গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু শাখার ৯ জন নেতাকর্মী একযোগে পদত্যাগ করেছেন।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে পিড়ারবাড়ি বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘোষণা দেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওয়ার্ডের হিন্দু শাখার সভাপতি মনজ মল্লিক (ঝন্টু)। তিনি জানান, পারিবারিক ও সামাজিক কারণ দেখিয়ে সভাপতি, সহসভাপতি, উপদেষ্টা ও সদস্যসহ মোট ৯ জন নিজেদের পদ ও সকল কার্যক্রম থেকে পদত্যাগ করছেন।
পদত্যাগকারীরা হলেন
মনজ মল্লিক (সভাপতি), বিমল বালা (সহসভাপতি), নারায়ণ হালদার (উপদেষ্টা), দুলাল মল্লিক, সবুজ মল্লিক, সুভাষ মধু, প্রকাশ সরকার, প্রদীপ ঢালী ও শিশির মল্লিক।
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ফরিদ উদ্দিন মাসউদ জানান, কিছুদিন আগে কমিটি গঠিত হয়েছিল, তবে তারা পদত্যাগ করেছেন কিনা এ বিষয়ে তার কাছে তথ্য নেই।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
দৈনন্দিন চাকরিজীবনের অন্যতম পরিচিত শব্দ—‘বেতন’। কিন্তু এই বেতনব্যবস্থা কি সবসময় এমন ছিল? করপোরেট দুনিয়ায় মাস শেষে টাকা পাওয়ার যে আধুনিক ব্যবস্থা, তা আসলে কয়েক হাজার বছরের ইতিহাস, সাম্রাজ্য, যুদ্ধ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির বিবর্তনের ফল। ইতিহাসের প্রথম বেতনব্যবস্থা পাওয়া যায় আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগে, খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সালে। মেসোপটেমিয়ার শহর–রাষ্ট্র উরুক, ব্যাবিলন ও সুমের অঞ্চলে শ্রমিকরা দিনের কাজের বিনিময়ে শস্য, যব বা রৌপ্যের পরিমাপ পেত। এই বেতন হিসাব করা হতো কাদার ফলকে কিুনিফর্ম লিপিতে। প্রত্নতত্ত্ববিদদের পাওয়া নথিতে যুক্ত আছে শ্রমিক কতটুকু যব পেল—তার সুনির্দিষ্ট হিসাব। তাই বলা যায়, বেতনের ‘আবিষ্কার’ কোনো ব্যক্তির নয়; বরং একটি সভ্যতার সাংগঠনিক ব্যবস্থার ফল। রোমান সাম্রাজ্যের সময় সৈন্যদের বেতন হিসেবে লবণ বা লবণ কেনার ভাতা দেওয়া হতো। লাতিন ভাষায় লবণ—‘সাল’; সেখান থেকেই আসে ‘সালারিয়াম’। আজকের ‘বেতন’ শব্দের ধারণা মূলত এই ‘সালারিয়াম’ থেকেই বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। রোমানরা প্রথম বুঝেছিল যে অর্থনীতি চালাতে হলে শ্রমকে মূল্যায়ন করতে হবে। সৈন্যদের মনোবল ধরে রাখা, কর কাঠামো তৈরি, আর্থিক প্রশাসনের উন্নয়ন—সব মিলিয়ে তারা বেতনব্যবস্থাকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অংশ করে তোলে। মধ্যযুগে ইউরোপে গড়ে ওঠে গিল্ড ব্যবস্থা—কারিগর, কাঠমিস্ত্রি, ধাতু শ্রমিক, তাঁতি—সবাই গিল্ডে যোগ দিয়ে নির্দিষ্ট হারে বেতন পেত। এই সময় প্রথমবারের মতো বেতনের মধ্যে যুক্ত হয় দক্ষতার ভিত্তিতে পারিশ্রমিক, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, এক সমান কাজে এক সমান মজুরি এবং শিক্ষানবিশ/প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার পারিশ্রমিক। এগুলো পরবর্তীকালের শ্রম আইনের ভিত্তি তৈরি করে। ১৭৫০-১৯০০ সাল পর্যন্ত শিল্পবিপ্লবের সময় শ্রমিকরা গ্রাম থেকে শহরে আসতে শুরু করে। কারখানার মালিকদের প্রয়োজন হয় শ্রমিক ধরে রাখা, নিয়মিত উৎপাদন নিশ্চিত করা এবং দক্ষ কর্মী দীর্ঘমেয়াদি নিয়োগে বাধ্য করা। এসব কারণে তৈরি হয় মাসিক বেতন, সাপ্তাহিক মজুরি, অতিরিক্ত সময়ের মজুরি (ওভারটাইম), বেতন কাটতি, বোনাস ও চুক্তিভিত্তিক বেতন স্কেল। কারখানার মালিকরা বুঝতে পারে—নিয়মিত বেতন দিলে শ্রমিক থাকবে, উৎপাদনও বাড়বে। এটাই আধুনিক করপোরেট বেতনব্যবস্থার ভিত্তি। ২০শ শতকের শুরুতে টেইলর, ফোর্ড ও ওয়েবারের মতো গবেষকেরা যখন আধুনিক ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞান তৈরি করলেন, তখন বেতন হয়ে গেল সংগঠনের অন্যতম কৌশলগত উপাদান। তাদের গবেষণায় দেখা গেল—উচ্চ বেতন উচ্চ উৎপাদন নিশ্চিত করে, কর্মদক্ষতা–ভিত্তিক বেতন কর্মীদের প্রণোদনা বাড়ায় এবং বেতনের স্বচ্ছতা কর্মক্ষেত্রে আস্থা তৈরি করে। এরপর তৈরি হয় মানবসম্পদ বিভাগ, বেতন গ্রেড, বেতন স্কেল, কর্মদক্ষতা সূচকভিত্তিক বোনাস, প্রভিডেন্ট ফান্ড, অবসরভাতা ও ভাতাব্যবস্থা। আজকের করপোরেট বেতনব্যবস্থা তাই পাঁচ হাজার বছরের যাত্রার ফল। উপসংহারে বলা যায়, বেতনের ইতিহাস শুধু অর্থনৈতিক নয়—এটি সভ্যতার বিবর্তন, রাষ্ট্রীয় কাঠামো, সাম্রাজ্য, যুদ্ধ, শিল্পবিপ্লব এবং আধুনিক করপোরেট নীতির সমন্বিত ফল। মানুষের শ্রমের মূল্যায়নের এই যাত্রাই ধীরে ধীরে বেতনব্যবস্থাকে করেছে আরও বৈজ্ঞানিক, মানবিক ও প্রাতিষ্ঠানিক। লেখক : এম. ইমরান, বিশ্লেষক ও গবেষক
