ঢাকাই চিত্রনায়ক আরিফিন শুভর নতুন সিনেমার খবর পাওয়া গেল। শোনা যাচ্ছে, তার আসন্ন একটি সিনেমার শুটিং শুরু করেছেন, যেখানে তার বিপরীতে অভিনয় করছেন চিত্রনায়িকা বিদ্যা সিনহা মিম। এই জনপ্রিয় জুটির একসঙ্গে কাজ করার খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, এই নতুন সিনেমায় শুভকে দেখা যাবে সম্পূর্ণ অ্যাকশন অবতারে। 'আব্বাস' ও 'লোকাল' খ্যাত পরিচালক সাইফ চন্দন সিনেমাটি পরিচালনা করছেন। বর্তমানে এর শুটিং চলছে রাজশাহী ও নাটোর অঞ্চলে। এই সিনেমার মাধ্যমে শুভ ও মিম তৃতীয়বারের মতো বড় পর্দায় জুটি বাঁধছেন।
এরই মধ্যে সিনেমার শুটিংয়ের একটি ছবি ফাঁস হয়েছে, যা দর্শকদের মাঝে কৌতূহল বাড়িয়েছে। ফাঁস হওয়া ছবিতে দেখা যায়, শুভর লম্বা চুল, পুরো শরীর রক্তমাখা, এবং দুই হাতে রক্তাক্ত কুড়াল। ছবিটি তার অ্যাকশনধর্মী চরিত্রেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও সিনেমাটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কেউ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেননি, তবে সূত্র বলছে, শুভ-মিম অভিনীত এই সিনেমার একাধিক নাম প্রাথমিকভাবে রাখা হলেও এখনো কোনোটি চূড়ান্ত হয়নি। আসছে ঈদুল ফিতরে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ইতোমধ্যে এক সপ্তাহ ধরে শুটিং চলছে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
ঢাকায় পা রেখেও মঞ্চে উঠতে পারল না পাকিস্তানের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘কাভিশ’। শহরে কনসার্টের উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই নেমে এলো অচেনা অস্বস্তি। শেষ মুহূর্তে আটকে যায় ভেন্যুর অনুমতি। আয়োজক প্রাইম ওয়েভ কমিউনিকেশনস জানায়, বাধ্য হয়েই অনুষ্ঠানটি স্থগিত করতে হয়েছে, তবে পুরোপুরি বাতিল হয়নি। জানা যায়, ‘ওয়েভ ফেস্ট: ফিল দ্য উইন্টার’ শিরোনামে কনসার্টটি হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে। এতে কাভিশের পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যান্ড শিরোনামহীন, মেঘদলসহ আরও কয়েকজন শিল্পী পারফর্ম করার কথা ছিল। ভেন্যু হিসেবে নির্ধারিত ছিল ঢাকার মাদানী অ্যাভিনিউয়ের কোর্টসাইড। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) কাভিশ ঢাকায় পৌঁছে। ব্যান্ড সদস্যদের বিমানবন্দরের ছবি প্রকাশ করে আয়োজক প্রতিষ্ঠান সামাজিক মাধ্যমে জানায়, কাবিশ গত রাতে ঢাকায় পৌঁছেছে। এরপর কনসার্ট স্থগিত নিয়ে ব্যান্ডদলটির পক্ষ থেকে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে আয়োজক প্রতিষ্ঠান। আয়োজক পক্ষ জানায়, আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল—যে কোনো মূল্যে এই অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করা। দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও অস্থিরতা বিবেচনা করে, সব প্রস্তুতি, ভেন্যু, কাগজপত্র, শিল্পীর পারিশ্রমিক ও অনুমতির জটিলতা অতিক্রম করার পরও আমাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ওয়েভফেস্ট সিজন ০১ সাময়িকভাবে পুনর্নির্ধারণ করা উচিত। আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য হৃদয় থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি; কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আয়োজক পক্ষ আরও জানায়, অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে; কিন্তু বাতিল করা হয়নি। আপনারা কেউ হতাশ হবেন না। আমরা আন্তরিকভাবে এই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। এ ছাড়া আপনাদের জন্য কাভিশ নিজে একটি ভিডিও বার্তাও পাঠিয়েছেন। আমরা আবারও ক্ষমা চাচ্ছি। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ব জানুয়ারিতেও ঢাকায় এসে ‘ঢাকা ড্রিমস’ কনসার্টে গান পরিবেশন করেছিল কাভিশ। ‘বাচপান’ ও ‘তেরে পেয়ার মে’ গানগুলো দিয়ে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে জনপ্রিয় এই ব্যান্ডটি ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
