বিশ্ব

ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলকে হুঁশিয়ার করল জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন ইউনিফিল অভিযোগ করেছে, দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ‘প্রস্তাব ১৭০১’-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন। বৃহস্পতিবার মারাউনাহ, মাজাদেল ও বারাশিত এলাকায় এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানায় মিশনটি। শুক্রবার আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বিষয়টি প্রকাশ পায়। এক বিবৃতিতে ইউনিফিল জানায়, এই হামলাগুলো নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ১৭০১-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে বিদ্যমান লিয়াজোঁ ও সমন্বয় ব্যবস্থাগুলো পুরোপুরি মেনে চলার আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে লেবাননের সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে সতর্ক করে বলা হয়— এমন কোনো উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিক্রিয়া থেকে বিরত থাকতে হবে যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। ২০০৬ সালে গৃহীত প্রস্তাব ১৭০১-এ হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে বৈরিতা বন্ধ, এবং ব্লু লাইন থেকে লিতানি নদী পর্যন্ত এলাকায় একটি নিরস্ত্রীকৃত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। গত বছরের অস্ত্রবিরতির শর্ত অনুযায়ী দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলের সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতেই। তবে দেশটি এখনও পাঁচটি সীমান্ত চৌকিতে সেনা উপস্থিতি বজায় রেখেছে। ইউনিফিল আরও জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে বিন্ত জবেইল এলাকায় টহল চলাকালে তিনটি মোটরবাইকে করে ছয় ব্যক্তি তাদের একটি গাড়ির কাছে আসে। তাদের একজন গাড়ির পেছনের দিকে তিনটি গুলি ছোড়ে। সৌভাগ্যক্রমে এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। মিশনটি লেবানন কর্তৃপক্ষকে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
প্রতীকী ছবি
ফ্লাইট বাতিলের হিড়িক, যে কৌশলে বিয়ের অনুষ্ঠান সারলেন বর-কনে

বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন দুই যুবক-যুবতী। গেল নভেম্বরে তাদের মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে সারতে পারেননি বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। পরবর্তীতে পরিবারের লোকদের নিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য দিনক্ষণ ধার্য করা হয়। আর সেই অনুযায়ী বিমানের টিকিটও কেটে রেখেছিলেন পেশায় প্রযুক্তি প্রকৌশলী ওই দম্পতি। কিন্তু ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ওই দম্পতি নির্ধারিত তারিখে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে এর জন্য তারা হতাশ না হয়ে বেছে নিয়েছেন অভিনব এক কৌশল। আর এ ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কর্ণাটকের হুব্বাল্লিতে। ইতোমধ্যে এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তা রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হুব্বাল্লির বাসিন্দা মেধা ক্ষীরসাগরের সঙ্গে গত ২৩ নভেম্বর ওডিশার বাসিন্দা ভুবনেশ্বর সঙ্গমা দাসের বিয়ে হয়। ওই সময়ে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা করা সম্ভব হয়নি। এজন্য ৩ ডিসেম্বর তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের আয়োজন করতে দিনক্ষণ ঠিক করেন। পরিবারের সঙ্গে জাঁকজমকভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে কেটেছিলেন টিকিটও। কিন্তু ইন্ডিগো বিমানের ফ্লাইট বাতিল হওয়ার কারণে তারা আর পৌঁছাতে পারেননি। এদিকে পরিবারের পক্ষেও বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল করা সম্ভব হয়নি। কারণ ইতোমধ্যে অনেক অতিথি এসে হাজিরও হয়েছিলেন। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে অনলাইনে বড় স্ক্রিনে বর-কনে উপস্থিত হয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
ভারতে দুই বাংলাদেশিসহ পাঁচজনের যাবজ্জীবন

ভারতে দুই বাংলাদেশিসহ পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কলকাতার একটি আদালত। তাদের বিরুদ্ধে ভারতজুড়ে বোমা বিস্ফোরণ ও নাশকতা চালানোর ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অপরাধে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত দুই বাংলাদেশি হলেন আনোয়ার হোসেন ফারুক ওরফে এনাম এবং মোহাম্মদ রুবেল ওরফে রফিক। তারা জামালপুরের বাসিন্দা। আর বাকি তিনজন হলেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের বাসিন্দা মাওলানা ইউসুফ শেখ ওরফে শেখ ইউসুফ ওরফে আবু বকর ওরফে সুলেইমান শেখ (৩১), আসামের বরবেটার বাসিন্দা মোহাম্মদ সাহিদুল ইসলাম ওরফে সামিম ওরফে আসরাফুল আলম ওরফে নির্মল ওরফে সূর্য সামিম (২২) এবং জাবিরুল ইসলাম (৩০)। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ রুবেল এবং জাবিরুল ইসলামের ২০১৪ সালের খাগড়াগড় বোমা বিস্ফোরণ মামলায়ও পূর্বে দণ্ড হয়েছিল। কলকাতার সিটি সেশনস কোর্টের বিশেষ এনডিপিএস বিচারক রোহন সিনহা এ রায় ঘোষণা করেন। কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) তদন্তে নাশকতার বৃহৎ ষড়যন্ত্রের প্রমাণ মিললে মামলাটি আদালতে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাওলানা ইউসুফকে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত দণ্ডযোগ্য অপরাধে (ধারা ১২১এ) অতিরিক্ত যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। দুই বাংলাদেশি নাগরিককে ফরেনার্স অ্যাক্টের ধারা ১৪-এর অধীনেও দণ্ডিত করা হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জেএমবি সদস্যরা অবৈধভাবে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে উত্তর ২৪ পরগনায় ঢোকার পরিকল্পনা করেছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল উত্তর-পূর্ব ভারত, দক্ষিণ ভারতসহ বিভিন্ন স্থানে বোমা বিস্ফোরণ ও নাশকতা চালানো। তাদের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে শরিয়াভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ভারতের ‘বাধা’ দূর করা এবং রোহিঙ্গা ও কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া। বাংলাদেশি সদস্যরা ভুয়া ভারতীয় নথি সংগ্রহ করে ভারতে প্রবেশ করেছিল। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এসটিএফ বনগ্রাম, বসিরহাট, কোচবিহার এবং আসাম থেকে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক, আইইডি তৈরির সরঞ্জাম, ভারতের বিভিন্ন এলাকায় হামলার নকশা ও নথি, সংগঠনের কাঠামোর নকশা এবং নগদ টাকা, ল্যাপটপ ও এসডি কার্ড উদ্ধার করা হয়। তবে প্রমাণের অভাবে আরেক অভিযুক্ত আবদুল কালাম ওরফে আজাদ ওরফে কালামকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
ভারতকে জ্বালানি সরবরাহ দিতে প্রস্তুত রাশিয়া: পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতকে ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে’ জ্বালানি তেল সরবরাহ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আজ শুক্রবার নয়াদিল্লির রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন এ ঘোষণা দেন। এর আগে তাঁরা দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ‘উষ্ণ অভ্যর্থনার’ জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ধন্যবাদ জানান পুতিন। এরপর মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক সম্পর্কে পুতিন বলেন, ‘আমাদের মধ্যে “গঠনমূলক” এবং “বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে” আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন প্রয়োজনে আমরা “নিয়মিত” ফোনালাপ করি।’ নিজেদের মধ্যে হওয়া চুক্তিগুলোকে ‘আকর্ষণীয়’ বলে মন্তব্য করেন পুতিন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে নতুন চুক্তির বিষয়গুলো জানানো হয়। পুতিনের সফরকে কেন্দ্র করে এবার দুই দেশের বাণিজ্য ও কৃষি খাতের সম্পর্ক জোরদার করতে একাধিক চুক্তি হয়েছে। চুক্তির দর-কষাকষি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন পুতিন। দুই দেশের বাণিজ্যে নিজেদের জাতীয় মুদ্রার ব্যবহার বাড়ায় নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি। ভারতের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক প্রকল্প নির্মাণেও সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন পুতিন। তেল প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, ভারতকে ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে’ জ্বালানি সরবরাহ করতে প্রস্তুত রাশিয়া। কিন্তু রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে ভারতের ওপর চাপ রয়েছে। ওয়াশিংটনের অভিযোগ—জ্বালানি কেনার মাধ্যমে মস্কোকে কিয়েভের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সহায়তা করছে নয়াদিল্লি। এ অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে শাস্তি হিসেবে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। পুতিন দুই দিনের সফরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন। পালাম বিমানবন্দরে নরেন্দ্র মোদি তাঁকে স্বাগত জানান। আজ রাত ৯টার দিকে তিনি ভারত ত্যাগ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
অস্ট্রেলিয়ার কাছে সাবমেরিন বিক্রি নিশ্চিত পেন্টাগনের

