গ্রিনপিস বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, পোল্যান্ডের সীমান্তবর্তী এলাকায় স্লোভাকিয়ার ভালুক নিধনের বিরুদ্ধে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। ওয়ারশো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। স্লোভাক সরকার এপ্রিল মাসে ৩৫০টি কার্পাথিয়ান বাদামি ভালুক হত্যার অনুমোদন দিয়েছে। কারণ হিসেবে ‘ভালুক মানুষের জন্য বিপজ্জনক’ এবং এদের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রিনপিসের পোল্যান্ড শাখার মুখপাত্র কাটারজিনা বিলেভস্কা বৃহস্পতিবার এএফপি’কে বলেন, ‘গ্রিনপিস স্লোভাক সরকারের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেছে। কারণ, এই ভালুক নিধনের ঘটনাগুলো পোল্যান্ড সীমান্তের খুব কাছাকাছি ঘটছে।’ গ্রিনপিস পোল্যান্ডের কর্মী আলেক্সান্দ্রা ভিক্টর বলেন, ভালুকরা প্রায়ই স্লোভাকিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করে। স্লোভাক সরকারের গণহারে ভালুক নিধনের সিদ্ধান্ত পোল্যান্ডে বসবাসকারী এই প্রজাতির (প্রায় ১৩০টি) ভালুকের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে। তিনি আরো বলেন, ‘ভালুক সীমান্তের ধারণা বোঝে না।’ পোল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে স্লোভাকিয়াকে অনুরোধ করেছে, যেন অন্তত ৩০ কিলোমিটার (১৯ মাইল) সীমান্ত অঞ্চলের মধ্যে ভালুক নিধন থেকে বিরত থাকে। তবে এই অনুরোধ উপেক্ষা করা হয়েছে। স্লোভাকিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্দেশনা অনুসরণ করতে বাধ্য। এ নির্দেশনায় শুধু তখনই ভালুক নিধনের অনুমতি রয়েছে, যখন তারা বস্তুগত ক্ষতি করে বা মানব জীবনের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে এবং যখন কেউ নিরুপায় হয়ে পড়ে। স্লোভাকিয়ায় এ বছর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০টি ভালুকের আক্রমণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, স্লোভাকিয়ায় বর্তমানে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২৭৫টি ভালুক রয়েছে। গত বছর দেশটিতে ৯২টি ভালুককে হত্যা করা হয়েছিল এবং এ বছর আরো ১৬০টি ভালুক হত্যা করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সদস্য রাষ্ট্রের জনসংখ্যা ৫৪ লাখ।
উত্তর-পূর্ব বসনিয়ার তুজলা শহরের একটি নার্সিং হোমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১ জন নিহত এবং অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে বুধবার পুলিশ জানিয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে। সারাজেভো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে আগুন লাগার পর রাতভর মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সারায়েভো থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তুজলার এই নার্সিং হোমে এখনও ৩০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজন দমকলকর্মী এবং তিনজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। আগুনটি স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে নার্সিং হোমের সপ্তম তলায় ছড়িয়ে পড়ে এবং এক ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অনেক বাসিন্দা শয্যাশায়ী ও অসুস্থ ছিলেন। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ভবনের উপরের তলা থেকে আগুনের লেলিহান শিখা বের হচ্ছে। ওই ভবনের বাসিন্দা রুজা কাজিক বলেন, আমি ঘুমাতে যাওয়ার সময় কিছু একটা ভাঙার শব্দ শুনতে পাই। আমি ঠিক জানি না যে, সেটা আমার ঘরের জানালা ভাঙার শব্দ ছিল কি না। তিনি আরো বলেন, আমি চতুর্থ তলায় থাকি। আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি, পোড়া জিনিসপত্র উপর থেকে নিচে পড়ছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে করিডোরে চলে যাই। উপরতলায় শয্যাশায়ী লোক ছিল।
ঘূর্ণিঝড় কালমেগি ভিয়েতনামের মধ্যাঞ্চলের উপকূলে আঘাতে অন্তত পাঁচ জনের মৃত্যু ও সাত জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। ভিয়েতনামের পরিবেশ মন্ত্রণালয় শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোয়াং এনগাই, গিয়া লাই ও ডাক লাক প্রদেশে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
নওগাঁর বদলগাছীতে এক হাজারের বেশি সনাতন ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তারা ফজলে হুদা বাবুলকে সমর্থন জানিয়ে আসন্ন নির্বাচনে ‘ধানের শিষ’ প্রতিকে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় উপজেলার শুরকালি মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিসহ উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের হাতে ফুল দিয়ে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে দলটিতে যোগদান করেন। অনুষ্ঠান আয়োজন করেন মথুরাপুর-আধাইপুর বহুমুখী যুব কল্যাণ ক্লাব। প্রধান অতিথি ও বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল, যিনি নওগাঁ-৩ (বদলগাছী-মহাদেবপুর) আসনে বিএনপির মনোনীত এমপি প্রার্থী, বলেন, বিএনপি জনগণের দল। আজ দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়—এই যোগদান তারই প্রমাণ। আগামীর দিন হবে গরীবের, সাধারণ মানুষের, হিন্দু ও মুসলিম সকলের। বিএনপি সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার ও স্বাধীনতার পক্ষে। আজ যারা স্বেচ্ছায় আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন, তাদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। আমি আমৃত্যু সেই ভালোবাসা দিয়ে যাব। যোগদানকারী সনাতন ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী ও পুরুষরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা উন্নয়ন ও ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ফজলে হুদা বাবুলের পরিচিতি ও স্থানীয় সেবার কারণে তাঁরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিএনপিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন। তারা প্রতিশ্রুতি দেন, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে ধানের শিষ প্রতিকে ভোট দেবেন এবং ন্যায্য অধিকার আদায় করবেন। অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ছাত্র দল, যুবদল, শ্রমিক দল ও মহিলা দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, এই গণযোগদান বদলগাছীতে বিএনপির জন্য নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এই যোগদান দলটির সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করবে, ফজলে হুদা বাবুলের জনপ্রিয়তা বাড়াবে এবং স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে। -অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে জাতীয় ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেল ৬৬টি দেশীয় সংস্থা। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই সংস্থাগুলোর চূড়ান্ত নিবন্ধন অনুমোদন দিয়েছে। এর মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠান এখন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে আইনি অনুমোদন নিয়ে। ইসি সচিবালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, গত কয়েক মাসে বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংগঠন নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দেয়। যাচাই-বাছাই শেষে যেসব সংস্থা প্রয়োজনীয় যোগ্যতা পূরণ করেছে, তাদেরকেই চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, নিবন্ধিত সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা নির্বাচনের আগে প্রশিক্ষণ নেবেন এবং ভোটের দিন মাঠপর্যায়ে পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চালাবেন। তারা ভোটকেন্দ্র, গণনা প্রক্রিয়া, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সার্বিক নির্বাচন পরিচালনা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন দাখিল করবেন নির্বাচন কমিশনে। এর আগে মোট ৯৩টি সংস্থা প্রাথমিক নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। তবে যাচাইয়ে অনেকে প্রয়োজনীয় নথি ও সক্ষমতার ঘাটতি থাকায় বাদ পড়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনকে স্বচ্ছ, অবাধ ও সুষ্ঠু করতে এসব দেশীয় পর্যবেক্ষক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কমিশনের মতে, নিরপেক্ষভাবে কাজ করলে তাদের প্রতিবেদন ভবিষ্যতে নির্বাচনী প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়ক হবে।
উত্তর-পূর্ব বসনিয়ার তুজলা শহরের একটি নার্সিং হোমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১ জন নিহত এবং অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে বুধবার পুলিশ জানিয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে। সারাজেভো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে আগুন লাগার পর রাতভর মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সারায়েভো থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তুজলার এই নার্সিং হোমে এখনও ৩০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজন দমকলকর্মী এবং তিনজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। আগুনটি স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে নার্সিং হোমের সপ্তম তলায় ছড়িয়ে পড়ে এবং এক ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অনেক বাসিন্দা শয্যাশায়ী ও অসুস্থ ছিলেন। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ভবনের উপরের তলা থেকে আগুনের লেলিহান শিখা বের হচ্ছে। ওই ভবনের বাসিন্দা রুজা কাজিক বলেন, আমি ঘুমাতে যাওয়ার সময় কিছু একটা ভাঙার শব্দ শুনতে পাই। আমি ঠিক জানি না যে, সেটা আমার ঘরের জানালা ভাঙার শব্দ ছিল কি না। তিনি আরো বলেন, আমি চতুর্থ তলায় থাকি। আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি, পোড়া জিনিসপত্র উপর থেকে নিচে পড়ছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে করিডোরে চলে যাই। উপরতলায় শয্যাশায়ী লোক ছিল।
