লক্ষ্মীপুরে পৌর শিশুপার্ক ও গরু বাজার ইজারায় অনিয়ম!

0
221

অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরে পৌর শিশুপার্ক ও গো-হাটা ইজারায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আজ বিকেল ৩টায় নিয়মানুযায়ী দরপত্রগুলো খোলা হয়। এতে নিয়ম রক্ষার্থে তিনটি করে ৬টি আবেদন দেখিয়ে পছন্দের ঠিকাদারদের ইজারা দুটি পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ ক্ষুব্ধ ঠিকাদারদের। নিয়মানুযায়ী সর্বোচ্চ দর দাতাকে ইজারা দেওয়ার কথা থাকলেও দরপত্র ক্রয় কিংবা দাখিল করতে দেয়া হয়নি। এতে পৌরসভার বিপুল পরিমান রাজস্ব আহরণ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এতে অংশগ্রহণ করতে না পারায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে তারা। তাই দ্রুত ইজারা দুটি বাতিল করে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের দাবী বঞ্চিত ঠিকাদারদের।
সংশ্লিষ্ট ইজারা কমিটি সূত্রে জানা যায়, বিকেলে দরপত্র খোলা হলে পৌর গো-হাটা আগামী ১লা জানুয়ারী থেকে ৩১ডিসেম্বর পর্যন্ত শাহাদাৎ হোসেন মঞ্জু নামে এক ঠিকাদারকে এবং একই মেয়াদে পৌর শিশুপার্কটি মাকছুদুল আলম নামে আরেক ঠিকাদারকে ইজারা দেয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতাকে প্রতিষ্ঠান দুটি ইজারা দেয়ার কথা থাকলেও কত টাকার দর দামে দুজন ঠিকাদারকে ইজারা দেয়া হয়েছে তা জানাতে পারেনি ইজারা কমিটির সদস্য সচিব।

এদিকে বিকাল তিনটায় পৌরসভার ইজারা দু’টির দরপত্র গুলো খোলা হলেও সন্ধ্যা নাগাদ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমা দেয়া দরপত্র আবেদনগুলো সংশ্লিষ্ট পৌরসভায় নেয় হয়নি বলে পৌরসভার হিসাব রক্ষক মো. মঞ্জু জানান। এনিয়েও স্থানীয় ঠিকাদারদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
পৌরসভার আহবানকৃত দরপত্র নোটিশ সুত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর পৌর শিশুপার্ক ও গো-হাটার পূর্বের ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ১লা ডিসেম্বর নতুন ইজারা নিয়োগের জন্য দরপত্র আহ্বান করেন পৌরকর্তৃপক্ষ। এতে পৌর শিশু পার্কটি আগামী ১ বছরের (১লা জানুয়ার’২২- ৩১ ডিসেম্বর) জন্য ১৫ লক্ষ ৬ হাজার ৭৫০ টাকা এবং পৌর গো-হাটা একই মেয়াদের জন্য ১৯ লক্ষ ২৩ হাজার ২৫০ টাকা ইজারামূল্য দার্য করা হয়। এতে ইজারা দর বাবত উদ্বৃত্ত ১০০%, ভ্যাট ১৫%, আয়কর ৫% এবং জামাত বাবত উদ্বৃত্ত দরের ৫% টাকা তফছিল ভূক্ত ব্যাংক ড্রাফট আকারে দরপত্রের সাথে জমা দিতে হবে আবেদনকারীদের। এতে দরপত্রের সিডিউল ফরম ক্রয় এবং জমা দেয়ার জন্য লক্ষ্মীপুর পৌরসভার হিসাব শাখা, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, উপজেলা কার্যালয় ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সদর উপজেলা কার্যালয় নির্ধারণ করা হয়। সিডিউল ফরম ক্রয় এবং জমাদের শেষ সময় ছিলো ২০ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এছাড়াও ২১ডিসেম্বর দুপুর ১ঘটিকায় সংশ্লিষ্ট টেন্ডার বাক্স থেকে সিডিউলগুলো গ্রহণ করে বিকেল ৩টার সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের সামনে খোলার কথা রয়েছে। এতে সর্বোচ্চ দর দাতাদের ইজারা দু’টি দেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দু’জন ক্ষুব্ধ ঠিকাদার অভিযোগ করে জানান, দরপত্র আহবান করলেও অনেক আবেদন কারিকেই দরপত্র ক্রয়ে বাঁধা এবং কিছু সংখ্যক দরপত্র ক্রয়ের সুযোগ পেলেও জমা দিতে দেয়া হয়নি। এতে ইজারায় অংশ নিতে না পারায় বঞ্চিত হয়ে পড়েছেন তারা। তাছাড়া নিয়ম রক্ষার্থে ৬জন ঠিকাদার দেখানো হলেও পূর্বেই ইজারা নেকোজিশন করে নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় তিনজন ব্যক্তি জানান, পর্বেও মেয়র আবু তাহের দায়িত্বে থাকা কালেও নিজের ইজারা দুটি আত্মীয় করণ করেছে। কিন্তু বর্তমান নতুন মেয়র মোজাম্মল হায়দার মাসুম ভূইয়া দায়িত্ব নেওয়ার পরও একই পরিস্থিতি। সাধারণরা কাকে বিশ্বাস করবে। তাই দ্রুত ইজারা দুটি বাতিল করে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা দাবী তাদেরও।

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সচিব আলাউদ্দিন জানান, দরপত্রর আহ্বানের পর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ৪টি এবং লক্ষ্মীপুর পৌরসভার হিসাব শাখা থেকে ১০জনসহ মোট ১৪জন সিডিউল ক্রয় করেছে। তবে সবাই জমা দিয়েছেন তা জানা নেই। তাছাড়া ইজারা দরপত্র খোলার সময় তিনি ছিলেন না বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ইজারা কমিটির আহ্বায়ক প্যানেল মেয়র খোকন ও সদস্য সচিব পৌর প্রকৌশলী আবুল বাসারের সাথে যোগাযোগ করার কথা বলেন।

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ইজারা কমিটির সদস্য সচিব ও প্রকৌশলী আবুল বাসার প্রথমে জানান, নিয়মানুযায়ী দরপত্রগুলো খোলা হয়েছে। সর্বোচ্চ দর দাতা দু’জনকে দু’টি ইজারা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সর্বোচ্চ দরদাতা কত টাকা রাজস্বের বিনিময়ে ইজারা নিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে কোন উত্তর দিতে পারেনি তিনি। এক পর্যায়ে তিনি জানান, এখনো ইজারা হস্তান্তর দেয়া হয়নি, তবে ইজারা কমিটির সভার সিদ্ধান্তের পর জানানো হবে।

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার নব নির্বাচিত মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূইয়া অনিয়মের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, সর্বোচ্চ দুইজন দরদাতাকে লক্ষ্মীপুর পৌর শিশুপার্ক ও গো-হাটাকে পৃথক ইজারা দেয়া হয়েছে। যারা ইজারা নিতে পারেন নি তারা এমন মিথ্যা অভিযোগ করছে বলে জানান তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here