পেন্টাগন গত সোমবার যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে অকাস নিরাপত্তা চুক্তি অনুমোদন করেছে।  এই চুক্তির আওতায়, অস্ট্রেলিয়া ১৫ বছরের মধ্যে কমপক্ষে তিনটি ভার্জিনিয়া-শ্রেণির পরমাণু সাবমেরিন পাবে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই বছরের শুরুতে জানিয়েছে, তারা ২০২১ সালে তার পূর্বসূরি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় স্বাক্ষরিত পারমাণু-চালিত আক্রমণাত্মক সাবমেরিন চুক্তি পর্যালোচনা করছে। পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল এক বিবৃতিতে বলেন, প্রতিরক্ষা বিভাগ তাদের পাঁচ মাসব্যাপী পর্যালোচনা সম্পন্ন করেছে। এই পর্যালোচনা অকাস চুক্তিকে সমর্থন করেছে এবং এটি ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমেরিকা ফার্স্ট এজেন্ডার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ’ বলে নির্ধারণ করেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশনা অনুসারে, অকাসকে ‘পূর্ণ গতিতে এগিয়ে যাওয়া’ উচিত এবং পর্যালোচনায় অকাসকে সম্ভাব্য সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর সুযোগকে চিহ্নিত করা হয়েছে।’ সমুদ্র শক্তি বিষয়ক মার্কিন হাউস উপকমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান জো কোর্টনি বলেছেন, পর্যালোচনার সমাপ্তি নিশ্চিত করে যে এই চুক্তির ‘কাঠামো আমাদের দেশের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’ পর্যালোচনা সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি উল্লেখযোগ্য যে ২০২১ সালের অকাস চুক্তি এখন তিনটি দেশের তিনটি সরকারের পরিবর্তন অতিক্রম করেও টিকে আছে এবং এটি এখনও শক্তিশালীভাবে বিদ্যমান।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
প্রশান্ত মহাসাগরে নৌযানে ফের মার্কিন হামলা, নিহত ৪

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী গতকাল বৃহস্পতিবার আবারও প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক পাচারকারী সন্দেহে একটি নৌযানে হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় চারজন নিহত হয়েছে।  মার্কিন সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। মহাসাগরে মাদক পাচারকারীদের নৌযান সন্দেহে সেগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের হামলায় এখন পর্যন্ত ৮৭ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।  খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র। গত সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে মার্কিন বাহিনী একটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষকে লক্ষ্য করে ফের হামলা চালায়।  ওই জাহাজে প্রথম হামলায় বেঁচে যাওয়া দুই ব্যক্তি দ্বিতীয়বারের হামলায় নিহত হয়।  যার ফলে, জীবিত ব্যক্তিকে হত্যা করার ঘটনায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।  গতকাল বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার ফুটেজ দেখেছেন এমন একজন জ্যেষ্ঠ ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা বলেছেন যে, মার্কিন বাহিনী ‘জাহাজডুবি থেকে বেঁচে যাওয়া নাবিকদের’ ওপর হামলা চালিয়েছে। অনেকেই এটিকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মার্কিন সাউদার্ন কমান্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলাটি ‘আন্তর্জাতিক জলসীমায় একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠনের পরিচালিত নৌযানকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য নিশ্চিত করেছে যে নৌযানটি অবৈধ মাদক বহন করছিল এবং পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে পরিচিত মাদক পাচার রুট দিয়ে চলাচল করছিল।’ ওই পোস্টে আরো বলা হয়, ‘নৌযানটিতে থাকা চার পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী নিহত হয়।’  একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাল্টি-ইঞ্জিনযুক্ত একটি নৌযান দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল এবং পরে বিস্ফোরণের ফলে সেটি পুড়ে যায়।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন রাখতে আদালতের অনুমতি

