প্রতিক্রিয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয় ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতেও। মৃত্যু পরবর্তী বিক্ষোভ-আন্দোলনের খবরও উঠে আসে রয়টার্স, এপি'সহ বিভিন্ন বার্তা সংস্থাতে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৯টায় সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে মুহূর্তেই তার মৃত্যুর খবর সাড়া ফেলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। সংবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। হাদিকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের আলোচিত নেতৃত্ব আখ্যা দেয় কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা। শেখ হাসিনার পতনের পেছনে তার অবদানের বিষয়টি তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি আর জার্মান গণমাধ্যম- ডয়চে ভেলেও প্রকাশ হয় ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর। এছাড়া এএফপি, আনাদোলুর মতো প্রভাবশালী সংবাদ সংস্থাগুলোয় উঠে আসে খবরটি। ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদে সরব ভারতীয় মিডিয়া। দেশটির সরকারি বার্তাসংস্থা পিটিআই, এএনআইসহ মূলধারার গণমাধ্যম এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও দ্য হিন্দুতেও জায়গা পায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্রের মৃত্যুর খবর। ওসমান হাদির মৃত্যুর পর সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ-আন্দোলনের সংবাদও তুলে ধরে বার্তা সংস্থাগুলো।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দেশে আনা হবে। ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ঢাকা ছাড়বে এবং সম্ভাব্য সন্ধ্যা ৬টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। এরপর শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বাদ জোহর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। ইনকিলাব মঞ্চের অফিসিয়াল পেজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে এসব তথ্য জানায়। সংগঠনটি জানিয়েছে, শহীদ শরিফ ওসমান হাদির প্রথম জানাজা সিঙ্গাপুরের দ্য আঙ্গুলিয়া মসজিদে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে শনিবার বাদ জোহর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে মারা যান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন। শরিফ ওসমান হাদি ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ড. রাজীব রঞ্জনের বাসভবন ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী, এপিবিএন, পুলিশ ও ডিবি। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গতরাতে সহকারী হাই কমিশনারের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ হয়। এক পর্যায়ে কয়েকজন ইটপাটকেল ছুঁড়ে। এ সময় দ্রুত ব্যবস্থা নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এ ঘটনায় জড়িত ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সারাদেশে। আগামী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় শোক পালন করার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের ভেরিফায়েড পেজে দেয়া এক শোকবার্তায় ঢাকার মার্কিন দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশের জনগণের সাথে একাত্ম হয়ে তরুণ নেতা শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এবং তার পরিবার, বন্ধু ও সমর্থকদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরিফ ওসমান বিন হাদি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুতে দেশে-বিদেশে শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত্যুর খবরে রাজধানীর শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি দেখা যায়। গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশ পেতেই চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতার একটি দল মিছিল করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। বিক্ষোভকারীরা এক পর্যায়ে হামলার চেষ্টা চালায়, কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের আটকাতে সক্ষম হয়। একদল ছাত্র বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে জিইসি মোরের দিকে চলে গেলে পরিস্থিতি প্রায় ১০ মিনিট শান্ত থাকে। এরপর আরেকটি পক্ষ বাসভবনের সামনে আসে, সড়কে বসে যানচলাচল বন্ধ করে দেয় এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা বাসভবনের দিকে ইট-পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপরও ইট-পাথর নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শেষে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় এবং ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বাসভবনের সামনে সেনাবাহিনী এবং আরও বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনাস্থলে চট্টগ্রাম সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ উপস্থিত ছিলেন এবং সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি বলেন, “এটি হামলা নয়, বরং একদল বস্তির পোলাপান আচমকাই এসে ইট-পাথর নিক্ষেপ করেছে। পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার ইতোমধ্যে আমাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা রাজধানীতে ফেটে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুরনো বাড়ির কাছে বিক্ষোভকারীরা আগুন জ্বালিয়ে দমন-বিরোধী অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিক্ষুব্ধ জনতা ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘হাদির রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’, ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগছে’—এর মতো স্লোগান দেন। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির আশেপাশে তারা বিভিন্ন জায়গায় আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ চালান। এদিকে, শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন জুলাই মঞ্চের কর্মী ও সমর্থকরাও। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও হাদির হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন। রাতের দিকে হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তারা রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশে যোগ দেন এবং জোরালো স্লোগান দেন। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালে মারা যান শরিফ ওসমান হাদি। তাঁর মৃত্যুতে আন্দোলন ও প্রতিবাদের ঢেউ রাজধানীজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
এ এইচ এম বজলুর রহমান
বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোড়ন তুলেছে ওসমান হাদির মৃত্যু। আল-জাজিরা, বিবিসি, ডয়েচে ভেলে, এএফপিসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হয় জুলাই অভ্যুত্থানের বিখ্যাত এই নেতার মৃত্যুর খবরটি। বিশ্লেষণ-প্রতিক্রিয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয় ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতেও। মৃত্যু পরবর্তী বিক্ষোভ-আন্দোলনের খবরও উঠে আসে রয়টার্স, এপি'সহ বিভিন্ন বার্তা সংস্থাতে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৯টায় সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে মুহূর্তেই তার মৃত্যুর খবর সাড়া ফেলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। সংবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। হাদিকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের আলোচিত নেতৃত্ব আখ্যা দেয় কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা। শেখ হাসিনার পতনের পেছনে তার অবদানের বিষয়টি তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি আর জার্মান গণমাধ্যম- ডয়চে ভেলেও প্রকাশ হয় ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর। এছাড়া এএফপি, আনাদোলুর মতো প্রভাবশালী সংবাদ সংস্থাগুলোয় উঠে আসে খবরটি। ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদে সরব ভারতীয় মিডিয়া। দেশটির সরকারি বার্তাসংস্থা পিটিআই, এএনআইসহ মূলধারার গণমাধ্যম এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও দ্য হিন্দুতেও জায়গা পায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্রের মৃত্যুর খবর। ওসমান হাদির মৃত্যুর পর সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ-আন্দোলনের সংবাদও তুলে ধরে বার্তা সংস্থাগুলো।
আন্তর্জাতিক কেবল টিভি শো' ২০২৫ এর পর্দা উন্মোচন হল। কেবল টিভি, ব্রডব্যান্ড, ওটিটিসহ বর্তমান সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নতুন প্রযুক্তির খোঁজ,পাশাপাশি বর্তমান প্রজন্মকে আরও বেশি আপডেট টেকনোলজির ব্যবহারে যুক্ত করে তোলার লক্ষ্যে শুরু হয়েছে ২৬তম আন্তর্জতিক কেবল টিভি শো। কেবল টিভি ইকুইপমেন্টস ট্রেডার্স অ্যান্ড ম্যানুফাকচারার্স আয়োজিত এই মেগা মেলায় সার্ক অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কেবল অ্যান্ড ব্রডব্যান্ড শো হিসেবে স্বীকৃত। বুধবার শুরু হওয়া তিনদিনের এই মেলা চলবে শনিবার ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরমা আইল্যান্ডের মিলন মেলার বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গণে এ বছর নতুন প্রযুক্তি এবং শিল্প সহায়ক