ওপার বাংলার অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য। ব্যক্তিগত জীবন হোক বা পেশাগত ক্ষেত্র সবসময় সোজা কথা সোজাসাপ্টা ভাবেই বলতে অভ্যস্ত তিনি। সম্প্রতি রাজনীতিতে যোগদানের সম্ভাবনা ও ব্যক্তিগত সমালোচনা নিয়ে অকপটে নিজের মতামত জানিয়েছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অপরাজিতা বলেন, ‘ ‘চায়ে পে চর্চা’ হোক এটা আমিও চাই। আমাকে নিয়ে যখন কেউ সমালোচনা করে তখন আমার ভীষণ ভালো লাগে।’
‘একদিন আমি দেখেছিলাম আমাকে নিয়ে গোল টেবিল বৈঠক হয়েছিল, আমি তখন ওখানে গিয়ে বলেছিলাম এই যে আমাকে নিয়ে তোমরা আলোচনা করছ তাতে কিন্তু আমি খুব খুশি হয়েছি।’
তার কথায়, ‘আমার কথা শুনে হয়তো সবাই খুব ইতস্তত বোধ করছিলেন কিন্তু আমার মনে হয়েছিল যে আমাকে নিয়ে যখন কেউ চর্চা করছে তখন কিছুক্ষণের জন্য সে নিজের দুঃখ কষ্টকে ভুলে থাকতে পারছে। ব্যাপারটা দেখে আমার মধ্যেও পজিটিভ ভাইভ কাজ করে।’
রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে অপরাজিতা মনে করেন, সব বিষয় সবার জন্য নয়। অভিনেত্রীর ভাষ্যে, ‘আমি রাজনীতি একেবারেই বুঝি না। তাই আমি কোনোদিন রাজনীতিতে যোগ দেব না। আমি মনে করি, সবটা সবার জন্য নয়। তাই যেটা আমি বুঝি না সেই ব্যাপারে আমি থাকি না।’
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
বলিউডের নতুন স্পাই থ্রিলার ‘ধুরন্ধর’ ভারত ও পাকিস্তানে একযোগে প্রশংসা ও তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ছবিটির কাহিনী, উপস্থাপন ও রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে দুই দেশেই প্রশ্ন উঠেছে। গত ৫ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ৩ ঘণ্টা ৩২ মিনিটের এই সিনেমায় ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী এক গুপ্তচর জগতের গল্প দেখানো হয়েছে। এতে রয়েছে সহিংসতা, গ্যাংস্টার ও গোয়েন্দা সংস্থার দ্বন্দ্ব। ছবিটি মুক্তির সময়টাও আলোচনায় এসেছে। কারণ, চলতি বছরের মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পেহেলগামে এক পর্যটন কেন্দ্রে হামলার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে। তবে ইসলামাবাদ সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে এখন পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তান চারটি যুদ্ধে জড়িয়েছে। এরমধ্যে তিনটি যুদ্ধই হয়েছে 'কাশ্মির'কে ঘিরে। সিনেমার গল্প কী? আদিত্য ধর পরিচালিত ‘ধুরন্ধর’ ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার 'র' এর এক গোপন অভিযানের গল্প তুলে ধরে। কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন রণবীর সিং। তিনি একজন ভারতীয় স্পাই। তাকে পাকিস্তানের করাচিতে ঢুকে গ্যাং নেটওয়ার্ক ভাঙার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সিনেমাতে রণবীর সিংয়ের বিপরীতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা গেছে সঞ্জয় দত্তকে। তাকে পাকিস্তানি প্রতিষ্ঠানের 'প্রতীকী চরিত্র' হিসেবে দেখানো হয়েছে। এছাড়াও গ্যাংস্টারের ভূমিকায় আছেন অক্ষয় খান্না; সিনেমায় তার চরিত্রের নাম 'রহমান ডাকাত'। আর দিল্লিতে বসে কৌশল নির্ধারণ করা গোয়েন্দা কর্মকর্তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন আর মাধবন। গল্পের গঠন ক্লাসিক ক্যাট-অ্যান্ড-মাউস ধাঁচের। একদিকে মাঠ পর্যায়ের অপারেশন। অন্যদিকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কৌশল। পাকিস্তানে কেন বিতর্ক? দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বৈরিতার পরও পাকিস্তানে বলিউড সিনেমার জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে পাকিস্তানকে