গোপালগঞ্জে বখাটের নির্যাতনে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা

0
255

এম শিমুল খান,গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জে বখাটে যুবকের মানসিক নির্যাতনে এক প্রবাসীর স্ত্রী সোনিয়া বেগম (৩২) আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া ইউনিয়নের বটবাড়ি গ্রামে। এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত যুবক রুবেল গা ঢাকা দিয়েছে।
স্থানীয় একাধিক সুত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের মো: এনায়েত উকিল ১৩ বছর ধরে সৌদি প্রবাসী। স্ত্রী সোনিয়া বেগম দু’ মেয়ে ইমা সুলতানা দোলা (১৩) ও তমা সুলতানাকে (১০) নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বসবাস করতেন। একই গ্রামের দবির খানের ছেলে বখাটে রুবেল খান প্রবাসীর স্ত্রী সোনিয়া বেগমকে বোন ডেকে তার কাছ থেকে ৮ মাস আগে তাদের পুকুর ইজারা নিয়ে মাছের চাষ শুরু করে।
এরই সূত্র ধরে সেনিয়ার বাড়িতে রুবেল নিয়মিত যাতায়াত শুরু করে। রুবেল সোনিয়ার বাড়ির বাজার করে দিতো। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঘনিষ্টতার সৃষ্টি হয়। রুবেল সোনিয়াকে বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে নিয়ে গিয়ে অন্তরঙ্গ ছবি তোলে। এ সব ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে সোনিয়ার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় রুবেল। পরে ৪০ হাজার টাকা আদায়ের জন্য সোনিয়া রুবেলকে চাপ দেয়। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এ সময় রুবেল সোনিয়াকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। এ ছাড়া তাদের ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেবে বলে হুমকি দেয়।
এক পর্যায়ে রুবেলের ফোন নম্বর বন্ধ করে দেয় সেনিয়া। এতে আরো আরো ক্ষিপ্ত হয় রুবেল। রুবেল গ্রামে সোনিয়ার বিরুদ্ধে নানা প্রপাকান্ডা ছড়ায়। বিষয়টি সেনিয়ার বাড়ির লোকজন জেনে যায়। এ ঘটনায় সোনিয়া মুষড়ে পরে। লোকলজ্জার ভয়ে রবিবার বিকেলে নিজের ঘরে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সোনিয়া।
পুলিশ ময়না তদন্ত শেষে সোনিয়ার লাশ পরিবারের সদস্যদের হাতে হস্তান্তর করে। সোমবার বটবাড়ি গ্রামের করবস্থানে সোনিয়ার লাশ দাফন করা হয়।
গৃহবধূ সোনিয়া বড় মেয়ে ইমা সুলতানা দোলা জানান, রুবেল তার মাকে মানসিক নির্যাতন করেছে। পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। আম্মুর কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। টাকা চাইতে গেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। তার কারণেই বাধ্য হয়ে আম্মু আত্মহত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
অভিযুক্ত রুবেল খানের স্ত্রী শিমু বেগম বলেন, আমার স্বামীর সোনিয়ার বাড়িতে যাতায়াত ছিলো। সোনিয়াও আমাদের বাড়িতে আসতো। আমার স্বামী তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা করেছে বলে আমার বিশ্বাস হয় না। এ ঘটনায় আমার স্বামীকে ফাঁসাতে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
গোপালগঞ্জের বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়ীর এস আই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: ফরিদুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে একটি ইউডি মামলা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। আশাকরি দ্রুত এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।

খবর ৭১/ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here