প্রবাসী

ছাত্র জীবনে টাইম ম্যানেজমেন্ট: সফলতার চাবিকাঠি

Unknown জুন ২৬, ২০২৫ 0

সময় হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ, বিশেষ করে ছাত্রজীবনে। পড়াশোনা, বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, এবং নিজের শখের কাজ—সবকিছুর জন্যই সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা খুব জরুরি। কিন্তু এই ব্যস্ত জীবনের মাঝে অনেক সময় আমরা অনুভব করি, সময় যেন ঠিক মতো আমাদের পাশে থাকে না, সবকিছু করার জন্য সময় কমে যায়।

ছাত্রজীবন মানেই চ্যালেঞ্জের সময়। পরীক্ষা, প্রজেক্ট, অ্যাসাইনমেন্ট, ক্লাসের বাইরে নানা কার্যকলাপ—এসবের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে না পারলে সময় যেন হাতছাড়া হয়ে যায়। ফলে অনেকেই পড়াশোনায় মনোযোগ হারায়, চাপ বেড়ে যায়, আর স্বপ্নের সফলতা দূরে সরে যায়।

টাইম ম্যানেজমেন্ট বা সময় পরিচালনার গুরুত্ব এখানেই। যদি আমরা আমাদের প্রতিদিনের কাজগুলো পরিকল্পিতভাবে করতে না শিখি, তবে সময়ের অপচয় হয়ে পড়বে, আর এর ফলে হতাশা, দেরি, এবং শেষ পর্যন্ত ফলাফল খারাপ হতে পারে।

এই ব্লগে আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি সহজ কিছু টিপস ও কৌশল যা তোমার সময়কে আরও সুশৃঙ্খল করতে সাহায্য করবে। আমরা আলোচনা করবো কীভাবে ছোট ছোট পরিকল্পনা দিয়ে মনোযোগ বাড়ানো যায়, সময় বাঁচানো যায়, এবং পড়াশোনায় সফল হওয়া যায়।

তাই চল, আজ থেকেই শেখা শুরু করি—কিভাবে তোমার ছাত্রজীবনকে আরো ফলপ্রসূ ও আনন্দময় করা যায় সঠিক টাইম ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে।

 

২. টাইম ম্যানেজমেন্ট কি?

 

টাইম ম্যানেজমেন্ট মানে হলো, আমাদের হাতে থাকা সময়কে এমনভাবে পরিকল্পনা ও ভাগ করা, যেন আমরা প্রয়োজনীয় কাজগুলো সময়মতো শেষ করতে পারি এবং অপ্রয়োজনীয় সময় অপচয় এড়িয়ে যেতে পারি।

সহজভাবে বললে—"ঠিক সময়ে ঠিক কাজটি করা"—এটাই সময় ব্যবস্থাপনার মূলমন্ত্র।

 

🎯 কেন এটা ছাত্রদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ?

 

ছাত্রজীবনেই ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়ে ওঠে। এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ—

 

  • পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হয়

  • নিয়মিত ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রজেক্ট থাকে

  • পাশাপাশি ঘুম, বিশ্রাম, পরিবার, বন্ধুবান্ধব, নিজের শখের দিকেও নজর দিতে হয়

 

যদি সময় ঠিকভাবে ম্যানেজ না করা যায়—

 

  • পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া

  • মানসিক চাপ বেড়ে যাওয়া

  • রাত জেগে পড়া, ঘুম কম হওয়া

  • আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলা

 

👉 অথচ সঠিক পরিকল্পনায় প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টাই যথেষ্ট—শুধু জানতে হবে কোন সময় কোন কাজটা সবচেয়ে দরকারি।

 

🗂️ সময়ের পরিকল্পনা ও প্রাধান্য নির্ধারণের গুরুত্ব

 

সব কাজ একসাথে করা যায় না। তাই প্রয়োজন কাজগুলোকে প্রাধান্য (Priority) অনুযায়ী সাজানো।
এখানে সময় ব্যবস্থাপনার দুটি মূল বিষয়:

 

  1. প্ল্যানিং (Planning):

    • প্রতিদিন বা সাপ্তাহিকভাবে নিজের সময়ের একটা পরিকল্পনা করা

    • কখন পড়বে, কখন বিশ্রাম নেবে, সেটার একটা রুটিন তৈরি করা

 

  1. প্রায়োরিটাইজিং (Prioritizing):

    • কোন কাজ এখন করতেই হবে?

    • কোনটা একটু দেরি হলেও চলবে?

    • কোনটা একেবারে বাদ দেওয়া যায়?

 

🎯 উদাহরণ:


পরের দিন পরীক্ষা, আর তোমার কাছে কোনো গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ আসলো—এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করাটা কি জরুরি, নাকি রিভিশন নেওয়া?

 

👉 এই বেছে নেওয়ার বুদ্ধিমত্তাটাই সময় ব্যবস্থাপনার আসল শক্তি।


টাইম ম্যানেজমেন্ট মানে নিজের সময়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ। আর ছাত্রজীবনে যদি এই স্কিলটা শিখে ফেলা যায়, তাহলে পরবর্তী জীবনেও সফলতার পথ সহজ হয়ে যায়।

 

৩. প্রধান সমস্যা: সময়ের অপচয় কেন হয়?

 

ছাত্রজীবনে সময়ের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো অসচেতনতা—আমরা বুঝতেই পারি না কখন সময়টা পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। অথচ একেকটা দিন, সপ্তাহ, মাস পেরিয়ে গেলে বোঝা যায়, আসলে কিছুই ঠিকঠাক হয়নি। তাহলে কী কারণে সময় অপচয় হয়?

 

💤 ১. টালবাহানা বা Procrastination

 

“আচ্ছা, পরে করব…” – এই কথাটাই সময় নষ্টের প্রথম ধাপ।
শুরুটা ঠিক সময়ে না করতে পারলে কাজ জমে যায়, চাপ বাড়ে, আর তখন আর কাজের প্রতি আগ্রহও থাকে না।

 

👉 পরীক্ষার আগের রাতে হঠাৎ সব পড়া মনে পড়া—এই দৃশ্য কি খুব চেনা?

 

📱 ২. অতিরিক্ত মোবাইল/সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি

Facebook, YouTube, Instagram, TikTok — একটু রিল দেখতে গিয়ে ঘণ্টা উধাও।
বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী “বিরতির নাম করে” সোশ্যাল মিডিয়ায় যায়, কিন্তু সেখান থেকে ফেরা আর হয় না।

👉 গবেষণায় দেখা গেছে, একজন সাধারণ তরুণ প্রতিদিন গড়ে ৩–৪ ঘণ্টা মোবাইলে কাটায়—যেটা সময়ের বিরাট অপচয়।

 

🧭 ৩. অস্পষ্ট লক্ষ্য ও পরিকল্পনার অভাব

 

“আজকে কী করব?”—এই প্রশ্নের উত্তর না থাকলে দিনটা কোথায় যায়, বোঝাই যায় না।
যাদের পড়াশোনার বা জীবনের কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য নেই, তাদের সময় নষ্ট হওয়াটা খুব সহজ।

👉 যেদিনের প্ল্যান থাকে না, সেদিন কাজে কিছুই হয় না—শুধু সময় পার হয়ে যায়।

 

😵 ৪. একসাথে অনেক কিছু করার চেষ্টা (Multitasking)

 

একদিকে পড়া, একদিকে চ্যাট, আবার মাঝে YouTube খুলে রাখা—সব মিলিয়ে কিছুই ঠিকঠাক হয় না।
👉 বারবার মনোযোগ বদলালে কোন কাজই ঠিকমতো শেষ হয় না, আর সময় শুধু ঘুরতেই থাকে।

 

⏰ ৫. বিশ্রামের সময়েও দুশ্চিন্তা বা গিল্টি ফিলিং

 

অনেক সময় ছাত্ররা বিশ্রাম নিচ্ছে, কিন্তু মনে শান্তি নেই—“পড়তে বসিনি”, “সময় নষ্ট করছি” এসব চিন্তায় ঘুরপাক খায়।
👉 এতে বিশ্রাম হয় না, আবার কাজেও ফোকাস আসে না।

 

✅ সমাধান কোথায়?

 

  • সমস্যার ধরন বুঝলেই সমাধান সহজ হয়

  • সময় কোথায় নষ্ট হচ্ছে, সেটা লিখে রাখলে (time tracker দিয়ে) সহজে ধরা পড়ে

  • মূল চ্যালেঞ্জটা খুঁজে বের করে ধাপে ধাপে ঠিক করতে হবে


সময় অপচয়ের মূল কারণগুলো খুব সাধারণ, কিন্তু ভয়ংকর। এগুলো যদি আমরা চিনে নিতে পারি, তাহলে সমাধান খুঁজে ফেলা অনেক সহজ।

 

৪. সফল টাইম ম্যানেজমেন্টের কৌশলসমূহ

 

সময় তো সবার কাছেই সমান—দিনে ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু কেউ সেই ২৪ ঘণ্টায় অসাধারণ কিছু করে, আবার কেউ কিছু না করেই দিনটা শেষ করে ফেলে। পার্থক্যটা কোথায়?
👉 টাইম ম্যানেজমেন্টে।

নিচে কিছু প্রমাণিত এবং বাস্তবসম্মত কৌশল দেওয়া হলো, যেগুলো ছাত্রজীবনে সফল সময় ব্যবস্থার চাবিকাঠি হতে পারে:

 

📋 ১. ডেইলি টু-ডু লিস্ট তৈরি করা

 

প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে (বা আগের রাতে) একটা ছোট লিস্ট বানাও:

  • আজ কী কী করব

  • কোনটা বেশি জরুরি

  • কোনটা সময়সাপেক্ষ

✅ লিস্টের কাজগুলো করে করে চেক দিলে মনেও তৃপ্তি আসে!

 

🍅 ২. Pomodoro Technique ব্যবহার করো

পড়াশোনায় ফোকাস বাড়াতে এটা অসাধারণ:

  • ২৫ মিনিট মনোযোগ দিয়ে কাজ

  • ৫ মিনিট বিরতি

  • প্রতি ৪ বার পর ১৫–২০ মিনিট দীর্ঘ বিরতি

👉 এর ফলে মনোযোগ কমে না, আবার ক্লান্তিও জমে না।

 

🧭 ৩. প্রায়োরিটাইজ করো (Prioritization)

সব কাজ সমান জরুরি নয়। তাই—

  • সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও deadline-আসন্ন কাজ আগে করো

  • ছোট, সহজ কাজ পরে করলেও চলবে

🎯 একটি জনপ্রিয় নিয়ম: Eisenhower Matrix – কাজগুলোকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায় (জরুরি/অ-জরুরি × গুরুত্বপূর্ণ/অ-গুরুত্বপূর্ণ)

 

🌱 ৪. “Time Blocking” মেথড প্রয়োগ করো

দিনটাকে ভাগ করো:

  • সকাল ৮–১০: পড়া

  • ১০–১০:৩০: বিশ্রাম

  • ১০:৩০–১২: অ্যাসাইনমেন্ট
    👉 এভাবে সময় আলাদা করে রাখলে মাথায় পরিষ্কার থাকে কখন কী করব।

 

🌿 ৫. বিরতির সময় নির্ধারণ করো

বিরতি নেওয়া মানেই অলসতা না।

  • ৪৫–৫০ মিনিট পর একটু হাঁটাহাঁটি, চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম

  • শরীর/মাথা ফ্রেশ হলে কাজ আরও ভালো হয়

✅ নিয়মিত বিরতি productivity বাড়ায়।

 

📴 ৬. ডিজিটাল ডিস্ট্রাকশন কমাও

  • মোবাইল “Do Not Disturb” বা “Focus Mode” করো

  • ক্লাস/পড়ার সময় সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ রাখো

  • নির্দিষ্ট সময়ে “মোবাইল চেক” সেশন রাখো

👉 একটু নিয়ন্ত্রণেই বিশাল সময় বাঁচবে।

 

📱 ৭. টাইম ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করো

টেকনোলজি শুধু সময় নষ্ট করে না, বরং সময় বাঁচাতেও পারে!

  • Todoist – লিস্ট আর রিমাইন্ডার

  • Google Calendar – সময় ব্লকিং

  • Forest / Focus Keeper – মনোযোগ বাড়াতে

 

✅ একান্ত টিপস

  • রাতে ঘুমানোর আগে “কালকের কাজের প্ল্যান” করে ঘুমাও

  • "না" বলতে শিখো—অপ্রয়োজনীয় কাজ/বিপদে না গিয়ে নিজের সময় বাঁচাও

  • সাপ্তাহিক রিভিউ করো—কী করেছ, কী করা হয়নি, কেন হয়নি?


টাইম ম্যানেজমেন্ট কোনো কঠিন জিনিস নয়। বরং একটু সচেতনতা, ছোট কিছু অভ্যাস, আর পরিকল্পনার মধ্য দিয়েই তুমি তৈরি করতে পারো নিজের সফল ভবিষ্যতের পথ।

 

 

৫. পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নির্ধারণ

 

"আমি সফল হতে চাই" — এই কথাটা অনেকেই বলে।
কিন্তু খুব কম মানুষই জানে, সফলতা আসলে প্ল্যানের ফলাফল। শুধু ইচ্ছা থাকলেই হয় না, দরকার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আর লক্ষ্য নির্ধারণ। ঠিক সেখানেই আসে টাইম ম্যানেজমেন্টের মূল শক্তি।

 

🎯 লক্ষ্য (Goal) মানে কী?

লক্ষ্য হলো তোমার গন্তব্য। তুমি কোথায় যেতে চাও, সেটা যদি নিজেই না জানো, তাহলে সময় কীভাবে কাজে লাগাবে?

  • “ভালো রেজাল্ট করব” — এটা একটা সাধারণ ইচ্ছা

  • কিন্তু “এই টার্মে GPA ৪.৫ তোলার জন্য প্রতিদিন ৩ ঘণ্টা পড়ব”—এটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য

 

✅ SMART Goal পদ্ধতি

লক্ষ্য নির্ধারণে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো SMART মডেল।
তোমার লক্ষ্য যেন হয়:

  • S – Specific (নির্দিষ্ট): কী করতে চাও?

  • M – Measurable (পরিমাপযোগ্য): কতটুকু উন্নতি?

  • A – Achievable (বাস্তবসম্মত): করতে পারবে তো?

  • R – Relevant (প্রাসঙ্গিক): তোমার ক্যারিয়ারের সঙ্গে যুক্ত?

  • T – Time-bound (সময়সীমা নির্ধারিত): কতদিনে করতে চাও?

🎯 উদাহরণ:
“পরের ৪ সপ্তাহে গণিতে ৫টা অধ্যায় শেষ করব, প্রতিদিন ২ ঘণ্টা সময় দিয়ে।”
👉 এটা একটা SMART লক্ষ্য।

 

🗂️ কিভাবে পরিকল্পনা করবে?

 

১. বড় লক্ষ্য ভেঙে ছোট করো
বড় লক্ষ্যকে ছোট ছোট ধাপে ভাগ করলে সেটা সহজে আয়ত্তে আসে।
যেমন: “SSC তে A+” → প্রতিমাসে একটি বিষয় → প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট চ্যাপ্টার

 

২. সাপ্তাহিক ও দৈনিক প্ল্যান করো
সপ্তাহের শুরুতে একটা রুপরেখা বানাও—কি কি কাজ শেষ করতে হবে
প্রতিদিন সকালে বা আগের রাতে প্ল্যান সাজাও—কোনটা আগে, কোনটা পরে

 

৩. টাইম ব্লক করো নির্দিষ্ট কাজের জন্য
পড়া, অ্যাসাইনমেন্ট, বিশ্রাম—সবকিছুর জন্য সময় ঠিক করো
যেকোনো কাজে “ঠিক কতক্ষণ সময় দিবে” তা নির্ধারণ করে ফেলো আগেই

 

📌 লক্ষ্য না থাকলে কী হয়?

  • পড়াশোনার আগ্রহ হারিয়ে যায়

  • সময় ঠিকঠাক কাজে লাগে না

  • ছোট ছোট distraction-এ মন চলে যায়

  • দিনের শেষে মনে হয় “আজ কিছুই করিনি!”

👉 লক্ষ্য থাকলে প্রতিটা দিন একটা নির্দিষ্ট দিকের দিকে এগোয়।

 

ছাত্রজীবনে পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নির্ধারণ মানে ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়া।
তুমি যদি জানো কোথায় যেতে চাও, কীভাবে যাবা, আর সময়টাকে কীভাবে কাজে লাগাবে—তাহলে সফলতা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

 

৬. মনোযোগ বাড়ানোর উপায়

 

আজকের যুগে মনোযোগ ধরে রাখা যেন একটা যুদ্ধ!
একদিকে ফোনের নোটিফিকেশন, অন্যদিকে ইনস্টাগ্রামের রিল, পাশেই ভাই বা বন্ধুর গল্প — এমন পরিস্থিতিতে পড়ার সময় মন বসানোটা সত্যিই চ্যালেঞ্জিং।

কিন্তু মনোযোগ ছাড়া সফল হওয়া সম্ভব নয়।
তাই আসুন জেনে নিই কিছু কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য কৌশল, যা তোমার ফোকাস বাড়াতে সাহায্য করবে

 

🧘 ১. পড়ার পরিবেশ তৈরি করো

 

✅ নীরব, আলো-বাতাসপূর্ণ, পরিপাটি পরিবেশে পড়ো
✅ টেবিল-চেয়ার থাকলে ভালো — শুয়ে পড়লে ঘুম পাবে
✅ দরকারি জিনিস যেমন বই, পেন, নোট একসাথে রাখো
❌ মোবাইল, টিভি বা অন্যান্য বিভ্রান্তি দূরে রাখো

👉 মন ফোকাস করে তখনই, যখন পরিবেশ মনোযোগবান্ধব হয়।

 

⏳ ২. ছোট সময়ে মনোযোগী হও (Pomodoro Technique)

 

  • ২৫ মিনিট মনোযোগ দিয়ে পড়ো

  • ৫ মিনিট বিরতি নাও

  • এই চক্র ৪ বার চললে একটা লম্বা বিরতি

✅ এই পদ্ধতিতে ক্লান্তি আসে না, মনোযোগও স্থির থাকে।

 

📱 ৩. মোবাইল নিয়ন্ত্রণে রাখো

 

  • পড়ার সময় ফোন Silent বা Focus Mode রাখো

  • পড়া শেষ হলে নির্দিষ্ট সময় দিয়ে স্ক্রল করো

  • চাইলেই “Digital Detox” করে কিছুদিন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিরতিও নিতে পারো

👉 ফোনই আজকের সময়ে সবচেয়ে বড় distraction।

 

🧠 ৪. একসাথে একটাই কাজ করো

 

Multitasking করলে একটারও ঠিকভাবে হয় না।
👉 একসাথে পড়া, মেসেজ দেওয়া, গান শোনা — এতে মনোযোগ হারিয়ে যায়।

✅ পড়ার সময় শুধু পড়া, বিশ্রামের সময় পুরো বিশ্রাম।

 

🌿 ৫. নিয়মিত মেডিটেশন বা ব্রেথিং এক্সারসাইজ

 

দৈনিক ৫–১০ মিনিট চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাসের অনুশীলন করলে:

  • মাথা ঠান্ডা থাকে

  • মন শান্ত হয়

  • মনোযোগ বাড়ে

👉 মেডিটেশন এখন বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিতভাবে ফোকাস বাড়ায়।

 

📘 ৬. মনোযোগ ধরে রাখতে ছোট লক্ষ্য ঠিক করো

 

“আজ পুরো বই পড়ব” — এটা শুনতেই ক্লান্ত লাগে।
👉 বরং বলো, “আগামী ৩০ মিনিট শুধু এই চ্যাপ্টারটা শেষ করব।”

✅ ছোট লক্ষ্য হলে মন বসানো সহজ হয়, এবং সফল হলে আত্মবিশ্বাসও বাড়ে।

 

📅 ৭. নিয়মিত রুটিন মেনে চলো

 

প্রতিদিন যদি নির্দিষ্ট সময়ে পড়তে বসো, তাহলে মস্তিষ্ক অভ্যস্ত হয়ে যাবে।
👉 এক সময় নিজে থেকেই মন বসে যাবে।

 

মনোযোগ বাড়ানো কোনো ম্যাজিক নয়। এটা একটা অভ্যাস, যা চর্চার মাধ্যমে গড়ে ওঠে।
সঠিক পরিবেশ, পরিষ্কার লক্ষ্য, নির্দিষ্ট সময় এবং প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণ — এই চারটি জিনিসই ছাত্রজীবনের মনোযোগ ধরে রাখার মূল চাবিকাঠি।

 

তুমি যদি সত্যি সময়টাকে কাজে লাগাতে চাও, তবে আজ থেকেই শুরু করো—একটু একটু করে মনোযোগী হয়ে উঠো।
👉 কারণ, মনোযোগ মানেই প্রগতি।

 

৭. প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া

 

আজকাল আমরা প্রায়ই শুনি, “মোবাইল সব সময় নষ্ট করে দেয়”, “টেকনোলজির কারণে মনোযোগ হারিয়ে ফেলি” — এসব কথা আংশিক সত্য হলেও প্রযুক্তি আসলে নষ্টও করে, আবার ঠিকভাবে ব্যবহার করলে অনেক গড়ে তোলে।

ছাত্রজীবনে সময় বাঁচাতে, কাজের গতি বাড়াতে, এমনকি মনোযোগ ধরে রাখতে অনেক দারুণ টুলস রয়েছে—শুধু জানতে আর ঠিকভাবে ব্যবহার করতে হয়।

 

📋 ১. টু-ডু লিস্ট ও প্ল্যানিং অ্যাপ

 

Todoist / Google Keep / Notion

  • প্রতিদিনের কাজের তালিকা তৈরি

  • কাজ শেষ হলে চেক করে আত্মতৃপ্তি

  • Reminder সেট করে সময়মতো কাজের স্মরণ

👉 সময় ম্যানেজমেন্টের প্রথম ধাপই হলো—“কোন কাজটা করব, কবে করব” সেটা পরিষ্কার থাকা।

 

🧭 ২. ক্যালেন্ডার ও টাইম ব্লকিং টুল

 

Google Calendar / Microsoft Outlook

  • পুরো সপ্তাহ বা মাসের পরিকল্পনা

  • একেক সময় একেক কাজ ব্লক করে রাখা

  • এক ক্লিকে দেখে ফেলা — কোন দিন কী আছে

✅ রুটিন মেনে চলতে চাইলে এসব টুল অমূল্য।

 

⏱️ ৩. ফোকাস বাড়ানোর অ্যাপ

 

Forest / Focus To-Do / Brain.fm

  • নির্দিষ্ট সময় ধরে মনোযোগ ধরে রাখা

  • পড়ার সময় ফোনে ঢুকলেই গাছ ‘মরে যায়’ – এমন ফিচারে মোটিভেশন

  • মনোযোগ বাড়াতে বিশেষ মিউজিক বা থেরাপি সাউন্ড

👉 যারা সহজে ডিস্ট্র্যাক্টেড হন, তাদের জন্য দারুণ কার্যকর।

 

📊 ৪. স্টাডি ট্র্যাকার ও প্রোডাক্টিভিটি অ্যাপ

 

Toggl / Clockify / My Study Life

  • কোন কাজে কত সময় ব্যয় হচ্ছে, সেটার হিসাব রাখা

  • প্রতিদিন বা সাপ্তাহিক রিপোর্ট দেখা

  • কোন বিষয় বেশি সময় নিচ্ছে, বুঝে নিয়ে সেটার পরিকল্পনা ঠিক করা

🎯 অনেক সময় আমরা বুঝতেই পারি না সময় কোথায় যাচ্ছে—এই অ্যাপগুলো সেটা ধরিয়ে দেয়।

 

📚 ৫. লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ও অনলাইন কোর্স

 

Coursera / YouTube / Khan Academy / 10 Minute School

  • নির্দিষ্ট বিষয়ের জন্য ক্লাস বা টিউটোরিয়াল দেখা

  • যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গা থেকে শেখা

  • সময়ের অপচয় বাদ দিয়ে নিয়মিত শেখার অভ্যাস

✅ এখন লাইব্রেরি না গিয়েও হাতের ফোনে “জ্ঞান” পাওয়া যায়—শুধু ইচ্ছা থাকা দরকার।

 

✅ টিপস: প্রযুক্তি যেন শত্রু না হয়ে বন্ধু হয়

  • “ব্যবহার” করো, কিন্তু “আসক্ত” হয়ো না

  • অ্যাপস ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করে রাখো

  • নোটিফিকেশন বন্ধ রাখো যখন ফোকাস দরকার

 

প্রযুক্তিকে যদি তুমি কেবল বিনোদনের মাধ্যম মনে করো, তাহলে সেটা সময় নষ্ট করবে।
কিন্তু যদি এটাকে কাজে লাগাও — তাহলে এটা হতে পারে তোমার সবচেয়ে বড় সহযোগী ও প্রডাক্টিভিটির সহায়ক।

ছাত্রজীবনে যাদের হাতে আছে স্মার্টফোন, তাদের হাতে আছে একধরনের “বুদ্ধিমান সহকারী” — এখন শুধু শেখা দরকার, কীভাবে তাকে কাজে লাগাবে!

 

 

৮. সাধারণ ভুল ও সতর্কতা

 

অনেকেই টাইম ম্যানেজমেন্টের কথা শোনার পর রুটিন বানায়, অ্যাপ ডাউনলোড করে, প্ল্যান করে—কিন্তু কয়েকদিন পর সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। কেন এমন হয়?

👉 কারণ, আমরা কিছু সাধারণ ভুল করে ফেলি, যা পুরো ব্যবস্থাপনাকে ভেঙে দেয়।

চলো জেনে নিই সেগুলো কী এবং কীভাবে এগুলো থেকে সাবধান থাকা যায়।

 

❌ ১. “সব একসাথে করব” ভাবা (Overplanning)

দিনের সব ঘন্টা প্ল্যান দিয়ে ভর্তি করে ফেলা যেমন বাস্তবসম্মত নয়, তেমনই দমবন্ধও হয়ে যায়।
👉 সব কাজের জন্য সময় রাখা জরুরি, কিন্তু সেই সময় যেন বাস্তবসম্মত হয়।

✅ 🔹 টিপ: প্রতিদিন ৩–৫টা মূল কাজ ঠিক করো। বেশি নয়।

 

❌ ২. বিশ্রামের সময় বাদ দেওয়া

অনেকে মনে করে, “যত বেশি পড়ব, তত ভালো রেজাল্ট আসবে।”
কিন্তু মাথা ও শরীরকে বিশ্রাম না দিলে কাজের মান কমে যায়, একসময় ক্লান্তি ও বিরক্তি চলে আসে।

✅ 🔹 টিপ: প্রতিদিন অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুম এবং প্রতি ঘণ্টায় ৫ মিনিট বিরতি রাখো।

 

❌ ৩. লক্ষ্য না ঠিক করে দৌড়ানো

লক্ষ্যহীনভাবে শুধু পড়তে বসা টাইম ম্যানেজমেন্ট নয়।
👉 “কি পড়ছি, কেন পড়ছি”—এই প্রশ্নের উত্তর না থাকলে সময় অপচয় হবেই।

✅ 🔹 টিপ: প্রতিটি কাজের পিছনে একটা উদ্দেশ্য রাখো।

 

❌ ৪. “না” বলতে না পারা

বন্ধুদের ডাক, অপ্রয়োজনীয় টিউশনি, বা পারিবারিক চাপ—সবকিছুই মেনে নিতে গেলে নিজের সময় কোথায় থাকবে?

✅ 🔹 টিপ: তোমার সময় তোমার সম্পদ। অপ্রয়োজনীয় কাজ politely না বলা শিখো।

 

❌ ৫. মোবাইলকে “দাঁতের ব্রাশ” বানিয়ে ফেলা

সকালে উঠেই ফোন, ঘুমাতে যাওয়ার আগেও ফোন। এতে সময় নষ্ট হয় শুধু না, মনোযোগও হারিয়ে যায়।

✅ 🔹 টিপ: সকালে অন্তত ৩০ মিনিট ফোন ছাড়াই থাকো।

 

❌ ৬. ফাঁকা পরিকল্পনা করে ফেলা

প্ল্যান বানানোই সব কিছু না। প্ল্যান ফলো করাই আসল!
👉 প্ল্যান লিখে রেখে না মানলে কোনো লাভ নেই।

✅ 🔹 টিপ: রাতের শেষে রিভিউ করো—কী করলে, কী বাকি, কেন হয়নি।

 

⚠️ সতর্কতা

  • টাইম ম্যানেজমেন্ট শেখা মানেই প্রতিদিন একেবারে পারফেক্ট হওয়া নয়

  • ভুল হবে, গাফিলতি হবে—কিন্তু হাল ছাড়া যাবে না

  • নিয়মিত চর্চার মধ্য দিয়েই সময় ব্যবস্থাপনায় দক্ষ হওয়া সম্ভব

 

ছাত্রজীবনে সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো—নিজের সময়কে সম্মান করা।
তুমি যদি এই সাধারণ ভুলগুলো এড়িয়ে সচেতনভাবে সময় কাজে লাগাতে পারো, তাহলে সফলতা শুধু সময়ের ব্যাপার।

👉 মনে রেখো, "শুধু কাজের মানুষ হওয়া নয়, কাজের সময় মানুষ হওয়াই হলো বুদ্ধিমানের কাজ!"

 

 

৯. সফল ছাত্রদের অভিজ্ঞতা থেকে শিখুন

 

টাইম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে যত থিওরি পড়ি না কেন, বাস্তব জীবনের গল্পগুলোই সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
তাদের দেখলেই বোঝা যায়—সফলতা আসলে কোনো জাদু নয়, বরং সময়কে ঠিকঠাকভাবে ব্যবহার করার ফল।

চলো জেনে নিই এমন ৩ জন শিক্ষার্থীর বাস্তব অভিজ্ঞতা যাদের টাইম ম্যানেজমেন্ট বদলে দিয়েছে তাদের জীবন।

 

🧑‍🎓 গল্প ১: ফারহানা, মেডিকেল স্টুডেন্ট – "ঘড়ির কাঁটায় বাঁধা রুটিন"

 

ঢাকা মেডিকেলের ছাত্রী ফারহানা প্রতিদিন মাত্র ৬ ঘণ্টা পড়তেন, কিন্তু সময়ের এত ভালো ব্যবস্থাপনা ছিল যে তার সব সাবজেক্টে রিভিশন হতো সময়মতো।

  • প্রতিদিন সকাল ৮টায় পড়া শুরু

  • Pomodoro টেকনিকে ২৫+৫ স্টাডি সেশন

  • সন্ধ্যায় ৩০ মিনিট ফেসবুক/ইউটিউব — guilt-free!

 

🎯 ফলাফল: পরীক্ষার আগের রাতেও সে চাপমুক্ত থাকত, আত্মবিশ্বাস ছিল তুঙ্গে।

 

🧑‍💻 গল্প ২: সাদমান, HSC ছাত্র ও ফ্রিল্যান্সার – “সময় মানেই টাকা”

 

সাদমান পড়াশোনার পাশাপাশি গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করে আয় করে। সে জানে, “সময়টা যদি না ম্যানেজ করি, পড়াও যাবে, আয়ও যাবে।”

  • রাত ৮টা–১০টা: কেবল পড়া

  • রাত ১০টা–১২টা: ক্লায়েন্টের কাজ

  • দিনে ১৫ মিনিট সময় ব্লক করে প্রজেক্ট ম্যানেজ করে

 

🎯 ফলাফল: GPA ৫.০০ পেয়েছে, এবং মাসে ১০–১২ হাজার টাকা ইনকাম!

