ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে গভীর শোক নেমে এসেছে। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) তার মরদেহ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় আনা হবে এবং শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হবে বলে পারিবারিক ও সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক এবং ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি সিঙ্গাপুর ছাড়বে। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটির সম্ভাব্য অবতরণের সময় সন্ধ্যা ৬টা ০৫ মিনিট। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মরদেহ দেশে পৌঁছানোর পর প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
ওসমান হাদির মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে এনসিপির নেতা–কর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত আনুমানিক ১১টা ২০ মিনিটে টঙ্গীর কলেজগেট সফি উদ্দিন রোড সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কে অবস্থান নেন। রাত ১২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী চলা এই অবরোধের ফলে মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা ওসমান হাদির মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত, দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দ্রুত বিচার নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে। পরে রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে ধীরে ধীরে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এদিকে, ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে টঙ্গীসহ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রসমাজ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। সচেতন মহল অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হাদির খুনিদের যতক্ষণ ফিরিয়ে না দেবে, ততক্ষণ ভারতীয় হাইকমিশন বন্ধ থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১০টা ৪১ মিনিটে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। ওই পোস্টে সারজিস আলম লিখেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, শহীদ হাদি ভাইয়ের খুনিদের যতক্ষণ পর্যন্ত না ভারত ফিরিয়ে দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশন বন্ধ থাকবে।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘Now or Never. We are in a war!’ এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে হাদির মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ এবং ইনকিলাব মঞ্চের সংগঠক ফাতিমা তাসনিম। এদিকে রাতে নিজেদের ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। ওই পোস্টে বলা হয়, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।’
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। অস্ত্রোপচার শেষে তার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্যসচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানান। ডা. মো. আব্দুল আহাদ বলেন, ‘বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টার দিকে ওসমান হাদির পরিবার অস্ত্রোপচারের জন্য সম্মতি দেয়। এরপর তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। অপারেশন শেষ হওয়ার পর আর কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি। পরে সরাসরি তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়।’ হাদির মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. আহাদ বলেন, ‘মৃত্যুর খবরটি এইমাত্র পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’ এর আগে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে রাষ্ট্র্রীয়ভাবে ‘বীর’ হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন তার প্রতিবেশীরা। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে তার নিজ জন্মভূমি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকায় তার প্রতিবেশীরা এ দাবি জানান। নলছিটি ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ওসমান হাদির শিক্ষক এম এ আব্দুর রহিম বলেন, ওসমান হাদি আমাদের মধ্যে থেকে চলে গেছে। ওসমানের যে প্রত্যাশা বাংলাদেশ নিয়ে, বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি, বাংলাদেশের আধিপত্য সাম্রাজ্যবাদের কবল থেকে মুক্তি। এই মুক্তির পথ যেন চলমান থাকে। এরকম ওসমান হাদির পথ ধরে হাজার হাজার ওসমান হাদি জন্মাবে এবং বাঙালির মুক্তির জন্য দাঁড়াবে। এখন ওসমানদের পাহারা, নিরাপত্তা, সমবেদনা যা যা করণীয় হচ্ছে এটা আসলে জীবিত ওসমানের জন্য করা উচিত ছিল। তিনি আরও বলেন, এ দেশের মানুষ আসলে স্বর্ণের টুকরা চিনে না। চিনে কখন যখন সে থাকে না। জুলাই বিপ্লবের পরে নতুন বাংলাদেশে ওসমানদের মতো মানুষদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে বাংলাদেশের কল্যাণের জন্য রাখা উচিত ছিল। আজকের বাংলাদেশের মানুষের কাছে দাবি, প্রশাসনের কাছে দাবি ওরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মানে যেন ঘোষণা করা হয় এবং বাংলার বীর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ওর নামের সাথে বাংলার বীর দেখতে চাই। সেটা রাষ্ট্র্রীয়ভাবেই ঘোষণা চাই। আমরা এই সরকারের কাছে দাবি জানাই হত্যার সাথে যারা জড়িত আছে, গুলির মদদদাতা, অর্থদাতা, দেশে এবং দেশের বাহিরে যারা জড়িত তাদের বিচার চাই। গত শুক্রবার রাজধানীর পল্টনে বক্স কালভার্ট রোড দিয়ে রিকশায় যাওয়ার সময়ে মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
