বিশিষ্ট পরমানু বিজ্ঞানী ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন পদার্থ বিজ্ঞান ও গবেষণার পথিকৃৎ

0
961

খবর৭১ঃ ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া আমাদের নিকট বিশিষ্ট পরমানু বিজ্ঞানী হিসেবে সমধিক পরিচিত। তিনি ১৯৪২ সালের আজকের দিনে রংপুর বিভাগের পীরগঞ্জের লালদীঘি ফতেহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম আব্দুল কাদের মিয়া এবং মাতার নাম মরহুমা ফয়জান নেছা। ৯ নং ইউনিয়নের চক করিম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষা জীবনের হাতে খড়ি হয়। রংপুর জেলা স্কুল থেকে ১৯৫৬ সালে আই এস সি পাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি অত্যন্ত সুনামের সাথে অন্যান্য ডিগ্রি যথাক্রমে, ইন্টারমিডিয়েট, সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন এবং ১৯৬৭ সালে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহকারি পীরগঞ্জের সাবেক মন্ত্রী মতিউর রহমানের অভিভাকত্বে শেখ হাসিনার সাথে ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এবং কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় একজন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী। অন্যদিকে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল একজন খ্যাতনামা মনোবিজ্ঞানী। বঙ্গবন্ধুর জামাতা সত্ত্বেও তিনি কখনো বড়াই ও ক্ষমতার দাপট দেখাননি। সৈয়দ বদরুল আহসান এক স্মৃতিচারণে (Wazed Miah: the Decent, Self-Effacing Brave Man) এ তাঁর বিভিন্ন গুণ ও সদাচারণে কথা তুলে ধরেন।
ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া ছাত্রাবস্থায় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৬১ সালে তিনি ছাত্রলীগে যোগ দেন। ১৯৬২ সালে জেনারেল আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ঐ বছর ৩২ নম্বর বাড়িতে তাঁর সাথে প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিলো। ১৯৬৩ সালের ৩০ এপ্রিল তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কেন্দ্রে যোগদান করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটান।
২০০৯ সালের ০৯ মে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁকে পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। ড. ওয়াজেদ ফাউন্ডেশন, বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়, রংপুর এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক দল তাঁর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর নামে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতেন। তাঁর স্বপ্নের বাস্তবায়নে আজকে এই বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। তিনি ক্ষমতার খুব কাছে থাকা সত্তে¡ও ছিলেন স্থির ও নিভৃতচারী মানুষ। তাঁকে নিয়ে আরো গবেষণা করা প্রয়োজন। তাঁর প্রণীত বই ও আতœজীবনী অধ্যয়নের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া সম্পর্কে জানতে পারবে।
লেখক,
মেহজাবীন ইলাহী
সিনিয়র রিসার্চ অফিসার

পিএইচ.ডি গবেষক
ড. ওয়াজেদ রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
ই-মেইল: mleahiwrti@gmail.com
mleahiwrti @brur.ac.bd

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here