একটি ফেডারেল আপিল আদালত বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল গার্ড সৈন্যদের আগামী সপ্তাহে মার্কিন রাজধানী ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া নিম্ন আদালতের আদেশকে সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। এই স্থগিতাদেশের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন রাখতে আপাতত আর কোনো বাধা নেই। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র। ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক জিয়া কব গত মাসে রায় দেন যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাজার হাজার ন্যাশনাল গার্ড সৈন্যকে ওয়াশিংটনে মোতায়েন করা অবৈধ। ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক জিয়া কব ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই মোতায়েন বন্ধ করার নির্দেশ দেন।  তবে ট্রাম্প প্রশাসনকে আপিল করার সময় দিতে ২১ দিনের জন্য তার আদেশ স্থগিত করেন। ডিসি সার্কিটের যুক্তরাষ্ট্রের আপিল আদালতের তিন বিচারকের প্যানেল ট্রাম্প প্রশাসনের অনুরোধ মঞ্জুর করে ডিস্ট্রিক্ট বিচারকের আদেশ স্থগিত রাখার অনুমতি দিয়েছেন, যাতে তারা মামলাটি পারিচালনা করতে সময় পায়। একটি সংক্ষিপ্ত আদেশে, প্যানেলটি জোর দিয়ে বলেছে যে এই পদক্ষেপকে ‘কোনোভাবেই মামলার মূল বিষয়ের ওপর সিদ্ধান্ত হিসেবে ধরা উচিত নয়।’ ট্রাম্প অপরাধ মোকাবেলা ও অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তার কঠোর পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণাধীন ওয়াশিংটন, লস অ্যাঞ্জেলেস ও মেমফিসে ন্যাশনাল গার্ড সৈন্য পাঠিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস ও মেমফিস শহরের কর্তৃপক্ষ ফেডারেল সেনা মোতায়েনের প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেছে।  এই বিষয়ে তাদের মত হলো, স্থানীয় পরিস্থিতি মোকাবিলায় সৈন্য মোতায়েনের কোন প্রয়োজন নেই।  তবে মার্কিন আইনের অধীনে সীমিত স্বায়ত্তশাসনের রাজধানী ওয়াশিংটনের মেয়র হোয়াইট হাউসের নেওয়া কঠোর অবস্থানের সঙ্গে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমন্বয় রক্ষা করে চলছেন।  ফেডারেল বিচারকরা অন্য দুটি ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত শহর শিকাগো ও পোর্টল্যান্ডে এই সৈন্য মোতায়েন সাময়িকভাবে বন্ধ করেছেন এবং সুপ্রিম কোর্ট শীঘ্রই সিদ্ধান্ত দেবে যে এই পদক্ষেপগুলো আইনসম্মত কি-না।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ কমালো যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গতকাল বৃহস্পতিবার শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী এবং অন্যান্য অভিবাসীদের জন্য কাজের অনুমতির মেয়াদ ৫ বছর থেকে কমিয়ে ১৮ মাস করেছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র। এই পদক্ষেপ অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যাপক কঠোরতার একটি অংশ এবং এটি এমন এক সময় করা হলো, যখন এর মাত্র দুই দিন আগে ১৯টি দেশের নাগরিকদের জন্য অভিবাসন আবেদন স্থগিত করা হয়েছে। গত ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের পর পুনর্বাসন কর্মসূচির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী এক আফগান ব্যক্তি গত সপ্তাহে দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগের পরও, এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সেবা (ইউএসসিআইএস)-এর পরিচালক জোসেফ এডলো কাজের অনুমতির এই পদক্ষেপের কারণ হিসেবে গত নভেম্বর ২৬ তারিখের গুলি চালানোর ঘটনা উল্লেখ করেছেন। এডলো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কর্মসংস্থান বিষয়ে অনুমতির সর্বোচ্চ বৈধতার সময়কাল কমানো নিশ্চিত করবে যে যুক্তরাষ্ট্রে কাজের জন্য আসা ব্যক্তিরা জননিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করবে না বা ক্ষতিকর আমেরিকান-বিদ্বেষী মতাদর্শ প্রচার করবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ওপর ওই হামলার পর, আরও স্পষ্ট হয়ে গেছে যে ইউএসসিআইএস-কে বিদেশিদের নিয়মিত যাচাই প্রক্রিয়া চালাতে হবে। ওই ঘটনায়, হামলাকারী একজন বিদেশি এবং তিনি পূর্ববর্তী প্রশাসনের সমলে এই দেশে প্রবেশ করেন।’ ইউএসসিআইএস জানিয়েছে, ওয়ার্ক পারমিট পদক্ষেপটি শরণার্থী হিসেবে প্রবেশ করা অভিবাসী, আশ্রয়প্রাপ্ত অভিবাসী ও যাদের বহিষ্কার স্থগিত করা হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। গত মঙ্গলবার, ট্রাম্প প্রশাসন ১৯টি দেশের নাগরিকদের জন্য অভিবাসন আবেদন স্থগিত করেছে।  এই সব বিদেশি নাগরিক ইতোমধ্যেই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। ওই সব দেশের নাগরিকদের জন্য গ্রিন কার্ড ও নাগরিকত্ব প্রক্রিয়াকরণও স্থগিত করা হয়েছে।  যে সব দেশের নাগরিকদের জন্য গ্রিন কার্ড ও নাগরিকত্ব প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে, সেই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে— আফগানিস্তান, ইয়েমেন, হাইতি, ভেনেজুয়েলা, সুদান ও সোমালিয়া।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
গায়ানার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র

ভেনিজুয়েলার সঙ্গে যে কোনো ধরনের সমস্যা হলে, গায়ানার পাশে থেকে দেশটিকে রক্ষা করবে যুক্তরাষ্ট্র। গায়ানায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ কথা বলেন। গায়ানার সঙ্গে ভেনিজুয়েলার সীমান্ত বিরোধ রয়েছে।  খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র। গায়ানায় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মাথাপিছু অপরিশোধিত তেলের মজুত রয়েছে এবং এর বেশিরভাগই বিতর্কিত এসেকুইবো অঞ্চলে অবস্থিত। ওই অঞ্চলটিতে গায়ানার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মালিকানা রয়েছে এবং ভেনেজুয়েলা এই অঞ্চলটির মালিকানা দাবি করে আসছে। প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যকার এই ভূখণ্ডগত বিরোধ, একটি দীর্ঘস্থায়ী সীমান্ত বিরোধের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। এক দশক আগে, এক্সনমোবিল এসেকুইবো অঞ্চলে বিশাল সমুদ্রের তলদেশে তেলের মজুত আবিষ্কার করার পর থেকে এবং ২০২৩ সালে গায়ানা তেল ব্লক নিলাম শুরু করলে, বিবদমান দুই দেশের মধ্যে এই তীব্র উত্তেজনা অধিকতর তীব্র হয়েছে। এসেকুইবো ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গায়ানা কর্তৃক পরিচালিত হয়ে আসছে। রাজধানী জর্জটাউনে এক অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকোল থেরিয়ো এএফপিকে বলেন, ‘যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, তবে আমরা গায়ানার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশটির রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গায়ানার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য পাশে দাঁড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’  এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এলো, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী মোতায়েন করেছে। এই মোতায়েনকে তারা মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ বলে অভিহিত করছে।  কিন্তু কারাকাস দাবি করছে যে এটি দেশটির শাসন পরিবর্তনের কৌশল।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
ইন্ডিগোর বিমান। ছবি : সংগৃহীত
ভারতে শত শত ফ্লাইট বাতিল, ২০ বছরের রেকর্ড

