জাতীয়

জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ২০, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে সিনেটের অনুমোদন পাওয়া অভিজ্ঞ কূটনীতিক ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন আগামী জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকায় পৌঁছাতে পারেন। তার দায়িত্ব গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি চলমান রয়েছে বলে ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

 

গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন। পরে অক্টোবরে সিনেটের শুনানি শেষে তার মনোনয়ন অনুমোদিত হয়। সিনেটের অনুমোদন পাওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় ক্রিস্টেনসেন বলেন, বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে অনুমোদন পেয়ে তিনি সম্মানিত এবং এ জন্য প্রেসিডেন্টের প্রতি কৃতজ্ঞ।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূতের আগমন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ধারণা, দেশে বিরাজমান অস্থির পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এবং নতুন রাষ্ট্রদূত পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে সক্ষম হবেন।

এর আগে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ রাষ্ট্রদূত ছিলেন পিটার হাস, যিনি ২০২২ সালের মার্চে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং দুই বছর চার মাস দায়িত্ব পালনের পর গত বছরের ২২ জুলাই ওয়াশিংটনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। তার বিদায়ের পর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন।

ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন সার্ভিসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং সিনিয়র ফরেন সার্ভিসের কাউন্সেলর র‌্যাংকের সদস্য। তিনি এর আগে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকবিষয়ক কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ২০২২ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের কমান্ডারের বৈদেশিক নীতি উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন। তার অন্যান্য দায়িত্বস্থলের মধ্যে রয়েছে ম্যানিলা, সান সালভাদর, রিয়াদ ও হো চি মিন সিটিতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস।

তিনি ন্যাশনাল ওয়ার কলেজ থেকে ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সিনেটের শুনানিতে তিনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, মানবাধিকার, রোহিঙ্গা সংকট, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ক্রিস্টেনসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গঠনে পাশে থাকবে এবং বাণিজ্য বাধা কমিয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী।

দূতাবাসের ওই সূত্র আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্র একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়, যাতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনরুদ্ধার হয় এবং মানবাধিকার সুরক্ষিত থাকে। একই সঙ্গে র‌্যাডিক্যাল উপাদানগুলোর উত্থান বা দেশের অস্থিরতা যুক্তরাষ্ট্র চায় না। এ কারণে নতুন রাষ্ট্রদূতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন পর্যবেক্ষণ, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক পাঠানো এবং অনিয়মের ক্ষেত্রে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে পারে।

 

সূত্রটি আরও জানায়, নতুন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সংকট এবং চলমান প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির বিষয়গুলো নিয়েও কাজ করতে পারেন।

Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

ছবি: সংগৃহীত
সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী ও মেয়রের বাসভবনে আগুন

সাবেক নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে সাবেক মেয়র আসলাম এবং সাবেক মেয়র আব্দুস সবুরের বাড়িতেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।   শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার ধনতলা এলাকার গ্রামে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও আসলামের বাড়িতে বিক্ষুব্ধরা আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার পরপরই বোচাগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঘটনাস্থলে যান কাহারোল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান এবং বোচাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান। একই সময়ে সাবেক মেয়র আব্দুস সবুরের বাড়ির একটি ঘরেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। অগ্নিকাণ্ডে বাড়ির আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে পারে।   দিনাজপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. বজলুর রশিদ জানান, রাত ৮টা ২০ মিনিটে খবর পাওয়ার পর সেতাবগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। আধা ঘণ্টার মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগুন লাগার সঠিক কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ২০, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত

জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

ছবি: সংগৃহীত

হাদিকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য: চিকিৎসককে সাময়িক অব্যাহতি

ছবি: সংগৃহীত

হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার পেছনে মানবিক কারণের কথা জানাল ভারত

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার ঘোষণা ভারতের

বাংলাদেশে চলমান অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করলেও দেশটির ঘরোয়া রাজনৈতিক বিষয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না ভারত। নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।   শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে হাইকমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের উভয় দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা অবগত যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এখনো পরিবর্তনশীল ও বিকাশমান। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিষয়গুলো গভীর, নিরপেক্ষ ও সতর্কভাবে বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে তারা মনে করেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যেকোনো দেশে গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময় প্রায়ই অনাকাঙ্ক্ষিত ও মর্মান্তিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এই বাস্তবতার উদাহরণ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপকভাবে শ্রদ্ধেয় তরুণ নেতা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জোর দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশের চলমান ঘটনাপ্রবাহের প্রতি ভারত মনোযোগী থাকলেও প্রতিবেশী দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না। একই সঙ্গে বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ의 অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনধিকার চর্চা থেকে বিরত রয়েছে ভারত।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ২০, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত

হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে যাত্রাবাড়ীতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বশান্তিতে আত্মত্যাগ করা ৬ শান্তিরক্ষীর মরদেহ শনিবার দেশে ফিরছে

ছবি: সংগৃহীত

ওসমান হাদির জানাজা ঘিরে ডিএমপির সাত নির্দেশনা

ছবি: সংগৃহীত
গণমাধ্যমে হামলার দায় এড়াতে পারে না সরকার: টিআইবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।   শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি জানায়, তারা ‘গভীর উদ্বেগের সঙ্গে’ লক্ষ্য করছে যে, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলকে বিচারের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘টার্গেটেড শুটিংয়ে জড়িত সকলকে গ্রেপ্তারে সরকারের ব্যর্থতা, এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সৃষ্ট গণরোষ থেকে উদ্ভূত অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি নিরসনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চরম অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। এর দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর বিজয়ের দাবিদার শক্তিসমূহের একাংশের আক্রোশপূর্ণ ও প্রতিশোধপরায়ণ আচরণ রাষ্ট্র ও সমাজে নতুন ধরনের দমনমূলক প্রবণতা তৈরি করছে। এর সরাসরি শিকার হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাকস্বাধীনতা। টিআইবির মতে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সংঘটিত এসব ঘটনায় রাষ্ট্রের নতজানু অবস্থানই অসহিষ্ণুতা, সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার পরিসর আরও বিস্তৃত করেছে। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এর ধারাবাহিকতায় গণমাধ্যমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, একাধিক সম্পাদক ও সাংবাদিকের ওপর হামলা, সাংস্কৃতিক সংগঠনে আক্রমণ এবং কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে একজন ব্যক্তিকে পুড়িয়ে হত্যার মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। এগুলোকে কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই; বরং এসবই মুক্তচিন্তা, ভিন্নমত ও স্বাধীন মতপ্রকাশকে পরিকল্পিতভাবে দমনের জ্বলন্ত উদাহরণ।’ তিনি বলেন, স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক আক্রমণ শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, বরং তা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার সাক্ষ্য বহন করে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক শহীদ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের নিরাপত্তা রক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর, সমন্বিত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ, রাষ্ট্রসংস্কারের প্রত্যাশা, সামাজিক স্থিতিশীলতা, একাত্তরের মূল্যবোধ এবং জুলাই অভ্যুত্থানের মৌলিক আদর্শ গভীর সংকটে পড়বে—যার দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারবে না।’   উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সিঙ্গাপুরে ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরই মধ্যে রাজধানীর একাধিক স্থানে গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

মো: দেলোয়ার হোসাইন ডিসেম্বর ১৯, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত

শহীদ ওসমান হাদির নামে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন

ছবি: সংগৃহীত

শহীদ হাদির মৃত্যুতে জাতিসংঘ যা বলেছে

হাদির বোনকে নির্বাচন করার প্রস্তাব

0 Comments