ফের মুখোমুখি ভারত চীনের সেনারা

0
207

খবর৭১ঃ ফের উত্তপ্ত চীন-ভারত সীমান্ত। আবারও সংঘর্ষে জড়াল দুই দেশের সেনারা। ভারতের অরুনাচল প্রদেশে বিতর্কিত লাইন অব অ্যাকচুয়াল কনট্রোল (এলএসি) বরাবর তাওয়াং সেক্টরে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুপক্ষের অসংখ্য সেনা।

গত সপ্তাহে ঘটে এ সংঘর্ষের ঘটনা। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাতে শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। কয়েকদিন আগে চীনা সেনারা ভারতের উত্তরখন্ডেও সীমান্ত পার করে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছিল। পরে ভারতীয় সেনা সেই স্থানে যাওয়ার কিছু আগে অনুপ্রবেশকারী চীনা সেনা ভারতীয় ভূখণ্ড ত্যাগ করে।

খবরে বলা হয়, গত সপ্তাহে প্রায় ২০০ চীনা সেনাকে আটকে দেয় ভারতীয় সেনারা। লাইন অব কন্ট্রোলের খুব কাছে চলে এসেছিল চীনা লাল ফৌজ। তখনই ভারতীয় সেনারা তাদের আটকে দেয়। কয়েক ঘণ্টা দুদেশের সেনা মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল। একপর্যায়ে দুই তরফের কমান্ডারদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এ ঘটনায় কোনো পক্ষের কোনো ক্ষতি হয়নি। এই মুহূর্তে এই অঞ্চলে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

এর আগে গত বছর সীমান্ত বিবাদের জেরে পূর্ব লাদাখে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ভারত ও চীন। সেই ঘটনায় ভারতীয় সেনার প্রায় ২০ জন সেনাকর্মী মারা গিয়েছিল। চীনা সেনারও প্রায় ৪০ জনের হতাহত হওয়ার খবর মিলেছিল। সেই সংঘর্ষের পর থেকেই ভারত সংলগ্ন বিভিন্ন সীমান্ত সেক্টরে শক্তি বাড়ায় চীন।

লাদাখে সেনা প্রত্যাহারের কথা বলা হলেও বিভিন্ন অজুহাতে সেখানেও সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে বেইজিং। সঙ্গে রয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্রসম্ভার।

তবে যুদ্ধ-সংঘাত নয়, আলোচনার টেবিলেই সমস্যার সমাধান খুঁজছে নয়াদিল্লি। শিগগিরই বৈঠকে বসতে যাচ্ছে দুই দেশের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা। পূর্ব লাদাখ সীমান্ত নিয়ে এটা হবে উভয় পক্ষের ১৩তম বৈঠক। তবে এই বৈঠক সফলতা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। এর আগে ১২ বার বৈঠক করেও কোনো সমাধান মেলেনি।

সীমান্তে সেনা উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে ভারত এবং চীনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে। বারবার দুপক্ষের মধ্যে বৈঠক হলেও এ বিষয়ে এখনো কোনো সমাধান মেলেনি। প্যাংগং থেকে চীন তাদের সেনা সদস্যদের সরিয়ে নিলেও এখনো লাদাখের বহু জায়গায় ঘাঁটি রয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনীর।

ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় চীনের টহলদারিও চলছে। সীমান্ত এলাকায় সেনা সরানোর প্রক্রিয়া নিয়ে চলতি আগস্টে ১২তম বৈঠকে বসে নয়াদিল্লি-বেইজিং। কমান্ডার পর্যায়ে প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে আলোচনা হলেও ইতিবাচক কোনো ফল আসেনি।

তবে ভারতের আশা, চীন পূর্ব লাদাখ সীমান্তে অবশিষ্ট সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করবে ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি মেনে চলবে। এ প্রসঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘চীনের পক্ষ থেকে উসকানিমূলক আচরণ এবং একতরফা পদক্ষেপের ফলে এলাকায় শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে।

আমাদের আশা যে চীন পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় অবশিষ্ট সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধানের জন্য কাজ করবে এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও প্রটোকলগুলো সম্পূর্ণরূপে মেনে চলবে।’ অরুনাচল সীমান্ত নিয়েও ভারতের সঙ্গে চীনের সমস্যা রয়েছে। এই সীমান্ত ১ হাজার ১২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। অরুনাচল প্রদেশকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ হিসাবে দাবি করে বেইজিং। যদিও ভারতের তরফে তার বিরোধিতা করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here