ভারতে বিমান চলাচলে ভয়াবহ বিঘ্ন ঘটেছে। দেশটির বিমান পরিচালনা সংস্থা ইন্ডিগোর এক দিনে ৫৫০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এ ঘটনাকে ইতিহাসের সর্বোচ্চ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইন্ডিগো জানিয়েছে, ক্রু সংকট, নতুন নীতিমালার কারণে পরিকল্পনায় ভুল এবং প্রযুক্তিগত সমস্যার সম্মিলিত প্রভাবেই এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সংস্থাটি পূর্বনির্ধারিত কিছু ফ্লাইট বাতিলকে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রাখছে। আগামী দুই-তিন দিন আরও ফ্লাইট বাতিল হবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। ইন্ডিগো দৈনিক প্রায় ২ হাজার ৩০০ ফ্লাইট পরিচালনা করে আছে। প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের সময়নিষ্ঠতাকে অন্যতম সুনামের অংশ হিসেবে তুলে ধরে। কিন্তু বুধবার তাদের অন-টাইম পারফরম্যান্স নেমে আসে মাত্র ১৯ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। এমনকি তা মঙ্গলবারের ৩৫ শতাংশ থেকেও কমে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় ও নিয়ন্ত্রক ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) আজ ইন্ডিগোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সমস্যার উৎস এবং দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করাই ছিল সভার উদ্দেশ্য। ইন্ডিগো সিইও পিটার এলবার্স কর্মীদের জানান, স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা ও সময়নিষ্ঠতা পুনরুদ্ধার করা খুব সহজ কাজ নয়। পিটিআই জানিয়েছে, মুম্বাইয়ে ১১৮ ফ্লাইট, বেঙ্গালুরুতে ১০০ ফ্লাইট, হায়দরাবাদে ৭৫, কলকাতায় ৩৫, চেন্নাইয়ে ২৬ এবং গোয়ায় ১১টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও বিভিন্ন বিমানবন্দর থেকেও বাতিলের খবর এসেছে। ইন্ডিগো জানিয়েছে, নতুন ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন নীতিমালা অনুযায়ী ক্রু প্রয়োজন ভুলভাবে অনুমান করা হয়েছিল। নভেম্বর ১ তারিখ থেকে কার্যকর হওয়া নতুন নীতিমালা বাস্তবায়নে ‘রূপান্তরজনিত জটিলতা’ দেখা দেয়। এই নীতিমালায় বিশেষ করে রাতের অপারেশনে ক্রু চাহিদা বেড়ে যায়। যেখানে নীতিমালায় সময় স্লট সীমিত, আর পাইলটদের ডিউটি আওয়ার আরও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। নতুন নীতিমালা পাইলটদের ক্লান্তি কমানো এবং নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এতে রোস্টিং পুরোপুরি বদলে যায় ও রাতের শিডিউলে অতিরিক্ত পাইলটের প্রয়োজন হয়। ইন্ডিগোর তথ্য বলছে, এ নীতিমালা চালুর পর প্রয়োজনীয় পাইলটের সংখ্যা তাদের অনুমানের তুলনায় অনেক বেশি ছিল।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৫ 0
প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দল সিরিয়ায়

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল আজ বৃহস্পতিবার সিরিয়ায় পৌঁছেছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের পতনের এক বছরপূর্তির  কয়েকদিন আগে প্রথমবারের মতো এ সফরে গেল জাতিসংঘের শীর্ষ বডির প্রতিনিধি দল। দামেস্ক থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, প্রতিনিধি দলটি লেবানন ও সিরিয়ার মধ্যে জাদেইদেত ইয়াবুস সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছে এবং তারা বেশ কয়েকজন সিরীয় কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। পরে সংস্থাটি জানায়, প্রতিনিধি দল দামেস্কের মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উপশহর জোবার পরিদর্শন করেছে। কূটনীতিকরা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। পরে তারা শুক্রবার ও শনিবার প্রতিবেশী লেবানন সফর করবেন। জাতিসংঘ সিরিয়ায় নিজেদের কার্যক্রম পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়ার অন্তর্বর্তী নেতা শারার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। তিনি একজন সাবেক জিহাদী, যার বাহিনী গত বছরের ৮ ডিসেম্বর আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে। প্রায় ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধের পর বহু-জাতিগোষ্ঠী ও বহু-ধর্মবিশিষ্ট দেশটিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক রূপান্তরের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। বর্তমানে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সভাপতিত্ব করছে স্লোভেনিয়া। স্লোভেনিয়ার জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত স্যামুয়েল জোগার গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সিরিয়া ও লেবানন সফর হলো মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা পরিষদের গত ছয় বছরের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর এবং সিরিয়ায় প্রথম সফর। তিনি আরও বলেন, সফরটি এ অঞ্চলের জন্য এবং উভয় দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি সিরিয়ার রাজনৈতিক পালাবদলে নতুন কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টা এবং ইসরাইল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে লেবাননে এক বছরের অস্ত্রবিরতির বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, উভয় দেশের প্রতি সমর্থন ও সংহতি প্রকাশে এ সফর গুরুত্বপূর্ণ। চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে জানা, বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং উভয় দেশে নিরাপত্তা পরিষদ যে পথ দেখতে চায়, সে বিষয়ে বার্তা দেওয়ার জন্য এ সফরের আয়োজন করা হয়েছে। জোগার উল্লেখ করেন, জাতিসংঘ-সিরিয়া সম্পর্কের মধ্যে এখনো কিছুটা আস্থার ঘাটতি রয়েছে। আমরা এই সফরের মাধ্যমে তা দূর করার চেষ্টা করছি।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫ 0
বাংলাদেশ-পাকিস্তান ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতি

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স করাচি রুটে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ইকবাল হুসাইন খান। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ফরেন সার্ভিসেস অ্যাকাডেমিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। হাইকমিশনার জানান, পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় এয়ারলাইন্স করাচিতে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যেভাবে ভারতীয় উড়োজাহাজ বাংলাদেশ আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারে, একইভাবে বিমানও ভারতের আকাশসীমা ব্যবহার করে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে উড়বে। সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তানি এয়ারলাইন্সগুলোর ওপর ভারতের চলমান আকাশপথ সীমাবদ্ধতার কারণে ঢাকা-পাকিস্তান রুটে পাকিস্তানি ক্যারিয়ারের ফ্লাইট চালুর সম্ভাবনা আপাতত নেই। এর আগে উচ্চকমিশনার প্রশিক্ষণরত তরুণ কূটনীতিকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে আঞ্চলিক সংযোগ, বাণিজ্য ও রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বিশাল সম্ভাবনা থাকলেও সীমিত প্রবেশাধিকার, সীমান্তবাধা এবং আঞ্চলিক রাজনীতি অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ব্যাহত করছে। তিনি বলেন, পাকিস্তান-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বাড়ানো সম্ভব। কিন্তু সরাসরি যোগাযোগের অভাবই সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, অতীতে রেল যোগাযোগের কারণে বাণিজ্য সহজ ছিল, অথচ এখন পাকিস্তানের খেজুর আঞ্চলিক বাজারে পৌঁছায় দুবাই ঘুরে। প্রাচীন বাণিজ্যপথের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, একসময় কাবুল, পেশোয়ার, ঢাকা ও মিয়ানমার পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। এখন দুর্বল ভৌগোলিক সংযোগ অঞ্চলটির উন্নয়নে বড় চ্যালেঞ্জ। ইকবাল হুসাইন খান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার নতুন প্রজন্ম আরও সচেতন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও পরিবর্তনের প্রতি আগ্রহী। তিনি মনে করেন, ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনে বাংলাদেশের তরুণ সমাজে নতুন আশাবাদ তৈরি হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন নেতৃত্ব সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে পুরোনো বাধা দূর হবে, আঞ্চলিক সংযোগ বাড়বে এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির নতুন দ্বার খুলবে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫ 0
গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে ‘মৌলিক ভুল’ ছিল: গুতেরেস

গাজায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে কিনা—এ প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, সে সম্ভাবনা আছে বলে বিশ্বাস করার শক্তিশালী কারণ রয়েছে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের পদ্ধতিতে ‘মৌলিক ত্রুটি’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইসরায়েলের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করার ‘জোরালো কারণ’ রয়েছে। নিউ ইয়র্কে রয়টার্স নেক্সট সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, ইসরায়েলি অভিযান যেভাবে পরিচালিত হয়েছে, তাতে বেসামরিক মানুষের মৃত্যু এবং গাজা ধ্বংসের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে—এতে মৌলিক কিছু ভুল ছিল। তাদের নাকি লক্ষ্য ছিল হামাসকে ধ্বংস করা। অথচ গাজা ধ্বংস হলেও, হামাস এখনও নিশ্চিহ্ন হয়নি। সুতরাং এ অভিযানের প্রকৃতিতে মৌলিক সমস্যা রয়েছে। গাজায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে কিনা—এ প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, সে সম্ভাবনা আছে বলে বিশ্বাস করার শক্তিশালী কারণ রয়েছে। সাক্ষাৎকারে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রশংসা করেন গুতেরেস। আগস্টে বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছিল, গাজায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, মানবিক সহায়তার বিষয়ে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া রয়েছে। আশা করি এটি বজায় থাকবে এবং আরো উন্নত হবে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫ 0
৪০ বছর পর বৈঠকে লেবানন - ইসরায়েল

লেবানন ও ইসরায়েলের বেসামরিক প্রতিনিধিদল নাকুরায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ কমিটির এক বৈঠকে যোগ দিয়েছে। চার দশকের বেশি সময় পর ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে এটিই প্রথম সরাসরি আলোচনা। গতকাল বুধবার লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম বলেন, নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও আরও বিস্তৃত আলোচনায় যেতে প্রস্তুত আছে বৈরুত। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এটি কোনো শান্তি আলোচনা নয়। তাঁর মতে, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি শান্তিপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত। নাওয়াফের বক্তব্য অনুসারে লেবাননের দিক থেকে এ আলোচনার লক্ষ্য হলো শত্রুতার অবসান, লেবাননের জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা ও দেশটির ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, লেবানন ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ। সেখানে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করার বিনিময়ে ১৯৬৭ সালে দখল করা ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহারের কথা বলা আছে। ইসরায়েলের সঙ্গে আলাদা কোনো শান্তিচুক্তি করার ইচ্ছা লেবাননের নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর দেশ ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ। সেখানে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করার বিনিময়ে ১৯৬৭ সালে দখল করা ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরিভাবে প্রত্যাহারের কথা বলা আছে। ইসরায়েলের সঙ্গে আলাদা কোনো শান্তিচুক্তি করার ইচ্ছা লেবাননের নেই। নাওয়াফ মনে করেন, বেসামরিক দূতদের আলোচনায় অংশগ্রহণের বিষয়টি উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হতে পারে। কমিটি প্রায় তিন ঘণ্টা লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যকার ‘ব্লু লাইন’ সীমান্তরেখা–সংলগ্ন এলাকায় বৈঠকটি করেছে। বৈঠক শেষে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে আলোচনায় বেসামরিক প্রতিনিধিদের সংযুক্ত হওয়াকে ‘টেকসই বেসামরিক ও সামরিক সংলাপ’ প্রতিষ্ঠার পথে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করে স্বাগত জানানো হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে অস্থির থাকা এ সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা করছে কমিটি। ২০২৪ সালে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি তদারকির পাশাপাশি কমিটির কাজের পরিধি আরও বিস্তৃত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কয়েক মাস ধরে দুই পক্ষকে আহ্বান জানিয়ে আসছে। গত মাসে লেবাননের রাজধানীতে ইসরায়েলি বিমান হামলাকে কেন্দ্র করে যখন ক্রমাগত উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। লেবাননে নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটি সাধারণত দাবি করে থাকে যে হিজবুল্লাহ সদস্য ও তাঁদের স্থাপনাকে লক্ষ্য করেই তারা হামলা চালাচ্ছে। যুদ্ধবিরতিতে পুরোপুরিভাবে সেনা প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ থাকলেও লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচটি এলাকায় ইসরায়েলি সেনারা এখনো অবস্থান করছেন। ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র শশ বেদরোসিয়ান বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ বৈঠককে ঐতিহাসিক অগ্রগতি বলে উল্লেখ করেছেন। বেদরোসিয়ান দাবি করেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর চলমান প্রচেষ্টার কারণেই ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে এ সরাসরি বৈঠক সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেমনটা বলছেন যে আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের জন্য বিশেষ সুযোগ এখন তৈরি হয়েছে।’