সরকার দেশের স্বাস্থ্য খাতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিশেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো চিকিৎসককে বদলি বা পদায়ন করা হবে না। এই সিদ্ধান্ত মূলত চিকিৎসা সেবা প্রান্তিক অঞ্চলে প্রভাবিত না হওয়ার জন্য নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, এ পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক সংকট এড়ানো সম্ভব হবে। একই সঙ্গে, চিকিৎসকরা তাদের নিয়োগ স্থানে দীর্ঘ সময় কাজ করতে পারবেন, যা স্বাস্থ্যখাতের সেবা মান উন্নত করতে সহায়ক হবে। চলতি সময়ে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন ও রোগীর সেবা নিশ্চিত করা সরকারের প্রধান লক্ষ্য। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশেষ করে গ্রামীণ এবং প্রান্তিক এলাকার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ধরে রাখার ক্ষেত্রে সহায়তা মিলবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র জরুরি, বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন বা চিকিৎসা খাতের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনে চিকিৎসকদের স্থানান্তর করা হবে। সাধারণ বদলি বা পদায়ন আপাতত স্থগিত থাকবে।
সুন্দরবনের বনায়ন থেকে একটি সশস্ত্র চক্রের সদস্যকে আটক করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আটককৃত ব্যক্তি স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘দুলাভাই’ বাহিনী এর সদস্য হিসেবে। অভিযানে তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আটককৃতের বিরুদ্ধে বনাঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বেআইনি কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি বনদস্যু, চোরাকারবার ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ছিল। এ ঘটনায় প্রশাসন সতর্ক করেছে যে, সুন্দরবন ও এর আশেপাশের এলাকায় বেআইনি অস্ত্র ও চোরাকারবারের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এই ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নির্মূল করতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সুন্দরবনের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও বন বিভাগও জানান, বন্যপ্রাণী ও বনাঞ্চলের নিরাপত্তা বজায় রাখতে এই ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হবে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফলাফল যাই হোক, দল মানবিক ও সামাজিক সেবামূলক কাজ চালিয়ে যাবে — এমন ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি। দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব জানায়, তারা বিরোধী দলে গেলেও জনগণের কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাজনীতি কেবল ক্ষমতায় যাওয়ার মাধ্যম নয়, জনগণের জীবনমান উন্নয়ন এবং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামও তাদের অঙ্গীকারের অংশ। সেই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ত্রাণ ও মানবিক সহায়তামূলক কাজ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। দলীয় নেতারা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের পাশে থেকে কাজ করাই প্রকৃত রাজনীতি। নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন, আমাদের লক্ষ্য হবে মানবিক বাংলাদেশ গড়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, জামায়াতের এই অবস্থান দলটিকে সামাজিক পরিসরে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে পারে। তারা মনে করছেন, বিরোধী দলে থেকেও জনগণের আস্থা অর্জনের চেষ্টা দলটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হতে পারে। এদিকে, দলটির অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, মানবিক কার্যক্রমে অংশ নিতে ইতোমধ্যে সারাদেশে বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং স্থানীয় পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যাতে যেকোনো দুর্যোগ বা সংকটে দ্রুত ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যায়।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের পরিচিত নারী ক্রিকেটার, টাইগ্রেস পেসার জাহানারা আলম মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুকে নিয়ে বিস্ফোরক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় মঞ্জুরুল তার সঙ্গে অনৈতিক আচরণ করেছিলেন। জাহানারা জানিয়েছেন, মঞ্জুরুল ইসলাম হ্যান্ডশেকের সময় তাকে জড়িয়ে ধরতেন এবং এমন আচরণ আবারো পুনরায় করতেন। এছাড়া, মঞ্জুরুল তার কাছে ব্যক্তিগতভাবে আসতেন এবং অনৈতিক প্রশ্ন করতেন, এমনকি মেয়েদের শারীরিক সীমারেখা অমান্য করতেন। জাহানারা বলছেন, তিনি বিষয়টি বিসিবির কাছে একাধিকবার জানিয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, দুই বছরের মধ্যে অসংখ্যবার তিনি ও তার সহকর্মীরা বিষয়টি উচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছিলেন। তবে তৎকালীন নারী উইংয়ের প্রধানের কাছে জানানো সত্ত্বেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এই ঘটনায় জাহানারা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তিনি এসব কৃত্য সামাজিক ও প্রশাসনিকভাবে গ্রহণযোগ্য মনে করছেন না এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যায্য ব্যবস্থা দাবি করছেন। তিনি আশা করছেন, আইনের আওতায় মঞ্জুরুলের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্থানীয় ও জাতীয় ক্রীড়ামহল এই অভিযোগের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে, এবং সকলে দ্রুত ন্যায়ের ব্যবস্থা চাচ্ছেন।
