ডেঙ্গিজ্বরের ৩ পর্যায়, কখন কী চিকিৎসা দেবেন?

0
495

খবর৭১ঃ
সাধারণত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বাংলাদেশে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এবার বর্ষা আগেই শুরু হওয়ায় মশাবাহিত রোগগুলো ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন ডেঙ্গি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন হাজার হাজার রোগী। অনেকে মারাও যাচ্ছেন। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করা গেলে ও জ্বরের মাত্রা বুঝে চিকিৎসা দিলে ডেঙ্গি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়া এডিস মশাবাহিত ভাইরাল ইনফেকশন। ডেঙ্গি হলে বিছানায় শুয়ে পাশ ফিরতে, টয়লেট করতে চরম ব্যথা। ব্যথা তিন সপ্তাহের মধ্যেই সারে, অনেকের তিন মাসের বেশি লাগে। সব ব্যথা সম্পূর্ণ সেরে যায়। ডেঙ্গিতে মাজায় ব্যথা হতে পারে, মাসল পেইন, বোন পেইন হলেও গিরায় এত সিরিয়াস ব্যথা হয় না, বেশি দিন থাকে না।

ডেঙ্গির উপসর্গ ও চিকিৎসা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বারডেম হাসপাতালের মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. খাজা নাজিম উদ্দিন।

তিনটা পর্যায়ে ডেঙ্গি হয়-ফেব্রাইল, এফেব্রাইল (ক্রিটাক্যাল), কনভালেসেন্ট ফেজ।

ফেব্রাইল ফেজ : ভাইরাস জ্বরের যত উপসর্গ (জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, শরীর ব্যথা, পেট ব্যথা, বমি) সব হয়। ডেঙ্গি জ্বরের বিশেষত্ব হলো গিরার চেয়ে হাড়ের ব্যথা বেশি (ব্রেক বোন ডিজিজ), চোখের পেছনে ব্যথা (চোখ ঘুরালে ভীষণ লাগে)।

এফেব্রাইল ফেজকে ক্রিটিক্যাল বলার কারণ হলো এ সময় রক্তক্ষরণ, শক এবং মৃত্যু হতে পারে।

ডেঙ্গিকে তিনভাবে বর্ণনা করা হয়। ডেঙ্গি ফিভার, ডেঙ্গি হিমোরেজিক ফিভার (ডিএইচএফ) ও ডেঙ্গি শক সিন্ড্রম। এখন ডিএইচএফ আগের তুলনায় বেশি; কারণ দ্বিতীয়বার হলে ডেঙ্গি হিমোরেজিক ফিভার (ডিএইচএফ) হয়। একবার ডেঙ্গি হলে এক বছরের মধ্যে ডেঙ্গি হয় না। পরবর্তী সময় হওয়ার আশঙ্কা ০.৫ শতাংশ। রক্তক্ষরণ থাকলেই সেটা হিমোরেজিক নয়; জ্বরের সঙ্গে প্লাটিলেট সংখ্যা এক লাখের কম হতে হবে আর হিমাটক্রিট ২০ শতাংশ বাড়তে হবে অথবা বেশি থাকলে চিকিৎসায় ২০ শতাংশ কমতে হবে। ডেঙ্গিজ্বরের সময় অনেকের পুনর্বার মাসিক (রক্তক্ষরণ) হয়, এটা প্লাটিলেট স্বাভাবিক থাকলেও হয়; এটা হিমোরেজিক ডেঙ্গি নয়। ডেঙ্গি হিমোরেজিক ফিভার গ্রেড-২ ও গ্রেড-৩ কে একত্রে ডেঙ্গি শক সিন্ড্রম বলে। এ ধরনের ভেদটা মূলত রক্তচাপ ও পালসের ওপর নির্ভর করে। যেমন প্রেসার পালস রেকর্ড না করা গেলে সেটা শক।

এক্সপান্ডেড ডেঙ্গি সিন্ড্রম : ২০১৩ সাল থেকে এটিপিক্যাল উপসর্গগুলোকে আমলে নিয়ে আরেকটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে যেটার নাম এক্সপান্ডেড ডেঙ্গি সিন্ড্রম। এটিপিক্যাল উপসর্গের সঙ্গে এখানে এসজিওটি পিটি অনেক বাড়ে (এক হাজারের বেশি)। সব ডেঙ্গিতেই ওটি পিটি বাড়ে তবে এত নয়; ওটি পিটির চেয়ে বেশি বাড়ে কারণ মায়োসাইটিস বা মাংসের প্রদাহ হয়। প্লাটিলেটও অনেক কমে।

ওয়ার্নিং সিম্পটম (সতর্কতামূলক উপসর্গ) : চিকিৎসা করতে গিয়ে এটা উপলব্ধি করতে হবে। বিশেষ করে বাচ্চাদের বেলায়। পেটের ব্যথা কমছেই না, বমি কোনো মতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না, রক্তক্ষরণ হচ্ছে বা রোগী ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে, পাল্স ব্লাড প্রেশার দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। হাত দিলে পেট শক্ত মনে হয় (পেরিটনাইটিস)। এগুলো হিমোরেজিক ডেঙ্গি খারাপ হওয়ার লক্ষণ; হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করার বার্তা। সময়োপযোগী উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে ভালো হয়ে যাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here