বৃষ্টি কম, তাপমাত্রা বেশি: অস্বাভাবিক জলবায়ু নিয়ে চিন্তিত বিজ্ঞানীরা
গত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা দিয়েছে জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তন। যেখানে আগে নির্দিষ্ট সময়েই পর্যাপ্ত বৃষ্টি হত, সেখানে এখন বৃষ্টি কমে গেছে। আর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মানুষের জীবনযাত্রা, কৃষি, ও পরিবেশে বড় প্রভাব পড়েছে। এই পরিবর্তন নিয়ে দেশের ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
বাংলাদেশের মতো কৃষিভিত্তিক দেশে বৃষ্টির অভাব সরাসরি ফসলের ওপর প্রভাব ফেলে। কৃষকরা এখন আগের মতো সহজে ফসল তোলা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে আয় কমে যাচ্ছে। তাপমাত্রার বৃদ্ধির কারণে গ্রীষ্মকাল আরও তীব্র হয়ে উঠেছে, যা স্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি সৃষ্টি করছে। গরমে পানিশূন্যতা, ত্বকের রোগ, হাঁপানি ও অন্যান্য শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই পরিবর্তন মূলত বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে ঘটছে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ফলে বায়ুমণ্ডলের গঠন ও বৃষ্টিপাতের ধরণ পরিবর্তিত হচ্ছে। সাগরের তাপমাত্রা বাড়ায় মেঘ গঠনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে, ফলে বৃষ্টির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি বায়ু প্রবাহের পরিবর্তন পরিবেশে তাপমাত্রা ওঠানামায় অস্থিরতা তৈরি করছে।
এই অস্বাভাবিক জলবায়ুর প্রভাবে পরিবেশেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। নদীর পানি কমে যাচ্ছে, মাটির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে, ফলে বন্যপ্রাণী ও গাছপালার বাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বন্যায় তেমন প্রভাব পড়লেও খরা এখন বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। তাছাড়া শহরে গ্রীন স্পেস কমে যাওয়ায় তাপমাত্রা আরও বাড়ছে।
চিন্তার বিষয় হলো, এ ধরনের পরিবর্তন যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এখনই সতর্ক হওয়া দরকার। বিজ্ঞানীরা সরকার ও জনগণকে সতর্ক করে বলছেন—পরিবেশ সংরক্ষণে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যেমন কার্বন নিঃসরণ কমানো, গাছ লাগানো, জলসাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহার ইত্যাদি।
সরকার ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, তবে সেটি যথেষ্ট নয় বলে মনে করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষকেও পরিবেশ সচেতন হয়ে দৈনন্দিন জীবনে ছোট ছোট পরিবর্তন আনার প্রয়োজন। যেমন প্লাস্টিক ব্যবহার কমানো, অপ্রয়োজনীয় গাড়ি চালানো এড়ানো, বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা।
সব মিলিয়ে, বৃষ্টি কমে যাওয়া ও তাপমাত্রা বাড়ার এই অস্বাভাবিক জলবায়ু মানুষের জন্য শুধু একটা পরিবেশগত সমস্যা নয়, বরং জীবনযাত্রার জন্য বড় হুমকিও বটে। বিজ্ঞানীদের সতর্ক বার্তা হলো, পরিবর্তনের গতি রোধ করতে আমাদের সক্রিয় ও দায়িত্বশীল হতে হবে—নইলে আগামী প্রজন্মের জন্য বিপদ অপেক্ষা করছে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
ইউরোপে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো ও নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বেড়েছে। তবু ইউরোপের পরিবেশ পরিস্থিতি এখনও খারাপের দিকেই যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে ইউরোপীয় পরিবেশ সংস্থা (ইইএ)। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি এ কথা বলেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইইউ দেশগুলো ১৯৯০ সালের পর নিঃসরণ ৩৭ শতাংশ কমালেও জীববৈচিত্র্য, পানি ও মাটির অবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংরক্ষিত অভয়ারণ্যের ৮১ শতাংশ এখন ঝুঁকিতে, ৬০–৭০ শতাংশ মাটি ক্ষয়ে গেছে, আর ৬২ শতাংশ জলাশয় দূষিত। ইইএ জানায়, তাপমাত্রা বাড়লেও ৩৮ সদস্য দেশের মধ্যে মাত্র ২১টিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার পরিকল্পনা আছে। ইউরোপের অনেক ভবন তাপ সহনীয় নয়, ফলে ১৯ শতাংশ মানুষ আরামদায়ক তাপমাত্রা বজায় রাখতে পারছেন না। সংস্থাটি বলছে, সুশাসন, প্রযুক্তি ও পানির পুনর্ব্যবহার বাড়ালে কৃষি, জ্বালানি ও পানি খাতে ৪০ শতাংশ পানি সাশ্রয় সম্ভব। ১৯৮০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে জলবায়ু-সম্পর্কিত দুর্যোগে ইইউর ২৭ দেশে দুই লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশের কৃষি খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে সবজি রপ্তানির মাধ্যমে। চলতি বছর সবজি রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ, যা দেশের কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি লাউ, কাঁচামরিচ, শিম, বেগুন, এবং মুলার চাহিদা বেড়েছে ব্যাপক হারে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (EPB) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে সবজি রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে প্রায় ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশেষ করে সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, এবং যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কারণে দেশীয় সবজির চাহিদা বেশি দেখা গেছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. জাহিদুল হাসান বলেন, “সরকার রপ্তানি-উপযোগী কৃষিপণ্য উৎপাদনে কৃষকদের সহায়তা করছে। নিরাপদ এবং রাসায়নিক মুক্ত উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। হিমাগার ও রপ্তানি মান অনুযায়ী প্যাকেজিং সুবিধাও সম্প্রসারণ করা হয়েছে।” ঢাকার সন্নিকটে সাভারের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানালেন, “আমি আগে শুধু স্থানীয় হাটে বিক্রি করতাম। এখন এলাকার একটি সংগঠনের মাধ্যমে আমাদের সবজি দুবাই পাঠানো হয়। দামও ভালো পাই, সময়মতো টাকা পেয়ে যাই।” বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশে বছরব্যাপী সবজি উৎপাদনের ক্ষমতা থাকায় এই খাতে রপ্তানির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তারা এটাও বলছেন যে, আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা, সঠিক হিমায়ন ব্যবস্থা, ও সময়মতো পরিবহন নিশ্চিত করা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, তারা রপ্তানির জন্য নির্দিষ্ট অঞ্চল ভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যেমন—নরসিংদী, যশোর, রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চলে সবজি উৎপাদনের পাশাপাশি রপ্তানিযোগ্য মানের ফসল উৎপাদনে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বিমানবন্দরে দ্রুত সবজি পার্সেল হ্যান্ডলিংয়ের সুবিধা, কৃষিপণ্য পরীক্ষার জন্য আলাদা ল্যাব, এবং নতুন কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করলে এই রপ্তানি আরও বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ববাজারে সবজি রপ্তানি বাড়ানোর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ চাহিদাও যাতে পূরণ হয়, সে বিষয়েও নজর রাখছে সরকার। কৃষকদের জন্য ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে ‘কৃষক বাজার’ এবং ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যাপও চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষি খাত এখন শুধু দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে না, বরং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। যদি অবকাঠামো ও মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও জোরদার করা যায়, তাহলে বাংলাদেশ অচিরেই বিশ্বের অন্যতম প্রধান সবজি রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হতে পারে।
জলবায়ু সংকটের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূল ভাঙনের মুখে বাংলাদেশ একটি নদীভিত্তিক দেশ। এর বিস্তীর্ণ উপকূলরেখা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি ও জীবিকার অন্যতম অবলম্বন। কিন্তু জলবায়ু সংকটের কারণে এই উপকূলরেখা এখন ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি। সাম্প্রতিক সময়ে উপকূলীয় অঞ্চলে ভাঙন ও সুনামির মতো দুর্যোগের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের স্তর দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে গলছে হিমবাহ ও বরফের স্তর, যার ফলে সমুদ্রের পানি বাড়ছে। বাংলাদেশ উপকূলের বালু, মাটি ও মঙ্গোভ বনের ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি, প্রবল ঝড় ও সুনামির হারও বেড়েছে, যা উপকূলীয় এলাকা ও জনজীবনকে আরও বেশি বিপন্ন করছে। উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবিকা কৃষি ও মৎসধরনের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু মাটির ক্ষয় এবং পানির ক্ষারাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। বহু পরিবার তাদের বসতবাড়ি হারাচ্ছে, অনেকেই নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত হচ্ছে। এই বাস্তবতা নতুন জাতিগত ও অর্থনৈতিক সমস্যাও তৈরি করছে। সরকার ও বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা উপকূল সংরক্ষণের জন্য নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। বাঁধ নির্মাণ, ম্যানগ্রোভ বনে রক্ষণাবেক্ষণ, এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে চেষ্টা চলছে ক্ষয় রোধের। তবে এই সমস্যার সমাধান করতে হলে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ—কার্বন নিঃসরণ কমানোতে আন্তর্জাতিকভাবে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি করা, অপ্রয়োজনীয় শক্তি ব্যবহার এড়িয়ে চলা এবং পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন করা। কারণ জলবায়ু সংকট শুধু প্রকৃতির সমস্যা নয়, এটি মানবজাতির সুরক্ষারও ব্যাপার। উপকূলীয় এলাকার এই সংকট মোকাবেলায় আমাদের দেশের সরকার, সমাজ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত প্রয়াস ছাড়া ভবিষ্যতে বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন।