দীর্ঘ সময় অফিসে বসে থাকা, একঘেয়ে কাজের চাপ ও কর্মজীবনে আগ্রহ হারানোর কারণে অনেক পেশাজীবী এখন ভুগছেন ‘বোরআউট সিনড্রোমে’। মানসিক ক্লান্তি, উদ্যমহীনতা ও অনুপ্রেরণার অভাব এই সমস্যার মূল বৈশিষ্ট্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি আধুনিক কর্মজীবনের এক নীরব সংকট, যা উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দিচ্ছে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে।
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘বোরআউট’ মূলত তখনই দেখা দেয় যখন কর্মীরা নিজেদের কাজের সঙ্গে মানসিকভাবে সংযুক্ত থাকতে পারেন না। তারা কাজের প্রতি আগ্রহ হারান, দায়িত্বকে যান্ত্রিকভাবে পালন করেন এবং ধীরে ধীরে মানসিক চাপ ও হতাশায় ভোগেন। অনেকের ক্ষেত্রে ঘুমের সমস্যা, উদ্বেগ, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ও কাজ ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতাও দেখা যায়।
করোনার পরবর্তী সময়ে রিমোট ও হাইব্রিড কাজের ধরণ বাড়ার পর এই প্রবণতা আরও তীব্র হয়েছে। অনেক কর্মী নির্দিষ্ট দায়িত্বের বাইরে নতুন কিছু করার সুযোগ না পেয়ে একঘেয়েমিতে ভুগছেন। তাছাড়া অনেকে অফিসের পরিবেশে সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ না পেয়ে মানসিকভাবে দূরে সরে যাচ্ছেন।
একজন সংগঠন মনোবিজ্ঞানী জানান, “অতিরিক্ত কাজের চাপ যেমন বার্নআউট তৈরি করে, ঠিক তেমনই পর্যাপ্ত কাজের অভাব বা অর্থহীন দায়িত্ব ‘বোরআউট’ ঘটায়। দুটোই মানসিকভাবে ক্ষতিকর।”
প্রতিকার কী?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, অফিসে মানসিক উদ্দীপনা ধরে রাখতে প্রয়োজন নতুন চ্যালেঞ্জ ও শেখার সুযোগ। কর্মীদের উচিত নিজের পছন্দের কাজে যুক্ত থাকা এবং কাজের লক্ষ্য স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা। পাশাপাশি, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষেরও দায়িত্ব কর্মীদের মতামত শোনা ও তাদের দক্ষতা অনুযায়ী দায়িত্ব বণ্টন করা।
মানসিক স্বাস্থ্যের চর্চা যেমন মেডিটেশন, নিয়মিত ব্যায়াম, বিশ্রাম নেওয়া এবং পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোও ‘বোরআউট সিনড্রোম’ প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এই সিনড্রোম অবহেলা করলে তা দীর্ঘমেয়াদে হতাশা ও পেশাগত অযোগ্যতায় রূপ নিতে পারে। তাই প্রাথমিক পর্যায়েই সচেতনতা ও মানসিক সহায়তা নেওয়া জরুরি।
অফিসে মনোবল ও আগ্রহ ধরে রাখতে ইতিবাচক কাজের পরিবেশ, স্বাধীনতা এবং পারস্পরিক যোগাযোগই হতে পারে ‘বোরআউট সিনড্রোম’ মোকাবিলার মূল চাবিকাঠি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের প্রায় সব ক্ষেত্রে অরাজকতা ও দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির লাগাম টেনে ধরা এখন সময়ের দাবি; তা না পারলে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের চলমান সংকট—দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি মোকাবিলায় সক্ষমতা বিএনপিরই বেশি। এই সংকট কাটানো না গেলে নারী উন্নয়ন, কৃষি, স্বাস্থ্যসহ যেকোনো খাতের পরিকল্পনাই বাধাগ্রস্ত হবে। তারেক রহমান অভিযোগ করে বলেন, কিছু ব্যক্তি স্বৈরশাসকের মতো বিএনপির সমালোচনা করছেন। অথচ বিএনপি সরকারের আমলে তাদের দুজন মন্ত্রী ছিলেন এবং মন্ত্রিসভায় থেকেই তারা দেখেছেন—দুর্নীতির বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থান ছিল অটল। বিএনপির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়, তার কোনোটি আদালতে