রাফা ছেড়ে পালিয়েছে ৩ লাখ ফিলিস্তিনি

0
44

 

ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বেশিরভাগই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আগেই। এখন বাকি রয়েছে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটির রাফা শহর। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরেই ইতোমধ্যেই হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল।
আর এরই জেরে শহরটি ছেড়ে ইতোমধ্যেই পালিয়ে গেছেন ৩ লাখ মানুষ। জাতিসংঘ এই তথ্য সামনে এনেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার অন্যান্য অংশ থেকে এসব মানুষ এখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
রোববার (১২ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৩ লাখ মানুষ গত সপ্তাহে রাফা থেকে পালিয়ে গেছে বলে গাজায় ফিলিস্তিনিদের সাহায্যকারী জাতিসংঘের প্রধান সংস্থা রোববার জানিয়েছে। ইসরায়েলি আগ্রাসন থেকে বাঁচতে গাজা উপত্যকার দক্ষিণ প্রান্তের এই শহরটি গত সাত মাস ধরে ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষের কাছে আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।

ইসরায়েলি সরকার রাফা এবং গাজার অন্যত্র নতুন স্থানান্তর আদেশ জারি করার কয়েক ঘণ্টা পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘোষণা দেয় ইউএনআরডব্লিউএ নামে পরিচিত জাতিসংঘের সংস্থা। আন্তর্জাতিক সতর্কতা সত্ত্বেও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শহরটিতে আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে গত কয়েকদিনে আশঙ্কা আরও গভীর হয়েছে।
মূলত লাখ লাখ ফিলিস্তিনির আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠা রাফা শহরে বড় ধরনের হামলার বিরোধিতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি রোববার সেই সতর্কবার্তাগুলোর কথাই বলেছে, একইসঙ্গে সংস্থাটি বেসামরিক লোকদের বাস্তুচ্যুত হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে এবং বলেছে, রাফাতে পুরো মাত্রার আক্রমণ হবে ‘বিপর্যয়কর’।
সংস্থাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছে, ‘রাফার পরিবারগুলো আবারও সরে যাচ্ছে, আশ্রয়, খাবার, পানির সন্ধান করছে।’
গাজা উপত্যকার বৃহত্তম টেলিযোগাযোগ সংস্থা প্যালটেল রোববার বলেছে, ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের কারণে দক্ষিণ গাজার কিছু অংশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে এবং ক্রুরা ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ পরিষেবাগুলো পুনরুদ্ধার করার জন্য কাজ করছেন।
আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের কর্মীরা যুদ্ধের সময় গাজায় কাজ করছে। এই সংস্থাটিও সোশ্যাল মিডিয়াতে বলেছে, রাফা ইন্দোনেশিয়ান ফিল্ড হাসপাতালের শেষ ২২ রোগীকে অন্যান্য চিকিৎসাকেন্দ্রে রেফার করা শুরু করেছে তারা।কারণ তারা ‘আর তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারছে না।’

গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রায় পতনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে এবং রাফা শহরের তিনটি বড় হাসপাতালের মধ্যে যে একটি হাসপাতাল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অভিযানের আগে আংশিকভাবে কাজ করছিল সেটিও ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে গত সোমবার থেকে রাফা ঘিরে তীব্র বোমাবর্ষণ এবং লড়াই চলছে। মূলত গত সপ্তাহের প্রথম দিকে ইসরায়েলি সৈন্যরা তাদের অভিযানের শুরুতে মিসরের সাথে রাফা ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং পরে তা বন্ধ করে দেয়। এতে করে সাহায্য প্রবাহও বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, তখন থেকে রাফা শহরে ইসরায়েলি হামলায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো গত শনিবার রাফা এবং উত্তর গাজার একটি অংশে লিফলেট ফেলে মানুষকে পালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here