যন্ত্রপাতি নিয়ে ৯০টি স্টল রয়েছে। যেখানে কেবল কানেকশন, ব্রডব্যান্ড, নেটওয়ার্কিং, সার্ভিলেন্স, ওটিটি'র মত টেকনোলজিক্যাল আপডেট সংক্রান্ত তথ্য এবং প্রযুক্তির নানা প্রদর্শনী থাকছে। ভারতের দিল্লী, হরিয়ানা, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, কেরল, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, বিহারসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের কেবল অপারেটর, ব্রডব্যান্ড সার্ভিস প্রোভাইডার, এমএসও এবং ব্রডকাস্টাররা এবারের মেলায় যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রতিবেশী বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভুটানের প্রচুর কেবল অপারেটররা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন। তবে বাণিজ্য বাংলাদেশ সরকারের সবুজ সংকেত না থাকায় একই সঙ্গে ভিসা জটিলতায় এবারের মেলায় স্টল দিতে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ থেকে মেলায় যোগ দিয়েছে প্রায় ৬০ জন কেবল অপারেটরের একটি প্রতিনিধি দল। কেবল টিভি পরিষেবা ও ব্যবসার জন্য নতুন যে সমস্ত প্রযুক্তি এসেছে, স্টলে ঘুরে ঘুরে তার খোঁজখবর নিয়েছেন এবং ক্রয় করছেন। আইসিএনসিলের ডিরেক্টর সুরেশ শেঠিয়া জানিয়েছেন, এটি ভারতের সর্ববৃহৎ কেবল টিভি শো। যেখানে কেবল টিভি, ব্রডব্যান্ড, ওটিটি সব কিছু একসঙ্গে নিয়ে প্রদর্শিত হচ্ছে। তিনি বলেন, যখনই কোনো টেকনোলজি আপডেট হয়, তখন মানুষই লাভবান হন। ফলে এই প্রদর্শনী মানুষকে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিষেবা দেয়ার লক্ষ্যেই করা হয়। বাংলাদেশের প্রত্যক্ষ উপস্থিতি না থাকায় তিনিও আফসোস করেন তবে তার প্রত্যাশা, দ্রুতই এই সমস্যা কেটে যাবে। বাংলাদেশ থেকে আগত প্রতিনিধিরা জানান, ভারতের ভিসা নীতির জটিলতার কারণে এই বছর কয়েক'শ কেবল অপারেটররা আসতে পারেননি। বিগত বছরে এই কেবল টিভি শো অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই এ বছর অনেকের যোগদান করার কথা ছিল। আগামী দিনে আরও বেশি আপডেট টেকনোলজির ব্যবহারে যুক্ত হবেন এবং বাংলাদেশের মানুষকে আন্তর্জাতিক মানের পরিষেবা প্রদান করার চেষ্টা করবেন বলে জানান।
ব্রাজিলের একটি শহরে প্রবল বাতাসে ধসে পড়েছে রেপ্লিকা ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’। ১১০ ফুট উচ্চতার এই ‘স্ট্যাচু' ভাঙার দৃশ্য মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল তিনটার দিকে রিও গ্রান্দে দো সুল অঙ্গরাজ্যের গুয়াইবা শহরে ওই ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ঝড়ের তীব্রতায় স্ট্যাচুটি ধীরে ধীরে একদিকে হেলে পড়তে শুরু করে। এরপর মুহূর্তের মধ্যেই পার্কিং এলাকায় আছড়ে পড়ে। তবে, এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে প্রতীকী হিসেবে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর স্ট্যাচু অব লিবার্টির রেপ্লিকাটি স্থাপন করে।
মার্কিন সিনেটে পাস হলো রেকর্ড ৯০১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা বিল। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে ৭৭-২০ ভোটে পাস হয় বিলটি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাক্ষর করলেই আইনে পরিণত হবে ন্যাশনাল ডিফেন্স অথোরাইজেশন অ্যাক্ট (এনডিএএ)। এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। অনুমোদন পাওয়া বিলটিতে মূলত চীন-রাশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবেলা করতে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিধান রাখা হয়েছে। এর আওতায় আগামী দুই বছরে ইউক্রেনকে ৪শ' করে মোট ৮শ' মিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দেবে ওয়াশিংটন। আরেক মিত্র ইসরায়েল পাবে ৬শ' মিলিয়ন ডলারের সহায়তা। বাজেটে সিরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা সিজার আইনও বাতিল করা হবে। এছাড়া, তাইওয়ানের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে এক বিলিয়ন ডলার। কমানো হবে ইউরোপ ও দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েনকৃত মার্কিন সেনাদের সংখ্যা। প্রায় ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে সামরিক সদস্যদের বেতন। উল্লেখ্য, এনডিএএ হলো যুক্তরাষ্ট্রের অতি বিরল আইনগুলোর একটি, যা সাধারণত দ্বিদলীয় সমর্থন পেয়ে থাকে। তবে এ বছরের প্রক্রিয়াটা ছিল তুলনামূলক জটিল। এবার ট্রাম্পের বিরোধিতার কারণে বিল থেকে কয়েকটি কর্মসূচি বাদ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বৈচিত্র্য, সমতা, অন্তর্ভুক্তি এবং জলবায়ুকেন্দ্রিক বিভিন্ন উদ্যোগের ১৬০ কোটি ডলারের তহবিল।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।