খবর৭১ঃ করোনা শুরুর প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাগত না অক্সিজেন। এ বছরের মার্চ থেকে শুরু হয় অক্সিজেনের চাহিদা। প্রথমে দুই হাজার লিটার অক্সিজেন লাগলেও এখন লাগছে আট হাজার লিটার। আর এই অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
করোনার উচ্চ সংক্রমণপ্রবণ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের শনাক্ত হয় মে মাসে। দ্রুত বিস্তার ঘটে রাজশাহী বিভাগে। জুনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মৃত্যু কমে গেলেও রাজশাহীতে বাড়তে থাকে। রাজশাহী মেডিকেলে বাড়তে থাকে রোগীর চাপও। চাহিদা বাড়ে অক্সিজেনের। এ অবস্থায় করোনা আক্রান্ত রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ক্রমাগত সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহই কর্তৃপক্ষের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, যেসব রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে তাদের প্রতি দেড় ঘণ্টার জন্য এক সিলিন্ডার অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। এই হিসাবে ২৪ ঘণ্টায় মাত্র একজন রোগীর জন্য ১৬টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দরকার হচ্ছে। এটা বেশ ব্যয়বহুল আবার অক্সিজেন সিলিন্ডার ম্যানেজ করাও কঠিন।
রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে রবিবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও ১২ জন। এদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন একজন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১১ জন। জুলাই মাসের প্রথম চারদিনে করোনা উপসর্গে মারা গেলেন ৬৪ জন। জুনে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৪০৫ জন।
রাজশাহী মেডিকেলে আসা আক্রান্তদের ৯৯ ভাগেরই অক্সিজেন সাপোর্ট দরকার হচ্ছে। প্রথমদিকে সিলিন্ডারের অক্সিজেন দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সিলিন্ডারে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা নিয়ে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেট ৪০৫টি শয্যার বিপরীতে শনিবার সকাল পর্যন্ত ৪৭৮ জন করোনারোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। আরও ২০ জন চিকিৎসাধীন আছেন আইসিইউতে। এছাড়াও আইসিইউ পেতে আরও ৭৫ জন সিরিয়াল দিয়েছেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, আমরা আগত রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিতে সব ধরনের চেষ্টাই করে যাচ্ছি। সাধারণ ওয়ার্ড খালি করে করোনা ওয়ার্ড বাড়ানো হচ্ছে। কিন্তু রোগীর চাপ বাড়ায় শয্যা বাড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আগত রোগীদের প্রায় সবাইকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। তাই অক্সিজেন সরবরাহই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।