চিত্রনায়িকা অধরা খান। ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন তিনি। আছে অভিনয়ের প্রতিও ভালোবাসা। তাই তো দেশের বাইরে থেকেও মুক্তির অপেক্ষায় থাকা নিজের ‘ঋতুকামিনী’র জন্য অপেক্ষায় আছেন নায়ক সিনেমা খ্যাত এই নায়িকা। সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন মাতৃত্ব’খ্যাত পরিচালক জাহিদ হোসেন। গত বছর এটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এতে অধরার বিপরীতে আছেন জনপ্রিয় অভিনেতা সজল। সজলের সঙ্গে এটাই অধরার প্রথম কোনো কাজ। এর আগে অধরা বেশ কয়েকজন নায়কের বিপরীতে অভিনয় করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলেন সাইমন সাদিক ও বাপ্পি চৌধুরী। নতুন এ সিনেমা নিয়ে অধরা বলেন, ‘ঋতুকামিনীর গল্পটা এক কথায় অন্যরকম। এ ধরনের গল্প নিয়ে আমাদের দেশে বলা যায় সিনেমা নির্মাণই হয়নি। জাহিদ ভাই অত্যন্ত গুণী একজন পরিচালক। তার মাতৃত্ব সিনেমাটি সম্পর্কে জানি, তবে দেখা হয়নি। এমন একজন গুণী পরিচালকের সিনেমায় অভিনয় করে আমার নিজেরই বেশ ভালো লেগেছে। অনেক কিছুই শিখেছি আমি তার কাছ থেকে। সবমিলিয়ে গল্প, নিমার্ণশৈলী এবং প্রত্যেক শিল্পীই চমৎকার অভিনয় করেছেন। সবমিলিয়ে ঋতুকামিনী একটি পরিপূর্ণ সিনেমা, যা হলে গিয়ে দেখার জন্য আমি নিজেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আশা করছি সিনেমাটি মুক্তি পেলে দর্শকের ভালোবাসায় সমাদৃত হবে সিনেমাটি।’ এ সিনেমায় অধরা একজন গ্রামের মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সিনেমাটিতে তার সঙ্গে আরও আছেন ফজলুর রহমান বাবু, দীপা খন্দকার, রীনা খানসহ আরও অনেকে। অধরা খান অভিনীত অন্যান্য সিনেমা হচ্ছে ‘নায়ক’, ‘মাতাল’, ‘পাগলের মতো ভালোবাসি’, ‘সুলতানপুর’। এ সব সিনেমাই মুক্তি পেয়েছে। প্রতিটি সিনেমাতেই তার অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়েছে। মুক্তির অপেক্ষায় আছে অধরা অভিনীত ‘দখিন দুয়ার’ সিনেমাটিও। এটি নির্মাণ করেছেন সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড।
ভারতের দক্ষিণে সিনে-ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা। যিনি ‘পুষ্পা’ সিনেমার শ্রীভল্লী নামেও দর্শকদের মাঝে বেশ সমাদৃত। তবে শুধু দক্ষিণেই নয় এখন বলিউডেও অভিনয় করে বেশ সাড়া ফেলেছেন এই সুন্দরী। রাশমিকার অভিনয় যেমন দর্শকদের মাঝে আলোচনার চর্চার বিষয় হয়ে থাকে ,তেমনি তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশ কৌতূহলী তার অনুরাগীরা। বিশেষ করে দক্ষিণী তারকা বিজয় দেবরাকোন্ডা ও রাশমিকার বিবাহ নিয়ে এখন ভক্তদের মাঝে জল্পনা তুঙ্গে। তবে এ বিষয়ে এবার মুখ খুলেছেন রাশমিকা নিজেই। চলতি বছরের অক্টোবরে বাগদান সেরেছেন বিজয়-রাশমিকা। এরপর তারা মুখে কিছু না বললেও তাদের আচরণ ও হাতের আংটি সবাইকে বুঝাতে আর কিছু বাকি রাখে নাই। তবে গুঞ্জন রয়েছে বাগদানকে বিয়েতে রূপ দিতে যাচ্ছেন এই হবু দম্পতি। আগামী বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি উদয়পুরের বিশাল একটি প্রাসাদে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন রাশমিকা-বিজয়। তবে এ বিষয়ে কিছু নিশ্চিত করা না হলেও হলিউড রিপোর্টারের এক সাক্ষাৎকারে রাশমিকা বলেন, ‘আমি বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিতও করব না আবার উড়িয়ে দেব না। আমি শুধু বলতে চাই, যখন বলার সময় হবে তখনই বলবো।’ উল্লেখ্য, মডেলিংয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন রাশমিকা মান্দানা। ২০১২ সালে ‘ক্লিন অ্যান্ড ক্লিয়ার ফ্রেস অব ইন্ডিয়া’ খেতাব জেতেন তিনি। ২০১৬ সালে কন্নড় ভাষার ‘কিরিক পার্টি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। অভিষেক এ চলচ্চিত্রের জন্য সাউথ ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল মুভি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন এই অভিনেত্রী। এরপর বেশ কিছু সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করেন রাশমিকা মান্দানা ও বিজয় দেবরকোন্ডা। ‘গীতা গোবিন্দম’, ‘ডিয়ার কমরেড’ সিনেমায় তাদের রসায়ন দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। এ জুটির পর্দার রসায়ন ব্যক্তিগত জীবনেও গড়ায়। ফলে এ দুজনের সম্পর্ক বহুল চর্চিত। তবে ২০১৭ সালে কন্নড় সিনেমার নির্মাতা-অভিনেতা রক্ষিত শেঠির সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছিলেন রাশমিকা মান্দানা। বাগদানের পরও ভেঙে যায় রাশমিকার এই বিয়ে। তবে ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমের দাবি, বিজয়ের কারণেই ভেঙে গিয়েছিল রাশমিকার এই বিয়ে।