খবর৭১ঃ অবশেষে ‘বঙ্গভ্যাক্সের’ করোনাভাইরাসের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল-বিএমআরসি। শর্তসাপেক্ষে বঙ্গভ্যাক্স ছাড়াও ভারত ও চীনের দুটি টিকারও ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা যাবে।
শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে ফেইজ ওয়ানের আগে বানর বা শিম্পাঞ্জির ওপর পরীক্ষা করতে হবে। এদের ওপর টিকাগুলোর কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সমস্ত কাগজপত্র বিএমআরসিতে জমা দিতে হবে।
বিএমআরসির পরিচালক অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন বলেন, বুধবার বিএমআরসির ইথিক্যাল বোর্ডের তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রুহুল আমিন বলেন, ‘টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কতগুলো নিয়ম অবশ্যই পালন করতে হবে। ফেইজ ওয়ানের আগে বানর বা শিম্পাঞ্জির ওপর পরীক্ষা করতে হবে। এদের ওপর টিকাগুলোর কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সমস্ত কাগজপত্র বিএমআরসিতে জমা দিতে হবে।
বাংলাদেশের কোম্পানি গ্লোব বায়োটেকের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের নীতিগত অনুমোদনের জন্য গত জানুয়ারিতে আবেদন জমা দেয়া হয়। পরে বিএমআরসির চাহিদা অনুযায়ী তথ্য-উপাত্ত যোগ করে ফেব্রুয়ারিতে সংশোধিত আবেদন জমা দেয়া হয়।
দেশে করোনা শুরুর পর গত বছর ২ জুলাই ওষুধ প্রস্ততকারী গ্লোব ফার্মার সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক টিকা তৈরির কাজ শুরুর কথা জানায়। ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে এই টিকা বাজারে আনা যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেছিল প্রতিষ্ঠানটি।
গত বছরের ৫ অক্টোবর গ্লোব বায়োটেক জানায়, ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করেও তাদের ওই সম্ভাব্য টিকা ‘কার্যকর ও সম্পূর্ণ নিরাপদ’ প্রমাণিত হয়েছে।
রুহুল আমিন বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক সিআরওকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দেব। যে তিনটা কোম্পানি কথা বলেছে তাদের প্রত্যেককে চিঠি দেব। তিনটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বঙ্গভ্যাক্স, ভারত বায়োটেক এবং চীনের একটি প্রতিষ্ঠান।’
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদনের ব্যাপারে সবাই ‘পজিটিভ’ এমন মন্তব্য করে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত নেই। আমরা যেসব শর্ত দিয়েছি সেগুলো পূরণ করাও কঠিন না। এটা হয়ে যাবে আশা করি। আমরা উনাদের ডাকব। উনাদের কথা শোনার পর আমরা মিডিয়াকে ডেকে আসল কথাটা জানিয়ে দেব।’
বাংলাদেশে বহুদিন থেকে টিকার ট্রায়াল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু বিএমআরসির সিদ্ধান্ত বিলম্বিত হওয়ায় বিজ্ঞানীদের একটি অংশের মধ্যে হতাশা ছিল। এই অনুমোদনের মধ্য দিয়ে দেশে টিকা আবিষ্কারের পথ অনেকটা উন্মোচিত হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।