রণবীর সিং অভিনীত স্পাই-অ্যাকশন থ্রিলার ‘ধুরন্ধর’ এখন বক্স অফিসে দুর্দান্ত সাফল্যের ধারায় রয়েছে। আদিত্য ধর পরিচালিত এই সিনেমা মুক্তির পর থেকেই দর্শকদের প্রবল আগ্রহ কাড়ছে এবং তৃতীয় সপ্তাহেও শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। উদ্বোধনী সপ্তাহ পার হলেও ছবিটির আয় থামার নাম নেই; বরং দিন দিন আরও জমজমাট হয়ে উঠছে বক্স অফিস দৌড়।
প্রথম পর্বের সাফল্যের মাঝেই নির্মাতারা ভক্তদের জন্য বড় চমক নিয়ে এসেছেন। ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, ‘ধুরন্ধর ২’ মুক্তি পাবে ১৯ মার্চ ২০২৬। নতুন বছরের ঈদ সামনে রেখে এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম মিন্ট জানায়, নির্মাতার এমন ঘোষণা দর্শক আগ্রহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে এই দিনে বক্স অফিসে বড় ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাসও রয়েছে। নতুন বছরের একই তারিখে মুক্তির কথা রয়েছে যশ অভিনীত ‘টক্সিক: আ ফেয়ারি টেল ফর গ্রোন-আপস’ ছবিটির। ফলে দুই তারকাবহুল ছবির মুখোমুখি লড়াই নিয়ে এরই মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, ঈদে মুক্তির কথা থাকলেও বক্স অফিস যুদ্ধ এড়াতে অজয় দেবগনের ‘ধামাল ৪’-এর মুক্তির তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
চলচ্চিত্র বিশ্লেষকদের মতে, ‘ধুরন্ধর’ কেবল একটি সফল সিনেমা নয়; বরং এটি একটি শক্তিশালী ফ্র্যাঞ্চাইজিতে পরিণত হওয়ার পথে। চলচ্চিত্র বাণিজ্য বিশ্লেষক সুমিত কাদেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে দাবি করেন, ‘ধুরন্ধর ভারতীয় সিনেমার সবচেয়ে সফল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর একটি হয়ে উঠতে পারে। দুই পর্ব মিলিয়ে বিশ্বব্যাপী আয় ২,০০০ কোটি রুপির বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
এদিকে ‘ধুরন্ধর’ মাত্র ১৫ দিনে বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ৭৪৫ কোটি রুপি। আয়ের এই ধারা চলতে থাকলে খুব শিগগির সিনেমাটি হাজার কোটির ঘরে পৌঁছে যাবে বলে ধারণা বক্স অফিস বিশ্লেষকদের।
তারকাবহুল এই সিনেমায় রণবীর সিংয়ের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন অক্ষয় খান্না, সঞ্জয় দত্ত, আর. মাধবন ও অর্জুন রামপাল। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আরও রয়েছেন সারা অর্জুন, নবীন কৌশিক, রাকেশ বেদী ও ড্যানিশ পান্ডোর।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
কবি জীবনানন্দ দাশের কাল্পনিক নারী চরিত্রকে কেন্দ্র করে সিনেমা নির্মাণ করছেন পরিচালক মাসুদ হাসান উজ্জ্বল। সিনেমার নাম ‘বনলতা সেন’। সরকারি অনুদানে নির্মিত এই সিনেমাটি মুক্তির কথা ছিল গত বছর। তবে সে সময় দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় মুক্তি পিছিয়ে দেওয়া হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে সিনেমাটি ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি দেওয়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছেন নির্মাতারা। এদিকে ‘বনলতা সেন’ সিনেমার নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন সময়ের আলোচিত অভিনেত্রী মাসুমা রহমান নাবিলা। তবে ‘বনলতা সেন’ হয়ে ওঠা নাবিলার জন্য সহজ ছিল না। জানা গেছে, শুরুতে তাকে অন্য একটি চরিত্রের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু নাবিলা সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। তিনি নির্মাতাকে স্পষ্টভাবে জানান, বনলতা সেন চরিত্রটিই তিনি করতে চান। এরপর তিন দফা চ্যালেঞ্জিং অডিশনের মাধ্যমে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে চরিত্রটি বাগিয়ে নেন তিনি। সিনেমাটিতে কবি জীবনানন্দ দাশের চরিত্রে অভিনয় করছেন খায়রুল বাসার। আরও অভিনয় করেছেন সোহেল মণ্ডল, নাজিবা বাশার, প্রিয়ন্তী উর্বী, রুপন্তী আকীদ, শরিফ সিরাজ ও সুমাইয়া খুশি। সিনেমাটি নির্মাণে সময় বেশি লাগলেও গুণগত মানের বিষয়ে কোনো আপস করেননি পরিচালক মাসুদ হাসান উজ্জ্বল। তিনি বলেন, জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে কাজ করা অত্যন্ত দায়বদ্ধতার বিষয়। গবেষণা, প্রস্তুতি এবং উপযুক্ত অভিনয়শিল্পী খোঁজার পুরো প্রক্রিয়াই ছিল চ্যালেঞ্জিং। ঈদের সিনেমার ভিড়ে ‘প্রিন্স’, ‘দম’, ‘রাক্ষস’, ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ও ‘পিনিক’-এর সঙ্গে নাবিলার ‘বনলতা সেন’ কেমন সাড়া ফেলে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
