খবর৭১ঃ
আমাদের দেশের মানুষ করলা বা উচ্ছে তরকারি, ভাঁজি এবং ভর্তা সবজি ওষুধের গুণেভরা হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান অঞ্চলের আদিবাসীরা বহু বছর ধরেই করলাকে ডায়াবেটিস, পেটের গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, জন্ডিস ইত্যাদিতে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।
করলার তিতা স্বাদ সবার পছন্দের না হলেও এর অনেক গুণ। করলায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, এন্টি অক্সিডেন্ট, লৌহ এবং ফাইবার রয়েছে। যা সাধারণত বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখতে সহায়তা করে থাকে। খাদ্যোপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম করলায় আছে জলীয় অংশ ৯২.২ গ্রাম, শর্করা ৪.৩ গ্রাম, আমিষ ২.৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৪ মিলিগ্রাম, আয়রণ ১.৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১- ০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২- ০.০২ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ১৪৫০ মাইক্রোগ্রাম ও খাদ্যশক্তি ২৮ ক্যালরি। তাই খাদ্যতালিকায় নিয়মিত করলা রাখুন। করলার গুণাগুণ জানলে কষ্ট হলেও একে ভালবেসে ফেলবেন। করলার রস কিন্তু খাবারের মেনুতে করলাকে রাখুন। পার্থক্যটা নিজেই বুঝবেন। ত্বক উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় করে তুলতে এর জুড়ি মেলা ভার। চলুন জেনে নেওয়া যাক এর কয়েকটি উপকারিতা।
অনেকেই বয়সকে শুধু সংখ্যা হিসেবে ক্যালেন্ডারেই রাখতে চান। চেষ্টা করেন চেহারায় সে যেন থাবা না বসাতে পারে? আপনি একা নন, এমন ইচ্ছা তো সকলেই হয়। কিন্তু চোখের কোণে, চামড়ার ভাঁজে উঁকি দেয় বয়সের ছাপ। তবে বয়সকে দূরে সরিয়ে রাখার মোক্ষম ওষধু করলা। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে। যার ফলে চামড়া সহজে কুঁচকায় না। চামড়ায় ভাঁজ পড়ে না। কিছুই না, রোজ করলা সিদ্ধ করে তাতে খানিকটা লেবু আর লবণ ছিটিয়ে খান। আর যৌবন ধরে রাখুন।
নিয়মিত করলা রক্তের মধ্যে থাকা ক্ষতিকর পদার্থ মেরে ফেলে রক্তকে পরিষ্কার রাখে। আর রক্ত পরিষ্কার হলে আপনার ত্বকও থাকে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল। তাই ত্বকে জেল্লা ধরে রাখতে বড় ভূমিকা রয়েছে করলার।
একটা গ্লাসে দুই টেবিল চামচ করলার রস এবং দুই টেবিল চামচ কমলা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এখনই খেয়ে ফেলবেন না। তুলোয় ভিজিয়ে সেই রস দিয়ে নিজের মুখমণ্ডলখানি ভালভাবে পরিষ্কার করুন। মুখ শুকনো হয়ে গেলে পানি দিয়ে ভাল করে মুখ ধুয়ে নিন। এরপর আয়নার সামনে দাঁড়ালে তফাতটা নিজেই বুঝতে পারবেন। মুখ উজ্জ্বল করার নামী-দামি ব্র্যান্ডেড ক্রিমগুলি ড্রেসিং টেবিল থেকে সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হবেন।
আপনার ত্বক কি খুব স্পর্শকাতর? মাঝেমধ্যেই ব্রণ, ব়্যাশ হতে থাকে? তবে বাজারের কেমিক্যাল মেশানো ক্রিম এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তার চেয়ে বরং এক গ্লাস করলার রস খেয়ে ফেলুন। অতিরিক্ত তিক্ত মনে হলে সঙ্গে পছন্দের কোনও সবজিও বেছে নিন। ত্বকের সমস্যা দূর হতে বাধ্য।
অনলাইনে তো নানা ধরনের ফেশিয়াল কিট, ক্রিম, ফাউন্ডেশন অর্ডার দেন। ওসব ছেড়ে করলার একটি ফেসপ্যাক পাওয়া যায়, সেটি অর্ডার দিয়ে ফেলুন। অন্তত একবার ট্রাই করে দেখুন এই ফেসপ্যাকটি। উপকৃত হবেনই। তবে যদি বাজারি ফেসবুক কিনতে না চান তবে বাড়িতে সহজেই বানিয়ে ফেলুন প্যাকটি। প্রথমে একটা করলা সিদ্ধ করে নিন। এরপর বীজগুলি সরিয়ে তা মিক্সারে বেটে নিন। ব্যস, ফেসপ্যাক তৈরি। চোখ বাঁচিয়ে মুখে করলার প্রলেপ দিন। প্যাকটি শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একবার করে এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করলেই বন্ধুমহলে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবেন আপনিই।