 

👩‍🏫 গল্প ৩: নুসরাত, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী – “না বলতে শিখে জীবন বদলেছে”

 

নুসরাত আগে বন্ধুদের ডাক না ফেলতে পারত না—ফলে প্ল্যান করে কিছুই হতো না।
একসময় সে বুঝল, "না" বলা মানেই খারাপ হওয়া না, বরং নিজের লক্ষ্য রক্ষা করা।

  • অপ্রয়োজনীয় আড্ডা কমিয়ে দিয়েছে

  • সাপ্তাহিক রুটিন ফলো করে

  • রবিবার রাতে সব সপ্তাহের প্ল্যান বানায়

🎯 ফলাফল: ক্লাসে রেগুলার, CGPA বেড়েছে, পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গেও সময় দিতে পারছে।

 

🧠 আমরা কী শিখলাম?

 

এই গল্পগুলো থেকে পরিষ্কার ৩টি বিষয় শেখা যায়:

  1. সময় থাকেই—শুধু ঠিকমতো ব্যবহার করাটা শেখা দরকার

  2. "না" বলতে শেখা মানে নিজেকে সময় দেওয়া

  3. ফাঁকা সময় মানেই অলসতা নয়, সেটা কাজে লাগালে ভবিষ্যত বদলায়

 

📌 ছোট্ট চ্যালেঞ্জ তোমার জন্য

 

আজকেই ১টা রিয়েল প্ল্যান বানাও—

  • আগামী ৩ দিনে কী কী করব?

  • কোন সময় কোন কাজ করব?

  • কী বাদ দিবো, কীতে মনোযোগ বাড়াবো?

 

👉 মনে রেখো, তোমার প্রতিটি মিনিটই একেকটা বিনিয়োগ।

 

উপসংহার

 

সময় কারও জন্য থামে না।
চাই তুমি একজন স্কুলছাত্র হও, কলেজ পড়ুয়া বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী—তোমার হাতে প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টাই আছে।
প্রশ্ন হলো: তুমি সেটা কীভাবে ব্যবহার করছ?

 

এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা দেখেছি—

✅ সময়ের গুরুত্ব কতটা
✅ কীভাবে সময় অপচয় হয়
✅ কোন কোন কৌশলে সফলভাবে সময়কে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়
✅ প্রযুক্তিকে বন্ধু করে ব্যবহার করা যায়
✅ আর ভুলগুলো চিনে সতর্ক থাকা যায়

তোমার আশপাশেই এমন অনেক সফল ছাত্রছাত্রী আছেন যারা সময়ের দাম বুঝে আজ নিজেদের জীবন গড়ে তুলছে। তুমি কেন পারবে না?

 

🔑 মনে রাখো:

"টাইম ম্যানেজমেন্ট মানে শুধু রুটিন না, এটা নিজেকে গড়ার প্রতিজ্ঞা।"

তুমি যদি আজ থেকেই একটু একটু করে সচেতন হও—
📅 ছোট ছোট প্ল্যান করো
🕒 সময়মতো কাজ শেষ করো
📵 অপ্রয়োজনীয় distraction এড়িয়ে চলো
তাহলে সফলতা তোমার খুব বেশি দূরে না।

 

🎁 লেখাটি পড়ে এখন তোমার করণীয়:

 

📌 একটা খাতা বা অ্যাপ নিয়ে শুরু করো
📌 আগামী ৭ দিনের জন্য সময় ব্যবস্থার একটা রুপরেখা বানাও
📌 নিজেই নিজের পরিবর্তনের সাক্ষী হও

 

📣 পাঠকের প্রতি প্রশ্ন:

 

তুমি কীভাবে সময় ম্যানেজ করো?
তোমার কোন কৌশল সবচেয়ে ভালো কাজ করে?
নাকি টাইম ম্যানেজমেন্ট নিয়ে এখনো লড়াই করছো?

👉 নিচে মন্তব্যে জানাও — অথবা বন্ধুদের সঙ্গে লেখাটি শেয়ার করো, যারা এই সমস্যায় ভুগছে।


সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তই একজন সাধারণ ছাত্রকে অসাধারণ করে তোলে।
আজই শুরু করো — কারণ সময় কারও জন্য অপেক্ষা করে না।

Tags

ছাত্র-জীবনে-টাইম-ম্যানেজমেন্ট
Popular post
হাইকোর্টের রুল জারি, কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতি কেন অবৈধ নয়

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে। 

কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতি বিতর্ক : উদ্বেগে দুই শতাধিক কর্মকর্তা

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।   

কৃষি ব্যাংকের ‘ভুয়া সিবিএ সভা’ ঘিরে চাঞ্চল্য

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

হালিম হত্যার আসামিরা পলাতক, ধামাচাপা দিচ্ছে প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।  কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কৃষি ব্যাংকে ভুয়া সিবিএ নেতাদের কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি

অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।  

প্রবাসী

আরও দেখুন
ছবি: সংগৃহীত
সৌদিতে ব্যাপক ধরপাকড়, গ্রেপ্তার ২১ হাজারের বেশি প্রবাসী

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ২২ হাজার ৭১ জনকে নিজ দেশের কূটনৈতিক মিশনে ভ্রমণ নথি সংগ্রহের জন্য পাঠানো হয়েছে। আর ৫ হাজার ৭৮ জনকে ভ্রমণ ব্যবস্থাপনার আওতায় রাখা হয়েছে। গত সপ্তাহে ১১ হাজার ৬৭৪ জন প্রবাসীকে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।   গালফ নিউজ জানায়, সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় ১ হাজার ৬৬৭ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ৫৭% ইথিওপিয়ান, ৪২% ইয়েমেনি এবং বাকিরা অন্যান্য দেশের নাগরিক। একই সঙ্গে সৌদি আরব থেকে অবৈধভাবে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে ৩১ জন ধরা পড়ে। অভিযানে অনিয়মকারীদের আশ্রয়, পরিবহন বা কর্মসংস্থান দিয়ে সহযোগিতা করার অভিযোগে আরও ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে মোট ৩১ হাজার ৯১ জন বিদেশির বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলছে—যাদের মধ্যে ২৯ হাজার ৫৩৮ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ৫৫৩ জন নারী। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইন লঙ্ঘনকারীদের সহায়তা করলে সর্বোচ্চ ১৫ বছর কারাদণ্ড, ১০ লাখ রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা, এবং ব্যবহৃত যানবাহন বা সম্পত্তি জব্দ করা হবে।

খবর৭১ ডেস্ক, ডিসেম্বর ০১, ২০২৫ 0
ছবি: সংগৃহীত

সিঙ্গাপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ১১ বাংলাদেশি শ্রমিক

ছবি : সংগৃহীত

সৌদিসহ ৭ দেশে আজ থেকে পুনরায় চালু হচ্ছে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন

ছবি : সংগৃহীত

রাত ১২টা থেকে ১৬ দেশে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু

ছবি: সংগৃহীত
নভেম্বরের ১৮ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১,৯০৪ মিলিয়ন ডলার

নভেম্বর মাসের প্রথম ১৮ দিনে বিদেশ থেকে প্রেরিত অর্থ বা রেমিট্যান্স এসেছে মোট ১,৯০৪ মিলিয়ন ডলার। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ও বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে দেখা হচ্ছে।   বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের এই সময় পর্যন্ত রেমিট্যান্স আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই বৃদ্ধি অর্জনে প্রধান ভূমিকা রেখেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রবাসী কর্মীদের পাঠানো অর্থ দেশের ঋণ, ব্যবসা ও ভোগ্যপণ্য খাতে সরাসরি প্রভাব ফেলে। অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও ঘাটতি কমাতে এই রেমিট্যান্স বড় অবদান রাখে। সরকারি কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, বছরের শেষ পর্যন্ত রেমিট্যান্স আগের বছরের তুলনায় আরও ভালো পারফরম্যান্স দেখাবে, যা দেশের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার সংরক্ষণে সহায়ক হবে।   এই প্রবণতা দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ইতিবাচক সংকেত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

খবর৭১ ডেস্ক, নভেম্বর ২০, ২০২৫ 0

দেশের বাইরে পড়ার জীবনটা যেমন

ছবি : সংগৃহীত

১৮ বছর ‘‌নিখোঁজ’ থাকার পর মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে দেখেন বাবা-মা নেই, স্ত্রী অন্যের সংসারে

ছবি : সংগৃহীত

নভেম্বরের ৮ দিনে প্রবাসীরা ৭৫ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন

ছবি : সংগৃহীত
জাপানে জনশক্তির ঘাটতি পূরণে সব পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ

জাপানের টোকিওতে ‘বাংলাদেশ—জাপানের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ সমৃদ্ধ একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উৎস’ শীর্ষক সেমিনার ও ম্যাচিং ইভেন্টের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস।শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দেশটির নাগোয়া শহরের একটি মিলনায়তনে আয়োজিত এ সেমিনারে সহযোগিতা করে জাপান আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণার্থী ও দক্ষ কর্মী সহযোগিতা সংস্থা (JITCO)। এতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে প্রায় ২৫০টি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এবং জাপানি নিয়োগকারী সংস্থা অংশ নেয়। রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী স্বাগত বক্তব্যে জাপানে দক্ষ জনশক্তি প্রেরণে দূতাবাসের সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কর্মীরা এখন বিশ্ব শ্রমবাজারে নিজেদের দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করেছে।   ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া তার বক্তব্যে জাপান ও বাংলাদেশের মানবসম্পদের তুলনামূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ বিদেশি কর্মীর প্রয়োজন হবে, আর বাংলাদেশে অতিরিক্ত ২ কোটি ৫০ লাখ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী থাকবে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুই দেশ পরস্পরের উন্নয়নে কাজ করতে পারে।   তিনি জানান, জাপানের শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী কর্মী তৈরির জন্য বাংলাদেশে ইতিমধ্যে ৩৩টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (TTC) নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। পাশাপাশি প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ ‘জাপান সেল’ গঠন করা হচ্ছে, যা জাপানি শ্রমবাজারের সঙ্গে সমন্বয় ও যোগাযোগের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।   ড. ভূঁইয়া আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ ও জাপানের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টায় উভয় দেশই উপকৃত হবে। সেমিনারে JITCO-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শিগেও মাতসুতোমি আন্তর্জাতিক শ্রমবাজার ও জাপানের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।   অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশি জনশক্তি প্রেরণকারী এবং জাপানি নিয়োগকারী সংস্থার মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়। সেমিনারে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

খবর৭১ ডেস্ক নভেম্বর ০৭, ২০২৫ 0
ছবি : সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে : হাইকমিশনার

ছবি: সংগৃহীত

লিবিয়া থেকে ১৭৪ বাংলাদেশি দেশে ফেরত

ছবি: সংগৃহীত

অক্টোবরে রেমিট্যান্সে নতুন গতি, ২৫ দিনেই ছাড়াল ২ বিলিয়ন ডলার

0 Comments