মেয়ের প্রাণ বাঁচাতে নিজেদের প্রাণ বিলিয়ে দিলেন বাবা-মা

0
31

অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ওয়ালপোল সৈকতে ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। মেয়ের প্রাণ বাঁচাতে নিজেদের প্রাণ বিলিয়ে দিলেন বাবা-মা। সৈকতের নিষ্ঠুর জোয়ারভাটা নাটকীয়ভাবে কেড়ে নেয় বাবা-মা শহিদুল হাসান স্বপন ও সাবরিনা আহমেদ পাপড়ি।

গত ২৭ ডিসেম্বর দুই কন্যা সুবাহ ও সিয়ানাকে নিয়ে ওয়ালপোল এলাকায় ভ্রমণে যান এ দম্পতি। পরদিন ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে ওয়ালপোল সৈকতে ঘুরতে গিয়েছিলেন তারা। ক্রিসমাসের ছুটির সময় তারা সমুদ্র উপভোগ করছিলেন, কিন্তু সেই আনন্দ মুহূর্তেই এক মর্মান্তিক বিপর্যয়ে রূপ নেয়।

সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের ছোট্ট সিয়ানা হঠাৎ তলিয়ে যায়। উপায়ন্তুর না বুঝে তাকে রক্ষা করতে স্বপন ও পাপড়ি নির্দ্বিধায় পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাদের এই সাহসী পদক্ষেপে বেঁচে যায় সিয়ানা, কিন্তু নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে হয় তাদের। মেয়েকে বাঁচাতে তারা যেন মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। বাবা-মায়ের এক অভাবনীয় আত্মত্যাগে কন্যার জীবন রক্ষার এই কাহিনী যেন কল্পকাহিনীকেও হার মানায়।

স্থানীয় পুলিশ সমুদ্র থেকে তাদের নিথর দেহ উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন আরেক সাহসী বাংলাদেশি সজীব নন্দী, যিনি তাদের সফরসঙ্গী ছিলেন, তাদের কন্যাকে বাঁচাতে তিনিও নির্দ্বিধায় সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। ভাগ্যক্ৰমে তিনি প্রাণে বেঁচে বর্তমানে পার্থের ডেন্মার্ক্ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

নিহত দম্পতির লাশ এখনো হাসপাতাল মর্গে, আগামীকাল ২৯ ডিসেম্বর লাশগুলো হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।

স্বপনের সহকর্মী অধ্যাপক ড. প্রবির সরকার জানান, এই দুঃসংবাদে তিনি এতটাই মর্মাহত যে, নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের পারিবারিক সম্পর্ক ছিল।

নিহত স্বপন ছিলেন কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এবং নগর পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক। এ ছাড়া স্বপন এবং পাপড়ি দুজনই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা (ইউআরপি) ডিসিপ্লিনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here