বলিউড অভিনেত্রী ও গায়িকা সোফী চৌধুরী। বড় পর্দায় তাকে খুব একটা দেখা যায় না, হাতেগোনা কয়েকটি ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ঝুলিতে নেই কোনো বড় হিট সিনেমা। তবুও তার বিলাসবহুল জীবনযাপন, নামী ব্র্যান্ডের পোশাক আর হাই-প্রোফাইল পার্টিতে নিয়মিত উপস্থিতি প্রায়ই সাধারণ মানুষের কৌতূহলের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি উদয়পুরে এক রাজকীয় বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সোফী, যেখানে পারফর্ম করেছিলেন বিশ্বখ্যাত গায়িকা জেনিফার লোপেজ। সেই অনুষ্ঠানে সোফীর উপস্থিতি দেখে নেটিজেনদের একাংশ তাকে কটাক্ষ করতে শুরু করেন। প্রশ্ন ওঠে তার আয়ের উৎস নিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ প্রশ্ন করেন, একটা ছবিতেও তো দেখা যায় না, তাহলে করেনটা কী? আবার কেউ মন্তব্য করেন, ছবি নেই, এদিকে এত টাকা আসে কোথা থেকে? টানা এমন নেতিবাচক মন্তব্য ও কটাক্ষে আর চুপ থাকতে পারেননি সোফী। সটান উত্তর দিয়ে নিজের আয়ের উৎস এবং ক্যারিয়ার নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন এই তারকা। সোফী বলেন, ১৭ বছর ধরে আমি গানের অনুষ্ঠান করছি। আর দেশের এক নম্বর মহিলা সঞ্চালিকা (হোস্ট) আমি। বিভিন্ন করপোরেট অনুষ্ঠান, বিয়েবাড়ি বা লাইভ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করার জন্য আমাকে ডাকা হয়। বলিউডে টিকে থাকার লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বলিউডে যে পরিমাণ প্রতিযোগিতা তা সবার জানা। একজন নায়িকার জমি শক্ত করতে অনেক সময় লেগে যায়। তবে সোফীর সবচেয়ে বড় দাবিটি ছিল তার রোজগার নিয়ে। তিনি স্পষ্ট জানান, সিনেমার পর্দায় তাকে কম দেখা গেলেও উপার্জনের দিক থেকে তিনি পিছিয়ে নেই। সোফীর ভাষ্যমতে, বলিউডের অনেক প্রথম সারির নায়িকারাও অত রোজগার করেন না, যত রোজগার আমি করি।
বলিউডের আইকন, সাবেক বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন আর নীরব থাকলেন না। জনপরিসরে নারীদের ওপর বাড়তে থাকা হয়রানি ও কটাক্ষের বিরুদ্ধে তিনি তুললেন কণ্ঠ। এক গভীর, দৃঢ় বার্তায় তারকাখ্যাত এই অভিনেত্রী স্পষ্ট করে দিলেন, নারীর পোশাক, সাজসজ্জা কিংবা আচরণ কোনোভাবেই হেনস্তার ন্যায্যতা দিতে পারে না। বরং তিনি নারীদের আহ্বান জানালেন মাথা উঁচু করে চলতে, নিজেদের অধিকার ও মর্যাদার জন্য প্রয়োজনে সংগ্রামে নামতে। মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় তার এই শক্তিশালী অবস্থান, নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার প্রশ্ন। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক প্রসাধনী দ্রব্যের বিজ্ঞাপনী দূত হিসেবে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন ঐশ্বরিয়া। সেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়, রাস্তাঘাটে নারীরা কীভাবে হয়রানি মোকাবিলা করবেন? সঙ্গে সঙ্গেই ঐশ্বরিয়া পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘অপর প্রান্তের মানুষটির চোখের দিকে না তাকালেই পার পেয়ে যাবেন ভাবছেন? তাহলে বলি, একদম নয়। মোকাবিলা করতে হেনস্তাকারীর চোখের দিকে সোজাসুজি তাকাতে শিখুন। মাথা উঁচু করে হাঁটুন।’ নারী হয়রানি মোকাবিলায় ঐশ্বরিয়া আত্মবিশ্বাসের ওপর জোর দিয়ে বলেন, নারীদের ভাবতে শেখা উচিত- ‘আমার শরীর, আমার সম্পদ।’ নিজের মূল্য নিয়ে কখনোই আপস করবেন না বা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগবেন না। আত্মবিশ্বাস ধরে রাখুন এবং প্রয়োজনে নিজের জন্য নিজে উঠে দাঁড়ান ও লড়ুন।
ওপার বাংলার অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্রকে নিয়ে ইদানীং গুঞ্জন ছিল—কলকাতার চেয়ে মুম্বাই তথা আরব সাগরের তীরেই তার আনাগোনা বেশি। প্রিয় তারকাকে শহরে না দেখে ভক্তদের মনেও ছিল প্রশ্ন। তবে সব জল্পনা উড়িয়ে রুক্মিণী এখন কলকাতাতেই। ব্যস্ত সময় পার করছেন আসন্ন সিনেমা ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’-এর প্রচারণায়। মুম্বাই কানেকশন ও শৈশবের স্মৃতি মুম্বাই যাতায়াত নিয়ে চলা ফিসফাস প্রসঙ্গে স্পষ্ট জবাব দিয়েছেন রুক্মিণী। তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই মায়ানগরীর সঙ্গে তার গভীর সংযোগ। অভিনেত্রী বলেন, ‘সবাই এখন আমার মুম্বাই যাতায়াত নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু বাবা বলতেন, পরীক্ষায় ভালো ফল করলে মুম্বাই নিয়ে গিয়ে মনের মতো জিনিস কিনে দেবেন। তাই এই শহরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক পুরোনো।’ বাবার স্মৃতি ও মায়ের একাকিত্ব বাবা-মেয়ের সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে নির্মিত ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ সিনেমার প্রচারণায় এসে বারবার স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ছেন রুক্মিণী। ২০১৭ সালে বাবাকে হারিয়েছেন তিনি। সিনেমার গল্প যেন তাকে বারবার সেই স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বাবার মৃত্যুর পর মা মধুমিতা মৈত্রই ছিলেন রুক্মিণীর জগৎ। মা তাকে এবং ভাই রাহুলকে বন্ধুর মতো আগলে রেখেছেন। তবে নতুন সিনেমার গল্পটি রুক্মিণীকে মায়ের একাকিত্ব নিয়ে নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক সময় ভুলে যাই যে, বাবা-মা হওয়ার আগেও তারা মানুষ। তাদেরও নিজস্ব চাওয়া-পাওয়া থাকে। আমার তো নিজস্ব জগৎ আছে, কাজ আছে, বন্ধুরা আছে; কিন্তু মায়ের হয়তো একা লাগে। সব কথা কি তিনি আমার সঙ্গে ভাগ করতে পারেন? তাদেরও সঙ্গীর প্রয়োজন হতে পারে।’ সোশ্যাল মিডিয়া ও নেতিবাচকতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের উপস্থিতি ও সমালোচনা প্রসঙ্গে বেশ কড়া বার্তা দিয়েছেন রুক্মিণী। কাজের প্রয়োজনে যতটুকু দরকার, ততটুকুই অনলাইনে থাকেন তিনি। সমালোচকদের উদ্দেশে রুক্মিণীর সাফ কথা, ‘হাজারটা ভালো মন্তব্যের ভিড়ে খারাপগুলোকে কেন গুরুত্ব দেব? আমি ইতিবাচক দিকটাই দেখতে চাই। মনে রাখবেন, আমি মেয়ে হতে পারি, কিন্তু বোকা মেয়ে নই। উল্লেখ্য, বছরের শুরুটা হয়েছিল ‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’ দিয়ে, আর শেষ হচ্ছে ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ দিয়ে। ক্যারিয়ারের এই বাঁক বদল নিয়ে বেশ আশাবাদী এই অভিনেত্রী।
দেশের ছোট-বড় পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। অভিনয় শৈলীর জাদুতে বহু আগেই অগণিত ভক্তের হৃদয় জয় করা এই শিল্পী কেবল পর্দায় নয়, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিটি পোস্টেও যেন ছড়িয়ে দেন তার নিজস্ব আকর্ষণ। নিয়মিতই ভক্তদের সঙ্গে অনুভূতি ভাগ করেন, জীবনযাপনের মুহূর্তগুলো প্রকাশ্যে আনেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে নতুন এক পোস্টেই যেন আবার ঝড় তুললেন এই সুন্দরী। বুধবার (২৬ নভেম্বর) নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল ফেসবুকে বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছেন অভিনেত্রী। প্রকাশিত সেসব ছবিতে দেখা যায়, শীতের সকালে নদীতে নেমে জলকেলিতে মেতে উঠেছেন তিনি। খোলামেলা চুলে, কালো টি-শার্ট পরিহিত ভাবনা কচুরিপানার ফুল হাতে ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন। আর তার মায়াবী চাহনিই নেটিজেনদের নজর কেড়েছে। এদিকে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘শীতের সকালে একটু নদীতে নামলাম। বলেন নদীর নাম কি?’ ভাবনার এই জলকেলির ছবি দেখে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নেটিজেনরা। অনেকে তার সৌন্দর্যের প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ কেউ শীতকালে তার জলে নামার দুঃসাহস দেখে অবাক হয়েছেন।
ছোট পর্দার গণ্ডি পেরিয়ে বড় পর্দায় নজর কাড়া অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান এখন ফুরফুরে মেজাজে। যান্ত্রিক শহরের কোলাহল ছেড়ে সমুদ্রের বিশাল জলরাশির সামনে নিজেকে মেলে ধরেছেন তিনি। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফেসবুকে একগুচ্ছ ছবি পোস্ট করে ভক্তদের মাঝে সেই আনন্দের রেশ ছড়িয়ে দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। সাদা রঙের পোশাকে দুহাত দুদিকে ছড়িয়ে দিয়ে সাদিয়া জানান দিচ্ছেন, কতটা আনন্দঘন মুহূর্তে রয়েছেন তিনি। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘জাস্ট এ গার্ল অ্যান্ড হার হ্যাপি ওয়েভ এরা’। সাদিয়ার এই স্নিগ্ধ রূপ দেখে কমেন্ট বক্সে ভালোবাসার বন্যা বইয়ে দিয়েছেন ভক্তরা। কেউ তাকে আখ্যা দিয়েছেন ‘জলকন্যা’ বলে, আবার কেউ লিখেছেন ‘খুব সুন্দর লাগছে’। সাদিয়ার হাসিমাখা মুখ দেখে একজন ভক্ত জীবনদর্শন তুলে ধরে লিখেছেন, ‘সুখ হচ্ছে মনের ব্যাপার, মনকে বোঝাতে পারলে আপনি সব অবস্থাতেই সুখী!’ আরেকজনের মন্তব্য, ‘দারুণ মুহূর্ত’। সম্প্রতি ‘উৎসব’ সিনেমায় দারুণ অভিনয় করে বড় পর্দায় নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন সাদিয়া আয়মান। ছোট পর্দায় এখন কিছুটা অনিয়মিত হওয়ায় ভক্তদের ধারণা, বড় পর্দাতেই হয়তো স্থায়ী হতে চলেছেন তিনি। এরই মধ্যে অভিনেত্রীর ক্যারিয়ারে যুক্ত হয়েছে নতুন এক প্রাপ্তি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় চিত্রপরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী, যিনি ‘পিংক’, ‘কাদাক সিং’ ও ‘লস্ট’-এর মতো প্রশংসিত চলচ্চিত্র নির্মাণ করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন— তিনি ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সাদিয়ার। ‘উৎসব’ সিনেমায় সাদিয়া আয়মান ও সংশ্লিষ্ট সব কলাকুশলীর কাজের প্রশংসা করেছেন এই গুণী নির্মাতা, যা সাদিয়ার জন্য বড় এক অনুপ্রেরণা।
২২ বছরের সুদীর্ঘ পথচলায় ছোটপর্দার নিয়মিত মুখ ছিলেন তিনি। টিআরপি-র ওঠানামা, চরিত্রের উত্থান-পতন—সবকিছুর মাঝেই দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন দেবযানী চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু হঠাৎ যেন বদলে গেল সব। গত আড়াই বছর ধরে তাকে কোনো ধারাবাহিকে দেখা যায় না। বড়পর্দার দিকেও মুখ ফেরালেও কাজের সংখ্যা তুলনামূলক কম। টালিউড ছেড়ে এখন তিনি রয়েছেন মুম্বাইয়ে। ভক্ত মনে প্রশ্ন জেগেছে, হঠাৎ করে কেন এত বড় সিদ্ধান্ত নিলেন এই অভিনেত্রী? ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বহু জনপ্রিয় ধারাবাহিকে কখনো নেতিবাচক আবার কখনো ইতিবাচক চরিত্রে তাকে দেখেছে দর্শক। কিন্তু, গত দুই বছরে নাকি ছোটপর্দায় অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়েছেন অভিনেত্রী। এ বিষয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘প্রায় আড়াই বছর হলো ধারাবাহিকে অভিনয় করা ছেড়ে দিয়েছি। সত্যি বলতে একঘেয়েমি এসে গিয়েছিল। তাই মেগাতে অভিনয় না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নতুন ধরনের কাজ করতে চাইছি। ছোটপর্দায় নতুন কিছু করার নেই। আমার জন্য নতুন কিছু হবে সেটাও নয়। আর গল্পের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারছিলাম না।‘ তাহলে এখন কী করতে চান দেবযানী? করোনা পরিস্থিতি অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে। ফলে অভিনেত্রী এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওয়েব সিরিজে অভিনয় করতে খুবই আগ্রহী। সেই কারণেই অনেক দিন ধরে মুম্বাইয়ে থাকছেন তিনি। মাঝেমধ্যে আসছেন কলকাতায়। দেবযানী জানিয়েছেন, ওখানের কাজকর্মের ধরন অন্যরকম। বিভিন্ন জায়গায় অডিশন দিচ্ছেন তিনি। এ ছাড়া কলকাতায় তার নিজস্ব একটি বুটিক আছে। তাই ব্যবসার কাজেও মাঝেমধ্যে শহরে ফিরতে হচ্ছে তাকে।