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে আইইডি হামলা, নিহত ৩

পাকিস্তানের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় খায়বার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পুলিশের গাড়িকে লক্ষ্য করে শক্তিশালী আইইডি বিস্ফোরণে তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দেরা ইসমাইল খান জেলার পানিয়ালা এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। খবর দ্য হিন্দু। দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান সংলগ্ন দুর্গম এই অঞ্চলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব–ইন্সপেক্টর (এএসআই) গুল আলম, কনস্টেবল রফিক এবং পুলিশ ভ্যানের চালক শাকি জান। হামলার তীব্রতায় গাড়িটি প্রায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই পানিয়ালা ডিএসপি, স্থানীয় থানার ওসি এবং জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। দেরা ইসমাইল খান জেলার পুলিশ সুপার (ডিপিও) সাজ্জাদ আহমাদ সাহেবজাদা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরাই এই কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়েছে এবং তাদের খুঁজে বের করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। খায়বার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ সোহেল আফ্রিদি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫ 0
নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের ২১ অঙ্গরাজ্যে খাদ্যসহায়তা বন্ধের হুমকি ট্রাম্প প্রশাসনের

যুক্তরাষ্ট্রে যেসব অঙ্গরাজ্য ফেডারেল খাদ্যসহায়তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের তথ্য-উপাত্ত ফেডারেল সরকারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ মানতে চাইছে না, তাদের তহবিল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসনের কৃষিমন্ত্রী ব্রুক রোলিন্স এমন হুমকি দিয়েছেন। তথ্য-উপাত্ত না দিতে ইতিমধ্যে ডেমোক্র্যাট সমর্থিত অঙ্গরাজ্যগুলো আইনি লড়াই চালাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন মন্ত্রিপরিষদ বছরের শেষ বৈঠকটি করেছে। বৈঠক চলাকালে রোলিন্স মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২১টি অঙ্গরাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার বিষয়ে কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি দপ্তর (ইউএসডিএ) অঙ্গরাজ্যগুলোর কাছ থেকে সাপ্লিমেন্টাল নিউট্রিশন অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রামের (এসএনএপি) সুবিধাভোগীদের পরিচয়সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া নিয়ে এ মামলার সূত্রপাত হয়েছে। এসএনএপি কর্মসূচিকে ‘ফুড স্ট্যাম্পস’ বলেও ডাকা হয়ে থাকে। এ কর্মসূচির আওতায় নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে খাদ্যসামগ্রী কিনতে পারে। ২০২৪ অর্থবছর নাগাদ এই কর্মসূচির ওপর নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪ কোটি ১৭ লাখ, যা মোট মার্কিন বাসিন্দাদের প্রায় ১২ শতাংশ। ইউএসডিএর নির্দেশ মানতে গেলে অঙ্গরাজ্যগুলোকে সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর, জন্মতারিখ ও বাড়ির ঠিকানার মতো তথ্যগুলো ফেডারেল কর্তৃপক্ষের কাছে সরবরাহ করতে হবে। সমালোচকদের আশঙ্কা, এভাবে তথ্য হস্তান্তর করা হলে তাতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন হতে পারে। তবে গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে রোলিন্স বলেন, সম্ভাব্য জালিয়াতি চিহ্নিত করা এবং মার্কিন করদাতাদের সুরক্ষার জন্য এই তথ্য প্রয়োজন। রোলিন্স বলেন, ‘আমরা প্রথমবারের মতো সব অঙ্গরাজ্যকে তাদের তথ্য-উপাত্ত ফেডারেল সরকারের কাছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। আমরা চাইছি তাদের সঙ্গে কাজ করার মধ্য দিয়ে ইউএসডিএ যেন এসব জালিয়াতি নির্মূল করতে পারে এবং নিশ্চিত হতে পারে যে তারা সত্যিই ফুড স্ট্যাম্পের যোগ্য।’ রোলিন্স আরও বলেন, ‘রিপাবলিকান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ২৯টি অঙ্গরাজ্য তথ্য দিতে রাজি হয়েছে, যা প্রত্যাশিতই ছিল। এই জালিয়াতি সম্পর্কিত সব তথ্য-উপাত্তও মূলত এখান থেকেই পাওয়া যায়। কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়া, নিউইয়র্ক ও মিনেসোটার মতো ২১টি অঙ্গরাজ্য, যেগুলো ডেমোক্রেটিক ঘাঁটি বলে পরিচিত, তারা এখনো না বলে যাচ্ছে।’ এর ফলে ওই ডেমোক্র্যাট-সমর্থিত অঙ্গরাজ্যগুলো আর তাদের এসএনএপি সুবিধাভোগীদের জন্য নির্ধারিত ফেডারেল সহায়তা পাবেন না বলে উল্লেখ করেন রোলিন্স। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সুতরাং আগামী সপ্তাহ থেকে আমরা শুরু করে দেব এবং ওই সব অঙ্গরাজ্য আমাদের নির্দেশ না মানা পর্যন্ত আমরা ফেডারেল তহবিল পাঠানো বন্ধ রাখব।’

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫ 0
সমালোচনার মুখে স্মার্টফোনে ‘সঞ্চার অ্যাপ’ বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল ভারত সরকার

ভারতে নরেন্দ্র মোদি সরকার তীব্র সমালোচনার মুখে ‘সঞ্চার সাথি’ অ্যাপ নিয়ে আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। ভারতের স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক সব প্রতিষ্ঠানকে উৎপাদনের সময় মুঠোফোনে সরকারি সাইবার নিরাপত্তা অ্যাপ ‘সঞ্চার সাথি’ ইনস্টল করার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তীব্র সমালোচনার মুখে আজ বুধবার ভারতের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিতে সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সঞ্চার সাথির ব্যবহার ক্রমে বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত হলো মুঠোফোন প্রস্তুতকারকদের জন্য এই অ্যাপ ইনস্টল করা বাধ্যতামূলক করা হবে না।’ ভারতের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় গত শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) প্রাথমিক এক নির্দেশনায় স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক ও আমদানিকারকদের নতুন ফোনে ‘সঞ্চার সাথি’ অ্যাপ ইনস্টলের পাশাপাশি সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে পুরোনো ফোনগুলোতেও অ্যাপটি যুক্ত করতে বলা হয়েছিল। নির্দেশটি গত সোমবার প্রকাশ্যে আসে। নির্দেশে আরও উল্লেখ ছিল, অ্যাপটির কোনো কার্যকারিতা নিষ্ক্রিয় বা সীমাবদ্ধ করা যাবে না। ‘সঞ্চার সাথি’ ভারত সরকারের তৈরি একটি সাইবার নিরাপত্তা অ্যাপ, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা প্রতারণামূলক কল, বার্তা এবং চুরি হওয়া মুঠোফোনের বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারেন। আজ বুধবার সকালে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া পার্লামেন্টে বলেন, ‘...সংগৃহীত প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে সরকারি নির্দেশে পরিবর্তন আনতে হলে আমরা তা করব।’ নজরদারি–সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গোপনে নজরদারি করা সম্ভব নয়। আর তা করাও হবে না।’ এর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছিল, স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক অ্যাপল ও গুগল ভারত সরকারের নির্দেশনার বিরুদ্ধে চাপ তৈরি করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রযুক্তি কোম্পানি দুটি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি অপারেটিং সিস্টেম আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েডের মালিক। গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা-সংক্রান্ত উদ্বেগ তাদের মাথাব্যথার বড় কারণ ছিল। কোম্পানিগুলোর অবস্থান সম্পর্কে অবগত কিছু সূত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলছে, মুঠোফোন প্রস্তুতকারকদের বিশ্বের কোথাও রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো অ্যাপ নিজেদের ডিভাইসে আগেভাগে ইনস্টল করার নজির নেই। এটা করতে গেলে কোম্পানিগুলোকে ভারতে ব্যবহারের জন্য আলাদাভাবে আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড কাস্টমাইজ করতে হতে পারে, যা তাদের কার্যক্রমে জটিলতা তৈরি করবে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫ 0
সোনালি বিবি ও তাঁর ছেলেকে বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিচ্ছে ভারত

