গরু-ছাগলের চামড়ার অবমূল্যায়নের পেছনে দেশি-বিদেশি মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটকে দোষারোপ করেছে কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ। সংগঠনটি বলছে, দেশে চামড়াজাত পণ্যের দামের তুলনায় চামড়ার দাম একেবারেই নগণ্য। যার কারণে চামড়ার দাম কমে যাওয়ার ফলে গোস্তের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
তারা বলেন, চামড়ার তৈরি পণ্যের মূল্য আকাশচুম্বী, সেখানে একটি গরুর চামড়ার দাম মাত্র ৪০০/৫০০ টাকা এবং একটি ছাগলের চামড়ার তো কোনো মূল্যই নেই। কোরবানির চামড়ার মূল্য সম্পূর্ণ গরিবদের হক। দীর্ঘদিন সরকারের কাছে বার বার দাবি জানানোর পরও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের দাবি সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে চামড়ার প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন কওমি শিক্ষকদের সংগঠন কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী (পীর সাহেব দেওনা)।
চামড়ার বিষয়টি ছাড়াও সংগঠনের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা ও জাতি ধ্বংসে এনজিওদের অপতৎপরতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, ৭৬ বছর ধরে ইসরায়েল হাজার হাজার ফিলিস্তিনি জনগণকে হত্যা, গুম, ধর্ষণ, কারাগারে বন্দি করাসহ নির্যাতন চালিয়ে আসছে। ফিলিস্তিনি জনগণ যেন নিজ ভূমে পরবাসী। তিনি আরও বলেন, সস্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব পাশ করলেও গাদ্দার ইসরায়েল কোনো তোয়াক্কা করে নাই এবং সব চুক্তি ভঙ্গ করে নিরীহ ফিলিস্তিনদের ওপর দোষ চাপিয়েছে। তাদের এ ধরনের যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব ও চুক্তি আমেরিকার পাতানো সাজানো নাটক।
মিজানুর রহমান বলেন, সার্বিক বিবেচনায় আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে- (ক) গাজার মুসলমানদের জন্য আর্থিক সহায়তা করা। ‘কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ’র দায়িত্বশীলদের কাছে অনুদান দেওয়া হলে তা বৈধ উপায়ে রাফায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। (খ) ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে। (গ) সংবাদ মাধ্যমের প্রচারণা অব্যাহত রাখতে হবে। (ঘ) পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনে সহায়তার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় ও সংস্থাভিত্তিক সহায়তা প্রদান করা। (ঙ) ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির জন্য কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। (চ) ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করা এবং (ছ) ফিলিস্তিনির মুসলমানদের হেফাজত ও বিজয়ের জন্য দোয়া করা।
এনজিও সংস্থাগুলো অপতৎপরতার বিষয়ে মিজানুর রহমান আরও বলেন, শুরু থেকেই উলামায়ে কেরাম ও সচেতন মহলের সরকার ও জাতিকে এনজিওদের অপতৎপরতার বিষয়ে অবগত করে আসছেন। প্রকৃতপক্ষে সেবার ছদ্মাবরণে অর্থনৈতিক শোষণ, ধর্মান্তরীতকরণের মাধ্যমে জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ তৈরি করে দেশের স্বাধীনতা বিনষ্টের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সহ-সভাপতি মাওলানা জুবায়ের আহমদ, মুফতি ইকবাল, মহাসচিব মাওলানা মুস্তাকিম বিল্লাহ হামিদী, মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী, মাওলানা শুয়াইব আহমদ আশরাফী, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, মাওলানা ফয়জুল্লাহ, এনামুল হক আইয়ুবী, মাওলানা জালাল আহমদ, মাওলানা নাসির উদ্দিন, মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা আবুল খায়ের ভৈরবী, শায়েখ ইসমাইল হোসাইন সাইফী, মুফতি মুয়াবিয়া আল হাবিবী, মুফতি রফি উদ্দীন মাহমুদ নুরী, মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, মুফতি খালিদ সাইফুল্লাহ নোমানী প্রমুখ।