‘দক্ষতা নিয়ে যাবো বিদেশ, রেমিট্যান্স দিয়ে গড়বো স্বদেশ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস- ২০২৫ উদযাপন করেছে কুয়ালালামপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন।
আজ শুক্রবার দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টার বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর দিনটি উপলক্ষ্যে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের অবদানের স্বীকৃতি এবং দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে তাদের অধিকতর সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে কুয়ালালামপুরের জি টাওয়ারের হলরুমে আলোচনা সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সম্মাননা প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং র্যাফেল ড্র’র আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মনজুরুল করিম খান চৌধুরী। হাইকমিশনার দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্বীকার করেন। তিনি মালয়েশিয়ার অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশী কর্মীদের অবদান তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশী কর্মীদের উপর আস্থা রাখার জন্য মালয়শিয়ার নিয়োগকারীদের ধন্যবাদ জানান।
এছাড়া তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের কার্যকর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে পোস্টাল ভোটের মাধ্যমে অংশ নেয়ার জন্য মালয়েশিয়া প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) মালয়েশিয়া চিফ অব মিশন হেবা আব্দেল লতিফ, মালয়েশিয়ায় সোশ্যাল সিকিউরিটি অর্গানাইজেশনের ফরেন ওয়ার্কার্স ইউনিটের প্রধান হারিরি বিন হারুন, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগকারীদের প্রতিনিধি ফেডারেশন অব মালয়েশিয়া ম্যানুফ্যাকচারিং এর ভাইস প্রেসিডেন্ট দাতো নাথান কে সাপি, মালয়েশিয়ার কনস্ট্রাকশন লেবার এক্সচেঞ্জ এর সিইও দাতো রফিক, সিবিএল মানি ট্রান্সফার, মালয়েশিয়ার প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান ফারাজী এবং প্রবাসী কর্মীদের পক্ষে রাকিবুল হাসান।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস এবং প্রবাসী দিবস উপলক্ষ্যে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসীদের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেয়া হয়।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের আঞ্চলিক শাখা আইএস-খোরসান (আইএস-কে)-এর এক শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পাকিস্তান। আজ শুক্রবার পাকিস্তানের একজন ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা পর্যবেক্ষণকারী দলের একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই গ্রেফতারের খবর সামনে আসে। ইসলামাবাদ থেকে এএফপি এ খবর জানায়। গ্রেফতার হওয়া ওই নেতার নাম সুলতান আজিজ আজম। তিনি আইএস-কে’র মুখপাত্র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। গত নভেম্বরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জমা দেওয়া এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৫ সালের ১৬ মে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে পাকিস্তানের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘আজম কেবল মুখপাত্রই ছিলেন না, বরং এই অঞ্চলে গোষ্ঠীর অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হতো।’ তিনি আরও জানান, আজমকে জিজ্ঞাসাবাদের পর শুরু হওয়া সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানগুলো যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য এতদিন এই গ্রেফতারের খবর গোপন রাখা হয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগানিস্তান, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চালানো ভয়াবহ কিছু হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস-কে। ২০২৪ সালের মার্চে মস্কোর একটি কনসার্ট হলে ভয়াবহ হামলায় ১৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহতের ঘটনায় এই গোষ্ঠীটি জড়িত ছিল। এছাড়া ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে এবং পাকিস্তানে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে তারা। তবে আজমকে ঠিক কোন দেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে বিষয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট কিছু জানানো হয়নি। তালেবান কর্তৃপক্ষ বরাবরই নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়ে অঙ্গীকার করে আসছে এবং তারা আইএস-কে ও আফগানিস্তানে সক্রিয় অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান অভিযোগ করে আসছে, তালেবানরা তাদের মাটিতে জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে। এই ইস্যু নিয়ে দেশ দু’টির মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে এবং সীমান্তে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান ও তালেবান-উভয় পক্ষের অভিযানের ফলে আইএস-কে’র সক্ষমতা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অভিযানের কারণে আইএস-কে’র শক্তি কমলেও গোষ্ঠীটি এখনো টিকে আছে।’ ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে তাদের প্রায় ২ হাজার সদস্য রয়েছে। গোষ্ঠীটির নেতারা এখন নতুন সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে এবং আফগানিস্তানের বাইরে হামলা চালানোর জন্য ‘স্লিপার সেল’ নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা করছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক-ট্যাংক জেমসটাউন ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, আজমের বাড়ি আইএস-কে’র শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশে। ২০১৫ সালে আইএস-কে’তে যোগ দেওয়ার আগে তিনি একজন কবি ও লেখক হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ পরিচিত ছিলেন।
সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পাকিস্তানি নাগরিকদের ওপর নজরদারি জোরদার করেছে। শুধু তা-ই নয়, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি পাকিস্তানিকে ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে বিভিন্ন দেশ বহিষ্কার করেছে। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের মতে, এই প্রবণতা দেশটির আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। চলতি বছর ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে সৌদি আরব ২৪ হাজার পাকিস্তানিকে বহিষ্কার করেছে। অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত অধিকাংশ পাকিস্তানি নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দেশটির দাবি, অনেকে সে দেশে পৌঁছানোর পর ‘অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।’ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এফআইএ) বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, ২০২৫ সালে সংগঠিত ভিক্ষুক সিন্ডিকেট নির্মূল এবং অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরগুলোতে ৬৬ হাজার ১৫৪ জন যাত্রীকে নামিয়ে দিয়েছে (অফলোড করেছে)। এফআইএর মহাপরিচালক রিফাত মুখতার বলেন, এই নেটওয়ার্কগুলো পাকিস্তানের সুনাম নষ্ট করছে। তিনি উল্লেখ করেন, এই প্রবণতা শুধু উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আফ্রিকা ও ইউরোপ ভ্রমণের ক্ষেত্রেও একই ধরনের ঘটনা শনাক্ত হয়েছে এবং কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মতো দেশে পর্যটন ভিসার অপব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। মুখতারের তথ্য অনুযায়ী, ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে সৌদি আরব এ বছর ২৪ হাজার পাকিস্তানিকে ফেরত পাঠিয়েছে। দুবাই প্রায় ৬ হাজার ব্যক্তিকে এবং আজারবাইজান প্রায় আড়াই হাজার পাকিস্তানি ভিক্ষুককে বহিষ্কার করেছে। অর্থ্যাৎ ৩২ হাজারের বেশি পাকিস্তানিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিষয়টি গত বছরই সৌদি কর্তৃপক্ষের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ২০২৪ সালে রিয়াদ আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানকে অনুরোধ করেছিল, যেন ভিক্ষুকেরা মক্কা ও মদিনায় ওমরাহ ভিসার অপব্যবহার করে ভিক্ষা করতে না পারে। সৌদি আরবের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় তখন সতর্ক করে দিয়েছিল যে এই চর্চা বন্ধে ব্যর্থ হলে তা পাকিস্তানের ওমরাহ ও হজযাত্রীদের জন্য বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। পাকিস্তানের আইন বিশেষজ্ঞরা বিষয়টিকে বিশ্লেষণ করেছেন। গত বছর দ্য ডন পত্রিকায় অ্যাটর্নি রাফিয়া জাকারিয়া ভিক্ষাবৃত্তিকে নিছক অভাবের তাড়না নয়, বরং একটি সুসংগঠিত উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘পাকিস্তানের একটি শিল্প, যা অত্যন্ত সুসংগঠিত এবং এর সদস্যদের কাজ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বেশ সফল, তা হলো ভিক্ষাবৃত্তি। এটি এখন এতই সফল একটি উদ্যোগ যে এটি অন্য দেশে রপ্তানি এবং সম্প্রসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘অনেক পাকিস্তানি হয়তো হজের সময় নিজের চোখে দেখেছেন, এই ভিক্ষুকেরা মক্কা ও মদিনার পবিত্র স্থানগুলোর বাইরে আস্তানা গড়ে তোলে। তারা সেখানে বিদেশি হজযাত্রীদের টাকার জন্য সেভাবেই হয়রানি করে, যেভাবে পাকিস্তানের বাজারগুলোতে ক্রেতাদের করে থাকে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ‘অসাংবিধানিক’ নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে বৃহস্পতিবার জাপানের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে শত শত মানুষ মামলা করেছেন। দেশটিতে এই প্রথম জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ঘটনায় এ ধরনের মামলা হলো। টোকিও থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। মামলায় জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জাপানের প্রচেষ্টাকে ‘চরমভাবে অপর্যাপ্ত’ আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, এর ফলে প্রায় ৪৫০ জন বাদীর স্বাস্থ্য ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। প্রধান আইনজীবী আকিহিরো শিমা এএফপিকে বলেন, আমরা আদালতে আমাদের অভিযোগপত্র ও প্রমাণ জমা দিয়েছি। আমাদের মামলা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। বাদী নির্মাণশ্রমিক কিইচি আকিয়ামা বলেন, নিরন্তর দাবদাহ তাদের কাজের গতি কমিয়ে দিয়েছে, ফলে তার ব্যবসায় বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। ৫৭ বছর বয়সি আকিয়ামা বলেন, এমন ঘটনাও ঘটেছে, যেখানে মানুষ মাঠেই অজ্ঞান হয়ে পড়েছে কিংবা বাড়ি ফেরার পর মারা গেছে। কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাসাকো ইচিহারা বলেন, এর আগে জাপানের আদালতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ জলবায়ু-সংক্রান্ত পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে ইচিহারা এবং মামলার আইনজীবীরা বলেন, এটি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রথম ক্ষতিপূরণ দাবি। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘বিবাদির জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার পদক্ষেপ চরমভাবে অপর্যাপ্ত, যার ফলে বাদীদের শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন ও স্থিতিশীল জলবায়ুর অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’ ১৮৯৮ সালে রেকর্ড রাখা শুরুর পর থেকে চলতি বছর জাপান সবচেয়ে উষ্ণ গ্রীষ্ম পার করেছে। বাদীদের দাবি, এ ধরনের তাপপ্রবাহ অর্থনৈতিক ক্ষতি, ফসল নষ্ট এবং অনেককে মারাত্মক হিটস্ট্রোকের ঝুঁকিতে ফেলছে। তীব্র গরমে প্রায়ই বাইরে কাজ করা আকিয়ামা বলেন, এখন তাদের কোনো প্রকল্প শেষ করতে অনুমিত সময়ের তিন গুণ সময় লাগছে। তিনি আরো বলেন, আমি শাবল দিয়ে টানা ১০ মিনিটের বেশি কাজ করতে পারি না, বসে বিশ্রাম নিতে হয়। তিনি আরো বলেন, সরকার যদি নীতিমালা বাস্তবায়নে আরো উদ্যোগী হতো, তাহলে আমরা এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়তাম না।