বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের সাতটি চোরাপথ হয়ে অবৈধ অস্ত্রের চালান দেশে ঢুকছে। এই অস্ত্র পাচারের সঙ্গে জড়িত রয়েছে কমপক্ষে পাঁচটি চক্র, আর প্রতিটি চক্রেই রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এসব অস্ত্রের প্রধান গন্তব্য কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলার সন্ত্রাসীদের আস্তানা। সীমান্ত ও নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মায়ানমার থেকে যেভাবে অস্ত্র ঢুকছে—এমন পরিস্থিতি কয়েক বছর আগেও দেখা যায়নি। এখন মাদকের সঙ্গে অস্ত্রও পাচার হচ্ছে, আবার মানবপাচারকারী চক্রও এই অবৈধ ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দীন শাহীন জানান, ৫ অক্টোবর ভোররাতে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের মরাগাছতলায় অভিযান চালিয়ে দুটি অগ্নেয়াস্ত্র, পাঁচটি কার্তুজ ও দুই হাজার পিস ইয়াবাসহ পাঁচজন মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। তারা এসব অস্ত্র ও মাদক মায়ানমার সীমান্ত থেকে পাচার করে এনেছিল। রোহিঙ্গা ক্যাম্প সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় পাচারকারীদের জন্য অস্ত্র আনা সহজ হয়ে উঠেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কক্সবাজার রামু সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, মায়ানমার থেকে অস্ত্র আনার পর পাচারকারীরা তা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। গত তিন মাসে বিজিবি সদস্যরা ২২টির বেশি দেশি-বিদেশি অস্ত্রের চালান আটক করেছেন।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটারের মধ্যে সাতটি পথে পাচারকারীরা অস্ত্র আনছে। এসব পয়েন্টের মধ্যে রয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি, বালুখালী কাস্টমস ঘাট, উখিয়ার পালংখালী ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নলবনিয়া এলাকা। বাইশফাঁড়ি এলাকার পথ দুর্গম ও পাহাড়ি হওয়ায় সেখানে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের কিছু লোকজনও পাচারে যুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। এই পথ দিয়ে আনা অস্ত্রের বড় অংশ তিন পার্বত্য জেলায় থাকা সন্ত্রাসীদের হাতে যায়। অন্য দুটি পয়েন্ট দিয়ে আনা অস্ত্র সরাসরি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছায়।
এ ছাড়া নাফ নদী দিয়ে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং, উলুবনিয়া ও টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা, দমদমিয়া, জাদিমুরা, নয়াপাড়া এবং টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বরইতলী খাল হয়ে অস্ত্র পাচার হয়। এসব চোরাই পথের বিভিন্ন অংশে রোহিঙ্গারা অস্ত্র বহনের দায়িত্ব নেয়। জাদিমুরা পয়েন্টে স্থানীয় বাসিন্দা কালু নামের এক ব্যক্তি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এই চক্রে যুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।
তদন্তে আরও জানা গেছে, সীমান্তপথে অস্ত্র পাচারে অন্তত পাঁচটি চক্র সক্রিয়। এর মধ্যে চারটি হলো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠী—আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা), রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), হালিম গ্রুপ এবং নবী হোসেন গ্রুপ। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানের অরণ্যে সক্রিয় একটি বড় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীও রয়েছে, যার সদস্যসংখ্যা শতাধিক বলে ধারণা।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সাধারণ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হালিম গ্রুপের প্রধান কেফায়েত উল্লাহ ওরফে আব্দুল হালিম উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-৭-এ অবস্থান করছেন এবং সেখানে নৌকার মাঠ এলাকায় আস্তানা গড়ে তুলেছেন। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মায়ানমারের রাখাইনের সীমান্ত ঘেঁষা ঢেকিবনিয়া ঘাঁটি থেকে লুট করা অস্ত্রের ভিডিও ধারণ করেন হালিম নিজেই। ধারণা করা হয়, ওই অস্ত্রগুলোর বড় অংশ বাংলাদেশে পাচার করা হয়।
র্যাব-১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান জানান, র্যাবের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে দেড় বছরে ২১টি বিদেশিসহ ১,২৭৯টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে এবং ১৬৩ জন অস্ত্রধারীকে আটক করা হয়েছে।
মায়ানমারে অস্ত্রের উৎস
রাখাইন রাজ্যে (আরাকান) ২০১৭ সালে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের পর থেকে আরাকান আর্মি গঠন হয়। তারা রাখাইনকে মায়ানমার থেকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে সহিংস যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সীমান্তঘেঁষা রাখাইনের অধিকাংশ এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। এই সংঘাতে মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) ঘাঁটিও দখল হয়, ফলে বহু অস্ত্র ফেলে তারা পালিয়ে আসে।