‘ফুল অউর পাত্থর’ ক্যারিয়ারের প্রথম বড় হিটের নামটিই যেন তার ব্যক্তিত্বের রূপক, পাথরের মতো গঠনে অটল দৃঢ়তা, আর কোমলতায় মোড়া এক অনন্য নায়ক-চরিত্র। বলছি সদ্য প্রয়াত হিম্যান খ্যাত বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্র দেওলের কথা। গত শতকের ছয়ের দশকের মাঝামাঝি রুপালি পর্দায় আবির্ভূত হয়ে ধর্মেন্দ্র হয়ে উঠেছিলেন সেই সময়ের অবিসংবাদিত সুপারস্টার, তখনো বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেনি রাজেশ খান্নার ‘রোমান্টিক রাজত্ব’ কিংবা অমিতাভ বচ্চনের ‘অ্যাংরি ইয়াং ম্যান’ যুগ। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিগ বি-র বিস্ময়কর উত্থান যেন ধর্মেন্দ্রর আলোকে আড়াল করল। যেমন ভারতীয় ক্রিকেটে শচীন–সৌরভদের ঝলমলে যুগের আড়ালে নিঃশব্দে ভরসা হয়ে থেকেছেন রাহুল দ্রাবিড়, তেমনি বলিউডের অন্ধকারে আলো জ্বেলেও মিস্টার ডিপেন্ডেবল হয়ে থাকলেন ধর্মেন্দ্র। তার অভিনয়, ব্যক্তিত্ব ও সময়-অতিক্রমী জনপ্রিয়তা—সব মিলিয়ে ধর্মেন্দ্র শুধু এক নায়ক নন, ভারতীয় সিনেমার এক শক্তিশালী প্রতীক। এখন ভক্ত মনে প্রশ্ন উঠতে পারে কত বড় তারকা ছিলেন ধর্মেন্দ্র? এই হিসাবটা হিসেব করে বের করা কঠিন কিন্তু একটা ধারণা দেওয়া যেতে পারে। অমিতাভ-ধর্মেন্দ্রর জীবনের সবচেয়ে বড় হিট ‘শোলে’। ১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিতে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক কে পেয়েছিলেন? উত্তরটা কিন্তু ধর্মেন্দ্রই। ততদিনে অমিতাভ স্টার হয়ে উঠলেও সুপারস্টার হতে পারেননি। মূলত পরপর সাফল্যের মধ্যে দিয়ে গিয়ে ‘মুকাদ্দার কা সিকান্দার’ (১৯৭৮) ছবির পরই সুপারস্টার হয়ে ওঠেন বিগ বি। অন্যদিকে সঞ্জীবকুমার কিন্তু ততদিনে বিরাট জনপ্রিয়। কিন্তু এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেইড অভিনেতা ছিলেন ধর্মেন্দ্র। তিনি পেয়েছিলেন দেড় লাখ টাকা। অন্যদিকে ‘ঠাকুর সাহাব’ সঞ্জীব কুমার পেয়েছিলেন ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। অমিতাভ পান ১ লাখ। হেমার পারিশ্রমিক ছিল ৭৫ হাজার। ৩৫ হাজার টাকা পেয়েছিলেন জয়া বচ্চন। এ ছাড়া একেবারেই নতুন ‘গব্বর’ আমজাদ খান ৫০ হাজার। এদিকে বলিউডের ইতিহাসে সাফল্যের বিচারে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে রাজেশ খান্নার নাম। টানা ১৭টি হিট ছবি দিয়েছিলেন ‘কাকাজি’। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাওয়া এই সাফল্য তাকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতা করে রেখেছিল। অমিতাভের মহাতারকা হয়ে ওঠাও রাজেশের এই সাফল্যকে প্রতিস্থাপিত করতে পারেনি। এই সাফল্যের ভিড়ে ধর্মেন্দ্রকে আলাদা করে সরিয়ে না রেখে উপায় নেই। ১৯৬০ সালে ক্যারিয়ার শুরু। যদিও প্রথম ছবি ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ সাফল্যের মুখ দেখেনি। সাফল্যের জন্য ধর্মেন্দ্রকেও করতে হয় অপেক্ষা। এরপর ১৯৬৬ সালে ‘ফুল অউর পাত্থর’ ধর্মেন্দ্রকে একটা স্থায়ী জায়গা করে দিল। তার আগেই অবশ্য ‘আয়ি মিলন কি বেলা’র মতো ছবি মুক্তি পেয়ে গেছে। এরপর একে একে ‘অনুপমা’, ‘সত্যকাম’, ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘সীতা অউর গীতা’ ‘সমাধি’, ‘জুগনু’, ‘ইয়াদো কি বারাত’-এর সাফল্য ‘শোলে’-র মহাসাফল্যের আগেই ধর্মেন্দ্রকে সুপারস্টার করে তুলেছে। অবশ্য সেই সময় ধর্মেন্দ্রর শরীরে সামান্য বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করেছে। কেননা তিনি ততদিনে চল্লিশে পা রেখেছেন। কিন্তু ‘ড্রিম গার্ল’, ‘শালিমার’-এর মতো সফল ছবি এরপরও করেছেন ধর্মেন্দ্র। আটের দশক পেরিয়ে এসে ১৯৯০ সালেও ‘নাকাবন্দি’, ‘হামসে না তাকরানা’ কিংবা ১৯৯২ সালে ‘তাহালকা’ বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়েছে। অর্থাৎ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বলিউডে সাফল্যে ধরে রেখেছিলেন এই গুণী অভিনেতা। এরপর প্রধান চরিত্র থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন ধর্মেন্দ্র। তিনি মোটামুটি সাতান্নতেই নায়ক হওয়া ছেড়ে দেন। এরপরও অবশ্য ছবি করেছেন। এমনকী, ২০২৩ সালে ‘রকি অউর রানি কি প্রেমকাহিনি’তে অভিনয় করে বেশ সাড়া ফেলেছেন ধর্মেন্দ্র। মৃত্যুর আগে ধর্মেন্দ্র সবশেষ অভিনয় করেন শ্রীরাম রাঘবন এর পরিচালনায় নির্মিত সিনেমা ইক্কিস- এ। এ চলচ্চিত্রটিতে ধর্মেন্দ্রর পাশাপাশি অভিনয় করেন জয়দীপ আহলাওয়াত, অগস্ত্য নন্দসহ অনেকে। ছবিটি মুক্তি পাবে চলতি বছরের ২৫ ডিসেম্বর।
