১৭ ভাগ মৃত্যু হৃদরোগে, ঝুঁকিতে তরুণরাও

0
236

খবর৭১ঃ আগামীকাল বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্বজুড়ে পালিত হবে বিশ্ব হার্ট দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘হৃদয় দিয়ে হৃদযন্ত্রের যত্ন নিন।’ এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সারা বিশ্বে হৃদরোগের কারণে বছরে প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ লোক মারা যায়। আমাদের দেশে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ১৭ ভাগই হৃদরোগের কারণে।

একটা সময় মনে করা হতো, বয়স্করাই হৃদরোগের বেশি ঝুঁকিতে। তবে সম্প্রতি তরুণদের মধ্যেও হৃদরোগের প্রবণতা ব্যাপক হারে বাড়ছে। তারাও উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। এজন্য বিশিষ্টজনেরা এ ব্যাপারে এখনই সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।

বিশ্ব হার্ট দিবসকে সামনে রেখে মঙ্গলবার গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর সহায়তায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগ ঝুঁকি ও করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। সেখানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে তরুণদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাদ্য গ্রহণ হৃদরোগের অন্যতম কারণ।

ওয়েবিনারে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তাই অবিলম্বে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা চূড়ান্ত করা না গেলে ট্রান্সফাটঘটিত হৃদরোগ ঝুঁকি আশংকাজনক হারে বাড়তেই থাকবে। ওয়েবিনারে আরও জানানো হয়, ট্রান্সফ্যাট একটি ক্ষতিকর খাদ্য উপাদান যা হৃদরোগ ও হৃদরোগজনিত অকাল মৃত্যু ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ডালডা বা বনস্পতি ঘি এবং তা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার, ফাস্টফুড ও বেকারি পণ্যে ট্রান্সফ্যাট থাকে।

এক গবেষণা বলছে, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজন তরুণের মধ্যে একজন হৃদরোগ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিশ্বজুড়ে হৃদরোগ ও হৃদরোগজনিত অকাল মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করতে ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ‘খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১’ খসড়া প্রণয়ন করেছে। প্রয়োজনীয় ভেটিং শেষে এটি চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

ওয়েবিনারে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, ‘খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নির্মূল হলে তা অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রবিধানমালাটি চূড়ান্ত করবে সরকার।’

প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, ‘তরুণরা ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার বেশি খেয়ে থাকে। খাদ্যদ্রব্য থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূল করা না গেলে তরুণ প্রজন্ম মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়বে।’

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মো. রূহুল কুদ্দুস বলেন, ‘খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নির্মূল করতে না পারলে দেশে ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগ ঝুঁকি বাড়বে, চিকিৎসা খাতে ব্যয় বাড়বে এবং আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here