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গঠনের লক্ষ্যে তিনটি দল মিলে ‘রাজনৈতিক ও নির্বাচনি ঐক্য’ ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রোববার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষিত নতুন জোটে এনসিপি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) যুক্ত হয়েছে। আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতে জোটে আরও দল যুক্ত হতে পারে। যদিও আলোচনায় গণঅধিকার পরিষদের থাকার কথা ছিল, অনুষ্ঠানে তাদের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের মনোনীত প্রার্থীরা একটি অভিন্ন প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন— এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম সদস্য সচিব সাঈদ মুস্তাফিজ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হাসিব উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতারা। এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, দেশের মানুষ যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রত্যাশা করছে, তাদের এই জোট সেই পরিবর্তনের সূচনা করছে।
এক বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ কোটির বেশি শিক্ষার্থী মাত্র ৯২ দিন ক্লাস পেয়েছে। সরকারি ছুটি, সাপ্তাহিক বন্ধ, শিক্ষক আন্দোলন, কর্মবিরতি, শাটডাউন, বিক্ষোভ–সমাবেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং পাঠ্যবই বিলম্বে বিতরণ—সব মিলিয়ে শিক্ষাক্রম চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। এ অবস্থায় শিখন ঘাটতি নিয়েই আজ রবিবার থেকে প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। সহকারী শিক্ষকরা শর্তসাপেক্ষে পরীক্ষার বাইরে আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। সরকারি শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, এ বছরে ৭৬ দিন সরকারি ছুটি এবং ১০৪ দিন সাপ্তাহিক ছুটিতে মোট ১৮০ দিন বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। বাকি ১৮৫ দিনের মধ্যে বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষকরা ৪০ দিন কর্মবিরতি পালন করেন এর মধ্যে পূর্ণদিবস ১৬ দিন এবং অর্ধদিবস ২৪ দিন। কর্মবিরতির দিন বাদ দিলে অবশিষ্ট থাকে ১৪৫ দিন। এ সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নিতে হয়েছে ২৭ দিন, ফলে ক্লাসের জন্য থাকে ১১৬ দিন। শৈত্যপ্রবাহ, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে আরো ১১ দিন বন্ধ থাকে বিদ্যালয়। অন্যদিকে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত পাঠ্যবই হাতে না পাওয়ায় কার্যত ক্লাস হয়েছে মাত্র ৯২ দিন। দেশের ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত, যার বড় অংশই সহকারী শিক্ষক। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় দুই কোটি; এর মধ্যে সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ে এক কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী। টানা আন্দোলন, কর্মবিরতি এবং শাটডাউন কর্মসূচির কারণে এসব বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়ে। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে পাঁচ শতাধিক সহকারী শিক্ষককে ভিন্ন জেলায় বদলির আদেশ দেয়। শুধু নোয়াখালী থেকেই বদলি করা হয় ৪০ জন শিক্ষককে। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের দাবি, এগুলো স্পষ্টতই শাস্তিমূলক বদলি এবং তাদের দাবির আন্দোলনকে চাপের মুখে ফেলতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নোয়াখালীর ২৪৩টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা বন্ধ থাকায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সেসব বিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে। সরকারি নির্দেশ অমান্য করা, বিদ্যালয় তালাবদ্ধ রাখা এবং সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তিন কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। বদলির তালিকায় থাকা শিক্ষক নেতা আবুল কাশেম ময়মনসিংহ থেকে প্রায় ৩৫০ মাইল দূরে বরিশালে বদলি হয়েছেন। সহকর্মীদের সঙ্গে দূরবর্তী জেলায় বদলির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে আসেন। অন্য আরেক নেতা রোকনুজ্জামান রাসেলকেও জামালপুরে বদলি করা হয়েছে। শিক্ষক নেতাদের অভিযোগ, আন্দোলন ভাঙতেই তাদের দূরবর্তী এলাকায় বদলি করা হয়েছে।