প্রমাণিত হয়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। জাতীয় সরকার গঠনের প্রশ্নে তিনি বলেন, স্বৈরাচার পতনের দিন দলের মহাসচিব জানতে চেয়েছিলেন জাতীয় সরকার করা হবে কি না। তখনই সিদ্ধান্ত হয়েছিল—জনগণের কাছেই যাওয়া হবে; কারণ জনগণই বিএনপির শক্তির উৎস। দু-একটি রাজনৈতিক দলকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, যারা দাবি করছে যে তারা বিএনপিকে দেখেনি তাদের কার্যক্রম জাতি ১৯৭১ সালেই দেখেছে। হত্যাকাণ্ড, লুণ্ঠন ও নির্যাতনের ইতিহাস মানুষ ভুলে যায়নি; তাই নতুন করে তাদের দেখার প্রয়োজন নেই। তিনি আরও বলেন, দেশে সংকট দেখা দিলেই বিএনপি পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কাজ করেছে। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত দেশকে উন্নত ও স্বনির্ভর করে গড়তে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তারেক রহমান জানান, বিএনপি দেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা বা আমেরিকার অনুলিপি বানাতে চায় না; তারা চায় স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। জনগণ ও গণতন্ত্রই দেশের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে পারে বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন।
আগামী শিক্ষাবর্ষের বই ছাপা নিয়ে আবারও উঠেছে নিম্নমানের কাগজ ব্যবহারের অভিযোগ। বিভিন্ন প্রেসে রিসাইকলড ও মানহীন কাগজ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। নির্ধারিত জিএসএম ও ব্রাইটনেস না মানলে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নিতে গেলে বাধার মুখে পড়ছেন এনসিটিবি ও ইন্সপেকশন এজেন্টের কর্মকর্তারা। অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছে। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রায় ৩০ কোটি বই মুদ্রণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিকের ৯ কোটি এবং মাধ্যমিক ও ইবতেদায়ির ২১ কোটি বই ছাপার বড় অংশ পেয়েছে চারটি প্রেস—অগ্রণী, কর্ণফুলী, কচুয়া ও আনোয়ারা। এসব প্রেস মিলে তিন কোটিরও বেশি বই ছাপার কাজ করছে, যার আর্থিক মাপ ২০০ কোটি টাকার বেশি। তবে এর মধ্যে দুটি প্রেস ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করে শেষ মুহূর্তে চুক্তি করে, যার কারণে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত দেরিতে পৌঁছাতে পারে। মান নির্ধারণ অনুযায়ী প্রাথমিক বইয়ে ৮০ জিএসএম ও ৮৫ ব্রাইটনেস, আর মাধ্যমিক বইয়ে ৭০ জিএসএম ও ৮৫ ব্রাইটনেস মানতে হবে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, কিছু প্রেস ৮০ জিএসএমের জায়গায় ৬৫–৭০ এবং ৭০ জিএসএমের জায়গায় ৬০–৬৩ জিএসএম কাগজ ব্যবহার করছে। বাজারে মানসম্মত কাগজের দাম যেখানে টনপ্রতি প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, সেখানে কিছু প্রেস ৯০ হাজার টাকার রিসাইকলড কাগজ ব্যবহার করছে। এমনকি ইন্সপেকশন এড়াতে ভালো কাগজ আলাদা করে রাখা হয় এবং স্যাম্পল নেওয়ার সময় কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলে। এক পর্যায়ে এনসিটিবির এক কর্মকর্তার ব্যাগও কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় পাঠানো বইয়ের কয়েকটি লটে নিম্নমানের কাগজ পাওয়া গেছে এবং কিছু এলাকা তা ফেরতও পাঠিয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে, এনসিটিবির ভেতরও কিছু ব্যক্তি নিম্নমানের বই ছাপা সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগসাজশ করে ভালো রিপোর্ট দিতে চাপ সৃষ্টি করছেন। জিএসএম কম হলে বই দ্রুত ছিঁড়ে যায়, আর ব্রাইটনেস কম হলে পাঠে চোখে চাপ পড়ে এই দুই কারণে বই বছরের শুরুতেই নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। গত বছরও কিছু প্রেস নিম্নমানের বই সরবরাহ করেছিল, তবে তদন্ত মাঝপথে থেমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারও কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ২০২৬ সালের বই বিতরণে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে।
পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা বা গতি কমে গেলে, কিংবা কখনো বীর্যে কোনো শুক্রাণুই শনাক্ত না হলে এবং স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নিয়মিত সহবাস করার পরও এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হলে ওই অবস্থাকে পুরুষ বন্ধ্যত্ব বা মেল ইনফার্টিলিটি বলা হয়। সব বন্ধ্যত্ব-দম্পতির ক্ষেত্রে ৩০-৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষজনিত কারণই দায়ী। সব বন্ধ্যত্ব-দম্পতির ক্ষেত্রে ৩০-৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষজনিত কারণই দায়ী কারণ ● অতিরিক্ত ধূমপান করা। ● অ্যালকোহল, নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করা। ● কম সক্রিয় জীবনযাপন। ● ওজনাধিক্য। ● অতিরিক্ত স্ট্রেস। ● হরমোনজনিত সমস্যা (টেস্টোস্টেরন, থাইরয়েড, প্রোলাকটিন)। ● জিনগত কারণ। ● সংক্রমণ যেমন ক্ল্যামাইডিয়া, গনোরিয়া ইত্যাদি। ● শুক্রনালির ব্লকেজ। ● অণ্ডকোষের টিউমার, ভেরিকোসিলি, মামস অরকাইটিস। ● দীর্ঘ সময় গরম আবহাওয়ায় কাজ করা। কীভাবে শনাক্ত করা হয় বীর্য পরীক্ষার মাধ্যমে পুরুষ বন্ধ্যত্ব শনাক্ত করা সম্ভব। এর নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। তিন দিন সহবাস বন্ধ রেখে বীর্য পরীক্ষা করতে হবে। একটি বীর্য পরীক্ষার রিপোর্ট যদি খারাপ আসে তাহলে এক মাস পরে আরেকটি বীর্য পরীক্ষা করতে হবে। সেটিও যদি খারাপ আসে তাহলে অণ্ডকোষের আলট্রাসনোগ্রাফি ও হরমোন পরীক্ষা করতে হবে। যা করতে হবে ওজন কমানো, প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটাচলা করা, সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া, তৈলাক্ত ও চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা। স্ট্রেস কমানো এবং রাতে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা। ধূমপান, মদ্যপান পরিহার করা। শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতির উন্নতির জন্য কিছু মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট দেওয়া হয়। যেমন লেবোকারনিটিন, ভিটামিন সি, ই, ডি, বি কমপ্লেক্স, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। তিন মাস পর্যবেক্ষণের পর যদি শুক্রাণুর সংখ্যার উন্নতি না হয়, তাহলে ইন্ট্রাইউটেরাইন ইনসেমিনেশন বা আইভিএফ/ইকসি করা যেতে পারে। ভেরিকোসিলি (অণ্ডকোষের শিরা ফুলে যাওয়া) বা শুক্রনালি বন্ধ। এ-জাতীয় সমস্যা থাকলে অনেক ক্ষেত্রে সার্জারি লাগতে পারে। হরমোনজনিত সমস্যা থাকলে এর চিকিৎসা করতে হবে। যদি শুক্রাণুর সংখ্যা বা গতির মাঝারি ধরনের সমস্যা থাকে, তবে সাধারণত আইইউআই এবং যদি শুক্রাণুর সংখ্যা বা গতির অনেক বেশি সমস্যা থাকে তবে ইকসি করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে বীর্যে কোনো শুক্রাণুই পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পারমিয়া বলা হয়, সে ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে শুক্রাণু নিয়ে ইকসি করা হয়।