প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে লোফিসেয়েলের প্রচ্ছদকন্যা হলেন ফারনাজ আলম

0
164

খবর৭১ঃ প্রচ্ছদের বিষয় ছিল প্রথাবিরোধী। কারণ গতানুগতিকতার স্রোতে গা ভাসাতে চাননি তিনি। থিমটা তারই দেওয়া। এই থিমে লুকটা করা হয়েছে রাজকন্যার মতো। আর তিনিই প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে লোফিসেয়েলের প্রচ্ছদকন্যা হয়েছে। বলা হচ্ছে বাংলাদেশি রূপবিশেষজ্ঞ ফারনাজ আলম এর কথা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ম্যাগাজিনের বিষয় হয়েছেন। তার সাক্ষাৎকার এবং তার ব্র্যান্ড কণা বাই ফারনাজ আলমের বিভিন্ন প্রসাধনী দিয়ে মেকওভারের ছবি ছাপা হয়েছে। এবার তারই ধারাবাহিকতায় ফ্যাশন ম্যাগাজিন লোফিসিয়েলের আরব সংস্করণের ফেব্রুয়ারি সংখ্যার প্রচ্ছদকন্যা হয়েছেন ফারনাজ আলম।

প্রচ্ছদকন্যা হওয়ার জন্য মানসিক প্রস্তুতি যেমন ছিল তেমনি ছিল প্রয়োজনীয় গ্রুমিং। তবে মডেলিংয়ের পূর্বাভিজ্ঞতা না থাকলেও সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা আর মেধা দিয়েই উতরে গেছেন তিনি।

লোফিয়েসেল অ্যারাবিয়ার ফটোশুট নিয়ে তিনি বলেন, দুবাইতে বছরের বেশ বড় একটা সময় থাকতে হয় বলে সেখানেই রূপবিশেষজ্ঞ হিসাবে কাজ করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সাময়িকীর ফটোশুটে মেকআপ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে শুটে কাজ করেছেন। এভাবেই শুটের প্রোডাকশন টিমের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। যোগাযোগ হয় লোফিসিয়েল অ্যারাবিয়ার কুশীলবদের সঙ্গে। তারাই ফারনাজকে প্রচ্ছদকন্যা হওয়ার প্রস্তাব দিলে কিছুটা দ্বিধা থাকলেও ফিরিয়ে দেননি।

দুবাইতে জানুয়ারিতেই শুট শুরু হয়। শুট আগে তিন দিন গ্র“ম করানো হয়। হিল তিনি পরেন না। যদিও এই শুটে হিল পরতে হয়েছে। হিল পরে অনুশীলনের সময় পায়ে ফোস্কাও পড়েছে, হাসতে হাসতে বললেন ফারনাজ; সঙ্গে যোগ করলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হয়েছে এই শুট। দীর্ঘসময় কাজ করতে গেলে প্রচুর এনার্জি লাগে। এজন্য নিজেকে চাঙা রাখতে কাপের পর কাপ কফি খেয়েছি।

মোট চারটি ছবি ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছে। এই পোশাকগুলো ছিল অ্যাটেলিয়ার জুহরা ব্র্যান্ডের। কিছু গয়না আর ব্যাগ ছিল বিখ্যাত ব্র্যান্ড বালগেরির। এ ছাড়া কিছু গয়না ছিল মেসিকা ও শার্লট শেনের। ঘড়ি ছিল শোপার। জুতা পরেছেন জিমি জু আর ক্রিস্টিয় লুবাতঁর।

পাশাপাশি তার মেকআপ করা হয়েছে কণা বাই ফারনাজ আলমের তিনটি প্রসাধনী ফাউন্ডেশন, লিপস্টিক আর আইশ্যাডো দিয়ে। এটিও বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক বলে মনে করেন তিনি। কারণ বাংলাদেশের প্রসাধনী দিয়ে আন্তর্জাতিক সাময়িকীর জন্য মেকআপ করা হচ্ছে। এর আগে অবশ্য এলো ইন্ডিয়ার শুটেও তার প্রতিষ্ঠানের প্রসাধনী ব্যবহার হয়। এ ছাড়া প্যারিস ফ্যাশন উইকেও এই প্রসাধনী দিয়ে মেকাআপ করা হয়েছে। এভাবে বাংলাদেশকেও বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার প্রয়াস পাচ্ছি আমরা, বললেন ফারনাজ।

এই শুটের পোশাকগুলো ছিল যথেষ্ট ভারী। একটি পোশাক ছিল ১০ কেজির মতো ওজন; যা সামলানো মুখের কথা নয়। এর সঙ্গে জুতা এবং অন্যান্য অনুষঙ্গ মিলিয়ে যথাযথ লুক দেওয়াটাও বেশ কষ্ট সাধ্য। তবে তিনি সেটি ভালোভাবেই করতে পেরেছেন। এ পোশাকগুলো পরে মূলত লাল গালিচায় হাঁটা হয় বা ওই ধরনের অনুষ্ঠানে যাওয়া হয়।

প্রচ্ছদে তিনি চিরাচরিত রূপের রাজকন্যা নয়। কারণ রাজকন্যা বলতে আমাদের মাথায় থাকে নিটোল চেহারার, যিনি নিজেকে গুটিয়ে রাখতে পছন্দ করা কোনো মেয়ে। কিন্তু এখন তো দিন বদলেছে। ফলে রাজকন্যার সংজ্ঞাও পাল্টেছে। তারা এখন চার দেয়ালের চৌহদ্দিতে বন্দি নয়। বরং নারীর ক্ষমতায়নের মূর্ত প্রতীক। তার চিন্তাভাবনায় সেই ছাপ স্পষ্ট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here