মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত সন্দেহে ঢাকার হাসপাতালে তুর্কি নাগরিক

0
179

খবর৭১ঃ মাঙ্কিপক্স ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে তুরস্কের এক নাগরিককে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি তুর্কি এয়ারলাইনসে করে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার শাহহালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন।

শাহজালাল বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় ওই বিদেশি নাগরিককে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হয়। সন্দেহভাজন যাত্রীর নাম আকসি আলতে (৩২)। তিনি তুরস্কের নাগরিক।

শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ‘প্রথমে ওই বিদেশিকে বিমানবন্দর হেলথ সেন্টারে আনা হয়। সেখান থেকে বিকাল তিনটার দিকে মহাখালীর সংক্রামকব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বিশ্বজুড়ে ছড়াচ্ছে প্রচণ্ড ছোঁয়াচে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস। এরইমধ্যে আফ্রিকার বাইরে অন্তত ৩০টি দেশে অন্তত ৭৮০ জনের দেহে ভাইরাসটি ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

১৯৭০ সালে জায়ারে বর্তমানে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে প্রথম মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়। এ রোগে প্রথম আক্রান্ত হয় ৯ বছর বয়সী এক শিশু। ১৯৭০ সালের পর থেকে আফ্রিকার ১১টি দেশে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ে। আর ২০০৩ সালে আফ্রিকার বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এই রোগ শনাক্ত হয়।

মাঙ্কিপক্স কী?

মাঙ্কিপক্স হচ্ছে একটি ভাইরাস। এটি পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। জ্বর, গায়ে ব্যথা, আকারে বড় বসন্তের মতো গায়ে গুটি ওঠাকে আপাতত মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আফ্রিকায় দড়ি কাঠবিড়ালি, গাছ কাঠবিড়ালি, গাম্বিয়ান ইঁদুর, ডর্মিসের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির বানর এবং অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে মাঙ্কিপক্স পাওয়া গেছে।

যেভাবে ছড়ায়

রক্ত, শারীরিক তরল ও সংক্রমিত প্রাণীর শ্লেষ্মার সরাসরি সংস্পর্শে এলে মানুষের শরীরে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ঘটতে পারে। এ ছাড়া, শ্বাস-প্রশ্বাস, সংক্রমিত ব্যক্তির ত্বকের ক্ষত বা তার ব্যবহৃত জিনিসপত্রের সংস্পর্শে এলে মানুষে মানুষে সংক্রমণ ঘটতে পারে।

মাঙ্কিপক্স কতটা মারাত্মক

মাঙ্কিপক্স সাধারণত উপসর্গ দেখা দেওয়ার দুই থেকে চার সপ্তাহ স্থায়ী হয়। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এই সময় বেশি হয়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যান। এ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা খুবই কম।

তবে এ রোগ ছড়ানোর মাত্রা, রোগীর শারীরিক অবস্থা ও কী কী জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার ওপর এর ভয়াবহতা নির্ভর করে। এ রোগের একটি ধরণ এতটাই ভয়ংকর যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ১০ শতাংশ এ রোগে মারা যেতে পারেন।

চিকিৎসাপদ্ধতি

এ রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তবে গুটিবসন্তের টিকা মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে ৮৫ শতাংশ কার্যকর। কিন্তু বিশ্বজুড়ে গুটিবসন্তে আক্রান্তের সংখ্যা নিম্নমুখী হওয়ায় বর্তমানে এ রোগের টিকা পাওয়া খুবই কঠিন।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এরিক ফিগেল-ডিং বলেন, গুটিবসন্তের টিকা মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে কার্যকর এটা ভালো সংবাদ। কিন্তু খারাপ সংবাদ হচ্ছে, ৪৫ বছরের নিচে অনেকেরই এই টিকা দেওয়া নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here