ওসমান হাদির মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে এনসিপির নেতা–কর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত আনুমানিক ১১টা ২০ মিনিটে টঙ্গীর কলেজগেট সফি উদ্দিন রোড সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কে অবস্থান নেন। রাত ১২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী চলা এই অবরোধের ফলে মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা ওসমান হাদির মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত, দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দ্রুত বিচার নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে। পরে রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে ধীরে ধীরে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এদিকে, ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে টঙ্গীসহ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রসমাজ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। সচেতন মহল অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত প্রথম আলোর প্রধান কার্যালয় ও ফার্মগেটে অবস্থিত ডেইলি স্টার ভবনে হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন রাতে বিক্ষুব্ধ জনতা শাহবাগের দিক থেকে মিছিল নিয়ে প্রথম আলো কার্যালয়ে সামনে উপস্তিত হন। এ সময় তারা প্রথম আলো ও ভারতবিরোধী নানা স্লোগান দেন। এক পর্যায়ে কিছু লোকজন অফিসের ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর করেন। সেখানকার কাগজপত্র, কম্পিউটার নীচে ফেলে দেন। এছাড়া কার্যালয়ের সামনে অগ্নিসংযোগও করেন। একই সময়ে ডেইলি স্টার ভবনেও হামলার ঘটনা ঘটে।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকল অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দৃঢ় আশ্বাস দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের শৈথিল্য বা ছাড় দেওয়া হবে না। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। ভাষণে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিপ্লবী চেতনায় উজ্জীবিত এই তরুণ নেতা ছিলেন প্রতিবাদের এক উজ্জ্বল প্রতীক। তার জীবন ও কর্মের মধ্য দিয়ে তিনি শুধু প্রতিবাদই নয়, বরং দেশপ্রেম, ধৈর্য ও অটল দৃঢ়তার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। দেশবাসীর প্রতি শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের সকল নাগরিকের প্রতি তার আন্তরিক অনুরোধ— সবাই যেন ধৈর্য ও সংযম বজায় রাখেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো পেশাদারিত্বের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং রাষ্ট্র আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ওসমান হাদি ছিলেন পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তির সরাসরি শত্রু। তার কণ্ঠ স্তব্ধ করে বিপ্লবীদের ভয় দেখানোর অপচেষ্টা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ করে দেওয়া হবে। ভয়, সন্ত্রাস কিংবা রক্তপাতের মাধ্যমে এ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রসঙ্গ তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দেশ বর্তমানে গণতান্ত্রিক উত্তরণের এক চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। শহীদ হাদি ছিলেন এই প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ। আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের পরবর্তী ধাপে সক্রিয় ভূমিকা রাখার স্বপ্ন ছিল তার। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সেই স্বপ্ন আজ অপূর্ণ রয়ে গেছে। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব এখন সমগ্র জাতির কাঁধে ন্যস্ত। তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে সবাইকে ধৈর্য, সংযম, সাহস ও দূরদর্শিতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে, যাতে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের শত্রু ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী অপশক্তিকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা যায়। ভাষণের শেষাংশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই শোকের মুহূর্তে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির আদর্শ ও ত্যাগকে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। অপপ্রচার ও গুজবে কান না দিয়ে যেকোনো ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি। তিনি সতর্ক করে বলেন, যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তাদের ফাঁদে পা না দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে অবিচল থাকাই হবে শহীদ হাদির প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা।
বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা অনুযায়ী সংশোধিত শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী টিউশন ফি নিতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব সাইয়েদ এ.জেড. মোরশেদ আলী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে “বেসরকারি স্কুল, স্কুল এন্ড কলেজে (মাধ্যমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও সংযুক্ত প্রাথমিক স্তর) শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা (সংশোধিত)” অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি ফি এবং টিউশন ফি নীতিমালা-২০২৪ এর তফসিল ক, খ ও গ অনুযায়ী নির্ধারিত হারে টিউশন ফি সংগ্রহ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে গভীর শোক নেমে এসেছে। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) তার মরদেহ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় আনা হবে এবং শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হবে বলে পারিবারিক ও সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক এবং ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি সিঙ্গাপুর ছাড়বে। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটির সম্ভাব্য অবতরণের সময় সন্ধ্যা ৬টা ০৫ মিনিট। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মরদেহ দেশে পৌঁছানোর পর প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। অস্ত্রোপচার শেষে তার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্যসচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানান। ডা. মো. আব্দুল আহাদ বলেন, ‘বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টার দিকে ওসমান হাদির পরিবার অস্ত্রোপচারের জন্য সম্মতি দেয়। এরপর তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। অপারেশন শেষ হওয়ার পর আর কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি। পরে সরাসরি তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়।’ হাদির মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. আহাদ বলেন, ‘মৃত্যুর খবরটি এইমাত্র পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’ এর আগে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
এ এইচ এম বজলুর রহমান
আন্তর্জাতিক কেবল টিভি শো' ২০২৫ এর পর্দা উন্মোচন হল। কেবল টিভি, ব্রডব্যান্ড, ওটিটিসহ বর্তমান সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নতুন প্রযুক্তির খোঁজ,পাশাপাশি বর্তমান প্রজন্মকে আরও বেশি আপডেট টেকনোলজির ব্যবহারে যুক্ত করে তোলার লক্ষ্যে শুরু হয়েছে ২৬তম আন্তর্জতিক কেবল টিভি শো। কেবল টিভি ইকুইপমেন্টস ট্রেডার্স অ্যান্ড ম্যানুফাকচারার্স আয়োজিত এই মেগা মেলায় সার্ক অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কেবল অ্যান্ড ব্রডব্যান্ড শো হিসেবে স্বীকৃত। বুধবার শুরু হওয়া তিনদিনের এই মেলা চলবে শনিবার ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরমা আইল্যান্ডের মিলন মেলার বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গণে এ বছর নতুন প্রযুক্তি এবং শিল্প সহায়ক যন্ত্রপাতি নিয়ে ৯০টি স্টল রয়েছে। যেখানে কেবল কানেকশন, ব্রডব্যান্ড, নেটওয়ার্কিং, সার্ভিলেন্স, ওটিটি'র মত টেকনোলজিক্যাল আপডেট সংক্রান্ত তথ্য এবং প্রযুক্তির নানা প্রদর্শনী থাকছে। ভারতের দিল্লী, হরিয়ানা, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, কেরল, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, বিহারসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের কেবল অপারেটর, ব্রডব্যান্ড সার্ভিস প্রোভাইডার, এমএসও এবং ব্রডকাস্টাররা এবারের মেলায় যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রতিবেশী বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভুটানের প্রচুর কেবল অপারেটররা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন। তবে বাণিজ্য বাংলাদেশ সরকারের সবুজ সংকেত না থাকায় একই সঙ্গে ভিসা জটিলতায় এবারের মেলায় স্টল দিতে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ থেকে মেলায় যোগ দিয়েছে প্রায় ৬০ জন কেবল অপারেটরের একটি প্রতিনিধি দল। কেবল টিভি পরিষেবা ও ব্যবসার জন্য নতুন যে সমস্ত প্রযুক্তি এসেছে, স্টলে ঘুরে ঘুরে তার খোঁজখবর নিয়েছেন এবং ক্রয় করছেন। আইসিএনসিলের ডিরেক্টর সুরেশ শেঠিয়া জানিয়েছেন, এটি ভারতের সর্ববৃহৎ কেবল টিভি শো। যেখানে কেবল টিভি, ব্রডব্যান্ড, ওটিটি সব কিছু একসঙ্গে নিয়ে প্রদর্শিত হচ্ছে। তিনি বলেন, যখনই কোনো টেকনোলজি আপডেট হয়, তখন মানুষই লাভবান হন। ফলে এই প্রদর্শনী মানুষকে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিষেবা দেয়ার লক্ষ্যেই করা হয়। বাংলাদেশের প্রত্যক্ষ উপস্থিতি না থাকায় তিনিও আফসোস করেন তবে তার প্রত্যাশা, দ্রুতই এই সমস্যা কেটে যাবে। বাংলাদেশ থেকে আগত প্রতিনিধিরা জানান, ভারতের ভিসা নীতির জটিলতার কারণে এই বছর কয়েক'শ কেবল অপারেটররা আসতে পারেননি। বিগত বছরে এই কেবল টিভি শো অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই এ বছর অনেকের যোগদান করার কথা ছিল। আগামী দিনে আরও বেশি আপডেট টেকনোলজির ব্যবহারে যুক্ত হবেন এবং বাংলাদেশের মানুষকে আন্তর্জাতিক মানের পরিষেবা প্রদান করার চেষ্টা করবেন বলে জানান।