সরকারি মেডিকেল বোর্ড ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অনুমোদনবিহীন ওষুধ প্রেসক্রাইব করার প্রবণতা রোধে শাস্তিমূলক বিধানসহ একটি নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছেন। তারা মনে করেন, এই ধরণের ওষুধ ব্যবহারের ফলে রোগীর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে এবং স্বাস্থ্যখাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নীতিমালায় শাস্তির বিধান থাকলে চিকিৎসকরা শুধুমাত্র অনুমোদিত ওষুধই প্রেসক্রাইব করবেন এবং ঔষধ সরবরাহকারীরা নৈতিক ও আইনগতভাবে দায়বদ্ধ থাকবেন। এছাড়া, অনুমোদনবিহীন ওষুধের উৎপাদন ও বণ্টন নিয়ন্ত্রণের কড়াকড়ি ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, এই নীতিমালা বাস্তবায়ন করলে রোগীর সুরক্ষা নিশ্চিত হবে, ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে। পরামর্শক কমিটি জানিয়েছে, শিগগিরই প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হবে, যা পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও নিয়ম-নীতি প্রণয়ন সংস্থার অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
ভারতের বিহার রাজ্যে চলমান বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় রেকর্ড সংখ্যক ভোট পড়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এই পর্যায়ে ভোট পড়েছে ৬৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা গত নির্বাচনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। প্রথম দফায় রাজ্যের ১১টি জেলার ৫৭টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে ছিল দীর্ঘ সারি, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকাগুলোতে ছিল ভোটারদের উৎসবমুখর উপস্থিতি। নারী ভোটারদের অংশগ্রহণও ছিল লক্ষণীয়, যা আগের নির্বাচনের তুলনায় অনেক বেড়েছে। বিহার নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও বড় ধরনের সহিংসতা বা গোলযোগের খবর পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের ব্যাপক মোতায়েন ছিল প্রতিটি কেন্দ্রে। প্রথম দফা শেষে রাজ্যজুড়ে ভোটারদের আগ্রহ দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এবার বিহারের নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে। তারা মনে করছেন, এই উচ্চ ভোটপ্রবণতা রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণেও প্রভাব ফেলতে পারে। আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে, এরপর তৃতীয় ও শেষ দফার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে বিহার বিধানসভা নির্বাচন। পুরো নির্বাচন শেষে গণনা করা হবে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী।
যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার ভিসা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রয়টার্স জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা বাতিলের হার বেড়েছে। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, হামলা ও চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধে বিপুল সংখ্যক বিদেশি নাগরিকের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর কারণে ১৬ হাজার, হামলার ঘটনায় ১২ হাজার এবং চুরির অভিযোগে ৮ হাজার ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এই তিনটি অপরাধই মোট ভিসা বাতিলের প্রায় অর্ধেকের জন্য দায়ী। গত আগস্টে পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছিল, আইন ভঙ্গ ও মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার অভিযোগে ৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভিসা বাতিল করা হয়েছে, যার মধ্যে অল্প কয়েকজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে সমর্থনের অভিযোগও ছিল। রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, রক্ষণশীল কর্মী চার্লি কার্কের হত্যাকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করায় অন্তত ছয়জনের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। মে মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শত শত এমনকি হাজার হাজার মানুষের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। নতুন নির্দেশনায় বিদেশে কর্মরত মার্কিন কূটনীতিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, যেসব আবেদনকারীর যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাব বা রাজনৈতিক সক্রিয়তার ইতিহাস রয়েছে তাদের বিষয়ে। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, যারা ফিলিস্তিনপন্থি বক্তব্য দিচ্ছেন বা গাজার যুদ্ধে ইসরায়েলের সমালোচনা করছেন, তাদের মধ্যে ছাত্র ভিসাধারী ও গ্রিন কার্ডধারীরাও রয়েছেন। এসব ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি এবং ‘প্রো-হামাস’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে ভিসা বাতিলের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে কঠোর অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করেছে, যা অভিবাসন ইতিহাসে এক নজিরবিহীন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ কানাডায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। যাদের বড় একটি অংশ শিক্ষার্থী। তারা কানাডায় পড়তে গিয়ে দেশটিতে থিতু হন। তবে এই সুযোগ বন্ধ করতে যাচ্ছে কানাডা। এখন থেকে দক্ষ কর্মীরাই শুধু দেশটিতে সহজে যেতে পারবেন। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি যেসব ভিসাধারী আছেন তাদের দ্রুত সময়ে নিজেদের দেশে নিয়ে যেতে চায় অটোয়া। এরমাধ্যমে বলতে গেলে শিক্ষার্থীদের জন্য কানাডার দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কানাডা আগামী বছর থেকে অস্থায়ী অভিবাসীর সংখ্যা ২৫ থেকে ৩২ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা করছে। এর বদলে দক্ষদের নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি তার প্রথম বাজেটে দক্ষ কর্মীদের কানাডায় নিতে বিপুল অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। কানাডার নতুন অভিবাসন পরিকল্পনা অনুযায়ী, অভিবাসী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমিয়ে দক্ষ কর্মীদের আসার ব্যবস্থা ঠিক রাখা হবে। কানাডা আগামী বছর মাত্র ৩ লাখ ৮৫ হাজার অভিবাসী নেবে। অথচ আগে পরিকল্পনা ছিল প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ অভিবাসী নেওয়ার। এখন এ সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর যে ৩ লাখ ৮৫ হাজার অভিবাসী সুযোগ পাবেন তারমধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা থাকবে মাত্র ১ লাখ ৫৫ হাজার। আর অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা থাকবে ২ লাখ ৩০ হাজার। ২০২৭ সালে এই সংখ্যা আরও কমবে। ওই বছর মাত্র দেড় লাখ শিক্ষার্থী এবং ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ কাজের জন্য যেতে পারবেন। অপরদিকে ২০২৭ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১ বি ভিসাধারী ও অন্যান্য কাজে দক্ষ ৩৩ হাজার মানুষকে কানাডায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
যুক্তরাষ্ট্রে ইতিহাসের দীর্ঘতম সরকারি অচলাবস্থার কারণে দেশটির বহু বিমানবন্দরে দেখা দিয়েছে তীব্র বিশৃঙ্খলা। মূলত শাটডাউনের কারণে বেতন না পেয়ে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি ক্রমেই বাড়ছে। আর এরই জেরে দেশজুড়ে শত শত ফ্লাইট বাতিল ও হাজারো ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়্যার–এর তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ হাজার ৭০০টির বেশি ফ্লাইট দেরিতে ছেড়েছে এবং ২ হাজার ২৮২টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এমনকি সোমবারও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত শিকাগো ও’হেয়ার, ডালাস ফোর্ট ওয়ার্থ, ডেনভার ও নিউয়ার্কসহ বড় শহরগুলোর বিমানবন্দরে আরও ৪ হাজার ফ্লাইট দেরিতে ছাড়ে এবং ৬০০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়। এফএএ জানায়, সরকারের অচলাবস্থার কারণে তাদের ৩০টি বড় বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের অর্ধেকেই জনবল ঘাটতি দেখা দিয়েছে। নিউইয়র্ক অঞ্চলের বিমানবন্দরগুলোতে অনুপস্থিতির হার পৌঁছেছে ৮০ শতাংশে। আল জাজিরা বলছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় ১৩ হাজার বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক বা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার আছেন, যারা ‘অপরিহার্য কর্মী’ হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় গত ১ অক্টোবর থেকে বেতন ছাড়াই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এফএএ বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে এই কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তা বজায় রাখতে বিমান চলাচলের সংখ্যা কমাতে হচ্ছে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, “অচলাবস্থার অবসান না হলে এটিসি কর্মকর্তারা প্রাপ্য বেতন পাবেন না এবং যাত্রীদের আরও বিলম্ব ও বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনে বিমান চলাচল সীমিত করা হবে, যার ফলে ফ্লাইট বিলম্ব বা বাতিলও হতে পারে।” যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি গত রোববার সিবিএস নিউজকে বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফ্লাইট চলাচলে বিলম্ব অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, “আমরা ওভারটাইম কাজ করছি যাতে সিস্টেম নিরাপদ থাকে। প্রয়োজনে ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হবে।” তিনি আরও জানান, কিছু এটিসি কর্মকর্তা জীবিকা নির্বাহের জন্য বিকল্প পেশায় কাজ করছেন, তবে তাদের বরখাস্ত করা হবে না। ডাফির ভাষায়, “যখন কেউ পরিবারকে খাওয়ানোর জন্য দ্বিতীয় কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে, তখন আমি তাকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করব না।” এদিকে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি শাটডাউন বা অচলাবস্থা টানা ৩৫তম দিনে গড়িয়েছে। এর মাধ্যমে বর্তমান শাটডাউন ২০১৮-২০১৯ সালের অচলাবস্থার সমান দীর্ঘ হয়েছে এবং এটিই দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ শাটডাউন। বর্তমান এই অচলাবস্থায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬ লাখ ৭০ হাজার বেসামরিক ফেডারেল কর্মী বাধ্যতামূলক ছুটিতে রয়েছেন এবং প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার কর্মী বেতন ছাড়াই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।