শেরপুর জেলা সদরকে অন্তর্ভুক্ত করে শেরপুরে রেল লাইনের দাবীতে জন উদ্যোগের আয়োজনে শতপদী পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান

0
419

শেরপুর প্রতিনিধি : ‘পর্যটনের আনন্দে, তুলশীমালার সুগন্ধে’ আমাদের শেরপুর, অনন্য শেরপুর। বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত ৬১ তম জেলা শেরপুর। প্রান্তিক জেলা হলেও খাদ্যে উদ্বৃত্ত এ জেলায় রয়েছে কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত নাকুগাঁও স্থলবন্দর আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যের সম্ভাবনা উজ্জল করেছে। কিন্তু সার্বিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে না ওঠায় শেরপুরের উন্নয়ন ও বিকাশ বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। সম্ভাবনাময় শেরপুর জেলার পর্যটন শিল্পের বিকাশ, নাকুগাঁও স্থলবন্দর কেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নয়ন, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করার লক্ষ্যে রেল পরিবহন চালু এখন সময়ের দাবী।
শেরপুর জনউদ্যোগের আহ্বায়ক মোঃ আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ৩১ জানুয়ারি বুধবার সকাল ১১টায় শেরপুর শহরের চকবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে এ উপলক্ষে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সমাবেশে শেরপুরকে রেল লাইন অন্তর্ভুক্ত করার দাবীতে নবারুণ পাবলিক স্কুল, শেখ রাসেল শিশু মঞ্চ, নকলা অসহায় সহায়তা সংস্থা, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টি (সিপিবি) শেরপুর সদর উপজেলা শাখা, নারী রক্ত দান সংস্থা, শেরপুর এসএসসি ৯৯ ব্যাচ, শেরপুর ডিসট্রিক্ট ডিবেট ফেডারেশন, রাজীবা রক্তদান, শ্রীবরদী লোকাল বয়েজ, শেরপুর জেলা রক্তদান সমাজ কল্যাণ সংস্থা, স্বেচ্ছা সেবী সংগঠন জন কল্যাণ, শহীদ মোস্তফা থিয়েটার, কালের কণ্ঠ শুভ সংঘ, শেরপুর প্রথম আলো বন্ধুসভা সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন।
শেরপুরের রেল লাইন বাস্তবায়নের দাবীতে বক্তব্য রাখেন, শেরপুর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ একে এম রিয়াজুল হাসান, সহযোগি অধ্যাপক শিব শংকর কারুয়া, ডাঃ সেকান্দর আলী কলেজের অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম মুকুল, জেলা আওয়ামীলীগ সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আনিসুর রহমান, জাসদ শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব সাংবাদিক হাকিম বাবুল, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার শেরপুর জেলা ইউনিটের সহ-সভাপতি ফজলুল কবীর সুরুজ, কমিউনিষ্ট পার্টির নেতা আবু আহমেদ খান বাবুল, সুলাইমান আহমেদ, আ’লীগ নেতা কৃষিবীদ আল ফারুক ভিউন প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, শেরপুর রেলপথ স্থাপন করার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার ১৯৩০-এর দশকে প্রথম পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। ব্রিটিশ আমলে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন প্রদেশের সাথে পণ্য পরিবহণ ও যাত্রী সাধারণের যাতায়াত সুবিধার জন্য জামালপুর রেলওয়ে জংশন থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর দিয়ে শেরপুর সদর হয়ে সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনে প্রাথমিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর রেলপথ স্থাপনের বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে তৎকালীন বাংলাদেশ রেলওয়ে পুনরায় জামালপুর-রাংটিয়া ভায়া শেরপুর রেলপথ স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করে। কিন্তু সেই সম্ভাব্য যাচাই-এর কাজ আর আলোর মুখ দেখেনি। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন নীতি এবং শেরপুর অঞ্চলের রাজনীতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী মহল সহ সর্বস্তরের জনসাধারণের দাবীর প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ৮ জুন তৎকালীন রেলমন্ত্রী পিয়ারপুর থেকে শেরপুর রেলপথ স্থাপনের ঘোষণা দেন। এজন্য প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই কাজও শুরু হয়। কিন্তু এরপর কেটে গেছে আরও কয়েক বছর। অদ্যাবধি শেরপুর রেলপথ স্থাপনের অগ্রগতি খুব একটা দৃশ্যমান হয়নি।
আমরা শেরপুরবাসী আশায় বুক বেঁধে আছি শেরপুরে একদিন রেলপথ আসবে, সেদিন হয়তো খুব বেশী দূরে নয়। শেরপুর জেলা সদরকে অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত শেরপুরকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার প্রাণের দাবী জানাচ্ছি।
সমাবেশ শেষে জনউদ্যোগের নেতৃত্বে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানার ও ফেস্টুনসহ শহীদ মিনার থেকে শতপদী পদযাত্রা শুরু করে জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে নেতৃবৃন্দ শেরপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, হুইপ বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here