ব্রাজিলের একটি শহরে প্রবল বাতাসে ধসে পড়েছে রেপ্লিকা ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’। ১১০ ফুট উচ্চতার এই ‘স্ট্যাচু' ভাঙার দৃশ্য মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল তিনটার দিকে রিও গ্রান্দে দো সুল অঙ্গরাজ্যের গুয়াইবা শহরে ওই ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ঝড়ের তীব্রতায় স্ট্যাচুটি ধীরে ধীরে একদিকে হেলে পড়তে শুরু করে। এরপর মুহূর্তের মধ্যেই পার্কিং এলাকায় আছড়ে পড়ে। তবে, এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে প্রতীকী হিসেবে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর স্ট্যাচু অব লিবার্টির রেপ্লিকাটি স্থাপন করে।
মার্কিন সিনেটে পাস হলো রেকর্ড ৯০১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা বিল। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে ৭৭-২০ ভোটে পাস হয় বিলটি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাক্ষর করলেই আইনে পরিণত হবে ন্যাশনাল ডিফেন্স অথোরাইজেশন অ্যাক্ট (এনডিএএ)। এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। অনুমোদন পাওয়া বিলটিতে মূলত চীন-রাশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবেলা করতে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিধান রাখা হয়েছে। এর আওতায় আগামী দুই বছরে ইউক্রেনকে ৪শ' করে মোট ৮শ' মিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দেবে ওয়াশিংটন। আরেক মিত্র ইসরায়েল পাবে ৬শ' মিলিয়ন ডলারের সহায়তা। বাজেটে সিরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা সিজার আইনও বাতিল করা হবে। এছাড়া, তাইওয়ানের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে এক বিলিয়ন ডলার। কমানো হবে ইউরোপ ও দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েনকৃত মার্কিন সেনাদের সংখ্যা। প্রায় ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে সামরিক সদস্যদের বেতন। উল্লেখ্য, এনডিএএ হলো যুক্তরাষ্ট্রের অতি বিরল আইনগুলোর একটি, যা সাধারণত দ্বিদলীয় সমর্থন পেয়ে থাকে। তবে এ বছরের প্রক্রিয়াটা ছিল তুলনামূলক জটিল। এবার ট্রাম্পের বিরোধিতার কারণে বিল থেকে কয়েকটি কর্মসূচি বাদ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বৈচিত্র্য, সমতা, অন্তর্ভুক্তি এবং জলবায়ুকেন্দ্রিক বিভিন্ন উদ্যোগের ১৬০ কোটি ডলারের তহবিল।
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে ইহুদিদের ওপর হামলার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দুই হামলাকারী। তদন্ত কর্মকর্তা কিংবা ক্যানবেরা কর্তৃপক্ষের কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশের আগেই এক হামলাকারীকে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বলে খবর প্রচার করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও ভারতীয় গণমাধ্যম। তবে পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই শেষে জানা যায়, নাভিদ আকরাম নামের আসল হামলাকারী একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। আর তার বাবা অপর হামলাকারী সাজিদ আকরাম একজন ভারতীয় নাগরিক। অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৯৮ সালে হায়দরাবাদ থেকে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমান সাজিদ আকরাম নামের ওই ব্যক্তি। তার পাসপোর্টসহ এ সংক্রান্ত একাধিক প্রমাণ হাতে পেয়েছে প্রশাসন। ভারতীয় নাগরিককে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত প্রচার করায় হামলাকারীদের পরিচয় নিয়ে সৃষ্টি হয় ধোঁয়াশার। এক হামলাকারীর সাথে নাম মিলে যাওয়ায় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে অন্য এক নিরাপরাধ পাকিস্তানির ছবি। এতে চরম হয়রানি শিকার হন নাভিদ আকরাম নামের ৩০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি। হামলাকারীদের পরিচয় নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে গুজব রটানোর অভিযোগ তুলেছে পাকিস্তান। একে উদ্দেশ্য প্রণোদিত আখ্যা দিয়ে ক্ষোভ জানান, দেশটির তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণ পরই বেশ কিছু গণমাধ্যম জানিয়ে দেয় যে হামলাকারীদের একজন পাকিস্তানি। এ দাবির পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ বা যাচাই-বাছাই ছিল না। তবে আমরা জানি, পাকিস্তানকে কলঙ্কিত করার উদ্দেশ্যে কিছু শত্রু দেশ এ কাজ করেছে। ২৭ বছর আগে ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমানোর পর, মাত্র ৬ বার নিজ দেশে গিয়েছিল প্রাণ হারানো হামলাকারী সাজিদ। তবে সেখানে থাকা পরিবারের সাথে তার যোগাযোগ ছিল খুবই সীমিত। আর তার উগ্রবাদী মানসিকতা সম্পর্কেও জানতো না তারা- জানিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।