বাংলাদেশি দাবি করে জবরদস্তি সে দেশে ঠেলে পাঠানো অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি ও তাঁর আট বছর বয়সী ছেলেকে ভারতে ফিরিয়ে আনতে রাজি হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মত হওয়ার কথা আজ বুধবার সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্তর এজলাসে জানান। আদালত বলেছেন, সোনালি বিবিদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফেরত এনে তাঁদের চিকিৎসার বন্দোবস্তও সরকারকে করতে হবে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলা থেকে কাজের সন্ধানে সোনালি বিবি ও তাঁর পরিবার দিল্লি এসেছিল। গত জুন মাসে বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের ধরা হয়। তারপর আসাম সীমান্ত দিয়ে জবরদস্তি করে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়। বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর পর পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশের অপরাধে গ্রেপ্তার করে। সেই থেকে তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংশোধনাগারে ছিলেন। পরে জামিনে মুক্তি পান। ভারতীয় নাগরিক হওয়ার যাবতীয় প্রমাণ সাপেক্ষে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্ট সোনালি বিবিদের ফেরত আনার নির্দেশ দেন। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার তেমন উদ্যোগী হচ্ছিল না। এ পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী মানবিক কারণে সোনালি বিবিদের দ্রুত ফেরত আনার নির্দেশ দেন। আজ বুধবার তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতির কথা জানান। সোনালি বিবি বারবার বলেছেন, তিনি চান দ্রুত ভারতে ফিরে আসতে, যাতে তাঁর সন্তান ভারতে জন্মাতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টও সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আজ তুষার মেহতা তাঁদের দিল্লি নিয়ে আসার কথা জানালে প্রধান বিচারপতি বলেন, সোনালি বিবিদের বীরভূমের বাড়িতে পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হোক। সেখানে স্থানীয় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নেবেন। সোনালির পরিবারও তেমনই চায়। সোনালির প্রসবসংক্রান্ত সব চিকিৎসা–সুবিধা বিনা মূল্যে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। আজ প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পদ্ধতি নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন। কেন্দ্রের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা আপনাদের কাজে বাধা দিচ্ছি না। কিন্তু নাগরিকত্বের যাচাই যেভাবে হচ্ছে, সেই পদ্ধতি ঠিক নয়।’ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীও কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেন, মামলার বাদী ভদু শেখ ভারতীয়। তাঁর নাগরিকত্ব নিয়ে কেন্দ্র প্রশ্ন তোলেনি। তিনি সোনালির বাবা। তাহলে তাঁর মেয়ে সোনালিও ভারতীয়। কিন্তু নাগরিকত্ব প্রমাণের পদ্ধতি মানা হয়নি। এই একই কথা কেন্দ্রীয় সরকারকে শুনতে হয়েছিল গত ২৫ নভেম্বরের শুনানিতেও। সেদিনও বলা হয়েছিল, ঠিকমতো যাচাই না করেই সোনালি বিবিসহ ছয়জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছিল। সোনালিদের কোনো ওজর-আপত্তি শোনা হয়নি। তথ্যপ্রমাণও গ্রাহ্য করা হয়নি। সোনালি বিবিদের ভারতে ফেরত আনার বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য সামিরুল ইসলাম। এখন দেখার বিষয়, সোনালি বিবিরা কত দ্রুত দেশে ফিরতে পারেন। এ মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ ডিসেম্বর।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫ 0
হন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প–সমর্থিত প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে গেলেন নাসরাল্লা