ভারতের উদয়পুরে অনুষ্ঠিত শিল্পপতি রাজু মন্টেনার কন্যা নেত্রা মন্টেনার জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের আসর ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। নাচ, গান ও আনন্দঘন মুহূর্তের ছবি-ভিডিওতে দেখা গেছে বলিউড তারকাদের উপস্থিতি, যেন বসেছিল তারার মেলা। রণবীর সিং, জাহ্নবী কাপুরসহ অনেকে বিয়ের আসরে নেচে মাতিয়েছেন। তবে এত বিশাল আয়োজনেও দেখা যায়নি রণবীর কাপুরকে। ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হতেই ভক্তদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে—অন্যান্য তারকারা উপস্থিত, রণবীর নেই কেন? এ আলোচনার মধ্যে সামনে এসেছে রণবীর কাপুরের ২০১১ সালের সাক্ষাৎকার। সেখানে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন, টাকার বিনিময়ে তিনি কখনো বিয়েতে নাচবেন না। তিনি বলেন, ‘টাকার জন্য আমি কোনো বিয়েবাড়িতে নাচব না। এর অন্যতম কারণ আমার পারিবারিক মর্যাদা। আমি চাই না আমার পরিবারের কেউ অর্থের বিনিময়ে এমনটি করুক। এটি আমার ব্যক্তিগত পছন্দ। আমি আমার স্টারডম হারাতে চাই না, আবার কাউকে ভাবতেও দিতে চাই না, আমি ধরাছোঁয়ার বাইরে কোনো তারকা।’ খবর : ইন্ডিয়া টুডে সাক্ষাৎকারে রণবীর আরও বলেন, ‘আমি যে পরিবারে বড় হয়েছি এবং যে মূল্যবোধে বড় হয়েছি, তা আমার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যায় না। যারা বিয়েতে পারফর্ম করেন, তাদের প্রতি আমার কোনো বিরূপ মনোভাব নেই।’ এসময় রণবীর কাপুর ব্যাখ্যা করেন, টাকা উপার্জন তার একমাত্র লক্ষ্য নয়। তিনি জানান, কোটি কোটি টাকা আয়ের চাইতে একজন ভালো অভিনেতা হিসেবে পরিচিত হতে চান তিনি।
বিয়ে করতে চলেছেন বিশ্বখ্যাত মার্কিন সংগীতশিল্পী টেলর সুইফট। দীর্ঘদিনের প্রেমের পর আমেরিকান ফুটবল তারকা ট্র্যাভিস কেলসির সঙ্গে সম্পর্কের পরিণতি দেখতে চলেছে পুরো বিশ্ব। ভক্তদের উত্তেজনা যেমন আকাশছোঁয়া, তেমনি সুরক্ষাজনিত উদ্বেগও তৈরি করেছে এক নতুন নাটকীয় পরিস্থিতি, যেখানে হাই-প্রোফাইল এই জুটির নিরাপত্তা সকলের নজরদারির কেন্দ্রে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, টেলর সুইফট তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেন; অন্যদিকে, ট্র্যাভিস কেলসিও নিজেকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করেন। এরপরও দুজনের সম্পর্ক ও বহু প্রতীক্ষিত বিয়ের মতো বিলাসবহুল অনুষ্ঠান ঘিরেই বাড়ল এবার উদ্বেগ; শঙ্কা। তাই এ নিয়ে কার্যত নড়েচড়ে বসেছে তাদের টিম। মূলত, তাদের নিরাপত্তা প্রোটোকলগুলো এখন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আরও জানা যায়, টেলর সুইফটের তারকার মর্যাদা এবং জনজীবনের ঝুঁকির সঙ্গে সম্পর্কিত সম্ভাব্য বিপদগুলোর কারণে তার নিরাপত্তা দল বর্তমানে ‘হাই অ্যালার্ট’ অবস্থায় আছে। ‘টেলর এখন প্রেমে মগ্ন এবং জীবনকে খোলাখুলি উপভোগ করছেন, কিন্তু তার নিরাপত্তা দলটি চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছে। তিনি যে মূল্যবান গহনা ও পোশাক পরবেন, তা পেশাদার অপরাধীদের আকৃষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। তাই ঘটতে পারে যেকোনো বিপদ।’ এদিকে, ‘বিষয়টি এমন নয় যে টেইলর অসতর্ক। সমস্যা হলো, তার জীবনযাত্রা এখন প্রায় সবারই জানা; তার প্রতিটি পদক্ষেপ নজরে রাখা হয়। তাই শঙ্কার বিষয়টি থেকেই যায়।’ এক দেহরক্ষীর বক্তব্য অনুযায়ী, ‘টেলর সুইফটের মতো কারও বিয়ের অনুষ্ঠান মানেই চোরদের কাছে স্বপ্নের মতো পরিস্থিতি। এখানে ভিআইপি অতিথিরা থাকবেন, থাকবে দামি উপহার, অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের ঘন ঘন পরিবর্তন হবে এবং সবাই কিছুটা উদাসীন থাকবে।’ টেলর সুইফটের বিয়ের দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে তার নিরাপত্তা ও জনজীবন আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসার বেশ কিছু কারণও রয়েছে। গত এক বছরে টেলর সুইফট বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছেন। এর মধ্যে একটি গুরুতর হুমকির কারণে ভিয়েনায় তার ‘এরাস ট্যুর’ কনসার্ট বাতিল করতে হয়েছিল।
টালিউডের বড়পর্দায় অভিষেক, আর সেই মঞ্চেই ওপার বাংলার সুপারস্টার দেবের বিপরীতে রোম্যান্স—এই অসম্ভব স্বপ্নই এবার সত্যি করেছেন ছোটপর্দার পরিচিত মুখ জ্যোতির্ময়ী কুণ্ডু। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ‘প্রজাপতি ২’-এ। তাদের জুটির রসায়ন নিয়ে ইতিমধ্যেই তুমুল উত্তেজনা দর্শকমহলে। আর দেবের সঙ্গে প্রথমবার রোম্যান্টিক দৃশ্যে অভিনয়, তা যেন জ্যোতির্ময়ীর কাছে স্বপ্নপূরণের থেকেও বড় কোনও অনুভূতি। ভারতীয় গণমাধ্যমে এ বিষয়ে জ্যোতির্ময়ী জানান, প্রথম যখন তিনি শোনেন যে তার প্রথম চলচ্চিত্রেই বিপরীতে নায়ক দেব, তখন তিনি কিছুটা অবিশ্বাস ও ভয় পেয়েছিলেন। কিন্তু শুটিং শুরু হওয়ার পর পরিচালক অভিজিৎ সেনের সহায়তায় দৃশ্যগুলো দ্রুতই শেষ হয়ে যায়। ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জ্যোতির্ময়ী বলেন, ‘পর্দায় এক মেয়ের বাবা হলেও দেবদার সঙ্গে রোম্যান্স করতে আমার আপত্তি নেই! তবে বাস্তবে নয়, বাস্তবে দেবদাকে আমি প্রচণ্ড শ্রদ্ধা করি।’ তিনি তার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘দেবকে প্রথম দেখি ‘রঘু ডাকাত’ ছবির শুটিং শেষ করার পর। সে সময় দেবের মুখভর্তি দাড়ি-গোঁফ ছিল এবং ওজনও কিছুটা বেশি ছিল, যা দেখে একটু ভয় লেগেছিল। কিন্তু পরে যখন তিনি ছবির লুকে আসেন, তখন ‘পাগলু’ ছবির সেই দেবদার মতো দেখতে পেয়ে স্বস্তি পাই।‘ ‘প্রজাপতি ২’ ছবিটির দীর্ঘ শুটিং লন্ডনে হয়েছে। এই ছবিতে প্রবীণ অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীও রয়েছেন, যা জ্যোতির্ময়ীর প্রথম ছবির অভিজ্ঞতাকে আরও বিশেষ করে তুলেছে। জ্যোতির্ময়ী কুণ্ডু টেলিভিশন ধারাবাহিক ‘বঁধুয়া’-তে ‘পেখম’ চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পেয়েছিলেন। সেই জনপ্রিয়তার সূত্র ধরেই তিনি দেবের বিপরীতে বড়পর্দায় সুযোগ পান।
