গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বলিউডের আইটেম গার্ল নোরা ফাতেহি। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন তিনি। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) এক কনসার্টে পারফর্ম করতে যাওয়ার পথে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। তবে বড় কোনো আঘাত পেয়ছেন কিনা তা সিটিস্ক্যানের পর জানা যাবে।
এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক ভিডিও বার্তায় অভিনেত্রী বলেন, এটি আমার জীবনের সবচেয়ে ট্রমাটিক দুর্ঘটনা।
নিজের শারীরিক অবস্থার বর্ণনা জানিয়ে তিনি বলেন, গতকাল শনিবার এই ভয়ঙ্কর গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হই আমি। এক ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। আমার গাড়িতে তিনি সজোরে ধাক্কা দেন। এতে গাড়ির ভেতরে ছিটকে আমার মাথা কাঁচের সঙ্গে লাগে। এখন আমি ঠিক আছি। তেমন বড় কোনো চোট নেই।
তিনি বলেন, বেঁচে আছি এটাই বড় বিষয়। আমি সবাইকে বলবো, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না।
আঘাত পাওয়ার পরও কনসার্টে গিয়ে পারফর্ম করেন নোরা। বলিউড বিশ্লেষকরা অবশ্য নোরার এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়ে বলছেন, এই অবস্থান নোরার কাজের ও ভক্তদের প্রতি দায়বদ্ধতাকেই প্রমাণ করে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
বিশ্বজুড়ে সিনেমা হলের পর্দা কাঁপাতে শুরু করেছে জেমস ক্যামেরনের বহুল প্রতিক্ষীত সিনেমা ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’। সিরিজের তৃতীয় এই কিস্তিটি মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই বক্স অফিসে আধিপত্য বিস্তার করেছে। যদিও উৎসবের কারণে ভ্রমণের ধুম ও পারিবারিক অনুষ্ঠানের ভিড়ে সিনেমাটির আয় পূর্বাভাস থেকে কিছুটা কম হয়েছে, তবুও এর ব্যবসায়িক সাফল্য নিয়ে কোনো সংশয় নেই বিশ্লেষকদের। টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি স্টুডিওজের তথ্যমতে, ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ উত্তর আমেরিকার বাজারে মুক্তির প্রথম তিন দিনে প্রায় ৮৮ মিলিয়ন ডলার আয় করতে যাচ্ছে। শনিবার এক দিনেই সিনেমাটি ঘরে তুলেছে ২৮ মিলিয়ন ডলার। যদিও আগের কিস্তি ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’-এর তুলনায় এর শুরুটা কিছুটা ধীর, তবে আন্তর্জাতিক বাজারে সিনেমাটির দাপট চোখে পড়ার মতো। বিশ্বজুড়ে সব মিলিয়ে সিনেমাটির প্রথম সপ্তাহের আয় ৩৪০ থেকে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে চীনে বক্স অফিস চার্টে সিনেমাটি এখনও শীর্ষে রয়েছে, যেখানে এর আয় এখন পর্যন্ত ৫২ মিলিয়ন ডলার। সিনেমাটিতে এবার দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে না’ভিদের নতুন ও ভয়ংকর গোত্র ‘অ্যাশ পিপল’-এর সাথে। সমালোচকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও সাধারণ দর্শকরা সিনেমাটিকে লুফে নিয়েছেন। দর্শকদের জরিপে এটি ‘এ’ সিনেমা স্কোর পেয়েছে। প্রযুক্তিগত দিক থেকে জেমস ক্যামেরন আবারও নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন বলে মনে করছেন দর্শকরা। ভিএফএক্স এবং ভিজ্যুয়াল ইফেক্টের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। এদিকে বক্স অফিসে ‘অ্যাভাটার’-এর রাজত্ব থাকলেও চমক দেখিয়েছে অ্যাঞ্জেল স্টুডিওজের অ্যানিমেশন সিনেমা ‘ডেভিড’। ২১ মিলিয়ন ডলার আয় করে এটি স্টুডিওটির ইতিহাসে সেরা উদ্বোধনী আয়ের রেকর্ড গড়েছে। এছাড়া লাইন্সগেটের ‘দ্য হাউজমেড’ ১৯ মিলিয়ন এবং প্যারামাউন্টের ‘স্পঞ্জবব মুভি’ ১৭ মিলিয়ন ডলার আয় করে লড়াইয়ে টিকে আছে।
বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের নব্বই দশকের দুই সুপারস্টার নায়িকা মৌসুমী ও শাবনূর—এক সময় পর্দাজুড়ে যাদের রাজত্ব, সেই দুই তারকার দেখা হলো বহুদিন পর। প্রবাসের মাটিতে এ পুনর্মিলন যেন ফিরিয়ে আনল এক সময়ের সোনালি স্মৃতি। বর্তমানে দুই নায়িকা দুই দেশে বসবাস করছেন। মৌসুমী রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে, আর শাবনূর আছেন কানাডায়। গত ১৭ ডিসেম্বর ছিল শাবনূরের জন্মদিন। বিশেষ এ দিনটি উদযাপন করতে একমাত্র ছেলে আইজানকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রথমে শাবনূর জন্মদিন উদযাপন করেন তার সহঅভিনেতা অমিত হাসান ও তার স্ত্রী লাবনীর সঙ্গে। শাবনূরের যুক্তরাষ্ট্র সফরের খবর পেয়ে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে যান প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী। বহুদিন পর প্রিয় সহকর্মীকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন শাবনূর। দেখা হতেই একে অন্যকে জড়িয়ে ধরেন তারা। আনন্দ-উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসায় ভরে ওঠে মুহূর্ত। শাবনূর বারবার মৌসুমীর প্রশংসা করেন, বলেন— ‘তিনি আরও সুন্দর হয়ে উঠেছেন।’ এরপর দীর্ঘ সময় ধরে একসঙ্গে গল্প, আড্ডা আর স্মৃতিচারণায় মেতে ওঠেন মৌসুমী, শাবনূর ও অমিত হাসান। উপস্থিত সবার কাছে মনে হচ্ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে যেন তৈরি হয়েছে এক টুকরো বাংলাদেশ। পুনর্মিলন নিয়ে মৌসুমী বলেন, ‘খুব, খুব মিস করছিলাম শাবনূরকে। যখন শুনলাম সে কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে, তাও আবার জন্মদিন উপলক্ষ্যে—তখন আর দেরি করিনি। দেখা হয়ে যে কী ভালো লেগেছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আমাদের অসংখ্য স্মৃতি, সেই গল্পগুলোই বারবার ফিরে আসছিল।’ অন্যদিকে আবেগঘন কণ্ঠে শাবনূর বলেন, ‘মৌসুমী আপুকে দেখে আমি এতটাই খুশি হয়েছি যে, সেটা বোঝানো সম্ভব নয়। এবারের জন্মদিনটা আমার জন্য ভীষণ সুন্দর আর স্মরণীয় হয়ে থাকল। আমার ভক্ত-দর্শকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা—তারা যে ভালোবাসা আর শুভেচ্ছায় আমাকে সিক্ত করেছেন।’ দীর্ঘদিন পর নব্বই দশকের দুই জনপ্রিয় নায়িকার দেখা হওয়া তাদের ভক্তদের মাঝেও ফিরিয়ে এনেছে নস্টালজিয়া। প্রবাসে হলেও সেই মুহূর্তে সময় যেন থেমে গিয়েছিল—স্মৃতি, ভালোবাসা আর বন্ধুত্বের উষ্ণতায়।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির আকস্মিক মৃত্যু যেন মুহূর্তেই স্তব্ধ করে দিয়েছে গোটা দেশ। এক সাহসী কণ্ঠের চিরবিদায়ে রাজপথ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—সবখানেই নেমে এসেছে শোকের ভারী ছায়া। শ্রদ্ধা আর বেদনার ঢেউয়ে ভেসে উঠছে ফেসবুকের টাইমলাইন। এই শোকের মিছিলে সামিল হয়েছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পরিচিত মুখ অভিনেতা নিলয় আলমগীরও। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক হ্যান্ডেলে আবেগঘন এক পোস্টে প্রয়াত হাদির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান তিনি। প্রকাশিত সেই পোস্টে নিলয় লিখেছেন, ‘হাদি হয়তো এমন বিদায় চেয়েছিল। সবার দুআ আর ভালোবাসা নিয়ে চলে গেল। এমন সাহসী কণ্ঠস্বর কি আর পাব?’ এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লেখেন, আমাদের ভাই হাদি রওনা দিয়েছেন অনন্তের পথে। আবরার, আবু সাঈদদের মতো হাদি না থেকেও আরও বেশি করে থাকবেন বাংলাদেশের বুকে। ইউ ফেইলড টু কিল ওসমান হাদি! দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ও ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে লেখা হয়, ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। ঘটনার সময় তিনি রিকশায় করে যাচ্ছিলেন। তখন হঠাৎ একটি মোটরসাইকেল থেকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর দিকে ঢাকা মেডিকেলে ওসমান হাদির অপারেশন সম্পন্ন হয়। শরীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে পোস্ট অপারেটিভ কেয়ারের জন্য হাদিকে সন্ধ্যা ৭টার পর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।