কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অব্যাহতি, ডিবিতে তলব

0
11

সনদ ও নম্বরপত্র জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে স্ত্রী গ্রেপ্তারের পরই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে। আর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার ডিবি কার্যালয়ে তলব করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের এক অফিস আদেশে আলী আকবর খানকে অব্যাহতির কথা জানানো হয়েছে। অব্যাহতি দিয়ে তাকে সংযুক্ত করা হয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে।

সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, আলী আকবর খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। জালিয়াতিতে সংশ্লিষ্টতা পেলে পেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

সনদ ও নম্বরপত্র জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে আলী আকবরের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে রোববার গ্রেপ্তারের খবর দেয় ডিবি। নম্বরপত্র ও সনদ জালিয়াতির বিরুদ্ধে সম্প্রতি ডিবির অভিযানে সেহেলাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এই চক্রের সদস্যরা অর্থের বিনিময়ে জাল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট কেনাবেচায় জড়িত ছিলেন বলে সাংবাদিকদের জানান ডিবি প্রধান হারুন। বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাল সার্টিফিকেট বিক্রির কথা স্বীকারও করেছেন সেহেলা পারভীন।

আর এই চক্রটি গত কয়েক বছরে পাঁচ হাজারের বেশি জাল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আয় করেছে বলেও জানান তিনি।

জালিয়াতি চক্রে স্ত্রী জড়িত থাকায় স্বামী কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে নিয়ে সন্দেহ বাড়তে থাকে গোয়েন্দাদের। তাই তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডাকা হবে বলে রোববার জানিয়ে দেন হারুন অর রশীদ।

সনদ ও নম্বরপত্র জালিয়াতি চক্রের সন্ধান পেয়ে পহেলা এপ্রিল মিরপুরের পীরেরবাগে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।

এই দুজন হলেন-বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম এনালিস্ট একেএম শামসুজ্জামান ও একই প্রতিষ্ঠানের চাকরিচ্যুত কর্মচারী ফয়সাল। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জাল সার্টিফিকেট, মার্কশিট, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র উদ্ধার করা হয়।

এদের গ্রেপ্তারের পরই বেরিয়ে আসে আসল তলের বিড়াল। গত ৫ এপ্রিল কুষ্টিয়ায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় গড়াই কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সানজিদা আক্তার কলিকে।

গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হলে জবানবন্দি দেন এই তিনজন। সেখানে মেলে আরো তথ্য। আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে চক্রের অন্যান্যদের নাম বলেন তারা।

এরপর শামসুজ্জামান, ফয়সাল ও কলির ব্যবহার করা ডিভাইস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গত বৃহস্পতিবার কামরাঙ্গীরচরের হিলফুল ফুযুল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা ওরফে মোস্তাফিজুর রহমানকে।

পরদিন শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয় যাত্রাবাড়ী এলাকার ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের (মেডিকেল) পরিচালক মাকসুদুর রহমান ওরফে মামুনকে।

জাল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বাণিজ্যের সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ২৫ থেকে ৩০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা প্রধান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here