বলিউডে ধানুশের মুখে প্রেমের ব্যর্থতার ছাপ। অনেকে হয়তো সেটিকে দেখেন হাস্যকর বা সমালোচনার চোখে, কিন্তু অভিনেতা নিজেই সেটিকে নিয়েছেন গর্বের সঙ্গে। দিল্লিতে প্রচারণার সময় ধানুশ বললেন, “আমার চেহারা নাকি প্রেমে ব্যর্থ মানুষের মতো, আমি এটাকে ভালোই নিয়েছি। ‘তেরে ইশক মে’ ছবির প্রচারণা চলাকালে ভারতীয় গণমাধ্যমে এ বিষয়ে অভিনেতা জানান, এই মন্তব্য করেছিলেন পরিচালক আনন্দ এল রাই ও সহ–অভিনেত্রী কৃতি শ্যানন। ধানুশ হাসতে হাসতে বলেন, ‘হৃদয়ভাঙা মানুষের মতো মুখ, এটা শুনে আমি বরং খুশিই হয়েছি। ‘চরিত্রে আবেগের জায়গাটা ধরতে এটি নাকি নেচারালি আমাকে সাহায্য করবে।’ ছবিতে তিনি অভিনয় করছেন শঙ্কর নামে এক চরিত্রে। ধানুশের ভাষায়, শঙ্করকে ভালোবাসা সহজ হলেও চরিত্রটির ভেতরে অনেক জটিলতা আছে, যা দর্শক ছবি দেখলেই বুঝতে পারবেন। তবে চরিত্রটি ‘আগ্রাসী’ নয়। এটা শুধু গভীর আবেগ ও চ্যালেঞ্জে ভর্তি একটি ভূমিকা। এ বছর একাধিক ছবি ও নির্মাণে যুক্ত থাকলেও ‘তেরে ইশক মে’ ধানুশের বছরের শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত কাজ, যা ২৮ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে আসছে। এ সিনেমায় ধানুশের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন, কৃতি শ্যানন, প্রকাশ রাজ, সুশীল দাহিয়াসহ আরও অনেকে।
হেমন্তের সন্ধ্যাটা তখনো খুব সাধারণই ছিল। কিন্তু শুক্রবারের (২১ নভেম্বর) গোধূলিলগ্নে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হঠাৎ এক পশলা স্নিগ্ধ বাতাস বয়ে গেল। কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই সামনে এল একজোড়া হাতের ছবি, বরমাল্য আর লাজুক হাসি। জানা গেল, নির্মাতা-প্রযোজক রাফায়েল আহসান ও ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ মায়মুনা মম এখন একে অপরের। বলা নেই, কওয়া নেই—হঠাৎ করেই বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন এই জুটি। শুক্রবার সন্ধ্যায় ধানমণ্ডির ফোর সিজন রেস্টুরেন্টে যখন শহরের যান্ত্রিকতা ব্যস্ত, ঠিক তখনই একান্ত ঘরোয়া আয়োজনে চার হাত এক হলো তাঁদের। সহকর্মীদের শেয়ার করা ছবিতে দেখা মিলল নবদম্পতির ভালোবাসাময় মুহূর্ত, আর তাতেই ভেসে এল অজস্র শুভেচ্ছা বার্তা। কিন্তু প্রেমটা কীভাবে? নাকি পুরোটাই পারিবারিক? বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসতেই এমন প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছিল ভক্তদের মনে। সদ্য বিবাহিতা মম শোনালেন তাঁদের মিষ্টি প্রেমের গল্প। লাজুক হেসে বললেন, ‘আমাদের বিয়েটা আসলে কিঞ্চিৎ প্রেম আর কিঞ্চিৎ পারিবারিক।’ মম জানান, গল্পের শুরুটা হয়েছিল ভার্চুয়ালি। ফেসবুকে সাধারণ ‘হাই-হ্যালো’ দিয়েই পরিচয়ের সূত্রপাত। কিন্তু সেই পরিচয় পরিণয়ে রূপ নিতে খুব বেশি সময় নেয়নি। একদিন কফি শপে দেখা করলেন দুজনে। আর সেই এক দেখাতেই জীবনের মোড় ঘুরে গেল। কফির ধোঁয়া মিলিয়ে যাওয়ার আগেই রাফায়েল সরাসরি প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বসেন। মম বলেন, ‘ও যেদিন প্রপোজ করল, আমি সোজা বলেছিলাম—আমার বাসায় কথা বলো। ও দেরি করেনি। বাসায় কথা বলল, আর সেই কথা বলতে বলতেই আজ আমরা এক হলাম।’ মাত্র এক সপ্তাহের সিদ্ধান্তে সবকিছু হয়েছে। তাই খুব একটা ধুমধাম করার সুযোগ মেলেনি। তবে মম আশ্বস্ত করলেন, খুব শিগগিরই বড় পরিসরে রিসিপশনের আয়োজন করবেন, যেখানে প্রিয়জনদের নিয়ে আনন্দ করবেন মনভরে। নতুন জীবনে কে বেশি রোমান্টিক? এমন প্রশ্নে মমর কণ্ঠে মুগ্ধতা। বললেন, ‘বিয়ের পর থেকে যা দেখছি, মনে হচ্ছে ওই (রাফায়েল) বেশি রোমান্টিক।’ আপাতত হানিমুনের কোনো পরিকল্পনা নেই এই নবদম্পতির। হাতে জমে আছে একগুচ্ছ নাটকের কাজ। পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে মম জানালেন, আগে কাজ, তারপর ছুটি। তিনি বলেন, ‘হাতে অনেক কাজ। এগুলো শেষ করেই আমরা হানিমুনের প্ল্যান করব।’ মম নাটকের পরিচিত মুখ। এছাড়া সিনেমাতেও দেখা গেছে তাকে। অন্যদিকে রাফায়েল আহসান নয়-ছয় নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। যেটি ২০১৫ সালের শেষ দিকে মুক্তি পায়। নেটফ্লিক্সের এক্সট্রাকশন সিনেমার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতার চরম উত্তেজনায় এবার চোখ ধাঁধানো সাফল্যের গল্প লিখলেন বাংলাদেশের মিস ইউনিভার্স তানজিয়া জামান মিথিলা। শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলে অভিষেকের মঞ্চেই টপ থার্টিতে জায়গা করে নেওয়া এই অর্জন শুধু মিথিলার ব্যক্তিগত পরিশ্রমের ফলের পাশাপাশি বাংলাদেশের সৌন্দর্য, আত্মবিশ্বাস ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে নতুন সম্ভাবনার উজ্জ্বল বার্তা বহন করছে। বাংলাদেশি দর্শকরা মিথিলার এই সাফল্যে গর্বিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের বন্যা বইছে, যা প্রমাণ করে দেশের মানুষের জন্য এই অর্জন কতটা বড় অনুপ্রেরণা। মিথিলার আত্মবিশ্বাস, দক্ষতা এবং মাধুর্য আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায় আমাদের দেশের উপস্থিতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতার এই মঞ্চে বাংলাদেশি প্রতিনিধির আত্মপ্রকাশ যে শুধু ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, তা এবার পুরো বিশ্বের সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মিথিলার এই যাত্রা আগামীতে আরও বড় স্বপ্ন দেখার পথ খুলে দেবে নতুন প্রজন্মের জন্য। এদিকে পিপলস চয়েস ভোটে তৃতীয় স্থান অধিকার করলেও মিথিলা আবারও সুইমসুট রাউন্ডে অসাধারণ পারফরম্যান্স করে সেরা ৩০-এ জায়গা নিশ্চিত করেন। তবে পিপলস চয়েস ভোটে যদি তিনি শীর্ষে থাকতে পারতেন তাহলে সরাসরি সেরা ৩০ এ চলে যেতে পারতেন। এ ছাড়া ন্যাশনাল কস্টিউম ও গাউন রাউন্ডে তার উপস্থিতি দর্শকদের মন জয় করলেও সবচেয়ে বেশি প্রশংসা পেয়েছিলেন মিস ভেনেজুয়েলার অপ্রীতিকর আচরণকে গ্রেসফুলি সামলানোর ক্ষমতার জন্য। তানজিয়া জামান মিথিলা চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২৫’ খেতাব জিতেছেন। এ ছাড়া ২০২০ সালে একই খেতাব অর্জন করেছিলেন তিনি কিন্তু করোনার কারণে আন্তর্জাতিক পর্বে অংশ নিতে পারেননি। তবে এবার পুনরায় স্বপ্নের বিশ্বমঞ্চে ফিরে এসে সেরা ৩০ এ নিজের অবস্থান করে তিনি নতুন ইতিহাস গড়লেন।
ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ নায়ক শাকিব খানের নতুন চলচ্চিত্রে যুক্ত হচ্ছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। আসন্ন ঈদুল ফিতরে বড় পর্দায় নতুন চমক নিয়ে হাজির হতে যাচ্ছে শাকিব–ফারিণ জুটি। ছবিটির প্রযোজনা সংস্থা ক্রিয়েটিভ ল্যান্ড ফিল্মস তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে। প্রকাশিত ছবির ক্যাপশনে জানানো হয়েছে, তাসনিয়া ফারিণ ‘প্রিন্স’ ছবিতে যুক্ত হয়েছেন। সেখানে আরও বলা হয়, দশকের অন্যতম প্রতীক্ষিত বাংলা চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করবেন তিনি। এর মাধ্যমে ক্রিয়েটিভ ল্যান্ড ফিল্মসের সঙ্গে তার নতুন যাত্রা শুরু হলো। প্রকাশিত ছবিতে প্রযোজক শিরিন সুলতানার সঙ্গে ক্যামেরাবন্দি হয়ে দেখা যায় তাসনিয়া ফারিণকে। পরে নিজের সামাজিক মাধ্যমে পোস্টটি শেয়ার করে ফারিণ লিখেছেন, হৃদয় ভরে গেছে, আমি প্রিন্সের জন্য প্রস্তুত। তবে তিনি শাকিব খানের বিপরীতে প্রধান নায়িকা চরিত্রে থাকছেন কি না—এ বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি। আবু হায়াত মাহমুদের পরিচালনায় ‘প্রিন্স’–এর গল্প ও চিত্রনাট্য করেছেন মেজবাহ উদ্দিন সুমন। সঙ্গে সহযোগী হিসেবে ছিলেন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। সবকিছু ঠিক থাকলে ছবিটি আগামী ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাবে বলে জানানো হয়েছে।
আজ দেশের ছোট পর্দার অন্যতম জনপ্রিয় মুখ পারসা ইভানার জন্মদিন। অভিনয়ে প্রতিবারই নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করে দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন এই সুন্দরী। তবে জন্মদিনের উচ্ছ্বাসের মাঝেই এক চমকপ্রদ তথ্য দিলেন এই অভিনেত্রী। খোলাসা করলেন নিজের বিয়ে নিয়ে ভাবনার কথা। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) এই অভিনেত্রী তার জন্মদিন পালন করছেন পরিবারের মাঝেই। বিশেষ এই দিনটি নিয়ে পারসা বলেন, ‘আমার বাবা-মা বিদেশে বসবাস করেন। দেশে আমি, আমার ভাই আর খালামনি থাকি। জন্মদিন উপলক্ষে আমার ফ্রেন্ড বাসায় আসছে। আমার ভাইয়ের আর আমার একসঙ্গে জন্মদিন, তাই সবাই মিলে আসছে আরকি।’ কোনো পার্টির আয়োজন করা হয়েছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে ইভানা বলেন, ‘আমি কখনো বার্থডে পার্টি করি না। আর আজ তো দেশের অবস্থা এমনিতেও ভালো না। ভাবছিলাম, ডিনার করতে যাব। বাট ওটাও আসলে হবে না মনে হয়। আর সবসময় বার্থডে উপলক্ষে ড্রেস বানাই, এবার আমার টেইলার ড্রেসটা নষ্ট করে দিয়েছে। বার্থডে উপলক্ষে যে ড্রেসটা বানাইছে, ওটা আর পরতে পারব না।’ এদিকে দীর্ঘ ছয় বছর প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন পারসা ইভানা। কিন্তু পরে সেটা পরিণয়ে রূপ নেয়নি। প্রেম এবং বিয়ে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে এ বিষয়ে পারসা বলেন, আপাতত প্রেম-ট্রেমে নাই। আমি আসলে সরাসরি বিয়েটাই করব, যদি ভালো ছেলে পাই। আর যদি না পাই, তাহলে বিয়েও করব না। জীবনসঙ্গী তো ভালো হতে হবে, অনেস্ট হতে হবে। তাছাড়া বিয়ে করে লাভ আছে? উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ করেন পারসা। এরপর নির্মাতা কাজল আরেফিন রুমির পরিচালনায় নির্মিত ড্রামা সিরিজ ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ এ ইভা চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক পরিচিতি পান তিনি।
বাগদান সেরেছেন ভারতীয় টিভি ধারাবাহিকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুস্মিতা দে ও অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্য। এমন গুজনে মুখর হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। এতদিন কিছু না বললেও এবার বাগদান নিয়ে মুখ খুলেছেন সুস্মিতা দে। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এর আগে সম্পর্কের প্রশ্ন উঠলেই এড়িয়ে যাওয়ার পথ বেছে নেন সাহেব-সুস্মিতা। তবে যে কোনো অনুষ্ঠানে হাতে হাত রেখে চলতে দেখা গিয়েছে তাদের। কিছু দিন ধরে টলিপাড়ায় গুঞ্জন উড়ছে, ‘কথা’ ধারাবাহিক শেষ হওয়ার পরই বাগদান সেরেছেন এই যুগল। ভারতীয় সেই গণমাধ্যমকে এক ঘনিষ্ঠ সূত্র বলেন, ‘এ ছুটিতেই সাহেব-সুস্মিতার ‘পাকাদেখা’ হয়েছে। এরই মাঝে আংটিবদলও সেরেছেন তারা।’ পরে বাগদানের খবরটি সত্যি কি না এ বিষয়ে অভিনেত্রী কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘সবাই কি পাগল হয়ে গিয়েছে! সবটাই ভুল খবর। দুর্গাপূজার সময়ের একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলাম; সেটা দেখেই হয়তো সবাই এসব ভেবেছেন।’ এদিকে নতুন ধারাবাহিকে অভিনয় শুরু করছেন কি না এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উত্তরে সুস্মিতা বলেন, ‘আগের ধারাবাহিকের রেশ কাটার আগেই কী করে নতুন ধারাবাহিকের শুটিং শুরু করব? এটা কী কেউ করে?’ পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে সুস্মিতা দে বলেন, ‘আমি এখন ছুটি উপভোগ করছি। ঘুমাচ্ছি, প্রচুর সিনেমা দেখছি। এদিক-সেদিক বেড়াতে যাচ্ছি। এখনই নতুন ধারাবাহিক শুরু করার কোনো পরিকল্পনা নেই।’ উল্লেখ্য, সুস্মিতা দে এর আগে অনির্বাণ রায়ের সঙ্গে বাগদান সেরেছিলেন তিনি। জি বাংলার রিয়েলিটি শো ‘ঘরে ঘরে জি বাংলা’ অনুষ্ঠানের মঞ্চে অনির্বাণকে হবু স্বামী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন এই অভিনেত্রী। কয়েক বছরের মধ্যে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পরিকল্পনাও করেছিলেন। তবে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে অনির্বাণ জানান, ভেঙে গেছে তাদের সম্পর্ক। সুস্মিতা দে অনেক জনপ্রিয় ধারাবাহিক এ অভিনয় করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে—‘কথা’, ‘পঞ্চমী’, ‘বউমা একঘর’, ‘অপরাজিত অপু’সহ আরও অনেক ধারাবাহিক।