এই অস্ত্রগুলোর একটি অংশ রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো—আরসা, আরএসও ও হালিম গ্রুপ—লুট করে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাচার করে। এ সময় আরাকান অঞ্চলে খাদ্যঘাটতি দেখা দিলে স্থানীয় আরাকান আর্মি অস্ত্রের বিনিময়ে খাদ্য ও নিত্যপণ্য সংগ্রহ করতে থাকে। ফলে সীমান্ত বাণিজ্যের আড়ালে অস্ত্রের বড় অংশ বাংলাদেশের অপরাধীচক্রের হাতে পৌঁছে যায়।
স্থানীয় এক সভায় একজন সাবেক জনপ্রতিনিধি বলেছেন, “বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে আরাকানে নিত্যপণ্যের পাচার এত বেড়েছে যে, এখন কক্সবাজারের খাবার দিয়েই আরাকান আর্মির সকালের নাশতা হয়।”
উপসংহার
সীমান্তের ভৌগোলিক জটিলতা, দারিদ্র্য ও অপরাধীচক্রের পারস্পরিক যোগসাজশে পরিস্থিতি ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব একযোগে অভিযান চালালেও অস্ত্র পাচারের নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই চোরাপথগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্থানীয় সহযোগিতা, আন্তর্জাতিক সমন্বয় এবং প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি ব্যবস্থা জরুরি হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
পরিবেশ দূষণ রোধে নিয়মিত অভিযান শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন এলাকায় দূষণ নিয়ন্ত্রণে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে হাজারীবাগ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। সেখানে গাড়ির কালো ধোঁয়ার মাধ্যমে পরিবেশ দূষণের অভিযোগে ৮টি গাড়ির চালককে মোট ৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া অঞ্চল–৪ এর আওতাধীন বাবুবাজার ও আশপাশের এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সালেহ মুস্তানজিরের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। দূষণ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ২৬৯ ধারা এবং স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯-এর ৯২ উপধারা অনুযায়ী মোট ১৪টি মামলায় ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। ডিএসসিসি জানিয়েছে, জনস্বার্থে দূষণবিরোধী এসব অভিযান নিয়মিতভাবে অব্যাহত থাকবে এবং পরিবেশ রক্ষায় কঠোর নজরদারি চলবে।
কাতার আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আজ (শুক্রবার) ঢাকায় পৌঁছাচ্ছে না। সব ঠিক থাকলে এটি আগামীকাল শনিবার আসতে পারে। এ কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আজ লন্ডনে নেওয়ার পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে রোববার (৭ ডিসেম্বর) তাকে লন্ডন নেওয়া হতে পারে। শুক্রবার সকালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের আগমন বিলম্বিত হয়েছে। তিনি বলেন, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শনিবার পৌঁছালে এবং মেডিকেল বোর্ড অনুমতি দিলে খালেদা জিয়াকে ৭ তারিখ যাত্রা করানো হবে। এদিকে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সহায়তার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার পর তার ফ্লাইট ছেড়ে যায়। ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ কিডনি, ফুসফুস, হৃদপিণ্ড ও চোখের নানা জটিলতায় ভুগছেন। হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ২৩ নভেম্বর তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার জন্য কাতার সরকারের ব্যবস্থাপনায় জার্মানি থেকে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় আসছে। আগামীকাল শনিবার বিকেল ৫টায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটির ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, কাতার রাজপরিবারের পূর্বনির্ধারিত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটিতে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় কাতারের আমির তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিকল্প আরেকটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছেন। নতুন এ অ্যাম্বুলেন্সটিও কাতারের, তবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি জার্মানির। তিনি আরও পরিষ্কার করে বলেন, কাতার জার্মানি থেকে আলাদা কোনো অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছে না—এটি কাতারেরই অ্যাম্বুলেন্স, শুধু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান জার্মান। এদিকে খালেদা জিয়াকে নিতে দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান। দেশে পৌঁছে তিনি সরাসরি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যদি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিদেশযাত্রার উপযোগী বলে মত দেয়, তাহলে আগামী রোববার (৭ ডিসেম্বর) তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশ ছাড়তে পারেন।