হন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মধ্যপন্থী লিবারেল পার্টির নেতা সালভাদর নাসরাল্লা রক্ষণশীল প্রার্থী নাসরি আসফুরার চেয়ে সামান্য এগিয়ে গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার প্রায় ৬৮ শতাংশ ভোট গণনা শেষে নির্বাচন কর্তৃপক্ষ এমন তথ্য দিয়েছে। আসফুরা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প–সমর্থিত প্রার্থী। হন্ডুরাসে গত রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। এরই মধ্যে ভোট গণনায় দেরি হওয়াকে কেন্দ্র করে নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ আংশিক ভোট গণনায় প্রাপ্ত সর্বশেষ ফল প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, ৬৮ শতাংশ ভোট গণনা শেষে নাসরাল্লা পেয়েছেন ৪০ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট এবং ন্যাশনাল পার্টির আসফুরা পেয়েছেন ৩৯ দশমিক ৭১ শতাংশ ভোট। প্রধান দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান ৯ হাজার ১২৯। এর আগে গত সোমবার প্রকাশিত আংশিক ফলাফলে আসফুরা প্রায় ৫০০ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত ফলে ক্ষমতাসীন বামপন্থী দল লিব্রে পার্টির রিক্সি মোনকাদা ১৯ দশমিক ০৯ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন। গতকাল সকালে হন্ডুরাসের নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তারা ওই সময় ভোট গণনা ব্যবস্থায় ত্রুটি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিল। ওই ত্রুটির কারণে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রায় ২০ শতাংশ ভোট গণনার বাইরে থেকে যায়। এতে ট্রাম্প সম্ভাব্য ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন। গত সোমবার নির্বাচন কর্তৃপক্ষ বলেছে, আসফুরা এবং নাসরাল্লা প্রায় সমান সমান অবস্থানে আছেন। তাঁরা দুজনই ৪০ শতাংশের সামান্য কিছু কম ভোট পেয়েছেন। এখন এ ভোট হাতে গণনা করা হবে। হন্ডুরাসের নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রাথমিকভাবে দ্রুত ভোট গণনার ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। এতে যে ওয়েব পোর্টালে তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফলের তথ্য হালনাগাদ করার কথা ছিল, সেটিতেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। গত সোমবার ওয়েবসাইট দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গেছে। অনেকে অভিযোগ করছেন, গত রোববার ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই হয়তো ভোট জালিয়াতি হয়েছে। ভোট গণনা চলাকালে হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট হুয়ান অরল্যান্ডো হার্নান্দেজকে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজনসের এক নথিতে এমনটা উল্লেখ আছে। হার্নান্দেজ যুক্তরাষ্ট্রে মাদক চোরাচালান ও আগ্নেয়াস্ত্রসংক্রান্ত অভিযোগে ৪৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন। ট্রাম্প হন্ডুরাসের ভোটারদের ন্যাশনাল পার্টির প্রার্থী আসফুরাকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানোর পর হার্নান্দেজকে মুক্তি দেওয়া হয়। আসফুরার জন্য ভোট চাওয়ার পাশাপাশি তিনি হার্নান্দেজকে ক্ষমা করে দেবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, ট্রাম্প হার্নান্দেজকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। গত সোমবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, হন্ডুরাস তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে। ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যদি তারা এটা করে, তবে তাদের কঠিন পরিণতি হবে। হন্ডুরাসের মানুষ ৩০ নভেম্বর বিপুল সংখ্যায় ভোট দিয়েছে।’ অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস নামের সংগঠনটি হন্ডুরাসে ভোট পর্যবেক্ষণ করেছে। তারা বলেছে, রোববারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি অনেক ছিল। দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। সংগঠনটি গত সোমবার দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘দেশটির কিছু শহরে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা বাদ দিলে ভোট গ্রহণ স্বাভাবিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’ তবে ভোট গণনা দীর্ঘায়িত হলে নির্বাচনী পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এবং বিক্ষোভ–সহিংসতা শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা এখন গণনা–সম্পর্কিত তথ্য সরাসরি সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে প্রকাশ করবে। জনগণ যেন ফলাফলের দিকে নজর রাখতে পারে, তা নিশ্চিত করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫ 0
নিউইয়র্কে ৮ অভিবাসন বিচারককে বরখাস্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে আটজন অভিবাসনবিষয়ক বিচারককে বরখাস্ত করেছে দেশটির বিচার বিভাগ। সংশ্লিষ্ট বিচারকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন গতকাল মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে। অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কট্টর অবস্থান ঘিরে অনিশ্চিয়তার মধ্যেই এ আট বিচারককে বরখাস্ত করার খবর জানা গেল। ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ইমিগ্রেশন জাজেস (এনএআইজে) জানায়, বরখাস্ত হওয়া আট বিচারকের সবাই ম্যানহাটানের ২৬ ফেডারেল প্লাজায় কর্মরত ছিলেন। এখানকার একটি আদালত অভিবাসীদের আইনি স্বীকৃতি দেওয়া–সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা করেন। গত কয়েক মাসে মুখোশধারী ফেডারেল কর্মকর্তারা প্রায় প্রতিদিনই ‘জ্যাকব কে জাভিটজফেডারেল বিল্ডিং’-এর করিডরে টহল দিয়ে আসছিলেন। শুনানি থেকে বেরিয়ে আসার পর তাঁরা অভিবাসীদের আটক করছিলেন। এমনকি বেশ কয়েকবার সংবাদমাধ্যমের সামনেই এমন ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও অভিবাসী পরিবারগুলোকে পৃথক করে দেওয়ার ছবি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে ‘২৬ ফেডারেল প্লাজা’ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অভিবাসীদের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের প্রতীকী জায়গা হয়ে উঠেছে। নিউইয়র্কের আট বিচারককে ঠিক কী কারণে বরখাস্ত করা হয়েছে, সেটা স্পষ্ট নয়। তবে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অভিবাসনবিষয়ক ৬০০ বিচারক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৯০ জনকে বছরজুড়ে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন এই ৮ জন। অভিবাসীদের পক্ষে কাজ করে আসা সংগঠনগুলো মনে করছে, বরখাস্ত হওয়া বিচারকদের পরিবর্তে এসব পদে এমন লোকদের নিয়োগ দেওয়া হবে, যাঁদের মনোভাব ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসননীতির সঙ্গে আরও বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫ 0
জার্মানিতে সেনাবাহিনীর ২০ হাজার গুলি চুরি, কে কীভাবে এ কাণ্ড ঘটাল

জার্মানির স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যের বুর্গ শহরে সেনাবাহিনীর ব্যারাকে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হওয়া একটি ডেলিভারি ট্রাক থেকে হাজার হাজার গুলি চুরি হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে এ চুরির বিষয় নিশ্চিত করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এই গুলি কে বা কারা চুরি করেছে, তা এখনো জানা যায়নি। চালক অনির্ধারিত স্থানে ট্রাক থামানোয় এ ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জার্মানির দুই সংবাদমাধ্যম এমডিআর ও সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ডেয়ার স্পিগেলকে চুরির ঘটনাটি গত ২৫ নভেম্বর ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে। স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যে গোলাবারুদ ‘হারানোর’ ঘটনা আগেও ঘটেছে। এ ছাড়া গত কয়েক মাসে বার্নবুর্গ ও আইসলেবেন শহরে পুলিশের গোলাবারুদ খোয়া যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। জার্মান সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, একটি বেসামরিক মালিকানাধীন ট্রাক সেদিন গুলি বহন করছিল। রাত হওয়ায় বুর্গের একটি হোটেলের পার্কিংয়ে ট্রাক থামান চালক। পরের দিন ট্রাক ব্যারাকে পৌঁছানোর পর বেশকিছু গুলি উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায়, পিস্তলের প্রায় ১০ হাজারটি তাজা গুলি ও প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত অ্যাসল্ট রাইফেলের ৯ হাজার ৯০০ গুলি ট্রাকে নেই। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা চুরির বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। এসব গুলি ভুল হাতে পড়া উচিত নয়।’ মন্ত্রণালয় আরও মনে করছে, চালকের এমন জায়গায় ট্রাক থামানো ঠিক হয়নি। চুরির ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, তা জানতে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় তদন্ত শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যে গোলাবারুদ ‘হারানোর’ ঘটনা আগেও ঘটেছে। এ ছাড়া গত কয়েক মাসে বার্নবুর্গ ও আইসলেবেন শহরে পুলিশের গোলাবারুদ খোয়া যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৫ 0
Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

Top week

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ছবি : সংগৃহীত
জাতীয়

লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৫ 0