কাজের ব্যস্ততা ভুলে, সমুদ্রের নীল জলে হারিয়ে যাচ্ছেন আলোচিত অভিনেত্রী ও মডেল সাদিয়া জাহান প্রভা। সম্প্রতি নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে তার এক ভিন্ন রূপ। সুইমস্যুট স্কুবা ডাইভিং করতে করতে সমুদ্রের তলদেশে ভেসে বেড়াচ্ছেন প্রভা। কাজের আলোছায়ার মাঝে তার এই সমুদ্র বিলাস, ভক্তদের জন্য নতুন রোমাঞ্চের মুহূর্ত বয়ে এনেছে। বর্তমানে নাটক ও ওয়েব কনটেন্টে নিয়মিত কাজ করছেন প্রভা। কাজের খবরের পাশাপাশি ব্যক্তিগত নানা বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমেও সরব এই অভিনেত্রী। কোথাও ঘুরতে গেলে সেই মুহূর্তগুলো তিনি ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি প্রভার সোশ্যাল হ্যান্ডেল ইন্সটাগ্রামে দেখা যায়, তিনি এখন সমুদ্র বিলাসে মগ্ন। সদ্যই স্কুবা ডাইভিংয়ের ছবি দিয়েছেন তিনি; সুইমস্যুট পরে সমুদ্রের তলদেশে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় তাকে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আবারও একগুচ্ছ নতুন ছবি প্রকাশ করেছেন, যা ভক্তদের নজর কাড়ে। ছবিতে দেখা যায়, হালকা নীল রঙের একটি পোশাকে বিলাসবহুল নৌকায় বসে আছেন তিনি। ঐতিহ্যবাহী কাঠের নৌকাটি ফুল এবং ফলের ঝুড়ি দিয়ে সাজানো। চারপাশের নীল সমুদ্র এবং খাড়া পাহাড়ের দৃশ্য ছবিগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে তোলা ছবিগুলোতে প্রভাকে বেশ হাস্যোজ্জ্বল দেখায়। তবে ছবির ক্যাপশনে প্রভা তার সমালোচকদের উদ্দেশে একটি ব্যঙ্গাত্মক বার্তা দিয়েছেন। লিখেছেন, ‘আমি দেখছি আমার সমালোচকরা অতিরিক্ত কাজ করছে। আমার সাক্ষাৎকার, আমার ভ্রমণ, আমার হাসি- সবকিছুই তারা অনুসরণ করছে। চিন্তা করো না, প্রভার এই শো-তে তোমাদের বিনামূল্যে সাবস্ক্রিপশন এখনো চালু আছে! নাটক উপভোগ করো।’ যদিও প্রভা নির্দিষ্ট করে জানাননি তিনি কোথায় অবস্থান করছেন, তবে ছবির আবহ এবং নৌকার ধরণ (লং-টেইল বোট) দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, তিনি থাইল্যান্ডের বিখ্যাত ক্রাবি বা এর কাছাকাছি কোনো দ্বীপে অবসর যাপন করছেন। প্রভার এই ছবিগুলোতে ভক্ত-অনুরাগীরা ভালোবাসা প্রকাশ করেন, অনেকেই তার ভ্রমণের জন্য শুভকামনা জানান। কেউ কেউ তার সৌন্দর্যের প্রশংসাও করেছেন। একজন মন্তব্য করেছেন, ‘আপনাকে অসাধারণ লাগছে,’ আরেকজন লিখেছেন, ‘প্রকৃতির মতোই সুন্দর।’ প্রভা বর্তমানে নাটক ও ওয়েব কনটেন্টে নিয়মিত কাজ করছেন। পাশাপাশি তিনি নাম লিখিয়েছেন সিনেমাতেও। সম্প্রতি তিনি সরকারি অনুদানের দুটি চলচ্চিত্রের কাজ শেষ করেছেন।
সৌন্দর্য, বুদ্ধিমত্তা আর আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হয়ে বিশ্বমঞ্চে আবারও উড়ছে লাল-সবুজের পতাকা। বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সুন্দরী প্রতিযোগিতা ‘মিস ইউনিভার্স’-এর ৭৪তম আসর এবার আরও বিশেষ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের জন্য। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে থাইল্যান্ডের আলো ঝলমলে মঞ্চে পা রেখেছেন মডেল ও অভিনেত্রী তানজিয়া জামান মিথিলা, যিনি গত সেপ্টেম্বরে জিতেছিলেন ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২৫’-এর মুকুট। এখন তিনি শুধু একজন প্রতিযোগী নন— তিনি বাংলাদেশের গর্ব, যিনি বিশ্বকে দেখাতে যাচ্ছেন বাঙালি নারীর অনন্য শক্তি ও সৌন্দর্য। বর্তমানে সেখানে চলছে প্রস্তুতি পর্ব, গ্রুমিং সেশন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভোটিং কার্যক্রম। ১২১টি দেশের সুন্দরীদের সঙ্গে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন বাংলাদেশের এই মডেল। মিস ইউনিভার্সের ভোটিং পর্বে ৭৩ হাজার ভোট নিয়ে বিশ্বমঞ্চে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছেন মিথিলা। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি কাঁদছি, সত্যি বলতে আমি জানি না কী বলব। আপনাদের অমূল্য ৭৩,০০০ ভোটে আমরা এখন বিশ্বের ৫ নম্বরে। সবাইকে কীভাবে ধন্যবাদ জানাব, বুঝতে পারছি না।’ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি আরও লেখেন, ‘আমি তোমাদের সবাইকে অনেক ভালোবাসি। বাংলাদেশে মুকুটটা আনার জন্য এবার আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য।’ প্রসঙ্গত, আগামী ২১ নভেম্বর থাইল্যান্ডের কেন্দ্রীয় শহর পাক ক্রেটে অনুষ্ঠিত হবে মিস ইউনিভার্সের ৭৪তম আসরের জমকালো গ্র্যান্ড ফিনালে। গত বছরের বিজয়ী ডেনমার্কের ভিক্টোরিয়া কিয়ের থিলভিগের উত্তরসূরি কে হবেন, তা জানতে আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। এর আগে বাংলাদেশ থেকে ২০১৯ সালে শিরিন শিলা এবং ২০২৪ সালে আনিকা আলম মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ হিসেবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তবে মিথিলার এই অর্জন দেশের মিস ইউনিভার্স ইতিহাসে নতুন এক মাইলফলক স্থাপন করল।