চূড়ান্ত শত্রু হিসেবে দেখানো বলিউড স্পাই ছবিতে নতুন নয়। এই ছবিতে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয়েছে করাচি শহর ও বিশেষ করে লিয়ারি এলাকার উপস্থাপন নিয়ে। লাহোর ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেসের সমাজবিজ্ঞানী নিদা কিরমানি বলেন, সিনেমাতে দেখানো 'করাচি' শহর পুরোপুরি কল্পনার ওপর ভিত্তি করে তৈরি । তার ভাষায়, করাচি কখনই এমন ছিল না। শহরের অবকাঠামো, সংস্কৃতি ও ভাষা সবকিছুই ভুলভাবে দেখানো হয়েছে। সহিংসতাকে শহরের একমাত্র পরিচয় বানানো হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এদিকে, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) এক নেতা করাচির আদালতে মামলা করেছেন। অভিযোগ, সিনেমাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি পিপিপির নেতাদের 'সন্ত্রাসীদের মদদদাতা' হিসেবে দেখানো হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, লিয়ারির স্থানীয় গ্যাংগুলোকে ভারত-পাকিস্তান ভূরাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে দেখানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। বাস্তবে এসব গ্যাং কেবল স্থানীয় পর্যায়েই সক্রিয় ছিল। মুম্বাইয়ের চলচ্চিত্র সমালোচক ময়াঙ্ক শেখর বলেন, ছবিটির নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা করাচিতে কখনোই যাননি। তাই শহরটিকে ধ্বংসস্তূপের মতো দেখানো হয়েছে। তিনি একে হলিউডের সেপিয়া টোনে 'তৃতীয় বিশ্বের শহর' দেখানোর প্রবণতার সঙ্গে তুলনা করেন। ভারতে প্রতিক্রিয়া কেমন? ভারতে ‘ধুরন্ধর’ বাণিজ্যিকভাবে বড় সাফল্য পেয়েছে। প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যেও সিনেমাটি জনপ্রিয়। তবে সমালোচনা এখানেও আছে। শহীদ ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর মোহিত শর্মার পরিবার দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেছে। তাদের অভিযোগ, অনুমতি ছাড়া তার জীবন কাহিনী ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাতারা অবশ্য বলছেন, সিনেমাটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। তবুও ছবিতে বাস্তব হামলার অডিও ক্লিপ ও সংবাদ ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছে। এতে বাস্তব ও কল্পনার সীমারেখা ঝাপসা হয়েছে বলে মত সমালোচকদের। বলিউডে কি নতুন ধারা তৈরি হচ্ছে? সমালোচকদের মতে, অতিরঞ্জিত পুরুষতান্ত্রিক নায়কভিত্তিক গল্প বলিউডে নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মূলধারার ছবিতে সংখ্যালঘুদের নেতিবাচকভাবে দেখানোর প্রবণতা বেড়েছে। নিদা কিরমানির মতে, এতে মুসলমানদের প্রায়শই 'সন্ত্রাসী' হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এতে ভারতের ভেতর মুসলমানরা আরও প্রান্তিক হয়ে পড়ছেন। এর আগে ‘আর্টিকেল ৩৭০’ ও ‘কেরালা স্টোরি’ নিয়েও একই ধরনের বিতর্ক হয়েছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেসব ছবির প্রশংসা করলেও সমালোচকরা সেগুলোকে 'প্রচারমূলক' বলেছিলেন। ‘ধুরন্ধর’ নিয়ে সমালোচনা করায় কিছু সমালোচক অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েছেন। ভারতের ফিল্ম ক্রিটিকস গিল্ড এই সংগঠিত আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছে। সব মিলিয়ে, ‘ধুরন্ধর’ শুধু একটি স্পাই থ্রিলার নয়। এটি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, ইতিহাস ও রাজনীতিকে ঘিরে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে।
ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাবিলা নূর এবার বড় পর্দায় এক নতুন যাত্রায় শামিল হতে যাচ্ছেন। তানিম নূর পরিচালিত ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ সিনেমার মাধ্যমে দর্শকদের সামনে হাজির হবেন তিনি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিনেমার অংশ হওয়া নিয়ে নিজের মিশ্র অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী। সাবিলা জানান, শুরুতে এই প্রজেক্ট নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় থাকলেও সহশিল্পী হিসেবে দুই কিংবদন্তি অভিনেতার নাম শুনেই সব জড়তা কেটে গেছে। নার্ভাসনেস থেকে রোমাঞ্চ সংবাদ সম্মেলনে সাবিলা নূর অকপটে স্বীকার করেন, শুরুতে তিনি বেশ চিন্তিত ছিলেন। তিনি বলেন, “আমার মধ্যে আসলে কিছুটা নার্ভাসনেস ছিল, যখন তানিম ভাইয়া প্রথমে আমাকে এ চরিত্রটির কথা বলেন। তবে এর পরপরই যখন শুনলাম যে, আমাদের কিংবদন্তি অভিনয়শিল্পী মোশাররফ করিম ও চঞ্চল চৌধুরীকে একসাথে একটি সিনেমাতে পাবো, তখন আর দ্বিতীয়বার ভাবিনি।” দুই গুণী অভিনেতার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করার সুযোগ তাকে এই কাজটি করতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী করে তুলেছে বলে জানান সাবিলা। চিত্রনাট্যে মুগ্ধতা শুধু কাস্টিং নয়, সিনেমার চিত্রনাট্যও সাবিলাকে মুগ্ধ করেছে। চিত্রনাট্যকারদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “স্বাধীন ভাইয়া এবং সামিউলের স্ক্রিপ্টের কথা বলতেই হয়। তারা এত দুর্দান্তভাবে সংলাপ লিখেছেন, সবকিছু দেখার পরে মনে হলো এটা খুবই এক্সসাইটিং একটা জার্নি হবে।” দর্শকদের জন্য ভিন্ন অভিজ্ঞতা শক্তিশালী চিত্রনাট্য এবং গুণী সহ-অভিনেতাদের সমন্বয়ে ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ দর্শকদের জন্য দারুণ কিছু হতে যাচ্ছে বলে বিশ্বাস করেন সাবিলা। আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “আমি প্রত্যাশা করছি, বনলতা এক্সপ্রেসের জার্নিটা অনেক দুর্দান্ত কিছু একটা হবে।”
হাসি, আতঙ্ক আর রহস্য—সবকিছুর মাঝেই যার উপস্থিতি দর্শকের মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল, সেই অভিনেতা আর নেই। হলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা ‘দ্য মাস্ক’-এ স্মরণীয় অভিনয়ের জন্য পরিচিত পিটার গ্রিনের জীবনাবসান হলো নীরবে, নিভৃতে। গত শুক্রবার নিউইয়র্ক সিটির নিজের ফ্ল্যাট থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয় ৬০ বছর। এ বিষয়টি পিটার গ্রিনের ম্যানেজার ও দীর্ঘদিনের বন্ধু গ্রেগ এডওয়ার্ডস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, নিউইয়র্কের লোয়ার ইস্ট সাইডে অবস্থিত অভিনেতার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উচ্চ শব্দে গান বাজার আওয়াজ আসছিল। এরপর পুলিশের একটি দল সেখানে গিয়ে অভিনেতার মরদেহ উদ্ধার করে। তবে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। দ্যা মাস্ক সিনেমায় মূলত ডোরিয়ান টাইরেলের খলচরিত্রে ছিলেন পিটার। পর্দায় তার তীক্ষ্ণ চাহনি, গম্ভীর কণ্ঠস্বর এবং ভয়ংকর খল চরিত্রের অভিনয় দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল। এ ছাড়াও ‘পাল্প ফিকশন’-এর জেড চরিত্রের জন্য তিনি কাল্ট ক্লাসিক ভক্তদের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তবে পর্দায় ভয়ংকর সব চরিত্রে দেখা গেলেও ব্যক্তিজীবনে পিটার ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বভাবের মানুষ। তার ম্যানেজার গ্রেগ এডওয়ার্ডস বলেন, ‘পিটারের চেয়ে ভালো ‘ভিলেন’ আর কেউ হতে পারত না। কিন্তু পর্দার বাইরে তার একটি কোমল দিক ছিল, যা খুব কম মানুষই দেখার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি অত্যন্ত বড় মনের এবং দয়ালু একজন মানুষ ছিলেন।‘