বলিউড অভিনেতা ভিকি কৌশলের জীবনে এখন নতুন এক অধ্যায়। সম্প্রতি প্রথমবারের মতো বাবা হয়েছেন তিনি। স্ত্রী ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে তাদের ঘরে এসেছে এক পুত্রসন্তান। সন্তান জন্মের এক মাসের একটু বেশি সময় পার হলেও, নতুন এই অভিজ্ঞতা এখনো ভিকির কাছে একেবারেই নতুন ও আবেগময়। ভিকি ও ক্যাটের জীবনে সন্তানের আগমন অনেক কিছুই পরিবর্তন এনেছে। সম্প্রতি এক পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে ভিকি মজার ছলে বলেন, ‘ছেলের জন্মের পর তিনি নাকি অভিনয়ের চেয়ে ডায়াপার বদলাতেই বেশি দক্ষ হয়ে উঠেছেন—এই মন্তব্যে মুহূর্তেই হাসিতে ভরে ওঠে পুরো মিলনায়তন।’ এনডিটিভির একটি বিশেষ আয়োজনে অংশ নিয়ে ‘ছাভা’ সিনেমায় ছত্রপতি সম্ভাজি মহারাজ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য পুরস্কার গ্রহণ করেন ভিকি কৌশল। ট্রফি হাতে নিয়ে তিনি আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, ‘এই পুরস্কার আমার পরিবারের জন্য এবং আমার সেই ছোট্ট সন্তানের জন্য, যে আমাদের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। বাবা হওয়ার পর এই প্রথম শহর ছেড়ে বাইরে এসেছি, আর সেটা আমার জন্য ভীষণ কঠিন ছিল।’ তবে কষ্টের মাঝেও গর্বের অনুভূতি লুকিয়ে ছিল অভিনেতার কথায়। তিনি জানান, ভবিষ্যতে তার ছেলে বড় হয়ে যখন বাবাকে পুরস্কার নিতে দেখবে, তখন সে নিশ্চয়ই গর্ব অনুভব করবে। নবজাতক সন্তানকে ঘিরে নতুন জীবনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে ভিকি বলেন, ‘এখনো কোনো চ্যালেঞ্জ অনুভব করছি না। সবকিছুই খুব নতুন, খুব জাদুকরী। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এটা একেবারেই বিশেষ একটি সময়। ঈশ্বর আমাদের প্রতি খুবই দয়ালু হয়েছেন। পরিবার ভীষণ খুশি।’ প্রসঙ্গত, ভিকি কৌশল ও ক্যাটরিনা কাইফ ২০২৫ সালের ৭ নভেম্বর তাদের প্রথম সন্তানের বাবা-মা হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি যৌথ পোস্টের মাধ্যমে তারা এই সুখবর ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। পোস্টটিতে ছিল একটি টেডি বেয়ার ও একটি শিশুর বেবি ক্যারেজের ছবি। আপাতত সন্তানের নাম প্রকাশ না করলেও, প্রিয় তারকা দম্পতির পরিবার বড় হওয়ায় ভক্তদের আনন্দের কমতি নেই।
নব্বইয়ের দশকে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন জুহি চাওলা। গত দুই বছরে কোনো নতুন ছবিতে দেখা যায়নি তাকে। পর্দার বাইরে থাকা এই অভিনেত্রী এখন ভারতের সবচেয়ে ধনী অভিনেত্রী। জুহি চাওলা ও শাহরুখ খান ১০টির বেশি সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছেন। শাহরুখ ও জুহির সঙ্গে ত্রয়ীর তৃতীয় সদস্য ছিলেন পরিচালক আজিজ মিরজা। আইপিএলের প্রথম নিলামের সময় জুহি চাওলার স্বামী জয় মেহতা ও শাহরুখ খান ৭৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করে কলকাতা নাইট রাইডার্স ফ্র্যাঞ্চাইজি কিনে নেন। এখন সেই কেকেআরের মূল্য ৯ হাজার কোটি রুপির বেশি। ২০২৪ সালের আইপিএলে শিরোপা জেতার পর কেকেআরের ব্র্যান্ড ভ্যালু অনেক বেড়েছে। আইপিএল ব্র্যান্ড ভ্যালুয়েশন স্টাডি (জুন ২০২৪) অনুযায়ী, পুরো লিগের বাজারমূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৪৫ লাখ কোটি রুপিতে, যার মধ্যে কেকেআরের একক মূল্যই ১ হাজার ৯১৫ কোটি রুপি। গত বছর জুহি চাওলার সম্পদ অনুমান করা হয়েছিল প্রায় ৪ হাজার ৬০০ কোটি রুপি। সেখান থেকে মাত্র এক বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৭৯০ কোটি; অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৩ হাজার ১৯০ কোটি রুপি। শীর্ষ ১০ স্বনির্মিত নারী উদ্যোক্তার তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন জুহি।