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়া নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে শুরু থেকেই দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তিনি বেশ সরব, প্রায়ই নিজের ভালো লাগার মুহূর্তগুলো ভক্ত-অনুরাগীদের সঙ্গে শেয়ার করেন। এবার হলুদের ছোঁয়ায় নিজেকে নতুন করে মেলে ধরলেন এ অভিনেত্রী। সম্প্রতি স্পর্শিয়া তার সোশ্যাল মিডিয়ায় একগুচ্ছ ছবি ভক্তদের মাঝে শেয়ার করেছেন। যেখানে তাকে হলুদ শাড়িতে, খোলা চুলে ক্যামেরাবন্দি হতে দেখা যায়। তার মিষ্টি হাসি, চোখের চাহনি আর আবেদনময়ী লুক ভক্তদের মনে রীতিমতো ঝড় তুলেছে। ছবিগুলো প্রকাশের পর থেকেই কমেন্ট বক্সে নেটিজেনরা স্পর্শিয়ার রূপের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। একজন ভক্ত লিখেছেন, ‘চোখ ফেরানো দায়, এত সুন্দর যেন রূপকথার চরিত্র।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘ছোটবেলার ক্রাশ এখনো আগের মতো আছে।’ প্রসঙ্গত, অর্চিতা স্পর্শিয়ার অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল ‘প্যারাসুট’ তেলের একটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। ‘বন্ধু তিন দিন’ শিরোনামের সেই বিজ্ঞাপনটি দর্শকমহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। মডেলিং ও টিভি বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি নাটকে অভিনয় করেও তিনি বেশ সুনাম অর্জন করেন। ২০১৩ সালে এয়ারটেল পরিচালিত ‘ইম্পসিবল ৫’-এ অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি অভিনেত্রী হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
হলিউড থেকে শুরু করে বিশ্বের মিউজিক অঙ্গন সবখানেই শোনা যায় তার কণ্ঠস্বর। যার জাদুর কণ্ঠস্বরে বুঁদ হয়ে থাকে কোটি কোটি শ্রোতা। তিনি হলেন জনপ্রিয় ব্রিটিশ সংগীতশিল্পী বিলি আইলিশ। মাত্র ২৩ বছর বয়সী তরুণ গায়িকা বিলি আইলিশ এবার এক নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছেন, তার গাওয়া হিট গান ‘ওয়াইল্ড ফ্লাওয়ার’ তাকে এনে দিয়েছে দুটি গ্র্যামি মনোনয়ন। ২০২৪ সালে প্রকাশিত তার তৃতীয় স্টুডিও অ্যালবাম ‘হিট মি হার্ড অ্যান্ড সফট’ থেকে এই গানটি এবার ৬৮তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডে ‘সং অব দ্য ইয়ার’ ও ‘রেকর্ড অব দ্য ইয়ার’ ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা করতে চলেছে। গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) মনোনয়ন ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, বিলি নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেল ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট শেয়ার করে ভক্তদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ওয়াইল্ড ফ্লাওয়ারের জন্য সং অব দ্য ইয়ার এবং রেকর্ড অব দ্য ইয়ার মনোনীত হয়েছি, আমি কৃতজ্ঞ। প্রকাশিত সেই পোস্টে, একটি নীলাভ মঞ্চের ছবিতে তাকে দর্শককে স্বাগত জানাতে দেখা যায়। আর তার অনুরাগীরা মন্তব্যের ঘরে তাকে শুভেচ্ছা এবং আসন্ন ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এর অনুষ্ঠানেও এই মর্যাদাবান পুরস্কার জয়ের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন। ‘ওয়াইল্ড ফ্লাওয়ার’ গানটি ২৩ বছর বয়সী বিলি আইলিশ নিজেই লিখেছেন তার বড় ভাই ফিনিয়াস ও’কনেল-এর সঙ্গে। ফোক-পপ শৈলীর এই গানটি দোষবোধ, উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা এবং অস্বীকারের অনুভূতিকে কেন্দ্র করে তৈরি, এবং স্পটিফাইতে এই গানটি ১.৬৪ বিলিয়ন স্ট্রিম পেয়েছে। সব প্ল্যাটফর্ম মিলিয়ে এই গানের স্ট্রিমের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২.৩ বিলিয়ন। বিলির এই সাফল্য প্রমাণ করছে, কেবল প্রতিভা নয়, বরং তার অনুভূতি ও আবেগই বিশ্বব্যাপী শ্রোতাদের মন জয় করছে।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা বিদ্যা সিনহা মিমের জন্মদিন আজ। বরাবরের মতো এবারও পরিবারের সঙ্গে দিনটি উদযাপন করছেন তিনি। গতকাল রাত থেকেই রাজধানীর বসুন্ধরায় নিজ অ্যাপার্টমেন্টে শুরু হয়েছে জন্মদিনের উদযাপন। আজ দিনভর সেই আনন্দে কাটবে তার বিশেষ দিনটি। মিম জানিয়েছেন, এবারের জন্মদিন সম্পূর্ণ পারিবারিক পরিসরেই কাটাতে চান তিনি—কোনো টেলিভিশন চ্যানেল বা পত্রিকা অফিসে যাওয়ার পরিকল্পনা নেই তার। তবে যেহেতু তিনি ‘রিমার্ক (হারলেন)’-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর, তাই প্রতিষ্ঠানের বিশেষ আমন্ত্রণে তিনি জন্মদিনের কোনো একসময়ে সেখানে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনন্দঘন মুহূর্ত ভাগ করে নেবেন। জন্মদিন প্রসঙ্গে মিম বলেন, ‘প্রতি বছরই জন্মদিন নানান কারণে বিশেষ হয়ে ওঠে। এবার কীভাবে বিশেষ হবে, তা এখনো জানি না। তবে আগের মতোই পরিবারের সঙ্গে থেকে উদযাপন করব। বাবা-মা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ। আর আমার স্বামী সনি তো সবসময় চেষ্টা করে দিনটিকে বিশেষ করে তুলতে। আমি সবার ভালোবাসা আর দোয়ার মধ্যেই বাঁচতে চাই।’ মিম আরও জানান, শিগগির ভক্তদের জন্য একটি সুখবর আসছে। জন্মদিনের রেশ থাকতে থাকতেই সবাইকে সেই খবর জানাব। শুধু অভিনয় নয়, মিম সমাজসচেতনতামূলক কাজেও নিয়মিত যুক্ত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করছেন। এ ছাড়া সেইলর, ওয়ালটন, বিকাশ, বাটা, বার্জার পেইন্টস, হারলেন কসমেটিকস, ইমামি সেভেন ওয়েলস, ক্ল্যাসিক্যাল হোম টেক্স, জেসিএক্স ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড ও লাক্সের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।